Announcement

Collapse
No announcement yet.

উম্মাহ্ নিউজ # ৯ই রমাদান, ১৪৪১ হিজরী # ০৩রা মে, ২০২০ঈসায়ী।

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উম্মাহ্ নিউজ # ৯ই রমাদান, ১৪৪১ হিজরী # ০৩রা মে, ২০২০ঈসায়ী।

    চীনে এ বছরও উইঘুরদের মদ খাইয়ে রোজা ভাঙতে বাধ্য করা হচ্ছে



    চীনা কনসেনট্রেশন ক্যাম্পগুলিতে উইঘুর মুসলিমরা রোজা রাখছেন কিনা, তা নিশ্চিত করতে মদ পান করতে বাধ্য করা হচ্ছে। গত ২৯ এপ্রিল বার্তা সংস্থা “DOAM” এর এক প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা যায় চীনের উইঘুরে প্রায় ৩০ লাখ মুসলিম বন্দী শিবিরে আটক রয়েছে। বন্দী এইসব উইঘুর মুসলিমরা মদ ও শুকরের মাংস খেয়ে প্রমাণ করতে হচ্ছে যে তারা রোজা রাখছেনা।

    বন্দী শিবিরে চীনা কর্তৃপক্ষ ইসলাম ও মুসলিমদের নিন্দা করতে ও চীনা সংস্কৃতি ও নাস্তিকতা গ্রহণ করতে বাধ্য হয়। সেখানে যারা ইসলাম ত্যাগ করে কমিউনিস্ট আদর্শ গ্রহণ করে, তারা তাদেরকে বিশেষ সুযোগ সুবিধা দেয়। আর যারা কমিউনিস্ট আদর্শ গ্রহণ করতে অস্বীকার করে তাদেরকে বর্বর অত্যাচার ও শাস্তি দেওয়া হয়।

    প্রায়ই চীনা হানরা উইঘুর নারীদের বিনা টাকায় কাজ করতে বাধ্য করে। উইঘুর মুসলিম মেয়েদেরকে নাস্তিক চাইনিজদের সাথে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। উইঘুর পুরুষদেরকে কন্সেনট্রেশন ক্যাম্পে আটকে রেখে সেই মুসলিমদের স্ত্রী -কন্যা ও বাচ্চাদের সাথে একই বিছানায় শুয়ে থাকে নিকৃষ্ট চাইনিজরা।

    চীনের মুসলিমদের রোজা রাখার পাশাপাশি দাড়ি রাখা, নারীদের মাথায় কাপড় দেয়া, নিয়মিত নামাজ আদায় এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলাসহ ধর্মীয় বিষয়গুলোকে চীন কর্তৃপক্ষ চরমপন্থা হিসেবে চিহ্নিত করেছে বলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের এক রিপোর্ট প্রকাশ করে।

    উইঘুর বুলেটিনে কাজ করা উইঘুর মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট অ্যালিপ এরকিন জানান, কয়েক দশক ধরে স্কুল এবং সরকারি দফতরগুলোতেও রমজান মাসে রোজা রাখার বিষয়ে বিধি-নিষেধ আরোপ করে আসছে চীনা কর্তৃপক্ষ।

    আর গত চার বছরে মুসলিমদেরকে ইসলামি ঐতিহ্য থেকে দূরে রাখতে তাদের বাড়িতে গণ-নজরদারি ও আটকের মাত্রা বাড়ানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। অ্যালিপ এরকিনের মতে বর্তমানে জিনজিয়াং প্রদেশের বিভিন্ন কারাগারে ১২ লাখেরও বেশি মুসলিম আটক রয়েছে।

    শুধু তাই নয়, গত বছর দ্য গার্ডিয়ান-এ প্রকাশিত হয়েছে যে, ২০১৬ সালের পর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গত তিন বছরে চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় ৩১টি মসজিদ ধ্বংস করেছে দেশটির প্রসাশন। তাছাড়া এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি ইসলামী স্থাপনাকে ধ্বংস করা হয়েছে।

    বন্দী নারীদের হাত-পা বেঁধে উঁচু চেয়ারে বসিয়ে ইলেক্ট্রিক শক দেওয়া হয়, এমন মারাত্মক ওষুধ খাওয়ানো হয় যার ফলে নারীদের প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হয় বা কারো মাসিক বন্ধ হয়ে যায়।

