Announcement

Collapse
No announcement yet.

ফোরামে ইলম ও জিহাদ ভাইয়ের নিকট একটি প্রশ্ন??💛💛💛

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ফোরামে ইলম ও জিহাদ ভাইয়ের নিকট একটি প্রশ্ন??💛💛💛

    অনেক আলেম বলে থাকেন যে, জিহাদ করার জন্য রাষ্ট্র লাগবে , রাষ্ট্র ছাড়া জিহাদ করা যাবে না । ভাইদের কাছে দলিল ও যুক্তি উভয়টির সমন্বয়ে উত্তর কামনা করছি ।💙💛💚
    ✈✈জীবনে তুমি ঝুকি নাও, জিতলে তুমি নেতৃত্ব দিবে আর না জিতলে তুমি পরবর্তী কাউকে পথ দেখাবে🔫🔫 ।

  • #2
    অনেক আলেম বলেন জিহাদ করতে হলে রাষ্ট্র লাগবে, রাষ্ট্র ছাড়া জিহাদ করা যাবে না। প্রিয় আখি, যদি আপনার সাথে ওনাদের কথা হয় ও সম্ভব হয় তাহলে ওনাদের কাছে জিহাদের জন্য রাষ্ট্র শর্ত এব্যাপারে শরয়ী দলিল চেতে পারেন। জাযাকাল্লাহ।
    ইলম ও জিহাদ ভাইকে অনুরোধ উক্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য।
    والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

    Comment


    • #3
      তারা এর সপক্ষে কোন দলিল -প্রমান উপস্থাপন করতে পরবেনা৷ কারন: যখন কোন মুসলিম দেশের - ভূখন্ডের উপর কাফেররা আক্রমনকরে -দখলকরেনেয়, তখন সরব সম্মতিক্রমে ঐস্থানের প্রত্যেক মুসলমানের উপর জিহাদ ফরজে আইন হয়েযায়৷ চাই তাদের রাষ্ট্র থাকুক বা নাই থাকুক৷ বরং এমতাবস্থায় রাষ্ট্র নাথাকারই বেশি সম্ভবনা থাকে৷

      Comment


      • #4
        সংগৃহীত পোষ্টঃ

        রাষ্ট্র ক্ষমতা ছাড়া জিহাদ করা যায় কিনা ?

        সৌদি রাজপরিবারের ভক্ত অনেক আলেম জিহাদের জন্য একটা আজব শর্ত যোগ করেনঃ তা হলো জিহাদের জন্য নাকি রাষ্ট্রক্ষমতা থাকা জরুরী।
        প্রথমতঃ এসব ‘আজব আলেম’দের পূর্বে কোন সলফে সালেহীন এ রকম ‘আজব কথা’ বলেন নি।
        তারা অনেক ব্যাপারে সলফে সালেহীনদের অনুসরণের দাবী করলেও জিহাদের ক্ষেত্রে সলফে সালেহীনদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সৌদি রাজার গুনগ্রাহী আলেমদেরকে অনুসরণ করেন।
        .
        দ্বিতীয়তঃ রাষ্ট্র ক্ষমতা ছাড়াই একত্রিত হয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার দলীল হলো সহীহ বুখারীতে বর্ণিত আবু বছীর (রাঃ) এর ঘটনা। যেখানে বলা হয়েছে হুদাইবিয়ার সন্ধির পর যখন মক্কা থেকে পালিয়ে আসা মুসলমানদেরকে মদীনা থেকে মক্কায় ফেরত দেওয়া হলো। সে সময় আবু বছীর (রাঃ) মদীনাতে পালিয়ে আসেন। তখন কাফিরদের পক্ষ থেকে দুজন দূত তাকে নিতে আসলে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে তাদের হাতে তুলে দেন। পথিমধ্যে তিনি তাদের একজনকে হত্যা করেন এবং আবার মদীনাতে ফিরে আসেন। তাঁকে দেখে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
        وَيْلُ أُمِّهِ مِسْعَرَ حَرْبٍ، لَوْ كَانَ لَهُ أَحَدٌ
        ‘কি আশ্চর্য ! এ তো যুদ্ধ বাধিয়ে দিতে সক্ষম। যদি এর সাথে কেউ থাকতো!’
        এ কথা শুনে আবু বছীর (রাঃ) বুঝতে পারেন যে, তাকে আবার মুশরিকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তাই তিনি বের হয়ে পড়েন এবং সিফাল বাহর নামক এলাকাতে অবস্থান নেন। পরবর্তীতে মুসলমানরা একেরপর এক মক্কা থেকে পালিয়ে এসে আবু বছীর (রাঃ) এর সাথে মিলিত হতে থাকেন। তারা মক্কার যে কোনো ব্যবসায়ী কাফেলার কথা শুনলে তার উপর হামলা করে তাদের হত্যা করতেন এবং তাদের সম্পদ কেড়ে নিতেন। পরে কুরাইশরা রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিকট পত্র লিখে সন্ধির উক্ত শর্তটি বতিল করার অনুরোধ জানায়। (সহীহ বুখারী)
        .
        এই হাদীসে কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট হয়,
        ক) বিশ্ব নেতা বা খলীফা অনুপস্থিত না থাকলে বা তাঁর সাথে যোগাযোগ সম্ভব না হলে স্থানীয়ভাবে আল্লাহর শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করা যায়। কেননা আবু বছীর বা অন্য যেসব সাহাবা উক্ত স্থানে একত্রিত হয়েছিলেন তাদের কেউই খলীফা ছিলেন না। আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেঁচে থাকতে এমন দাবী কখনই যৌক্তিক হতে পারে না। আবার তারা মদীনা রাষ্ট্রের অনুগত নাগরিকও ছিলেন না। তাহলে তারা কুরাইশদের সাথে মদীনা রাষ্ট্রের সন্ধিকে মানতে বাধ্য থাকতেন। তারা যা করেছেন সে বিষয়ে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের নির্দেশ দেন নি। এসকল সাহাবাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা বা নিয়ন্ত্রিত ভূখন্ড ছিল না। এসবই স্পষ্ট প্রমাণ করে যে জিহাদ করার জন্য একজন খলীফা থাকতে হবে বা রাষ্ট্র থাকতে হবে এটা শর্ত নয়।
        অনেকে বলতে পারেন এ ঘটনা একদল সাহাবাদের আমল বর্ণনা করে এটা রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কথা বা কাজ নয়। এর উত্তর হলো রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট এ খবর পৌঁছেছিল কিন্তু তিনি এর নিন্দা করেননি। তাছাড়া রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কথা,
        لَوْ كَانَ لَهُ أَحَدٌ
        যদি এর সাথে কেউ থাকতো!
        .
        এই অংশের ব্যাখ্যায় ইবনে হাজার আল আসকালানী (রঃ) বলেন,
        لَوْ كَانَ لَهُ أَحَدٌ أَيْ يَنْصُرُهُ وَيُعَاضِدُهُ وَيُنَاصِرُهُ وَفِي رِوَايَةِ الْأَوْزَاعِيِّ لَوْ كَانَ لَهُ رِجَالٌ فَلُقِّنَهَا أَبُو بَصِيرٍ فَانْطَلَقَ وَفِيهِ إِشَارَةٌ إِلَيْهِ بِالْفِرَارِ لِئَلَّا يَرُدَّهُ إِلَى الْمُشْرِكِينَ وَرَمَزَ إِلَى مَنْ بَلَغَهُ ذَلِكَ مِنَ الْمُسْلِمِينَ أَنْ يَلْحَقُوا بِهِ قَالَ جُمْهُورُ الْعُلَمَاءِ مِنَ الشَّافِعِيَّةِ وَغَيْرِهِمْ يَجُوزُ التَّعْرِيضُ بِذَلِكَ لَا التَّصْرِيحُ كَمَا فِي هَذِهِ الْقِصَّةِ وَاللَّهُ أَعْلَمُ
        যদি তার সাথে কেউ থাকতো অর্থাৎ যদি তাকে কেউ সাহায্য ও সহযোগীতা করতো। ইমাম আওযাঈ (রঃ) এর রেওয়ায়েতে আছে যদি তার সাথে কিছু লোক থাকতো। এই কথাটি আবু বছীর (রাঃ) কে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে তিনি ফিরে গেছেন। এই কথার মধ্যে ইঙ্গিতে তাঁকে পালিয়ে যেতে বলা হয়েছে যাতে তাকে মুশরিকদের নিকট ফিরিয়ে দিতে না হয় এবং মক্কার অন্যান্য মুসলিমদের মধ্যে যার নিকট এই কথা পৌঁছায় তাকে আবু বছীরের সাথে মিলিত হওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। শাফিঈ মাযহাব ও অন্যান্য বেশিরভাগ আলেমরা বলেছেন (সন্ধি থাকা অবস্থায়) এধরনের কথা আকার ইঙ্গিতে বলা যেতে পারে যেমনটি এই ঘটনায় রয়েছে তবে সরাসরি নয়। (ফাতহুল বারী)
        .
        তৃতীয়তঃ রাষ্ট্র ক্ষমতা ছাড়াও যে জিহাদ ফরজ হয় এ বিষয়ে আর একটি দলীল হলো উবাদা ইবনে সমিত (রাঃ) বর্ণিত হাদীস,
        وَأَنْ لاَ نُنَازِعَ الأَمْرَ أَهْلَهُ، إِلَّا أَنْ تَرَوْا كُفْرًا بَوَاحًا، عِنْدَكُمْ مِنَ اللَّهِ فِيهِ بُرْهَانٌ
        রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের নিকট অঙ্গিকার নিয়েছিলেন যে, আমরা ক্ষমতাশীনদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হবো না যতক্ষন না তারা স্পষ্ট কুফরীতে লিপ্ত হয় যে বিষয়ে আমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ হতে প্রমান বিদ্যমান আছে। (মুত্তাফাকুন আলাইহি)
        এই হাদীসের ভাষ্য হলো ক্ষমতাশীন খলীফা বা বাদশা যদি কুফরীতে লিপ্ত হয় তবে তখনি তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ওয়জিব হবে।
        .
        ইমাম নববী (রঃ) বলেন,
        قَالَ الْقَاضِي عِيَاضٌ أَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ عَلَى أَنَّ الْإِمَامَةَ لَا تَنْعَقِدُ لِكَافِرٍ وَعَلَى أَنَّهُ لَوْ طَرَأَ عَلَيْهِ الْكُفْرُ انْعَزَلَ
        কাজী ঈয়াদ বলেছেন আলেমরা ইজমা করেছেন যে, কোনো কাফির মুসলিমদের ইমাম (খলীফা) হতে পারে না আর যদি পরবর্তীতে কোনো খলীফা কাফির হয়ে যায় তবে তাকে পদচুত করতে হবে। (শরহে মুসলিম)
        .
        এখন একটু চিন্তা করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। ধরুন মুসলিম জাহানের একজন খলীফা রয়েছেন। মুসলিমরা তার আনুগত্য করে চলেছে। এখন যদি হঠাৎ উক্ত খলীফা কাফির হয়ে যায় এবং অস্ত্র বলে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় তবে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নির্দেশ হলো ইসলামী রাষ্ট্রের অধিবাসী মুসলিমরা তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। এখানে রাষ্ট্র ক্ষমতা কিন্তু উক্ত মুরতাদ শাসক ও তার সমর্থকদের দখলে আর মুসলিমরা রাষ্ট্র ক্ষমতাহীন। একজন কাফিরকে রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে হটিয়ে একজন মুসলিমকে সে স্থানে বসানোর জন্য মুসলিমরা যুদ্ধ করবে। তাহলে এ হাদীস এবং উম্মতের ইজমা থেকে রাষ্ট্র ক্ষমতা ছাড়াই জিহাদ শুধু বৈধ নয় বরং ওয়াজিব প্রমানিত হচ্ছে।
        যারা মনে করেন হাদীসে কেবল খলীফা মুরতাদ হয়ে গেলে তাকে অপসারনের কথা বলা হয়েছে। তাছাড়া অন্যান্য মুরতাদ শাসকদের অপসারনের প্রয়োজন নেই। এটা যেমন একদিকে হাদীসের শব্দের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক অন্যদিকে যুক্তির দিক থেকেও হাস্যকর। হাদীসে বলা হয়েছে,
        وَأَنْ لاَ نُنَازِعَ الأَمْرَ أَهْلَهُ، إِلَّا أَنْ تَرَوْا كُفْرًا بَوَاحًا، عِنْدَكُمْ مِنَ اللَّهِ فِيهِ بُرْهَانٌ
        রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের নিকট অঙ্গিকার নিয়েছিলেন যে আমরা ক্ষমতাশীনদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হবো না যতক্ষন না তারা স্পষ্ট কুফরীতে লিপ্ত হয় যে বিষয়ে আমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ হতে প্রমান বিদ্যমান আছে।
        .
        প্রথমে বলা হয়েছে (وَأَنْ لاَ نُنَازِعَ الأَمْرَ أَهْلَهُ) আমরা ক্ষমতাশীনদের সাথে লড়াই করবো না। এখানে খলীফা (خليفة) বা খিলাফত (الخلافة) শব্দ ব্যাবহার করা হয়নি বরং (الامر) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যার অর্থ ক্ষমতা আর (أهل الأمر) শব্দের অর্থ ক্ষমতাসীন। এক কথায় হাদীসের প্রথম অংশে যে কোনো ধরনের ক্ষমতাসীনদের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে নিষেধ করা হয়েছে। পরে বলা হয়েছে (إِلَّا أَنْ تَرَوْا كُفْرًا بَوَاحًا) যতক্ষন না তোমরা স্পষ্ট কুফরী দেখতে পাও। তাহলে ক্ষমতাসীন যে কারো মধ্যে স্পষ্ট কুফরী দেখলে পেলে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বলা হচ্ছে। সে খলীফা হোক বা বাদশা হোক বা জন্মগতভাবেই কাফির হোক।
        .
        এখন যদি কেউ বলেন হাদীসে তোমরা ক্ষমতাশীনদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়োনা বলতে ক্ষমতাসীন খলীফাকে বুঝানো হচ্ছে। এবং স্পষ্ট কুফরী দেখতে পেলে যুদ্ধ করার যে বৈধতা দেওয়া হয়েছে সেটাও খলীফা যখন কুফরী করে তখন প্রযোজ্য, অন্য শাসকদের ক্ষেত্রে নয়। তাদের জন্য কথা হলোঃ
        যদি হাদীসের প্রথম অংশে ক্ষমতাশীনদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়োনা বলতে শুধু খলীফাকে বুঝানো হয় তাহলে তো খলীফা ছাড়া অন্যান্য শাসকদের সাথে যুদ্ধ করা এমনিতেই প্রমানিত হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ হাদীসের অর্থ হবে ক্ষমতাশীন খলীফার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ো না যতক্ষন না তার মধ্যে কুফরী দেখা যায়। আর অন্যান্য শাসক যারা খলীফা নয় তাদের বিরুদ্ধে যে কোনো সময়ই যুদ্ধ করতে পারো। একটু চিন্তা করলেই বিষয়টি বোঝা যাবে।

