Announcement

Collapse
No announcement yet.

এবং আল্লাহ্*র অঙ্গীকারকে স্বল্প মূল্যে বি

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • এবং আল্লাহ্*র অঙ্গীকারকে স্বল্প মূল্যে বি


    وَلَا تَشْتَرُوا بِعَهْدِ اللَّهِ ثَمَنًا قَلِيل
    এবং আল্লাহ্*র অঙ্গীকারকে স্বল্প মূল্যে বিক্রি করো না [আন নাহল ৯৫]


    إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنزَلَ اللَّهُ مِنَ الْكِتَابِ وَيَشْتَرُونَ بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًا أُولَٰئِكَ مَا يَأْكُلُونَ فِي بُطُونِهِمْ إِلَّا النَّارَ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌأُولَٰئِكَ الَّذِينَ اشْتَرَوُا الضَّلَالَةَ بِالْهُدَىٰ وَالْعَذَابَ بِالْمَغْفِرَةِ فَمَا أَصْبَرَهُمْ عَلَى النَّارِ
    অবশ্যই যারা ধর্মগ্রন্থের মধ্যে থেকে আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তা লুকিয়ে রাখে আর এর দ্বারা তুচ্ছ বস্তু কিনে নেয়, -- এরাই তাদের পেটে আগুন ছাড়া আর কিছু গেলে না, আর কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাদের সাথে কথাবার্তা বলবেন না, বা তাদের শুদ্ধও করবেন না, আর তাদের জন্য রয়েছে ব্যথাদায়ক শাস্তি। এরাই তারা যারা কিনে নেয় হেদায়েতের বিনিময়ে ভ্রান্তপথ ও পরিত্রাণের পরিবর্তে শাস্তি। কাজেই কতো তাদের ধৈর্য আগুনের প্রতি! [আল বাক্বারা ১৭৪-১৭৫]


    শহীদ কমান্ডার
    শায়খ মারওয়ান হাদীদ (আল্লাহ তাঁর উপর রহমত বর্ষণ করুন)