    আব্দুর রহমান হাসান নামের এক ব্যবসায়ী চীন সরকারকে অনুরোধ করেন তার মা ও ২২ বছর বয়সী স্ত্রীকে যেনো তারা গুলি করে মেরে ফেলে।

    কারণ রিএডুকেশন ক্যাম্পের শাস্তি তারা সহ্য করতে পারবেনা। এই অত্যাচারের শিকার হয়ে অনেক পরিবারই তাদের কমিউনিস্ট আদর্শ গ্রহণ করেছে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের উইঘুররা।

    মুসলমানদেরকে জোর করে শূকরের মাংস খাওয়ানো হয়, মদ পান করানো হয়, কমিউনিস্ট দলের নেতাদের ছবি বাড়িতে টানিয়ে রাখাসহ ছেলেদের দাড়ি না রাখা এবং মেয়েদেরকে শর্ট ড্রেস পড়তে বাধ্য করা হয়।

    এক ব্যক্তি লম্বা দাড়ি রাখায় চীনের আদালত তাকে ৬ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে, শুধু তাই নয় তার স্ত্রীকেও বোরকা পরিধান করায় ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

    সেখানে মুসলিম নারীদের ঢোলা জামা পড়াও নিষিদ্ধ। সকল মসজিদগুলোতে চীনের জাতীয় পতাকা উত্তোলন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।


    সূত্র: https://alfirdaws.org/2020/05/03/37356/
    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    চীনের উইঘুর মুসলিমরা যেসব নির্যাতন ভোগ করছে



    উইঘুর মুসলিম অধ্যুষিক অঞ্চলের আগের নাম ‘পূর্ব তুর্কিস্তান’। এটির বর্তমান জিনজিয়াং প্রদেশে। চীন সরকার এ অঞ্চলকে দখল করে জিনজিয়াং নাম দিয়েছে। ৯০ লাখ মুসলিম অধ্যুষিত এ অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ অধিক উইঘুর নারী-পুরুষ বন্দি রয়েছে ভয়ংকর বন্দি শিবিরে।

    চীন সরকার এ বন্দি শিবিরকে ‘চরিত্র সংশোধনাগার’ নাম দিয়েছে। চীন সরকারের দাবি, উশৃংঙ্খল অবস্থা (ইসলাম)থেকে নিরাপদ ও সুরক্ষা দিতেই তাদের এ কার্যক্রম। চরিত্র সংশোধনাগারের নামে চীন সরকার এ সব মুসলিমদের প্রতি চরম অত্যাচার ও নির্যাতন করছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তা উঠে এসেছে।

    আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বিভিন্ন সূত্র জানায়, জিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসরত উইঘুর মুসলমানদের ওপর চীন সরকারের বর্বরতা সীমা ছাড়িয়ে গেছে। মুসলিমদের বন্দি করা এখনো থামেনি।

    উইঘুর মুসলিম বন্দিদের মুক্তির দাবিতে কবিতা লেখার অপরাধে সম্প্রতি প্রখ্যাত হুই মুসলিম কবি কুই চুই হাউজিন (Kwe Cui Haoxin) কে গ্রেফতার করা হয়েছে।

    মুসলিম নির্যাতনের এসব তথ্য যাতে চীনের বাইরে যেতে না পারে সেজন্য তারা প্রতিনিয়িত মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগে বিধি-নিষেধ আরোপ করছে। সরকারিভাবে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য জিনজিয়াং প্রদেশে ভ্রমণও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

    চীন সরকার কর্তৃক এসব অত্যাচার নির্যাতনে এখনও কোনো উইঘুর মুসলিম প্রতিরোধমূলক কিংবা আত্মরক্ষামূলক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তারপরও দেশটির সরকার উইঘুর মুসলিমদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে বর্হিবিশ্বের দৃষ্টি অন্যদিকে প্রবাহিত করছে। অথচ দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি তারা।

    এদিকে চীন সরকার মুসলিম ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধ্বংসে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যা ধীরে ধীরে তারা বাস্তবায়ন করছে।