        ------------------------------------------------------------------------

        #প্রশ্ন – খলিফা ছাড়া কোন জিহাদ নাই। কারন হাদিসে আছে ইমাম হচ্ছেন ঢাল স্বরুপ, তার পিছনে থেকে যুদ্ধ করা হয়। যেহেতু এখন খলিফা বা ইমাম নাই তাই এখন জিহাদ ও নাই। তাহলে কেন আপনার মতো জঙ্গিরা জিহাদ-জিহাদ করে ফিতনা সৃষ্টি করছে? [নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক]
        .
        #উত্তর - বর্তমান সময়ে অনেকেই ফরযে আইন জিহাদ তরক করা, পিছনে বসে এসি রুমে হাল্*কা করা, আলেমদের কিছু কিছু কথায় বিভ্রান্ত হয়ে যান। জিহাদবিমুখ পেছনে বসে থাকাদের সাথে বসে থাকা এসব আলিম, দা’ই, মুফতি, এবং সেলিব্রিটিদের ব্যভৃত যুক্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম যুক্তি হল-
        .
        যেহেতু খলিফা নাই, তাই জিহাদ নাই। আর যেহেতু এখন জিহাদ নাই তাই জিহাদের নামে যা হচ্ছে তা ফিতনা। আর যেহেতু এটা ফিতনা তাই আমাদের এ থেকে দূরে থাকলেই শুধু হবে না। এর বিরোধিতাও করতে হবে। আর এই যুক্তির দুষ্টচক্রের মধ্যে পড়ে তারা শুধু জিহাদবিমুখতায় থেমে থাকেন না, তারা জিহাদবিরোধিতায় পতিত হন। শুধু বসে থাকাদের সাথে বসে থাকায় তাদের গোমরাহি সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের কার্যক্রম ইসলামের শত্রুদের সহায়তা করার পর্যায়ে পৌছে যায়।
        .
        যদি জিজ্ঞাসা করা হয়ঃ হুজুর, (দুঃখিত,‘হে শায়েখ’) জিহাদের জন্য খলিফা শর্ত- এটা কিভাবে বের হলো? এর দলীল কি?
        .
        এই ক্ষেত্রে তাদের অন্যতম দলীল হচ্ছে একটি হাদিস। আর কিছু ভালভাবে না জানলেও দেখা যায় এই হাদিসটি ‘পিছনে বসে থাকা দলটি’ খুব ভালোভাবে মনে রাখে, তা হচ্ছেঃ الإمام جنة يقاتل من ورائه “নিশ্চয়ই ইমাম হচ্ছেন ঢাল স্বরুপ, তার পিছনে থেকে যুদ্ধ করা হয়।” [সহীহ মুসলিম]
        .
        মুরজিয়া শ্রেণী, ইরজাগ্রস্থ ব্যক্তিত্ব, দরবারী আলেম, অন্ধ মাদখালী কিংবা জিহাদবিরোধী অন্যান্য গোষ্ঠীর কাছে পিছনে বসে থাকার জন্য এই হাদিসের অপব্যবহার একটা অন্যতম হাতিয়ার। তাই এই হাদিসের ব্যাপারে একটু যাচাই-বাছাই করা জরুরী।
        .
        আমরা বলিঃ জ্বি, আলহামদুলিল্লাহ। হাদিসটি উত্তম একটি হাদিস। এর শিক্ষাটা খুবই বাস্তবসম্মত। মুসলিমদের জন্য ইমাম বা খলিফা হচ্ছেন, তাদের জন্য ঢালস্বরুপ। খলিফার পিছনে থেকে, তার নির্দেশ ও পরিকল্পণায় জিহাদ হবে। তার কাছে উম্মাহ নিরাপত্তা পাবে। কোথাও কাফিররা আক্রমণ করলে অথবা কেউ নির্যাতিত হলে, খলিফা তাকে নিরাপত্তা দিবেন। কিন্তু আফসোস আমরা সেই রকম ইমামের অধীন এখন নেই। এর জন্য আমাদেরকে চেষ্টা করা উচিত।
        .
        কিন্তু ভাই, এই হাদিস থেকে সলফে সালেহীনদের কেউ কি জিহাদের কোন শর্ত বের করেছেন যে, জিহাদের জন্য একজন খলিফা / ইমাম এর উপস্থিতি শর্ত? খলিফা না থাকলে, কাউকে আমীর নিযুক্ত করে জিহাদ করা যাবে না?
        .
        যদি সালাফরা এ রকম কোন শর্ত বের না করে থাকেন, তাহলে এই যুগে মহিলাদের সাথে পিছনে বসে থাকা কোন আলেম কি এ রকম নতুন একটি শর্ত জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর সাথে জুড়ে দিতে পারবে? না, অবশ্যই না।
        .
        আর মজার ব্যাপার হচ্ছে, ‘ইমাম ঢাল স্বরুপ’ কথাটা শুধু জিহাদ ও ক্বিতালের ব্যাপারে উল্লেখ হয়নি!! বরং নামাজের ইমামের ব্যাপারেও একই শব্দে ‘ইমাম ঢাল স্বরুপ’ কথাটা এসেছে। সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছেঃ
        .
        وفي صحيح مُسْلِم عَن أَبِي هُرَيْرَةَ، عَن النَّبِيّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: إنما الإمام جنة، فإذا صلى قاعداً فصلوا قعوداً، وإذا قَالَ: سَمِعَ الله لمن حمده ، فقولوا : اللهم ربنا لَكَ الحمد
        অর্থাৎ, ‘ইমাম হচ্ছেন ঢাল স্বরুপ। যদি তিনি বসে নামাজ পড়েন, তবে তোমরাও বসে নামাজ পড়ো। যখন তিনি বলেন, ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’, তখন তোমরা বলোঃ ‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা লাকাল হামদ্*’।
        .
        একইভাবে জাবির (রাঃ) থেকে ইমাম দারাকুতনী (রঃ) হাদিস বর্ণনা করেছেনঃ
        .
        إنما الإمام جنة فإذا صلى قائما فصلوا قياما وإن صلى جالسا فصلوا جلوسا -أخرجه الدارقطنى (1/423) .
        অর্থাৎ, ‘ইমাম ঢাল স্বরুপ, যখন তিনি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়েন, তোমরাও দাঁড়িয়ে পড়ো। যখন তিনি বসে নামাজ পড়েন তখন তোমরা বসে নামাজ পড়ো’।
        .
        এখন জিহাদ বিমুখ ব্যক্তিরা কি এটা বলবে, যে এই হাদিসগুলোও খলিফার উপস্থিতির সাথে খাছ??
        .
        এখন কি দাঁড়িয়ে নামাজের জন্য খলিফার উপস্থিতিকে কেউ শর্ত বানিয়ে নিবে?
        .
        এখন কি বসে নামাজের জন্য খলিফার উপস্থিতিকে কেউ শর্ত বানিয়ে নিবে?
        .
        এখন কি নামাজে ‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা লাকাল হামদ্*’ বলার জন্য কেউ খলিফার উপস্থিতিকে কেউ শর্ত বানিয়ে নিবে?
        .
        আজব তাদের যুক্তি! আজব তাদের দলীল! আজব তাদের ফিকহ!!
        .
        পিছনে বসে থাকা ব্যক্তিরা নিশ্চয়ই এখন বলবে, ‘না, এই হাদিসে তো নামাজের ইমামের ব্যাপারে বলা হয়েছে’। আমরাও এটাই বলি। জ্বি, ঐ হাদিসেও জিহাদের ইমাম / নেতা / কমান্ডারের কথা বলা হয়েছে। ঐ হাদিসটিকে খলিফার সাথে খাছ করা হয় নি। এর দ্বারা মুজাহিদগণের আমীর কিংবা সারিয়ার আমীর ইত্যাদি উদ্দেশ্য করা হয়েছে যাদের আনুগত্যের ব্যাপারে একাধিক হাদিস এসেছে।
        .
        এ কারণেই, এই হাদিসের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে হাজার (রঃ) ফাতহুল বা’রীতে উল্লেখ করেছেন,
        .
        وقوله إنما الإمام جنة بضم الجيم أي سترة لأنه يمنع العدو من أذى المسلمين ويكف أذى بعضهم عن بعض والمراد بالامام كل قائم بأمور الناس والله أعلم - فتح الباري - ابن حجر
        অর্থাৎ, ‘এর অর্থ হচ্ছে, ইমাম হচ্ছেন জামার মতো, কারণ তিনি শত্রুদেরকে মুসলিমদের ক্ষতি করা থেকে বিরত রাখেন এবং এক মুসলিম অন্য মুসলিমকে ক্ষতি করা থেকেও বিরত রাখেন। আর ইমাম দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছেঃ মানুষের উপর দায়িত্বশীল প্রত্যেক ব্যক্তি, আল্লাহু আ’লাম’।
        .
        তাই, হাদিসের উল্লেখিত ‘ইমাম’ শব্দকে শুধু খলিফার সাথে খাস করাটা জিহাদ থেকে পিছনে বসে থাকা ব্যক্তিদের একটি মারাত্বক ভুল!! এর দ্বারা তারা নিজেদেরকে প্রতারিত করতে পারবেন কিন্তু আল্লাহ্*র দ্বীনের সাথে এর কোন সম্পর্ক আল্লাহু আ’লাম।
        .
        নেই। তাই জিহাদের কথা বলা ফিতনা না, যখন আল্লাহ নিজেই তাঁর নবীকে ﷺ বলেছেন -অতএব তুমি আল্লাহর রাস্তায় ক্বিতাল কর। তুমি শুধু তোমার নিজের ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং মুমিনদেরকে উদ্বুদ্ধ কর। আশা করা যায় আল্লাহ অচিরেই কাফিরদের শক্তি প্রতিহত করবেন। আর আল্লাহ শক্তিতে প্রবলতর এবং শাস্তিদানে কঠোরতর। [আন-নিসা, ৮৪]
        .
        বরং ফরয তরক করাটাই ফিতনা, দ্বীনের ফরয বিধান ছেড়ে বসে থাকা এবং এর পক্ষে অজুহাত তৈরি করাটাই ফিতনা, হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা করাটাই ফিতনা, কাফির-মুশরিকদের পদাবনত হওয়াটাই ফিতনা, আল্লাহর আইনের বদলে মানবরচিত আইনের অধীনে বসবাস করাটাই ফিতনা, আল্লাহর বদলে আল্লাহর সৃষ্টিকে অধিক ভয় করাটাই ফিতনা, নির্যাতিত মুসলিমদের সাহায্য না করা এবং নিজের নিস্ক্রিয়তাকে জায়েজ করার চেষ্টাই ফিতনা, নিশ্চয় মুসলিমরা দুর্বল এবং কাফিররা মুসলিমদের উপর ক্ষমতাসীন হওয়াটাই ফিতনা - নিশ্চয় শিরক সবচেয়ে বড় ফিতনা, আর যে ব্যক্তি শিরকের সাথে আপোষ করে নেয়, যে ব্যক্তি তাহিদের ব্যাপারে ছাড় দেয় সেই সর্বাধিক ফিতনাগ্রস্থ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত।
        .
        যার কাছে সাত আসমানের উপর থেকে ওহী নাযিল হত তিনি ﷺ বলেছেন –
        .
        .
        সালামাহ বিন নুফাইল (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,
        তারা মিথ্যা বলছে! জিহাদ তো কেবল শুরু হয়েছে, আমার উম্মাতের একটি দল আল্লাহর পথে জিহাদ করতেই থাকবে। বরং আল্লাহ মানুষের মধ্য থেকে কারো কারো হৃদয়কে বক্র করে দিবেন যাতে তারা তাদের বিরদ্ধে লড়াই করতে পারে এবং এবং এই কিতাল থেকে তাদেরকে তিনি রিযক্ব দান করবেন যতক্ষণ না ক্বিয়ামাত কায়েম হয় এবং আল্লাহ্*র ওয়াদা এসে যায়। ঘোড়ার কপালে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত রহমত থাকবে (সুনান নাসায়ি, হাদিস নং ৩৫৬১ – সাহিহ)
        .
        জাবির ইবনে সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
        এই দ্বীন সর্বদা কায়েম থাকবে। মুসলমানের একটি দল এই দ্বীনের সংরক্ষণের জন্য কিয়ামাত পর্যন্ত কিতাল (يُقَاتِلُ যুদ্ধ) করতে থাকবে। (সাহিহ মুসলিম; কিতাবুল ইমারাহ অধ্যায়, হাদিস নং ৪৭১৭, ই.ফা. ৪৮০০)

        Comment


        • #5
          শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ এর কাছে প্রশ্ন - ১

          বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

          এনটিভিতে ইসলামী আলোচক, মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিকহে পিএইচডি ডঃ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ এর জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ এর উপর একটি দীর্ঘ আলোচনা শুনলাম। এটা ইউটিউবে আপলোড করেছে wayofthesalaf.com নামক সাইট। মোট ১ ঘন্টা ২০ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের আলোচনা। আলোচনার লিংকঃ www.youtube.com/watch?v=rHVeZne7Fg4

          পুরো আলোচনা শুনার পর শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ এর বক্তব্যের ব্যাপারে বেশ কিছু প্রশ্ন সামনে আসে। ইনশাআল্লাহ সেগুলো ধীরে ধীরে লিখার চেষ্টা করবো। আশা করি, সম্মানিত শাইখের ছাত্র ও ভক্তরা উনার কাছে প্রশ্নগুলো উত্থাপন করবেন। এবং এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে নিয়ে নিজেরাও সঠিক ব্যাপারটি জানবেন এবং সকলকে সঠিক ব্যাপারটি জানাতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

          একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম, সালাফী / আহলে-হাদিস আলেমরা অনেক ব্যাপারেই নিজেদের মতো করে পর্যাপ্ত দলীল-আদিল্লা দিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু কেন যেন জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভংগীর স্বপক্ষে তারা দলীল দিতে একেবারে অনিচ্ছুক অথবা দলীল খুঁজে পান না।

          যেমনঃ মরহুম ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাংগীর তার ‘ইসলাম ও জঙ্গীবাদ’ নামক বই এ বারংবার এই দাবী করেছেন যে, জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ রাষ্ট্র ছাড়া আমল করা যাবে না। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এর জন্য খলিফা অথবা ইসলামী শাসন লাগবে। কিন্তু এত বড় বইতেও শাইখ এই দাবীর স্বপক্ষে তেমন কোন দলীল অথবা পূর্ববর্তী আলেমদের কোন সিদ্ধান্ত এর উল্লেখ করেন নি।

          একই ব্যাপার, শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ এর এই আলোচনায়। প্রায় দেড় ঘন্টার আলোচনা। কিন্তু শাইখের আলোচনায় তেমন কোন দলীল উনার এই দাবীর পক্ষে শুনলাম না। উনিও এই আলোচনায় বারংবার এই দাবী করেছেন যে, একজন ইমাম বা খলিফা ছাড়া জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ হবে না। জিহাদ করতে হলে ইমাম বা খলিফা কর্তৃক ঘোষিত হতে হবে। বলা যায়, শাইখের পুরো আলোচনার ভিত্তিই ছিল – তার এই দাবী।

          প্রশ্ন-উত্তর পর্বে (আলোচনার ১ ঘন্টা ৫ মিনিট ৩০ সেকেন্ড এ) এক প্রশ্নকারীর প্রশ্নের জবাবে, তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘এই যে এত দলীল দিলাম। আমরা রাসুল সাঃ এর এতগুলো ঘটনার দলীল দিলাম, সমস্ত উলামায়ে কেরামের দলীল দিলাম’।

          অথচ রাসুল (সাঃ) বিভিন্ন ঘটনা থেকে শাইখ এমন এক সিদ্ধান্ত বের করেছেন যা পূর্ববর্তী উলামারা বের করেন নি। তাই শাইখের দেয়া ওহুদ কিংবা আহযাব এর যুদ্ধের দলীল অগ্রহনযোগ্য। কারণ যে কোন একটি ঘটনার সময় একটি বিষয়ের উপস্থিতি ঐ ঘটনার জন্য ঐ বিষয়কে শর্ত হিসেবে নির্দেশ করে না।

          আর সমস্ত উলামায়ে কেরামের দলীল বলতে তিনি ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর একটি আ’ম ক্বওল উল্লেখ করলেন। যা এই শর্তের জন্য অদৌ কোন দলীল নয়। এই ক্বওলের ব্যাপারে পরে বিস্তারিত আলোচনার ইচ্ছা আছে ইনশাআল্লাহ।

          আলোচনার ৫১ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের দিকে শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ বলেন,

          “এজন্য কেউ কেউ শাইখ আব্দুর রহমান ইবনে হাসান (রঃ) থেকে এই বর্ণনা উল্লেখ করেছেন। যে বর্ণনাটা গলদ। আব্দুর রহমান ইবনে হাসান আলে শাইখ (রঃ) তার থেকে কেউ কেউ উল্লেখ করেছেন যে, তিনি বলেছেন জিহাদে দফ্* এর জন্য ইমামের অনুমতির দরকার নেই। আরে ইমামের অনুমতির দরকার নেই - জিহাদ এর ঘোষণা করলো কে? যদি কেউ ঘোষণা করতো তাহলে জিহাদ হতো। ঠিক কিনা? ঘোষণাই তো হয় নাই। যদি ইমাম জিহাদ ঘোষণা করলে তাহলে ঠিক আছে। وإذا استنفرتم فانفروا
          বুখারী শরীফে এসেছে রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের বেরিয়ে যাবার জন্য আহবান করা হয়, তখন বেরিয়ে যাও’।

          যদি ইমাম জিহাদ ঘোষণা করলে তাহলে ঠিক আছে। তাহলে জিহাদ এ দফ এর জন্য সবাই বেরিয়ে যাবে। তখন আর অনুমতির দরকার নেই। ...... কিন্তু যদি জিহাদই ঘোষণা না হয়, সেখানে অনুমতির মাসআলা আসবে না। সেখানে মাসআলা আসবে, জিহাদ ঘোষনা করেছে কে? কেউ যদি জিহাদের ঘোষণা না করে, তাহলে সেই জিহাদে অংশগ্রহন করা মূলতঃ মুসলিমদের কাজ নয়”।
          আসলে দলীল-বিহীন একটি নতুন শর্ত দিয়ে তিনি সৌদি প্রথম গ্রান্ড-মুফতী শাইখ আব্দুর রহমান বিন হাসান (রঃ) এর ক্বওলকে বাতিল বলে ঘোষনা দিয়েছেন!! পরবর্তী পর্বে আমরা শাইখ আব্দুর রহমান ইবনে হাসান (রঃ) এর বর্ণনাটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।

          যাই হোক এখন আমরা শুধু দেখতে চাই, শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ কর্তৃক উল্লেখিত হাদিস দ্বারা পূর্ববর্তী আলেমগণ কি বুঝেছেন? কেউ কি এই হাদিসের উপর ভিত্তি করে, জিহাদের জন্য ইমাম / খলিফা থাকাকে কিংবা ইমাম কর্তৃক জিহাদ এর ঘোষণা দেয়াকে জিহাদের জন্য শর্ত করেছেন?

