Announcement

Collapse
No announcement yet.

জিহাদি কাফেলায় আইম্মায়ে দ্বীন:

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জিহাদি কাফেলায় আইম্মায়ে দ্বীন:

    নয়

    আওযায়ি রহ. (৮৮-১৫৭ হি.)

    শাইখুল ইসলাম। ইমামু আহলিশ শাম। আবু আমর আব্দুর রহমান ইবনু আমর আলআওয়ায়ি। হাদিস, ফিকহ, ইবাদত-বন্দেগি, সত্যকথনে স্পষ্টবাদিতা: সকল ক্ষেত্রে অবিস্মরণীয় ইমাম। আইম্মায়ে আরআবার মতো তিনিও একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ মাযহাবের ইমাম ছিলেন। শাম ও আন্দালুসে দীর্ঘ দিন পর্যন্ত তার মাযহাব প্রচলিত ছিল। পরে তা মিটে যায়। তার ইলমী মাকাম তুলে ধরতে গিয়ে কোন এক হাফেয বলেন,

    وهو في الشاميين نظير معمر لليمانيين، ونظير الثوري للكوفيين، ونظير مالك للمدنيين، ونظير الليث للمصريين، ونظير حماد بن سلمة للبصريين. اهـ
    “ইয়ামানবাসীর জন্য যেমন মা’মার, কূফাবাসীর জন্য যেমন সুফিয়ান সাওরি, মদীনাবাসীর জন্য যেমন ইমাম মালেক, মিশরবাসীর জন্য যেমন লাইস ইবনু সাদ এবং বসরাবাসীর জন্য যেমন হাম্মাদ ইবনু সালামা- শামবাসীর জন্য তেমনি আওযায়ি।”- সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ৬/৫৫৬


    রিবাতের ময়দানে আওযায়ি
    প্রথমে তিনি ‘আলআওযা’ এলাকায় বাস করতেন। পরে রিবাতের জন্য বৈরুতে চলে যান এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। আওযায়ি রহ. নিজেই বলেন,
    جئت إلى بيروت أرابط فيها. اهـ
    “রিবাতের উদ্দেশ্যে আমি বৈরুতে আসি।”- সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ৬/৫৫০


    যাহাবি রহ. (৭২৮ হি.) বলেন,
    كان يسكن بمحلة الأوزاع ... ثم تحول إلى بيروت مرابطا بها إلى أن مات. اهـ
    “তিনি ‘আলআওযা’ এলাকায় বাস করতেন। ... তারপর রিবাতের উদ্দেশ্যে বৈরুত চলে যান এবং মৃত্যু পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন।”- সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ৬/৫৪২


    ইবনে কাসীর রহ. (৭৭৪ হি.) বলেন,
    لا خلاف أنه مات ببيروت مرابطا. اهـ
    “এ ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই যে, তিনি বৈরুতে রিবাতরত অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।”- আলবিদায়া ওয়াননিহায়া ১০/১২৮


    সত্য উচ্চারণে দ্ব্যর্থহীন আওযায়ি

    উমাইয়া ইবনু ইয়াযিদ রহ. বলেন,
    كان قد جمع العبادة، والعلم، والقول بالحق. اهـ
    “প্রভূত ইলমের অধিকারী ও ইবাদতগুজার হওয়ার পাশাপাশি আওযায়ি ছিলেন হকের বেলায় স্পষ্টভাষী।”- সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ৬/৫৪৪

    জীবনের মায়া ত্যাগ করে তিনি জালেম শাসকদের সামনে হক কথা বলেছেন। আওযায়ি রহ. এর জন্ম হয় উমাইয়া আমলে। তার বয়স যখন চল্লিশেরে কোটা পেরিয়েছে, তখন ১৩২ হিজরিতে আব্বাসীরা উমাইয়াদের পরাজিত করে খেলাফত দখল করে। উমাইয়া খেলাফতের দারুল খিলাফা ছিল শাম। আওযায়ি রহ. শামের অধিবাসী ছিলেন। আবুল আব্বাস সাফফাহ ছিলেন আব্বাসীদের প্রথম খলিফা। তার চাচা আব্দুল্লাহ বিন আলী শামে উমাইয়াদের কচুকাটা করে। তার সাথে আওযায়ি রহ. এর ঘটনাটি প্রসিদ্ধ। আওযায়ি রহ. নিজের ঘটনাটি এভাবে বর্ণনা করেন,