    তার কিছু হলো-জিনজিয়াং প্রদেশের কোনো পুরনো মসজিদ সংস্কার করতে না দেয়া। নতুন মসজিদ নির্মাণের অনুমোদন না দেয়া। বৌদ্ধমন্দিরের আদলে সংস্কার করার পরিকল্পনা গ্রহণ করলেই কেবল পুরনো মসজিদ সংস্কারের অনুমোদন মেলে। প্রকাশ্যে ধর্মীয় শিক্ষার কোনো সুযোগ নেই জিনজিয়াং-এ। তাই কঠিন গোপনীয়তার মধ্যেই ধর্মীয় শিক্ষা নিতে হয় তাদের। পবিত্র হজ্জকে পুরোপুরি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। জিনজিয়াং প্রদেশের হুই জেলার লিউ কাউলান ও কাশগড়ের প্রাচীন মসজিদে মুসলিমদের জুমআর নামাজ আদায় নিয়মিত বাঁধা প্রদান করা হচ্ছে। নামাজ আদায়কালে প্রতি এক হাজার মুসলিমের বিপরীতে অস্ত্রসজ্জিত এক শত পুলিশ সদস্য মসজিদ ঘিরে রাখে। পোস্টারের মাধ্যমে চীন সরকার এ প্রচারণা চালাচ্ছে যে, নামাজের জন্য মসজিদ নয় বরং নামাজ পড়ার জন্য ঘরে যাও। উইঘুর মুসলিমদের ইসলামি সাংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে ধ্বংস করতে চীন সরকার নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। মুসলিম যুবকদের বৌদ্ধ মেয়েদের বিয়ে করতে অর্থের প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। মুসলিম গর্ভবর্তী নারীদের অবৈধভাবে গর্ভপাত করানো হচ্ছে আবার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছেলেদের কাছে মুসলিম মেয়েদের জোরপূর্ব বিয়ে দেয়া হচ্ছে। মুসলমানদের শিক্ষার সুযোগও অত্যন্ত সীমিত করা হয়েছে। সুকৌশলে তাদের অশিক্ষিত রাখা হচ্ছে। ১৯৯৬ সাল থেকে জিনজিয়াং প্রদেশের ৪০টি শহর ও গ্রামে অবস্থিত মাদরাসা ও হিফজখানার ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের শিশু-কিশোররা ধর্মীয় জ্ঞান ও কুরআন হিফজ করার সুযোগ থেকে হচ্ছে বঞ্চিত। ১৮ বছরের নিচে, শিশু-কিশোরদের জন্য ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। জিনজিয়াংয়ে মুসলমানদের তুর্কি ভাষা ও আরবি বর্ণমালা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ইতঃমধ্যে জিনজিয়াংয়ের ৫০টির মতো পুরনো মসজিদ সীলগালা করে দিয়েছে চীন কর্তৃপক্ষ। অতি সম্প্রতি মক্কাভিত্তিক রাবেতা আল-আলম আল-ইসলামী জিনজিয়াংয়ের স্থানীয় ভাষায় অনুবাদ করা কুরআনের তিন লাখ কপি মুসলমানদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য পাঠিয়েছে।

    কিন্তু কমিউনিস্ট কর্তৃপক্ষ সব কপি বাজেয়াপ্ত করে। পরে আন্তর্জাতিক মুসলিম সম্প্রদায়ের চাপে কিছু কপি তারা ফেরত দেয়।

    ফলে চীনের সর্বাধিক মুসলিম অধ্যুষিত জিনজিয়াং প্রদেশে মুসলিমদের ধর্মীয় রীতিনীতি পালনের অধিকার সীমিত হয়ে পড়ছে। মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো ওঠে এসেছে এসব তথ্য।

    মুসলিম বিধি-বিধান বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার সংক্রান্ত অন্যান্য সব বিধানও কৌশলে মুছে ফেলার অপতৎপরতা ব্যাপকহারে চালানো হচ্ছে। মুসলিম পুরুষ ও নারীদের জন্মশাসন ও বন্ধ্যাত্ব করে দেয়া হচ্ছে।

    সম্প্রতি জিনজিয়াং প্রদেশের যে কোনো একটি শহরকে ভূগর্ভস্থ পারমানবিক পরীক্ষা ও বিষ্ফোরণের জন্য বাছাই করার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করছে চীন সরকার।

    শুধু তাই নয়, ১৯৬৪ সাল থেকে জিনজিয়াং প্রদেশের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা না করে এ পর্যন্ত প্রায় ৪০টি ক্ষতিকর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।

