Announcement

Collapse
No announcement yet.

সম্মানিত আলেম ও মুফতি ভাইদের কাছে রাসুল সাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামকে সপ্নে দেখার বিষয়

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সম্মানিত আলেম ও মুফতি ভাইদের কাছে রাসুল সাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামকে সপ্নে দেখার বিষয়

    সম্মানিতো ভাইয়েরা, আমরা জানি পরিপূর্ণ হক্ক দল হলো যারা পরিপূর্ণ ইসলামের উপর আছে তারা, আর যারা আংশিক ইসলাম মানে তারা পরিপূর্ণ ইসলামের উপর নেই, তো এখন আমার জানার বিষয় হলো যারা পরিপূর্ণ ইসলামের উপর নাই তাদের থেকে মাঝে মাঝে শুনাযায় তারা নাকি আল্লাহর রাসুলকে সপ্নে দেখেছেন, তিনি তাদেরকে বলেছেন যে তোমরা যেটা করতেছো সেটা হক্ক সুতরাং তোমরা এর উপর অটল থাকো, তো আমার কথা হোল যারা পরিপূর্ণ ভাবে ইসলামের উপর নেই তাদেরকে আবার কি ভাবে আল্লাহর রাসুল সপ্নে বলল যে তোমরা যা করছো সেটা হক্ক? আমার এটা বুঝে আসছে না, হক্ক তো একটা দলই হবে দুই দল হবে না, তাহলে এটার সমাধান কি ভাবে হবে?
    মৃত্যু ও বন্দিত্বের ভয় ঝেড়ে ফেলে চলুন ঝাঁপিয়ে পড়ি ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে।

  • #2
    আখি, আমি তিনটি বিষয় নিবেদন করছি, এর মাধ্যমে আশা করি আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

    ১. কোন দল হক কি না তা নিরুপণের একমাত্র মাপকাঠি হলো শরিয়তের দলিল তথা কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা, কিয়াস। স্বপ্ন, কাশফ ও ইলহাম শরিয়তের কোন দলিল নয়। সুতরাং কেউ যদি স্বপ্নে রাসূলকে শরিয়ত বিরোধী কোন কিছু বলতে বা করতে দেখে তাহলে তা দলিল হবে না। কেননা হাদিস তথা রাসুলের কথা ও কাজ শরিয়তের দলিল হওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত হলো, বর্ণণাকারী ছিকাহ-নির্ভরযোগ্য হওয়া, জাগ্রত ও চৌকান্না অবস্থায় হাদিস শুনা। এজন্য কেউ যদি তন্দ্রাচ্ছন্ন বা উদাসীন হয়ে হাদিস শুনে তাহলে তার হাদিস গ্রহণ করা হয় না। তো ঘুমন্ন অবস্থায় যেহেতু হাদিস গৃহিত হওয়ার শর্তগুলো পাওয়া যায় না তাই স্বপ্নে রাসূল থেকে শরিয়ত বিরোধী কোন কিছু দেখলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। হাফেয ইবনে হাযার বলেন,
    وكذلك قال في كلامه صلى الله عليه وسلم في النوم أنه يعرض على سنته فما وافقها فهو حق وما خالفها فالخلل في سمع الرائي، فرؤيا الذات الكريمة حق والخلل إنما هو في سمع الرائي أو بصره،

    ইবনে আবী জামরা বলেন, স্বপ্নে রাসূলের থেকে কোন কথা শুনলে তা রাসূলের সু্ন্নাহর সাথে মিলিয়ে দেখা হবে, যদি তা রাসূলের সুন্নাহর সাথে মিলে তাহলে বুঝা যাবে তা সত্য, অন্যথায় বুঝতে হবে, স্বপ্নদ্রষ্টা ভুল শুনেছে কিংবা ভুলভাল দেখেছে। -ফাতহুল বারী ১২/৩৮৭ দারুল ফিকর।