    بعث عبد الله بن علي إلي فاشتد ذلك علي، وقدمت فدخلت، والناس سماطان، فقال: ما تقول في مخرجنا، وما نحن فيه؟ قلت: أصلح الله الأمير قد كان بيني، وبين داود بن علي مودة قال: لتخبرني. فتفكرت ثم قلت: لأصدقنه، واستبسلت للموت، ثم رويت له عن يحيى بن سعيد حديث الأعمال، وبيده قضيب ينكت به ثم قال: يا عبد الرحمن: ما تقول في قتل أهل هذا البيت؟ قلت حدثني محمد بن مروان عن مطرف بن الشخير عن عائشة عن النبي -صلى الله عليه، وسلم- قال: "لا يحل قتل المسلم إلا في ثلاث.."، وساق الحديث. فقال: أخبرني عن الخلافة، وصية لنا من رسول الله -صلى الله عليه، وسلم-؟ فقلت: لو كانت وصية من رسول الله -صلى الله عليه، وسلم- ما ترك علي -رضي الله عنه- أحدا يتقدمه. قال: فما تقول في أموال بني أمية؟ قلت: إن كانت لهم حلالا فهي عليك حرام، وإن كانت عليهم حراما فهي عليك أحرم. فأمرني، فأخرجت. اهـ

    “আব্দুল্লাহ ইবনু আলী আমাকে হাজির করার জন্য লোক পাঠাল। আমার কাছে বিষয়টা বিপদসংকুল ঠেকল। আমি গেলাম। তার কাছে হাজির হলাম। (অন্য বর্ণনায় এসেছে, দু’জন সৈন্য দু’বাহুতে ধরে তাকে হাজির করল।) তখন তার সৈন্যরা (অস্ত্রসজ্জিত অবস্থায়) দু’ সারিতে দাঁড়ানো ছিল।

    তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমরা যে উমাইয়াদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছি এবং বর্তমানে আমরা যা করছি, সে ব্যাপারে তোমার কি অভিমত? (তা কি জিহাদ গণ্য হবে?) ...

    আমি কিছুক্ষণ ফিকির করলাম। তারপর মনে মনে বললাম, আমি তার সামনে সত্য কথাই বলবো (যদিও এ কারণে আমার মরণ হয়)। আর আমি মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলাম। (অন্য বর্ণনায় এসেছে, প্রথমে আমার মৃত্যুর ভয় লাগছিল। কিন্তু পরে যখন চিন্তা করলাম যে, এক দিন আল্লাহ তাআলার সামনে আমাকে দাঁড়াতে হবে, তখন সত্য সত্য জবাব দেয়ারই সিদ্ধান্ত নিলাম।) (তার প্রশ্নের জবাবে) আমি এ হাদিসটি বর্ণনা করলাম, ‘সকল কর্ম তার নিয়ত অনুযায়ী বিবেচিত হয়ে থাকে’। তার হাতে তখন একটি লাঠি ছিল। সেটি দিয়ে তিনি মাটিতে আঁচড় কাটছিলেন।
    এরপর জিজ্ঞেস করলেন, হে আব্দুর রহমান! এ পরিবারের (তথা বনী উমাইয়ার) লোকদের হত্যার ব্যাপারে তোমার কি অভিমত?

    জবাবে আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ হাদিসটি বর্ণনা করলাম, ‘তিন কারণ ব্যতীত কোন মুসলমানকে হত্যা করা বৈধ নয় ...।’ (অন্য বর্ণনায় এসেছে, এ ধরণের নেতিবাচক উত্তরে তিনি রাগে ফুলে উঠছিলেন আর আমি মনে মনে ভাবছিলাম, এবার হয়তো আমার মস্তক উড়িয়ে দেয়া হবে।)

    এরপর জিজ্ঞেস করলেন, খেলাফতের ব্যাপারে তোমার কি অভিমত? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি তা আমাদের (তথা নবী বংশের লোকদের) জন্য অসিয়ত করে যাননি?

