Announcement

Collapse
No announcement yet.

Is-র রেস্তোঁরা-হামলা প্রেক্ষিত: তত্ত্বগত আলোচনা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • Is-র রেস্তোঁরা-হামলা প্রেক্ষিত: তত্ত্বগত আলোচনা

    আমি কোনো কিছু গোছিয়ে লিখতে পারি না। মনের কোণে কিছু কথা জমেছে, তাই এখন বিনিময় করছি। আমার আলোচনায় কোনো ভুল কিংবা মিথ্যা তথ্য থাকলে জানিয়ে উপকৃত করবেন।
    সম্প্রতি ঘটে যাওয়া IS-র রেস্তোঁরা-হামলায় একেকজনের একেক মতের বহিঃপ্রকাশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আলোচনায় প্রবেশ করার আগেই আমি দুটো বিষয়কে মূল কেন্দ্রবিন্দু হিশেবে সাব্যস্ত করতে চাচ্ছি-
    ১. এই ভূমিতে শারিয়াহ্ প্রতিষ্ঠা অর্থাৎ তাওহিদের কালিমার সমুন্নতি।
    ২. আন্তর্জাতিক জিহাদের অংশ হিশেবে তাগূত আম্রিকা ও এর মিত্রদের স্বার্থে আঘাত এবং একে দুর্বল করার মাধ্যমে ধ্বংসের প্রান্তে ঠেলে দেয়া।
    তানজিম কায়িদাতুল জিহাদকে এই ভূমিতে মূলত এই দুটো উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই এগোতে হবে, যদিও একটি অপরটির সম্পূরক। এই দুটো লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য শারিয়াহ্গত সীমারেখা, এই ভূমির ভৌগলিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, মুসলিমদের আচরণগত বৈশিষ্ট্য, ইসলামের প্রতি তাদের আবেগ, ইসলামি দলগুলির মানহাজ, আলিম-উলামাদের সমর্থন, তাঁদের আকিদাহ্ ও ফিক্হ্, সাধারণের সাথে ইসলাম ও উলামাদের সম্পর্কের উষ্ণতা, কায়িদাতুল জিহাদের মানহাজের ব্যাপারে উলামা-তলাবা ও সাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি, এই ভূমিতে জিহাদের মাধ্যমে শারিয়াহ্ প্রতিষ্ঠার ফরজিয়াতের ব্যাপারে সাধারণের সচেতনতা, তাগূতের সামর্থ্য, এর গোয়েন্দা বাহিনী, র্যাব, পুলিশের সামরিক সামর্থ্যের দৌঁড় এবং সামরিক বাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য যথেষ্ট শক্তি সামর্থ্য অর্জনসহ ইত্যাদি বিষয়গুলি কৌশল-প্রণয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। ফলে এই মুহূর্তে কোন্ হামলাটি উপরিযুক্ত দুটো লক্ষ্যের জন্য লাভজনক হবে- তা নির্ধারিত হবে শারয়ি সীমারেখায় এইসব উপাদানগুলিকে যৌক্তিক পর্যালোচনার মাধ্যমে। না হয় আবেগ কিংবা তড়া-প্রবণতা লক্ষ্যচ্যুতির কারণ হতে পারে।
    সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই হামলা কখনও শারিয়াহ্ প্রতিষ্ঠার জন্য ইতিবাচক কিছু বয়ে আনবে না। IS তার আন্তর্জাতিক যুদ্ধের অংশ হিশেবে এই হামলা করেছে। এদের স্বকল্পিত ‘খিলাফাহ্’র শত্রু-জাতিগুলির ওপর হামলাগুলি শুধু ইরাকে অবস্থিত ‘খিলাফাহ্’র জন্যই সুখকর ঠেকবে, মূলত উপরিযুক্ত দুটো লক্ষ্যের কোনো উপকার এনে তা দেবে না। কেনো দেবে না- তা উল্লিখিত বৈষয়িক উপাদানগুলির শারয়ি ও যৌক্তিক মূল্যায়ন, পর্যালোচনা করেই তবে জানা যাবে। এই ভার আপাতত জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন মুমিনদের প্রতিই ছেড়ে দিলাম।
    আলোচনা এলোমেলো না করে পাঁচটি সংখ্যায় ভাগ করছি-
    ১. আধুনিক যুদ্ধের অন্যতম কৌশল হলো গেরিলা যুদ্ধ। আর দীর্ঘমেয়াদি এই রণে জনসমর্থন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, একে কোনো রকম অবহেলা করা হবে চূড়ান্ত পর্যায়ের বোকামি। আজ যদি শারিয়াহ্ প্রতিষ্ঠার এই যুদ্ধ দুটো ভূমির মাঝে সংঘটিত হতো, তবে এর অতিমাত্রিক দাবি থাকতো না- যার প্রয়োজনীয়তা IS-র কাছে নেই। আর একটি ভূমির প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র হিশেবে এরা এসবের মুখাপেক্ষীও নয়। কিন্তু কায়িদাতুল জিহাদ এই দুটো লক্ষ্যের পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য এই দায়ভার অনুভব করে।
    পাকিস্তানে TTP কেনো সফলতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে, এদেশে কেনো JMB ব্যর্থ হয়েছে, ইয়েমেনে কেনো পূর্ণ অবস্থান করতে পারছে না AQAP, এসবের অন্যতম একটি কারণ হবে- আলিমদের বিরোধিতা কিংবা নির্লিতপ্তা এবং সাধারণের অসমর্থন অথবা জনসাধারণের সাথে পারস্পরিক সমন্বয়হীনতা। আর এটিও সত্য যে, কিয়াময়াহ্ এসে গেলেও এই সাধারণের ব্যাপক সমর্থন আসবে না। এই ভূমির আলিম সমাজই গুরাবা এবং এই আলিম সমাজের তুলনায় এই মুজাহিদিনরা আরও গুরাবা।
    মুজাহিদদের এমন কিছু করা বোকামি হবে- যা তাওয়াগিত হাতিয়ার হিশেবে ব্যবহার করতে পারে। JMB-র সিরিজ বোমা হামলার উদ্দেশ্য ছিলো নিছক দাওয়াহ্ আর পরে এটিকেই তাওয়াগিত ঢাল হিশেবে ব্যবহার করে। ফলে যা হবার তাই হয়েছে। সময়ের আগেই বিকশিত হবার চেষ্টা মৌলিক লক্ষ্যকে প্রতিহত করে। আমাদের এতোটুকু মনোভাব থাকা চাই- সাধারণের সমর্থন না পেলেও, যেনো আমরা তাদের ঘৃণা অর্জন না করি। শাতিমে রাসুলকারীদের হত্যাগুলি যেভাবে সমর্থন পাচ্ছিলো, তা IS-র একটি হামলাতে তালগোল পেকে গেলো। কে হক মুজাহিদ, কে খারেজি- তা বিচার করার শক্তি-সামর্থ্য সাধারণের নেই। যেখানে এই ভূমির আলিম সমাজের চিন্তাশক্তি এতো দূর গড়ায়নি, সেখানে এ আশা করা নিষ্ফলপ্রয়াস বৈ নয়।

