Announcement

Collapse
No announcement yet.

জিহাদের ব্যাপারে মুনাফিক এবং তার মনিবদের চক্রান্তের জবাব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জিহাদের ব্যাপারে মুনাফিক এবং তার মনিবদের চক্রান্তের জবাব

    প্রেক্ষাপটঃ

    মেকি ভ্রান্ত মায়াজালে পথভ্রষ্ট, মোহাবিষ্ট মুসলিম উম্মাহ এর মধ্যে যে শব্দ টি মারাত্মক ভ্রান্তিমূলক হয়ে দাড়িয়েছে তা হচ্ছে জিহাদ। জিহাদ শব্দ টা শুনলে কাফিরদের যেমন অন্তরাত্মা কেপে উঠে বড় আফসোসের বিষয় একই ভাবে মুসলিম ঘরের সন্তানেরাও আজ জিহাদ শুনলে ভয় পায়! বাবা মার মুখ শুকিয়ে যায়, মনে হয় যেন সন্তান কে সাপে কামড় দিয়েছে কিংবা তার চেয়েও ভয়ংকর কিছু। সন্তান জিনা করেছে এই সংবাদ আমাদের বাবা মা দের ভাবায় না, চিন্তিত করেনা, লজ্জিত করেনা, কিন্তু সন্তান জিহাদ করে এই কথা কয়টি তাদের ভীত করে তুলে, শঙ্কিত করে তুলে, তারা এমন সন্তানের ব্যাপারে লজ্জিত হয়! এটা যেমন আফসোসের তেমন লজ্জার! এতার অন্যতম কারন ৩ টা। দ্বীন বিমুখিতা, দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা এবং দ্বীনি জ্ঞানের অভাব। ইসলামের আগমনের সাথে সাথেই জিহাদের সুচনা হয়েছে, ইসলাম, জিহাদ এগুলো কোন আলাদা বিষয় না। জিহাদ ব্যাতিত ইসলাম কায়েম অবাস্তব। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওতায়ালা অনেক জায়গায় জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ এর কথা উল্লেখ করেছেন। জিহাদ নিয়ে এর হুকুম আহকাম নিয়ে সুরা নাজিল করেছেন। আজ আমরা জিহাদ কে ভয় পাই, লজ্জা পাই! অথচ এই জিহাদের মধ্যেই মুসলিম উম্মাহর নিরাপত্তা এবং সম্মান নিহিত। এটা কাফের রা জানে যে এই উম্মত যদি জিহাদ কে না ছাড়ে তবে তাদের পরাজয় ছাড়া আর কোন রাস্তা নাই, তাই তাদের অনেক বড় একটা প্রচেস্টা এই যে উম্মাহ কে জিহাদ কে সরিয়ে রাখা, জিহাদ বিমুখ করা এবং জিহাদের ব্যাপারে ভ্রান্তি তৈরি করা। এই উম্মাহ যদি নিজের সম্মান এবং নিরাপত্তা অর্জন করতে চায় তবে তাকে তা জিহাদের মাধ্যমেই অর্জন করতে হবে, মনে রাখা দরকার – জিহাদ হচ্ছে এই উম্মাহর বর্ম!

    মুল আলোচনাঃ

    আল্লাহ বলেন,
    يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ حَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ
    হে নবী আপনি মুমিনদের কিতালের জন্য উদ্বুদ্ধ করুন। - আনফালঃ ৬৫
    আল্লাহ আরো বলেন,
    وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ
    তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাও যে পর্যন্ত না ফিতনা (কুফর ও শির্ক) খতম হয়ে যায় এবং দ্বীন পুরাপুরি আল্লাহর জন্য হয়ে যায়। - আনফালঃ ৩৯

    প্রথম আয়াতে স্পস্ট করে, সন্দেহাতিত ভাবে আল্লাহ মুমিনদের কে জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন রাসুল সাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম কে। আবারো পড়েন, আল্লাহ বলছেন, হে নবী আপনি মুমিনদের কিতালের জন্য উদ্বুদ্ধ করুন। আর পরের আয়াতে আল্লাহ বলছেন তাদের সাথে (কাফের মুশরিক এবং ফেতনা কারী) যুদ্ধ চালিয়ে যাও যতক্ষণ না দুনিয়ার বুকে শুধু মাত্র আল্লাহর দ্বীন বিজয়ী হয়।

