Announcement

Collapse
No announcement yet.

কোন আক্বীদার ভিত্তিতে ঐক্য ?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কোন আক্বীদার ভিত্তিতে ঐক্য ?

    মুসলিমদেরকে ইসলাম এক করে কালিমাতুত তাওহীদ ‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র মাধ্যমে। দ্বীন ইসলামের মৌলিক আক্বীদার কিছু বিষয়াবলি যা সাহাবায়ে কেরাম থেকে প্রাপ্ত, যা তারা অন্তরে বিশ্বাস করে যবান দিয়ে উচ্চারন করে কাজে পরিনত করে দেখিয়েছেন- এই তাওহীদের দ্বারাই উম্মাহ একীভূত হবে। এই তাওহীদ থেকে বিচ্যুতি ঘটলেই তার সাথে ঐক্য অসম্ভব।

    .

    তাওহীদের শরাহ করতে গিয়ে আহলুস সুন্নাহর উলামা গন আক্বীদার কিতাব লিখেছেন, সময়ে সময়ে তাদের কৃত ব্যাখ্যায় শব্দগত ভাবগত অর্থগত টুক টাক মতভেদ করেছেন। সর্বজনস্বীকৃত বাতিল ফেরকাগুলোকে বাদ দিলে তাওহীদের আক্বীদার ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে আমরা মুসলিম ঊম্মাহর মাঝে তিনটি প্রধান মাসলাক দেখতে পাই-

    .

    ১। আসারিগন যারা আক্বীদার ক্ষেত্রে মুহাদ্দিসিনগন এবং ইমাম আহমদের অনুসারী
    ২। আশআরীগন যারা ইমাম আবুল হাসান আল আশআরী ও তার ছাত্রদের আক্বীদার অনুসারী
    ৩। মাতুরিদীগন যারা ইমাম আবুল মানসুর আল মাতুরিদীর আক্বীদার ভাষ্যের অনুগামী

    .

    সুস্থ বিবেক, নিরপেক্ষ দৃষ্টি এবং সৎ নিয়ত নিয়ে এই তিনটি মাসলাকের প্রতি দৃষ্টিপাত করলে দেখা যাবে যে, আক্বীদার কিছু ফুরুঈ বিষয়ে এখানে পার্থক্য থাকলেও তাওহীদের মজ্জা অভিন্ন। মানে আমরা সহজে বলতে পারি টুক টাক পার্থক্য যা থাকার তা আছে আক্বীদার বিশ্লেষনে কিন্ত তাওহীদের ব্যাপারে সকলেই একমত। সাহাবায়ে কেরামের যুগে আক্বীদার সূক্ষ্য থেকে সূক্ষ্য বিষয়ে কোন প্রশ্নই উঠেনি, তাই সেগুলোর ব্যাখ্যা বা তা নিয়ে কিতাব লেখারও দরকার হয়নি। মূলত তাওহীদ তো সেই সহজবোধ্য ও সহজগম্য অনুধাবনযোগ্য ধারনা যা শিক্ষিত অশিক্ষিত সকলের বুঝে ধরে যাতে ইলমের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও সকলেই এক আল্লাহর খালেস বান্দা হয়ে যেতে পারে। রঈসুল মুফাসসিরীন ইবনে আব্বাস(রা) যে তাওহীদের উপর ছিলেন আফরার পুত্র মুয়ায-মুওয়াব্বিয(রা) ও সেই একই তাওহীদ মেনেছেন। আবু হুরাইরা(রা) এর তাওহীদ আর উসায়রীম(রা) এর তাওহীদ ছিল অভিন্ন। এজন্যে রাসূল(স) কোন ক্বওমে দাওয়াত দিতেন খুবই সাবলীল ও ব্যাপক কথার দ্বারা, সাহাবায়ে কেরামও এই আদর্শ ধরে রেখেছেন। পরবর্তীতে বাতিল ফেরকাগুলোর(জাবরিয়া-কাদরিয়া-মুশাব্বিহা-মুতাযিলি-খারেজি-রাফেযি-বাতেনি-উবাইদি-জাহমি ইত্যাদি প্রাচীন ফেরকা এবং কট্টর বেরেলভি-আগাখানী-মডার্নিস্ট-আহলে কুরআন-কাদিয়ানি-পশ্চিমা মডারেট ইত্যাদি নতুনতর ফেরকা) মোকাবেলায় আলেমগন বিভিন্ন সময়ে নানা আঙ্গিকে বিভিন্ন শরাহ, তাফসীর, তা’বীল এর আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে হয়ত অনিচ্ছাকৃত ভাবে কিছু তাহরীফ, তা’তীল, তাজসীম, তাবদীল বা তামসিল করে ফেলেছেন। যা হোক, আহলুসস সুন্নাহ তার সলফে সালেহীনগনের পথে চলে, সেখান থেকে সকল ভালো জিনিস গ্রহন করে এবং সকল খারাপ জিনিস বর্জন করে। ইলমী আলোচনা উদ্দেশ্য না এখানে, তার জায়গাও এটা না। ব্যবহারিক কিছু উদাহরন দিয়ে বিষয়টা খোলাসা করার চেষ্টা করি।

    .