    চীন সরকারের জুলুম অত্যাচার থেকে বাঁচার লক্ষ্যে জিনজিয়াংয়ের প্রায় ২৫ লাখ অধিবাসী পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে। নানা অজুহাতে উইঘুর মুসলিম নেতৃস্থানীয়দের জেল-জুলুম এমনকি মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছে সরকার।

    সুত্র : জাগো নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম।


    সূত্র: https://alfirdaws.org/2020/05/03/37359/
    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

    Comment


    • #3
      মোদি সরকার করোনা টেস্টের পরিবর্তে ব্যস্ত সমাজকর্মীদের উপর ইউএপিএ চাপানোর কাজে, টুইট জিগনেস মেভানির



      দেশজুড়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে করোনা ভাইরাস। এমন সময়ে সরকারের যেখানে উচিত বেশি বেশি করে করোনার পরীক্ষা করা, মহামারী থেকে দেশকে বাঁচানো, কিন্তু মোদী সরকার সেই কাজ না করে আমাদের আরও সমাজকর্মীদের উপর ইউএপিএ চাপানোর কাজে ব্যস্ত, এমনটাই টুইট করলেন জেএনইউ-এর প্রাক্তন ছাত্র নেতা জিগনেস মেভানি। শনিবার নিজের টুইটারে তিনি একথা বলেন।

      https://www.tdnbangla.com/news/natio...h-mevani-uapa/
      https://twitter.com/jigneshmevani80

      এদিন টুইটে জিগনেস লেখেন, “সরকারের যখন আরও বেশি করে পরীক্ষা করা উচিত, যখন এই মহামারী থেকে দেশকে বাঁচানো উচিত। সেই সময় আমাদের সরকার সমাজকর্মীদের উপর ইউএপিএ চাপানোর জন্য কাজ করছে। অভিশাপ!”

      উল্লেখ্য, সম্প্রতি জামিয়ার দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সফুরা জারগরকে দিল্লিতে ষড়যন্ত্রের মিথ্যে অভিযোগ এনে ইউএপিএ আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২৭ বছরের সফুরা এখন দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সেই অবস্থাতেই তাঁকে পাঠানো হয়েছে তিহাড় জেলে।


      সূত্র: https://alfirdaws.org/2020/05/03/37362/
      আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

      Comment


      • #4
        সাহায্যহীন সাগরে ভাসছে আটকে পড়া শত শত রোহিঙ্গা



        বঙ্গোপসাগর যেখানে আন্দামান সাগরের সাথে মিশেছে, সেখানে সাগরের নীল জলে কয়েকটি কাঠের নৌকায় ঠাসাঠাসি করে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা কোথাও না কোথাও ভেসে বেড়াচ্ছে। তাদের সাগরে বেরিয়ে পড়ার পরে ১০ সপ্তাহ চলে গেছে।

        তাদের গন্তব্য মালয়েশিয়া তাদেরকে নৌকা ভিড়াতে দেয়নি। যে বাংলাদেশ থেকে রওনা দিয়েছে তারা, সেখানেও তারা ফিরতে পারেনি। যে অধিকার গ্রুপগুলো স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তাদের অবস্থানের উপর নজর রাখার চেষ্টা করছিল, তারাও তাদের অবস্থান হারিয়ে ফেলেছে। অন্তত তিনটি নৌকা রওনা দিয়েছিল, যেগুলোতে কয়েকশ রোহিঙ্গা মুসলিম মানব পাচারকারীদের উপর ভরসা করে আশ্রয় খোঁজার জন্য বেরিয়ে পড়েছিল।

        “আমার যে ভাই বোনেরা এখনও সাগরে ভাসছে, তাদের অবস্থা চিন্তা করে কান্না পাচ্ছে”, বললেন বাংলাদেশের শরণার্থী ক্যাম্পের একজন প্রধান ইমাম মোহাম্মদ ইউসুফ। প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচানোর জন্য পালিয়ে আসা প্রায় এক মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থী এই ক্যাম্পে অবস্থান করছে।

