Announcement

Collapse
No announcement yet.

দরসুল হাদিস; শাহাদাতের সন্ধানে ছুটে চলা; মুমিনের জীবনযাপনের সর্বোত্তম পদ্ধতি

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • দরসুল হাদিস; শাহাদাতের সন্ধানে ছুটে চলা; মুমিনের জীবনযাপনের সর্বোত্তম পদ্ধতি

    [SIZE=4]
    عن أبي هريرة، عن رسول الله صلى الله عليه وسلم، أنه قال: «مِنْ خَيْرِ مَعَاشِ النَّاسِ لَهُمْ، رَجُلٌ مُمْسِكٌ عِنَانَ فَرَسِهِ فِي سَبِيلِ اللهِ، يَطِيرُ عَلَى مَتْنِهِ، كُلَّمَا سَمِعَ هَيْعَةً، أَوْ فَزْعَةً طَارَ عَلَيْهِ، يَبْتَغِي الْقَتْلَ وَالْمَوْتَ مَظَانَّهُ، أَوْ رَجُلٌ فِي غُنَيْمَةٍ فِي رَأْسِ شَعَفَةٍ مِنْ هَذِهِ الشَّعَفِ، أَوْ بَطْنِ وَادٍ مِنْ هَذِهِ الْأَوْدِيَةِ، يُقِيمُ الصَّلَاةَ، وَيُؤْتِي الزَّكَاةَ، وَيَعْبُدُ رَبَّهُ حَتَّى يَأْتِيَهُ الْيَقِينُ، لَيْسَ مِنَ النَّاسِ إِلَّا فِي خَيْرٍ». أخرجه الإمام مسلم في كتاب الإمارة، باب فضل الجهاد والرباط: (1889)

    আবু হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুমিনের জীবনের সর্বোত্তম অবস্থা হলো ঐ ব্যক্তির অবস্থা যে আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য ঘোড়ার লাগাম ধরে থাকে (অর্থাৎ পূর্ণ প্রস্তুত থাকে), (শত্র্রু আগমণের) সংবাদ কিংবা (সাহায্যের আবেদনমূলক) চিৎকার শুনতে পাওয়া মাত্রই সে ঘোড়ার পিঠে উড়ে চলে, সম্ভাব্য (সকল) স্থানে শাহাদাত ও মৃত্যুকে খুঁজে ফেরে, কিংবা ঐ ব্যক্তি যে কোন পাহাড়ের চূড়ায় বা কোন উপত্যকায় কয়েকটি ছাগল নিয়ে বসবাস করে, নামায কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে, এবং মৃত্য পর্যন্ত আল্লাহর ইবাদত করে, সে মানুষের শুধু কল্যাণই সাধণ করে (ক্ষতি করে না) -সহিহ মুসলিম, ১৮৮৯

    হাদিসের ব্যাখায় ইমাম নববী রহিমাহুল্লাহ (মৃ: ৬৭৬ হি.) বলেন,
    المعاش هو العيش، وهو الحياة، وتقديره والله أعلم: «مِن خير أحوال عيشهم: رجل ممسك». قوله صلى الله عليه وسلم: «يطير على متنه كلما سمع هيعة أو فزعة طار على متنه، يبتغي القتل والموت مظانه» معناه: يسارع على ظهره، وهو متنه، كلما سمع هيعة، وهي الصوت عند حضور العدو، وهى بفتح الهاء وإسكان الياء، والفزعة بإسكان الزاي، وهي النهوض إلى العدو.
    ومعنى «يبتغي القتل مظانه» : يطلبه في مواطنه التي يرجى فيها لشدة رغبته في الشهادة، وفي هذا الحديث فضيلة الجهاد والرباط والحرص على الشهادة. شرح النووي على مسلم: (13/35 ط. دار إحياء التراث العربي: 1392)

    … ‘সম্ভাব্য স্থানে শাহাদাত ও মৃত্যুকে খুঁজে বেড়ায়’ এর অর্থ হলো, শাহাদাতের প্রতি তীব্র আকাঙ্খার কারণে ঐ সব স্থানে শাহাদাতকে খুঁজে বেড়ায় যেখানে শাহাদাতের সম্ভাবনা থাকে। এই হাদিস জিহাদ, রিবাত ও শাহাদাতের আকাঙ্খার ফযিলত প্রমাণ করে। -শরহে মুসলিম, ১৩/৩৫

