Announcement

Collapse
No announcement yet.

আইসিস ও আল-ক্বা’ইদাহ্*র মধ্যে মানহাজগত পার্থক্য – ৬ - মুবাহালা

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আইসিস ও আল-ক্বা’ইদাহ্*র মধ্যে মানহাজগত পার্থক্য – ৬ - মুবাহালা

    মুবাহালা (মিথ্যাবাদির উপর অভিসম্পাতের জন্য দু’আ)

    যে সব বিষয় নিয়ে মুবাহালা[1] করা হয়েছিল, তার মধ্যে একটি হল –

    আইসিস নাকি শায়খ আয-যাওয়াহিরীর কাছে জাবহাত আন-নুসরার সাথে তাদের বিরোধের বিষয়টি উপস্থাপন করেছে এবং উভয় পক্ষ (জাবহাত আন-নুসরা এবং আইসিস) বিচারক ও মধ্যস্ততাকারী হিসেবে শায়খ আয-যাওয়াহিরীকে নিয়ে সন্তুষ্ট।

    আদনানির ভাষ্য হল-এটি একটি মিথ্যা। মধ্যস্থতাকারী এবং বিচারক হিসেবে শায়খ আয-যাওয়াহিরীর কাছে বিষয়টি উত্থাপন করা হয় নি। এবং এই দাবির উপর সে মুবাহালা করেছে।

    রায় দেয়ার সময় ড. আইমান আয-যাওয়াহিরী বলেছিলেন, ‘দুই পক্ষের বার্তাই আমার কাছে এসেছে’[2] ,অর্থাৎ দুই পক্ষই বিষয়টি শাইখ আয-যাওয়াহিরী র কাছে উপস্থাপন করেছিলেন।

    শায়খ আবু আব্দুল আযিয আল-ক্বাতারি[3] এ বিষয়ে বলেছেন– “শায়খ আল-বাগদাদি এবং শায়খ আল-জুলানি, দুজনেই বলেছিলেন, ‘আমরা উভয়েই অপেক্ষা করছি শায়খ আইমানের হাফিযাহুল্লাহ পক্ষ থেকে ফায়সালা আসার।’ যদি আদেশ আসে, ‘হে শায়খ বাগদাদি, আপনি ফিরে যান যেখানে আপনি ছিলেন, দাউলাতুল ইসলামিয়্যা ইরাকের মধ্যে’ – তখন শায়খ বাগদাদি বললেন, ‘তখন (এরকম আদেশ আসলে) আমি শুনবো এবং মানবো। এবং আমার সেনারা ইরাকে ফেরত যাবে।” শায়খের আবু আব্দুল আযিয আল-ক্বাতারির এ বক্তব্যের ভিডিও ইন্টারনেটে বিদ্যমান আছে।[4]

    আর শায়খ আবু আব্দুল আযিয আল-ক্বাতারির বাগদাদির যে বক্তব্যের ব্যাপারে সাক্ষ্য দিচ্ছেন তা থেকে প্রমাণিত হয় যে আইসিস ও জাবহাত আন-নুসরার মাঝে বিরোধে তারা শায়খ আইমান আয-যাওয়াহিরীকে হাফিযাহুল্লাহ মধ্যস্ততাকারী এবং বিচারক হিসেবে গ্রহন করেছিল এবং তারা এতে সন্তুষ্ট ছিল।

    শায়খ আব্দুল আযিয আল-ক্বাতারি এ বিরোধে একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তি ছিলেন, এবং আদনানি তার “এটা আমাদের মানহাজ নয় আর কখনো হবেও না” – শীর্ষক বক্তব্য শায়খের নিরপেক্ষতার স্বীকৃতি দিয়েছে এবং একজন গ্রহনযোগ্য মুজাহিদ ব্যক্তিত্ব হিসেবে তার নাম উল্লেখ করেছে।

    একইভাবে আলেপ্পো অঞ্চলে আইসিসের তৎকালীন প্রধান শার’ঈ কর্মকর্তা উমর আল-ক্বাহ্*তানি ইন্টারনেটে প্রকাশিত তার এক অডিও বার্তায় স্বীকার করেছিল-

    ‘আবু বকর আল-বাগদাদি বলেছেন, “যদি শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরীর পক্ষ থেকে নির্দেশ আসে (দাউলাতুল ইসলামিয়্যাহ ফিল ইরাক ওয়া আশ শামকে বিলুপ্ত করে দাউলাতুল ইসলামিয়্যাহ ফিল ইরাক হিসেবে ইরাকে ফেরত যাবার), আমি আল্লাহ্*র নামে শপথ করে বলছি, দাউলাতুল ইসলামিয়্যাহ ফিল ইরাক ওয়া আশ শামের প্রতি যারা বাই’য়াহ দিয়েছে তারা সবাই তা মানতে বাধ্য। (যদি শায়খ আইমানের পক্ষে থেকে এ নির্দেশ আসে) তখন দাউলাতুল ইসলামের প্রতি বাই’য়াহ দানকারীদের বাই’য়াহ আর বৈধ থাকবে না।”

    এ অডিও বার্তার রেকর্ডিং এখনে ইন্টারনেটে বিদ্যমান আছে।[5]

    এটি আরেকটি সাক্ষ্য যা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে বাগদাদি মধ্যস্থতাকারী এবং বিচারক হিসেবে শায়খ আইমান আয-যাওয়াহিরীকে গ্রহন করেছিল এবং সন্তুষ্ট ছিল। এবং এ সাক্ষ্য এসেছে খোদ আইসিসের একজন শার’ঈ কর্মকর্তার কাছ থেকে।