    উম্মাহর ঐক্যের জন্যে বর্তমানে এই তিন গোত্রে সম্মিলন ও একত্রীকরন কতটা জরুরী? সালাফিদের মধ্যে অনেকেই আশআরী ও মাতুরিদিদের নিয়ে নিতান্ত বাড়াবাড়ি করে থাকেন। আবার আশআরী মাতুরিদিদের মধ্যে অনেকে সালাফিদের গোমরাহ বলতে দ্বিধা করেন না। দিনশেষে নিজেদের মাঝে কোন্দলের সুযোগে শয়তানের প্রতিনিধি কাফের-ত্বাগুত চক্র মুসলিমদের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগ করার সুযোগ পায়। যখনই ঐক্য শব্দটা উচ্চারিত হয়, মনের অজান্তে যে ছবিটা আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে তা হলো জিহাদের ময়দান। সব প্রেক্ষাপটের মত বর্তমান সময়ে আক্বীদার ভিত্তিতে উম্মাহর ঐক্যের নজিরও স্থাপিত হয়েছে এই ময়দানেই।

    .

    রাশিয়ার বিরুদ্ধে আফগান জিহাদের প্রারম্ভে শায়খ বিন বায ও শায়খ ইবন উসায়মীনের মত সুউচ্চ মাকামের সালাফি আলেম মাতুরিদি আফগানীদের সমর্থনে ফাতাওয়া ও কিতাবাদি প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে আফগানিস্তানে যখন তালিবান শাসিত সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন আমিরুল মু’মিনীন মুল্লাহ মুহাম্মদ উমার(রহ) এর নিকট বায়াত বদ্ধ হন আরবের বিখ্যাত তিনজন সালাফি আলেম; শায়খ হামুদ আল উক্বলা আশ শুয়াইবি, শায়খ আলি আল খুদাইর, শায়খ সুলাইমান আল আলওয়ান। এই তিনজন আলেম আক্বীদায় প্রচন্ড ভাবে আসারি, তাদের উস্তাদরাও আসারি, তাদের সাগরিদরাও। তারা সকলেই জানতেন যে তালিবান প্রধানত একটি মাতুরিদি জামাত। কিন্ত মাসলাকের ভিন্নতার কারনে তারা আমিরের কাছে বায়াত হবার মত মহান এক ইবাদাতকে ত্যাগ করেন নি। তাদের পথ ধরে বায়াত হয়েছেন শায়খ ইউসুফ আল উয়েরি, শায়খ নাসের আল ফাহদ, শায়খ সুলতান আল উতাইবি, শায়খ ফারিস আয যাহরানীর মত বাঘা বাঘা সালাফি আলেমগন। পরবর্তীতে আরো বায়াত হয়েছেন শায়খ আসিম আল মাকদিসী, শায়খ আবু বাসির তারতুসী, শায়খ ইবরাহীম আর রুবাইশ, শায়খ খুবাইব প্রমুখ। এমনকি আশআরী আক্বীদার চরম বিরোধী শায়খ বিশর ইবন ফাহদ, শায়খ আবু ক্বাতাদাও বায়াত প্রদান করেন। আর এই কাতারের মুজাহিদিন উলামার নাম নেয়া শুরু করলে থামা কষ্টকর হবে এনাদের মধ্যে যারা এখনও জীবিত আছেন সকলেই পরবর্তীতে আমিরুল মু’মিনীন মুল্লাহ আখতার মানসুর(হা) এর কাছে নিজের বায়াত নবায়ন করেছেন। আমরা যারা সালাফিয়্যাতের দাবি করি,
    তারা নিশ্চয়ই এনাদের চেয়ে বড় সালাফি না।

    .