    হাদিসের দ্বিতীয় অংশে যে পাহাড়ের চূড়ায় বা উপত্যকায় একাকী বসবাস করে ইবাদত বন্দেগী করার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে, আলেমগণ বলেছেন, এটা ফিতনার সময়ের বিধান, এর দলিল হলো সহিহ বুখারীর এই হাদিস,
    عن أبي سعيد الخدري رضي الله عنه، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «يوشك أن يكون خير مال الرجل غنم، يتبع بها شعف الجبال ومواقع القطر، يفر بدينه من الفتن» صحيح البخاري: (19)

    আবু সাইদ খুদরী রাযিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অচিরেই মানুষের উত্তম সম্পদ হবে ছাগলপাল, যা নিয়ে সে পাহাড়ের চূড়ায় ও বৃষ্টিবর্ষণের স্থানসমূহে বসবাস করবে, দ্বীন রক্ষার্থে সে ফিতনা থেকে পলায়ন করবে। -সহিহ বুখারী, ১৯ (বিস্তারিত দেখুন, ইমাম নববীর শরহে মুসলিম ১৩/৩৪ দারু ইহইয়াউত তুরাস, ফাতহুল বারী, 6/6-7 দারুল ফিকর, তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম, ৩/৩৪৭ দারু ইহইয়াউত তুরাস)

    আর স্বাভাবিক অবস্থায় মানুষের সাথে মিলে থাকা, বিশেষকরে জিহাদের উদ্দেশ্যে লোকালয়ে থাকা একাকী পাহাড়-উপত্যকায় থেকে ইবাদত করার চেয়ে অনেক উত্তম, একসাহাবী একটি পাহাড়ের শৃঙ্গের পাশ দিয়ে অতিক্রম করেন, যাতে একটি ছোট্ট সুন্দর ঝর্ণা ছিল, জায়গাটি সাহাবীর বেশ পছন্দ হয়, তিনি ভাবেন, যদি আমি মানুষের থেকে পৃথক হয়ে এই পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থান করি তাহলে কতই না উত্তম হয়, তবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস না করে আমি কখনোই তা করবো না। পরে তিনি রাসূলের নিকট এ বিষয়টি উপস্থাপন করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

    لاَ تَفْعَلْ، فَإِنَّ مُقَامَ أَحَدِكُمْ فِي سَبِيلِ اللهِ أَفْضَلُ مِنْ صَلاَتِهِ فِي بَيْتِهِ سَبْعِينَ عَامًا، أَلاَ تُحِبُّونَ أَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لَكُمْ وَيُدْخِلَكُمُ الجَنَّةَ، اغْزُو فِي سَبِيلِ اللهِ، مَنْ قَاتَلَ فِي سَبِيلِ اللهِ فَوَاقَ نَاقَةٍ وَجَبَتْ لَهُ الجَنَّةُ.أخرجه أحمد: (10785) والترمذي: والحاكم: (2382) (1650) وقال الترمذي: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ. وقال الحاكم: (هذا حديث صحيح على شرط مسلم) ووافقه الذهبي، وقال الشيخ شعيب في تحقيقه لمسند أحمد: (إسناده حسن)

    তুমি এটা করো না, কেননা আল্লাহর রাস্তায় একমূহুর্ত অবস্থান করা ঘরে বসে সত্তর বছর ইবাদত করার চেয়েও উত্তম, তোমরা কি চাওনা না আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করে দিবেন, তোমাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন? আল্লাহর পথে যুদ্ধ করো, যে আল্লাহর পথে একমূহুর্ত যুদ্ধ করবে তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যাবে।-সুনানে তিরমিযি, ১৬৫০, মুসনাদে আহমদ, ৯৬৭২ ইমাম তিরমিযি ও শায়েখ শুয়াইব আরনাউত হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।