          ১। ফাতহুল বারীতে ইবনে হাজার আসকালানী (রঃ) ইমাম নববী (রঃ) এর এই ব্যাখ্যাটা উল্লেখ করেছেনঃ

          وإذا استنفرتم فانفروا قال النووي يريد أن الخير الذي انقطع بانقطاع الهجرة يمكن تحصيله بالجهاد والنية الصالحة وإذا أمركم الإمام بالخروج إلى الجهاد ونحوه من الأعمال الصالحة فاخرجوا إليه - فتح الباري - ابن حجر

          অর্থাৎ, ইমাম নববী (রঃ) বলেছেন, মক্কা থেকে হিজরত বন্ধ হবার কারণে যে কল্যাণ / সওয়াবটা বন্ধ হয়ে গেছে, সেটা অর্জন করা সম্ভব হবে জিহাদ, নেক নিয়্যত এর মাধ্যমে। এবং যখন ইমাম তোমাদেরকে জিহাদে বের হবার এবং এরকম নেক আমলের নির্দেশ দিবেন, তখন তোমরা তার দিকে বের হবে’।

          এখানে দেখুন, ইমামের নির্দেশে শুধু জিহাদ নয়, অন্যান্য নেক কাজেও বের হবার কথা ইমাম নববী (রঃ) আলোচনা করেছেন। এছাড়া ইমামের নির্দেশকে জিহাদের জন্য আলাদাভাবে কোন শর্ত হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন নি।

          এখন এটাকে কেউ জিহাদের জন্য শর্ত হিসেবে নিলে কি অন্যান্য নেক আমলের জন্যও কি ইমামের নির্দেশকে শর্ত হিসেবে নিবেন এবং ইমাম অনুপস্থিত দেখে ঐ সকল নেক আমলকেও বাতিল বলবেন।

          ২। উমদাতুল আহকাম এর শরাহতে এসেছেঃ

          "و إذا استنفرتم فانفروا" أي إذا طلبتم للجهاد فأجيبوا - إحكام الأحكام شرح عمدة الأحكام

          এখানেও ব্যাখ্যাকারক ইমামের নির্দেশকে জিহাদের জন্য আলাদাভাবে কোন শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেন নি।

          ৩। ইমাম সুয়ুতী (রঃ) সহীহ মুসলিমের শরাহতে লিখেছেনঃ

          وإذا استنفرتم فانفروا معناه إذا دعاكم السلطان إلى الغزو فاذهبوا إن هذا البلد حرمه الله يوم خلق السماوات -شرح السيوطي على مسلم

          এর অর্থ হচ্ছে, ‘যখন সুলতান তোমাদেরকে গাযওয়ার দিকে আহবান করবে, তখন তোমরা বের হয়ে যাও যদিও এই শহর সৃষ্টির শুরু দিন থেকে আল্লাহ সম্মানিত করেছেন’।

          এখানেও অনুরুপ। ইমাম সুয়ুতী খলিফার ঘোষণা কিংবা নির্দেশকে জিহাদের জন্য আলাদাভাবে কোন শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেন নি। তাহলে শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ নিজে থেকে কিভাবে এই হাদিসের আলোকে জিহাদের জন্য একটি নতুন শর্ত খুঁজে পেলেন।

          ৪। ইমাম নববী (রঃ) শরহে সহীহ মুসলিমে লিখেছেনঃ

          ( واذا استنفرتم فانفروا ) معناه اذا طلبكم الامام للخروج إلى الجهاد فاخرجوا وهذا دليل على أن الجهاد ليس فرض عين بل فرض كفاية اذا فعله من تحصل بهم الكفاية سقط الحرج عن الباقين وان تركوه كلهم اثموا كلهم - شرح النووي على صحيح مسلم

          অর্থাৎ, ‘ইমাম যদি তোমাদেরকে যুদ্ধে বের হবার জন্য আহবান করেন, তাহলে তোমরা বের হয়ে যাও। আর এটা হচ্ছে প্রমাণ যে, জিহাদ (আসলে) ফরজে আইন নয় বরং ফরজে কিফায়া। একদলের আমল দ্বারা বাকীদের উপর থেকে এর দায়িত্ব মুক্তি আসে। এর সবাই এটা পরিত্যাগ করলে, সকলেই গুনাহগার হবে’।

          তাহলে দেখা যাচ্ছে, এই হাদিস থেকে ইমাম নববী (রঃ) একটা সিদ্ধান্ত প্রমাণ করেছেন যে, জিহাদ আসলে ফরজে কিফায়াহ। এই হাদিস থেকে উনিও খলিফার ঘোষণা কিংবা নির্দেশকে জিহাদের জন্য আলাদাভাবে কোন শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেন নি।

          ৫। এই হাদিস থেকে ইবনে হাজার (রঃ) উল্লেখ করেছেনঃ

          قال الحافظ ابن حجر : " وفيه وجوب تعيين الخروج في الغزو على من عينه الإمام " .

          ‘এর মধ্য (এই প্রমাণ রয়েছে যে) ইমাম কাউকে নির্দিষ্ট করে দিলে তার জন্য জিহাদে বের হওয়া ওয়াজিব হয়ে যায়’।

          তাহলে দেখা যাচ্ছে, উপরে উল্লেখিত উম্মাতের বড় বড় ইমামগণ এই হাদিস থেকে বিভিন্ন শিক্ষা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু কেউই শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহর দেয়া জিহাদের জন্য নতুন এই শর্তকে উল্লেখ করেন নি।

          তাই, আমরা বিনীতভাবে শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহর কাছে জানতে চাই, এই উম্মাতের কোন কোন ইমাম ও আলেম, কোন কোন মুহাদ্দিস, কোন কোন হাদিসের ব্যাখ্যাকারক, কোন কোন মুজতাহিদ ইমাম উল্লেখিত এই হাদিস থেকে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর এর জন্য একজন ইমাম থাকা অথবা ইমাম কর্তৃক জিহাদ ঘোষণাকে শর্ত বের করেছেন?

          আশা করি, আপনার কাছ থেকে উত্তর পেলে আমরা ও এদেশে আপনার শ্রোতামন্ডলীরা এই হাদিসের ব্যাপারে সঠিক ও পরিপূর্ণ ধারনা পাবেন ইনশাআল্লাহ।

          - চলবে ইনশাআল্লাহ।




          ************************************************** ************************************************** *
          শাইখ ডঃ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ এর কাছে প্রশ্ন – ২

          রাসুল (সাঃ) কি আবু বাছির (রাঃ) ও উনার সাথীদেরকে এটা বলেছিলেন – তোমরা কুরাইশদেরকে হত্যা করে ভুল করেছো কারণ তোমরা ইমামের অধীনে নেই?

          শাইখ ডঃ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ‘জিহাদ’ বিষয়ে একটি আলোচনা করেছেন। এটা ইউটিউবে আপলোড করেছে wayofthesalaf.com নামক একটি সাইট। লিংকঃ www.youtube.com/watch?v=rHVeZne7Fg4

          পুরো আলোচনা শুনার পর শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ এর বক্তব্যের ব্যাপারে বেশ কিছু প্রশ্ন সামনে আসে। ইনশাআল্লাহ সেগুলো ধীরে ধীরে লিখার চেষ্টা করবো। আশা করি, সম্মানিত শাইখের ছাত্র ও ভক্তরা উনার কাছে প্রশ্নগুলো উত্থাপন করবেন। এবং এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে নিয়ে নিজেরাও সঠিক ব্যাপারটি জানবেন এবং সকলকে সঠিক ব্যাপারটি জানাতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

          ‘শাসক ছাড়া জিহাদের ডাক দেয়া যাবে না, এ ব্যাপারে ক্লিয়ার কাট এভিডেন্স রয়েছে কি?’ – এই প্রশ্নের জবাবে শাইখ উক্ত আলোচনার ১ ঘন্টা ৫ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডে বলেছেনঃ

          “আর আবু বাছির এর এই ঘটনাটি সম্পূর্ণভাবে রাসুল (সাঃ) নিজেও গ্রহণ করেন নি। যারা এই ধারনা করেছেন, এটা গলদ এবং বিভ্রান্তিকর। আবু বাছির এর এই ঘটনাটি সম্পূর্ণভাবে রাসুল (সাঃ) নিজেই গ্রহণ করেন নি এর দলীল হচ্ছে দুইবার তাকে রাসুল (সাঃ) ফেরত দিয়েছেন। তার কথাকে রাসুল (সাঃ) গ্রহন করেন নি”।

          শাইখের এই দাবী শুনে কিছুটা আশ্চর্য্য হয়ে গেলাম। এরপর আবু বাছির (রাঃ) সম্পর্কিত হাদিসটি আবার পড়তে শুরু করলাম। এ সংক্রান্ত রেওয়ায়াতগুলোতে এমন কোন হাদিস পেলাম না, যেখানে রাসুল (সাঃ) এর কাছে আবু বাছির (রাঃ) জিহাদ করার অনুমতি চাচ্ছেন, আর রাসুল (সাঃ) তাকে জিহাদের অনুমতি না দিয়ে ফেরত দিয়েছেন। মুসনাদে আহমাদে এই ব্যাপারে বিস্তারিত এসেছে। ঐ হাদিসের উল্লেখযোগ্য অংশগুলো হচ্ছেঃ

          فَجَاءَهُ أَبُو بَصِيرٍ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ وَهُوَ مُسْلِمٌ وَقَالَ يَحْيَى عَنِ ابْنِ الْمُبَارَكِ فَقَدِمَ عَلَيْهِ أَبُو بَصِيرِ بْنُ أُسَيْدٍ الثَّقَفِيُّ مُسْلِمًا مُهَاجِرًا فَاسْتَأْجَرَ الْأَخْنَسَ بْنَ شَرِيقٍ رَجُلًا كَافِرًا مِنْ بَنِي عَامِرِ بْنِ لُؤَيٍّ وَمَوْلًى مَعَهُ وَكَتَبَ مَعَهُمَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْأَلُهُ الْوَفَاءَ فَأَرْسَلُوا فِي طَلَبِهِ رَجُلَيْنِ فَقَالُوا الْعَهْدَ الَّذِي جَعَلْتَ لَنَا فِيهِ

          “অতঃপর কুরাইশের জনৈক ব্যক্তি, আবু বাছির মুসলমান হয়ে তাঁর কাছে আসেন। আর ইয়াহইয়া, ইবনুল মুবারক থেকে এভাবে বর্ণনা করেন- অতঃপর আবু বাছির ইবনে উসাইদ আস-সাকাফী মুসলমান হয়ে হিজরত করে তাঁর নিকট আসেন। তখন কুরাইশরা বনী আমের ইবনে লুওয়াই এর জনৈক কাফের ব্যক্তি, আখনাস ইবনে শারীক ও তার সাথে একজন গোলাম ভাড়া করে তাদের কাছে রাসূল (সাঃ) এর প্রতি চুক্তি পূরণের আবেদন জানিয়ে লিখিত একটি পত্র হস্তান্তর করে। অতঃপর তারা দুই ব্যক্তিকে তার সন্ধানে প্রেরণ করে। তারা বলল- আমাদের সাথে কৃত চুক্তি পুরণ করুন!”

          অর্থাৎ, এটা পরিষ্কার যে, রাসুল (সাঃ) প্রথমবার আবু বাছির (রাঃ)-কে ফিরিয়ে দেয়ার সময়ঃ

          - কোন জিহাদের আলোচনা হয় নি।
          - আবু বাছির (রাঃ), রাসুল (সাঃ) এর কাছে জিহাদের কোন অনুমতি প্রার্থনা করেন নি।
          - বরং প্রথমবার ফিরিয়ে দেয়ার কারণ ছিল হুদায়বিয়ার সন্ধি, যে কারণে অন্য অনেককে ফেরত দেয়া হয়েছিল।

          فَدَفَعَهُ إِلَى الرَّجُلَيْنِ فَخَرَجَا بِهِ حَتَّى بَلَغَا بِهِ ذَا الْحُلَيْفَةِ فَنَزَلُوا يَأْكُلُونَ مِنْ تَمْرٍ لَهُمْ فَقَالَ أَبُو بَصِيرٍ لِأَحَدِ الرَّجُلَيْنِ وَاللَّهِ إِنِّي لَأَرَى سَيْفَكَ يَا فُلَانُ هَذَا جَيِّدًا فَاسْتَلَّهُ الْآخَرُ فَقَالَ أَجَلْ وَاللَّهِ إِنَّهُ لَجَيِّدٌ لَقَدْ جَرَّبْتُ بِهِ ثُمَّ جَرَّبْتُ فَقَالَ أَبُو بَصِيرٍ أَرِنِي أَنْظُرْ إِلَيْهِ فَأَمْكَنَهُ مِنْهُ فَضَرَبَهُ حَتَّى بَرَدَ وَفَرَّ الْآخَرُ

          “তাই তিনি উক্ত দুই ব্যক্তির নিকট তাকে সমর্পণ করেন। তারা তাকে নিয়ে রওয়ানা দেয়। তারা যুলহুলাইফায় পৌঁছে খেজুর খাওয়ার জন্য থামে। তখন আবু বাছির (রাঃ) দুই ব্যক্তির এক ব্যক্তিকে বললেন, হে অমুক! আল্লাহর শপথ, তোমার তরবারীটি উন্নতমানের মনে হচ্ছে! তখন অপরজন তা কোষমুক্ত করে বলল, হ্যাঁ, আল্লাহর শপথ! এটা খুব ভাল। আমি এটার ব্যাপারে বহু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। আবু বাছির (রাঃ) বললেন, আমাকে একটু এটা দেখতে দাও! সে তাকে এর সুযোগ দিল। ফলে তিনি তাকে আঘাত করে হত্যা করলেন। আর অপরজন পালিয়ে গেল।”

          حَتَّى أَتَى الْمَدِينَةَ فَدَخَلَ الْمَسْجِدَ يَعْدُو فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقَدْ رَأَى هَذَا ذُعْرًا فَلَمَّا انْتَهَى إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ قُتِلَ وَاللَّهِ صَاحِبِي وَإِنِّي لَمَقْتُولٌ

          “সে মদীনায় এসে পৌঁছলো। অতঃপর দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে মসজিদে নববীতে প্রবেশ করল। তাকে দেখে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, সে তো ভয়ার্ত। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকটে পৌঁছে সে বলল, আল্লাহর শপথ! আমার সাথীকে হত্যা করা হয়েছে, আমাকেও হত্যা করা হবে।”

          এরপর আবু বাছির (রাঃ) এসে পৌঁছেন। ঐ সময় আবু বাছির (রাঃ), রাসুল (সাঃ)-কে কি বলেছেন? আর রাসুল (সাঃ) এর উত্তর কি ছিল? সেটা আমাদের এই আলোচনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

          فَجَاءَ أَبُو بَصِيرٍ فَقَالَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ قَدْ وَاللَّهِ أَوْفَى اللَّهُ ذِمَّتَكَ قَدْ رَدَدْتَنِي إِلَيْهِمْ ثُمَّ أَنْجَانِي اللَّهُ مِنْهُمْ

          ‘এরপর আবু বাছির (রাঃ) এসে বললেন, হে আল্লাহর নবী (সাঃ) আল্লাহ আপনার চুক্তিকে রক্ষা করেছেন। আপনি আমাকে তাদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, অতঃপর আল্লাহ আমাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন’।

          উল্লেখ্যঃ সহীহ বুখারী, সুনানে আবু দাউদ, সহীহ ইবনে হিব্বান, সুনান বায়হাকী, মুসান্নাফে আব্দুর রায্*যাক, মু’যাম আল কাবির ইত্যাদি সকল হাদিস গ্রন্থেই আবু বাছির (রাঃ) এর এই একই কথা এসেছে। কোন শব্দেরও হেরফের হয়নি।

          এটা ছিল রাসুল (সাঃ) এর কাছে এসে আবু বাছির (রাঃ) এর ২য় বার পালিয়ে এসে বলা কথা। তাহলে দেখা যাচ্ছে ২য় বার পালিয়ে এসে আবু বাছির (রাঃ)

          - কোন জিহাদের আলোচনা করেন নি।
          - রাসুল (সাঃ) এর কাছে কোন জিহাদের অনুমতি প্রার্থনা করেন নি।

          এরপর নবী (সাঃ) এর উত্তর ছিল এইঃ

          فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيْلُ أُمِّهِ مِسْعَرَ حَرْبٍ لَوْ كَانَ لَهُ أَحَدٌ

          “তখন রাসুল (সাঃ) বললেন, তার মায়ের জন্য আফসোস! (এটা আবেগ প্রকাশে আরবে প্রচলিত একটি কথা), এটা তো যুদ্ধের স্ফুলিংগ, তার জন্য যদি কেউ থাকতো”।

          এই ছিল রাসুল (সাঃ) উত্তর। উপরে উল্লেখিত সবগুলো হাদিসের কিতাবে একই কথা এসেছে, শুধু ইবনে হিব্বানে مِسْعَرَ حَرْبٍ কথাটা বাদ পরেছে।

          فَلَمَّا سَمِعَ ذَلِكَ عَرَفَ أَنَّهُ سَيَرُدُّهُ إِلَيْهِمْ فَخَرَجَ حَتَّى أَتَى سِيفَ الْبَحْرِ