    ২.সবচে ভয়ংকর বিষয়টি হলো- আলিম সমাজের বিরোধিতা। জাজিরাতুল আরবে এই অভিজ্ঞতা মুজাহিদিনদের আছে। গুটিকয়েক আলিম ছাড়া কেউ সত্যকে হ্যাঁ বলেননি। তাকফিরি, খারিজি উপাধি মুজাহিদিনদের সয়ে গেছে। এই ভূমিতে আহলে হাদিস আলিম সমাজ সওদি আলিমদের তাকলিদ করছেন মাত্র। এই ভূমিতে এই সংখ্যালঘু আলিমসমাজের প্রতি এতো সচেতন হবার প্রয়োজনীয়তা মুজাহিদিনরা অনুভব করেননি। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ দেওবন্দিদের ক্ষেত্রে ‘সাতখুন মাফ’ তত্ত্ব অবলম্বন করে কতক ভণ্ড আলিমকে এড়িয়ে গেছেন, আর এই সংখ্যালঘু আহলে হাদিস আলিমদের ক্ষেত্রে কোনো রকম রাখঢাক ছাড়াই যুক্তি ও জবাবের রণে অবতীর্ণ হয়েছেন, আসলে হাতে বন্দুক থাকলে নিরীহ পাখিও শিকারে পরিণত হতে বাধ্য, সেখানে আহলে হাদিস সমাজ কোন্ ছাড়! এ ভূমির দেওবন্দি সমাজ এই ভূমির তাওয়াগিতের বিরুদ্ধে জিহাদের ব্যাপারে কখনও গরজ অনুভব করেননি। HJ-র মূলধারার পলিসিও এমন ছিলো না, তাগূত ও তাওহিদ এঁদের মানহাজে অনুপস্থিত ছিলো। চলুন ২০০৫ সালে চলে যাই। JMB-র সিরিজ বোমা, তারপর একটি প্রচারপত্র, শুরু হলো তাওয়াগিতের প্রচার অভিযান। আলিমসমাজ দাঁড়িয়ে গেলেন, মাসজিদে মাসজিদে বয়ান হলো- এটি ইসলাম কায়েমের পথ নয়, HJও শামিল হলো এতে, নানা Conspiracy দাঁড় করালো, জাতি হিশেবে বাঙালি একটু বেশিই Conspiracy-প্রবণ। নিজের দায়িত্ব এড়ানোর জন্য এরচে নির্ভুল তত্ত্ব আর দ্বিতীয়টি নেই- JMB ভারতের চর, অমুকের এজেন্ট, কতো কথা! মজার ব্যাপার হলো, একজন আলিমের মহান যে দায়িত্ব ছিলো, তা থেকে সরে গিয়েছিলেন প্রায় সবাই। আলোচনাটি এগোনোর জন্য মাঝখানে ছোট্ট একটি উদাহরণ দিই-
    ধরুন, একটি ছেলে ও আরেকটি মেয়ে নিজ সিদ্ধান্তে পরস্পর বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হলো, এদের পরিবারের এতো স্বপ্ন এরা দুজন মিলে ধূলোয় মিশিয়ে দিলো। পরিবার এদের স্বীকৃতি দিচ্ছে না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এরাতো একটি বৈধ কাজ করেছে, কেনো অভিভাবকেরা তা মেনে নিতে পারছেন না। হ্যাঁ, এটিই হলো বাস্তবতা- কোনো কাজ হালাল বা সিদ্ধ হলেই তা সমর্থনযোগ্য হতে হবে, এমনটি নয়।
    এবার আলোচনায় আসি, JMB-র কাজও আমরা এই উদাহরণের কাতারে ফেলতে পারি। হ্যাঁ, বিরোধিতা করার অধিকার আলিমদের আছে, ছিলো, থাকবে। কিন্তু এই বিরোধিতা কার জন্যে, কার সন্তুষ্টির জন্যে, কীভাবে- এরতো একটি মাপকাঠি থাকা চাই। JMB-র উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য কী ছিলো, দাবি কী ছিলো- এর প্রতি ভ্রূক্ষেপ না করে তাদেরকে সন্ত্রাসী হিশেবে চিহ্নিত করার অধিকার কারও ছিলো না। ফলে আলিম সমাজের অবস্থান কিন্তু তাগূত ও তাগূতি ব্যবস্থা, গণতন্ত্র ও সেক্যুলারিজমের পক্ষেই চলে গেছে। এভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয় না, কিন্তু কীভাবে হয়, হবে- এর রূপরেখা তাঁরা দেননি। BNP সরকার কি শারয়ি সরকার, সেই মহিলা নেত্রী কি উলুল আম্র্, এই সংবিধান কি ইসলামি, বিচারব্যবস্থা কি পূর্ণ শারয়ি, সর্বোপরি তখন এই ভূমিতে কি ইসলামি ইমারাত ছিলো- ইত্যকার প্রশ্নের যৌক্তিক অবস্থান আমাদের আলিম সমাজের ছিলো না। নির্লজ্জভাবেই চিহ্নিত করা যায়- আলিমসমাজ তাগূত ও এর মানবরচিত শারিয়াহ্র প্রতিই আনুগত্য পেশ করেছেন।
    যদি যৌক্তিক মূল্যায়ন করতেন তবে বলতেন- হামলা অসমর্থনযোগ্য কিন্তু দাবি সমর্থনের। তাঁরা ক্ষমতাসীনদের পুতুল না হয়ে ওদেরকে JMB-র বৈধ দাবির পক্ষে কথা বলতে পারতেন, ওতোটুকু না করে অন্তত চুপ থাকতে পারতেন। হাশরের মাঠে আমরা সবাই দেখা করবো, তখন বোঝাপড়া না হয় করা যাবে।