    আমার এক উস্তায এ বিষয়টি বুঝানোর জন্য একটি ঘটনার অবতারণা করেন। এক মদখোর স্বপ্নে দেখে, রাসুল তাকে মদপান করার নির্দেষ দিচ্ছেন, পরে সে এক আলেমের কাছে এই স্বপ্নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নালায়েক, রাসূল তোমাকে মদপান করতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু তোমার ‘না’ ছুটে গেছে, অর্থাৎ রাসূল তাকে বলেছিলেন, তুমি মদপান করো না। কিন্তু ঘুমন্ত অবস্থায় সে মনে করেছে, রাসূল তাকে বলছেন, *তুমি মদপান করো। এরপর আলেম এর দলিল হিসেবে বলেন, তুমি তো আগে থেকেই মদপান করো, সুতরাং তোমাকে মদপান করার আদেশ দেওয়ার তো কোন অর্থ নেই।

    ২. রাসূলকে স্বপ্নে দেখার ক্ষেত্রে শর্ত হলো, রাসূলকে হাদিস ও সীরাতে বর্ণিত অবয়বে দেখতে হবে, হাদিসে বলা হয়েছে, শয়তান রাসূলের আকৃতি গ্রহণ করতে পারে না। কিন্তু শয়তান অন্য কারো আকৃতিতে এসে নিজেকে রাসূল বলে দাবী করতে পারে। এজন্য যে রাসূলকে স্বপ্নে দেখেছে তার কর্তব্য হলো স্বপ্নে দেখা আকৃতি হাদিস ও সীরাতে বর্ণিত আকৃতির সাথে মিলে কিনা তা যাচাই করা।
    হাফেয ইবনে হাযার বলেন,
    قالوا: إذا قال الجاهل رأيت النبي صلى الله عليه وسلم فإنه يسأل عن صفته فإن وافق الصفة المروية وإلا فلا يقبل منه،
    النائم لو رأى النبي صلى الله عليه وسلم يأمره بشيء هل يجب عليه امتثاله ولا بد، أو لا بد أن يعرضه على الشرع الظاهر، فالثاني هو المعتمد

    উলামায়ে কেরাম বলেছেন, জাহেল যদি বলে, আমি রাসূলকে স্বপ্নে দেখেছি, তাহলে তার কাছে রাসূলের আকৃতির ব্যাপারে জানতে চাওয়া হবে, যদি তার দেখা আকৃতি হাদিসে বর্ণিত আকৃতির সাথে মিলে তাহলে তো ভালো, নতুবা তার স্বপ্ন ধরতব্য হবে না। ... যদি স্বপ্নে কাউকে রাসুল কোন কাজের আদেশ দেন তাহলে তা শরিয়তসম্মত হলে পালন করবে, অন্যথায় নয়। ফাতহুল বারী, ১২/৩৮৭-৩৮৯

    ইমাম কারাফী বলেন,
    قال العلماء: إنما تصح رؤية النبي - عليه السلام - لأحد رجلين أحدهما صحابي رآه فعلم صفته فانطبع في نفسه مثاله فإذا رآه جزم بأنه رأى مثاله المعصوم من الشيطان فينتفي عند اللبس والشك في رؤيته - عليه السلام -، وثانيهما: رجل تكرر عليه سماع صفاته المنقولة في الكتب حتى انطبعت في نفسه صفته - عليه السلام - ومثاله المعصوم كما حصل ذلك لمن رآه فإذا رآهجزم برؤية مثاله - عليه السلام - كما يجزم به من رآه فينتفي عنه اللبس والشك في رؤيته - عليه السلام - وأما غير هذين فلا يحصل له الجزم بل يجوز أن يكون رآه - عليه السلام - بمثاله، ويحتمل أن يكون من تخييل الشيطان، ولا يفيد قول المرئي لمن يراه: أنا رسول الله، ولا قول من يحضر معه هذا رسول الله؛ لأن الشيطان يكذب لنفسه ويكذب لغيره فلا يحصل الجزم