    মুফাসসিরিন গন এই আয়াতের তাফসিরে যা বলেছেন তার সারমর্ম হচ্ছে – যতক্ষণ শির্ক এবং কুফর অবশিষ্ট থাকবে (কেননা তা হচ্ছে সবচেয়ে বড় ফিতনা) এবং ইসলাম দুনিয়ের বুকে বিজয়ী না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ জিহাদ চালিয়ে যেতে বলেছেন। আর এই অবস্থা কিয়ামত এর আগে হবেনা তাই কিয়ামতের আগ পর্যন্ত জিহাদ চালু থাকবে। আর এই একই ব্যাখ্যা আমরা একটি সহিহ হাদিস থেকে পাই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আমি কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আদিস্ট হয়েছি যে পর্যন্ত না তারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে – হাদিসের শেষ পর্যন্ত।

    তাহলে অন্তত এই ব্যাপারে আর সন্দেহ করার কোন সুযোগ নাই যে কিয়ামতের আগ পর্যন্ত জিহাদের হুকুম আল্লাহ নিজেই দিয়েছেন এবং শুধু তাই না বরং জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করার জন্য তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আদেশ দিয়েছেন। এটা তো সাফ হয়েই গেলো। তবে হ্যা এখনও আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই এর দল বিশ্রাম নিবেনা। আর কাফির রাও না। তারা বলবে আরে এটা শুধু ঐ সময়ের জন্য খাস, এটা শুধু আরবদের জন্য খাস। কিংবা, হ্যা এটা আল্লাহ বলেছেন কিন্তু এখন সেটা এভাবে পালন করা যাবে না কিংবা এই আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ইত্যাদি। তাদের জন্য আমি বলবো – এই অধম নিজের মাথা থেকে কিছু বের করেনি, বরং তাফসির থেকে এবং হাদিস থেকেই এই আয়াত দুটির ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তারা যদি এই ব্যাখ্যা কে ভুল প্রমান করতে চায় তবে তারা যেন ঠিক একই ভাবে তাফসির এবং সহিহ হাদিস থেকে তাদের কথার প্রমান নিয়ে আসে। যদি পারে তবে তারা যেন তা করে দেখায়! যদি পারে তবে তারা যেন তা করে দেখায়! যদি পারে তবে তারা যেন তা করে দেখায়! প্রাসঙ্গিক ভাবে এই আয়াত দুইটির সাথে।

    চলেন এবার এই দুই আয়াতের আলোকে বাস্তবতা দেখি –

    আজ, এখন যদি আমি আপনাদের এই আয়াত দুটি বলি বা কেউ আপনাকে বলে তবে আপনি তাকে জঙ্গি বলবেন! অর্থাৎ আল্লাহ যা বলেছেন এবং তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যা করতে বলেছেন সেটা যদি কেউ করে, কেউ বলে তবে সে জঙ্গি। বাকি থাকলো সেই আগের গল্প – এটার মানে তো এটা না, চ্যালেঞ্জ দেয়া আছে কেউ সামনে দলিল নিয়ে আসুক। আসেন ততক্ষণ আমরা নিজেকে একবার প্রশ্ন করে দেখি – কেন? আমাদের এত বড় ভ্রান্তি কোথা থেকে আসলো? স্পষ্ট কুরআন এবং হাদিসের কথা আমাদের কাছে কিভাবে জঙ্গি মতাদর্শ হয়ে গেল! আমি বলতে চাই, আপনারা নিজেদের প্রশ্ন করেন – এই ধারনা আপনারা কোথা থেকে পেলেন? কে আপনাদের এই ধারনা শিক্ষা দিল? আর আল্লাহর কালামের ব্যাপারে এই ধারনা নিয়েই যদি আমরা কবরে চলে যাই তখন আমাদের অবস্থা কি হবে সেটাও একবার চিন্তা করে দেখা দরকার।
    বরং সত্য তো হচ্ছে এই যে আমাদের দ্বীনের প্রতি উদাসিনতা, এবং দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসার সুযোগে আব্দুল্লাহ এবং উবাই এর বংশধরেরা আর তাদের মুনিবেরা যারা কিনা জাহান্নামের ইন্ধন এরা আমাদের শিখিয়েছে এগুলো হচ্ছে জঙ্গি মতাদর্শ! আর আমি আপনি সেটা মেনে নিয়েছি!