          “এরপর আবু বাছির (রাঃ) এই কথা শুনে বুঝতে পারলেন যে উনাকে অচিরেই তাদের কাছে ফেরত দেয়া হবে, উনি বের হয়ে গেলেন এবং সিফাল বাহার নামক জায়গায় চলে গেলেন”।

          তাহলে শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ এর উপরুক্ত কথার ব্যাপারে বলা যায়ঃ

          - হ্যাঁ, আবু বাছির (রাঃ) এর হিজরত করে মদীনায় যাবার ঘটনা রাসুল (সাঃ) নিজে গ্রহন করেন নি। এর কারণ ছিল হুদাইবিয়ার চুক্তি।
          - দুইবারই আবু বাছির (রাঃ)-কে রাসুল (সাঃ) ফিরিয়ে দিয়েছেন। তবে সেটা ছিল উনার হিজরত করে মদীনার যাবার ব্যাপারে।
          - পরবর্তীতে আবু বাছির (রাঃ) এর জিহাদকে রাসুল (সাঃ) গ্রহন করেন নি, এ রকম কোন ইশারা এই ঘটনায় পাওয়া যায় না।
          - তাই ‘শাসক ছাড়া জিহাদের ডাক দেয়া যাবে না, এ ব্যাপারে ক্লিয়ার কাট এভিডেন্স রয়েছে কি?’ - এই প্রশ্নের উত্তরে আবু বাছির (রাঃ)-কে রাসুল (সাঃ) দুই বার ফিরিয়ে দেয়ার কথা উল্লেখ করার কোন যৌক্তিকতা নেই।
          - আবু বাছির (রাঃ)-কে দুইবার ফেরত দেয়ায় কিংবা রাসুল (সাঃ) তার কথা গ্রহণ না করায় শাসক/খলিফা ছাড়া জিহাদ করা যাবে না বলে প্রমাণিত হয় না। বরং এই ঘটনা উল্লেখ করে এই দাবী করাই বাতিল ও বিভ্রান্তিকর বলে প্রমাণিত হবে। কারণ এটা ছিল মদীনায় আশ্রয় লাভের ব্যাপারে। আর এই ব্যাপারে হুদাইবিয়ার চুক্তির কারণে রাসুল (আঃ) অপারগ ছিলেন।

          قَالَ وَيَتَفَلَّتُ أَبُو جَنْدَلِ بْنُ سُهَيْلٍ فَلَحِقَ بِأَبِي بَصِيرٍ فَجَعَلَ لَا يَخْرُجُ مِنْ قُرَيْشٍ رَجُلٌ قَدْ أَسْلَمَ إِلَّا لَحِقَ بِأَبِي بَصِيرٍ حَتَّى اجْتَمَعَتْ مِنْهُمْ عِصَابَةٌ قَالَ فَوَاللَّهِ مَا يَسْمَعُونَ بِعِيرٍ خَرَجَتْ لِقُرَيْشٍ إِلَى الشَّامِ إِلَّا اعْتَرَضُوا لَهَا فَقَتَلُوهُمْ وَأَخَذُوا أَمْوَالَهُمْ فَأَرْسَلَتْ قُرَيْشٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُنَاشِدُهُ اللَّهَ وَالرَّحِمَ لَمَّا أَرْسَلَ إِلَيْهِمْ فَمَنْ أَتَاهُ فَهُوَ آمِنٌ فَأَرْسَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَيْهِمْ

          “বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আবু জান্দাল ইবনে সুহাইলও বের হয়ে আবু বাছিরের সাথে শরীক হন। এরপর কুরাইশের যে ব্যক্তিই ইসলাম গ্রহণ করে বেরিয়ে পড়ত, সেই আবু বাছিরের সাথে মিলিত হত। এমনকি তাদের একটি দল হয়ে যায়। বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহর শপথ! তারা যখনই কোন কুরাইশ কাফেলার শামের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার সংবাদ শুনতেন, তখনই তাদের পথ আটকাতেন। তাদেরকে হত্যা করতেন এবং তাদের সম্পদ নিয়ে নিতেন। ফলে কুরাইশরা অতিষ্ঠ হয়ে আল্লাহ ও আত্মীয়তার দোহাই দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে পত্র পাঠায়, যেন তিনি তাদেরকে মদীনায় ডেকে পাঠান। আর এরপর থেকে যে (মদীনায়) চলে আসবে, সে নিরাপদ। তাই রাসূল (সাঃ) তাদেরকে ডেকে পাঠালেন।”

          সুবহানাল্লাহ, এখানে দেখা যাচ্ছে, এক দল সাহাবা (রাঃ) একত্রিত হয়ে আবু বাছির (রাঃ) এর সাথে কুরাইশদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ করেছেন।

          তাহলে প্রশ্ন আসে, একদল সাহাবা (রাঃ) একত্রে রাসুল (সাঃ) এর সময়েই

          - শাসকের অনুমতি / ঘোষণা ছাড়া,
          - খলিফার অনুমতি / ঘোষণা ছাড়া,
          - এমনকি স্বয়ং রাসুল (সাঃ) এর অনুমতি / ঘোষণা ছাড়া কুরাইশ কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করেছেন।

          কেউ এই দাবীও করার সুযোগ নেই যে, রাসুল (সাঃ) এই জিহাদের ঘোষণা দিয়েছেন কারণ তখন রাসুল (সাঃ) কুরাইশদের সাথে যুদ্ধ না করার চুক্তিতে আবদ্ধ ছিলেন।

          আরেকটি ব্যাপার হলোঃ যদি আবু বাছির (রাঃ) এর এই জিহাদ আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এর অপছন্দনীয় হতো, তাহলে একদল সাহাবা (রাঃ) আজমাইন একত্রে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এর অপছন্দীয় কাজ দীর্ঘদিন ধরে করতে থাকেন কিভাবে?

          আর রাসুল (সাঃ) এই পুরো সময়কালে নিরব থাকারই বা অর্থ কি? নিরব থাকার অর্থ কি এটা নয় যে, আবু বাছির (রাঃ) এর জিহাদী কার্যক্রমের ব্যাপারে রাসুল (সাঃ) এর সমর্থন রয়েছে?
          তাহলে আমরা দেখলামঃ

          - আবু বাছির (রাঃ) গেরিলা জিহাদকে রাসুল (সাঃ) গ্রহন করেন নি – এই কথার কোন ভিত্তি নেই।
          - আবু বাছির (রাঃ)-কে দুইবার মদীনা থেকে ফিরিয়ে দেয়ার কারণ ছিল হুদাইবিয়ার চুক্তি। এর সাথে আবু বাছির (রাঃ) এর গেরিলা জিহাদের কোন সম্পর্ক ছিল না।
          - মক্কা থেকে পরবর্তীতে যারাই ইসলাম গ্রহন করতেন, তারাই আবু বাছির (রাঃ) এর ইসাবাতে শরীক হয়ে যেতেন। রাসুল (সাঃ) নও-মুসলিম সাহাবা (রাঃ)-দের এই কর্মকান্ডকে, আবু বাছির (রাঃ) এর গেরিলা জিহাদকে, শাসকের অনুমতি ছাড়া, খলিফার ঘোষণা ছাড়া, স্বয়ং রাসুল (সাঃ) এর অনুমতি ছাড়া জিহাদকে নিষেধ করেন নি। বরং মৌনতা অবলম্বন করেছেন। আর রাসুল (সাঃ) এর গোচরীভূত ব্যাপারে তাঁর মৌনতা অবলম্বন মানে সেটা অনুমোদিত।

          উপরুক্ত এই কথাগুলো বুঝার পর, আমরা দেখবো যে, রাসুল (সাঃ), আবু বাছির (রাঃ) এর গেরিলা জিহাদকে, শাসকের / খলিফার ঘোষণা ছাড়া জিহাদকে বরং ইশারার মাধ্যমে (কুরাইশদের সাথে সন্ধির কারণে সরাসরি করেন নি) উৎসাহিত করেছেন। রাসুল (সাঃ) উৎসাহিত করেছেন তাঁর لَوْ كَانَ لَهُ أَحَدٌ কথার মাধ্যমে।

          (১) ইবনে হাজার (রঃ) ফাতহুল বারীতে এই কথার ব্যাখ্যায় লিখেছেনঃ

          قوله لو كان له أحد أي ينصره ويعاضده ويناصره وفي رواية الأوزاعي لو كان له رجال فلقنها أبو بصير فانطلق وفيه إشارة إليه بالفرار لئلا يرده إلى المشركين ورمز إلى من بلغه ذلك من المسلمين أن يلحقوا به - فتح الباري - ابن حجر

          "যদি তাকে সাহায্য-সহযোগিতা ও শক্তি যোগনোর জন্য কেউ থাকতো। ইমাম আওযায়ী (রঃ) এর রেওয়ায়াতে এসেছে, “যদি তার পক্ষে কিছু লোক থাকতো! আবু বাছির (রাঃ) কথাটি বুঝে নিলেন। তাই তিনি চলে গেলেন”। এখানে আবু বাছির (রাঃ) এর জন্য ইশারা ছিল, যেন উনি পালিয়ে যান, যাতে উনাকে মুশরিকদের নিকট ফেরত দিতে না হয় এবং এই খবর যে সকল মুসলিমদের কাছে পৌঁছবে, তারা যেন তার সাথে গিয়ে মিলিত হন"।

          সুবহানাল্লাহ!! দেখা যাচ্ছে, আবু বাছির (রাঃ) এর এই ঘটনায় শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ আমাদেরকে এমন কথা বলছেন, যা ইবনে হাজার (রঃ) এর ব্যাখ্যার পুরো উল্টো!! তাহলে আমরা এখন কোনটা গ্রহণ করবো??

          (২) আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী (রঃ) এর উমদাতুল ক্বারীতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ

          قوله لو كان له أحد جواب لو محذوف أي لو فرض له أحد ينصره ويعاضده - عمدة القاري شرح صحيح البخاري

          “‘তার জন্য যদি কেউ থাকত’ কথাটির বাকি অংশ উহ্য। পূর্ণ কথাটি হচ্ছে- তার জন্য যদি কেউ থাকত, যে তাকে সাহায্য করবে ও শক্তি যোগাবে।”

          অর্থাৎ, আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী (রঃ) ব্যাখ্যাও শাইখ সাইফুল্লাহর কথার সম্পূর্ণ বিপরীত।

          (৩) ইবনে বাত্তাল (রঃ) সহীহ বুখারীর ব্যাখায় একই রকম কথা বলেছেন। তিনি বলেনঃ

          قوله: « لو كان له أحد » يعنى: من ينصره ويمنعه، ففهمها أبو بصير، وخرج إلى سيف البحر، وجعل يطلب غرة أهل مكة، وآذاهم حتى لحق به أبو جندل وجماعة، شرح البخاري لابن بطال

          “অর্থাৎ, যে তাকে সাহায্য করবে ও রক্ষা করবে। আবু বাছির (রাঃ) কথাগুলো বুঝলেন এবং সিফাল বাহারে চলে গেলেন। আর মক্কাবাসীকে অতর্কিত আক্রমণ করে শাস্তি দিতে থাকেন। পরবর্তীতে আবু জান্দাল (রাঃ) সহ এক দল (মুসলিম) তার সাথে যুক্ত হন”।

          তাহলে দেখা যাচ্ছে, ইবনে বাত্তাল (রঃ) একই ব্যাপারকে শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ এর মতো বুঝেন নি। বরং আবু বাছির (রাঃ) এর প্রতি রাসুল (সাঃ) এর একটি ইশারা হিসেবে দেখেছেন যার উপর আবু বাছির (রাঃ) আমল করেছেন। আর রাসুল (সাঃ) যেখানে ইশারা করেছেন, সেখানে জিহাদকে গলদ ও বিভ্রান্তিকর বলে উল্লেখ করা কি যুক্তি-সংগত?

          পরিশেষে আমরা নজদ এলাকার অন্যতম ইমাম, শাইখ আব্দুর রহমান বিন হাসান (রঃ) যিনি শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্*হাব (রঃ) এর নাতি, এর রিসালার একটি অংশ উল্লেখ করতে চাই। শাইখ আব্দুর রহমান বিন হাসান (রঃ) ইবনে নাবহান এর বিভ্রান্তি (সে দাবী করেছিল, ইমাম / খলিফা ছাড়া জিহাদ নেই) রদ্* করতে গিয়ে আবু বাছির (রাঃ) এর ঘটনা আলোচনা করে বলেছেনঃ

          لما جاء مهاجراً فطلبت قريش من رسول الله صلى الله عليه وسلم أن يرده إليهم، بالشرط الذي كان بينهم في صلح الحديبية، فانفلت منهم حين قتل المشركيْن، اللذين أتيا في طلبه. فرجع إلى الساحل لما سمع رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: ويل أمه مسعر حرب، لو كان معه غيره" فتعرض لعير قريش - إذا أقبلت من الشام - يأخذ ويقتل،

          “তিনি হিজরত করে চলে আসলে কুরাশরা হুদায়বিয়ার সন্ধির শর্ত মোতাবেক রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট তাকে ফেরত দেওয়ার দাবি করে। তিনি তাকে খুঁজতে আসা দুই মুশরিককে হত্যা করে পালিয়ে যান। তিনি যখন শুনলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘এটা যুদ্ধের স্ফুলিং, তার সাথে যদি কেউ থাকত!’ তখন তিনি সমুদ্রোপকুলের দিকে চলে যান এবং কোন কোরাইশ কাফেলা শাম থেকে আসতে লাগলে তাদের পথ রোধ করতেন। তাদের মাল ছিনিয়ে নিতেন এবং তাদেরকে হত্যা করতেন।”

          فاستقل بحربهم دون رسول الله صلى الله عليه وسلم، لأنهم كانوا معه في صلح - القصة بطولها. فهل قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: أخطأتم في قتال قريش، لأنكم لستم مع إمام؟ سبحان الله ما أعظم مضرة الجهل على أهله؟ عياذاً بالله من معارضة الحق بالجهل والباطل - الدرر السنية في الأجوبة النجدية ،

          “তারা তাদের এই যুদ্ধে রাসুল (সাঃ) থেকে আলাদা / স্বাধীন ছিলেন, কারণ কুরাইশরা তখন রাসুল (সাঃ) এর সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ ছিল – এভাবে ঘটনার শেষ পর্যন্ত। তখন রাসুল (সাঃ) কি এটা বলেছিলেন – তোমরা কুরাইশদেরকে হত্যা করে ভুল করেছো কারণ তোমরা ইমামের অধীনে নেই? সুবহানাল্লাহ, অজ্ঞতা মানুষের কি পরিমাণ ক্ষতি করে? আল্লাহর কাছে অজ্ঞতা ও বাতিলের মাধ্যমে সত্যের বিরোধিতা করা থেকে আশ্রয় চাই”। (আদ দুরার আস-সানিয়া)

          তাই আমরা শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ এর কাছে বিনীতভাবে জানতে চাই,

          - আবু বাছির (রাঃ) এর ঘটনার ব্যাপারে আপনার বক্তব্যের সাথে উল্লেখিত ইমামদের ব্যাখ্যা ও উপলব্ধি মিলছে না – এখন আমরা কার কথাকে গলদ ও বিভ্রান্তিকর মনে করবো?
          - রাসুল (সাঃ) কি আবু বাছির (রাঃ) ও উনার সাথীদেরকে এটা বলেছিলেন – তোমরা কুরাইশদেরকে হত্যা করে ভুল করেছো, কারণ তোমরা ইমাম / খলিফার অধীনে নেই?

          আশা করি প্রশ্নগুলোর উত্তর দিবেন। এতে আমরা ও এদেশে আপনার দর্শক-শ্রোতা আবু বাছির (রাঃ) এর ঘটনার ব্যাপারে সঠিক ধারনা পাবেন ইনশাআল্লাহ।

          শাইখ ডঃ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ এর কাছে প্রশ্ন ১ - bit.ly/1XCMmCU

          - ইনশাআল্লাহ চলবে।

          Comment


          • #6

            ************************************************** *************************************************
            শাইখ ডঃ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ এর কাছে প্রশ্ন – ৩

            ‘বর্তমানে কি মুসলিমরা খলিফা / ইমাম নাই বলে ঈদ করা ছেড়ে দিবে? বাংলাদেশের মুসলিম জনগণ কোন খলিফা / ইমামের অধীনে থেকে বংশ পরম্পরায় ঈদ পালন করছেন’?