    ৩. আলিম সমাজকে ক্ষেপিয়ে লাভের চে ক্ষতিই হবে বেশি। IS-র এই হামলায় আজ গোটা আলিম সমাজের কন্ঠ এক, ইসলামি গণতান্ত্রিক দলগুলির কন্ঠ এক, আহলে হাদিস, দেওবন্দিদের অভিন্ন মত, অন্তত এতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মনে রাখতে হবে মিম্বারের একটি খুতবাহ্ যা পারে এক মুজাহিদের বোমাও তা পারে না। আলিম সমাজকে দোষী করে, তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে মূল সমাজ থেকে বিচ্যুত হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। সাধারণের সাথে যে দূরত্ব তারা সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন, এই ফাঁদে মুজাহিদরা পা দিতে পারেন না। আমাদের বুঝতে হবে, সাধারণ এখনও বুঝে না- এই মানবরচিত শারিয়াহ্র সরকারগুলির পরিচালনাকারী ও অনুসারীরা কীভাবে মুর্তাদ হয়, কীভাবে ও কীসের ভিত্তিতে এদের তাকফির করা হয়। তাওহিদের এই মৌলিক ব্যাপারে যাদের এতো অস্পষ্টতা, সেখানে হারবি কাফিরজাতির নাগরিক হত্যার সিদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তারা তুলতেই পারে- এইতো স্বাভাবিক।
    যুদ্ধরত কাফির জাতির প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ হত্যা হালাল- এই সাধারণ ফিক্হ্টি কেনো তাঁরা বুঝতে পারছেন না- এই প্রশ্ন করে কোনো লাভ নেই। আধুনিক যুদ্ধ সম্পর্কে যাদের ধারণা নেই তারা এরচেও শিশুসুলভ আপত্তি তুলবে। ধরুন, মিডিয়া অবলম্বন ও ছবি তোলাকে তাঁদের কেউ কেউ হারাম বলতেন। কিন্তু এখন কিছু ‘নিয়মতান্ত্রিক’ আন্দোলনের ফলে তাঁরা এগুলি গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছেন, ফাতাওয়ার ছাঁচে ঢালাই করছেন। পরিস্থিতি তাঁদের এগুলিতে টেনে আনছে। এই জাতির আলিম সমাজের আধুনিক জিহাদের ধারণা নেই। তারা বুঝতে পারছেন না যে, আজকের জিহাদ কোনো ময়দানকেন্দ্রিক নয়, এখানে ঘোষণা দিয়ে দুপক্ষ লড়ে না, একপক্ষ পালিয়ে গেলেই যুদ্ধের ইতি ঘটে না, এই যুদ্ধ একদিন কিংবা পাঁচদিনের সম্মুখ লড়াই নয়। পরিস্থিতি যদি কোনোদিন তাঁদেরকে এই আধুনিক জিহাদে টেনে আনে, হয়তো আমরা এরচেও বিপজ্জনক ফাতাওয়া লক্ষ্য করতে পারি, সেদিন অবাক হবার কিছু রবে না। এতোদূর যাবার প্রয়োজন নেই, ইসলামি ইমারাত আফগানিস্তান ছবি তুলা নিষিদ্ধ করেছিলো; আজ ছবি, ভিডিও ইত্যাদি মিডিয়া ব্যবহারের বাস্তবতার উপলব্ধি তাঁরাও করছেন। বুদ্ধিমানতো সেই ব্যক্তি যে বিপদে পড়ে শিখে না, বরং অন্যের বিপদ দেখেই শিখে। ফাতাওয়ার কলমে ফিদায়ি হামলা হারাম বলা যায়, কিন্তু ময়দানের আলিম বুঝেন এর বাস্তবতা কতো গভীরে!

