Announcement

Collapse
No announcement yet.

সীরাহ মুহাম্মাদ (সা.)

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সীরাহ মুহাম্মাদ (সা.)

    সতর্কতার মধ্যমপন্থা

    হিজরতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাসূলুল্লাহ সামান্যতম ছাড়ও দেননি। খুঁটিনাটি সব বিষয়ে তিনি সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছেন।
    প্রথমত, রাসূলুল্লাহ (সা.) মুখ ঢেকে দুপুর বেলা আবু বকরের (রা.) বাসায় যান।
    দ্বিতীয়ত, গোপনীয়তার স্বার্থে তিনি আবু বকরকে আলোচনার সময়ে বাড়িতে কে কে আছে সেটা জেনে নেন।
    তৃতীয়ত, তিনি আলী বিন আবু তালিবকে তাঁর বিছানায় শুয়ে থাকার নির্দেশ দেন যাতে শত্রুরা তাঁর চলে যাওয়ার ব্যাপারটি আঁচ করতে না পারে।
    চতুর্থত, হিজরতের যাত্রার জন্য আগে থেকেই উট প্রস্তুত রাখা ছিল।
    পঞ্চমত, চারপাশ অন্ধকার হলে রাসূলুল্লাহ (সা.) আবু বকরকে সাথে নিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়েছিলেন।
    ষষ্ঠত, তাঁরা একজন গাইড বা পথপ্রদর্শক ভাড়া করেছিলেন।
    সপ্তমত, মদীনা ছিল মক্কার উত্তরে, কিন্তু শত্রুদের ধোঁকা দেওয়ার জন্য তাঁরা প্রথমে দক্ষিণের দিকে যাত্রা শুরু করেন।
    অষ্টমত, তাঁরা একটি গুহায় তিনদিন লুকিয়ে ছিলেন।
    নবমত, আবদুল্লাহ দিনের বেলা তথ্য সংগ্রহ করার জন্য মক্কায় থেকে যেতেন আর রাতের বেলা গুহায় ফিরে এসে রাসূলুল্লাহ (সা.) ও আবু বকর (রা.) কে সব জানাতেন।
    দশমত, আমির বিন ফুহায়রা তাদেরকে খাবার এনে দিতেন।
    রাসূলুল্লাহ (সা.) জানতেন যে আল্লাহ তাআলা তাকে রক্ষা করার ওয়াদা করেছেন এবং আল্লাহ তা’আলার ওয়াদা সত্য। কিন্তু তারপরও তিনি মদীনাতে নিরাপদে পৌঁছানোর জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। তিনি এর মাধ্যমে শিক্ষা দিলেন যে, মুসলিম হিসেবে জাগতিক প্রচেষ্টার সবটুকুই ঢেলে দিতে হবে। রাসূলুল্লাহর (সা.) দেখানো পথ অনুসারেই সকল প্রকার ইসলামী কাজকর্মের পরিকল্পনা করতে হবে ও সর্বোচ্চ শ্রম দিতে হবে। বিপদের ভয়ে প্রয়োজনীয় কাজ থেকে বিরত থাকা যাবে না বরং যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করে কাজ করে যেতে হবে।
    (সীরাহ, প্রথম খণ্ড, হিজরত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়)






  • #2
    লাইব্রেরি তে পাওয়াযাবে

    Comment


    • #3
      যদিও রেইন ড্রপ এর ভাইয়েরা নিজেরা গোয়েন্দাদের সম্পরকে ভাল অবগত, তা সত্তেও তারা লাইব্রেরি ঠিকানা পোস্ট করেছেন, তাই আমিও বই টি পাওয়ার জন্য ঠিকানা দিয়েচিলাম, আপনাদের কথায় তুলে দিলাম।
      Last edited by qasim; 05-13-2016, 11:02 PM.

