Announcement

Collapse
No announcement yet.

ফিরে দেখা: ১৯৯৬ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ফিরে দেখা: ১৯৯৬ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর


    ফিরে দেখা: ১৯৯৬ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর



    আফগান মুজাহিদিন বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ের মাধ্যমে দখলদার সোভিয়েত বাহিনীকে পরাজিত এবং বিপর্যস্ত করেছিলেন, আফগানিস্তান ছাড়তে তাদেরকে বাধ্য করেছিলেন। এটি ছিল এক ঐতিহাসিক বিজয়। কেবল আফগানিস্তানের ইতিহাসেই নয়, বরং ইসলামের ইতিহাসেও এই অর্জন অনন্য। আফগানীরা একটি সুপারপাওয়ারকে পরাজিত করে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলেন। এই স্বাধীনতা এসেছিল লাখ লাখ মানুষের জীবনের বিনিময়ে। এর জন্য আফগানীরা তাদের সবকিছু ত্যাগ করেছেন। তবে দুঃখজনকভাবে সোভিয়েত দখলদারদের উৎখাতের পর* নৈরাজ্য এবং অরাজকতা ব্যাপক আকার ধারণ করে। বিভিন্ন দলের নেতা ও কমান্ডাররা ক্ষমতা দখল এবং এর ভাগাভাগিতে চরম নৃশংসতা শুরু করে দেয়।

    আফগানিস্তানে তখন বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। অরাজকতার সুযোগে অপরাধীচক্রও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠেছে। সোভিয়েতের বিরুদ্ধে যুদ্ধকারী সাহসী আফগান জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে, তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এক অনিরাপদ পরিবেশে। সাধারণ আফগানীদের জীবন, সম্মান, সম্পদ-সম্পত্তি পড়েছে হুমকির মুখে। ফলে আরেকধাপে শুরু হয়ে গেছে হিজরত। সাধারণ মানুষ আশাহত হয়েছেন। গোত্রীয় নেতারা পরিণত হয়েছে নিষ্ঠুর যুদ্ধবাজে। এমন কোনো নির্মমতা নেই যা তারা আফগান জাতির উপর করেনি।

    এমনই দুঃসময়ে মরহুম আমিরুল মু’মিনিন মোল্লা মুহাম্মাদ উমর মুজাহিদ রহিমাহুল্লাহ সকল শয়তানের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যান। তিনি বিক্ষিপ্ত মুজাহিদিনকে ইসলামের পতাকাতলে নিয়ে আসেন। পবিত্র কুরআনের নির্দেশ ও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষানুযায়ী তিনি সবাইকে তাঁর নেতৃত্বাধীনে একত্রিত করেন। মুজাহিদিনের এই জামাআতটিই তালিবান (দ্বীনি শিক্ষার্থী) নামে পরিচিত হন। পূর্বে তাঁরা সোভিয়েতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, পরে আফগান জাতির দুঃসময়ে তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে ময়দানে নামেন। ফলে শীঘ্রই সর্বস্তরের আফগান জনতা মুজাহিদিনের প্রতি সমর্থন জানান। মুজাহিদগণ যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান এবং এর নিরপরাধ বাসিন্দাদের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত হন, বর্বর যুদ্ধবাজদের নিষ্ঠুরতা থেকে আফগানীদের হেফাজত করেন।

    তালিবান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মানুষের জীবন, পবিত্রতা, সম্পদ ও সম্মান নিরাপদ ছিল; অথচ ঐ সময়টাতে তালিবানদের জন্য কোনো বৈদিশিক সাহায্য ছিল না। তালিবান মুজাহিদগণ নারীদের অধিকার সংরক্ষণ করেছিলেন, বিশুদ্ধ শরীয়াহ আইন বাস্তবায়ন করেছিলেন। ফলে তাঁদের শাসনাধীনে লোকজন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পেরেছিলেন।

    আফগান জনগণের সহায়তায় তালিবান তখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিলেন। মুসলিমদের এই বাহিনী কাবুল অভিমুখেও যাত্রা করেন। তখন কাবুল ছিল অস্বস্তিকর; আর সেখানকার বাসিন্দারা যেন জঙ্গলে বানানো কোনো জেলে আইনহীন পরিবেশে বাস করছিলেন। কাবুলে চলছিল বর্বর যুদ্ধবাজ ও তাদের মিলিশিয়াদের অরাজকতা। ফলে তালিবান মুজাহিদিন কাবুলের উপকণ্ঠে পৌঁছালে সাধারণ মানুষ তাঁদেরকে স্বাগত জানান। প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ১৯৯৬ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর তালিবান কাবুল এবং এর জনসাধারণকে মুক্ত করেছিলেন। আর এভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ইসলামী ইমারত আফগানিস্তান। বর্তমান সময়ে এটিই ছিল একমাত্র বিশুদ্ধ শরীয়াভিত্তিক ইসলামী সরকার। ইসলামী ইমারত আফগানিস্তান প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে আফগানিস্তানে সবাই নিরাপত্তা পেয়েছিল।