    সুতরাং এটা দিবালোকের মত পরিষ্কার হয়ে যাওয়া উচিত যে – জিহাদ এর হুকুম আল্লাহর পক্ষ থেকে। এবং এটা ইসলামের একটি ফরজ, এই বেপারে কারো বিন্দু মাত্র সন্দেহ রাখার অবকাশ নাই। আল্লাহ বলেন – কুতিবা আলাইকুমুস সিয়াম – তোমাদের উপরে রোজার বিধান দেয়া হল, আল্লাহ বলেন, কুতিবা আলাইকুমুল কিতাল – তোমাদের উপরে কিতাল এর বিধান দেয়া হল।

    লজ্জাজনক হলেও সত্যি আমরা আজ মুরতাদ, মুনাফিক দের থেকে দ্বীন শিখতে রাজি আছি। কিন্তু আল্লাহ তাঁর কিতাবে কি বলেছেন সেই ব্যাপারে আমাদের কোন আগ্রহ নাই! আপনি নিজেকে প্রশ্ন করেন জঙ্গিবাদী এই তত্ত আপনারা কার কাছ থেকে শিখেছেন? কারা আপনাদের পীর? কারা আপনাদের মাসায়েখ? উস্তাদ? আমি বলবো? তারা হচ্ছে বেনজির, মনিরুল, আর তাদের ফিরাউন হাসিনা, মোদী, কিংবা ট্রাম্প এর কাছে থেকে।
    আসেন এবার দেখি জিহাদের বাস্তবতা কি? আসলেই জিহাদ অপ্রয়োজনীয় কোন বিষয় কিনা? জিহাদ কেন উপস্থিত থাকবে? আর কেনই বা জিহাদ নিয়ে তাদের এত চুলকানি? আর দিন শেষে তাহলে আমরা কি সিদ্ধান্ত নিব?

    আগে বলে আসছিলাম যে, ইসলামের জন্মের সাথে সাথে জিহাদের জন্ম। জিহাদ ব্যাতিত ইসলাম এর কায়েম কোনদিন ও সম্ভব নয়। এমন কি জিহাদ ব্যাতিত ইসলাম কায়েম এই কথা টুকুই একটা অসার কথা। হুম, কেউ লাফ দিয়ে উঠে বলবেন মক্কী জীবনে কোন জিহাদ ছিলোনা, আমার প্রশ্ন - মক্কী জীবনে কি ইসলাম কায়েম হয়ে গেছিল? না হয়নি, তাহলে কখন হয়েছিলো? মাদানী জীবনে। মাদানী জীবনে কি ইসলাম কায়েম হয়েছিলো? হ্যা হয়েছিলো। মাদানী জীবনে কি জিহাদ ছিল? উত্তর এর ভার আপনাদের উপরে। আল্লাহ বলেছেন মিথ্যা ব্যার্থ হবেই। চলেন সামনে আগাই।

    আগের প্রসঙ্গে ফিরে যাই ইসলাম কায়েমের জন্য জিহাদ ব্যাতিত অন্য কোন পন্থা নাই। এই প্রসঙ্গে কথা বলার আগে কিছু হোম ওয়ার্ক সেরে নেই।