      Comment


      • #4
        সালমান ফারিসী তাঁর জীবনের শুরুতে দ্বীনের শিক্ষা নিয়েছিলেন সিরিয়ার পুরোহিতের কাছে। সালমান তার সম্পর্কে বলেন, ‘আমি তার সাথে ছিলাম, কিন্তু সে ছিল অসৎ এক লোক। মানুষের থেকে দান-খয়রাত চাইতো, এরপর সেগুলো গরিবদের মধ্যে না বিলিয়ে নিজের জন্য জমা করে রাখতো। এভাবে সাত বাক্স ভরা সোনা আর রূপা তার কাছে জড়ো হলো! তার এইসব কাজ দেখার পর আমি তাকে প্রচণ্ড ঘৃণা করতাম।’ -- একজন মানুষ সত্য জানার জন্য পথে পথে ঘুরছে। অথচ শেষমেষ সে এমন এক লোকের সন্ধান পায়, যে বাইরে “আলেম” সাজলেও ভেতরে ভেতরে অসৎ। সত্য জানার প্রতি বিতৃষ্ণা এনে দেওয়ার জন্য যা কিছু দরকার, তার সবকিছুই সেই পুরোহিতের স্বভাবে উপস্থিত ছিল। কিন্তু সালমান ফারিসী ছিলেন নিজের লক্ষ্যে অবিচল, দৃঢ়। তাঁর সত্যকে খুঁজে বের করার আগ্রহ এত প্রবল ছিল যে, এসব দেখেও তিনি সত্য খোঁজার ব্যাপারে বিরত হননি।
        আজকাল দেখা যায় যে মুসলিমদের কাজের কারণে লোকেরা ইসলাম থেকে দূরে সরে যায়। লোকে বলে, মুসলিমদের আচরণের জন্যই মানুষ ইসলাম গ্রহণ করছে না। এই কথাটি কিছু অংশে সত্য হলেও পুরোপুরি সঠিক নয়। কেউ যদি সত্যপথ খুঁজে বের করার জন্য সত্যিই আন্তরিক হয়, তবে তার বোঝা প্রয়োজন যে, সমাজের সবাই সত্যের অনুসারী নাও হতে পারে। তাই কোনো ব্যক্তি বা দল ভুল মানেই এটা না যে, সেই ধর্মও ভুল। সালমান ফারিসী একটা অসৎ লোকের দেখা পাওয়ার পরেও সঙ্গে সঙ্গে খ্রিস্টধর্মকে বাতিল মনে করেননি। বরং তিনি সত্যকে জানার জন্য আরো উঠেপড়ে লেগেছেন। সেই লোকের সাথেই থেকে গিয়ে, আরও ভালো কিছুর সন্ধান করেছেন। আল্লাহ আযযা ওয়াজাল তাকে তাঁর এই ধৈর্যের পুরস্কার দিয়েছেন। সালমান পরবর্তীতে খ্রিস্টধর্মের শ্রেষ্ঠ আলেমদের থেকে ইলম অর্জনের সুযোগ পেয়েছেন। লোকেরা সেই দুর্বৃত্ত পুরোহিতের বদলে এমন একজনকে সেখানে নিয়োগ দেয়, যাকে দেখে সালমান বলেছিলেন, মুসলিমদের সাথে সাক্ষাৎ হওয়ার আগ পর্যন্ত তার দেখা সবচেয়ে উত্তম লোক ছিলেন তিনি।
        আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সূরা মুহাম্মদে বলেছেন,
        “আর যারা সৎপথপ্রাপ্ত হয়েছে, আল্লাহ তাদের সৎ পথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করেন আর তাদের প্রদান করেন তাকওয়া।” (সূরা মুহাম্মাদ, ৪৭: ১৭)
        পুরো ঘটনাটি থেকে আরো কিছু শিক্ষা গ্রহণ করা যায়:
        - প্রথমত, যারা হিদায়াতের খোঁজে থাকে, তাদেরকে হিদায়াত দেওয়া হয়। কিন্তু আল্লাহর হিদায়াত পাওয়ার জন্য নিজেদেরকেও পরিশ্রম করতে হবে। যখন কেউ আল্লাহর জন্য কষ্ট করবে, ত্যাগস্বীকার করবে; তখন তার পুরস্কার হবে অসামান্য। যদি কেউ আল্লাহর দিকে হেঁটে অগ্রসর হয়, আল্লাহ তাঁর দিকে দৌড়ে আসবেন। কিন্তু মানুষকে প্রথম ধাপটি নিতে হবে। সালমান ফারিসী ধীরে ধীরে ঠিকই ইসলামকে খুঁজে পেয়েছিলেন, যদিও তিনি প্রথমে ছিলেন এমন একটি জায়গায় যা ইসলাম থেকে শত শত মাইল দূরে অবস্থিত।
        - দ্বিতীয়ত, কারো ভুল কাজ যেন আমাদেরকে দমিয়ে না দেয়। ধর্ম তাদের অসৎ কাজের উৎস নয়--সালমান ফারিসী এটা বুঝতে পেরেছিলেন। আর তাই একজন অসৎ লোকের কারণে সেই ধর্মকেই অবিশ্বাস করা শুরু করে দেননি। একটা পুরোহিত খারাপ বলেই তিনি আশা হারিয়ে ফেলেননি। সত্য জানার আগ্রহ যেন মানুষের ভুল কাজ নিয়ে আমাদের বিতৃষ্ণা বা ঘৃণাকেও ছাপিয়ে যায়, এটা খুব দরকার।
        - তৃতীয়ত, মুসলিমদেরকে নতুন মুসলিমদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার দায়িত্ব মুসলিম সমাজের। মুহাম্মাদ (সা.) স্বয়ং সালমানকে সাহায্য করেছেন, সাহাবীদেরকেও সহযোগিতা করতে বলেছেন। নতুন ইসলাম গ্রহণ করার পরে বেশিরভাগ সময়েই আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন হয়। নওমুসলিমদেরকে আর্থিকভাবে সহায়তা করাও এক ধরনের দাওয়াহ। খালি মুখের কথায় দাওয়াহ হয় না। যারা সম্প্রতি ইসলাম গ্রহণ করেছে তাদের দায়িত্ব নেওয়াও এর অন্তর্গত।
        সাহাবীদের জীবনের দিকে লক্ষ করলে দেখব, নতুন মুসলিমদের অনেকেরই সাহায্যের প্রয়োজন ছিল। বিলাল (রা.) ছিলেন একজন দাস, আবু বকর (রা.) তাকে মুক্ত করেন। প্রথম যুগের অনেক মুসলিমই দাস ছিল। এই রকম অবস্থায় বড় ধরনের সহযোগিতার দরকার পড়ে। এই সহযোগিতাটুকু না দিলে তাদের দ্বীন গ্রহণের প্রাথমিক সময়টা এত কঠিন হয়ে পড়ে, যে অনেকসময় তারা দ্বীন থেকেই সরে যায়। আমেরিকায় একটা পরিসংখ্যানে জানা যায়, বেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণের নতুন মুসলিমরা শেষ পর্যন্ত ইসলাম ছেড়ে দেয়। ইসলাম গ্রহণের পর তাদেরকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরিবারের আপন মানুষগুলো পর হয়ে যায়। তাদের সামাজিক অবস্থান বদলে যায়। তাই এরকম পরিস্থিতিতে তাদের অনেক সহানুভূতি ও সহযোগিতার প্রয়োজন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কয়েকটি ব্যাপার চলে আসার আগেই তোমরা ভালো কাজ করে নাও। দারিদ্র্য তোমাকে বিস্মরণ করিয়ে দেওয়ার আগেই সৎ কাজ করো।’ যখন লোক খালি পেটে থাকে, তখন আধ্যাত্মিকতা, ইলম অর্জন--এসবের প্রতি সে আকর্ষণ বোধ নাও করতে পারে। তাই মানুষের প্রয়োজনের দিকে নজর রাখাও দাওয়াহ দেওয়ার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
        (সালমান আর ফারসির ইসলাম গ্রহণ থেকে শিক্ষা, সীরাহ, প্রথম খণ্ড)