    এখানে প্রসঙ্গত ফিতনা কাকে বলে তাও স্পষ্ট করা দরকার, অনেকে জিহাদকেই ফিতনা মনে করে, বিশেষকরে নুসাইরী, শিয়া, ও মুরতাদ-ইসলামবিদ্বেষী সরকারের বিপক্ষে যুদ্ধকেই ফিতনা মনে করে নিরপেক্ষ হয়ে বসে থাকে, কিন্তু ফিতনা কাকে বলে এই বিষয়ে ইসলামে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, ফিতনা সম্পর্কে সবচেয়ে জ্ঞানী সাহাবী হলেন হুযাইফা রাযিআল্লাহু আনহু, তিনি নিজেই বলেন, ‘মানুষ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কল্যাণকর বিষয়াদী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতো, আর আমি তাকে অকল্যাণ (ফিতনা-ফাসাদ ইত্যাদি) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতাম, যেন আমি এগুলো থেকে বেঁচে থাকতে পারি’, (সহিহ বুখারী, ৩৬০৬ সহিহ মুসলিম, ১৮৪৭) সাহাবায়ে কেরামও তাকে ফিতনা বিষয়ে সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি দিতেন, (সহিহ বুখারী, ৫২৫ সহিহ মুসলিম, ১৪৪) তো এই মহান সাহাবী হুযাইফা রাযিআল্লাহু আনহু সুস্পষ্ট রুপে বলেছেন, ‘ফিতনা হলো যখন হক-বাতিল অস্পষ্ট হয়ে যায়’, অর্থাৎ যদি কখনো এমন হয় যে, কোন পক্ষ হক আর কোন পক্ষ বাতিল তা নির্ধারণ করা না যায় তখন শরিয়ত আমাদের কোনো পক্ষ অবলম্বন করতে নিষেধ করেছে, কিন্তু যেখানে এক পক্ষ কুরআনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করছে, আর অপর পক্ষ গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা কিংবা বহাল রাখার জন্য যুদ্ধ করছে সেক্ষেত্রে শরিয়ত আমাদের কুরআনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যারা লড়াই করছে তাদের পক্ষে যোগদানের জন্য সুষ্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে, এ বিষয়ে হুযাইফা ও সালমান রাযিআল্লাহু আনহুমা, এবং কাবে আহবার রহিমাহুল্লাহু থেকে নিম্নে বর্ণিত আছারগুলো লক্ষ্য করুন,

    «لَمَّا قَدِمَ حُذَيْفَةُ عَلَى جُوخَا أَتَى أَبَا مَسْعُودٍ يُسَلِّمُ عَلَيْهِ، فَقَالَ أَبُو مَسْعُودٍ: مَا شَأْنُ سَيْفِكَ هَذَا يَا أَبَا عَبْدِ اللهِ؟ قَالَ: أَمَّرَنِي عُثْمَان عَلَى جُوخَا، فَقَالَ: يَا أَبَا عَبْدِ اللهِ، أَتَخْشَى أَنْ تَكُونَ هَذِهِ فِتْنَةً، حِينَ طَرَدَ النَّاسُ سَعِيدَ بْنَ الْعَاصِ، قَالَ لَهُ حُذَيْفَةُ: أَمَا تَعْرِفُ دِينَك يَا أَبَا مَسْعُودٍ، قَالَ: بَلَى، قَالَ: فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّك الْفِتْنَةُ مَا عَرَفْتَ دِينَك، إنَّمَا الْفِتْنَةُ إِذَا اشْتَبَهَ عَلَيْك الْحَقُّ وَالْبَاطِلُ فَلَمْ تَدْرِ أَيَّهُمَا تَتَّبِعُ، فَتِلْكَ الْفِتْنَةُ». أخرجه ابن أبي شيبة: 38447

    হুযাইফা রাযি. যখন জুখার গভর্ণর হয়ে আসেন তখন আবু মাসউদ রাযি. তাকে সালাম জানানোর জন্য আসেন, আবু মাসউদ বলেন, হে আবু আব্দুল্লাহ আপনার সাথে তরবারী কেন? হুযাইফা রাযিআল্লাহু আনহু বলেন, উসমান রাযি. আমাকে জুখার গভর্ণর বানিয়েছেন। আবু মাসউদ রাযিআল্লাহু আনহু বললেন, এই যে লোকেরা (সাবেক গভর্ণর) সাইদ বিন আসকে তাড়িয়ে দিল এ কারণে কি আপনি কোন ফিতনা হওয়ার আশংকা করছেন? হুযাইফা রাযিআল্লাহু আনহু বললেন, হে আবু মাসউদ, আপনি কি আপনার দ্বীন সম্পর্কে অবগত নন? আবু মাসউদ বললেন, হাঁ, অবশ্যই। হুযাইফা রাযিআল্লাহু আনহু বললেন, যতদিন আপনি আপনার দ্বীনের ব্যাপারে অবগত থাকবেন, ততদিন ফিতনা আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। ফিতনা তো হলো যখন হক-বাতিল অস্পষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে আপনি কি করবেন, কোন পক্ষে যাবেন তা নির্ধারণ করতে পারবেন না। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, ৩৮৪৪৭ এ আছারটি হাফেয ইবনে হাযারও ফাতহুল বারীতে সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ করেছেন, দেখুন ফাতহুল বারী, ১৩/৪৯ দারুল ফিকর।