    মুবাহালার ব্যাপারে দ্বিতীয় উল্লেখযোগ্য বিষয় –

    আদনানি তার “হে লোকসকল! আল্লাহর দিকে আহবানকারীর আহবানে সাড়া দাও” – শীর্ষক বক্তব্য বলেছে “…তাই সাবধান, দাউলাতুল ইসলামের (‘ইসলামিক স্টেট) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার কারনে তুমি কুফরে পতিত হবে, তুমি তা উপলব্ধি করো আর না করো।”

    অথচ মুবাহালা করার সময় আইসিসের ব্যাপারে যেসব অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে সে মুবাহালা করেছিল, তার মধ্যে ছিল – “দাউলার (আইসিসের) বিরুদ্ধে যারাই যুদ্ধ করে দাউলা তাদেরকে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত হিসেবে গণ্য করে, এবং তাদের মুরতাদ মনে করে।”

    অর্থাৎ আদনানি মুবাহালার সময় দাবি করেছিল এ অভিযোগ মিথ্যা। আদনানি দাবি করেছিল “আইসিসের” বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাকে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বলে মনে করে না। “আইসিসের” বিরুদ্ধে যারাই যুদ্ধ করে আইসিস তাদেরকে কাফির-মুরতাদ মনে করে না।[6]

    তাহলে কিভাবে “হে লোকসকল! আল্লাহর দিকে আহবানকারীর আহবানে সাড়া দাও” – শীর্ষক বক্তব্যে সে ঠিক ঐ কথাই ঘোষণা করলো যা সে ইতিপূর্বে এত প্রবলভাবে অস্বীকার করেছিলো? এবং আদনানি মুবাহালাতে তার যে প্রতিপক্ষ ছিল তার অভিযোগেরই সত্যতা প্রমাণ করলো! প্রথমে সে বললো – “যারা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমরা তাদের তাকফির করি না।” অতঃপর সে বললো, “দাউলাতুল ইসলামের (‘ইসলামিক স্টেট) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার কারনে তুমি কুফরে পতিত হবে, তুমি তা উপলব্ধি করো আর না করো।” কিভাবে সে সাহস করলো এমন একটি বিষয়ে মুবাহালা করতে যাতে সে নিজেই সাংঘর্ষিক ও স্ববিরোধী বক্তব্য দিল?


    ============
    রেফারেন্স

    [1] মুবাহালা হল এমন একটি দু’আ যা দু’জন ব্যক্তি যারা একে-অপরকে মিথ্যার দায়ে অভিযুক্ত করছে, তারা জনসম্মুখে করে। তারা প্রকাশ্যে, জনসম্মুখে এই দু’আ করে যেন দুজনের মধ্যে যে মিথ্যাবাদী তার উপর আল্লাহর শাস্তি পতিত হয়, সে যেন অভিশপ্ত হয় এবং সে যেন ধ্বংস হয়।

    [2] “সম্পর্কচ্ছেদের বার্তা”, পৃষ্ঠা ২

    [3] তিনি ছিলেন ‘জুন্দুল আক্বসা’-র প্রতিষ্ঠাতা আমীর। জুন্দুল আক্বসা – শুরতে জাবহাত আন-নুসরার অংশ ছিল, কিন্তু আইসিস ও জাবহাত আন-নুসরার মাঝে যখন ফিতনা শুরু হয় তখন তারা জাবহাত আন-নুসরা থেকে বের হয়ে আইসিস ও জাবহাত আন-নুসরা উভয় দল থেকে পৃথক, একটি স্বতন্ত্র জামা’আহ হিসেবে কাজ করা শুরু করে।

    [4] ভিডিও লিঙ্ক দেওয়া হয়েছে। যদি লিঙ্কে গিয়ে ভিডিওটি খুজে না পাওয়া যায় তাহলে সার্চ করুন এই নামে – شهادة الشيخ أبو عبد العزيز القطري في قضية تحكيم الدكتور ايمن الظواهري بين البغدادي و الجولاني – অথবা এই নামে – الشيخ أبو عبدالعزيز القطري رحمه الله يكشف كذب العدناني।

    [5] লিঙ্ক দেওয়া হয়েছে। যদি ঐ লিঙ্কে না পয়া যায় তাহলে দেখুন – https://www.youtube.com/watch?v=VoEoYUkBf7w , অথবা সার্চ করুন أعتراف شرعي الدوله ابو بكر القحطاني بتبعيتهم لظواهري অথবা عمر القحطاني شرعي جماعة الدولة

    [6] এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য পড়ুন – http://bit.ly/2a8cqVq
    আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, যেন আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদের অন্তরে ত্রাসের সৃষ্টি হয়, আর তাদেরকে ছাড়া অন্যান্যদের উপরও যাদেরকে তোমরা জান না; আল্লাহ তাদেরকে চেনেন। বস্তুতঃ যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে আল্লাহর রাহে, তা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাবে এবং তোমাদের কোন হক অপূর্ণ থাকবে না।

  • #2
    জাজাকাল্লাহ! মুবাহালা করাটাকে খারেজীরা ডালভাত বানিয়ে ফেলেছিল

    Comment


    • #3
      জাজাকাল্লাহ।
      আশ্চর্য় হয়েছিলাম দেখে যে অন্যায়ের উপর মুবাহালা করতে ওদের কলিজা কাঁপেনি।
      ইয়া রাহমান ! বিশ্বের নির্য়াতিত মুসলিমদেরকে সাহায্য করুন। তাগুতদেরকে পরাজিত করুন। আমিন।

      Comment

      Working...
      X