    ৪. এতোক্ষণ প্রথম লক্ষ্যেকে আবর্তিত করে অনেক কথা হলো। এবার দ্বিতীয় লক্ষ্যের বাস্তবতা নিয়ে কথা বলা যাক। কেনো আন্তর্জাতিক যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা এদেশে আছে, কেনো আম্রিকা কিংবা ভারত নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। ধরুন, এই ভূমিতে যদি কোনোদিন ইসলামি শারিয়াহ্ গালিব হয়েও যায়, জনসমর্থনের সয়লাব হয়েও যায়, এই রাষ্ট্র টিকে থাকার প্রশ্ন এসে যাবে। আন্তর্জাতিক তাগূত আম্রিকা ও এর মিত্র ভারত তখন এর স্থিতি বিনষ্ট করে দেবে। ইমারাতে আফগানিস্তান উদাহরণ হতে পারে। সাপের মাথা বলে একটি কথা আছে। যদি একইসাথে আন্তর্জাতিক তাগূত আম্রিকাকে দুর্বল করে দেয়া যায়, তখন এই নব্য রাষ্ট্রটি এর সীমানা পেরিয়ে বহুদূর পর্যন্ত তাওহিদ ও জিহাদকে ছড়িয়ে দিতে পারবে। কেনো একটি ইসলামি রাষ্ট্র স্থিতি লাভ করতে পারে না, কেনো অল্পতেই একে বিনাশ করা হয়- মিশরতো এক বাস্তব উদাহরণ, যদিও পূর্ণাংগ উদাহরণ নয়, এছাড়াও AQAP, আল্শাবাব কিংবা TTP-র কথা আনা যেতে পারে।
    তাই, এই দুটো লক্ষ্যের ভারসাম্য করেই এগোতে হবে। মনে রাখতে হবে, আম্রিকা ও এর মিত্র ভারতের বিনাশের ওপর এই ভূমিতে শারিয়াহ্ বিজয়ী হবার কারণটি জড়িত। নিছক আবেগ এখানে কাজে দেবে না। IS-র এই হামলাটি কায়িদাতুল জিহাদকে বড্ড বিপদে ফেলে দিলো। চারিদিকে শুধু আবেগ ও দেশপ্রেমের ছড়াছড়ি।
    জাতীয় ঐক্যের ডাক, আরও কতো কী!
    আমরা আলিম সমাজের কাছে শ্রদ্ধার সাথে আপাতত কিছু বিষয় তুলে ধরতে পারি-
    ১. এ দেশ কি দারুল ইসলাম?
    ২. এই দেশে কি ইসলামি শারিয়াহ্ বাস্তবায়িত হচ্ছে, এর সরকার কি উলুল আম্র্?
    ৩. এই দেশের সেনাবাহিনী কি মুজাহিদ বাহিনী?
    ৪. এই দেশের আইনব্যস্থা যদি সিদ্ধ হয়ে থাকে তবে কেনো এতগুলি ইসলামি দল বিদ্যমান রবে?
    ৫. আজকে যাদের নিরীহ বলা হচ্ছে, এরা কি জিম্মি, এরা কি আমানপ্রাপ্ত কিংবা এদের সাথে কোনো চুক্তি আছে?
    ৬. যুদ্ধরত জাতির সাথে কি কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক রাখা যায়, শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা যায় কিংবা কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা জায়িজ?
    ৭. কোনো মুসলিম যদি কোনো এক মুশরিককে হত্যা করে- জিম্মি নয়, চুক্তিবদ্ধ নয় কিংবা আমানপ্রাপ্তও নয় এবং যুদ্ধরতও নয়- তবে মুসলিমের ওপর কী শারয়ি বিধান বর্তাবে?
    ৮. এই দেশে ইসলামি শারিয়াহ্ প্রতিষ্ঠা বা দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রকৃত রূপ-রেখা কী?
    ৯. জিহাদ কোথায় ফার্দ্, বর্তমানে প্রকৃত মুজাহিদিন কারা?
    হানাফি ফিকহের আলোকেই এই প্রশ্নগুলির সুরাহা চাওয়া যেতে পারে। পূর্বেকার সম্মানিত হানাফি মুজতাহিদ, ইমাম, মুহাদ্দিস, ফকিহ্ থেকেই এই প্রশ্নের উত্তরগুলি মুজাহিদিনরা চাইতে পারেন।
    মনে রাখতে হবে, আজকের আলিম সমাজ যদি আসলেই জেগে ওঠেন তবে সাধারণের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে বাধ্য এবং এই ভুমিতে তাওহিদ-প্রতিষ্ঠা অনেক পিছিয়ে গেলো। তখন আন্তর্জাতিক জিহাদের অংশ হিশেবে কিছু করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। মুজাহিদিনদের মাথা ঠাণ্ডা রেখে ভাবতে হবে, মিম্বারগুলি থেকে মিথ্যা, অপবাদ, Conspiracy-তে রাগ করা যাবে না, এতে বরং এভাবে মুজাহিদিনরাই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন। আর এটি বর্তমানে তাওয়াগিতের অন্যতম চাওয়া।