    আত-তিবয়ান প্রকাশন




    আমার প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা
    قَدْ كَانَتْ لَكُمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ فِي إِبْرَاهِيمَ وَالَّذِينَ مَعَهُ إِذْ قَالُوا لِقَوْمِهِمْ إِنَّا بُرَآءُ مِنكُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ كَفَرْنَا بِكُمْ وَبَدَا بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَاءُ أَبَدًا حَتَّىٰ تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَحْدَهُ
    “তোমাদের জন্যে ইব্রাহীম ও তাঁর সঙ্গীগণের মধ্যে চমৎকার আদর্শ রয়েছে। তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমাদের সাথে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার এবাদত কর, তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদের মানি না। তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করলে তোমাদের মধ্যে ও আমাদের মধ্যে চিরশত্রুতা থাকবে”। [আল মুমতাহিনাহ ৪]
    এই আয়াতে কাদের প্রতি নির্দেশ করা হচ্ছে, হে উলামাগন? এখানে কি আমাদের মুসলিমদের প্রতি নির্দেশ করা হচ্ছে? আমাদের সকলের প্রতি?
    আপনি কি আপনার অঞ্চলের শাসকদের প্রতি এই আয়াতটি প্রয়োগ করেছেন? নাকি আপনি তাদের সাথে সহাবস্থান করছেন এবং তাদের প্রতি শত্রুতা ও ঘৃণা প্রদর্শন করা থেকে বিরত থাকছেন?
    আর শাসকেরা কি আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রসুলের(স) সুন্নাহর মাধ্যমে শাসনকাজ চালাচ্ছে? যদি তারা আল্লাহর কিতাব ও রসুলের(স) সুন্নাহ দ্বারা শাসন না করে এবং ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় জীবনে আল্লাহর কিতাবকে সংবিধান হিসেবে না নেয় তবে কি তারা কাফির নয়?
    আপনাদের ইলমের ভিত্তিতে আমাদেরকে একটা সুস্পষ্ট রায় দিন, হে উলামায়ে ইসলাম!
    আর যদি এই শাসকেরা কাফির, যালিম ও ফাসিক হয় – তাহলে তাদের আর ইহুদিদের সাথে পার্থক্য কোথায়? আর যদি তারা ইহুদিদের মতই হয় তবে কি তাদের সাথে আমাদের লেনাদেনা রাখা উচিত বা তাদের সাথে সহাবস্থান করা উচিত যখন তারা আমাদের ভূমিগুলো দখল করে আমাদেরকেই শাসন করছে? আমাদের কি করা উচিত? যদি ইহুদিরা আমাদের ভূমি দখল করে নিত তবে আমাদের অবস্থান কি হত? [এই প্রশ্নের উত্তরের উপর ভিত্তি করে] একজন আরব তাগুত ও একজন ইহুদি ইসরায়েলি তাগুতের মধ্যে কোন পার্থক্য রয়েছে কি? আর আমাদের উপর কি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা আবশ্যক?
    যদি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা আমাদের জন্যে আবশ্যক হয় তবে কি আমাদের সেরূপে প্রস্ততি গ্রহণ (ইদাদ আল উদ্দাহ) করা উচিত নয় যাতে আমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করতে পারি? নাকি আমরা কোন ধরনের প্রস্ততি ছাড়াই তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো? নাকি আমরা এটা বলেই ক্ষান্ত হব যে, “আমাদের ত যুদ্ধ করার মত সামর্থ্য নেই তাই এটা আমাদের উপর আবশ্যক না” ?
    আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে শরীয়াতের বিধান কি বলে যদি আল্লাহর এই শত্রুরা কাফির হয়? তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা কি হারাম, মুবাহ, মুসতাহাব, সুন্নাহ নাকি ফারয?
    যদি এটা ফারয হয় তবে এটা কি ফারযে আইন নাকি ফারযে কিফায়া? আর কখন, কোন সময় মুসলিমরা যুদ্ধ করতে বাধ্য?
    আর তার ব্যাপারে কি বিধান যে আল্লাহর কালিমাকে বুলন্দ করার জন্যে একাই কুফফারদের বিরুদ্ধে লড়ে? যদি সে নিহত হয় তবে কি সে জান্নাতে যাবে নাকি জাহান্নামে? আর তার ব্যাপারেই বা কি বিধান যে কুফফারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ইচ্ছা পোষণ করে না এবং ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাও করতে চায় না ও আল্লাহর কালিমা বুলন্দও করতে চায় না? তার ব্যাপারে কি বিধান যে এই লক্ষ্যে কাজ করে না?
    তার ব্যাপারে আমরা কি বলবো যে বলে- “আমার ধর্ম ইসলাম” কিন্ত সে আল্লাহর কিতাব অনুসারে কাজ করে না বা সে ব্যাপারে তার ঘাটতি দেখা যায়?
    আপনারা কি কুরআন ও সুন্নাহর সমস্ত বিষয়গুলোকে সবিস্তারে বিশ্বাস করেন?
    যে বিষয়গুলো খাস সেগুলো ছাড়া কুরআন ও সুন্নাহর সমস্ত বিষয়গুলোর উপর আমল করা কি আপনাদের উপর আবশ্যক? নাকি কুরআন মুহাম্মদ(স) এর উপর নাযিল হয়েছিল বিধায় এটার উপর আমল করা শুধু তাঁর ও তাঁর সাহাবীদের উপরই আবশ্যক ছিল?
    আর মুসলিম শাসক ও ইসলামি রাষ্ট্র না থাকার কারনে যেসব আয়াত গুলোর উপর আপনারা আমল করতে পারছেন না, যেমন শাস্তির আয়াতগুলো- আপনাদের উপর কি এটা আবশ্যক না যে আপনারা আল্লাহর বিধানকে কার্যকর করার জন্যে সকল শারঈ পদক্ষেপ নিবেন যার মাধ্যমে তুগইয়ান(সীমালংঘন) বিলুপ্ত হবে? নাকি আপনারা এই দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেয়ে গেছেন?
    আপনারা কি ইসলামি হুকুমাত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছেন যাতে করে আপনারা আল্লাহর দেয়া বিধানকে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবেন? নাকি আপনারা এই কাজের দায়িত্ব থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে সকল দায়িত্ব আল্লাহর উপর ন্যস্ত করে দিচ্ছেন?
    আমরা কি যুদ্ধ করা ছাড়া ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারব নাকি ইসলামের বানীকে সমুন্নত করতে পারব যখন এই একরোখা শাসকেরা কুরআনের সংবিধান দিয়ে শাসন করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে এবং যারাই এর দাবি জানাচ্ছে তাদেরকে কারাবন্দী করছে? আমরা কি পারব যুদ্ধ ছাড়া এটা অর্জন করতে?
    আমাদেরকে কি কুফফারদের মোকাবেলা করার জন্যে শক্তি ও ক্ষমতার যথাসম্ভব প্রস্ততি নিতে কি আদেশ করা হয়নি? আর আল্লাহর এই বানীর অর্থ কি? “আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা যেন না ভাবে যে তারা ডিঙিয়ে যেতে পারবে। নিঃসন্দেহ তারা পরিত্রাণ পাবে না। আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুত রাখবে যা-কিছুতে তোমরা সমর্থ হও -- শৌর্য-বীর্যে ও হৃষ্ট পুষ্ট ঘোড়াগুলোয়, -- তার দ্বারা ভীত-সন্ত্রস্ত রাখবে আল্লাহ্*র শত্রুদের তথা তোমাদের শত্রুদের” [আল আনফাল ৬০]
    কোন মুসলিমের জন্যে কি এমন বিশ্বাস করার অনুমতি আছে যে, কুফফাররা আমাদেরকে করায়ত্ত করে নিয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কোন ক্ষমতাই নেই? নাকি এটা কুফফারদের নিজেদের ব্যাপারে তাদেরই ধারনা?
    এই যুদ্ধ কি জান্নাত ও দুনিয়ার মালিকের বিরুদ্ধে কুফফারদের যুদ্ধ নয়? এটা বুঝার পরে আমরা কি প্রস্ততি ও প্রশিক্ষণের দিকে আগাবো না যার পথ আল্লাহ দেখিয়ে দিয়েছেন? আমরা কি সে পথে এগিয়ে যাব না যে পথে আল্লাহর দুশমনদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত্র করে আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন করতে পারবো?
    যদি কুফফাররা আপনার বাসভূমিকে রাজত্ব কায়েম করে তবে সেক্ষেত্রে শরীয়াতের বিধান কি? এক্ষেত্রে কি পিতার অনুমতি ছাড়া পুত্র যুদ্ধের জন্যে বেড়িয়ে যেতে পারবে? স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রী? ঋণদাতার অনুমতি ছাড়া ঋণগ্রস্ত? মালিকের অনুমতি ছাড়া গোলাম? এ বিষয়ে ফুকাহারা কি বলেছেন? নাকি এই যুগে এসব বিধান বদলে গেছে?
    আর আল্লাহর রসুল(স) এর সেই হাদিসটির মানে কি যেখানে তিনি বলেনঃ “যে ব্যক্তি জীবনে কখনো জিহাদ করলো না এবং জিহাদের নিয়্যাতও পোষণ না করে মারা গেল, সে মুনাফিকির একটি শাখার উপর মারা গেল”। অপর বর্ননায়ঃ “সে জাহিলিয়্যাতের মৃত্যু বরন করলো”। এই হাদিসটির সনদ সম্পর্কে কিছু বলুন আপনারা। এটি কি সহীহ? এর অর্থ কি আসলে? যদি এটা সহীহ হয় তবে এটা কি আমাদের উপর প্রযোজ্য?
    আমাদের কি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করা উচিত আর সেসব কুফফারদের ছেড়ে দেয়া উচিত যারা আমাদের ভূমিগুলোর উপর খবরদারি করছে?
    যেসব দখলদার কুফফার আমাদের ভূমিতে রাজত্ব করছে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা প্রথম ফারয নাকি সেসব কুফফারদের সাথে জিহাদ করা প্রথম ফারয যারা বহু পূর্বেই ইসলামি ভূমি দখল করে নিয়েছে? কোনটা আগে প্রাধান্য পাবে?
    আর এই দুটোর ব্যাপারেই কি বিধান, হে উলামাগন!