    রাসূলকে দুই ব্যক্তির দেখাই সঠিক বলে ধরতব্য হবে, এক, সাহাবী, যিনি রাসূলকে জীবদ্দশায় দেখার কারণে স্বপ্নে অন্য কাউকে রাসূল মনে করার সম্ভাবনা নেই। দুই, যিনি রাসূলের অবয়ব সম্পর্কে বেশ ভালোভাবে অবগত। অন্যরা রাসূলকে দেখলেও যে রাসূলকেই দেখেছেন সে ব্যাপরে নিশ্চিত হওয়ার উপায় নেই। যদি যাকে দেখা গেছে সে নিজেকে রাসূল বলে দাবী করে, কিংবা স্বপ্নে উপস্থিত কোন ব্যক্তি আরেকজনকে রাসূল বলে শনাক্ত করে, কেননা শয়তান নিজেকে রাসূল বলে বা অন্য কোন শয়তানকে রাসূল বলে দাবী করতে পারে। আলফুরুক, ৪/২৪৫

    ৩. যারা জিহাদ বিরোধীতার জন্য রাসূলের আনীত দ্বীন বিকৃত করতে পারে তারা রাসূলের নামে মিথ্যা স্বপ্ন বানাতে পারবে না এর নিশ্চয়তা কি, এমন ব্যক্তিদের হাদিসও তো মুহাদ্দিসগণ গ্রহণ করেন না। সুতরাং তাদের স্বপ্নের কথা তো বলাই বাহুল্য। জিহাদ ও মুজাহিদদের বিপক্ষে তাদের সুস্পষ্ট মিথ্যাচারের কিছু কিছু কথা আমরাও শুনতে পেয়েছি। সুতরাং সর্বাবস্থায় শরিয়তকে মাপকাঠি বানালেই আমরা সঠিক পথ পাবো, যে পথ সরল সহজ, যার ব্যাপারে রাসূল বলেছেন, আমি তোমাদের একটি সুস্পষ্ট ধর্মের উপর রেখে যাচ্ছি, যার রাতদিন সমান, (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস, ৪৩ শায়েখ শুয়াইব আরনাউত হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন) সুতরাং এই ধর্ম খুবই সুস্পষ্ট। এই ধর্ম পালনের জন্য কুরআন হাদিসই যথেষ্ট, হেদায়াত পাওয়ার জন্য না কোন স্বপ্নের প্রয়োজন আছে, না কাশফ, ইলহামের, না আকাবিরদের মালফূযাতের না রুমী-শিরাজীর শের-কবিতার। রাসূল তো গ্যারান্টি দিয়েই গেছেন, যতদিন তোমরা কুরআন হাদিস আকড়ে থাকবে ততদিন কিছুতেই পথভ্রষ্ট হবে না। মুয়াত্তা মালেক, ২/৮৯৯ হাদিস, ৬৭৮
    الجهاد محك الإيمان

    জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

    Comment


    • #3
      মাশাল্লাহ ভাই অনেক ইলম হাসিল হল।
      فمن یکفر بالطاغوت ویٶمن بالله فقد استمسک بالعروت الوثقی'
      کم من فاة قلیلة غلبت فاة کثیرة باذن الله

      Comment


      • #4
        জাজাকাল্লাহ খাইরান ভাই উওর দিয়ে বাধিত করার জন্যে
        ভাই অনেক বিষয় বিষয় জানতে পারলাম
        আল্লাহ তায়ালা আপনার ইলম ও আমলে বারাকাহ আরো বাড়িয়ে দিক আমীন আমীন
        জিহাদই হলো মুমিন ও মুনাফিকের মাঝে
        পার্থক্যকারী একটি ইবাদাহ

        Comment


        • #5
          আদনানমারুফ@ ভাইকে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দান করুন, এবং তার ইলেমর মাঝে আরো বরকত দানকরুন, তার ইলেম দিয়ে মানুষকে আরো উপকৃত করার তাওফিক দান করুন, সর্ব শেষে আল্লাহ তাকে শহিদ হিসাবে কবুল করুন ৷
          বর্তমানে মানুষ এইসব বিষয় না যানার কারণে বিভ্রান্ত হচ্ছে ৷ আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন ৷
          মৃত্যু ও বন্দিত্বের ভয় ঝেড়ে ফেলে চলুন ঝাঁপিয়ে পড়ি ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে।

          Comment

          Working...
          X