    নিকৃষ্ট কমিউনিস্ট এবং তাদের প্রভুরা এই সমাজকে বিকলাঙ্গ অবস্থায় ফেলে গিয়েছিল, এ সমাজ তার পরিচয় ও মূল্যবোধ হারিয়েছিল। যুদ্ধবাজদের হাতে নিষ্পেষিত হয়েছিল কাবুল ও এর জনসাধারণ। পরে তালিবান মুজাহিদিন এসে এই জুলুম থেকে তাদের উদ্ধার করেন। ১৯৯৬ সালের আজকের এই দিনে (২৭শে সেপ্টেম্বর) প্রকৃত স্বাধীনতা পেয়েছিল আফগান জাতি। আজ প্রত্যেক আফগানী ঐ ঐতিহাসিক দিনকে স্মরণ করছে। কেননা, আফগানিস্তানের নাগরিকগণ এবং বিশেষভাবে কাবুলের জনগণ আরো একবার বর্বরতার মধ্যে জীবনযাপন করছে। এখন আধুনিকরূপে নিষ্ঠুর যুদ্ধবাজদের ক্ষমতা চলছে। দালাল সরকার অপরাধীদেরকে শক্তিশালী করছে, সাহায্য দিচ্ছে। রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে মাফিয়াদের দ্বারা। তথাকথিত নারী অধিকার রক্ষকদের নাকের ডগায় প্রকাশ্য দিবালোকে নারীদেরকে পেটানো হচ্ছে। ডাকাতী জনগণের নিত্যদিনের অংশ হয়ে ওঠেছে। অরাজকতা, বেকারত্ব এবং দুর্নীতিতে সয়লাব চারদিক।

    তাই আরো একবার আফগানিস্তানের সর্বস্তরের মানুষ শরীয়াহ আইনভিত্তিক একটি ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার প্রতীক্ষায় রয়েছে। পশ্চিমাদের থেকে আমদানীকৃত গণতন্ত্রের কারণে আফগানীদেরকে প্রতিটি বোধগম্য পন্থায় সংগ্রাম করতে হয়েছে। আসলে আফগানিস্তানে গণতন্ত্র মানে হলো ভণ্ডামি। এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সাধারণ আফগানীরা কখনোই মেনে নেয়নি। মনে রাখতে হবে, কাবুলের অত্যন্ত সুরক্ষিত বাড়িতে বিস্ফোরক প্রতিরোধী দেয়ালের পেছনে বসে থাকা লোকগুলো আফগান জনসাধারণের প্রতিনিধিত্ব করে না, বরং আফগানিস্তানের স্বাধীনতার জন্য যে মুজাহিদগণ নিজেদের জীবন ও সম্পদ বিলিয়ে যুদ্ধ করে যাচ্ছেন, তারাই প্রকৃতপক্ষে আফগানীদের প্রতিনিধিত্ব করেন। যারা আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষায় নিজেদেরকে পরিপূর্ণভাবে বিলিয়ে দিয়েছেন, আফগানিস্তানের সম্পর্ক তাদের সাথে। আর আফগানিস্তান তাদের নয়, যারা আফগানিস্তানে বিদেশী কর্তাদের দালাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

    মূল লেখক: মুহাম্মাদ জালাল। তাঁর এই লেখাটি আফগানিস্তান ইসলামী ইমারতের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গত ২৭শে সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়েছে।

    অনুবাদক: খালিদ মুন্তাসির
    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    যাঁদের পক্ষে আল্লাহ থাকেন,তাঁদের কীসের ভয়।কেননা শেষ পর্যন্ত তাঁদেরই হবে জয়।

    Comment


    • #3
      আরো একবার আফগানিস্তানের সর্বস্তরের মানুষ শরীয়াহ আইনভিত্তিক একটি ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার প্রতীক্ষায় রয়েছে।

      আল্লাহ রাব্বুল আলামীন খুব দ্রুততার সাথে তাদের প্রতীক্ষার অবসান ঘটান..তাদেরকে শরীয়তের ছাঁয়াতলে জীবন যাপন করার তাওফীক দিন। আমীন
      আল্লাহ লেখক ও অনুবাদককে উত্তম জাযা দান করুন।
      “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

      Comment


      • #4
        Originally posted by Munshi Abdur Rahman View Post
        আল্লাহ রাব্বুল আলামীন খুব দ্রুততার সাথে তাদের প্রতীক্ষার অবসান ঘটান..তাদেরকে শরীয়তের ছাঁয়াতলে জীবন যাপন করার তাওফীক দিন। আমীন
        আল্লাহ লেখক ও অনুবাদককে উত্তম জাযা দান করুন।
        আলহামদুলিল্লাহ
        মুসলিম হয়ে জন্মেছি আমি ইসলাম আমার ধর্ম
        লড়বো আমি খোদার পথে এটাই আমার গর্ব।

        Comment


        • #5
          মাশাআল্লাহ, সুন্দর পোস্ট।
          আল্লাহ কবুল করুন। আমীন
          ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

          Comment

          Working...
          X