    আর যদি আমরা সত্যিকার অর্থেই আল্লাহর দুশমনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাই ও জিহাদ করতে চাই তবে কি আমাদের জন্যে সামর্থ্য অনুযায়ী শক্তি ও ক্ষমতা অর্জন করা ফারয নয়? আল্লাহ ত বলেছেনঃ “যদি তারা বের হবার ইচ্ছা পোষণ করতো তবে তারা অবশ্যই কিছু প্রস্ততি গ্রহণ করতো। কিন্ত আল্লাহ চান নি যে তারা বের হউক তাই তিনি তাদেরকে পিছনে পড়ে থাকাদের দলে অন্তর্ভুক্ত করলেন। তাদেরকে বলা হলঃ তাদের সাথে বসে থাকো যারা ঘরে বসে থাকে” [আত তাওবাহ ৪৬]
    আর তার ব্যাপারে আমরা কি বলবো যে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যুদ্ধের প্রস্ততি গ্রহন করে না?
    আমরা মুসলিমরা এবং উলামায়ে ইসলাম কি এখন ইসলামি শাসনতন্ত্রের ছায়াতলে শান্তি ও নিরাপত্তার জীবন যাপন করছি নাকি অপমান ও লাঞ্ছনা আমাদের জীবনকে গ্রাস করে নিচ্ছে?
    আল্লাহর আনুগত্যের পথে মৃত্যু উত্তম নাকি তাদের অবিচার, কুফর, পাপাচারে ভীত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে কাটিয়ে দেয়া একটা জীবন উত্তম? এই ধরনের জীবন যাপনে কি আল্লাহর আনুগত্য প্রকাশ পায় নাকি তাঁর প্রতি ঔদ্ধত্য?
    এই প্রশ্নগুলো কি উত্তর দিবেন আপনারা যারা দায়িত্বে আছেন? হে উলামায়ে ইসলাম, কি উত্তর আছে!
    আর আল্লাহর এই বানীর অর্থ কি দাড়ায়ঃ “যে কেউ পার্থিব জীবন ও এর শোভা-সৌন্দর্য কামনা করে তাদের ক্রিয়াকর্মের জন্য এখানেই আমরা তাদের পুরোপুরি প্রতিফল প্রদান করি, আর এ ব্যাপারে তারা ক্ষতিসাধিত হবে না। এরাই তারা যাদের জন্য পরকালে আগুন ছাড়া আর কিছুই নেই, আর তারা যা করেছে তা সেখানে বৃথা যাবে, আর তারা যা করে যাচ্ছিল সে-সবই নিরর্থক।” [হুদ ১৫-১৬]
    আর যদি এটা জাহান্নামের পথ হয় তবে জান্নাতের পথ কোনটা? “তোমাদের কি এই ধারণা যে, তোমরা জান্নাতে চলে যাবে, অথচ সে লোকদের অবস্থা অতিক্রম করনি যারা তোমাদের পূর্বে অতীত হয়েছে। তাদের উপর এসেছে বিপদ ও কষ্ট। আর এমনি ভাবে শিহরিত হতে হয়েছে যাতে নবী ও তাঁর প্রতি যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে পর্যন্ত একথা বলতে হয়েছে যে, কখন আসবে আল্লাহর সাহায্য!” [আল বাক্বারাহ ২১৪] এবং “তোমাদের কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্য্যশীল।” [আল ইমরান ১৪২]
    আল্লাহ সুবহানাওয়াতাআলা কি এই আয়াত দিয়ে আমাদের উপর জিহাদ ফারয করেননি? “জিহাদ কর আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দিয়ে” [আত তাওবা ৪১]। এই জিহাদ কি শুধু অন্তর আর জিহবার জিহাদ? আর কিচ্ছু না? নাকি এর অর্থ আনুগত্যপূর্ন ত্যাগস্বীকার ও জান-কুরবানি?
    কি বলবেন আপনারা? হে উলামাদের সমাবেশ!
    আর আল্লাহ সকল মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জান-মাল খরিদ করে নিয়েছেন নাকি তাদের জবান খরিদ করেছেন? “আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেঃ অতঃপর মারে ও মরে। তওরাত, ইঞ্জিল ও কোরআনে তিনি এ সত্য প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। আর আল্লাহর চেয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কে অধিক? সুতরাং তোমরা আনন্দিত হও সে লেন-দেনের উপর, যা তোমরা করছ তাঁর সাথে। আর এ হল মহান সাফল্য” [আত তাওবাহ ১১১]
    যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে স্বীয় জান ও মাল বিক্রি করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে তাকে কি মুমিন বলা যায়?
    আর এই লেনদেনের চুক্তিতে আল্লাহর সাথে কি শর্ত হয়েছে? “তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহে, অতঃপর মারে ও মরে”। নাকি আপনারা আল্লাহর বানী শুনেছেন “তারা ভাষন দেয়, তারা দারস দেয়, দর্শন শিক্ষা দেয় এবং বুদ্ধিবৃত্তিক যুদ্ধে অংশগ্রহন করে”? নাকি আপনারা শুনলেন “তারা জেল ও নির্যাতনের ভয়ে সামান্যতম প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ না করেই আল্লাহর শত্রুদের কাছে আত্মসমর্পন করে”?
    আর আল্লাহর এই আয়াতের মানে কিঃ “আর আমি নাযিল করেছি লৌহ, যাতে আছে প্রচন্ড রণশক্তি এবং মানুষের বহুবিধ উপকার। এটা এজন্যে যে, আল্লাহ জেনে নিবেন কে না দেখে তাঁকে ও তাঁর রসূলগণকে সাহায্য করে। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী” [আল হাদীদ ২৫]। এর মানে কি এটা যে, আল্লাহ তাঁর শরীয়াত ও দ্বীনকে রক্ষার জন্যে এবং দুনিয়ায় আল্লাহর শাসন প্রতিষ্ঠার জন্যে তাঁর রসুলগনকে অস্ত্র ধরার ব্যাপারে সাহায্য করেন? নাকি এর মানে হল যে আমাদেরকে আল্লাহর শত্রুদের কাছে আত্মসমর্পন করতে হবে এবং আমাদের সম্মান নষ্ট করার ব্যাপারে তাদেরকে সাহায্য করতে হবে? নাকি এর মানে হল যে মুসলিমার ইজ্জত লুন্ঠিত হবে এবং তাকে মুশরিকদের হাতে তুলে দেয়া হবে আর আমরা একজন মুমিনকেও জিহাদে উদ্বুদ্ধ করবো না?
    আমাদেরকে একটা রায় দিন, হে উলামায়ে ইসলাম!
    আর যদি প্রয়োজনীয় প্রস্ততি ও আত্মোন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের অভাবে একজনও আল্লাহর পথে না লড়ে তবে হে ইসলামি দলসমূহের নেতৃবৃন্দ, আমাদেরকে বলে দিন যে কবে এই প্রস্ততি পর্ব শেষ হবে! একজন মুসলিমকে যোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার মানদন্ড কি? নাকি এমন কোন কিছুই নেই? এটা কি সত্য না যে, মুসলিমদের জামাআত এবং সরল পথের সকল লোকেরাই যুদ্ধ করার জন্যে যোগ্য? তাই নয় কি?
    আল্লাহ বলেনঃ “আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেঃ অতঃপর মারে ও মরে। তওরাত, ইঞ্জিল ও কোরআনে তিনি এ সত্য প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। আর আল্লাহর চেয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কে অধিক? সুতরাং তোমরা আনন্দিত হও সে লেন-দেনের উপর, যা তোমরা করছ তাঁর সাথে। আর এ হল মহান সাফল্য” [আত তাওবাহ ১১১] । আর আপনারা কি জান্নাত কামনা করেন?
    হে উলামায়ে ইসলাম! আল্লাহর বানী “তোমাদের উপর যুদ্ধ ফারয করা হল” [আল বাক্বারাহ ২১৬] এবং “তোমাদের উপর সাওম ফারয করা হল” [আল বাক্বারা ১৮৩] এর মধ্যে পার্থক্য কোথায়? প্রথম আয়াতের নির্দেশ আর পরের আয়াতের নির্দেশে কি পার্থক্য রয়েছে? যদি “কুতিবা” শব্দের অর্থ দাঁড়ায় ফারয হওয়া, তবে ত সকল মুসলিমের উপর যুদ্ধ ঠিক তেমনি ফারয যেভাবে তাদের উপর সাওম ফারয। কিন্ত যদি ফারয সাওম পালনের সময় হয় রামাদান, তবে ফারয যুদ্ধ পালনের সময় কোনটি?
    আমাদেরকে একটা রায় দিন, হে উলামায়ে ইসলাম!
    এই প্রমানাদির পরও হে মুসলিমেরা, আপনারা কি যুদ্ধ না করার জন্যে এখনও অজুহাত খুজেন?
    আর আপনাদের জন্যে কি যুদ্ধ থেকে বিরত থাকার জন্যে এসব অজুহাত দেখানোর কোন বৈধতা আছে হে ইসলামি দলের নেতৃবৃন্দ এবং সুফিদের প্রধানেরা-
    ১. প্রস্ততির অভাবঃ
    আপনাদেরকে কিসে বাধা দিল প্রস্ততি গ্রহন করতে যখন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা আপনার উপর অতিরিক্ত বোঝ না চাপিয়ে দিয়ে বললেনঃ “আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুত রাখবে যা-কিছুতে তোমরা সমর্থ হও” [আল আনফাল ৬০]
    ২. সতর্কতা এবং শাসক কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্ততির খবর ফাস হয়ে যাবার ভয়ঃ
    “তোমরা কি তাদেরকে ভয় করো? আল্লাহ তোমাদের ভয়ের অধিকতর হক্বদার, তাঁকে ভয় করো যদি মুমিন হও” [আত তাওবাহ ১৩]। “তাদেরকে ভয় করো না বরং আমাকে ভয় করো যদি মুমিন হও” [আল ইমরান ১৭৫]। “সেদিন তাঁর শাস্তির মত কেউ শাস্তি দিবে না এবং তার পাকড়াওয়ের মত কারো পাকড়াও হবে না” [আল ফাজর ২৫-২৬]
    আপনারা কি কাফিরদের ভয়ে আল্লাহর আদেশকে পরিত্যাগ করবেন? আপনারা কি এমন গোলামদেরকে ভয় করবেন যারা নিজেদেরও কোন উপকার বা ক্ষতি করতে পারে না? প্রস্ততিকার্য পরিত্যাগ করা অবাধ্যতারই নামান্তর।
    ৩. অথবা আপনারা নিজেদেরকে আল্লাহর শত্রুদের মোকাবেলা করা বা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার লোক মনে করেন নাঃ
    আর আপনারা দাবি করেন যে আপনারা আল্লাহর দলের লোক, তদুপরি আপনারা এই অপমানজনক অবস্থা নিয়ে সন্তষ্ট? বিষয়টা যেন এমন যে আপনারা আল্লাহর প্রতিই নিজেদের অসম্মানকে নির্দেশ করছেন যখন নিজেদেরকে এই আয়াতের সঙ্গে জড়িয়ে নিলেনঃ “শক্তি তো আল্লাহ তাঁর রসূল ও মুমিনদেরই কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না”। [আল মুনাফিকুন ৮] ।
    ৪. অথবা ইসলামি দলগুলোর সদস্য ও সুফিদের তরিকা অনুসারীদের ঈমানী চেতনার ঘাটতি বা অনুপস্থিতির কারনে আপনারা এমনটা করছেনঃ
    তো কুফফারদের প্রস্ততি ও আত্মোন্নয়ন আপনাদের আর আপনার ভাইদের আত্মোন্নয়নের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে গেল? আমরা ত দেখছি কুফফাররা কিভাবে যুদ্ধের জন্যে ধেয়ে এগিয়ে আসছে আর আপনারা ও আপনাদের ভাইয়েরা নড়ছেনই না। আপনাদের লক্ষ্যটা কি আসলে? কে আপনাদেরকে বিজয় দিবে? তাদেরকেই বা কে বিজয় দিবে? “কারন আল্লাহ হচ্ছেন মুমিনদের মাওলা আর কাফিরদের কোন মাওলা নেই”। [মুহাম্মদ ১১]