    আসেন দেখি ইসলাম কায়েম বলতে কি বুঝায়? দ্বীন কায়েম বলতে কি বুঝায়? মনে রাখতে হবে আপনি কি বুঝেন সেটা বড় কথা না। আল্লাহ কি বুঝিয়েছেন সেটা ই এবং সেটা ই এক মাত্র কথা। আবারো বলি আল্লাহ কি বুঝিয়েছেন সেটা ই একমাত্র কথা, এর ব্যাতিক্রম অন্য যে কোন কিছুই মুল্যহীন! দ্বীন কায়েম বলতে কি বুঝায় এই ব্যাপারে আল্লাহই ব্যাখ্যা দিয়েছেন একদম খুব সরল ভাবে – দুনিয়াতে শুধু মাত্র আল্লাহর দ্বীন থাকবে। অর্থাৎ দুনিয়া শাসন হবে শুধু মাত্র আল্লাহর হুকুম দিয়ে। অন্য কোন হুকুম দিয়ে নয়, অন্য কোন আইন দিয়ে নয়। এবং যতক্ষণ তা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত জিহাদ চলতেই থাকবে তাও আল্লাহরই নির্দেশে। এখানে একটা মোটা দাগের প্রশ্ন আসতে পারে দ্বীন কি? দ্বীন কি শুধু দাড়ি টুপি, পাঞ্জাবি মিসওয়াক, নামাজ রোজা, এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ? না বরং দ্বীন হচ্ছে একজন মানুষের (কাফির মিংবা মুসলিম) জীবনের সমস্ত কিছুর ব্যাপারে বিধান এর নামই হচ্ছে দ্বীন। দ্বীন শুধু ঘরের কোন বিষয় না বরং রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, অর্থনীতিক, সামরিক, রাজনৈতিক, সম্ভাব্য যা কিছুর সাথে আল্লাহর বান্দারা, আল্লাহর প্রতিনিধিরা এই দুনিয়াতে সংশ্লিষ্ট হয় তার সব কিছুর ব্যাপারে বিধানমালার নাম দ্বীন। আল্লাহ এমন দ্বীনই কায়েম করতে বলেছেন। মনে করেন সেই ঘটনার কথা, যখন আল্লাহ বললেন – আমি দুনিয়াতে আমার খলিফা/প্রতিনিধি প্রেরন করতে চাই! মনে পড়ে? আচ্ছা আমাকে বলেন তো আল্লাহ দুনিয়াতে প্রতিনিধি পাঠাবেন এই কারনে যে আল্লাহর প্রেরিত প্রতিনিধি দুনিয়াতে আল্লাহর দেয়া সমস্ত কিছু ভোগ করবে, আল্লাহর প্রতিনিধি এই টাইটেল ও উপভোগ করবে কিন্তু সে বাস্তবে প্রতিনিধিত্ব করবে মানুষের তৈরি কিছু আইনের,মানুষের তৈরী কিছু বিধানের! শুধু তাই নয় – বরং আল্লাহর বিধান কে চ্যালেঞ্জ করে! কি অদ্ভুত আমাদের মুক্ত বুদ্ধি চর্চার নমুনা! যা বলছিলাম – মানুষ সৃষ্টির সাথে সাথে এটাও বরাদ্দ হয়ে গেছে যে তার জন্য শুধু মাত্র আল্লাহর দ্বীনই প্রযোজ্য – আর এজন্য আল্লাহর দ্বীন কেই দুনিয়ার বুকে কায়েম হতে হবে। আর আল্লাহ তা করেও ছাড়বেন।