    عَن طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، قَالَ: «قَالَ سَلْمَانُ لِزَيْدِ بْنِ صُوحَانَ: كَيْفَ أَنْتَ إذَا اقْتَتَلَ الْقُرْآنُ وَالسُّلْطَانُ؟ قَالَ: إذًا أَكُونُ مَعَ الْقُرْآنِ، قَالَ: نِعْمَ الزُّويَيْدُ: إذًا أَنْتَ». أخرجه ابن أبي شيبة: (30926)

    তারেক বিন শিহাব বলেন, সালমান রাযিআল্লাহু আনহু যায়েদ বিন সুহানকে জিজ্ঞেস করলেন, যখন কুরআনের অনুসারী ও শাসকের মধ্যে যুদ্ধ হবে তখন তুমি কি করবে, যায়েদ বললেন, আমি কুরআনের অনুসারীদের পক্ষ অবলম্বন করবো, সালমান রাযিআল্লাহু আনহু (খুশি হয়ে) বললেন, তাহলে তুমি কতই না উত্তম যায়েদ হবে।-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, ৩০৯২৬

    عَن كَعْبٍ، قَالَ: «يَقْتَتِلُ الْقُرْآنُ وَالسُّلْطَانُ قَالَ: فَيَطَأُ السُّلْطَانُ عَلَى صِمَاخِ الْقُرْآنِ فَلأْيًا بِلأْيِ، وَلأْيًا بِلأي، مَا تَنْفَلتُنَّ مِنْهُ». أخرجه ابن أبي شيبة: (30927) وأبو عبيد في فضائل القرآن: (132)

    মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবার টিকায় শায়েখ আওয়ামা বলেন,

    والمعنى - والله أعلم سيكون اقتتال بين أهل القرآن والسلطان، وتكون الغلبة لأهل القرآن، وتكون شدَّةً بشدةٍ، قلَّ ما تنفلتن وتنجون منها. (تعليق الشيخ عوامه على المصنف : 15/562 ط. دار القبلة)

    উল্লিখিত আছরটির অর্থ হলো, অচিরেই কুরআনের অনুসারী ও বাদশার অনুসারীদের মধ্যে যুদ্ধ হবে, এবং কুরআনের অনুসারীদেরই বিজয় হবে। তবে হবে যুদ্ধ ঘোরতর, তোমাদের কম লোকই তার ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পাবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, ১৫/৫৬২

    বস্তুত, নামায কায়েম না করা এবং কুরআন-সুন্নাহর পরিবর্তে মানবরচিত আইন দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা করা, শাসকের বিপক্ষে বিদ্রোহ ওয়াজিব হওয়ার স্বতন্ত্র ক্ষেত্র, চাই এসব কাজের কারণে শাসককে মুরতাদ বলা হোক বা না হোক, বরং অনেক আলেমগণ এসব ক্ষেত্রে শাসকের বিপক্ষে যুদ্ধ করে তাকে অপসারিত করা উম্মতের ইজমায়ী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওয়াজিব বলে দাবী করেছেন, এ বিষয়ে কুরআন-সুন্নাহ এবং আলেমদের বক্তব্য সহ বিস্তারিত ফতোয়া তৈরীর কাজ করছি, ভাইদের কাছে দোয়ার দরখাস্ত রইল, আল্লাহ তায়ালা যেন দ্রুততম সময়ে কাজটি সুসম্পন্ন করার তাওফিক দান করেন।
    الجهاد محك الإيمان

    জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

  • #2
    আলহামদুলিল্লাহ! পোস্টটি আমার জন্য একটা উপহার বলে মনে হচ্ছে। জাজাকাল্লাহু খইরান
    আল্লাহ আমাকে মাফ করুন ও ক্ষমা করে দিন।
    হয়তো শরীয়াহ নয়ত শাহাদাহ।