    আর হ্যা, ঈমানী চেতনা তাদেরই বৃদ্ধি পায় যারা ইসলামকে সামগ্রিকভাবে গ্রহন করে; তাদের বৃদ্ধি পায় না যারা জিহাদের ফারযিয়াতকে পরিত্যাগ করে।
    ৫. অথবা দাওয়া ও তানজিম(দল) গুলোকে সংরক্ষনের অজুহাত দেখিয়ে আপনারা বিরত থাকছেনঃ
    যদি আপনাদের তানজিমগুলোকে সংরক্ষন করার কারনে আপনারা যুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকছেন, তাহলে এমন তানজিমের উদ্দেশ্যই বা কি?
    বিভিন্ন দল ও সংগঠনগুলো একত্রিত হয়ে নিজ বাসভূমির সরকারের শাসনপদ্ধতিকে নিয়ন্ত্রন করে আর নিজেদের চিন্তাচেতনার বাস্তবায়ন ঘটিয়ে স্বীয় স্বার্থ চরিতার্থ করে এবার এই উদ্দেশ্য বা স্বার্থগুলো যতই ঘৃন্য হউক না কেন। আর আপনারা যুদ্ধকে পরিত্যাগ করেছেন। যুদ্ধ পরিত্যাগ করে আল্লাহর অবাধ্যতা করেছেন। আল্লাহর দ্বীনকে সাহায্য করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আল্লাহই আমাদেরকে শিখিয়েছেন যে যুদ্ধই হচ্ছে বিজয়ের পথ এবং দ্বীনী চেতনা ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের একমাত্র পন্থা। আল্লাহ বলেনঃ “যুদ্ধ কর ওদের সাথে, আল্লাহ তোমাদের হস্তে তাদের শাস্তি দেবেন। তাদের লাঞ্ছিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের জয়ী করবেন এবং মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন”। [আত তাওবাহ ১৪]
    তো আপনার তানজিমের স্বার্থ কি আল্লাহর পাশাপাশি উপাসনা করার মত কোন বস্ত হয়ে গেল?
    আর যদি দাওয়াহর প্রশ্ন আসে, তবে শুনুন, এটি আল্লাহর পথের দাওয়াহ এবং আল্লাহ এর সংরক্ষনের ওয়াদা করেছেন। “আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক” [আল হিজর ৯৯] ।
    আল্লাহর আযাব থেকে বাচার জন্যে আপনাদেরকে অবশ্যই দাওয়াহ ও ক্বিতালের পথে অবিচল থাকতে হবেঃ “যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তিনি তোমাদের পরিবর্তে অন্য জাতিকে প্রতিষ্ঠিত করবেন, এরপর তারা তোমাদের মত হবে না” [মুহাম্মদ ৩৮] এবং “হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরে আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জেহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না” [আল মায়িদাহ ৫৪]
    ৬. অথবা অন্য কোন আন্দোলনের ব্যর্থতা (যেমন কুর্দিশ আন্দোলন) দেখে আপনারা এমনটা ভাবছেনঃ
    আপনাদের কি হলো যে আপনারা নিজেদেরকে জিহাদ থেকে বিরত থাকার পেছনে কিছু ব্যর্থ আন্দোলনের উদাহরন টানছেন? যদি যুদ্ধ করতে গিয়ে আল্লাহর পথে শুধু মৃত্যুই অর্জিত হয় তবে সে মৃত্যু উত্তম নাকি আপনার বিছানায় মরা উত্তম? আপনারা জানেন যে মৃত্যু নির্ধারিত সময়েই হবে এবং এটা পুরোপুরি আল্লাহর হাতে ন্যস্ত। যে ব্যক্তি এটা বিশ্বাস করে না সে আল্লাহর কিতাবের কিছু অংশে অবিশ্বাস করলো এবং যে আল্লাহর কিতাবে অবিশ্বাস করে সে একজন কাফির। তাই শুনুন যদি আপনাদের মন চায়- “আর আল্লাহর হুকুম ছাড়া কেউ মরতে পারে না-সেজন্য একটা সময় নির্ধারিত রয়েছে” [আল ইমরান ১৪৫]
    আবারো শুনুন! “আর তোমরা যদি আল্লাহর পথে নিহত হও কিংবা মৃত্যুবরণ কর, তোমরা যা কিছু সংগ্রহ করে থাক আল্লাহ তা’আলার ক্ষমা ও করুণা সে সবকিছুর চেয়ে উত্তম” [আল ইমরান ১৫৭]। তো আপনারা কি এমন কোন আয়াত আল্লাহর কিতাবে দেখেছেন যার মাধ্যমে মুমিনদের জিহাদ দেখে দূরে রাখা যায় বা তাদেরকে পিছনে পড়ে থাকতে উৎসাহিত করে? আল্লাহ সুবহানাওয়াতাআলা কি বলেননিঃ “আল্লাহর হুকুমে কত ছোট ছোট দল বিজয়ী হয়েছে সুবিশাল দলের বিরুদ্ধে! আর যারা ধৈর্য্যশীল আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন” আল বাক্বারা ২৪৯]। তাই যুদ্ধের মাধ্যমে দুনিয়াতেও পুরষ্কার অর্জিত হয় এবং আখিরাতের সর্বোত্তম পুরষ্কার ত আছেই।
    ভুলে যাবেন না যে কুর্দিদের আন্দোলন ইরানের উপর নির্ভরশীল ছিল এবং ইরানই এর কলকাঠি নাড়ছিল। তাই যখন ইরান তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তখন তারা নিজেদের উপর এবং বিজয় অর্জনের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, তাই তাদের আন্দোলন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। কিন্ত আমরা মুমিনরা ত শুধুমাত্র আল্লাহরই উপর ভরসা করি। তিনিই আমাদের সাহায্যকারী এবং রক্ষাকর্তা। “যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে, আল্লাহ তার জন্যে যথেষ্ট হয়ে যান” [আত ত্বালাক্ব ৩]। এবং “আল্লাহ তোমাদের শত্রুদেরকে যথার্থই জানেন। আর অভিভাবক হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট এবং সাহায্যকারী হিসাবেও আল্লাহই যথেষ্ট” [আন নিসা ৪৫] । তারপর “কারন আল্লাহ হচ্ছেন মুমিনদের মাওলা আর কাফিরদের কোন মাওলা নেই”। [মুহাম্মদ ১১]। আরো শুনুন “আমি সাহায্য করব রসূলগণকে ও মুমিনগণকে পার্থিব জীবনে ও সাক্ষীদের দন্ডায়মান হওয়ার দিবসে” [গাফির ৫১]
    শুনে রাখুন, যদি শুনতে চান। “কাফেরদিগকে বলে দিন, খুব শিগগীরই তোমরা পরাভূত হয়ে দোযখের দিকে হাঁকিয়ে নীত হবে-সেটা কতই না নিকৃষ্টতম অবস্থান” [আল ইমরান ১২] । কার প্রতি আপনারা বিজয়ের কৃতিত্ব সমর্পন করবেন আর কাকেই বা দোষারোপ করবেন, হে উলামায়ে ইসলাম!
    ৭. অথবা অস্ত্র ও সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তাকারী কোন ব্যক্তির অনুপস্থিতির কারনে এমনটা করছেনঃ
    আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ততটুকু প্রস্ততি গ্রহনের দায়িত্ব দিয়েছেন যতটুকু নিতে আমরা সক্ষম এবং সর্বোপরি আমরা আল্লাহর উপর আমাদের বিশ্বাস অর্পন করি। আর শুনুন যদি শুনতে চান। আল্লাহ তাআলার বানীঃ “নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের বাহিনীসমূহ আল্লাহরই। আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়” [আল ফাতহ ৭]
    এটা ত গেল একটা দিক। অপর দিক থেকে শত্রুদের থেকে ছিনিয়ে নেয়া অস্ত্র-শস্ত্রও আমাদের জন্যে সাহায্যকারী হবে যদি আল্লাহ চান।
    ৮. অথবা আপনার মুসলিম ভাইদের উপর আস্থার অভাব বা তাদের সাথে সহযোগিতামূলক মনোভাবে ঘাটতিঃ
    আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “তোমরা সৎকর্ম ও আল্লাহভীরুতায় একে অপরকে সাহায্য করো” [আল মায়িদাহ ২]। তাই মুসলিমদের জন্যে বৃহত্তর মঙ্গলের লক্ষ্যে একে অপরকে সহায়তা করা সম্ভব আর এই বৃহত্তর কল্যানটি হল আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ইসলামের হুকুমাত প্রতিষ্ঠা করা। আর যুদ্ধ করার পথেই ত আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি হবে।
    খালিস বান্দাদেরকে ত কঠোর পরীক্ষার মাধ্যমেই চেনা যায়ঃ “আমি তাঁদেরকে নেতা বানালাম। তাঁরা আমার নির্দেশ অনুসারে পথ প্রদর্শন করতেন” [আল আমবিয়া ৭৩]
    সকল মুসলিমের মাঝে একতা ও আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করবে এই হাদিসটি- “তার জন্যে সুসংবাদ যে অন্যের ভূল ধরার চেয়ে নিজের ভূল নিয়ে বেশি ব্যস্ত” এবং “সকল আদম সন্তান ভূল করে আর সবচেয়ে উত্তম তারাই যারা তাওবা করে”। এর উপর ভিত্তি করে আসুন আমরা প্রত্যেকে নিজেদের ভূল গুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করি। আমরা অনুধাবন করে নিই যে আমাদের ভাইদের ভূল হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর একারনেই তাকে উপদেশ দেয়া ও সৎপথে থাকতে সাহায্য করা এবং তাকে ধৈর্য্যধারনে সহায়তা করা আমাদের জন্যে আবশ্যক। তাকে সংশোধন করে দেবার নিয়্যাতে আমাদেরকে নমনীয়তা অবলম্বন করতে হবে, কখনই কঠোর হওয়া যাবে না।
    আল্লাহর রসুল(স) এর সাহাবী এবং তাঁদেরকে ইহসানের সংগে অনুসরনকারী সালাফগনের চেয়ে কোন মুমিন বান্দার চরিত্রই উত্তম হতে পারে না। তাদের বৈশিষ্ট্য শুনে রাখুনঃ “মুহাম্মদ আল্লাহর রসুল, তাঁর সহচরগন কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের প্রতি ক্ষমাশীল” [আল ফাতহ ২৯]
    তাঁরা কখনই ছোট ছোট বিষয় নিয়ে মাথা ঘামিয়ে সময় নষ্ট করেন নি এবং মানুষের গোপন দোষ ত্রুটি অন্বেষন করাও তাঁদের কাজ ছিল না। তাঁরা আল্লাহর বানী ভাল ভাবেই বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেনঃ “এই পরকাল আমি তাদের জন্যে নির্ধারিত করি, যারা দুনিয়ার বুকে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করতে ও অনর্থ সৃষ্টি করতে চায় না। আল্লাহভীরুদের জন্যে শুভ পরিণাম” [আল ক্বাসাস ৮৩]