    আগের প্রসঙ্গে ফিরে যাই - ইসলাম কায়েমের জন্য জিহাদ ব্যাতিত অন্য কোন পন্থা নাই। আমরা দেখি আফগানিস্তান এর কথা। সেখানে ন্যাটো এবং অ্যামেরিকা যুদ্ধ করছে মুজাহিদিন এর সাথে। কেন? তারা সেখানে গণতন্ত্র দেখতে চায়। তারা সেখানে মুজাহিদিনদের শারইয়াহ বা দ্বীন এর বাস্তবায়ন দেখতে চায়না। এজন্য তারা যুদ্ধ করছে। এমনি ভাবে ইতিহাসের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত দুনিয়ার যে প্রান্তেই মানুষ যখন কোন একটি মতবাদ, আদর্শ, জীবনব্যাবস্থা কে সরিয়ে অন্য একটি মতবাদ, আদর্শ, বা জীবনব্যাবস্থা কে নিয়ে আসতে চেয়েছে তা যুদ্ধ ব্যাতিত সম্ভব হয়নি। যুগে যুগে রাজা বাদশা এবং উপনিবেশের জন্ম দাতা সাম্রাজ্যবাদীরা যুদ্ধ ব্যাতিত কিছু করেনি। না যুদ্ধ ব্যাতিত তাদের কিছু করা সম্ভব ছিলো। যে সময়ে ইসলাম আসলো তখন ও দুনিয়ার বুকে বিভিন্ন মতাদর্শ ছিলো, (মুলত যেগুলো শুধু মাত্র শাসক শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষা করত, এবং সেগুলোর মূলে আঘাত করার জন্যই এসেছে, এবং এটা ভিন্ন আলোচনা ও বটে)। এমন কি মক্কার কাফেরদের ও নিজেদের একটা মতাদর্শ ছিলো। তাদের নিজেদের সমাজ ব্যাবস্থা ছিলো। যখন ইসলাম তার স্বরূপে হাজির হল – লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ দিয়ে – তখন আমাদের মত মোটা দাগের বুঝ কিন্তু কাফির রা বুঝেনি। আরবী ভাষা ভাষী মক্কার কাফের রা ঠিকই বুঝেছিলো এই লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মানে কি বুঝায়! অর্থাৎ সব হুকুমের দিন শেষ, এখন থেকে শুধু মাত্র এক ইলাহ আল্লাহর ই হুকুম চলবে। প্রমান? প্রমান হচ্ছে এই যে – ইসলামের বিধান এবং প্রয়োগ সমুহ তো অনেক পরে হয়েছিলো কিন্তু লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ শুনে কাফের রা পাগল হয়ে গেছিলো কেন? কারন তারা জানত এই ইলাহ -আল্লাহ যে অন্য সব ইলাহ কে, অন্য সব ধারনা কে বাতিল করে দিয়েছে সে ব্যাপারে তাদের কোন সন্দেহই ছিলোনা। আর তারা এটা মানতে রাজিও ছিলোনা। কারন তাদের ইলাহ এর বিধান তো তাদেরই স্বার্থ রক্ষা করে। এলিট দের সার্থ রক্ষা করে। কারন মক্কার প্রথম দিকের মুসলিম রা ছিলেন দ্ররিদ্র অসহায় শ্রেনী থেকেই, যাদের স্বার্থ রক্ষার কেউ ছিলনা। এমনকি মক্কার কাফেররা ও এটা নিয়ে মস্করা করত! এমন অবস্থায় যখন ইসলাম আসলো তখন মক্কার কাফেরদের বাধা দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় ছিলনা। সেটা হাসি তামাশা, উপহাস, নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যা, দেশ ত্যাগে বাধ্য করা থেকে শুরু করে যুদ্ধ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকলো। মনে পড়ে বদরে কাফির রা কি বলেছিলো? তারা দুয়া করেছিলো আল্লাহ দুনিয়ার বুকে হক্ক দল টি যেন আজ টিকে থাকে। তারা নিজেদের হক্ক ভেবে ইসলাম কে শেষ করতে এসেছিল! তাহলে ইসলামের জন্মের সাথে সাথেই বাধা প্রাপ্ত হল। (এই প্রসঙ্গ কে কেউ মক্কার দাওয়াহ জীবনের সাথে গুলিয়ে ফেলবেন না – সেটা ভিন্ন আলোচনা) আর ইসলাম যদি বাধা প্রাপ্ত হয়েই থাকে তবে তার কি করনীয়? সে তো দুনিয়ার বুকে ছেলে খেলার জন্য আসেনি। তার একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য আছে। আর তা হচ্ছে ইসলাম কে প্রতিষ্ঠিত হতেই হবে। তাহলে ইসলামের করনীয় কি? বুঝাই যাচ্ছে মক্কার কাফের রা তা কোন ভাবেই হতে দিবেনা। তাহলে ইসলামের করনীয় হচ্ছে জিহাদ। জি জিহাদ। এই জিহাদের কারনেই মক্কা বিজয় হয়েছে। এই জিহাদের কারনেই গ্রানাডা থেকে ইস্পাহান পর্যন্ত ইসলাম ছড়িয়ে গেছে। জি শুধু এই জিহাদের জন্যই। এমন নয় যে ইসলাম শুধু জিহাদ করার জন্যই এসেছে। বরং এমন যে কে এমন আছে যে স্বেচ্ছায় ইসলামের বিজয় কে মেন নিবে? আল্লাহর দ্বীনের সামনে মানুষের মিথ্যা দ্বীন কে বিসর্জন দিবে? আজ যদি আমি হাসিনা কে বলি তোমার সংবিধান ছেড়ে দাও – তুমি জুলুমের শাসন থেকে নেমে আসো। কারন তুমি নিজে এক মাখলুক হয়ে অন্য মাখলুক কে শাসন করছ অথচ বিধান দেয়ার মালিক শুধুই আল্লাহ। হাসিনা কি তা মেনে নিবে? না নিবেনা। বরং সে নিজের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য দরকার হলে যুদ্ধ করবে। তাহলে হাসিনার এই যুদ্ধ আপনার জাস্টিফাইড, কিন্তু ইসলামের জিহাদ জাস্টিফাইড না! হাসিনার কথা জাস্টিফাইড কিন্তু আল্লাহর কথা জাস্টিফাইড না! আর সারা দুনিয়া এভাবে যখন ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যাস্ত তখন সারা দুনিয়া আপনার কানে যে মন্ত্র পড়ে দিয়েছে সেটা আপনার কাছে জাস্টিফাইড কিন্তু আল্লাহর কালামের বানী আপনার কাছে জাস্টিফাইড না। আর এখান থেকেই একটা উপসংহারে আসা জরুরী – সমস্ত কাফের এবং মুরতাদ যদি তাদের দ্বীন কে (ডেমোক্রেসি, গণতন্ত্র কিংবা আর যে কোন কিছু) টিকিয়ে রাখার জন্য ইসলামের সাথে যুদ্ধ করতে থাকে তবে তা জাস্টিফাইড কিন্তু আল্লাহর হুকুম বাস্তবায়নে আল্লাহর ই নির্দেশে কেউ যদি জিহাদ করে তবে না জাস্টিফাইড না বরং সেটা হচ্ছে জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ – এবং এই কথা টুকুও আপনি তাদের থেকেই শিখেছেন। এবার আপনার কাছে আমার প্রশ্ন - আপনি তাহলে কোন দ্বীনের বিজয় চান? আল্লাহর দ্বীন? নাকি কাফের দের দ্বীন? আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জাহ কালামে পাকে বলেছেন আমি এভাবেই আমার আয়াত সমুহ খুলে খুলে বলি – আর আল্লাহ বলছেন- তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাও যে পর্যন্ত না ফিতনা (কুফর ও শির্ক) খতম হয়ে যায় এবং দ্বীন পুরাপুরি আল্লাহর জন্য হয়ে যায়। তারা কখনই আল্লাহর দ্বীনের বিজয় চাইবেনা। প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কি চান?

