Announcement

Collapse
No announcement yet.

তাওহীদ আল হাকিমিয়্যাহ কি একটি বিদআত

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • তাওহীদ আল হাকিমিয়্যাহ কি একটি বিদআত

    তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ কি? তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহর দাওয়াহ দেওয়া, এ ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া কি বিদ'আ? এটি কি তাওহিদের শ্রেণীবিভাগের মধ্যে কোন নব উদ্ভাবন?

    তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ অর্থ হল বিচার (হুকুম) এবং আইন প্রনয়ণের (তাশরী’) অধিকার শুধুমাত্র আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়া তা’আলার। আধিপত্য, রাজত্ব, সার্বভৌমত্ব এবং সৃষ্টির বিষয়াবলী নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে যেমন আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কোন শরীক নেই, তেমনি ভাবে বিচার (হুকুম) এবং আইন প্রণয়ণের (তাশরী’) ক্ষেত্রেও আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কোন শরীক নেই।

    যেমন আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেছেন –

    .“... আল্লাহ ছাড়া কারও বিধান দেবার ক্ষমতা নেই। তিনি আদেশ দিয়েছেন যে, তিনি ব্যতীত অন্য কারও ইবাদত করো না। এটাই সরল পথ। কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না।“ [আল আন’আম, ৪০]

    এবং তিনি সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেছেন-

    “...আল্লাহ বিচার করেন, আর তাঁর বিচারকে (হুকুম) পশ্চাতে নিক্ষেপকরার কেউ নেই।“ [আর-রা’দ, ৪১]

    এবং তিনি সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেছেন-

    “..তিনি নিজ হুকুম ও বিধানের [ফী হুকমিহি] কর্তৃত্বে কাউকে শরীক করেন না” [আল-কাহফ, ২৬]

    এবং তিনি সুবহানাহু ওয়া তা’আল বলেছেন-

    “তারা কি জাহেলী যুগের বিচার- ফয়সালা কামনা করে? আল্লাহ অপেক্ষা বিশ্বাসীদের জন্যে উত্তম ফয়সালাকারী কে?” [আল-মায়’ইদা, ৫০]

    এবং-

    “তোমরা যে বিষয়েই মতভেদ কর না কেন – ওর মীমাংসাতো (হুকুম) আল্লাহ্*রই নিকট।“ [আশ-শূরা, ১০]

    এবং আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেছেন-

    “...যদি তোমরা তাদের আনুগত্য কর, তোমরাও মুশরিক হয়ে যাবে।“ [আল আন’আম, ১২১]
    এছাড়াও অন্য আরও সুস্পষ্ট (মুহকাম) আয়াতের দ্বারা তাওহীদের এ শ্রেণীটি (অর্থাৎ তাওহীদুল হাকিমিয়্যাহ) প্রমাণিত, এবং এও প্রমাণিত যে তাওহীদুল হাকিমিয়্যাহতে বিশ্বাস করা ব্যাতীত কারো ঈমান সম্পূর্ণ হবে না।

    এছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহিহ হাদিসে আছে - “নিশ্চয় আল্লাহ্* হচ্ছে আল-হাকাম (বিচারক), এবং হুকুম (বিধান, আইন প্রণয়ন) হল তাঁর অধিকার।“ [আবু দাউদঃ ৪৯৫৫, আন-নাসি ৮/২২৬, আল-আলবানীর মতে সাহীহ]

    প্রশ্ন হল তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ কি তাওহীদের আলাদা একটি শ্রেণী, নাকি এটি তাওহীদুল ‘উলুহিয়্যাহর (যাকে তাওহীদুল ইবাদাহও বলা হয়) অন্তর্ভুক্ত?

    আমি বলিঃ এটি পৃথক একটি শ্রেণী নয়, তবে তাওহীদুল হাকিমিয়্যাহর বিশ্বাসের মধ্যে এমন বিষয় আছে যা তাওহীদুল উলুহিয়্যাহর ভেতরে পরে, এ বিশ্বাসের ভেতরে এমন বিষয় আছে যা তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহর ভেতরে পরে, আবার এর মধ্যে এমন বিষয় আছে যা তাওহীদ আল-আসমা ওয়াস সিফাতের ভেতরেও পরে।

    কিন্তু যখন আল্লাহ্* যা নাযিল করেছেন তা ব্যাতীত কুফর ও তাগুতের সংবিধান দিয়ে শাসনের শিরক উম্মাহর মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পরেছে, তখন আলাদাভাবে গুরুত্ব দিয়ে তাওহীদুল হাকিমিয়্যাহর কথা বলা, এবং এর আবশ্যকতার দিকে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষন করা দরকারী হয়ে পরে। এবং লোকেদের কাছে এও সুস্পষ্টভাবে উপস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় যে, তাওহীদুল হাকিমিয়্যাহর উপর বিশ্বাস আবশ্যক এবং একে বাদ দিয়ে তাওহীদুল ‘উলুহিয়্যাহর- বিশ্বাস করা সম্ভব না।

    ধরুন, আপনি দেখলেন কিছু লোক আল্লাহ ব্যাতীত অন্য কারো প্রতি আনুগত্যকে শিরকের পর্যায়ে নিয়ে গেছে [যেমন পীরের প্রতি আনুগত্য, যা উপমহাদেশে ব্যাপকভাবে দেখা যায়]। আপনি তাদের বললেন, “তাওহীদ আত-তাআ’আহ এ বিশ্বাস আবশ্যক। এটা আপনাদের জন্য আবশ্যক যে আপনারা আল্লাহ্* ব্যাতীত আর কারো আনুগত্য করবেন না।“