            আলোচনার ২০ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের দিকে শাইখ বলেছেনঃ “জিহাদের যতগুলো পদ্ধতি তার মধ্যে একটি হচ্ছে, জিহাদ ঘোষণা হতে হবে এমন ব্যক্তির পক্ষ থেকে যিনি কেবলমাত্র মুসলমানদের ক্ষমতার অধিকারী। মুসলমানরা তার ক্ষমতার ব্যাপারে একমত হয়েছে। অর্থাৎ মুসলিম শাসক যার ইমামতির ব্যাপারে সমস্ত মুসলমানগণ, সেই প্রেক্ষাপটের মুসলমানগণ সবাই একমত হয়েছেন যে তিনি ইমাম, তিনি ঘোষনা করবেন জিহাদ। রাসুল (সাঃ) জিহাদ ঘোষণা করেছেন। শুধু জিহাদ নয় বরং এ বিষয়ে শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) মাজমুয়া আল ফতোয়ার মধ্যে উল্লেখ করেছেন, তিনি বলেছেন যে,
            ‘মুসলমানদের ঈদ, জামাত, জুমুয়া, হজ্ব, সিয়াসা বা রাজনীতি এবং জিহাদ এইগুলো মূলত ইমাম এর দায়িত্ব’।

            এছাড়া আলোচনার প্রশ্নউত্তর পর্বে ‘শাসক ছাড়া জিহাদের ডাক দেয়া যাবে না, এ ব্যাপারে ক্লিয়ার কাট এভিডেন্স রয়েছে কি?’ – এই প্রশ্নের জবাবেও (১ ঘন্টা ৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ড) শাইখ ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর একই উক্তি উল্লেখ করেছেন।

            এই পর্বে আমরা মূলতঃ ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর কথাটি একটি বিস্তারিত দেখতে চাই। শাইখের উল্লেখিত কথার ২/১ লাইন আগে থেকে ঐ কথার ২/১ লাইন পর পর্যন্ত আমরা দেখতে চাই। যাতে ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর কথার অর্থ পুরোপুরি বুঝা যায়। ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর কথাটি হচ্ছেঃ

            وروى الإمام أحمد في المسند عن عبد الله بن عمرو أن النبي صلى الله عليه و سلم قال : [ لا يحل لثلاثة يكونوا بفلاة من الأرض إلا أمروا عليهم أحدهم ] فأوجب صلى الله عليه و سلم تأمير الواحد في الاجتماع القليل العارض في السفر تنبيها بذلك على سائر أنواع الاجتماع

            ইমাম আহমদ তার মুসনাদে আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ‘তিন জন ব্যক্তির জন্য বৈধ নয় নিজেদের মধ্যে একজনকে আমীর নিয়োজিত না করে দুনিয়ার কোন প্রান্তে সফর করা’। রাসুল (সাঃ) সফরে বের হওয়া ছোট্ট জামাতের জন্যও একজনকে আমীর নিয়োজিত করা ওয়াজিব করেছেন। এ থেকে অন্য সকল ধরনের ইজতিমার জন্যও এর গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়।

            ولأن الله تعالى أوجب الأمر بالمعروف والنهى عن المنكر ولا تتم ذلك إلا بقوة وإمارة

            এছাড়া যেহেতু আল্লাহ তায়ালা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ-কাজে নিষেধকে ওয়াজিব করেছেন এবং এটা শক্তি ও নেতৃত্ব ছাড়া সম্পন্ন করা যায় না।

            وكذلك سائر ما أوجبه من الجهاد والعدل وإقامة الحج والجمع والأعياد ونصر المظلوم وإقامة الحدود لا تتم إلا بالقوة والإمارة

            একইভাবে এ ধরনের যত ব্যাপার আছে যা আল্লাহ ওয়াজিব করেছেন যেমনঃ জিহাদ, ন্যায় প্রতিষ্টা, হজ্ব, জুম’আ, ঈদ, মজলুমদের সাহায্য, হুদুদ প্রতিষ্টা – এগুলো শক্তি ও নেতৃত্ব ছাড়া সম্পন্ন করা যায় না।

            ولهذا روى :[أن السلطان ظل الله في الأرض] ويقال : [ستون سنة من إمام جائر أصلح من ليلة بلا سلطان] -السياسة الشرعية[1/217]

            এ কারণেই বলা হয়ঃ ‘সুলতান হচ্ছেন পৃথিবীতে আল্লাহর ছায়া’। আরো বলা হয়ঃ ‘সুলতান ছাড়া এক রাত থেকে অত্যাচারী ইমামের অধীনে ষাট বছরও উত্তম”। - সিয়াসাতুশ শরীয়াহ (পৃষ্টা ১)
            এই হচ্ছে ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর সেই কথা – যা শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ এই আলোচনায় জিহাদের জন্য ইমাম শর্তের পক্ষে দলীল হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

            গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায়ঃ

            ১। ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এই কথাটি আসলে লিখেছেন তার সিয়াসাতুশ শরীয়াহ কিতাবের একদম শুরুর দিকে। ২১৭ পৃষ্টার বই এর একেবারে ১ম পৃষ্টার ১ম প্যারায়। ২১৭ পৃষ্টার কোন বই এর ১ম পাতার ১ম প্যারায়ই কেউ কোন একটি বিষয়ে ফতোয়া প্রদান করার কথা না। জিহাদের জন্য ইমাম / খলিফা শর্ত কিনা তাও লেখার কথা না। বরং যেকোন কিতাবের প্রথমে সাধারণ কিছু ভূমিকা থাকে, যা বই এর মূল আলোচ্য বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট। আর এই কিতাবের বিষয় যেহেতু ইসলামী সিয়াসাত, তাই শুরুতেই নেতৃত্বের ব্যাপারে ইবনে তাইমিয়া (রঃ) হাদিস উল্লেখ করে এর গুরুত্ব বুঝানোর চেষ্টা করেছেন।

            ২। উল্লেখিত কথাটিও খুবই ব্যাপক একটা কথা। এখানে তিনি সফরে তিন ব্যক্তির আমীর নির্ধারণ করার হাদিস উল্লেখ করে ব্যাপকভাবে যে কোন জামায়াতের জন্য আমীর থাকার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। কেউ এই এক লাইন থেকে এই দাবী করা হাস্যকর হবে যে, জিহাদে একজন খলিফা / ইমাম লাগবে।

            ৩। যদি শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ ইবনে তাইমিয়ার এই কথা থেকে এই দাবী করেন, এই কথার মধ্যে জিহাদের জন্য একজন ইমাম থাকাকে ইবনে তাইমিয়া (রঃ) শর্ত করেছেন, তাহলে প্রশ্ন আসবেঃ

            - তাহলে ঈদের ব্যাপারেও তো একই লাইনে বলা আছে। তাহলে বর্তমানে কি মুসলিমরা খলিফা / ইমাম নাই বলে ঈদ করা ছেড়ে দিবে? শাইখ আপনি কি বাংলাদশে ঈদ পালন করেন না? বাংলাদেশের মুসলিম জনগণ কোন খলিফা / ইমামের অধীনে থাকায় বংশ পরম্পরায় ঈদ পালন করছেন?
            - হজ্জ্ব এর ব্যাপারেও একই কথা আসবে। এখন মুসলিমদের খলিফা / ইমাম নাই দেখে কি মুসলিমরা হজ্ব করা ছেড়ে দিবে? হজ্বের জন্যও কি একজন খলিফা / ইমাম থাকা শর্ত? বর্তমানে কোন খলিফা / ইমামের অধীনে হজ্জ্ব অনুষ্ঠিত হয়? নাকি এই হজ্জ্বগুলো সবই বাতিল বলে গন্য হবে?
            - জুম’আর ক্ষেত্রেও কি এই শর্ত আসবে না? এখন মুসলিমদের খলিফা / ইমাম নাই দেখে কি মুসলিমরা জুম’আ আদায় করা ছেড়ে দিবে? জুম’আর জন্যও কি একজন খলিফা / ইমাম থাকা শর্ত? বর্তমানে কোন খলিফা / ইমামের অধীনে জুম’আ অনুষ্ঠিত হয়? নাকি এই জুম’আগুলো সবই বাতিল বলে গন্য হবে?
            ৪। বরং ইবনে তাইমিয়ার (রঃ) এর এই কথার ব্যাখ্যা এর আগের লাইনেই আছে যেখানে তিনি বলেছেনঃ ‘রাসুল (সাঃ) সাধারণ সফরে বের হওয়া ছোট্ট জামাতের জন্যও একজনকে আমীর নিয়োজিত করা ওয়াজিব করেছেন। এ থেকে অন্য সকল ধরনের ইজতিমার জন্যও এর গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়’।

            অর্থাৎ সাধারণভাবে সকল জামাতে একজন আমীর থাকা প্রয়োজন। আমীরের অধীনে মুসলিমরা থাকা প্রয়োজন। তাই কেউ এই লাইন থেকে শিক্ষা নিলে এটা বলতে পারে যে, সকল জমায়াতে যেন আমীর নিয়োগ দেয়া হয়। হজ্বেও যেন আমীর নিয়োগ দেয়া হয়। সেই আমীরের অধীনে হজ্ব হবে। ঈদও যেন একটা নেতৃত্বের অধীনে হয়। জিহাদেও মুজাহিদরা যেন একজন আমীর নিয়োগ দিয়ে কাজ করেন। কারণ তিনজন সফরে গেলে আমীর নিয়োগ দেয়ার কথা। তাহলে জিহাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতে অবশ্যই আমীর নিয়োগ দেয়া উচিত। এই কথা বললে, সেটা একটা যুক্তি-সংগত কথা হতো। আর সকলেই জানেন, আলহামুদলিল্লাহ দুনিয়ার যে কোন প্রান্তের জিহাদী তানজীমই তাদের মধ্যে আমীর নির্ধারন করে থাকেন।

            এ কারণেই নজদের বিখ্যাত ইমাম, শাইখ আব্দুর রহমান বিন হাসান (রঃ) বলেছেন,

            كل من قام بالجهاد في سبيل الله فقد أطاع الله وأدى ما فرضه الله ولا يكون الإمام إماماً إلا بالجهاد إلا أنه لا يكون جهاد إلا بإمام-الدرر السنية 7/97

            ‘প্রত্যেক ব্যক্তি যে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর জন্য দাঁড়িয়ে গেল, সে আল্লাহর আনুগত্য করল এবং আল্লাহ যা ফরজ করেছেন তা আদায় করল। জিহাদ ছাড়া কোন ইমাম, ইমামই (খলীফা) হতে পারে না, যদিও জিহাদও ইমাম ছাড়া করা যায় না।’

            ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর কথাটি শাইখ আব্দুর রহমান বিন হাসান (রঃ) এর কথার আলোকে বুঝলে আশা করি সবার কাছে তা পরিষ্কার হবে। আর এ ব্যাপারে সবাই অবগত যে শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব ও নজদের আলেমগণ ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর কিতাবগুলো খুবই বিস্তারিতভাবে অধ্যয়ন করেছেন এবং উনাদের উপর ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর চিন্তাধারা খুবই প্রভাব বিস্তার করেছিল।

            ৫। এর থেকেও উল্লেখযোগ্য কথা হলোঃ ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এখানে সুষ্পষ্টভাবে এই কথা উল্লেখ করেন নি যে,

            ‘জিহাদের জন্য একজন ইমাম কিংবা খলিফা থাকা শর্ত’ - যা শাইখ সাইফুল্লাহ প্রমাণ করতে চেয়েছেন। এখানে ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর আলোচনার বিষয়বস্তুও জিহাদ ছিল না। না তিনি এখানে জিহাদের শর্তাবলী আলোচনা করছিলেন। তাই এ রকম কোন আলোচনার একটি লাইন উল্লেখ করে সেটাকে জিহাদের জন্য একটি শর্ত হিসেবে দেখনো কতটুকু যুক্তিসংগত হবে?

            ৬। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলোঃ ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) যেখানে জিহাদের আলোচনা করেছেন সেখানে বরং প্রতিরক্ষামূলক জিহাদে কোন ধরনের শর্ত নেই বলে সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। ফাতওয়া আল কুব্*রা এর কিতাবুল জিহাদে ইবনে তাইমিয়া (রঃ) বলেছেনঃ

            وَأَمَّا قِتَالُ الدَّفْعِ فَهُوَ أَشَدُّ أَنْوَاعِ دَفْعِ الصَّائِلِ عَنْ الْحُرْمَةِ وَالدِّينِ فَوَاجِبٌ إجْمَاعًا فَالْعَدُوُّ الصَّائِلُ الَّذِي يُفْسِدُ الدِّينَ وَالدُّنْيَا لَا شَيْءَ أَوْجَبَ بَعْدَ الْإِيمَانِ مِنْ دَفْعِهِ فَلَا يُشْتَرَطُ لَهُ شَرْطٌ بَلْ يُدْفَعُ بِحَسَبِ الْإِمْكَانِ-الفتاوى الكبرى

            “আর প্রতিরোধমূলক যুদ্ধ হচ্ছে মুসলমানদের সম্মান ও দ্বীন রক্ষার জন্য আগ্রাসীকে প্রতিহত করার সবচেয়ে কঠিন প্রকার।এটা সর্বসম্মতিক্রমে ওয়াজিব। সুতরাং ঈমানের পর দ্বীন ও দুনিয়া ধ্বংসকারী আগ্রাসী শত্রুকে প্রতিহত করার চেয় বড় ফরজ কিছু নেই। এর জন্য কোন শর্ত নেই। বরং সামর্থ অনুযায়ী প্রতিরোধ করতে হবে”।

            প্রশ্ন হচ্ছেঃ জিহাদের জন্য ইমাম থাকা শর্ত কিনা এই ব্যাপারে শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর একটি সুষ্পষ্ট বক্তব্য বাদ দিয়ে কেন আমরা একটি আ’ম এবং অষ্পষ্ট বক্তব্যকে শাইখের অবস্থান হিসেবে ধরে নিবো?

            ৭। ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রঃ) যাদুল মা’য়াদ কিতাবে হুদাইবিয়ার সন্ধি থেকে কিছু ফিকহী উপকারিতা অধ্যায়ে আলোচনায় বলেছেনঃ

            ومنها : أن المعاهدين إذا عاهدوا الإمام فخرجت منهم طائفة فحاربتهم وغنمت أموالهم ولم يتحيزوا إلى الإمام لم يجب على الإمام دفعهم عنهم ومنعهم منهم وسواء دخلوا في عقد الإمام وعهده ودينه أو لم يدخلوا والعهد الذي كان بين النبي صلى الله عليه و سلم وبين المشركين لم يكن عهدا بين أبي بصير وأصحابه وبينهم وعلى هذا فإذا كان بين بعض ملوك المسلمين وبعض أهل الذمة من النصارى وغيرهم عهد جاز لملك آخر من ملوك المسلمين أن يغزوهم ويغنم أموالهم إذا لم يكن بينه وبينهم عهد كما أفتى به شيخ الإسلام في نصارى ملطية وسبيهم مستدلا بقصة أبي بصير مع المشركين -زاد المعاد - ابن القيم الجوزية 3/267

            “এর মধ্যে এটাও রয়েছে যে, যখন চুক্তিবদ্ধ গোষ্ঠী খলিফা/ইমাম এর সাথে চুক্তি করে, এরপর কোন তয়িফা তাদের (চুক্তিবদ্ধগোষ্টী) থেকে বের হয়ে যায়, এরপর তাদের সাথে যুদ্ধ করে এবং তাদের মালামাল থেকে গনীমাত অর্জন করে এবং তারা ইমামের দিকে না আসে, তাহলে ইমামের জন্য জরুরী নয় যে, তাদেরকে চুক্তিবদ্ধ গোষ্টী থেকে নিরাপত্তা দেয়া অথবা চুক্তিবদ্ধ গোষ্টীকে ঐ তয়িফার ব্যাপারে (কার্যক্রম গ্রহণ করতে) বাঁধা দেয়া। এই ক্ষেত্রে তারা (ঐ তয়িফা) ইমামের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হোক বা না হোক, প্রতিশ্রুতি দিক বা না দিক ও দ্বীনে প্রবেশ করুক বা না করুক - তা সমান হবে। আর নবী (সাঃ) ও মুশরিকদের মধ্যে যে চুক্তি ছিল, আবু বাসির (রাঃ) ও তার সাথীদের সাথে মুশরিকদের ঐ চুক্তি ছিল না। এর উপর ভিত্তি করে বলা যায়, কোন রাজা যদি খ্রীষ্টান অথবা অন্য কোন আহলু জিম্মার সাথে চুক্তি করে, অন্য কোন মুসলিম রাজার জন্য তাদেরকে আক্রমণ করা ও তাদের মাল থেকে গনীমাত নেয়া জায়েজ রয়েছে যদি তাদের সাথে কোন চুক্তি না থাকে। মুশরিকদের সাথে আবু বাসির (রাঃ) এর এই ঘটনা উপর ভিত্তি করে শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) মাল্টা এর খ্রীষ্টানদের ব্যাপারে ও তাদেরকে বন্দী করার ব্যাপারে ফতোয়া দিয়েছেন”।

            তাহলে দেখা যাচ্ছে, বাস্তবে ইবনে তাইমিয়া (রঃ) আবু বাসির (রাঃ) এর ঘটনার উপর ভিত্তি করে ফতোয়া দিয়েছেন। সেই ফতোয়ার ভিত্তি হচ্ছেঃ আবু বাসির (রাঃ), রাসুল (সাঃ) এর অধীনস্ত না থেকে জিহাদ করেছেন। অর্থাৎ, আবু বাসির (রাঃ) এর এই জিহাদ যে সঠিক ছিল, সেটা ইবনে তাইমিয়া (রঃ) গ্রহন করেছেন। শুধু গ্রহন করেই ক্ষান্ত হন নি, এর উপর ভিত্তি করে একটি ফতোয়াও দিয়েছেন।

            একইভাবে এই ব্যাপারে শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর অবস্থান জানা ও একই রকম অবস্থান রাখার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী রয়েছে উনার অন্যতম ছাত্র ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রঃ) এর। আর এই মাপের আলেমরা তাদের শাইখদের অবস্থানকে কিভাবে অনুসরণ করেন, তা সহজেই অনুমেয়। সেই ইবনুল কাইয়্যিম (রঃ) হুদাইবিয়ার সন্ধি থেকে শিক্ষা বের করেছেনঃ

            “এর মধ্যে এটাও রয়েছে যে, যখন চুক্তিবদ্ধ গোষ্টী খলিফা/ইমাম এর সাথে চুক্তি করে, এরপর কোন তয়িফা তাদের (চুক্তিবদ্ধগোষ্টী) থেকে বের হয়ে যায়, এরপর তাদের সাথে যুদ্ধ করে এবং তাদের মালামাল থেকে গনীমাত অর্জন করে এবং তারা ইমামের দিকে না আসে, তাহলে ইমামের জন্য জরুরী নয় যে, তাদেরকে চুক্তিবদ্ধ গোষ্টী থেকে নিরাপত্তা দেয়া অথবা চুক্তিবদ্ধ গোষ্টীকে ঐ তয়িফার ব্যাপারে (কার্যক্রম গ্রহণ করতে) বাঁধা দেয়া”।

            বলার অপেক্ষা রাখে না, এই তয়িফা মুসলিম হলে তারা জিহাদ করবে, খলিফা এর অধীনস্থ না থেকেই। যা আবু বাসির (রাঃ) এর ক্ষেত্রে হয়েছিল। তাহলে ইবনুল কায়্যিম (রঃ) এর অবস্থানও এই ক্ষেত্রে শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ এর অবস্থান এর উল্টো।

            এখন আমরা আলোচ্য বিষয়ে ইবনে তাইমিয়া (রঃ) অবস্থান কোনটা ধরে নিবো? শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ এর উল্লেখকৃত অবস্থান নাকি ইবনুল কায়্যিম (রঃ) এর উল্লেখকৃত অবস্থান?