        Comment


        • #5
          ইন্নালিল্লাহ.... আপনি এ কি করলেন!!!
          আপনি তো এই দোকান গুলোকে গোয়েন্দা নজরে ফেলে দিলেন ।নাম ঠিকানা সহ এখানে এডব্রেস করার কি দরকার ছিল?
          আপনি কি জানেন না এটা একটা স্পর্শকাতর ফোরাম ?
          আবার মোবাইল নাম্বারও দিয়ে দিয়েছেন।
          প্লিজ তাড়াতাড়ি দোকানের নাম ঠিকানা ,নাম্বার গুলো মুছুন!!!
          Last edited by banglar omor; 05-13-2016, 08:32 AM.
          শামের জন্য কাঁদো.....

          Comment


          • #6
            আমাদের মনে রাখা উচিত আমরা ফোরামে যা পোস্ট করি তাই গোয়েন্দাদের নিকট প্রোমট হয়ে যায়। প্রিয় @qasim আপনার পোস্টে ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সমূহ উল্লেখ করা মটেও ঠিক হই নি।
            আমি আপনাকে ও মডারেট ভাইদের কে অনুরোধ করব ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সমূহ ডিলেট করে দিতে......
            "বল সত্য আসিয়াছে মিথ্যা বিলুপ্ত হইয়াছে,মিথ্যাতো বিলুপ্ত হবারি" (সূরা ইসরা ১৭ঃ৮১)

            Comment


            • #7
              এগুলো তো সাধারণ লাইব্রেরী। এতে যদি এগুলো গোয়েন্দাদের নজরে পরে, তাহলে অরা নজরদারী করতে করতেই মরে যাবে মনে হয়।

              Comment


              • #8
                হ্যা ভাই বিষয় টা এমনই আমরা এর ক্ষতিকর দিকটি লক্ষ্য করছি না...কিন্তু সরকার বর্তমান সময়ে এ সমস্থ কাজে খুবই তৎপর......
                "বল সত্য আসিয়াছে মিথ্যা বিলুপ্ত হইয়াছে,মিথ্যাতো বিলুপ্ত হবারি" (সূরা ইসরা ১৭ঃ৮১)