    আমি উত্তর দিলাম, যদি অসিয়তই করে যেতেন, তাহলে আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু অন্য কাউকে তা গ্রহণ করতে দিতেন না।

    এরপর জিজ্ঞেস করলেন, বনী উমাইয়ার ধন-সম্পত্তির ব্যাপারে তোমার কি অভিমত? (তা কি আমাদের জন্য হালাল?)

    আমি উত্তর দিলাম, যদি তারা তা হালাল পন্থায় অর্জন করে থাকে, তাহলে আপনার জন্য তা হারাম। আর যদি তারা হারাম পন্থায় অর্জন করে থাকে, তাহলে আপনার জন্য তো এর আগেই হারাম।

    (এ ধরণের নেতিবাচক উত্তর শুনে) তিনি আমাকে বের করে দেয়ার আদেশ দিলেন। আদেশ মতো আমাকে বের করে দেয়া হল।”- সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ৬/৫৫২


    তিনি বলেন, আমি সেখান থেকে বের হচ্ছিলাম আর প্রতিটি কদমে কদমে মনে হচ্ছিল, এখনি বুঝি আমার মস্তক দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।



    এ ঘটনা বর্ণনা করার পর যাহাবি রহ. বলেন,

    قلت: قد كان عبد الله بن علي ملكا جبارا، سفاكا للدماء، صعب المراس، ومع هذا فالإمام الأزواعي يصدعه بمر الحق كما ترى؛ لا كخلق من علماء السوء الذين يحسنون للأمراء ما يقتحمون به من الظلم والعسف، ويقلبون لهم الباطل حقا قاتلهم الله أو يسكتون مع القدرة على بيان الحق. اهـ

    “আমি বলি, আব্দুল্লাহ ইবনু আলী ভয়ানক প্রকৃতির স্বেচ্ছাচারি শাসক ছিল। ছিল রক্ত পিপাসু। উদ্যত প্রকৃতির। এরপরও ইমাম আওযায়ী রহ. তার মুখের উপর হকের তিক্ত বাণী উচ্চারণ করেছেন- যেমনটা তুমি দেখেছো। উলামায়ে সূ-দের মতো আচরণ তিনি করেননি; যারা শাসকরা যত জুলুম-অবিচার করে থাকে, সব কিছুকেই সাজিয়ে গুছিয়ে তাদের সামনে সদাচাররূপে দেখিয়ে থাকে। বাতিলকে হকরূপে পেশ করে, কিংবা হক বলার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও চুপ থাকে। আল্লাহ তাআলা এদের ধ্বংস করুন।”- সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ৬/৫৫২
    ***


  • #2
    আখিয়ে মুহতারাম! (ইলম ও জিহাদ ভাই)
    আল্লাহ আপনাকে নিরাপদে রাখুক ও আমাদেরও

    বি:দ্র: মুহতারাম.....
    اولیس فی سبیل الله الا من قتل
    এটার ব্যাপারে আপনার রায় কি?
    আশা করি জানাবেন।


    সবাইকে মতামত জানানের অনুমতি রয়েছে।
    فمن یکفر بالطاغوت ویٶمن بالله فقد استمسک بالعروت الوثقی'
    کم من فاة قلیلة غلبت فاة کثیرة باذن الله

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ। বারাকাল্লাহু ফি ইলমিকা ওয়া আমালিকা। আমীন
      মুহতারাম ইলম ও জিহাদ ভাই- আপনাকে ফোরামে নিয়মিত চাই।
      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

      Comment


      • #4
        আল্লাহ তায়ালা আপনার ইলম ও আমলে বারাকাহ বাড়িয়ে দিন আমীন
        জিহাদই হলো মুমিন ও মুনাফিকের মাঝে
        পার্থক্যকারী একটি ইবাদাহ

        Comment

        Working...
        X