            তাই আমরা শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ এর কাছে বিনীতভাবে জানতে চাই,

            o বর্তমানে কি মুসলিমরা খলিফা / ইমাম নাই বলে ঈদ করা ছেড়ে দিবে? বাংলাদেশের মুসলিম জনগণ কোন খলিফা / ইমামের অধীনে থেকে বংশ পরম্পরায় ঈদ পালন করছেন?
            o ‘জিহাদের জন্য একজন ইমাম কিংবা খলিফা থাকা শর্ত’ – এ রকম কোন কথা শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) কোথাও হুবহু উল্লেখ করেছেন কিনা?
            o জিহাদের জন্য ইমাম থাকা শর্ত কিনা এই ব্যাপারে শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর একটি সুষ্পষ্ট বক্তব্য বাদ দিয়ে কেন আমরা একটি আ’ম এবং অষ্পষ্ট বক্তব্যকে শাইখের অবস্থান হিসেবে ধরে নিবো?
            o আমরা আলোচ্য বিষয়ে ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর অবস্থান কোনটা ধরে নিবো – আপনার উল্লেখকৃত অবস্থান নাকি ইবনুল কায়্যিম (রঃ) এর উল্লেখকৃত অবস্থান?
            আশা করি শাইখ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিবেন। এতে আমরা ও এদেশে আপনার দর্শক-শ্রোতা আবু বাছির (রাঃ) এর ঘটনার ব্যাপারে সঠিক ধারনা পাবেন ইনশাআল্লাহ।


            ************************************************** ************************************************
            শাইখ ডঃ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ এর কাছে প্রশ্ন – ৪

            সালাফে সালেহীনদের মধ্য থেকে কোন কোন মুজতাহিদ ইমাম, কোন কোন সীরাত বিশেষজ্ঞ, কোন কোন উসুলশাস্ত্রবিদ আপনার উল্লেখিত ঘটনাগুলোর কারণে জিহাদের জন্য একজন রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি / ঘোষণাকে শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন?
            ১। উল্লেখিত আলোচনার ১ ঘন্টা ৫ মিনিট ১৪ সেকেন্ড এ শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ এক প্রশ্ন-উত্তরে বলেছেন, “শাসক ছাড়া জিহাদের ডাক দেয়া যাবে না, এ ব্যাপারে ক্লিয়ার কাট এভিডেন্স রয়েছে কি? হ্যাঁ, অবশ্যই আছে। অবশ্যই আছে। একটা-দুইটা না। আমরা তো এতগুলো (দলীল দিলাম)। এবং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর এতগুলো দলীল দিলাম। এবং সমস্ত উলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর এতগুলো দলীল দিলাম। যেখানে রাসুল (সাঃ) বলেছেন যে, মানে, আমীর নির্ধারন করে দিয়েছেন এবং আমীরের অনুমতির মাধ্যমে জিহাদ করার কথা বলা হয়েছে”।

            অর্থাৎ শাইখের এই কথার মাধ্যমে প্রমাণিত হচ্ছে, উনি মনে করেনঃ শাসকের অনুমতি অথবা ঘোষনা ছাড়া কোন জিহাদ করা যাবে না। সেটা প্রতিরক্ষামূলক জিহাদ হলেও। শাইখের এই মতবাদের পক্ষে একটি দলীল হলো রাসুল (সাঃ) এর জীবনের বিভিন্ন ঘটনা।

            আমরা এই পর্বে উক্ত আলোচনায় শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহর আলোচনায় আসা ঘটনাগুলো একটু বিস্তারিত দেখার চেষ্টা করবো এবং শাইখের দেয়া দলীল বিস্তারিতভাবে বুঝার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

            ঘটনা-১।
            আলোচনার ২২ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের দিকে শাইখ বলেছেনঃ “সুবহানাল্লাহ রাসুল (সাঃ) এর উপস্থিতিতে, রাসুল (সাঃ) মদীনায় আছেন, নির্যাতিত হচ্ছিল মক্কায়, একদল মুসলমান ঠিক কিনা? কুরআনে কারীমের এই আয়াত সাক্ষী। তাদের উপর নির্যাতন চালানো হচ্ছিল। কিন্তু রাসুল (সাঃ) জিহাদ ঘোষনা করেছেন কিনা? ঘোষণা করার তো আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ না দিলে ঘোষণা করতে পারবেন না। নিজের খায়েস মতো জিহাদ ঘোষনা করে দিলে এটি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে চার আনারও কোন দাম নাই। রাসুল (সাঃ) ঘোষণা করেন নাই। তারপর যখন এই আয়াত নাযিল হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে ‘যাদেরকে অত্যাচার করা হচ্ছে, তাদেরকে জিহাদের অনুমতি দেয়া হলো, কারণ তারা নির্যাতিত’। অন্যায়ের কারণে এই অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই নির্দেশ আসার পর রাসুল (সাঃ) জিহাদের কমন ঘোষণা দিলেন যে, হ্যাঁ এখন জিহাদ করা যেতে পারে। শুধু একটা প্রেক্ষাপট তৈরী হলেই (হবে না), সেখানে ইসলাম কি দাবী করে - সেটা আমাদেরকে জানতে হবে।”। [উল্লেখ্যঃ আলোচনার সময় শাইখকে বেশ উত্তেজিত মনে হচ্ছিল]

            এটা হচ্ছে, শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ মাদানী এর উল্লেখকৃত রাসুল (সাঃ) এর জীবনের ১ম ঘটনা। এই ঘটনা কিভাবে শাইখের দাবীকে প্রমাণ করে, তা মোটেও সুস্পষ্ট না যেটাকে উপরুক্ত প্রশ্নের উত্তরে একটা দলীল হিসেবে উল্লেখ করা যায়। এই ঘটনা থেকে শুধু এতটুকু বুঝা যাচ্ছে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জিহাদের বিধান নাযিল করার আগ পর্যন্ত রাসুল (সাঃ) জিহাদের অনুমতি দেন নাই। বরং মক্কার মুসলিমদের উপর অনেক নির্যাতন চললেও তিনি সবর করেছেন। অতঃপর জিহাদের অনুমতির আয়াত নাযিল হবার পর তারা জিহাদ শুরু করেছেন।

            এই ঘটনা থেকে যদি শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ এই দাবী করে থাকেন যে, জিহাদের অনুমতির আয়াত নাযিলের সময় যেহেতু রাসুল (সাঃ) রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন, এবং তিনিই সাহাবা (রাঃ)-দেরকে জিহাদের প্রতি আহবান করেছেন এবং বিভিন্ন জিহাদে প্রেরণ করেছেন, তাই এটা থেকে প্রমাণিত হয় যে, জিহাদের জন্য (হোক সেটা প্রতিরক্ষামূলক কিংবা আক্রমণাত্বক) রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি / ঘোষণা একটি শর্ত। এটা না হলে জিহাদ সহীহ হবে না।

            এক্ষেত্রে আমাদের প্রশ্ন থাকবে, সম্মানিত শাইখঃ

            ক) রাসুল (সাঃ) এর জীবনে / উপস্থিতিতে যেকোন ঘটনা ঘটলে কি সেই সময় উপস্থিত সকল কিছু সেই আমলের জন্য শর্ত হয়ে যায়? যদি রাসুল (সাঃ) এর অনুমতিতে / ঘোষণায় জিহাদ হবার কারণে জিহাদের জন্য রাষ্ট্রপ্রধান শর্ত হয়, তাহলেঃ

            - কেন জিহাদের জন্য একজন নবী উপস্থিত থাকাও একটি শর্ত হবে না?
            - কেন জিহাদের জন্য একজন রাসুল (শুধু নবী হলেই চলবে না) উপস্থিত থাকাও একটি শর্ত হবে না?
            - কেন একজন নবী / রাসুল এর অনুমতি / ঘোষণা জিহাদ এর জন্য শর্ত হবে না?

            কারণ রাসুল (সাঃ) তো ঐসময় একাধারে নবীও ছিলেন, রাসুলও ছিলেন, রাষ্ট্রপ্রধানও ছিলেন। আপনি কোন কোন দলীলের ভিত্তিতে রাসুল (সাঃ) এর রাষ্ট্রপ্রধান সত্ত্বাকে এর জন্য শর্ত করেছেন কিন্তু নবী কিংবা রাসুল এর সত্ত্বাকে শর্ত করেন নি?

            খ) একইভাবে প্রশ্ন আসবে, রাসুল (সাঃ) এর সময় মুসলিমরা রোযাও রেখেছেন। যেভাবে ‘কুতিবা আলাইকুমুস সিয়াম’ নাযিল হয়েছে একইভাবে ‘কুতিবা আলাইকুমুল ক্বিতাল’ও নাযিল হয়েছে। যদি রাসুল (সাঃ) এর অনুমতিতে / ঘোষণায় জিহাদ হবার কারণে জিহাদের জন্য রাষ্ট্রপ্রধান শর্ত হয়, তাহলেঃ

            - কেন রোযার জন্য একজন নবী উপস্থিত থাকাও শর্ত হবে না?
            - কেন রোযার জন্য একজন রাসুল (শুধু নবী হলেই চলবে না) উপস্থিত থাকাও একটি শর্ত হবে না?

            অনুরুপভাবে রাসুল (সাঃ) হজ্ব করেছেন, যাকাত আদায় করেছেন – এই সবকিছুতে কি একই রকম শর্ত জুড়ে দেয়া যায় না?

            গ) সম্মানিত শাইখ, আপনারাই তো সবাইকে শেখান যে, কুরআন-হাদিসকে নিজের উপলব্ধি অনুযায়ী বুঝলে হবে না, সালাফে সালেহীনদের উপলব্ধি অনুযায়ী বুঝতে হবে। তাহলে সালাফে সালেহীনদের মধ্য থেকেঃ

            - কোন কোন মুজতাহিদ ইমাম?
            - কোন কোন সীরাত বিশেষজ্ঞ?
            - কোন কোন ফকীহ?
            - কোন কোন উসুলশাস্ত্রবিদ?

            আপনার উল্লেখকৃত ঘটনার কারণে জিহাদের জন্য রাষ্ট্রপ্রধান থাকাকে শর্ত করেছেন? আমাদেরকে বিস্তারিত জানাবেন ইনশাআল্লাহ। যাতে আমরা সঠিকভাবে সালাফে সালেহীনদেরকে অনুসরণ করতে পারি।


            ঘটনা-২।
            আলোচনার ৫০ মিনিট ২০ সেকেন্ডে শাইখ জিহাদ দুই প্রকার উল্লেখ করে বলেনঃ “জিহাদে তলব এর জন্য যেমনিভাবে (খলিফা / রাষ্ট্রপ্রধান থাকা) শর্ত, জিহাদুদ দফ্* এর জন্য তেমনিভাবে শর্ত। তাহলে আপনি প্রতিহত করবেন কিভাবে? মানে বিশৃখলভাবে প্রতিহত করলে সেটা কোনদিন প্রতিহতই হবে না। রাসুল (সাঃ) ওহুদের যুদ্ধে জিহাদে তলব করেছেন নাকি জিহাদে দফ্* করেছেন এনিয়ে উলামায়ে কেরামের খেলাফ রয়েছে। অধিকাংশ আহলু সিয়ার বলেছেন, ওহুদের যুদ্ধে রাসুল (সাঃ) জিহাদে দফ্* করেছেন। এইটা প্রতিরক্ষামূলক জিহাদ ছিল। কারণ কাফিররা তো চলেই এসেছে মদীনার পাশে ওহুদের যুদ্ধে। তারপরে আহযাবের যুদ্ধে রাসুল (সাঃ) জিহাদে দফে করেছেন। হুনায়ুন এর যুদ্ধে রাসুল (সাঃ) জিহাদে দফে করেছেন। প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধ করেছেন। এই সবগুলো যুদ্ধে রাসুল (সাঃ) কেবল নিজেই ছিলেন একমাত্র কমান্ডার। এবং এখান থেকে প্রমাণিত হয় যে, কোন দফ্*, রাসুল (সাঃ) বা সাহাবীরা যে বলেছেন, হ্যাঁ, কাফিররা চলে এসেছে, বের হয়ে যাও। যার যেমন যেভাবে খুশী সেভাবে বেরিয়ে যাও। তাহলে কোনদিন প্রতিরক্ষা হবে না। প্রতিরক্ষার জন্য শর্ত হচ্ছে সেটা জিহাদ হতে হবে। শৃখংলাবদ্ধ হতে হবে”।

            এই হলো শাইখের উল্লেখকৃত অপর কিছু ঘটনা যা থেকে তিনি দলীল দিয়েছেন। অর্থাৎ রাসুল (সাঃ) এর সময় বিভিন্ন প্রতিরক্ষামূলক জিহাদে তিনি আমীর বা কমান্ডার ছিলেন। এই কারণে প্রতিরক্ষামূলক জিহাদেও রাষ্ট্রপ্রধান বা খলিফার অনুমতি অথবা ঘোষণা একটি শর্ত।

            এই ব্যাপারেও আমরা পূর্বের মতো উল্লেখ করবোঃ

            ক) রাসুল (সাঃ) এর জীবনে / উপস্থিতিতে যেকোন ঘটনা ঘটলে কি সেই সময় উপস্থিত সকল কিছু সেই আমলের জন্য শর্ত হয়ে যায়? যদি রাসুল (সাঃ) এর অনুমতিতে / ঘোষণায় ওহুদ, আহযাব ও হুনায়ুনের যুদ্ধ হবার কারণে প্রতিরক্ষামূলক জিহাদের জন্য রাষ্ট্রপ্রধান শর্ত হয়, তাহলেঃ

            - কেন জিহাদের জন্য একজন নবী উপস্থিত থাকাও একটি শর্ত হবে না?
            - কেন জিহাদের জন্য একজন রাসুল (শুধু নবী হলেই চলবে না) উপস্থিত থাকাও একটি শর্ত হবে না?
            - কেন একজন নবী / রাসুল এর অনুমতি / ঘোষণা জিহাদ এর জন্য শর্ত হবে না?

            কারণ রাসুল (সাঃ) তো ঐসময় একাধারে নবীও ছিলেন, রাসুলও ছিলেন, রাষ্ট্রপ্রধানও ছিলেন। আপনি কোন কোন দলীলের ভিত্তিতে রাসুল (সাঃ) এর রাষ্ট্রপ্রধান সত্ত্বাকে এর জন্য শর্ত করেছেন কিন্তু নবী কিংবা রাসুল এর সত্ত্বাকে শর্ত করেন নি?

            খ) একইভাবে প্রশ্ন আসবে, রাসুল (সাঃ) এর সময় মুসলিমরা রোযাও রেখেছেন। যেভাবে ‘কুতিবা আলাইকুমুস সিয়াম’ নাযিল হয়েছে একইভাবে ‘কুতিবা আলাইকুমুল ক্বিতাল’ও নাযিল হয়েছে। যদি রাসুল (সাঃ) এর অনুমতিতে / ঘোষণায় জিহাদ হবার কারণে জিহাদের জন্য রাষ্ট্রপ্রধান শর্ত হয়, তাহলেঃ

            - কেন রোযার জন্য একজন নবী উপস্থিত থাকাও শর্ত হবে না?
            - কেন রোযার জন্য একজন রাসুল (শুধু নবী হলেই চলবে না) উপস্থিত থাকাও একটি শর্ত হবে না?