    Comment


    • #3
      [size=4]
      Originally posted by আদনানমারুফ View Post
      [size=4]
      হুযাইফা রাযিআল্লাহু আনহু সুস্পষ্ট রুপে বলেছেন, ‘ফিতনা হলো যখন হক-বাতিল অস্পষ্ট হয়ে যায়’, অর্থাৎ যদি কখনো এমন হয় যে, কোন পক্ষ হক আর কোন পক্ষ বাতিল তা নির্ধারণ করা না যায় তখন শরিয়ত আমাদের কোনো পক্ষ অবলম্বন করতে নিষেধ করেছে, কিন্তু যেখানে এক পক্ষ কুরআনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করছে, আর অপর পক্ষ গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা কিংবা বহাল রাখার জন্য যুদ্ধ করছে সেক্ষেত্রে শরিয়ত আমাদের কুরআনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যারা লড়াই করছে তাদের পক্ষে যোগদানের জন্য সুষ্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে,


      হাফেয ইবনে হাযার রহিমাহুল্লাহ (মৃ: ৮৫২ হি.) বলেন,
      والمراد بالفتنة ما ينشأ عن الاختلاف في طلب الملك حيث لا يعلم المحق من المبطل… قال الطبري: والصواب أن يقال إن الفتنة أصلها الابتلاء، وإنكار المنكر واجب على كل من قدر عليه، فمن أعان المحق أصاب ومن أعان المخطئ أخطأ، وإن أشكل الأمر فهي الحالة التي ورد النهي عن القتال فيها. (فتح الباري: 13/31 ط. دار الفكر)

      ফিতনা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, রাজত্ব লাভের জন্য মুসলমানদের পরস্পর যুদ্ধ, যেখানে কোন দল হক আর কোন বাতিল তা বুঝা যায় না।… ইমাম তবারী বলেন, এ ব্যাপারে সঠিক মত হলো, ফিতনার আসল অর্থ পরীক্ষা, আর প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর বাতিলের প্রতিরোধ করা ওয়াজিব, সুতরাং যে হকের অনুসারীর সাহায্য করবে সে সঠিক কাজ করলো, আর যে বাতিলের সাহায্য করল সে ভুল করলো, আর যদি হক-বাতিল অস্পষ্ট হয়ে যায় তাহলে এই অবস্থায় যুদ্ধ করার ব্যাপারেই হাদিসে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। ফাতহুল বারী, ১৩/৩১

      ইমাম নববী বলেন,
      وقال معظم الصحابة والتابعين وعامة علماء الإسلام: يجب نصر المحق في الفتن والقيام معه بمقاتلة الباغين كما قال تعالى {فقاتلوا التي تبغي} الاَية. وهذا هو الصحيح وتتأول الأحاديث على من لم يظهر له المحق أو على طائفتين ظالمتين لا تأويل لواحد منهما. (شرح مسلم للنووي: 18/10 ط. دار إحياء التراث)

      অধিকাংশ সাহাবী, তাবেয়ী ও আলেমদের মতে ফিতনার সময় হকের অনুসারীকে সাহায্য করা এবং তার সাথে মিলে সীমালঙ্ঘনকারীদের বিপক্ষে যুদ্ধ করা ওয়াজিব, কেননা আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তোমরা সীমালঙ্ঘন কারীদের বিপক্ষে যুদ্ধ করো’, এটাই সহিহ মত, আর ফিতনার সময় যেসব হাদিসে যুদ্ধ করতে নিষেধ করা হয়েছে সেগুলো ঐ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে যাদের নিকট কোন পক্ষ হক তা স্পষ্ট নয়, কিংবা যখন উভয় পক্ষই জালেম (ও রাজত্বলোভী) হয়, (যুদ্ধের জন্য) তাদের কোন তাবীল (বা শরিয়তসম্মত ব্যাখা) না থাকে। -শরহে মুসলিম, ১৮/১০

