Announcement

Collapse
No announcement yet.

একজন আল বাগদাদি সদস্যের আত্মউপলব্ধি

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • একজন আল বাগদাদি সদস্যের আত্মউপলব্ধি

    আমি এই সত্য বর্ণনা করছি মিথ্যাকে চেনার পর মিথ্যাচারের মাঝ থেকে ফিরে এসে। উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে এমন একজন লোকের সম্পর্কে অবহিত করা হল, যার মন্দ কাজ এবং অন্যায় সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তখন বলেন – “(এজন্য) তাঁর এতে (অন্যায় ও মন্দ কাজে) পতিত হবার সম্ভাবনা বেশি।

    আমার লেখাগুলোতে আমি সেসব বিষয় তুলে ধরবো যা আমি নিজে প্রত্যক্ষ করেছি এবং নিজের কানে শুনেছি। আমি কোন গোপনীয় বিষয় নিয়ে কথা বলবো, এমন না। বরং আমি যা যা নিয়ে কথা বলবো, অনেক ভাইরাই এরই মধ্যে এবিষয়গুলো সম্পর্কে জানেন। আমি আমার মুসলিম ভাইদের আহবান করবো সততা এবং আন্তরিকতার সাথে লেখাগুলো পড়তে, এবং নিরপেক্ষতার সাথে এ লেখাগুলোর সত্যতা যাচাই করতে। যদি আমার কথা সত্য হয়ে থাকে, তবে জেনে রাখুন সত্যের প্রতি প্রত্যাবর্তন করা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই। আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেছেনঃ

    এবং স্মরণ করিয়ে দিতে থাকুন; কেননা, স্মরণ করিয়ে দেয়া মুমিনদের উপকারে আসবে। [আদ্ব-দ্বারিয়াত, ৫৫]

    দুঃখজনক সত্যি হল দাওলাতে (জামাতুল বাগদাদীতে) থাকা অবস্থায় আমরা শিখেছি মিথ্যাচার, প্রতারণা, গুপ্তচরবৃত্তি, তাকফির, ঘৃণা, চরমপন্থা এবং এমন আরো সব বিষয় যেগুলো, আল্লাহ-র কসম, ধ্বংসাত্মক। দাওলাতে আমরা আল্লাহ-র শারীয়াহকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করতাম, যার মাধ্যমে আমরা ইচ্ছেমতো মানুষের উপর তাকফির করতাম। আমাদের হৃদয়গুলো আল-ক্বাইদার প্রতি ঘৃণায় সংকীর্ণ হয়ে ছিল, এবং আল-ক্বাইদার বিষোদগার এবং বিরোধিতা করা ছাড়া আমাদের অন্য কোন চিন্তা ছিল না। সবসময় আমরা তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অপবাদ, মানুষদের ক্ষেপিয়ে তোলা আর তাকফির নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। আল-ক্বাইদার প্রতি যে পরিমাণ ও পর্যায়ের ঘৃণা আমাদের শেখানো হতো তা আমার হৃদয়কে সংকীর্ণ করে তোলে। “আল-ক্বাইদা এই করেছে, আল-ক্বাইদা সেই করেছে…আল-ক্বাইদা এই এই কাজ করতে যাচ্ছে” সবসময় আমরা শুধু এই সব কথাবার্তা আর চিন্তা নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। আমাদের বিশ্বাস করানো হয়েছিল আল-ক্বাইদা আল-মুকাল্লাহে তামক্বীন অর্জন করা সত্ত্বেও শারীয়াহ দিয়ে শাসন করছে না। বারবার আমাদের এটা বলা হতো। যখনই আমি এই কথা শুনতাম আমার মনে এর উত্তর তৈরি থাকতো, কিন্তু আমি তা প্রকাশ করতে পারতাম না।
    যদি আল-ক্বাইদা মুকাল্লাহতে শারীয়াহ দিয়ে শাসন না করে থাকে, তাহলে প্রথমত তাঁরা তো দাবি করে নি তাঁরা পূর্ণ তামক্বীন অর্জন করেছে। বরং তাঁদের অবস্থান তো এই যে, তাঁরা পূর্ণ তামক্বীন অর্জন করে নি। আর তাঁরা তো নিজেদের খিলাফাহ বলে দাবি করে নি। অথচ আমরাই [দাওলাহ] দাবি করছিলাম যে আমরা খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করেছি, তাও আবার নাবুওয়্যাতের মানহাজে। তাহলে কিভাবে আমরা ইয়েমেনে খিলাফাহ ঘোষণা করতে পারি যখন সম্পূর্ণ ইয়েমেনের উপর আমাদের কতৃত্ব নেই? বরং ইয়েমেনের কতৃত্ব ভাগ হয়ে আছে, আব্দুর রাব মানসূর, হুথি, আল ইসলাহ [ইয়েমেনী একটি ইসলামপন্থি/ইখওয়ানি দল], আল-হিরাক [দক্ষিনের আন্দোলন], গোত্রগুলো আর আল-ক্বাইদার হাতে।