    আল্লাহ আপনাকে এই মর্মে আদেশ করেছেন যে আপনি যুদ্ধ করবেন, আপনার মুমিন ভাইদেরকে যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করবেন এবং যদি কেউ আপনার ডাকে সাড়া না দেয় তবে আপনি শুধু নিজের ব্যাপারেই দায়িত্বশীল। “হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের চিন্তা কর। তোমরা যখন সৎপথে রয়েছ, তখন কেউ পথভ্রান্ত হলে তাতে তোমাদের কোন ক্ষতি নাই” [আল মায়িদাহ ১০৫] এবং “আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করতে থাকুন, আপনি নিজের সত্তা ব্যতীত অন্য কোন বিষয়ের যিম্মাদার নন! আর আপনি মুমিনদেরকে উৎসাহিত করতে থাকুন। শীঘ্রই আল্লাহ কাফেরদের শক্তি-সামর্থ খর্ব করে দেবেন। আর আল্লাহ শক্তি-সামর্থের দিক দিয়ে অত্যন্ত কঠোর এবং কঠিন শাস্তিদাতা” [আন নিসা ৮৪]
    আপনারা তাহলে কোন অজুহাতের ভিত্তিতে নিজেদেরকে যুদ্ধ করা থেকে বিরত রাখছেন? প্রস্ততির অভাব? অতিরিক্ত সতর্কতা বা ধরা পড়ে যাবার ভয়? যথাযথ ঈমানী চেতনা বৃদ্ধি না পাওয়া? দাওয়াহ চালিয়ে যাওয়া? কোন জাহিলি আন্দোলনের ব্যর্থতা? অস্ত্র সরবরাহকারির অভাব? ভাইদের প্রতি আস্থার অভাব? আল্লাহ তাআলা তো কাউকেই যুদ্ধের ব্যাপারে ছাড় দেননি; এমনকি পঙ্গু, অন্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিদেরকেও। সেখানে আপনারা নিজেদেরকে যুদ্ধ থেকে দূরে সরিয়ে রাখছেন?
    আপনাদের মতটা কি? হে মুসলিম সমাজের নেতৃবর্গ এবং উলামাগন!
    আর আপনাদের কাছে জানতে চাই, হে ফুকাহাবর্গ!
    যদি কোন ব্যক্তি গরিব হয় এবং প্রয়োজনীয় প্রস্ততি গ্রহনে অক্ষম হয় তবে কি তাকে যুদ্ধ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় নাকি যুদ্ধ ফারযে আইন হলে যোদ্ধাদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদেরকে সাহায্য করা তার জন্যে আবশ্যক? ধনীদের জন্যে কি গরিবদেরকে যুদ্ধ প্রস্ততি গ্রহনে আর্থিক সাহায্য করা আবশ্যক না? যদি কেউ আল্লাহর রাহে যুদ্ধের প্রস্ততির জন্যে যাকাতের খাত থেকে অর্থ সাহায্য চায় তবে কি তাকে সেটা দেয়া জায়েয না? ধনীদের জন্যে কি শুধু তাদের সম্পদের যাকাত আদায় করে দেয়াটাই যথেষ্ট? তারা যদি প্রকৃতপক্ষেই যুদ্ধ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত না হয় তবে কি শুধু যাকাত দিলেই তারা আল্লাহর কাছে মুক্তি পেয়ে যাবে যদি তারা যুদ্ধ না করে?
    আর আল্লাহর এই উক্তির অর্থ কিঃ “মুমিনগণ, আমি কি তোমাদেরকে এমন এক বানিজ্যের সন্ধান দিব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে? তা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ও জীবনপণ করে জিহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম; যদি তোমরা বোঝ” [আস সফ ১০-১১]। এই আয়াত কি এমনটাই বুঝাচ্ছে না যে, যদি আপনারা যুদ্ধ না করেন তবে আপনাদের উপর যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি আসবে? আর এই শাস্তি থেকে মুক্তির পথ কি জিহাদ নয়?
    আমাদের এই যুগে যদি প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ছাড়া কেউ অস্ত্র চালনায় সক্ষম না হয় তবে কি এর প্রশিক্ষন নেয়া ফারয না যদি যুদ্ধ করা ফারয হয়?
    আর আল্লাহ এই আয়াত দিয়ে কি বুঝাতে চেয়েছেনঃ “অভিযোগের পথ তো তাদের ব্যাপারে রয়েছে, যারা তোমার নিকট অব্যাহতি কামনা করে অথচ তারা সম্পদশালী। যারা পেছনে পড়ে থাকা লোকদের সাথে থাকতে পেরে আনন্দিত হয়েছে। আর আল্লাহ মোহর এঁটে দিয়েছেন তাদের অন্তরসমূহে। বস্তুতঃ তারা জানতেও পারেনি” [আত তাওবাহ ৯৩]। এই সমস্ত পেছনে পড়ে থাকা ধনী ব্যক্তিদের জন্যে কি মুখ বন্ধ রাখাটাই শ্রেয় নয়? তারা তো যুদ্ধ করা থেকে নিজেদের দূরে রেখেছে; তাদের জন্যে কি দার্শনিকতাপূর্ন বানী কপচানো, জ্ঞান বিতরনের ভান করা, নিজেকে বড় সমঝদার ভাবা এবং যাবতীয় শয়তানী দলিল-প্রমান পেশ করে মুজাহিদিনদের নিয়্যাতকে কলুষিত করার চেয়ে চুপ থাকা উত্তম না? তারা ত আসলে কিছুই জানে না।
    প্রকৃত অর্থেই তারা কিছুই জানে না, এই আয়াতটা স্পষ্টভাবে তা-ই বলে দিচ্ছে। তাই মুমিনদেরকে এসব লোকের কথায় কান দেয়ার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত এমনকি তারা বয়োজ্যেষ্ঠ লোক হলেও।
    আরা তারা কারাঃ “এখন তারা তোমার সামনে আল্লাহর কসম খাবে, যখন তুমি তাদের কাছে ফিরে যাবে, যেন তুমি তাদের ক্ষমা করে দাও। সুতরাং তুমি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও-নিঃসন্দেহে এরা অপবিত্র এবং তাদের কৃতকর্মের বদলা হিসাবে তাদের ঠিকানা হলো জাহান্নাম” [আত তাওবা ৯৫]
    এরা কি তারা না যারা জিহাদ থেকে দূরে সরে থাকে এবং জীবনকে আকড়ে ধরে পড়ে থাকে? এরা কি সেসব নিচ লোক নয় যারা আল্লাহর দ্বীনকে সাহায্য করা থেকে নিজেদেরকে বিরত রেখেছে? এরা কি তারা নয় যাদের ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন “ইন্নাহুম রিজস”- “তারা অপবিত্র”? তারা ত জীবিতদের মাঝে পচাগলা লাশ স্বরুপ এবং “তাদের কৃতকর্মের বদলা হিসেব তাদের ঠিকানা হল জাহান্নাম”। কারন তারা দুনিয়াতে অসম্মান ও লজ্জাষ্কর জীবন নিয়ে সন্তষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
    যদি আল্লাহর রসুল(স) ১৫ বছর বয়সী কিশোরদেরকে তাঁর সাথে যুদ্ধ করার জন্যে অনুমতি দান করেছিলেন, তবে সে ব্যক্তি এটা জেনেও কিভাবে নিজের ব্যাপারে অজুহাত পেশ করে যে তখন যুদ্ধ হতো তরবারির দ্বারা আর সেটা ছিল সর্বাপেক্ষা কঠিন যুদ্ধ? যারা ৪০ বছরে পৌচে গেছে তারাও কি যুদ্ধ না করার জন্যে অজুহাত খুজবে? যারা ৫০ এ পৌচেছে? বা ৬০ এ? অথবা ৭০ এ? আল্লাহর রসুল(স) তাঁর জীবনের শেষ যুদ্ধে কত বছর বয়ষ্ক ছিলেন? তাঁর বয়স কি ৬০ এর উপর ছিল না? যখন তিনি হুনায়নের যুদ্ধ-ময়দানে তাঁর পিছু হটা সাথীদেরকে ডাক দিয়ে বললেনঃ “সত্যই আমি আল্লাহর রসুল! আমি আব্দুল মুত্তালিবের সন্তান” – তখন তাঁর বয়স কত ছিল?
    আল্লাহ আপনার উপর শান্তি বর্ষন করুক ইয়া সায়্যিদি রসুলাল্লাহ!
    আর আপনার কাছে একটা প্রশ্ন, হে নেতা!
    কোন দলিলের ভিত্তিতে আপনি নিজেকে যুদ্ধ থেকে দূরে রাখছেন আর সেসব কাজ থেকে বিরত থাকছেন যা আল্লাহর রসুল(স) কুফফার ও মুশরিকিনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে করেছেন? আল্লাহ ত বলেছেনঃ “যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে” [আল আহযাব ২১]
    এর মানে কি এমন যে, আমাদের কেউ যদি একটা পাগড়ি পরে, দাড়ি লম্বা করে, দ্বীনের ব্যাপারে ইলম অর্জন করে তবে সে লোকদেরকে ইলম শিক্ষা দেয়া ও ইলমকে সংরক্ষন করার অজুহাতে যুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকতে পারবে? নাকি উলামা, ফুকাহা ও মুজাহিদিনদের ইমাম রসুল(স) কে আদর্শ মেনে লোকদেরকে নিয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহন করা ও তাদেরকে যুদ্ধের জন্যে উদ্বুদ্ধ করা তার জন্যে আবশ্যক?
    কোন মুখ নিয়ে আপনারা আল্লাহর বা তাঁর রসুলের সামনে শেষ বিচারের দিন দাড়াবেন? যদি আপনাদেরকে জিজ্ঞেস করা হয় যে কেন কুফফারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ব্যাপারে পেছনে পড়ে ছিলেন বা কেন তাগুতের সাথে ঘনিষ্ঠতা রেখেছেন? আপনারা কি বলবেন যে “আমরা দূর্বল ছিলাম” বা “আমরা কোন সাহায্যকারী পাইনি”? তাই আমরা আপনাদেরকে আহবান করছি, আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আমাদেরকে সাহায্য করুন। আল্লাহর সাহায্যে আমরাই অধিক শক্তিশালী দল। নিজের বিবেকের কাছে ধোকা খেয়ে অজুহাত খুজবেন যে আপনাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বরং আল্লাহর কিতাব দিয়ে নিজেদের অবস্থান যাচাই করুন।
    যদি আপনি আল্লাহর সাথে থাকেন তবে আল্লাহর শত্রুরা তাদের ক্ষমতা দিয়ে আপনার কিই বা করতে পারবে? তারা কি আপনার নির্ধারিত সময়ের পূর্বে আপনাকে হত্যা করতে পারবে? আপনার ভাগ্য থেকে তারা কিছু ছিনতাই করতে পারবে? আল্লাহ যা লিখে রেখছেন তার বাইরে কোন কিছু কি আপনার সাথে হতে পারে?
    কোন পথে আপনি আল্লাহর পুরষ্কার ও তাঁর তরফ থেকে রহমত পাবেন? কুফফারদের অতিষ্ঠ করে তাদের সাথে যুদ্ধ করলে? নাকি তাদের ইচ্ছানুযায়ী নিজেকে চালনা করে তাদের দাসে পরিনত হয়ে গেলে?
    “তারপর যাকে দোযখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, তার কার্যসিদ্ধি ঘটবে। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোন সম্পদ নয়” [আল ইমরান ১৮৫]। প্রকৃত ব্যর্থতা চাকরি হারানোতে না, এমনকি সমগ্র দুনিয়া হারানোতেও না। বরং নিজের ও নিজের পরিবারের জন্যে আখিরাত হারানোই প্রকৃত ব্যর্থতা। “বলুন, কেয়ামতের দিন তারাই বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যারা নিজেদের ও পরিবারবর্গের তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জেনে রাখ, এটাই সুস্পষ্ট ক্ষতি। তাদের জন্যে উপর দিক থেকে এবং নীচের দিক থেকে আগুনের মেঘমালা থাকবে। এ শাস্তি দ্বারা আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে সতর্ক করেন যে, হে আমার বান্দাগণ, আমাকে ভয় কর” [আয যুমার ১৫-১৬]