    আবার আফগান জিহাদের প্রতিটা পর্যায়েই আফগানীদের পক্ষ থেকে প্রবল আবেদন ছিল আরবের আলেমদের এই ভূমিতে আগমনের জন্যে, তাদেরকে দ্বীন ইসলাম শেখানোর জন্যে। সালাফি উলেমাগন আফগানে গিয়ে তাদের অনেক বিদআত দূর করেছেন, অনেক ভূল সংশোধন করে দিয়েছেন। পাশাপাশি নিজেরাও ঐক্যের পথে চলার নতুন সবক পেয়েছেন। আক্বীদাতে ফুরুঈ পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও মুল্লাহ উমার একজন সালাফি মুজাহিদ উসামা বিন লাদেনকে আপন ভাইর চেয়েও বেশি যত্ন করে প্রতিরক্ষা করেছেন, মাতুরিদি প্রধান জামাত তালিবানের সাথে আসারি প্রধান জামাত আল ক্বায়েদা অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িয়ে গেছে। সমগ্র তালিবানের আলেমগন একবাক্যে তার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন, না-হক্বপন্থীরা ছাড়া কেউ এর বিরোধিতা করেননি। আজ পর্যন্ত উম্মাহ এর সুফল ভোগ করছে। যারা নিজেদেরকে মাতুরিদি আক্বীদার সাথে যুক্ত করতে পছন্দ করি, তারা নিশ্চয়ই এই আক্বীদা মাওলানা জালালুদ্দিন হাক্বানী বা নিজামুদ্দিন শামযাঈর চেয়ে বেশি বুঝি না।

    .

    যতদিন পর্যন্ত কেউ তাওহীদের আমালী রূপটা না দেখবে, তার কাছে কিতাবের পাতায় শুধুই মতভেদ দৃষ্টিগোচর হবে। যতদিন না অন্য মতের লোকদের থেকে তাদের ভাষ্যটা জেনে ইনসাফের ভিত্তিতে ঐক্য প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ না নিবে, ততদিন পর্যন্ত নিজ গন্ডির বাইরে সবাইকে গোমরাহ মনে হবে। যতদিন না জিহাদের উদ্দেশ্যে ত্বাগুত কাফিরের বিরুদ্ধে নিজেকে খরচ না করবে, ততদিন ঐক্য প্রতিষ্ঠার বানী ঠুনকো ই থেকে যাবে। জুযইয়্যাতকে পাশ কাটিয়ে কুল্লিয়্যাতকে প্রাধান্য যতদিন না দিবে উম্মত, ততদিন কাফিরের পদতলেই থেকে আক্বীদার কিতাব অধ্যয়ন করতে হবে।

    .

    অতএব ঐক্য হবে আল্লাহর ওয়াহদানিয়াতের ভিত্তিতে, রাসূলের(স) ইত্তেবার ভিত্তিতে, আল ওয়ালা ওয়াল বারাআহর ভিত্তিতে, কুফর বিত্ ত্বাগুতের ভিত্তিতে। আম্বিয়া-কিতাব, মালাইকা, কিয়ামাত, হাশর-নশর, জান্নাত-জাহান্নাম, সিরাত ইত্যাদি অকাট্য বিষয়ে আক্বীদার শুদ্ধতা ও অভিন্নতা ঐক্যের জন্যে যথেষ্ট। আর নিতান্ত ভ্রান্ত আক্বীদার মুসলিমগন তো আগেই আহলুস সুন্নাহ থেকে বাদ; তবুও তাদেরকে কাফের মুশরিকদের উপর প্রাধান্য দিতে হবে এবং কুফরের মোকাবেলায় তাদের পক্ষে দাড়াতে হবে। আল্লাহ এই উম্মতকে ঐক্যের বারাকাহ দান করুন, আমীন।

    .

    The Base in the Land of Bengal


    ভাইদের কাছে অনুরোধ ফেসবুকে এই পেজের প্রমোট করুন।
    লিঙ্কঃ www.facebook.com/tBiLoB

  • #2
    Originally posted by Shabab Abdullah View Post


    ভাইদের কাছে অনুরোধ ফেসবুকে এই পেজের প্রমোট করুন।
    লিঙ্কঃ www.facebook.com/tBiLoB[/COLOR]
    মাশাআল্লাহ । আপনার পেইজটি ভিজিট করলাম। আপনার মেহনতকে আল্লাহ তাআলা কবুল করুন। আপনার লেখালেখি এ’তেদালের মধ্যে পেয়েছি। ফেইসবুকে ফেমাস ভাইদেরকে মেসেজ দিন প্রমোট করবে ইনশাআল্লাহ।
    কাঁদো কাশ্মিরের জন্য !..................

    Comment


    • #3
      ভাই পেইজটা আমার নয়, আমি শুধু কপি-পেষ্ট করছি যাতে ভাইরা অসাধারন এই লেখাগুলি পড়তে পারে।

      Comment

      Working...
      X