    অন্তত এত টুকু পরিষ্কার যে জিহাদ ইসলামের আলাদা কোন শর্ত না এটা আলাদা কোন উদ্ভট চাহিদা না –যা কিনা কোন সুনির্দিষ্ট সময়, এলাকা, পরিস্থিতি এর উপরে নির্ভর করে বরং ইসলামের জন্মের সাথে থেকে শুরু করে এর পরিপূর্ণ বিজয়ের আগ পর্যন্ত জিহাদ থাকবে। কারন জিহাদ হচ্ছে ইসলামের হাতিয়ার। ইসলাম কে এত ছোট ভাববেন না যে ট্রাম্প, মোদি, হাসিনা মিলে ইসলাম কে আঘাতের পর আঘাত করেই যাবে আর ইসলাম পড়ে পড়ে মার খাবে। ইসলাম বিজিত হতে এসেছে, সে জানে তাকে কি কি হাতিয়ার নিয়ে নামতে হবে। যুদ্ধ যদি কাফেরদের কৌশল হয়ে থাকে তবে ইসলাম কিভাবে তা এড়িয়ে যেতে পারে? আর যদি কাফের রা যুদ্ধ নাও কারতে তবুও ইসলাম কে যুদ্ধ করতেই হত। কারন কাফের যদি বলে আমার এলাকায় আমার হুকুম চলবে তোমার এলাকায় তুমি চল – তাহলে এই মন্ত্র দুনিয়ার সব কাফের রাষ্ট্র এবং তার পা চাটা তাবেদার রা দাবী করে বসতো, কিন্তু ইসলাম তো কাফের দের দাবী পুরনের জন্য আসেনি। বরং ইসলাম এসেছে আল্লাহর নুর কে প্রজ্জলিত করতে! তাই সব কাফেররা যদি ইসলাম কে এড়িয়েও চলতে তবে সাময়িক ভাবে ছাড় থাকলেও এক সময়ে ইসলাম তাদের সাথে জিহাদে লিপ্ত হতই। আর সেই তুলনায় তাহলে বর্তমানের সমীকরণ কি হবে? যখন সারা দুনিয়া একাট্টা করে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত!