    যে বিষয়ে আপনাদের ব্যাপারে আমি সবচেয়ে ভয় করিঃ
    যখন আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর রাহে আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করবে তখন আপনারা যুদ্ধ না করে দর্শকের ভূমিকা নেবেন এবং ফলশ্রুতিতে আল্লাহর দুশমনেরা আপনাদেরকে নিজ গৃহে বসা অবস্থাতেই ধ্বংস করবে। পরবর্তীতে আপনারা জাহান্নামের আগুনে প্রবেশ করবেন এবং মহান প্রভুর ক্রোধের শিকার হবেন। কারন তিনি আপনাদেরকে আদেশ দিয়েছিলেন এসব শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে কিন্ত আপনারা তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। আপনারা আপনাদের মুজাহিদিন ভাইদেরকে শত্রুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন যাতে তারা আপনাদের ভাইদেরকে হত্যা করতে পারে আর নিজেরা পেছনে পড়ে ছিলেন।
    আল্লাহ আপনাদের কাছ থেকে আপনাদের জান ও মাল ক্রয় করে নিয়েছেন এই শর্তে যে জান্নাত আপনাদের হবে। এই চুক্তিতে শর্ত হল যে আপনাদেরকে আল্লাহর জন্যে লড়তে হবে, মারতে ও মরতে হবে, গবাদিপশুর মত নিজেদেরকে জবাই হবার জন্যে সমর্পন করা যাবে না।
    যদি আপনারা দূর্বলদের শ্রেনিভুক্ত হন তবুও আপনাদের ওয়াজিব হল যে আপনারা বিরোধিতা না করে সক্ষমদেরকে সহমর্মিতা, উৎসাহ, দুয়া এবং ধনী হলে সম্পদ দিয়ে সাহায্য করবেন।
    যদি যুদ্ধ শুরু হয় আর আপনাদের যুদ্ধাস্ত্র বা প্রশিক্ষনের প্রস্ততি না থাকে তবে আপনারা কি আল্লাহর কাছে অব্যাহতি পেয়ে যাবেন? আপনারা কি আল্লাহর কিতাবে পড়েন নিঃ “আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুত রাখবে যা-কিছুতে তোমরা সমর্থ হও” [আল আনফাল ৬০]। আপনারা কি অব্যাহতি পেয়ে গেছেন নাকি আল্লাহর কাছে আপনাদের অজুহাত মঞ্জুর হবে নাকি এই আয়াত আপনাদের ব্যাপারে নয় বা আপনাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলা হয় নি? হয়ত আপনারা সালাতে এই আয়াতটি পড়েও থাকবেন এবং আপনাদের চোখও হয়ত ভিজে আসে এটা পড়ার সময়, কিন্ত আপনারা বুঝছেন না যে এই আয়াতের উপর আমল করার জন্যে আপনাদেরকেই আদেশ করা হচ্ছে।
    এই আয়াতটার মানে কি হে উলামায়ে ইসলাম! “এবং যাদেরকে তাদের পালনকর্তার আয়াতসমূহ বোঝানো হলে তাতে অন্ধ ও বধির সদৃশ আচরণ করে না” [আল ফুরকান ৭৩]। আমাদেরকে এই আয়াতের অর্থ বুঝিয়ে দিন, অতঃপর এই আয়াতটা ভুলবেন নাঃ “অথচ তারা আপনাকে আল্লাহর পরিবর্তে অন্যান্য উপাস্যদের ভয় দেখায়। আল্লাহ যাকে গোমরাহ করেন, তার কোন পথপ্রদর্শক নেই” [আয যুমার ৩৬]
    আপনারা কি তাহলে মনে করেন যে আল্লাহর পথে তাঁর শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকা একটা ছোট গুনাহ? হে উলামাবর্গ, হে ইসলামি দলগুলোর দার্শনিকবৃন্দ এবং নেতৃবর্গ, হে ঈমানী চেতনার ধ্বজাধারীরা! শুনে রাখুনঃ “কাজেই আল্লাহ্ যদি তোমাকে ফিরিয়ে আনেন তাদের মধ্যের কোনো দলের নিকট, তারপর তারা যদি তোমার অনুমতি চায় বের হওয়ার জন্য তবে বলো -- ''তোমরা কোনো ক্রমেই আমার সাথে কখনো বেরুতে পারবে না, এবং তোমরা আমার সঙ্গী হয়ে কখনো কোনো শত্রুর বিরূদ্ধে লড়তে পারবে না। নিঃসন্দেহ তোমরা বসে থাকাতেই সন্তষ্ট ছিলে প্রথম বারে, অতএব বসে থাকো পশ্চাতে অবস্থানকারীদের সঙ্গে” [আত তাওবাহ ৮৩]। এবং “আর তাদের মধ্যের একজনের জন্যেও, সে মারা গেলে, তুমি কখনো নামায পড়বে না, আর তার কবরের পাশেও দাঁড়াবে না। নিঃসন্দহে তারা আল্লাহ্*তে ও তাঁর রসূলে অবিশ্বাস করেছে, আর তারা মরেছে যখন তারা ছিল দুষ্কৃতিপরায়ণ” [আত তাওবাহ ৮৪]
    তাই আসুন, আমরা সবাই আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি যাতে তিনি জিহাদ থেকে পেছনে পড়ে থাকার গুনাহগুলো মার্জনা করেন। “মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও” [আন নূর ৩১]
    আসুন আমরা যুদ্ধ শুরু করি। হ্যা, নিঃসন্দেহে আমরা কুফফারদের ক্ষমতার মুখোমুখি হবো। আর এটা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায়ও নেই; আমরা নিজেরা যুদ্ধ করবো এবং মুমিনদেরকে যুদ্ধের জন্যে উদ্বুদ্ধ করবো। আল্লাহ বলেনঃ “আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করতে থাকুন, আপনি নিজের সত্তা ব্যতীত অন্য কোন বিষয়ের যিম্মাদার নন! আর আপনি মুমিনদেরকে উৎসাহিত করতে থাকুন” [আন নিসা ৮৪]
    জিহাদের আয়াতগুলো সুস্পষ্ট হয়ে যাবার পরও কি জিহাদ ও আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মাঝে পার্থক্য সৃষ্টি করার কোন অবকাশ আছে কি? স্পষ্ট আয়াত গুলো আমাদের কাছে পৌছার পর এসব বিতর্কে কোন ফায়দা আছে কি? আল্লাহর বানী শুনুন, তিনি আপনাদের মত লোকদেরকে সতর্ক করে বলছেনঃ “আর তাদের মত হয়ো না, যারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং নিদর্শন সমূহ আসার পরও বিরোধিতা করতে শুরু করেছে-তাদের জন্যে রয়েছে ভয়ঙ্কর আযাব। সেদিন কোন কোন মুখ উজ্জ্বল হবে, আর কোন কোন মুখ হবে কালো। বস্তুতঃ যাদের মুখ কালো হবে, তাদের বলা হবে, তোমরা কি ঈমান আনার পর কাফের হয়ে গিয়েছিলে? এবার সে কুফরীর বিনিময়ে আযাবের আস্বাদ গ্রহণ কর। আর যাদের মুখ উজ্জ্বল হবে, তারা থাকবে রহমতের মাঝে। তাতে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে” [আল ইমরান ১০৫-১০৭]
    আমরা আপনাদেরকে আহবান জানাই আমাদের সাথে মিলিত হয়ে জিহাদে নেমে পড়ুন যাতে আল্লাহর কালিমাকে বুলন্দ করতে পারেন এবং তাঁর হুকুম মেনে তাঁর যমিনে তাঁর হুকুমাত প্রতিষ্ঠা করতে পারেন “তাদের বিরুদ্ধে ততক্ষন যুদ্ধ করো যতক্ষন ফেতনা দূরীভূত না হয় এবং ইবাদত এক আল্লাহর জন্যে নির্দিষ্ট হয়ে যায়” [আল আনফাল ৩৯]
    আর আমরা সেখান থেকেই যুদ্ধ শুরু করবো যেখান থেকে আল্লাহ আমাদের আদেশ করেছেন “হে ঈমানদারগণ, তোমাদের নিকটবর্তী কাফেরদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা অনুভব করুক আর জেনে রাখ, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন” [আত তাওবাহ ১২৩]
    তাই যে ব্যক্তি নিজের ব্যাপারে ভয় করে, সে পালিয়ে যাক যদি সে মনে করে এতে সে রক্ষা পাবে। “তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা মৃত্যুর ভয়ে নিজেদের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন? অথচ তারা ছিল হাজার হাজার। তারপর আল্লাহ তাদেরকে বললেন মরে যাও। তারপর তাদেরকে জীবিত করে দিলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের উপর অনুগ্রহকারী। কিন্তু অধিকাংশ লোক শুকরিয়া প্রকাশ করে না। আল্লাহর পথে লড়াই কর এবং জেনে রাখ, নিঃসন্দেহে আল্লাহ সবকিছু জানেন, সবকিছু শুনেন” [আল বাক্বারাহ ২৪৩-২৪৪]
    আর পিছু হটা কিভাবে একজনকে বাচাতে পারে? “তোমরা যে মৃত্যু থেকে পলায়নপর, সেই মৃত্যু অবশ্যই তোমাদের মুখামুখি হবে” [আল জুমুয়াহ ৮]
    পিছনে বসে থাকা কিভাবে একজন লোকের মৃত্যুর মাঝে প্রতিবন্ধক হতে পারে? “তুমি বল, তোমরা যদি নিজেদের ঘরেও থাকতে তবুও তারা অবশ্যই বেরিয়ে আসত নিজেদের অবস্থান থেকে যাদের মৃত্যু লিখে দেয়া হয়েছে” [আল ইমরান ১৫৪]
    আর জিহাদ থেকে পলায়নের ব্যাপারে ও কাফিরদের কথাবার্তা থেকে সাবধান থাকুন “ঈমাণদারগণ! তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা কাফের হয়েছে এবং নিজেদের ভাই বন্ধুরা যখন কোন অভিযানে বের হয় কিংবা জিহাদে যায়, তখন তাদের সম্পর্কে বলে, তারা যদি আমাদের সাথে থাকতো, তাহলে মরতোও না আহতও হতো না। যাতে তারা এ ধারণা সৃষ্টির মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের মনে অনুতাপ সৃষ্টি করতে পারে” [আল ইমরান ১৫৬]
    তাই, আল্লাহর নামে আপনাদের বলছি হে উলামায়ে ইসলাম এবং নেতৃবর্গ!
    আপনার ভাইদের কাছে যুদ্ধের বিধানগুলো খোলাসা করে বর্ননা করে দিন এবং নিজেদের তাদের বিরুদ্ধে প্রস্তত করুন যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন। আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রস্তত হউন, কাফের শাসকদের বিরুদ্ধে প্রস্তত হউন। আমাদের নিজেদের মাঝে শলা-পরামর্শ করুন। আসুন আমরা একই কাতারবদ্ধ হয়ে আল্লাহর দুশমনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি। একই সময়ে আসুন আমরা সকল মতভেদকে ভূলে যাই এবং আল্লাহকে ভয় করি, আমাদের মতপার্থক্যগুলো যেন আল্লাহর প্রতি অবাধ্যতার নামান্তর না হয়ে যায় এবং আমরা যেন দুনিয়াতে অসম্মান ও লজ্জার সম্মুখীন না হই এবং আখিরাতে যেন যন্ত্রনাদায়ক শাস্তির হাত থেকে মুক্তি পাই।

