Announcement

Collapse
No announcement yet.

মুফতি সাহেবের চাকুরি যাওয়ার কারণ, ওই ফতোয়ায় স্বাক্ষর না দেওয়া...

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • মুফতি সাহেবের চাকুরি যাওয়ার কারণ, ওই ফতোয়ায় স্বাক্ষর না দেওয়া...

    মুফতি সাহেবের চাকুরি যাওয়ার কারণ, ওই ফতোয়ায় স্বাক্ষর না দেওয়া...

    তিনি আমার পরের বছরে দাওরা দিয়েছেন, একজন হাফিয, এবার মাওলানা হলেন। এরপর ইফতা সমাপ্ত করে একজন মুফতি হলেন। সে হিসেবে তিনি একজন হাফিয মাওলানা মুফতি সাহেব। শিক্ষকতার প্রথম বছরই ঢাকার পাশেই একটি কওমি মাদরাসায় সর্বোচ্চ শ্রেণী দাওয়া পর্যন্ত খেদমতের সুযোগ পান।

    প্রথম বছরই তিনি হাদীসের কিতাব আবু দাউদ শরীফসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কিতাব পড়ানোর সুযোগ পান। ক্রমান্বয়ে তিনি হাদীসের অন্যান্য গ্রন্থ মুসলিম শরীফ ও তিরমিযি শরীফ পড়ানোরও সুযোগ পান। একপর্যায়ে তিনি মাদরাসার নাযিমে তালীমাত বা শিক্ষাসচিব হন। মাদরাসায় ছাত্রদের নিকট তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ও শিক্ষকদের কাছে নির্ভরযোগ্যতা সব মিলিয়ে তাঁর বৃহঃস্পতি এখন তুঙ্গে।

    কিন্তু ওই মাদরাসার মুহতামিম সাহেব হচ্ছেন শাহবাগি হুজুর বলে খ্যাত মাওলানা ফরীদ উদ্দিন মাসঊদ সাহেবের একান্তে ভক্ত। সে হিসেবে কথিত জঙ্গিবিরোধী ফতোয়ার স্বাক্ষরের কপি ওই মাদরাসায়ও যায়। কিন্তু তিনিসহ কোনো মাদরাসাশিক্ষক ফতোয়ার ওই কপিতে স্বাক্ষর দেন নি। উপায়ান্তর না দেখে কিছু কচি বাচ্চা ছাত্রদেরদের স্বাক্ষর ওই শিক্ষকদের বদলে নেওয়া হয়। পরে যখন ফরীদ উদ্দীন মাসউদ ভক্ত ওই মুহতামিম সাহেব স্বাক্ষরের কপি হাতে নেন, তখন তিনি নিজেই এদের স্বাক্ষর দেখে অপমানবোধ করেন।

    এবার তিনি মাদরাসার হুজুরদেরকে অফিসে ডেকে এনে বিভিন্নভাবে ওই ফতোয়ায় স্বাক্ষর দেওয়ার জন্যে ফুসলাতে থাকেন। কিন্তু এই মুফতি সাহেব সহ কেউই এতে স্বাক্ষর দেন নি। একপর্যায়ে মুফতি সাহেবের সাথে মুহতামিম সাহেবের কথা কাটাকাটি হয়। তবুও মুফতি সাহেব স্বাক্ষর দেন নি, তখন মুহতামিম সাহেব ধরে নেন, বাকী শিক্ষকদের ওই ফতোয়ায় স্বাক্ষর না দেওয়ার কারণ এই মুফতি সাহেব! তাই তিনি বিভিন্নভাবে মুফতি সাহেবকে বছর শেষে চলে যাওয়ার প্রতি ইঙ্গিত দেন। মুফতি সাহেব দুনিয়ার স্বার্থে একমাত্র প্রকৃত সম্বল দ্বীনকে পণ্য বানাতে রাজী হন নি। তিনিও শাহবাগ প্রভাবিত ওই মাদরাসা থেকে বিদায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন।

    শিক্ষাবর্ষ এখনো শেষ হয় নি, প্রায় দেড় মাস বাকী। এমন সময় তিনি একদিন আমাকে ফোন দিলেন, সংক্ষেপে কিছু কাহিনী বর্ণনা করে আমাকে বলেন, বিস্তারিত সরাসরি আসলে বলবো, আপাতত আমি ওই মাদরাসা থেকে বিদায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিছি। আপনি আপনার পরিচিত কোনো মাদরাসা আমার জন্যে দেখতে পারেন। পরে সরাসরি দেখা হলে পূর্ণ কাহিনী বর্ণনা করেন।

    ইতোমধ্যে আমি তার জন্যে একটি ভালো মাদরাসা দেখি, যেটি পূর্বের মাদরাসার তুলনায় অনেক ভালো। একদিন ওই মাদরাসায় তাঁকে নিয়ে যাই, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ শিক্ষাগত পূর্ণ বিবরণ শুনে তাঁকে অত্যন্ত সম্মানের সাথে বরণ করে নেয়...

    সত্যি কথা বলতে কী, যদি হক্ব আওয়াজ বুলন্দ করার জন্যে কোনো মসজিদের খতীবের ইমামতি আর কোনো মাদরাসার শিক্ষকের চাকুরী চলে যায় তবুও কারো রিজিক আল্লাহ বন্ধ করে দেন না, বরং তাঁকে পূর্বের চেয়ে বেশি সম্মান ও রিজিক বাড়িয়ে দেন।
    সত্যের পথে মুফতি সাহেবের এই অবিচলতা তাঁর প্রতি আমার আরো শ্রদ্ধা বাড়িয়ে দিল, অথচ তিনি আমার পরের ফারিগ।
    তিনি আর্থিক দিক দিয়ে অসচ্ছল হওয়ার পরও ঈমানকে জ্বলন্ত অঙ্গারের মতো আকড়ে ধরেছেন...
    আল্লাহু আকবার...!!

  • #2
    আল্লাহ তায়ালা এই শায়েখকে এবং আপনাকে নেক হায়াত দিন। দ্বীনের পথে অটল রাখুন। এ পথে চলার পথে সমস্ত বিপদ থেকে হেফাজত করুন।

    Comment

    Working...
    X