    সুতরাং – জিহাদ ইসলামের সাথেই এটা নতুন কোন আবিষ্কার নয়। জিহাদ ব্যাতিত ইসলাম কায়েম মিথ্যা স্বপ্ন এবং নিজেকে অপমান করা ছাড়া আর কিছুই না। আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই এবং তার বন্ধুরা বলে এখন কোন জিহাদ নাই তাহলে তাদের জন্য এখন ইসলামের কোন কায়েম ও নাই। কারন জিহাদ নাই মানে কাফের রা সন্তুষ্ট আছে। কাফের রা সন্তুষ্ট আছে কারন তারা তাদের দ্বীন দিয়ে হুকুম চালাচ্ছে – সেখানে ইসলাম নাই। তাই যারা বলে এখন জিহাদ নাই তারা যেন এটা ও স্বীকার করে নেয় তাদের সেই কথা এইটা ই প্রমান করে যে সেখানে ইসলামের বিজয় ও নাই! আহ কি অদ্ভুত! তারা এমন হাল ই দেখতে পছন্দ করে! ইন্নাল মুনাফিকিনা ফিদ দারকিল আস ফালি মিনান নার!

    প্রিয় ভাই আমার – আমার এত কথা বলার উদ্দেশ্য রাব্বুল আরশিল মাজিদ এর সেই কথা – হে নবী, আপনি মুমিনদের কিতালের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। আমার লেখার ও কারন আপনাদের কে জিহাদের জন্য উদবুদ্ধ করা। আমরা কেনই বা জিহাদ করব না! জিহাদ পরিত্যাগের মত দুর্ভাগ্যজনক আর কিছু নাই, এই দুনিয়াতে এবং আখিরাতেও। খুব অবাক করা বিষয় এই যে – আমরা তাগুতের ইউনিফর্ম পরে তাগুতের বিধান রক্ষার জন্য জান বাজি রাখি তাতে আমাদের লজ্জা বোধ হয়না বরং গর্ব বোধ হয়। অপর দিকে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জাহ আদেশ এবং তাঁর রাসুলের সুন্নাহ কে অনুসরণ করে আল্লাহর বিধানের বাস্তবায়নের জন্য জিহাদ কে আমি ভয় পাই, লজ্জা পাই, সংকীর্ণ হয়ে যাই! হাসিনার সৈন্য হতে পারলে আমি গর্ব বোধ করি অথচ আল্লাহর সৈন্য হওয়া আমার আছে লজ্জার বিষয়! ভয়ের বিষয়! - আর যারা বলবে -তুমি ব্রেইন ওয়াশড, আমি বলবো তুমি একটা মুনাফিক্ক, কাপুরুষ এবং ভীরু! তুমি তো কিছু ডলার এবং টাকার কাছে নিজেকে বেচে দিয়েছো, (তুমি নিজেও তা খুব ভালো ভাবেই জানো) কিছু দুনিয়ার স্বার্থের বিনিময়ে নিজের ঈমান কে বেচে দিয়েছো - অপেক্ষা কর, তোমার ব্যাপারে আল্লাহর কিছু ওয়াদা আছে! সেদিন খুব বেশি দূরে নয় যেদিন তুমি এবং তোমার সাথীদের আল্লাহ যথাযথ পুরস্কার দিয়ে দিবেন। আপাতত তুমি দূর হও আমার সামনে থেকে!