  • #2
    baki tuku:

    আল্লাহর দলের বৈশিষ্ট্যগুলো আমরা দেখিঃ “যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুসলমানদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জেহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না” [আল মায়িদাহ ৫৪] । অপর আয়াতে “মুহাম্মদ আল্লাহর রসুল, তাঁর সহচরগন কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের প্রতি ক্ষমাশীল” [আল ফাতহ ২৯]
    আমরা আল্লাহর রসুলের(স) পথে চলমান। আমরা আমাদের ভাইদের জন্যে নিজেদেরকে কুরবানী করি। সমগ্র দুনিয়ার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের মুসলিমদের জন্যে আমরা নিজেদেরকে কুরবানী করি। আল্লাহর পথে আমাদের রক্ত এবং জীবন দিয়ে ত্যাগ স্বীকার করি। আমরা আমাদের ভাইদেরকে ভালবাসারা মাধ্যমে, তাদের প্রতি নমনীয় আচরন করার মাধ্যমে এবং তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য কামনা করি। আমরা কুফফার ও তাদের সকল দোসরদের প্রতি প্রকাশ্যে শত্রুতা, ঘৃনা এবং যুদ্ধের আহবান করি। কখনই আমরা আমাদেরকে বা আমাদের ভাইদেরকে আল্লাহর দুশমনদের কাছে সমর্পন করবো না। কখনই আমরা আমাদের দ্বীনের ব্যাপারে কোন ধরনের অসম্মান সহ্য করবো না কারন আমাদের নেতা(স) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি প্রতিবাদ ছাড়াই নিজের উপর অসম্মানকে মেনে নেয়, সে আমার অন্তর্ভুক্ত নয়”। তাই আসুন আমরা প্রত্যেকে নিজের ব্যাপারে উচ্চ ধারনা পোষন করি এবং নিজেদেরকে বারংবার আল্লাহর এই বানী শুনাইঃ “আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না। যদি তোমরা মুমিন হও তবে, তোমরাই জয়ী হবে” [আল ইমরান ১৩৯]