    সুতরাং আল-ক্বাইদা যদি আল-মুকাল্লাহতে শারীয়াহ প্রতিষ্ঠা না করে তাহলে সেটার জন্য তাঁদের দোষ দেয়া যায় না, কারণ তাঁরা দাবি করছে না যে তাঁদের পূর্ণ তামক্বীন আছে, আর তাঁরা নিজেদেরকে খিলাফাহও দাবি করছে না। বরং তাঁরা পরিষ্কারভাবে বলেছে তাঁরা একটি গেরিলা দল, এবং তাঁরা তাঁদের সাধ্যমত শারীয়াহ কায়েম করার চেষ্টা করছে। আল-ক্বাইদা সুস্পষ্টভাবে বলেছে তাঁরা এখনো দাওয়াহ এবং জিহাদের পথের উপর আছে এবং দাওয়াহ ও জিহাদের ফল [খিলাফাহ] এখনো তাঁদের হাতে আসে নি – সঠিক সময়ের পূর্বে যে ব্যক্তি কোন বিষয়ের ব্যাপারে তাড়াহুড়া করবে সে শেষ পর্যন্ত তা হারাবে। [আল-ক্বাইদা, আল মুকাল্লাহ থেকে যালিমদের বিতাড়িত করেছে এবং আগ্রাসী শত্রুকে পরাজিত ও প্রতিহত করার দায়িত্ব পালন করেছে, মুসলিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে – এবং এগুলো সবই শারীয়াহ উদ্দেশ্যসমূহের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া আল-ক্বাইদা, মুকাল্লাহতে মানুষের মধ্যে শারীয়াহর মাধ্যমে শাসন করে, কখনো বিচারের মাধ্যমে, আর কখনো পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে।এবং পারস্পরিক সমঝোতা শারীয়াহর অন্যতম বৃহৎ একটি অংশ। কিছুদিন আগে তাঁরা একটি শিরকি মাজার ধ্বংস করে, আগে সাধারণ মানুষের কাছে বিষয়টি সঠিকভাবে উপস্থাপন ও ব্যাখ্যা করার পর।]

    অথচ আমরা [জামাতুল বাগদাদী] খিলাফাহ ঘোষণা করে বসে আছি আর যারা আমাদের বাইয়াহ দিচ্ছে না তাঁদেরকে বিদ’আতি, মানহাজ বিচ্যুত ইত্যাদি বলছি এবং বাইয়াহ না দেয়ার জন্য তাঁদের উপর তাকফিরও করছি। সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হল আমরা, আর আমাদের মতো অনেকেই আল-ক্বাইদার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে বসে, আল-ক্বাইদার নিরাপত্তা উপভোগ করা অবস্থায় গোপন মিটিংয়ে বসে আল-ক্বাইদারই উপর তাকফির করছিলাম! এমনকি আমাদের মধ্যে কেউ কেউ আল-ক্বাইদার কাছে লোক পাঠাতো সাহায্যের জন্য! আল্লাহ-র কসম! আমি নিজে এর সাক্ষী। আর আল-ক্বাইদা জবাবে তাঁদের সাধ্যমত সাহায্য করেছিল। আর আমি সবসময় নিজেকে প্রশ্ন করতাম “কোন মুখে আমরা বলছি আল-ক্বাইদা শারীয়াহ কায়েম করে না যখন আমরা খিলাফাহ-র সৈন্যরা তাঁদের আশ্রয়েই অবস্থান করছি?” কারণ এর অর্থ তো হল যে আমরা দ্বার-উল-কুফরে আছি [যেহেতু জামাতুল বাগদাদি দাবি করছে আল-ক্বাইদা শারীয়াহ কায়েম করে না]। তাহলে কিভাবে খিলাফাহ-র সৈন্যরা এখানে অবস্থান করছি? যদি আমরা হাদ্বরামাউত ছেড়ে যাই, তবে অন্য কোন জায়গায় গিয়ে শারীয়াহ কায়েম করবো? কারণ বাস্তবতা তো এটাই যে প্রত্যেক অঞ্চলের নিজ নিজ শাসক আছে।