    প্রিয় ভাই আমি তোমাকে জিহাদের ব্যাপারে আহবান করছি। আল্লাহর বাহিনীতে অংশগ্রহনের জন্য আহবান করছি – এর চেয়ে সম্মানের আর কি আছে যে তুমি একজন আল্লাহর সৈন্য। তুমি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে হয় বিজয়ী হও কিংবা শহীদ হয়ে যাও! এত কিছুর পরেও শুধু সেই পিছনে পড়ে থাকলো যে নিজে কে ধোকা দিল!
    Last edited by s_forayeji; 07-26-2018, 04:45 PM.
    মিডিয়া জিহাদের অর্ধেক কিংবা তারও বেশি

  • #2
    জাজাকাল্লাহ.... খুবই গুরুত্ব পূর্ণ কথা উল্লেখ করেছেন।
    শরিয়াহর জন্য আমরা নিবেদিত.....

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ !
      চমৎকার বাস্তবধর্মী তাহ্রিদমূলক লিখা ।
      আল্লাহ্* সম্মানিত ভাইয়ের ইল্ম এ বারাকাহ দান করুন এবং আমাদেরও ।
      আর এ টাইপ এর লিখাগুলী কেবল ফোরাম এই সীমাবদ্ধ থাকলে এর সার্থকতা ও হক আদায় হবে না । কেননা এগুলো পৌঁছে দিতে হবে ব্যাপকভাবে আম মুসলিমের কর্ণকুহরে । আর ফেসবুক-ই উম্মাহর হৃৎপিণ্ড যুবকদের পদচারনায় ভারী । তাই ফেসবুকে প্রচার থেকে যেন তা মাহরুম না হয় ।
      আর বহু নবী ছিলেন, যাঁদের সঙ্গী-সাথীরা তাঁদের অনুবর্তী হয়ে জেহাদ করেছে; আল্লাহর পথে-তাদের কিছু কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তু আল্লাহর রাহে তারা হেরেও যায়নি, ক্লান্তও হয়নি এবং দমেও যায়নি। আর যারা সবর করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন। (আলে ইমরান ১৪৬)

      Comment


      • #4
        """মুসলিম উম্মাহ এর মধ্যে যে শব্দ টি মারাত্মক ভ্রান্তিমূলক হয়ে দাড়িয়েছে তা হচ্ছে জিহাদ।
        জিহাদ শব্দ টা শুনলে কাফিরদের যেমন অন্তরাত্মা কেপে উঠে বড় আফসোসের বিষয় একই ভাবে মুসলিম ঘরের সন্তানেরাও আজ জিহাদ শুনলে ভয় পায়! বাবা মার মুখ শুকিয়ে যায়, মনে হয় যেন সন্তান কে সাপে কামড় দিয়েছে কিংবা তার চেয়েও ভয়ংকর কিছু। সন্তান জিনা করেছে এই সংবাদ আমাদের বাবা মা দের ভাবায় না, চিন্তিত করেনা, লজ্জিত করেনা, কিন্তু সন্তান জিহাদ করে এই কথা কয়টি তাদের ভীত করে তুলে, শঙ্কিত করে তুলে, তারা এমন সন্তানের ব্যাপারে লজ্জিত হয়!""""

        আল্লাহ তায়ালা আমাদের মা বাবাকে এজাতীয় গলত চিন্তা ভাবনা থেকে হেফাজত করুন এবং উম্মে ইবরাহীমের মত জিহাদে পাঠানোর তৌফিক দান করুন আমীন ইয়া রাব্বুল আলামীন।
        হক্বের মাধ্যমে ব্যক্তি চিনো,
        ব্যক্তির মাধ্যমে হক্ব চিনো না।

        Comment

        Working...
        X