                Comment


                • #9
                  গোপনীয়তার ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করা
                  হিজরতের সময়ে এবং মাক্কী জীবনের শেষ দিকে রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রায় সব কাজেই অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে চলছিলেন। ইসলাম ও মুসলিমদের রক্ষা করার জন্যই তিনি গোপনীয়তা বজায় রেখেছিলেন। কিন্তু গোপনীয়তা ও দাওয়াহর মধ্যে অবশ্যই ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। হিজরতের একটি ছোট্ট ঘটনা দেখিয়ে দেয় কীভাবে এই দুটো কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হয়।
                  রাসূলুল্লাহর (সা.) মক্কা ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি খুব কম লোকই জানতো। আলী বিন আবু তালিব, আবু বকর ও তাঁর পরিবার ছাড়া আর কেউই বিষয়টি জানতেন না। হিজরতের সময় রাসূলুল্লাহ ও আবু বকর যখন বের হলেন, তখন তাদের কোনো কিছুর দরকার পড়লে আবু বকরের ব্যবসায়িক পরিচিতি বেশ কাজে লাগত। কারণ আবু বকর (রা.) ব্যবসা সংক্রান্ত কাজের জন্য বিভিন্ন জায়গায় যেতেন, তাই তিনি মক্কার বাইরের অনেক গোত্রের কাছে পরিচিত ছিলেন। অন্যদিকে, মক্কার বাইরের লোকজন রাসূলুল্লাহর (সা.) নাম শুনলেও তাকে সরাসরি খুব একটা চিনতো না। রাসূলুল্লাহ (সা.) মূলত মক্কা আর মক্কার বাইরে শুধু তাইফে তাঁর দাওয়াহর কাজ করেছেন। অনেকেই তাঁর নাম শুনেছিল কিন্তু তিনি দেখতে কেমন ছিলেন সে সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণাই ছিল না। আবু বকর (রা.) বেশ পরিচিত থাকায় কেউ তাদেরকে দেখলে আবু বকরের কথা বলতে এগিয়ে আসতো। তারা আবু বকরকে জিজ্ঞেস করতো যে, তাঁর সাথে থাকা লোকটি কে অর্থাৎ তারা রাসূলুল্লাহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতো। তখন আবু বকর (রা.) জবাব দিতেন এভাবে, ‘ইনি হলেন আমার পথপ্রদর্শক, আমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’ এ কথা শুনে তারা মনে করতো, আবু বকরের সাথে থাকা এই লোক অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ আবু বকরকে মরুভূমির মধ্য দিয়ে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যদিও আবু বকর বুঝিয়েছেন ভিন্ন কথা, তিনি বুঝিয়েছেন রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে আল্লাহ তা’আলার নির্দেশিত পথের অভিমুখে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। কিন্তু তিনি এটা এমনভাবে বলতেন যাতে রাসূলুল্লাহর (সা.) আসল পরিচয় গোপন থাকে কেননা রাসূলুল্লাহর (সা.) জীবন ছিল হুমকির মুখে। আবু বকর (রা.) মিথ্যাও বলেননি, ঘুরিয়ে কথা বলেছেন। এটাকে বলা হয় তাউরী, গোপনীয়তা রক্ষা করা।
                  কিন্তু একই সাথে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার সময় নিজের পরিচয় প্রকাশ করে দেওয়াটাই হিকমাহ। তাই হিজরতকালে যখন রাসূলুল্লাহর (সা.) সাথে আবু বুরাইদাহ আল আসলামির দেখা হয়, তখন তিনি নিজেকে সর্বশেষ রাসূল হিসেবেই নিজের পরিচয় দেন এবং তাকে ইসলামের দাওয়াত দেন। এরপরে আবু বুরাইদাহ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে বুরাইদাহ রাসূলুল্লাহর (সা.) সাথে ১৯টি যুদ্ধের মধ্যে ১৬টি যুদ্ধেই অংশগ্রহণ করেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) হিজরতের সময়েই দুইজন চোরকে দাওয়াত দিয়েছিলেন, তারাও মুসলিম হয়ে যায়। তিনি তাদের নাম জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে, ‘আমাদের নাম হলো আল মুহানান’, আল মুহানান মানে হলো ‘অসম্মানিত ব্যক্তি’। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদের এ নাম বদলে দিয়ে তাদেরকে ‘সম্মানিত ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করেন।
                  মাক্কী জীবনেও এরকম আরেকটি ঘটনা রয়েছে। একবার রাসূলুল্লাহ (সা.) একজন মেষপালককে দাওয়াত দিয়েছিলেন। তিনি সেই মেষপালকের কাছে দুধ খেতে চাইলেন। মেষপালক বললো, এই মুহূর্তে কোনো ছাগলের কাছেই দুধ নেই। এরপর রাসূলুল্লাহ (সা.) তার কাছে ছাগলের দুধ দোহন করার অনুমতি চাইলেন। মেষপালকের অনুমতি পেয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) দুধ দোহন করা শুরু করলেন, আর প্রচুর পরিমাণে দুধ বের হয়ে আসল। প্রথমে মেষপালককে দুধ পান করতে দেওয়া হলো, এরপরে রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তারপরে আবু বকর (রা.) দুধ পান করলেন। তখন মেষপালক রাসূলুল্লাহকে (সা.) জিজ্ঞেস করলো,
                  - আকাশের শপথ! সত্যি করে বলুন তো কে আপনি? আমি আপনার মতো কাউকে এখনো দেখিনি।
                  - আমি যদি আমার আসল পরিচয় তোমাকে দেই তাহলে তুমি কি তা গোপন রাখবে? রাসূলুল্লাহ বললেন।
                  - হ্যাঁ, রাখবো।
                  - আমি মুহাম্মাদ, আল্লাহর রাসূল।
                  - তবে কি আপনিই সে ব্যক্তি যাকে কুরাইশরা সাবিঈ বলে সম্বোধন করে?
                  সাবিঈ একটি অবজ্ঞাসূচক শব্দ, কুরাইশরা ইচ্ছা করে মুসলিমদেরকে হেয় করার জন্য এই নামে ডাকতো। রাসূলুল্লাহ (সা.) জবাব দিলেন, ‘হ্যাঁ, তারা এই নামে ডেকে থাকে।’ তারপর মেষপালক বললো,
                  - আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আপনি যা বলেছেন তা সত্য এবং আপনি মাত্র যা করলেন তা একজন রাসূলই করতে পারে। আমি এখন থেকে আপনার উপর অবতীর্ণ দ্বীনের অনুসারী।
                  - তুমি এখনই তা কোরো না। যখন তুমি দেখবে আমি প্রকাশ্যে নিজেকে ঘোষণা করছি, তখন তুমি এসে আমাদের সাথে যোগ দিও।
                  রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে মুসলিম হতে মানা করেননি, তিনি তাকে মুসলিম জামা’আতে যোগ দিতে বারণ করেন। কারণ রাসূলুল্লাহ (সা.) তখনও গোপনে দাওয়াহর কাজ করে যাচ্ছিলেন। এভাবেই রাসূলুল্লাহ (সা.) একইসাথে দাওয়াহ করেছেন ও নিজের পরিচয়ও গোপন রেখেছেন। এসব ঘটনা থেকে বুঝা যায় কীভাবে দাওয়াহ ও গোপনীয়তা রক্ষার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে রাসূলুল্লাহ (সা.) শুধুমাত্র সেসব ব্যক্তির কাছেই নিজের পরিচয় দিয়েছেন যাদেরকে দেখে তাঁর মনে হয়েছে যে তারা তাঁর ডাকে সাড়া দিবেন।
                  (হিজরত থেকে শিক্ষা, সীরাহ, প্রথম খণ্ড)

                  Comment

                  Working...
                  X