    ৫. IS-র হামলা কেনো, কী দাবি ও উদ্দেশ্যে- তা এখনও পরিষ্কার নয়, এমনকি IS-র পক্ষ থেকে এর কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যাও পাওয়া যাচ্ছে না। কাফির হত্যা করাই যেনো মূল লক্ষ্য, পৃথিবীতে IS-র অবস্থানের marketing করাই যেনো মূখ্য উদ্দেশ্য। এতে শারিয়াহ্র কতোটুকু কল্যাণ আসবে বা মুসলিমদেরই কতোটুকু লাভ হবে- তা কোনো ব্যাপারই নয়। IS কেনো এই হত্যাকাণ্ড ঘটালো, সে কি তার শত্রু-রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এই প্রতিশোধ নিলো- তাও কিন্তু এখনও পরিষ্কার নয়। যেহেতু হারবি কাফিরদের হত্যা করা বৈধ এবং এ হামলাগুলি মুজাহিদিনরা অনুশীলন করেও থাকে, তাই এ হামলাগুলির দায়ভার কায়িদাতুল জিহাদের ওপরও এসে বর্তায়, পরোক্ষভাবে হলেও। IS-র এই হামলায় অংশ নেয়া ভাইগুলির প্রতি যে নির্মম অবিচার করা হচ্ছে, এর বিচার শেষদিবসেতো হবে, ইনশাআল্লাহ্। একজন মুসলিম যদি জিম্মি কাফিরকেও হত্যা করে ফেলে, তবে এ জন্য বুঝি একদম ধর্ম থেকেই বের করে দিতে হবে! সীমান্তকেন্দ্রিক ইমান এমনই হয়। যে ঘৃণা পরিলক্ষিত হচ্ছে- যেনো এসব কাফিরের রক্তমূল্য আর মুসলিমের রক্তমূল্য এক। আর এসব যখন আলিম নামক কারও কারও থেকে পাওয়া যায়, তখন সাধারণের ওপর দোষ চাপিয়ে লাভ খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাওয়াগিতের কাছে ভালো সাজার এই কসরত এবার কাজে দিলেও, বিচারদিবসে কাজে দেবে না- এ সুনিশ্চিত। অবাকের বিষয় হলো- ‘জঙ্গি’ শব্দটি আজ সবার মুখে মুখে, তাওয়াগিতের দেয়া গালি আজ বুলি হয়ে আওরানো হচ্ছে। কেউ কেউতো এঁদেরকে ইসলাম থেকেই খারিজ করে দিচ্ছেন। তাকফিরি, খারিজি আসলেই কারা- আজ প্রশ্ন বটে! একজন মুমিন, সে যদি কোনো কাফিরকে হত্যা করেই ফেলে, এই জন্য ইসলামের জাত যায় না, এই জন্য মুসলিমটি ঘৃণার পাত্র হয়ে যায় না। তাওয়াগিতের কাছে ভালো সাজা ও তাওয়াগিতের সন্তুষ্টি খোঁজার আগে একবারও কি ভাবা যায় না?!
    জাতীয়তাবাদের বিষ, এই শির্ক্ আজ আমাদের আলিম-তলাবাদের মাঝে ছড়িয়ে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে বলে। আজ ওয়ালা ও বারার মানদণ্ড পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখন যারা কতোগুলি কাফির হত্যায় ইসলামের জাত গেলো বলে চিৎকারে বুক ভাসিয়ে দিচ্ছেন, শারিয়াহ্র জন্য এদের কেনো খুঁজে পাওয়া যায় না, তাগূতের কারাগারে নির্যাতিতি সেই ভাইটির পাশে কেনো তাদের পাওয়া যায় না, কেনো পাওয়া যায় না নির্যাতিত মুসলিমের পাশে তাকে এমন ক্রোধে রক্তিম হতে, কেনো তখন সে তাওয়াগিতকে ঘৃণা করে না। কেনো আফিয়া সিদ্দিকাদের কথা কেউ মনে রাখে না, সোয়াত কিংবা ওয়াজিরিস্তানের ধ্বংস হয়ে যাওয়া মসজিদ কেনো আমাদের ঘৃণাগুলিকে আহ্বান করে না, কেনো ৫মে এতো সহজে ভুলে যাওয়া হয়, কেনো পাশের আরাকানদের নির্যাতনে ইমানি জোশ কাজে দেয় না। তখন কিন্তু ইসলামের জাত যায় না! ভয় যখন হিকমাহর চাদরে আশ্রয় নেয়, তখন এঁদের কাছে এসব প্রশ্ন করাই হলো সময়ের অপচয়।
    একবারও এই ইলমের ধারকেরা তাগূতকে মানবের শারিয়াহ্ পরিবর্তনের জন্য চাপ প্রয়োগ করলো না, এ জন্য এদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করলো না, বরং এই কাফিরগুলি হত্যার জন্য উলটো তাগূতের পক্ষে সাফাই গাচ্ছেন, কেউতো এদেরকে জীবিত ধরার আহ্বানও করেছেন- কার কাছে?! চিন্তার মান কতো নীচ হলে এমন কাজও কেউ করতে পারে! হায়! ইলমের ওয়ারিশগণ! হায়! লজ্জা, হায়!
    আসলেই- আল্ওয়ালা ওয়াল বারার চে উত্তম কোনো আকিদাহ্ নেই, মিল্লাতু ইব্রাহিমের চে উত্তম কোনো মানহাজ নেই।



    শেষকথাঃ

    কায়িদাতুল জিহাদ কেবল কোনো এক জিহাদি তানজিম নয়, এ স্বয়ং এক মানহাজ। তাওহিদ ওয়াল জিহাদের দিকে দাওয়াহ্র জন্য মিল্লাতু ইব্রাহিমে চলা এক তানজিম হলো কায়িদাতুল জিহাদ। দীর্ঘমেয়াদি এই যুদ্ধে টিকে থাকতে হলে কায়িদাতুল জিহাদকে কয়েকটি ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। এই ঘটনাও যদি আমাদের সচেতন না করে তবে ভবিষ্যতে মুজাহিদদের সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করাটা আরও দুরূহ হয়ে যাবে। এক স্বয়ংসম্পূর্ণ মানহাজের অধিকারী হিশেবে কায়িদাতুল জিহাদকে ভাবতে হবে নিছক জিহাদি তানজিম হিশেবে এর দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না, একটি বিশুদ্ধ তাওহিদি সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধই একমাত্র পথ নয়। এ পথে দাওয়াহ্, মিডিয়ার সর্বোচ্চ ব্যবহার, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার দিকটি প্রচ্ছনে আড়াল হতে পারবে না। একটি বিশুদ্ধ মানহাজকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে দরকার একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, সমৃদ্ধ Academic ভিত্তি- যার মূলে রয়েছেন হক আলিমগণ। কায়িদাতুল জিহাদ কোনো ছন্নছাড়া জিহাদি তানজিম নয়, এর রয়েছে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য, কর্মপদ্ধতি, আর দিক-নির্দেশনায় রয়েছেন নবির (সাল্লাল্লাহুয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম) ওয়ারিশগণ।
    এই ভূমিতে কায়িদাতুল জিহাদের প্রতি আমার আবেদন ও পরামর্শ-
    ১. কায়িদাতুল জিহাদের আকিদাহ্, মানহাজকে পরিপূর্ণভাবে আলিম উলামাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। সাধারণের কাছে পৌঁছাতে হবে। এটি জানা কথা এই মানহাজের বিরোধিতা আলিমগণ করবেন, ফলে জবাবগুলিও প্রস্তুত রাখতে হবে।

    ২. দেওবন্দি, আহলে হাদিসের ওপর পরগাছার মতো না থেকে এই মানহাজের পরিপূর্ণ সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার গড়ে তুলতে হবে। মূল ভাষায় রচিত কিতাব ও রিসালাহ্গুলি- হোক আরবি কিংবা ইংরেজি- বাংলায় অনুবাদ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। এ পরিকল্পনার অংশ হিশেবে আহ্লুল ইল্মদের নিয়ে একটি অনুবাদ ও সম্পাদনা পরিষদ গঠন করা যেতে পারে, যাঁদের কাজই হবে শুধু অনুবাদ ও সম্পাদনার কাজে নিয়োজিত থাকা। এভাবে ধীরে ধীরে যতো দ্রুত পারা যায়, এই মানহাজের একটি পরিপূর্ণ সমৃদ্ধ বাংলা লাইব্রেরি গঠন করতে হবে। মৌলিক রচনায়ও হাত দিতে হবে- তাকফির, গুপ্ত-হত্যা ইত্যাদির ব্যাপারে জবাবমূলক ইলমি রচনা গড়ে তুলতে হবে।