    তাহলে নাবুওয়্যাতের মানহাজে প্রতিষ্ঠিত খিলাফাহ-র ভূমি কোনটা? কই, খিলাফাহ-র তামক্বীন কোথায়? দার-উল-মু’মিন কোথায়? আর এই খিলাফাহকে রক্ষা করার শক্তি কোথায়? আমার ভয় হয়, আমরা [জামাতুল বাগদাদি] আমাদের কথার মাধ্যমে আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়া তা’আলার আয়াতের সাথে মশকরা করেছি আমাদের অজান্তেই। আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়া তা’আলা যখন দাউদ আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালামকে কুর’আনে খালিফাহ বলে সম্বোধন করেছেন, তখন তিনি সুবহানাহু ওয়া তা’আলা, দাউদ আলাইহিস সালামের খালিফাহ হওয়াকে মানুষের উপর শাসন করার সাথে সম্পর্কিত করেছেন। আল্লাহ্* বলেছেনঃ

    “হে দাউদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি, অতএব, তুমি মানুষের মাঝে ন্যায়সঙ্গতভাবে রাজত্ব কর এবং খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না।“ [সূরা সাদ, আয়াত ২৬]

    তো ইয়েমেনের কোথায়, কোন ভূমির উপর আমাদের [জামাতুল বাগদাদী] নিয়ন্ত্রন আছে? এমনকি খোদ রাজধানী সানা’আ আজ রাফিদ্বাদের হাতে, যারা আহলুস সুন্নাহ উপর নির্মম অত্যাচার চালাচ্ছে। খালিফাহ কোথায়, খিলাফাহ-র সৈন্যরা কোথায়? আমরা যে ইয়েমেনকে ইসলামি রাষ্ট্র, খিলাফাহ-র অংশ ঘোষণা করে বসে আছি সেই ইয়েমেনের কোন জায়গায় নিপীড়িত মানুষদের আমরা সাহায্য করছি? আর কোথায় আহলুস সুন্নাহর অধিকার আমরা রক্ষা করছি? বরং সানা’র লোকরা তো এটাই জানে না যে ইয়েমেন খিলাফাহর অংশ হয়ে গেছে, আর “উলাইয়্যা ইয়েমেন” সম্পর্কেও তাঁরা কিছুই জানে না। আর সানা’র শি’আদের মাসজিদে যে হামলা হয়েছে তাঁরা মনে করে, এটা করেছে আল-ক্বা’ইদা।