    আপনার এ কথা সঠিক ও উপযুক্ত বলেই গণ্য হবে। এক্ষেত্রে আপনার বিরোধিতা করা এবং বলা - “তুমি এক নতুন তাওহীদ নিয়ে এসেছো, যাকে তুমি তাওহীদ আত-তাআ’আহ বলছো” কিংবা বলা, “তুমি তাওহীদ আল-‘উলুহিয়্যাহ ছাড়া নতুন এক তাওহীদ এনেছো” – সমীচীন না, জায়েজও না।

    অথবা ধরুন, আপনি দেখলেন কিছু লোক আল্লাহ্* ও নিজেদের মধ্যে অন্য কাউকে মধ্যস্ততাকারী (যেমন ওলি-আউলিয়া) হিসেবে নিয়েছে ও ভালোবাসার (মাহাব্বা) মাধ্যমে তাদের আল্লাহ্*র সাথে শরীক করছে (অর্থাৎ এমনভাবে সৃষ্টিকে ভালোবাসছে যেভাবে শুধু আল্লাহ্*কে ভালবাসতে হবে) এবং আল ওয়ালা আল বারা’র দিক দিয়ে শিরক করছে (অর্থাৎ আল্লাহর পছন্দ ও অপছন্দের ভিত্তিতে বন্ধুত্ব ও সম্পর্কছিন্ন করার নীতি গ্রহণের বদলে, কোন সৃষ্টির পছন্দ ও অপছন্দের ভিত্তিতে তা করছে)।

    সুতরাং এমন অবস্থা প্রত্যক্ষ করে আপনি তাদের বললেন, ভালোবাসার ক্ষেত্রেও তাওহীদে বিশ্বাস করতে হবে, এবং ব্যক্তির কাছে সর্বাধিক প্রিয় হতে হবে আল্লাহ্* এবং একমাত্র আল্লাহ্*। এটা কিন্তু তাওহীদুল উলুহিয়্যাহর জায়গায় নতুন কোন তাওহীদ আমদানী করা নয়। এবং তাওহীদ আল-মুহাব্বাহ নিয়ে আপনার বক্তব্যও কোনভাবেই বিদ’আ নয়।

    যদি আপনি এটা অনুধাবন করতে সক্ষম হন, তাহলে আপনি এটাও বুঝবেন, যারা তাওহীদুল হাকিমিয়্যাহ প্রচারের বিরোধিতা করে, তাদের দ্বারা এর বিরুদ্ধে যা কিছু বলা হচ্ছে, যা কিছু বিরোধিতা করা হচ্ছে তার কোন ন্যায্যতা নেই। এ বিরোধিতার অন্তর্নিহিত কারণ হল তাওহীদের এ দিকটিকে ছোট করে দেখানো, এবং তাওয়াগীতের দ্বারা তাওহীদের এই অবিচ্ছেদ্য অংশটির ব্যাপারে যে অস্বীকার ও সীমালঙ্ঘন করা হয়েছে সেটার পক্ষে, এবং এ ব্যাপারে নিজেদের নীরবতার পক্ষে সাফাই দেওয়া।

    আর যদি আপনি তাওহীদুল হাকিমিয়্যাহ সম্পর্কে জানার জন্য কোন বই পড়তে আগ্রহী হন, তবে জেনেন রাখুন এ বিষয়ে বিপুল সংখ্য কিতাবাদি রয়েছে, যার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং সর্বোচ্চ হল আল্লাহ্*র কিতাব এবং তারপরে নাবীর fdfa সুন্নাহর কিতাব সমূহ। এছাড়া রয়েছে ইবন তাইমিয়্যাহ, ইবন কাইয়্যিম, ইবন আবদুল ওয়াহহাব এবং তার পৌত্রদের আক্বিদার কিতাবাদি – আল্লাহ্* তাদের সকলের উপর রহম করুন। সমসাময়িক কালের ব্যাক্তিত্বদে মাঝে রয়েছে সাইদ কুতবের কিতাব সমূহ, আল্লাহ্* তার উপর রহম করুন। বিশেষ করে আল-যিলাল, আল মা’আলীম, “খাসা’ইস আল-তাসাউউর, এবং “মুক্বাউয়িমাত আত-তাসাউউর আল-ইসলামী।“

    একই সাথে তার ভাই মুহাম্মাদ কুতুবের কিতাবাদি পড়েত পারেন, এবং এ বিষয়ের উপর খাস ভাবে কিছু কিতাব রয়েছে, যেমন ভাই শাইখ আবু ইথার রচিত “তাওহীদ আল-হাকিমিয়্যাহ” এবং আমাদের ভাই শাইখ আবু মুহাম্মাদ আল-মাক্বদিসির কিতাব এবং প্রবন্ধসমূহ। এ অধমেরও এ ব্যাপারে বেশ কিছু রচনা রয়েছে।

    কিতাব তো আছে অসংখ্য, কিন্তু কোথায় তাদের অধ্যায়নকারী এবং কোথায় তাদের উপর ‘আমলকারী?

    -শাইখ আবু বাসির আত-তারতুসি হাফিযাহুল্লাহ

    [সংগৃহীত]

  • #2
    মাশাআল্লাহ ভাই, তবে আপনার শিরোনামটা অনেকটা কনফিউযে ফেলে দেয়।

    Comment


    • #3
      জাজ্ঝাকাল্লাহ
      সত্যের পথে মৃত্যুর এক অদম্য বাসনা আমাদের থামতে দেই না।

      Comment

      Working...
      X