            অনুরুপভাবে রাসুল (সাঃ) হজ্ব করেছেন, যাকাত আদায় করেছেন – এই সবকিছুতে কি একই রকম শর্ত জুড়ে দেয়া যায় না?

            গ) সম্মানিত শাইখ, আপনারাই তো সবাইকে শেখান যে, কুরআন-হাদিসকে নিজের উপলব্ধি অনুযায়ী বুঝলে হবে না, সালাফে সালেহীনদের উপলব্ধি অনুযায়ী বুঝতে হবে। তাহলে সালাফে সালেহীনদের মধ্য থেকেঃ

            - কোন কোন মুজতাহিদ ইমাম?
            - কোন কোন সীরাত বিশেষজ্ঞ?
            - কোন কোন ফকীহ?
            - কোন কোন উসুলশাস্ত্রবিদ?

            ওহুদ, আহযাব ও হুনায়ুনের যুদ্ধের ঘটনার কারণে জিহাদের জন্য রাষ্ট্রপ্রধান / খলিফার অনুমতি অথবা ঘোষণা থাকা শর্ত করেছেন? আমাদেরকে বিস্তারিত জানাবেন ইনশাআল্লাহ। যাতে আমরা সঠিকভাবে সালাফে সালেহীনদেরকে অনুসরণ করতে পারি।

            নিজেদেরকে ধংশে নিক্ষেপ করাঃ
            ২। আলোচনার ২৫ মিনিট ২০ সেকেন্ডের সময় আরাকানের মুসলিমদের জন্য কি করা যাবে তা আলোচনা করতে গিয়ে শাইখ বলেছেনঃ

            “কিন্তু আমাদের সাধ্যের বাইরে যা সেটা আমরা করতে পারবো না। এখন গোটা পৃথিবীতে রাষ্ট্রীয় সীমারেখা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এর বাইরে আপনার যাবার কোন ক্ষমতা নেই। এর বাইরে যাবার চেষ্টা করলে আপনি নিজেকে হালাক্* বা ধ্বংশ করলেন। وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ
            তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংশের দিকে ঠেলে দিলে ইচ্ছাকৃতভাবে। আপনি সেখানে গেলেই আপনাকে গুলি করে হত্যা করা হবে। সেখানে আপনার যাবারই কোন সুযোগ নেই”।

            সম্মানিত শাইখ, আপনি নিজেকে একটি সামান্য মোবাইল চালনায়ও অক্ষম মনে করলেও আপনিই তো সৌদি আরবে দীর্ঘদিন থেকে থিসিস কমপ্লিট করেছেন। আপনি একা একা হয়তো সেখানে একাধিকবার সফর করেছেন। আপনি নিজেকে এত দূর্বল, হীন মনে করছেন কেন? প্রস্তুতি নিলে আপনিও ইনশাআল্লাহ দুনিয়ার মুজাহিদীনদের মতো মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারবেন। কাফিরদের আঁকা নিতান্ত তুচ্ছ একটা বর্ডার অতিক্রম করাকে এত বড় কঠিন ব্যাপার বলে মনে হবে না ইনশাআল্লাহ। দুনিয়ার মানুষতো দুই-চারশো টাকা অর্জনের জন্যও বর্ডারে মালামাল এইপার-ঐপার করছে আর আপনি কাফিরদের আঁকা এই বর্ডার অতিক্রম করাকে নিজেকে হালাক্* করার সমপর্যায়ে চিন্তা করছেন। সুবহানাল্লাহ। আল্লাহর ইচ্ছায়, আজ না হোক কাল তো এ সকল বর্ডার মুসলিমরা-মুজাহিদরা ধ্বংস করেই দিবে। তাই কুফফারদের তৈরী এই বর্ডারগুলোকে আমাদের এত সমীহ করার কিছু নেই। তদপুরি এটা বিষাক্ত জাতীয়তাবাদেরও একটা হাতিয়ার যাকে রাসুল (সাঃ) নিজ পিতার গুপ্তাংগ কামড়ে ধরা ব্যক্তির সাথে তুলনা করেছেন।

            তবে এটা ঠিক কুফফারদের সাম্রাজ্যবাদ টিকিয়ে রাখার হাতিয়ার এই বর্ডার উঠিয়ে দিতে মুজাহিদদেরকে আল্লাহর দ্বীন এর জন্য অনেক রক্ত, অনেক জীবন কুরবানী দিতে হবে। কিন্তু শাইখ, আপনি এসকল বর্ডার এর বাইরে যাবার কোন ক্ষমতা নেই বলছেন কেন? কুফফারদেরকে এত ভয় পেলে কিভাবে হবে? আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, শয়তান আমাদেরকে তার চেলা-চামুন্ডাদের ব্যাপারে ভয় দেখায় কিন্তু শয়তানের চক্রান্ত অত্যন্ত দূর্বল। এটা আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ঘোষনা করেছেন।

            যদি কোন মুজাহিদ আল্লাহর পথে জিহাদ করতে গিয়ে কোন সারিয়া অথবা গাযওয়াতে শরীক হবার জন্য কুফফারদের দেয়া এ সকল বর্ডার অতিক্রম করে, আর বাস্তবে মুজাহিদরা প্রতিনিয়ত তা করছেন। আফগানিস্তানে প্রবেশের জন্য পাকিস্তান ও ইরানের বর্ডার মুজাহিদরা প্রতিনিয়ত অতিক্রম করছেন, ইরাক ও তুরস্ক এর বর্ডার অতিক্রম করে তারা প্রতিনিয়ত সিরিয়াতে প্রবেশ করছেন। সৌদি বর্ডার অতিক্রম করে ইয়েমেনে জিহাদে গিয়ে শরীক হচ্ছে।

            আপনি জিহাদের সাথে শরীক নেই বলে, সামান্য বর্ডার অতিক্রমকে একেবারে নিজেকে ‘ধ্বংশে নিক্ষেপ করার সামিল’ হিসেবে চিন্তা করছেন। সুবহানাল্লাহ!! যদি মুজাহিদরা এ সকল বর্ডার অতিক্রম করার সময় বর্ডারে কোন বিপদে পতিত হন, আল্লাহ যদি তাদের কাউকে কোন পরীক্ষায় নিক্ষেপ করেন – তাহলেঃ

            - সেটা কি নিজেকে ধ্বংশ করার সামিল বলে সাব্যস্থ হবে?
            - আলোচ্য আয়াতে কি এই রকম কোন কাজকে ধ্বংশে নিক্ষেপ করা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে?
            - আল্লাহর চোখে ধ্বংশে নিক্ষেপ করার মতো কাজ কোনটি?
            - শুধু নিজের নিরাপত্তা, ধন-সম্পদের কথা চিন্তা করে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ছেড়ে দেয়া?
            - নাকি নিজের জান-মাল কুরবানী করে জিহাদের পথে অটল থাকা?

            পুরো আয়াতটা আমরা দেখলে বুঝতে পারি যে, আপনি যে অর্থে এই আয়াত ব্যবহার করেছেন, সেই অর্থে এই আয়াত ব্যবহার করা যায় না। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেনঃ
            وَأَنْفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ وَأَحْسِنُوا إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ

            অর্থাৎ, ‘এবং তোমরা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করো। এবং নিজেদেরকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করো না। আর উত্তমভাবে কাজ করো, নিশ্চয় আল্লাহ উত্তমভাবে কর্ম সম্পাদনকারীকে পছন্দ করেন’।
            তাহলে দেখা যাচ্ছে, মহান আল্লাহ এখানে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে বলছেন। আর আল্লাহর পথে ব্যয় না করাকে নিজেকে ধ্বংশে নিক্ষেপ করা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

            এই আয়াতের তাফসীরে ইবরাহীম আল কাত্তান (রঃ) বলেন,
            التهلكة : الهلاك والمراد به هنا التقصير في المال استعداداً للجهاد . تيسير التفسير - إبراهيم القطان
            এখানে ধ্বংসের মাধ্যমে উদেশ্য হচ্ছে – জিহাদের প্রস্তুতির জন্য মাল ব্যয় করতে কৃপণতা বা অলসতা করা। অর্থাৎ জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর জন্য কম দান করা।

            ইমাম তাবারী (রঃ) বলেছেনঃ
            ولا تُلقوا بأيديكم إلى التهلكة - يقول: ولا تتركوا النفقة في سبيل الله، فإن الله يُعوِّضكم منها أجرًا ويرزقكم عاجلا .

            ‘তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংশের মধ্যে নিক্ষেপ করো না – আল্লাহ বলছেন, তোমরা আল্লাহর রাস্তায় দান করা ছেড়ে দিও না, কারণ আল্লাহ তোমাদেরকে এর বদলে (পরকালে) সওয়াব দিবেন এবং দুনিয়াতে রিযিক দান করবেন’।

            ইবনে কাসীর (রঃ) এই আয়াতের তাফসীরে বলেনঃ

            عن حذيفة: { وأنفقوا في سبيل الله ولا تلقوا بأيديكم إلى التهلكة } قال: نزلت في النفقة
            "ইমাম বুখারী হুজাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এই আয়াত নাযিল হয়েছে নাফাকাত (জিহাদে খরচ) এর ব্যাপারে।

            ورواه ابن أبي حاتم، عن الحسن بن محمد بن الصباح، عن أبي معاوية عن الأعمش، به مثله. قال: وروي عن ابن عباس، ومجاهد، وعكرمة، وسعيد بن جبير، وعطاء، والضحاك، والحسن، وقتادة، والسدي، ومقاتل بن حيان، نحو ذلك.
            ইবনে আবি হাতিম সনদক্রমে ইমাম আয়মাশ থেকে একই রকম বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ ইবনে আব্বাস (রাঃ), মুজাহিদ, ইকরিমাহ, সায়িদ বিন জুবায়ের, আ’তা, দাহহাক, আল-হাসান, কাতাদাহ, সুদ্দী এবং মুকাতাল বিন হাইয়্যান থেকেও অনুরুপ বর্ণিত হয়েছে।

            وقال الليث بن سعد، عن يزيد بن أبي حبيب، عن أسلم أبي عمران قال: حمل رجل من المهاجرين بالقسطنطينية على صف العدو حتى خرقه، ومعنا أبو أيوب الأنصاري، فقال ناس: ألقى بيده إلى التهلكة.
            লাইস বিন সা’দ ইয়াজিদ বিন আবি হাবিব থেকে বর্ণনা করেন, তিনি আবু ইমরান আসলাম থেকে, তিনি বলেন কনস্টান্টিনোপলে এক মুহাজির শত্রু সারিতে হামলা করে তাদের সারি ভেদ করে চলে যান। তখন আমাদের সাথে আবু আইয়্যুব আল আনসারী (রাঃ) ছিলেন। মানুষ বলে উঠলো, সে নিজেকে ধ্বংশের মধ্যে নিক্ষেপ করলো।

            فقال أبو أيوب: نحن أعلم بهذه الآية إنما نزلت فينا، صحبنا رسول الله صلى الله عليه وسلم وشهدنا معه المشاهد ونصرناه، فلما فشا الإسلام وظهر، اجتمعنا معشر الأنصار نجيا، فقلنا: قد أكرمنا الله بصحبة نبيه صلى الله عليه وسلم ونصره، حتى فشا الإسلام وكثر أهله، وكنا قد آثرناه على الأهلين والأموال والأولاد، وقد وضعت الحرب أوزارها، فنرجع إلى أهلينا وأولادنا فنقيم فيهما. فنزل (2) فينا: { وأنفقوا في سبيل الله ولا تلقوا بأيديكم إلى التهلكة } فكانت التهلكة [في] (3) الإقامة في الأهل والمال وترك الجهاد.
            ‘তখন আবু আইয়্যুব (রাঃ) বললেন, আমরাই এই আয়াত সম্পর্কে সবার চেয়ে ভাল জানি, কারণ এই আয়াত আমাদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। (এর প্রেক্ষাপট ছিল এই যে) আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সাহচর্য্যে থাকলাম, তাঁর সাথে অনেক যুদ্ধ-বিগ্রহে অংশগ্রহণ করলাম এবং আমাদের বিজয় অর্জিত হল। যখন ইসলাম সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল এবং বিজয়ী হল তখন আমরা আনসার সম্প্রদায় একান্তে মিলিত হলাম। আমরা বললাম, আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর নবীর সান্নিধ্য লাভে ও তাঁকে সাহায্য প্রদানের মাধ্যমে ধন্য করেছেন। এখন ইসলাম প্রসার লাভ করেছে এবং তার অনুসারীও বৃদ্ধি পেয়েছে। এতকাল আমরা আমাদের পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ ও সন্তানাদীর উপর ইসলামকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছি। ইতিমধ্যে যুদ্ধের প্রচন্ডতাও শেষ হয়েছে। তাই চল এখন আমরা আামদের পরিবার-পরিজন ও সন্তানাদির প্রতি মনোনিবেশ করি এবং তাদেরকে সময় দেই। তখন আমাদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে- ‘তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় করো। নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিও না’। তাই ধ্বংস হল, জিহাদ ছেড়ে দিয়ে পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদের মাঝে বসে থাকা"।

            দেখা যাচ্ছে, আপনি যে অর্থে এই আয়াত ব্যবহার করেছেন, সালাফে সালেহীনদের মধ্য হতে শ্রেষ্ট তাফসীরকারকরা এই আয়াতকে এইভাবে ব্যাখ্যা করেন নি। বরং ভিন্ন অর্থে ব্যাখ্যা করেছেন। এখন আমরা কোনটা সঠিক বলে মনে করবো?

            তাই আমরা শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ এর কাছে বিনীতভাবে জানতে চাই,

            - রাসুল (সাঃ) এর সীরাত থেকে আপনার উল্লেখিত ঘটনাগুলোর কারণে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর জন্য রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি / ঘোষনা শর্ত সাব্যস্থ হলে, একই ঘটনার কারনে একজন নবী / রাসুলের অনুমতি কিংবা ঘোষণা শর্ত হবে না কেন?
            - সালাফে সালেহীনদের মধ্যে কোন কোন মুজতাহিদ ইমাম, সীরাত বিশেষজ্ঞ, উসুলশাস্ত্রবিদ আপনার উল্লেখিত ঘটনাগুলোর কারণে জিহাদের জন্য একজন রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি / ঘোষণাকে শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন?
            - উপরে উল্লেখিত আয়াতের কোন ব্যাখ্যাকে আমরা সঠিক মনে করবো? আপনার দেয়া ব্যাখ্যা নাকি স্বনামধন্য তাফসীরকারকদের উল্লেখকৃত ব্যাখ্যা?
            আশা করি শাইখ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিবেন। এতে আমরা ও এদেশে আপনার দর্শক-শ্রোতা এই ব্যাপারে সঠিক ধারনা পাবেন ইনশাআল্লাহ।


            ************************************************** *************************************************
            শাইখ ডঃ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ এর কাছে প্রশ্ন – ৫

            বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

            ১। আলোচনার ৫৯ মিনিটে শাইখ ডঃ সাইফুল্লাহ বলেছেনঃ

            “(আফগানিস্তানে) প্রথমে একক নেতৃত্বে পৌঁছে জিহাদ শুরু করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে ফিতনা সেখানে তৈরী হয়েছে। এই ফিতনার মাশুল তাদেরকে আজো দিতে হচ্ছে। কিন্তু প্রথমে কিন্তু তারা একক নেতৃত্বেই জিহাদ করেছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যখন জিহাদ করেছে তারা একক নেতৃত্ব করেছে। এবং সেটা ছিল রাশিয়ার একটা আক্রমণ। তাদের বিরুদ্ধে একটা বড় আক্রমণ। এবং সেই আক্রমণ প্রতিহত করা মুসলমানদের একটা বড় দায়িত্বের মধ্যে একটা ছিল। এবং মুসলমানরা ইচ্ছাকৃতভাবে সেই আক্রমণকে প্রতিহত করার জন্য চেষ্টা করেছেন। ফলে এটাকে জিহাদ ঘোষণা দিয়েছেন উলামায়ে কেরাম। এবং এটা জিহাদই হয়েছে আসলে। কোন সন্দেহ নেই, এটা জিহাদ হয়েছে। এবং আমরা দেখেছি যে, এই জিহাদের একটা রেজাল্টও এসেছে”।
            অন্যদিকে আলোচনার ২০ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের দিকে ডঃ সাইফুল্লাহ বলেছেনঃ

            “জিহাদের যতগুলো পদ্ধতি তার মধ্যে একটি হচ্ছে, জিহাদ ঘোষণা হতে হবে এমন ব্যক্তির পক্ষ থেকে যিনি কেবলমাত্র মুসলমানদের ক্ষমতার অধিকারী। মুসলমানরা তার ক্ষমতার ব্যাপারে একমত হয়েছে। অর্থাৎ মুসলিম শাসক যার ইমামতির ব্যাপারে সমস্ত মুসলমানগণ, সেই প্রেক্ষাপটের মুসলমানগণ সবাই একমত হয়েছেন যে তিনি ইমাম, তিনি ঘোষনা করবেন জিহাদ”।
            তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছিঃ

            - একদিকে তিনি দাবী করছেন, জিহাদ ঘোষণা হতে হবে এমন মুসলিম শাসক এর পক্ষ থেকে যার ইমামতির ব্যাপারে সমস্ত মুসলমানগণ, সেই প্রেক্ষাপটের মুসলমানগণ সবাই একমত হয়েছেন যে তিনি ইমাম, তিনি ঘোষনা করবেন জিহাদ।
            - আবার অন্যদিকে তিনি বলেছেনঃ রাশিয়ার বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের জিহাদকে ‘জিহাদ হিসেবে’ ঘোষণা দিয়েছেন উলামায়ে কেরাম। ‘এবং এটা জিহাদই হয়েছে আসলে’। আর বাস্তবে শাইখ বিন বাজের নেতৃত্ব ইসলামিক ফিকহ কাউন্সিল আফগান জিহাদকে শরয়ী জিহাদ বলে ঘোষণা দিয়েছে। এই ফতোয়াতে ঐক্যবদ্ধভাবে সাক্ষর করেছেনঃ

            o শাইখ বিন বাজ।
            o শাইখ বকর আব্দুল্লাহ আবু জায়েদ।
            o শাইখ সালেহ ইবনে ফাওযান।
            o শাইখ ইবনে আব্দুল্লাহ আল সুবাইলী।
            o মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভী

            আল্লাহ তাদের সকলকে রহমত করুন, জীবিতদেরকে ঈমান ও আমলের উপর কায়েম রাখুন।

            এছাড়া আলাদাভাবে আরো অনেক আলেম আফগান জিহাদকে শরয়ী ভাবে বৈধ একটি জিহাদ ঘোষণা দিয়ে এতে সহযোগিতা করার জন্য মুসলিম উম্মাহকে আহবান জানিয়েছেন।

            এখন প্রশ্ন হচ্ছেঃ

            ক) রাশিয়ার বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের এই বৈধ জিহাদকে কোন খলিফা/ইমাম- ‘জিহাদ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন?
            খ) ঐ সময় কি মুসলিম উম্মাহ কোন খলিফার অধীনে ছিল?
            গ) তখন কি আফগানিস্তান কোন খলিফার অধীনে ছিল, যিনি ‘শরয়ী ভাবে বৈধ এই জিহাদ’ ঘোষণা দিয়েছিলেন?
            ঘ) আফগান জিহাদ কি এমন কোন মুসলিম শাসকের তরফ থেকে ‘জিহাদ হিসেবে ঘোষণা’ দেয়ার পর শুরু হয়েছিল, যার ইমামতির ব্যাপারে সমস্ত মুসলমানগণ, সেই প্রেক্ষাপটের মুসলমানগণ সবাই একমত হয়েছেন যে তিনি ইমাম?
            ঙ) রাশিয়ার বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের জিহাদে কে ছিল সেই একক নেতা প্রথম দিকে যার ‘একক নেতৃত্বে পৌঁছে জিহাদ শুরু’ হয়েছিল? কোন কোন গ্রুপ সেই একক নেতার অধীনে ছিল? পরবর্তীতে কবে, কিভাবে সেই নেতার ‘একক নেতৃত্ব’ বিনষ্ট হয়েছিল? একটু বিস্তারিত জানাবেন।

            কারণ আমরা এটাই জানতাম যে, আফগানিস্তানে বিভিন্ন দলীয় কোন্দল অনেক আগে থেকেই ছিল। এমনকি রাশিয়ার বিরুদ্ধে জিহাদেও বিভিন্ন দল বিভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে যুদ্ধ করেছে। আরব মুজাহিদগণসহ শাইখ উসামা (রঃ) কখনোই আমেরিকার কোন সাহায্য নেন নি – যা সিআইএ এর বিন লাদেন ইউনিট এর প্রধানের সাক্ষাতকার থেকে জানা গেছে। আহমাদ শাহ মাসউদ এর দলকে আমেরিকা সর্বাত্বক সাহায্য-সমর্থন দিয়েছিল। গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ারের গ্রুপ আলাদা ছিল, বুরহানুদ্দিন রব্বানী এর গ্রুপও আলাদা কাজ করেছে। জালালুদ্দিন হাক্কানী এর গ্রুপও আলাদাভাবে ছিল।

            ২। একইভাবে আলোচনার ৫১ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের দিকে ডঃ সাইফুল্লাহ বলেছেন,

            “এজন্য কেউ কেউ শাইখ আব্দুর রহমান ইবনে হাসান (রঃ) থেকে এই বর্ণনা উল্লেখ করেছেন। যে বর্ণনাটা গলদ। আব্দুর রহমান ইবনে হাসান আলে শাইখ (রঃ) তার থেকে কেউ কেউ উল্লেখ করেছেন যে, তিনি বলেছেন জিহাদে দফ্* এর জন্য ইমামের অনুমতির দরকার নেই। আরে ইমামের অনুমতির দরকার নেই - জিহাদ এর ঘোষণা করলো কে? যদি কেউ ঘোষণা করতো তাহলে জিহাদ হতো। ঠিক কিনা? ঘোষণাই তো হয় নাই। যদি ইমাম জিহাদ ঘোষণা করলে তাহলে ঠিক আছে। وإذا استنفرتم فانفروا বুখারী শরীফে এসেছে রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের বেরিয়ে যাবার জন্য আহবান করা হয়, তখন বেরিয়ে যাও’। যদি ইমাম জিহাদ ঘোষণা করলে তাহলে ঠিক আছে। তাহলে জিহাদ এ দফ এর জন্য সবাই বেরিয়ে যাবে। তখন আর অনুমতির দরকার নেই। ...... কিন্তু যদি জিহাদই ঘোষণা না হয়, সেখানে অনুমতির মাসআলা আসবে না। সেখানে মাসআলা আসবে, জিহাদ ঘোষনা করেছে কে? কেউ যদি জিহাদের ঘোষণা না করে, তাহলে সেই জিহাদে অংশগ্রহন করা মূলতঃ মুসলিমদের কাজ নয়”।
            এছাড়া আলোচনার ৫০ মিনিট ১৮ সেকেন্ডে ডঃ সাইফুল্লাহ বলেছেনঃ

            “জিহাদে তলব এর জন্য যেভাবে (খলিফার অনুমতি কিংবা ঘোষণা) শর্ত, জিহাদে দফ্* এর জন্য তেমনিভাবে শর্ত”।
            আমরা বিনীতভাবে ডঃ সাইফুল্লাহর কাছে জানতে চাই,

            ক) রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে জিহাদকে আপনি শরয়ীেভাবে বৈধ জিহাদ বলে দাবী করেছেন, এবং বলেছেন, ‘এবং এটা জিহাদই হয়েছে আসলে। কোন সন্দেহ নেই, এটা জিহাদ হয়েছে’ – এই জিহাদ ঘোষণা করলো কে?
            খ) রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে জিহাদকে আপনি শরয়ীিভাবে বৈধ জিহাদ বলে দাবী করেছেন, এবং বলেছেন, ‘এবং এটা জিহাদই হয়েছে আসলে। কোন সন্দেহ নেই, এটা জিহাদ হয়েছে’ – এই জিহাদ ঘোষণা করলেন কোন সেই ইমাম? কোন সেই খলিফা?
            গ) যদি আফগানিস্তানের জিহাদের ঘোষণা কোন খলিফা / ইমাম না দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনার ভাষ্য অনুযায়ী সেই জিহাদে অংশগ্রহন করা মূলতঃ মুসলিমদের কাজ ছিল না। তাহলে সৌদি আলেমরা গণহারে আফগান জিহাদে শরীক হবার জন্য তখন আহবান জানিয়ে ছিলেন কেন?

            ৩। আলোচনার ৪৯ মিনিট ৫ সেকেন্ডে এক প্রশ্নের উত্তরে ডঃ সাইফুল্লাহ বলেছেন,

            ‘আফগানিস্তানের জিহাদকে আমিও জিহাদ বলেছি। ঠিক আছে, ফিলিস্তিনের জিহাদকে আমিও জিহাদ বলেছি। কিন্তু আমি বলেছি যে আফগানিস্তানের জিহাদ পরবর্তীতে ফিতনায় রুপান্তরিত হয়েছে। প্রথমে জিহাদ ছিল কিন্তু সেটা পরবর্তীতে ফিতনায় রুপান্তরিত হয়েছে। ফিলিস্তিনের জিহাদ প্রথমে জিহাদ ছিল, জিহাদের আকারে শুরু হয়েছিল, উলামায়ে কেরাম সাপোর্ট করেছেন, কিন্তু পরে সেটা ফিতনায় রুপান্তরিত হয়েছে। যেহেতু সেটা কোন ধরনের দিক নির্দেশনা বা মানহাজে পরিচালিত হয়নি’।
            এখন প্রশ্ন হচ্ছেঃ

            ক) শুরুর দিকে ফিলিস্তিনের ঐ বৈধ জিহাদকে কোন খলিফা/ইমাম- ‘জিহাদ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন?
            খ) ঐ সময় কি মুসলিম উম্মাহ কোন খলিফার অধীনে ছিল?
            গ) তখন কি ফিলিস্তিনের কোন খলিফার অধীনে ছিল, যিনি ‘শরয়ী ভাবে বৈধ এই জিহাদ’ ঘোষণা দিয়েছিলেন?
            ঘ) ফিলিস্তিনের জিহাদ কি এমন কোন মুসলিম শাসকের তরফ থেকে ‘জিহাদ হিসেবে ঘোষণা’ দেয়ার পর শুরু হয়েছিল, যার ইমামতির ব্যাপারে সমস্ত মুসলমানগণ, সেই প্রেক্ষাপটের মুসলমানগণ সবাই একমত হয়েছেন যে তিনি ইমাম?

            ৪। আলোচনার ৩৩ মিনিট ৯ সেকেন্ডে ডঃ সাইফুল্লাহ বলেনঃ

            “আর এই দুঃখ আমি বলে শেষ করতে পারবো না সেটা হচ্ছে, আফগানিস্তানের দেখুন জিহাদ হয়েছে কিন্তু জিহাদ রেজাল্ট নিয়ে আসতে পারে নাই। আজ পর্যন্ত কোন রেজাল্ট নিয়ে আসতে পারে নাই। ইরাকে দেখুন, আজ পর্যন্ত কোন রেজাল্ট আসেনি। আজ পর্যন্ত কোন রেজাল্টে পৌছতে পারে নাই। এই না পৌছার কারণ একটাই সেটা হচ্ছে রাসুল (সাঃ) যে মানহাজ দেখিয়েছেন সেই মানহাজকে ফলো করা হয় নি। সে কর্মনীতিকে অনুসরণ করা হয় নি। সেই কর্মনীতিকে যদি অনুসরণ করা হতো, তাহলে সেখানে সত্যিকার অর্থে একটা রেজাল্টে চলে আসতো”।
            শাইখের কাছে আমরা জানতে চাইঃ

            - আপনার দৃষ্টিতে ফিলিস্তিন কিংবা আফগান জিহাদ প্রথমে শরয়ীভাবে বৈধ হলেও পরবর্তীতে মুজাহিদগণ কি কি কাজ করার কারণে সেটা আর শরয়ীেভাবে বৈধ থাকে নি? ফিতনায় রুপান্তরিত হয়েছে? দয়া করে বিস্তারিত দলীল-প্রমাণসহ জানাবেন।
            - কোন সেই দিক-নির্দেশনা বা মানহাজ যে ফিলিস্তিন কিংবা আফগান জিহাদের মুজাহিদগণ প্রথমে মেনে চলেছেন, তাই প্রথমে সেই জিহাদগুলো শরইয়ীভাবে সহীহ ছিল? পরবর্তীতে সেটা না মানার কারণে তা শরয়ীভাবে বৈধ জিহাদ থেকে ফিতনাতে রুপান্তরিত হয়েছে?

            আশা করি ডঃ সাইফুল্লাহ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিবেন। এতে আমরা ও এদেশে আপনার দর্শক-শ্রোতা এই ব্যাপারে সঠিক ধারনা পাবেন ইনশাআল্লাহ।

            Comment


            • #7
              Originally posted by usama alhindi View Post
              অনেক আলেম বলে থাকেন যে, জিহাদ করার জন্য রাষ্ট্র লাগবে , রাষ্ট্র ছাড়া জিহাদ করা যাবে না । ভাইদের কাছে দলিল ও যুক্তি উভয়টির সমন্বয়ে উত্তর কামনা করছি ।������
              যারা এ দাবি করে তাদের কাছে দলীল চাইবেন। পরে ইনশাআল্লাহ জওয়াব দেয়া যাবে। আপাতত এটি দেখুন-

              সয়শয়: ইমাম ছাড়া জিহাদ নাই
              লিংক: http://www.darulilm.org/2018/08/29/n...-without-imam/

              Comment


              • #8
                Originally posted by usama alhindi View Post
                অনেক আলেম বলে থাকেন যে, জিহাদ করার জন্য রাষ্ট্র লাগবে , রাষ্ট্র ছাড়া জিহাদ করা যাবে না । ভাইদের কাছে দলিল ও যুক্তি উভয়টির সমন্বয়ে উত্তর কামনা করছি ।💙💛💚
                যারা এ দাবি করে তাদের কাছে দলীল চাইবেন। পরে ইনশাআল্লাহ জওয়াব দেয়া যাবে। আপাতত এটি দেখুন-

                সয়শয়: ইমাম ছাড়া জিহাদ নাই
                লিংক: http://www.darulilm.org/2018/08/29/n...-without-imam/

                Comment


                • #9
                  আমাদেরকে যারা বিভিন্ন কথা বলে, বিভিন্ন প্রশ্ন করে । তাদেরকে আগে বলা উচিত যে, আপনি আপনার কথার বা মতের সপক্ষে লিখিত দলীল পেশ করুন। তিনি যদি পেশ করেন, তারপর আমরা ভাইদের কাছে জানতে চাইব। তাহলে ইনশা আল্লাহ ভাল হবে।
                  ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

                  Comment


                  • #10
                    মডারেটর ভাইয়েরাসহ ফোরামের সকল বিজ্ঞ ভাইদের প্রতি বিশেষ করে ইলম ও জিহাদ ভাইয়ের প্রতি।
                    আমার কিছু কিতাব প্রয়োজনঃ
                    আকিদার বিষয়ে নির্ভরযোগ্য একটি কিতাব।
                    তাফসির বিষয়ে নির্ভরযোগ্য একটি তাফসীর।
                    জিহাদ বুঝার জন্য নির্ভরযোগ্য একটি কিতাব।
                    সিরাতের জন্য একটি কিতাব।
                    প্রিয় ভাইয়েরা কিতাবগুলির নাম বললে আপনাদের এই অনেক উপকৃত হবে,ইনশাআল্লাহ। বি দ্রঃ বাংলা হতে হবে।
                    ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

                    Comment


                    • #11
                      প্রিয় #ইলম-ও-জিহাদ ভাই, পাকিস্তানের আলেম মাওলানা ইলিয়ায় গুম্মান সাহেবও কিছুদিন আগে আছিয়া মালউনা সম্পর্কে ফতোয়া দিয়েছেন যে, বিচার করবে রাষ্ট্র। জন সাধারণের অধিকার নেই বিচার করার। এর বিপরিতে মুফতি তারেক মাসউদ ফতোয়া দিয়েছেন, যে কোন মুসলমানের অধিকার আছিয়া মালউনাকে হত্যার করা।
                      আপনার কাছে এ ব্যপারে জানতে চাই।

                      Comment


                      • #12
                        যারা ত্বাগুতকে সরকার হিসেবে মেনে নিয়েছে কেবল তারাই এরকম ফতুয়া দিতে পারে। আছিয়া মালউনা ''এই মহিলার ব্যাপারে কিছু ভূমিকা বলুন, তাহলে ভাইয়েরা আপনার সুয়ালের জওয়াব দিতে সহজ হবে।
                        আল্লাহ আমাদের ঈমানী হালতে মৃত্যু দান করুন,আমিন।
                        আল্লাহ আমাদের শহিদী মৃত্যু দান করুন,আমিন।

                        Comment


                        • #13
                          মুফতী তারেক মাছুদ ছাহেব ত মশহুর যে পাকিস্তানী ফৌজের শুধু সমর্থক যে এমন না বরং তাদের সকল করম-কান্ড কে প্রবল সমর্থ কারী। যার ভিক্তিতে তিনি লাল মছজিদের ঘটনায় কেউ শহীদ হয় নি ।এই কথা দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলে থাকেন। তাই এমন আলেমদের ভিডিও ক্লিপ থেকে নিজেকে দূরে রাখা সতর্কতা।
                          অবিরাম করাঘাতে বদ্ধ দরজাও খুলে যায়।

                          Comment


                          • #14
                            jazakallahu.. good reminder!

                            Comment

                            Working...
                            X