      আলী রাযিআল্লাহু আনহু তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারীদের সাথে যুদ্ধ করেছেন, এবং সহিহ হাদিসের আলোকে ও সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমদের মতে তিনিই হকের *উপর ছিলেন, তিনি বিদ্রোহীদের বিপক্ষে যুদ্ধ করাকে ফিতনা মনে করেননি, অথচ বিদ্রোহীরাও মুসলমান, যাদের নেতৃত্বে ছিলেন বড় বড় সাহাবী। তেমনিভাবে আলীর বিপক্ষে যারা যুদ্ধ করেছেন তারাও এই যুদ্ধকে হক মনে করেই করেছেন, ফিতনা মনে করেননি। অন্যান্য সাহাবীদের অধিকাংশই কোন এক পক্ষ অবলম্বন করেছেন, যাদের কাছে আলী রাযিআল্লাহু আনহুকে হক মনে হয়েছে তারা আলী রাযিআল্লাহু আনহুর দলে যোগ দিয়েছেন, আর যাদের কাছে আলীর বিরোধীদের হক মনে হয়েছে তারা বিরোধীদের দলে যোগ দিয়েছেন। আর কিছু সাহাবী কোনপক্ষই অবলম্বন করেননি, উলামায়ে কেরাম বলেছেন, তাদের কাছে কোন্ পক্ষ হক তা স্পষ্ট হয়নি, তাই তারা কোনো পক্ষ অবলম্বন হতে বিরত রয়েছেন। ইমাম নববী বলেন,
      واعلم أن الدماء التي جرت بين الصحابة رضي الله عنهم ليست بداخلة في هذا الوعيد، ومذهب أهل السنة والحق: إحسان الظن بهم، والإمساك عما شجر بينهم، وتأويل قتالهم، وأنهم مجتهدون متأولون لم يقصدوا معصية ولا محض الدنيا، بل اعتقد كل فريق أنه المحق ومخالفه باغ، فوجب عليه قتاله ليرجع إلى أمر الله، وكان بعضهم مصيبا وبعضهم مخطئا معذورا في الخطأ، لأنه اجتهاد، والمجتهد إذا أخطأ لا إثم عليه، وكان علي رضي الله عنه هو المحق المصيب في تلك الحروب، هذا مذهب أهل السنة، وكانت القضايا مشتبهة حتى إن جماعة من الصحابة تحيروا فيها، فاعتزلوا الطائفتين، ولم يقاتلوا، ولم يتيقنوا الصواب، ثم تأخروا عن مساعدته منهم. (شرح مسلم للنووي: 18/11 ط. دار إحياء التراث)

      সাহাবীদের মধ্যে যে যুদ্ধবিগ্রহ হয়েছে তা উল্লিখিত হাদিস ‘দুই মুসলমান যুদ্ধ করলে হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়েই জাহান্নামে যাবে’ এর আওতাভুক্ত নয়, আহলুস সুন্নাহ ও জামাআর মাযহাব হলো সাহাবীদের ব্যাপারে সুধারণা পোষণ করা, তাদের পরস্পর মতানৈক্য নিয়ে (সমালোচনা) থেকে বিরত থাকা এবং তাদের যুদ্ধের তাবীল (বা শরিয়তসম্মত ব্যাখা) করা এবং এ কথা বলা যে তারা দুনিয়াবী কোন উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করেননি, বরং তারা ইজতেহাদ করেছেন, এবং প্রত্যেক দল এই বিশ্বাস করেছেন যে তারাই হক এবং তাদের বিরোধীরা হলো সীমালঙ্ঘনকারী, সুতরাং তাদের বিপক্ষে যুদ্ধ করা ওয়াজিব, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর বিধানের দিকে ফিরে আসে, তাদের কারো ইজতেহাদ সঠিক ছিল, আরো কারো ইজতেহাদ ভুল, আরো ইজতেহাদী ভুলের কারণে মুজতাহিদের কোন গুনাহ হয় না। আর আহলুস সুন্নাহর মতে এই যুদ্ধগুলোতে আলী রাযিআল্লাহু আনহুই হকের উপর ছিলেন, কিন্তু বিষয়গুলো গোলমেলে ছিল, এমনকি সাহাবীদের একটি দলও কারা হক তা অনুধাবণ করতে পারেননি। তাই তারা কোন পক্ষ অবলম্বন থেকে বিরত থেকেছেন। -শরহে মুসলিম, ১৮/১১

