Announcement

Collapse
No announcement yet.

রাজকন্যার_চোখে_জল (প্রথম পোস্ট)

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • রাজকন্যার_চোখে_জল (প্রথম পোস্ট)

    রাজকন্যার_চোখে_জল

    চাইনিজ_নিষ্ঠুরতা

    (প্রথম কিস্তি)

    বালিকার মন খারাপ।
    ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদছে সে।
    অথচ কাঁদার কোনো কারণ আজ নেই।
    আজ তার বিয়ে!

    চারিদিকে উতসব। ফুলে ফুলে ভরে গেছে চারপাশ। অপূর্ব সাজে সেজেছে সবাই। নিটোল প্রেমের মিষ্টি একটা গান বেজে যাচ্ছে ঘুরেফিরে সেই কখন থেকে। এরই মাঝে লাল পোষাকের বালিকাকে যখন হাঁটিয়ে নিয়ে আসা হলো মঞ্চে হার্টবিট বন্ধ হয়ে গেলো সবার! স্বর্গের অপ্সরী যেনো নেমে এসেছে মাটির এই পৃথিবীতে! দুপাশ থেকে ফুলের পাপড়ি ঝরে পড়লো বালিকার চলার পথে। আলোকজ্ব্বল আলোয় স্থিরচিত্র আর গতিচিত্র ধারণের অস্থির হুড়োহুড়ি পড়ে গেলো।

    ভোঁতা চেহারার হান চাইনিজ বর রাজকন্যার সামনে এসে দাঁড়ালো রাজ্য জয়ের অনুভূতি নিয়ে। যে কেউ দেখলেই বলবে ধূসর স্যুট পরা এই ছেলেটা আজকের দিনে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। বিয়ে পড়ানো শুরু হলো। চারিদিকে আলোকিত উজ্জ্বল। রাজকন্যার গলায় লাল ফুলের মালা পরালো হান যুবক। হাততালিতে মুখরিত হলো হলরুম। মুহুরমুহ ফ্লাশে ঝলকে উঠলো মঞ্চ। নিটোল প্রেমের সেই মিষ্টি গানটা বেজে যাচ্ছে তখনো। রাজকন্যার দু’চোখে টলটল করছে মুক্তোর মতো অশ্রুবিন্দু!

    বিয়ের দিন একটা নতুন জীবনের দোরগোড়ায় আনন্দ, বেদনার সম্পূর্ণ বিপরীত দুই অনুভূতি গলাগলি করে একসাথে এসে বসে। কমবেশী প্রায় সব মেয়ের চোখেই বৃষ্টি নামিয়ে ছাড়ে । আমাদের এই বালিকার কান্নার কারণ অবশ্য একটু আলাদা।

    জোর করে বিয়ে দেয়া হচ্ছে তাঁর। প্রতিবাদ করার কোনো উপায় নেই। কারণ সে উইঘুর আর তাঁর বর হান চাইনিজ! কিছু বললেই নিজে তো বটে বাপ দাদা চৌদ্দ পুরুষকে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিবে চাইনিজ সরকার! কোনো কথা হবেনা, বিয়ে করতেই হবে। [1,2,3]

    চীনে মুসলিম উইঘুর নারী এবং হান চাইনিজ ছেলেদের মধ্যে বিয়ের হিড়িক পড়ে গেছে। তবে হান পুরুষদের মধ্যে এমন বিশেষ কোনো এক্স ফ্যাক্টর হুট করে আসেনি যার কারণে উইঘুর নারীরা ওদের বিয়ে করতে পাগল হয়ে গেছে। বরং বিষয়টা উলটো। যুগে যুগে কালে কালে সৃষ্টিগতভাবেই অত্যন্ত সুন্দরী উইঘুর মেয়েদের জন্য পাগল ছিলো নাক বোঁচা হান পুরুষেরা। সেক্স ফ্যান্টাসিতে ভুগেছে এরা উইঘুর রূপবতীদের নিয়ে। সাক্ষী ইতিহাস, সাহিত্য আর সংস্কৃতি। চীনের সংখ্যাগরিষ্ঠ কমিউনিস্ট হানরা, সংখ্যালঘু মুসলিম উইঘুরদের মানুষ হিসেবেই গন্য করেনা। তাদের ভাষায় উইঘুর পুরুষরা হলো জঙ্গী সন্ত্রাসী আর মেয়েরা হলো ‘মডেল’। এতোদিন কমিউনিস্ট হওয়া, সংস্কৃতি, ভাষা ইত্যাদি পার্থক্যের কারণে উইঘুর নারীদের বিয়ে করতে পারেনি। কিন্তু এখন সরকার এসব সমস্যার সমাধান করে ফেলেছে এক হ্যাচকা টানে। হান পুরুষদের একেবারে কোলে উইঘুর মেয়ে তুলে দিয়ে বলছে, নে ব্যাটা, এরে বিয়ে কর’

    আগে অনেক সমস্যা ছিলো। মুসলিম নারীরা তো অমুসলিম কোনো পুরুষকে বিয়ে করবেনা। উইঘুর নারীরা শূকর খেতোনা, অনেকে স্কার্ফ পড়তো, লম্বা পোষাক পড়তো, ইসলাম পালন করতো কিন্তু এখন তো আর এসব সমস্যা নেই। কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে রিএডুকেটেড হবার মাধ্যমে উইঘুর নারীরা এসব ‘ফালতু’বিষয় নিয়ে আর মাথা ঘামায় না। কাজেই সরকার ডাকছে হান পুরুষদের, ‘আসো , এসে এদের বিয়ে করো। দেখো তোমাদের জন্য কতো সুযোগ সুবিধা দিয়ে রেখেছি’। বিয়ে করলে জায়গা জমি চাকরি একেবারে ফ্রি। রাজ্য আর রাজকন্যা সব একসাথে।