    ৩. এই লাইব্রেরিকে অনলাইন মার্কেটিং-র সর্বোচ্চ আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ব্লগ, বিভিন্ন সাইট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়াতে হবে। আলিমদের কাছে বিভিন্নভাবে পৌঁছাতে হবে।

    ৪. তাওহিদ, তাকফির, বিশেষ করে সেনাবাহিনী, তাগূতের নিরাপত্তা বাহিনী ও এই সরকারকে নির্দিষ্টভাবে তাকফিরকরণ, যুদ্ধরত কাফির দেশের নাগরিক হত্যা ইত্যাদির ব্যাপারে শুবহাত ও সংশয়গুলি জরিপ আকারে সংগ্রহ করা এবং এগুলির উত্তর প্রস্তুত করা।

    ৫. তাওহিদ, তাকফির, বিশেষকরে সেনাবাহিনী, তাগূতের নিরাপত্তা বাহিনী ও এই সরকারকে নির্দিষ্টভাবে তাকফিরকরণ, যুদ্ধরত কাফির দেশের নাগরিক হত্যা ইত্যাদির ব্যাপারে খুঁটিনাটি দলিলসমৃদ্ধ লেখনী প্রস্তুত করা, এগুলি আলিমদের কাছে পেশ করা। যেহেতু আলিমগণ এগুলির বিরোধিতা করছেন বা করবেন, তাই তাদের আপত্তি ও সংশয়ের দলিলগুলি কী কী তা জেনে নেয়া দরকার, পরে তাঁদের কাছ থেকে প্রাপ্ত আপত্তিগুলি শাস্ত্রীয়ভাবে খণ্ডন করে চূড়ান্ত হিশেবে কিতাব ও রিসালাহ্ করে প্রকাশ করা। এই ক্ষেত্রে দেওবন্দি ও আহলে হাদিসদের যেকোনো পর্যায়ের আলিমের কাছে এগুলি পেশ না করে, তাঁদের সর্বোচ্চ ইলমি ও শাস্ত্রীয় পর্যায়ের আলিমের কাছে উপস্থাপন করা যেতে পারে, যেনো তাঁদের পক্ষ থেকে এটিই সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিরোধিতা ও আপত্তি হয় এবং পরবর্তীতে আর কেউ যেনো কোনো সংশয়-আপত্তি না তুলতে পারে- আর এর ফলে এই আপত্তি সংশয়গুলির ইলমি ও শাস্ত্রীয় খণ্ডনগুলি চূড়ান্ত দলিলের মর্যাদা লাভ করবে ইনশাআল্লাহ্।
    এই আহ্নাফ দেওবন্দিদের ক্ষেত্রে ঢাকায় অবস্থিত গবেষণামূলক উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মারকাযুদ্ দাওয়াহ আলইসলামিয়া কর্তৃপক্ষের কাছে তা পৌঁছানো যেতে পারে। আর আহলে হাদিসদের যেহেতু সুনির্দিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষ নেই, তাই বড় কয়েকজন আলিমের কাছে তা পেশ করা যেতে পারে। যদিও এঁরা এই উত্তর দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করবে না, কেনো করবে না- তা না হয় সচেতন মুমিনদের ওপরই থাকলো, তবুও ভদ্রভাবে আশা করা যেতে পারে; প্রত্যেক আলিমই তাঁর ইল্মের জন্য সম্মানের পাত্র। তবে আশা করা যায়- আহ্নাফ দেওবন্দিরা ইখলাসের সাথেই দলিলভিত্তিক ভুল ধরবেন।
    আমাদের বুঝতে হবে- এই ভূমিতে তাওহিদ প্রতিষ্ঠার জন্য কিতাল হলো দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, তাই এখনই সময় সচেতন হবার। আগত প্রজন্মের হাতে এই হক মানহাজের পতাকা তুলে দেয়ার জন্য এরচে বিকল্প এখন কিছু নেই। আর এটি তীব্র আকার ধারণ করে, যখন কিনা কায়িদাতুল জিহাদের নিজস্ব কোনো প্রতিষ্ঠান নেই, তাঁরা প্রকাশ্যে দাওয়াহ্র কাজও করতে পারেন না, তাঁদের সাথে জনসাধারণের রয়েছে বিশাল দূরত্বের একটি ব্যবধান, আর যেহেতু এই ভূমিতে জিহাদ চালু করতেই হবে এবং আগত প্রজন্মকে এই তাওহিদ জিহাদের সবক দিতেই হবে, তাই এখনই সময় সমৃদ্ধ এক Academic ধারা গঠনের। এই মানহাজ যেমন শুধু তত্ত্বীয় কিছু নয়, ঠিক তেমনি তত্ত্বহীন ও বুদ্ধিবৃত্তিকহীনও নয়। এই মানহাজ ভারসাম্যের, এই মানহাজ মিতাচারের।
    Last edited by Abu Amatillah Al-Hindi; 07-11-2016, 12:30 AM.