    আমি খালিফাহকে, আর ইয়েমেনে তার গভর্নরকে প্রশ্ন করতে চাই, যদিও কেউই তাকে চেনে না, আমি তাও তাকে জিজ্ঞেস করতে চাই – আপনার অধীনে কত জন বেসামরিক নাগরিককে আপনি নিরাপত্তা দিচ্ছেন? তাঁদের মধ্যে কতোজন দরিদ্র? আর এই মুহূর্তে তাঁদের কি কি জিনিষের দরকার? আর এদের মধ্যে অত্যাচারিত ও নির্যাতিত কারা যাদের রক্ষকের প্রয়োজন? আর নিজেদের অত্যাচার ও নিপীড়ন থেকে রক্ষা করার জন্য সানা’র লোকজন কোথায়, কার কাছে যাবে? আদন, হাদ্বরামাউত, আল-বায়দা, শাওবাহ, আল-হাদিদাহ, উমরান, সা’দ, আল-জাওফ আর মা’রিবের লোকেরা কোথায়, কার কাছে যাবে? কই, খিলাফাহর গভর্নর, কাযী, সৈন্য আর মুসলিমদের বাইতুল মাল কোথায়? (হে “খালিফাহ”-র গভর্নর) আপনি কি অত্যাচারিতদের সাহায্য করেছেন? আপনি কি গরিবদের সাহায্য করেছেন? ইসলামি রাষ্ট্রের রাজধানী [সানা’আ] কি আল্লাহ-র শারীয়াহ দিয়ে শাসিত হচ্ছে? নাকি খোমেনির শারীয়াহ দিয়ে? যদি তা খোমেনির শারীয়াহ আর ফ্রান্সের রচিত সংবিধান দিয়ে শাসিত হয়, তাহলে কেন আপনারা মুসলিমদের সাথে মিথ্যাচার করছেন আর বলছেন এটা হল [জামাতুল বাগদাদীর দাবিকৃত “ইসলামিক রাষ্ট্র”] দুনিয়াতে আল্লাহ-র প্রদত্ত কতৃত্ব, যখন বাস্তবে এর অবস্থা হল দুর্বল ও অসহায়? এটাতো (বাগদাদির খিলাফাহ) একটা নাম মাত্র, যার কোন বাস্তব অস্তিত্ব নেই। আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেছেনঃ

    “আর যে, আল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অথবা তাঁর নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলে, তার চাইতে বড় জালেম কে? নিশ্চয় যালিমরা সফলকাম হবে না।“ [সূরা আল-আন’আম, আয়াত ২১]

    যখন আমি নিজেকে এই প্রশ্নগুলো করতাম তখন আমার খুব কষ্ট হতো। কারণ এটা শুধু মিথ্যাচার না বরং এটা একইসাথে চরম নির্লজ্জতা। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “যদি তুমি কোন লজ্জা অনুভব না করো, তবে তোমার যা ইচ্ছা তাই করো।“ [সাহীহ]

    অবশেষে আমি এটাও বলতে চাই, যদি আমরা [জামাতুল বাগদাদী] দাবি করি যে এটা নাবী কারীম ﷺ এর মানহাজ তাহলে আমরা রাসূলুল্লাহ এর প্রতি জঘন্য অবিচার করেছি, এবং তাঁর ﷺ উপর এবং তাঁর ﷺ মানহাজের উপর জঘন্য মিথ্যাচার করেছি। রাসূলুল্লাহ বলেছেনঃ “যে আমার ব্যাপারে কোন মিথ্যাচার করে, সে জাহান্নামে নিজের জন্য জায়গা ঠিক করে নেয়” [সাহীহ]

    হে আল্লাহ্*! আমি আপনার দরবারে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর মিথ্যারোপ করা থেকে এবং আপনার আয়াতসমূহকে নিয়ে মশকরা করা থেকে নিজেকে মুক্ত ঘোষণা করছি।

  • #2
    আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে বাগদাদীর ফিতনা থেকে বাচার তাওফীক দান করুন। বাগদাদীর মিথ্যাচারকে মানুষের মাঝে স্পষ্ট করে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদেরই । আল্লাহ তা'আলা বাগদাদীদেরকে অচিরেই উচিত শিক্ষা দিবেন ইনশাআল্লাহ।

    Comment


    • #3
      দাওলাতে (জামাতুল বাগদাদীতে) থাকা অবস্থায় আমরা শিখেছি মিথ্যাচার, প্রতারণা, গুপ্তচরবৃত্তি, তাকফির, ঘৃণা, চরমপন্থা এবং এমন আরো সব বিষয় যেগুলো, আল্লাহ-র কসম, ধ্বংসাত্মক। দাওলাতে আমরা আল্লাহ-র শারীয়াহকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করতাম, যার মাধ্যমে আমরা ইচ্ছেমতো মানুষের উপর তাকফির করতাম।
      হে ভাই সত্যই বলেছেন !!!!
      মুমিনদেরকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব
      রোম- ৪৭

      Comment


      • #4
        হে,আল্লাহ আমাদেরকে সটিক পথে পরিচালিত কর

        Comment

        Working...
        X