    ২০১৭ সালে সরকার Uyghur-Han Marriage and Family Incentive Strategy এর আওতায় ঘোষনা করে কোনো উইঘুর মেয়েকে হান পুরুষ বিয়ে করলে তাদেরকে ১০ হাজার ইয়ান দেয়া হবে। [4]

    হান পুরুষদের উইঘুর মেয়ে খুঁজে দেয়া, মেয়ের পরিবারের সাথে কথা বলা, বিয়ের আয়োজন করা, টাকা পয়সা খরচ করা সহ প্রায় সব কিছুই করে দিচ্ছে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা। যার বিয়ে তার খবর নাই পাড়াপড়শির ঘুম নাই- আক্ষরিক অর্থেই এই প্রবাদ বাস্তবায়িত হচ্ছে পূর্ব তুর্কিস্থানে । বরকে কোনো কিছু করতে হয়না, সব কাজ সরকারী লোকেরা করে দেবে। তার এক মাত্র কাজ বিয়ের দিন সেজেগুজে গিয়ে বিয়ে করা।

    চুনোপুঁটি নয় একেবারে রাঘব বোয়াল সরকারি কর্মকর্তারা নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিয়ে দেয়। ইয়েকানে [5]জমজ উইঘুর বোনের বিয়েতে কাউন্টি সিভিল এফেয়ার ব্যুরো (ব্যুরোর লোকজন), প্রশাসনের ক্যাডার, পুলিশের বড়কর্তা সবাই মাঞ্জা মেরে এসে দাঁত কেলিয়ে বিয়ে খেয়ে গিয়েছে।

    গানসুর নির্মাণ শ্রমিক এক হান ছোকরা তুলোক্ষেতে কাজ করতে দেখে এই উইঘুর মেয়েকে। অসহায় মেয়েটার সর্বনাশ হয় তখনই। প্রায় ৩০০ ডলার সমমূল্যের উপহার নিয়ে ওদের জোরপূর্বক বিয়েতে উপস্থিত হয় নগরের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির লোকজন, সরকারের উর্ধতন কর্মকর্তা, সিটি করপোরশনের কর্মকর্তা, কর্মচারী, পুলিস প্রশাসন, ধর্মীয় কমিটি…পুরো শহর হামলে পড়লো ওদের বিয়েতে আশীর্বাদ দিতে! জিয়াং তাও নগরের কমিউনিস্ট পার্টির সহ সম্পাদক কমিটি আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায়। বিবাহ পূর্বক সংক্ষিপ্ত একটা ভাষণ দেয় সে। এর মধ্যে ১০ বার গোত্রীয় সম্প্রীতি, গোত্রীয় সম্প্রীতি বলে স্লোগান দেয়। নবদম্পতির দিকে আঙ্গুল তুলে বললো এরা এই শহরের সবার জন্য আদর্শ! মডেল! [6]

    হান উইঘুর দম্পতি থেকে যে সন্তান জন্ম নেবে তাদের জন্য স্কুল, কলেজ, চাকরি সবক্ষেত্রেই থাকছে বিশেষ সুবিধা। সমাজে এদের নিয়ে যেনো কেউ বিরূপ মন্তব্য না করে তার জন্য আছে কঠোর আইন।

    চলবে ইনশা আল্লাহ…
    (সংগৃহীত)

    রেফারেন্সঃ
    1. (EN and FR) Uyghur adolescent raped and forced to get married by a Chinese official- https://tinyurl.com/wpds2zo
    2. Uyghur girls are forced to marry Han Chinese -https://tinyurl.com/smdss5z
    3. Is this a marriage or political game? بۇ نىكاھمۇ ياكى سىياسىي ئۇيۇنمۇ ؟- https://tinyurl.com/qlptob6
    4. (EN and FR) Uyghur adolescent raped and forced to get married by a Chinese official- https://tinyurl.com/wpds2zo
    5. Uyghur girls are forced to marry Han Chinese -https://tinyurl.com/smdss5z
    6. Is this a marriage or political game? بۇ نىكاھمۇ ياكى سىياسىي ئۇيۇنمۇ ؟- https://tinyurl.com/qlptob6

  • #2
    হে বর্বরতা! তুমি থেমে যাও। এত নিষ্ঠুরতার শক্তি তুমি পাও কোত্থেকে!!
    হে মু'মিনগণ! তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হও।

    Comment


    • #3
      আল্লাহ আপনি উম্মতে মুসলিমাকে জেগে ওঠার তৌফিক দিন।এবং এ জালিমদের পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার তৌফিক দান করুন।।
      আমিন,,,,,,

      Comment


      • #4
        অাল্লাহ অামাদেরকে মুজাহিদ হয়ে এই সব বদমাইশ দের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দাও

        Comment


        • #5
          আর কত!!!!!!!
          আহ,
          আমাদের চেতনা আর কখন জাগ্রত হবে??
          মুমিনের একটাই স্লোগান,''হয়তো শরীয়াহ''নয়তো শাহাদাহ''

          Comment

          Working...
          X