  • #2
    মাশাআল্লাহ !
    চমৎকার ভাবে সত্য ও বাস্তবতাকে তুলে ধরলেন ভাই।
    এই লেখাটা থেকে আমাদের মানহাজ ও গেরিলাযুদ্ধের অনেক শিক্ষা রয়েছে।
    শুধু ইখলাস আর আবেগ দিয়ে জিহাদ হয় না।সাথে ইলম, প্রজ্ঞা, সমরবিদ্যা ও বাস্তবতার অভিজ্ঞতাও লাগে।
    জনবিচ্ছিন্য হয়ে শরিয়াহ কায়েম দুরহ ব্যপার ও অবাস্তব কল্পনা।

    তাই সকলের প্রতি আহবান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ও বিভিন্ন ব্লগে এই বিষয়গুলো ব্যপকভাবে ছড়িয়ে দিন। উম্মাহকে সঠিক মানহাজ শিখান। জিহাদের ফসল যেন অন্যের ঘরে না যায়। আল্লাহর জন্যে যখন জীবন দেবই তখন সঠিক মানহাজই দেই। যা দ্বারা নিজে শাহাদতের মর্যাদা পাবো আর শরিয়া কায়েমের দিগন্ত উন্মোচিত হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা এই ভুমির ও অন্যন্য ভুমির জিহাদকে সঠিক মানহাজে পরিচালিত করুন। আমীন।
    Last edited by Ahmad Faruq M; 07-06-2016, 02:28 AM.

    Comment


    • #3
      উস্তাদ, আমার এই পোস্টটি তিনবার হয়েছে। একটি রেখে বাকি দুটো ডিলিট করা কি যাবে?!

      Comment


      • #4
        খুব তথ্যবহুল একটি রচনা। আল্লাহ আপনাকে আরও মেধাশক্তি ও অনুধাবনশক্তি বাড়িয়ে দিন। আমিন।

        Comment


        • #5
          আল্লাহু আকবার!!

          খুবই বাস্তবসম্মত আলোচনা।

          Comment


          • #6
            আলহামদুলিল্লাহ! চমৎকার আলোচনা। সমস্যার সাথে সমাধানের আলোচনা আরও সুন্দর হয়েছে। আল্লাহ্* তা'আলা কবুল করুন। আমীন।

            ফোরামে বিশ্লেষণধর্মী এমন আলোচনা ভাইদের থেকে আরও আশা করছি। যাতে আমরা সকলেই উপকৃত হতে পারি।

            জাজাকাল্লাহু খাইর @ আবু আমাতিল্লাহ ভাই।
            إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِينَ ‏

            "যখন আমরা কোন সম্প্রদায়ের নিকট পৌছি যুদ্ধের জন্য, এটি তাদের জন্য দুর্বিষহ সকাল যাদেরকে পূর্বে সতর্ক করা হয়েছিল।"

            (সহিহ বুখারি, ৩৭১)

            Comment


            • #7
              গুলসানে হামলার পর থেকেই আপনার লেখার অপেক্ষায় ছিলাম।আলহামদুলিল্লাহ আজ আপনার মূল্যবান লেখাটি পেলাম।আল্লাহ আপনার এই লেখাটি কবুল করুন এবং এর দারা সবাইকে উপকৃত হওয়ার তৌফিক দান করুন।
              আখী ! আপনার প্রতি আমার একটি পরামর্শ.....
              বাংলাদেশের পবিত্র জিহাদ সবচেয়ে বেশী ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে কওমীর কিছু নামধারী আলেমের দারা। যেমন ফরিদ উদ্দিন মাসুদের এক লক্ষ আলেমের ফোতওয়া।
              আবার বর্তমানে এই ভুমিতে জিহাদের কান্ডারীগন অনেকেই যে কওমী পড়ুয়া এটা আপনি অস্বিকার করতে পারবেননা।
              কওমি মাদরাসার ছাত্র এবং উস্তাদদেরকে জিহাদ বুঝানো যতটা সহজ বাংলাদেশের অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের কাউকে অতটা সহজ নয়। কারন এই উপমহাদেশে দেওবন্দ মাদরাসা জিহাদের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে ছিল,আর কওমী মাদরাসা দেওবন্দকে অনুসরণ করে থাকে।যদিও বর্তমানে স্বয়ং দেওবন্দ তার মূল মাকসাদ থেকে বহু দূরে অবস্থান করতেছে কিন্তু আমাদের মুজাহিদ আকাবিরগনের প্রভাব এই প্রতিষ্ঠানে এখনো আছে ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও থাকবে।
              তবে খুব দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যারা দেবন্দে পড়ে তারাও জানেনা দেওবন্দের আসল ইতিহাস আর যারা দেওবন্দের বিরোধীতা করে তারাও জানেনা দেওবন্দ কি জিনিস।তাদের বিরোধিতায় আমার কোন যায় আসেনা কিন্তু যখন দেখি আমাদের মানহাযের কিছু ভাই দেওবন্দকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে তখন আমি নির্বাক হয়ে যাই ।তখন গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে বলতে মন চায়ঃ-
              পৃথিবী থেকে যখন জিহাদের আগুন প্রায় নিভে যাচ্ছিল তখন এই জিহাদের আগুনকে কারা পূনর্প্রজ্জলন করেছেন?
              মুসলিম উম্মাহর নির্যাতন দেখে দেখে জিহাদ যখন পৃথিবীর দারে দারে আশ্রয় খুজছিল তখন কারা এই জিহাদকে আশ্রয় দিয়েছিল?
              হানাফী দেওবন্দী আফগানিস্তানিরাই জিহাদকে কোলে টেনে নিয়ে ছিল।তারা নিজেরা নিঃশ্বেস হয়েছে কিন্তু জিহাদকে নিশ্বেস হতে দেয়নি। ১৫ লক্ষের অধিক মানুষ শুধু রাশিয়ার সাথে জিহাদে শহীদ হয়েছেন আর আমেরিকার সাথে কত শহীদে হয়েছেন তার কোন হিসাব নেই।
              এক ওসামার (রঃ)জন্য একটি দেশ ধংসের দিকে ঠেলে দেয়ার বিরল ভ্রাতৃত্ববোধ কারা দেখিয়ে ছিল?
              নিজেদের জীবনের চেয়ে আরবের সালাফীদের জীবনকে কারা প্রাধান্য দিয়েছিল?
              আফগানিস্তানের দেওবন্দিরাই এই বিরল মানবতা উপস্থাপন করেছিলেন।
              ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এই উপমহাদেশে দেওবন্দিরাই সর্বপ্রথম জিহাদের ডাক দিয়েছিল এবং জিহাদ করেছিল।
              জিহাদ কি জিনিস তা তারাই হিন্দুইস্থানের মানুষকে শিখিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। যার ফল আজ আফগানিস্তানের মাধ্যমে সাড়া বিশ্ব ভোগ করতেছে।
              এগুলো আমার বলার উদ্দেশ্য হল আমি আপনার লেখায় এবং আরো অনেকের লেখায় “দেওবন্দ” শব্দটিকি ভালো অবস্থানে পাইনি।
              মক্কার কিছু মানুষ খারাপ হতে পারে তাই বলে কেউ মক্কাকে জড়িয়ে তাদের উপস্থাপন করতে পারবেনা।
              ঠিক তদ্রুপ দেওবন্দের কিছু আলেম সরল পথ থেকে বিচ্যুত হতে পারে তাই বলে পুরো দেবন্দকে তাদের সাথে জড়ানো যাবেনা।
              শামের জন্য কাঁদো.....