    হে মুসলিম ভাইয়েরা!
    নিজেদেরকে আল্লাহর দুশমনদের বিরুদ্ধে প্রস্তত করুন, এককভাবে এবং দলগতভাবে। সময় এসে গেছে আমাদের জন্যে এই অপমানের বস্ত্র খুলে ফেলে মর্যাদার সাথে দুনিয়াতে বাস করার। আমরা হয় ইসলামি শরীয়াতের ছায়াতলে বাচবো নয়ত আল্লাহর কাছে তাঁর সন্তষ্টি সহকারে শহীদ হয়ে চলে যাব। আর নিঃসন্দেহে উত্তম পরিনতি গুলোর একটা হচ্ছে- বিজয় অথবা শাহাদাত।
    হে আল্লাহ, আমি কি পৌছে দিয়েছি? আপনি সাক্ষী থাকুন!
    ওয়াল্লাহু আকবার।
    শক্তি তো আল্লাহ তাঁর রসূল ও মুমিনদেরই কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না।


    রচনায়
    শায়খ মারওয়ান হাদীদ
    আল্লাহ তাঁর উপর রহম করুন

    Comment


    • #3
      নিঃসন্দেহে উত্তম পরিনতি গুলো হচ্ছে- বিজয় অথবা শাহাদাত।

      zajakallah.

      Comment

      Working...
      X