Announcement

Collapse
No announcement yet.

কোরআন পরিত্যাগ করার বিভিন্ন ধরণ

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কোরআন পরিত্যাগ করার বিভিন্ন ধরণ

    কোরআন পরিত্যাগ করার বিভিন্ন ধরণ

    আল্লাহ তা'আলা বলেন,

    وَقَالَ الرَّسُولُ يَا رَبِّ إِنَّ قَوْمِي اتَّخَذُوا هَـٰذَا الْقُرْآنَ مَهْجُورًا .

    রাসূল বললেন, হে আমার প্রতিপালক ! আমার জাতি এই কোরআনকে পরিত্যাগ করে বসেছে। সূরা ফুরকান: 30

    ইমাম ইবনুল কাইয়িম রহ. তাঁর 'আল ফাওয়ায়েদ' নামক গ্রন্থে কোরআন পরিত্যাগ করার পাঁচটি ধরণ উল্লেখ করেছেন।

    01 : কোরআনের প্রতি ঈমান না আনা। কোরআন তেলাওয়াত না করা। অন্যের কাছ থেকে এর তেলাওয়াত না শোনা এবং এর প্রতি মনোযোগ না দেয়া।

    02 : কোরআন অনুযায়ী আমল না করা।

    03 : কোরআনের বিধান অনুযায়ী বিচারকার্য পরিচালনা না করা।

    04 : কোরআনের বিষয়বস্তু নিয়ে চিন্তাভাবনা না করা এবং তার মর্ম আত্মস্থ করার চেষ্টা না করা।

    (অর্থাৎ শুধু মুখে কিংবা চোখ দিয়ে তেলাওয়াত করে যাওয়া। অন্তরে এর কোনও প্রভাব না ফেলা।
    প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য, তেলাওয়াত করার সময় কোরআনের বিষয়বস্তু অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা যা করতে বলছেন এবং যা থেকে বেঁচে থাকতে বলছেন, তা বুঝার চেষ্টা করা। কারণ, কোরআনের বিষয়বস্তু বুঝা এবং সে অনুযায়ী আমল করা- এ দুটি জিনিসই কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার মূল উদ্দেশ্য। শুধু তেলাওয়াত করা মূল উদ্দেশ্য নয়।

    এজন্যই ওলামায়ে কেরাম বলেছেন,

    من لم يقرأ القرآن فقد هجره ، ومن قرأ القرآن ولم يتدبَّر معانيه فقد هجره ، ومن قرأه وتدبَّره ولم يعمل بما فيه فقد هجره .

    যে ব্যক্তি কোরআনে কারীমের তেলাওয়াতই করল না সে যেমন কোরআন পরিত্যাগ করল যে শুধু তেলাওয়াত করল বিষয়বস্তু নিয়ে চিন্তাভাবনা করল না সেও কোরআন পরিত্যাগ করল।
    তেমনিভাবে যে ব্যক্তি তেলাওয়াত করল বিষয়বস্তু নিয়ে চিন্তা-ভাবনাও করল কিন্তু সে অনুযায়ী আমল করল না সেও কোরআন পরিত্যাগ করল।

    সালাফদের কোন একজনের মন্তব্য,

    نزل القرآن لِيعمَل به، فاتخذوا تلاوته عملاً .

    কোরআনে কারীম নাযিল হয়েছে সে অনুযায়ী আমল করার জন্য কিন্তু মানুষ শুধু এর তেলাওয়াতকে আমল বানিয়ে নিয়েছে।

    এ কারণেই 'আহলে কোরআন-কোরআনের বাহক' তাঁরাই যারা কোরআনের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জ্ঞান রাখে এবং সে অনুযায়ী আমল করে। যদিও তারা পুরো কোরআন মুখস্ত করেনি।
    পক্ষান্তরে যারা পুরো কোরআন মুখস্থ করল কিন্তু বুঝল না এবং সে অনুযায়ী আমল করল না তারা কোনভাবেই 'আহলে কুরআন-কোরআনের বাহক' নয়। যদিও তারা কোরআনের হরফগুলোকে তীরের মতো সোজা করে।
    ইমাম গাযযালী রহ. বলেছেন,

    تلاوة القرآن حق تلاوته .

    'যথাযথভাবে কোরআন তেলাওয়াত করা'- এর অর্থ, কোরআন তেলাওয়াত করার সময় জিহবা, বিবেক এবং অন্তর তিনোটাকে শরিক রাখা।
    কোরআন তেলাওয়াত মধ্যে যেন জিহবা, বিবেক এবং অন্তর তিনোটার অংশ থাকে। জিহবার অংশ হরফগুলোকে সঠিক ভাবে উচ্চারণ করা। বিবেকের অংশ অর্থ ও মর্ম উপলব্ধি করা। অন্তরের অংশ উপদেশ গ্রহণ করা এবং কোরআনের আদেশ-নিষেধ ইত্যাদি দ্বারা প্রভাবিত হওয়া।
    সারকথা হল, জিহবা তেলাওয়াত করবে। বিবেক অর্থ উপলব্ধি করবে আর অন্তর (প্রভাবিত হবে এবং) উপদেশ গ্রহণ করে)

    05 : কোরআনের মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণ না করা।

    (আমাদের কর্তব্য, যথাসম্ভব কোরআনে কারীমের মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণ করা। নিজেদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ সব রোগ ব্যাধির জন্য। এখানে একটি কথা মনে রাখতে হবে, কোরআনের দ্বারা আমরা তখনই উপকৃত হতে পারব যখন এর প্রতি আমাদের পূর্ণ ঈমান ও পূর্ণ ইয়াকীন থাকবে)

    উপরোক্ত সবগুলো বিষয়ই কোরআনে কারীমের আয়াত - 'রাসূল বললেন, হে আমার প্রতিপালক ! আমার জাতি এই কোরআনকে পরিত্যাগ করে বসেছে' - এর অন্তর্ভুক্ত। যদিও এর কোনটি অপরটির তুলনায় নিচের স্তরের।
    - ইমাম ইবনুল কাইয়িম রহ.
    হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সবাইকে সাআদাতের জীবন এবং শাহাদাতের মৃত্যু দান করুন।

  • #2
    আল্লাহ তা‘আলা আপনার মেহনতকে কবুল করুন। আমীন
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment


    • #3
      আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে বেশী বেশী তিলাওয়াত ও আমলের পাশাপাশি কুরআনী হুকুমত বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

      Comment

      Working...
      X