              Comment


              • #8
                মাশাআল্লাহু তায়ালা , আলহামদুলিল্লহ , হাসাদ করারা মত লিখা।

                Comment


                • #9
                  আমার আফসোস হয়, আমারা অনেকেই আলোচনার সময় দেওবন্দী আলেম, কওমী আলেম, হানাফী আলেম, সালাফী আলেম, আহলে হাদিস আলেম ইত্যাদি শব্দগুলো বলি। আমরা কি পূর্বের উপাধিটি না বলে শুধু একজন আলেম বলতে পারি না!? বর্তমানে তো জিহাদ বিরোধিতার ক্ষেত্রে দেওবন্দী ও সালাফী সবাই সমান অবস্থান গ্রহণ করছে। আবার দেওবন্দ, সালাফী উভয় দল থেকেই কিছু কিছু আলেম জিহাদে অংশগ্রহণ করছেন। তাহলে এভাবে বিশেষ গোষ্ঠীর প্রতি ইঙ্গিত দেওয়া কতটুকু কল্যাণজনক হবে? এটা কি কুরাইশী আর অকুরাইশীর মধ্যে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দের মত নয়? এটা কি পুরোই জাহিলী জাতিয়তাবাদ নয়?
                  তাই প্রিয় ভাই! পরিস্কারভাবে বলছি, নিশ্চয়ই যে এরকম একদলীয় চেতনায় কথা বলে, অথবা উপরোক্ত উপাধিগুলো বা এধরণের নাম ও উপাধিগুলো ব্যবহার করে, নিশ্চয়ই তার মধ্যে জাহিলিয়্যাহ আছে। আর রাসূল সা: বলেছেন:« لَيْسَ مِنَّا مَنْ دَعَا إِلَى عَصَبِيَّةٍ وَلَيْسَ مِنَّا مَنْ قَاتَلَ عَلَى عَصَبِيَّةٍ وَلَيْسَ مِنَّا مَنْ مَاتَ عَلَى عَصَبِيَّةٍ » রাসূল সা:আরো বলেন: من تعزى بعزاء الجاهلية فأعضوه بهن أبيه ولا تكنوا

                  Comment


                  • #10
                    হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহ: বলেন: وَهَلْ أَفْسَدَ الدِّيْنَ إِلاَّ المُلُوْكُ ... وَأَحْبَارُ سَوْءٍ وَرُهْبَانُهَا
                    অর্থ: দ্বীনকে তো ধ্বংস করলো রাজা-বাদশা, অসৎ পন্ডিতবর্গ ও অসৎ সাধুরাই।

                    Comment


                    • #11
                      Originally posted by salahuddin aiubi View Post
                      আমার আফসোস হয়, আমারা অনেকেই আলোচনার সময় দেওবন্দী আলেম, কওমী আলেম, হানাফী আলেম, সালাফী আলেম, আহলে হাদিস আলেম ইত্যাদি শব্দগুলো বলি। আমরা কি পূর্বের উপাধিটি না বলে শুধু একজন আলেম বলতে পারি না!? বর্তমানে তো জিহাদ বিরোধিতার ক্ষেত্রে দেওবন্দী ও সালাফী সবাই সমান অবস্থান গ্রহণ করছে। আবার দেওবন্দ, সালাফী উভয় দল থেকেই কিছু কিছু আলেম জিহাদে অংশগ্রহণ করছেন। তাহলে এভাবে বিশেষ গোষ্ঠীর প্রতি ইঙ্গিত দেওয়া কতটুকু কল্যাণজনক হবে?

                      সহমত পোষণ করলাম।

                      Comment


                      • #12
                        আপনার মন্তব্যের জন্য জাযাকাল্লাহু খাইরন। ভাই, আপনার কমেন্টের কোনো জবাব আমি দেবো না। ইনশাআল্লাহ্* পরবর্তী লেখাগুলিতে আপনি উত্তর পেয়ে যাবেন। বাস্তবতা যেমন কঠিন, তারচেও কঠিন কাজ হচ্ছে বাস্তবতাকে স্বীকার করে নেয়া, আর এই কাজটি আমি একসময় করতে পারতাম না। আমি স্বীকার করতে চাই এখনও, করবোও ইনশাআল্লাহ্*।

                        Comment


                        • #13
                          জাযাকাল্লাহু খইরান। বাস্তবতাকে আমি এড়াতে পারছি না বলে ক্ষমা চাইছি ভাই, ক্ষমা করুন।
                          আর আপনার কথার মর্ম আমি বুঝি। এতোটুকুই বলে রাখি- ভুল বুঝবেন না।

                          Comment


                          • #14
                            Originally posted by Abu Amatillah Al-Hindi View Post
                            উস্তাদ, আমার এই পোস্টটি তিনবার হয়েছে। একটি রেখে বাকি দুটো ডিলিট করা কি যাবে?!
                            জি করা যাবে ইনশাআল্লাহ। করে দিচ্ছি।

                            Comment


                            • #15
                              এই পোস্টটি পিন করে রাখার আহবান জানাচ্ছি।

                              Comment

                              Working...
                              X