        এই নৌকাগুলো কয়েকটি দেশের প্রত্যাখ্যানের মুখে পড়ে গেছে, জাতিসংঘ যেটাকে বিপজ্জনক ‘পিং-পং খেলা’ বলে উল্লেখ করেছে। বাংলাদেশ সরকার তাদেরকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করে বলেছে যে, তারা এরই মধ্যে বহু রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে এবং বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় বেশি শরণার্থীদের বোঝা তারা বহন করছে।

        কিন্তু মালয়েশিয়াও করোনাভাইরাস সংক্রমন ও এ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া বিদেশীভীতির কারণে তাদেরকে নৌকা ভেড়াতে না দেয়ায় তাদের যাওয়ার আর কোন জায়গা বাকি নেই।

        বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার প্রতিনিধি স্টিফ করলিস বলেছেন, “বাংলাদেশ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভারি বোঝা বহন করছে এবং এই চ্যালেঞ্জ তাদের একার উপর ছেড়ে দেয়া যাবে না। কিন্তু উপায়হীন মানুষদের ফিরিয়ে দেয়াটা কোন উত্তর হতে পারে না”।

        এ ধরণের প্রত্যাখ্যানের ফল কি হতে পারে, সেটা ১৫ এপ্রিল স্পষ্ট হয়ে গেছে। মালয়েশিয়ার প্রত্যাখ্যানের শিকার হয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি নৌকাকে উদ্ধার করে বাংলাদেশের কোস্ট গার্ড। নৌকা থেকে প্রায় ৪০০ অপুষ্টিতে ভোগা পানিশূন্যতায় শুকিয়ে আসা মানুষকে উদ্ধার করা হয়, যাদের মধ্যে অনেকেই শিশু।

        জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা – যারা শরণার্থীদের অবস্থা পর্যালোচনা করে, তারা বলতে পারেনি যে, কতজন রোহিঙ্গা এই সফরে মারা গেছে। তারা শুধু বলেছে, “অনেকেই মারা গেছে এবং তাদেরকে নৌকা থেকে ফেলে দেয়া হয়েছে”। সংস্থাটি জানিয়েছে, এদের মধ্যে একটা বড় সংখ্যা মানব পাচারকারীদের হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

        ওই সফর থেকে যারা বেঁচে ফিরেছে তাদেরকে এখন বাংলাদেশের একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে করোনাভাইরাস সতর্কতার জন্য কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

        বাংলাদেশের শরণার্থী ক্যাম্পের ইমাম ইউসুফ বললেন যে, তিনি এবং অন্যান্য ইমামরা বিভিন্ন পরিবারকে সাগরের সফরের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে বার বার সতর্ক করেছেন।

        কিন্তু শরণার্থী ক্যাম্পে যে হতাশ পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যেখানে হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়ছে, সেই অবস্থার কারণে শরণার্থীরা নিজেদের জীবনকে পাচারকারীদের হাতে তুলে দিচ্ছে।

        ইউসুফ বলেন, “শাস্তি দেয়া উচিত এই মানব পাচারকারীদেরকে, এই নিরপরাধ রোহিঙ্গাদেরকে নয়”।

        ২০১৭ সালে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা এক শরণার্থী বলেন, যদি সামর্থ থাকতো, তাহলে ছেলেদেরকে মালয়েশিয়া পাঠিয়ে দিতেন তিনি। তার জন্য আরেকটি অভিশাপ হলো একবার এ ধরণের এক ব্যার্থ নৌ যাত্রার জন্য অর্থ দিয়ে সবকিছু খুইয়েছেন তিনি।

        বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী ক্যাম্প কুতুপালংয়ে বাস করছেন সিরাজুল মুস্তাফা। তিনি বলেন, “মানুষ সবসময় নিরাপদ ও উন্নত জীবন খোঁজে। মধ্যসত্বভোগীরা তাদেরকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করে। এরা কোন পরিণতি না জেনেই ঝুঁকি নিচ্ছে”।

        কুতুপালংয়ের বাঁশের ঘর থেকে মোহাম্মদ নুর রোহিঙ্গাদের অবস্থাটা এক কথায় বর্ণনা করলেন।

        “আগেও বড় কোন আশা ছিল না। কিন্তু এখন কিছুই নেই”।

        সূত্র:নিউ ইয়র্ক টাইমস


        সূত্র: https://alfirdaws.org/2020/05/03/37365/
        আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

        Comment

        Working...
        X