      হুসাইন রাযিআল্লাহু আনহু, আব্দুল্লাহ বিন যোবায়ের রাযিআল্লাহু আনহুর মত বড় বড় সাহাবী জালেম শাসকের বিপক্ষে যুদ্ধ করেছেন, হাজ্জাজের বিপক্ষে চার হাজার আলেম যুদ্ধ করেছেন, ইমাম মালেক এবং ইমাম আবু হানীফা মনসুরের বিপক্ষে বিদ্রোহের ফতোয়া দিয়েছেন, তারা কেউই এই যুদ্ধগুলোকে ফিতনা মনে করে এর থেকে বিরত কিংবা নিরপেক্ষ থাকেননি। অথচ তারা জালেম শাসকদের মুসলমানই মনে করতেন। তাহলে প্রকৃত ইসলামী খেলাফত কায়েমের জন্য মুসলমানদের বিপক্ষে যুদ্ধ করাই যদি ফিতনা না হয় তাহলে বর্তমানের এই নামধারী মুসলমান শাসকদের বিপক্ষে যুদ্ধ করাকে কিভাবে ফিতনা আখ্যায়িত করা হবে এবং হক-বাতিলের এই যুদ্ধে কিভাবেই বা নিরপেক্ষ থাকা যাবে? আর বাস্তবতা তো হলো এখানে নিরপেক্ষ কেউ নেইও, অধিকাংশ আলেমগণ জিহাদ ও মুজাহিদদের বিপক্ষে ফতোয়া জারী করছেন, যা এই নামধারী মুসলিম শাসকদের পক্ষ অবলম্বনেরই নামান্তর। আর যে আলেমরা চুপ করে আছেন তাদের চুপ থাকাকেই মানুষ দলিল বানিয়ে নিয়েছে, তারা বলছে, যদি জিহাদ ফরয হতো তাহলে বড় বড় আলেমগণ তো অবশ্যই জিহাদের ফতোয়া দিতেন। আল্লাহ তায়ালা ইমাম জাসসাসের প্রতি রহম করুন, তিনি এই বিষয়গুলো কতইনা দ্ব্যার্থহীন ভাষায় বলেছেন,

      فصاروا شرا على الأمة من أعدائها المخالفين لها، لأنهم أقعدوا الناس عن قتال الفئة الباغية وعن الإنكار على السلطان الظلم والجور، حتى أدى ذلك إلى تغلب الفجار، بل المجوس وأعداء الإسلام، حتى ذهبت الثغور، وشاع الظلم، وخربت البلاد، وذهب الدين والدنيا، وظهرت الزندقة والغلو ومذهب الثنوية والخرمية والمزدكية. (أحكام القرآن: 2/320 ط. دار إحياء التراث العربي)

      তারা উম্মাহর জন্য শত্রুদের চেয়েও ক্ষতিকর, কেননা তারাই সীমালঙ্ঘনকারীদের সাথে যুদ্ধ করতে এবং শাসকের জুলুম-অত্যাচারের বিপক্ষে ইনকার করতে নিষেধ করা থেকে মানুষকে বিরত রেখেছে, ফলে ফাসেক বরং অগ্নীপূজারী ও ইসলমামের শত্রুরা মুসলমানদের উপর গালেব হয়ে গেছে, সীমান্ত অরক্ষিত হয়ে পড়েছে, শহর-নগরগুলো বিরান হয়েছে, দুনিয়া-আখেরাত বরবাদ হয়েছে, জুলুম অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে গেছে, যানদাকা ও বিভিন্ন বাতিল মতাদর্শ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আহকামুল কুরআন, ২/৩২০

      الجهاد محك الإيمان

      জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

      Comment


      • #4
        শুকরিয়া ভাইজান। আল্লাহ তা‘আলা আপনার খেদমতকে কবুল করে নিন ও শাহাদাতের অমীয় সূধা পানের তাওফিক দান করুন। আমীন
        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment


        • #5
          আল্লাহ সুব. আপনার ফতওয়ার কাজটি সহজ করে দিন ও জামে' মানে' বানিয়ে দিন,আমীন ইয়া রব্বাশ-শুহাদায়ি ওয়াল মুজাহিদীন!
          বিবেক দিয়ে কোরআনকে নয়,
          কোরআন দিয়ে বিবেক চালাতে চাই।

          Comment


          • #6
            Originally posted by Abu Zor Gifari View Post
            আলহামদুলিল্লাহ! পোস্টটি আমার জন্য একটা উপহার বলে মনে হচ্ছে। জাজাকাল্লাহু খইরান
            জাযাকাল্লাহ আখি, আপনি খুবই উৎসাহমূলক কথা বলেছেন।
            الجهاد محك الإيمان

            জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

            Comment


            • #7
              জাজাকাল্লাহ ভাই
              পোস্ট টা অধমের কাছে এক ভাইয়ের পক্ষ থেকে হাদিয়া বলে মনে হচ্ছে
              জিহাদই হলো মুমিন ও মুনাফিকের মাঝে
              পার্থক্যকারী একটি ইবাদাহ

              Comment

              Working...
              X