Announcement

Collapse
No announcement yet.

লুতফুর রহমান ও "আহলে হক কর্তৃক সৃষ্ট সংশয়ের জবাব- জিহাদ কি ভূখণ্ড দারুল আমান হওয়া বা না ø

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • লুতফুর রহমান ও "আহলে হক কর্তৃক সৃষ্ট সংশয়ের জবাব- জিহাদ কি ভূখণ্ড দারুল আমান হওয়া বা না ø


    লুতফুর রহমান ও "আহলে হক কর্তৃক সৃষ্ট সংশয়ের জবাব- জিহাদ কি ভূখণ্ড দারুল আমান হওয়া বা না হওয়ার উপর নির্ভরশীল

    ১। বিগত কিছু দিন আগে মুফতী লুৎফর রহমান ফরায়জী সাহেব এর একটা ষ্ট্যাটাস সামনে আসলো। সেখানে রেফারেন্স হিসেবে একটা লিংক ছিলঃ দারুল ইসলাম, দারুল কুফর বিষয়ে একটি প্রশ্ন-উত্তর। ঐ প্রশ্ন-উত্তরে লুৎফর ফরায়জী সাহেব লিখেছেন,
    .
    “আফগানিস্তান ছিল দারুল ইসলামের একটি প্রকৃত চিত্র। যখন মোল্লা উমরের নেতৃত্বে ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। কিন্তু পরবর্তী কুফরী শক্তির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তা আজ বিলীন হয়ে গেছে”।
    .
    সাম্প্রতিক পোষ্টে ফরায়জী সাহেব লিখেছেনঃ
    .
    “আলোচনা ও বিতর্ক বাংলা*দেশ*কে কেন্দ্র ক*রে। এখা*নে যুদ্ধ বিধ্বস্ত সি*রিয়া, মিশর ফি*লি*স্তিন*কে গু*লি*য়ে না ফেলার অনু*রোধ থাক*বে”।
    .
    উনার এই কথা থেকে বুঝা যাচ্ছে, তার ধারনা অনুযায়ী আফগানিস্তান, সিরিয়া, মিশর কিংবা ফিলিস্তিনের জিহাদগুলো ঠিকই আছে। সেগুলো শরয়ীভাবে বৈধ জিহাদ। উনার আপত্তি শুধু বাংলাদেশে জিহাদ নিয়ে।
    .
    বাস্তবে জিহাদের ব্যাপারটা এ রকমই। শরীয়াতের এই অখন্ডনীয় বিধান কেউ সরাসরি অস্বীকার করতে পারে না। তাই দূরের কোন জায়গায় জিহাদ হলে সেটার জন্য গলাবাজি করা অনেক মানুষ পাওয়া যায়। কিন্তু যখনি তা নিজে আমল করার ব্যাপার হয়ে যায়, তখন শুরু হয় নানা রকম অযুহাত আর নিত্য-নতুন শর্ত আরোপের মাধ্যমে নিজের এলাকায় জিহাদ নাজায়েজ প্রমাণ করার প্রাণান্তকর চেষ্টা।
    .
    মুফতী সাহেব এর অবগতির জন্য জানাতে চাই, আপনি ভালোভাবে খুজলে ফিলিস্তিন কিংবা আফগানিস্তানের জিহাদের বিপক্ষে ফতোয়া দেনেওয়ালা কয়েক ডজন মুফতী সাহেবকেও পাবেন!!
    .
    ২। একই পোষ্টে মুফতী লুৎফর ফরায়জী সাহেব লিখেছেনঃ
    .
    “আমরাঃ তাহ*লে আপ*নি বল*তে চান এ দে*শে সবার উপর জিহাদ ফরজ? সরকার উৎখাত এবং দেশীয় আইন আদাল*তের বিরু*দ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম করা আমা*দের উপর ফরজ?”
    .
    আবার ‘বাংলাদেশে কি জিহাদ করা ফরজ হয়ে গেছে?’ শিরোনামে এক প্রশ্ন-উত্তরে তিনি লিখেছেনঃ
    .
    “দারুল হরবে সবার উপর জিহাদ ফরজ হয়। দারুল আমান বা দারুল ইসলামে নয়। আর বাংলাদেশ দারুল ইসলাম না হলেও দারুল আমান। তাই বাংলাদেশে জিহাদ ফরজ হয়ে গেছে, শসস্ত্র জিহাদে নামতে হবে বলা বিশৃংখা সৃষ্টি আর দ্বীনের অপব্যাখ্যা ছাড়া আর কিছু নয়। বাংলাদেশ দারুল আমান। তাই এখানে শসস্ত্র জিহাদ বর্তমানে করা জায়েজ নয়”।
    .
    আশ্চর্য্যের ব্যাপার হচ্ছে, এত বড় মুফতি সাহেব (!!) হয়েও তিনি দারুল আমানে তথা বাংলাদেশে ‘সশস্ত্র জিহাদ বর্তমানে জায়েজ নয়’ – ধরনের অনেক বড় দাবী করলেও এর স্বপক্ষে একটিও দলীল পেশ করেন নি।
    .
    বরং, কোন মুসলমানকে কাফের বলা জায়েজ নয়, কাফের বলার ক্ষেত্রে উসূল এর জন্য কিছু দলীল উল্লেখ করে দায়িত্ব শেষ করেছেন!! অথচ, প্রশ্ন-উত্তরের মূল বিষয় ‘বাংলাদেশে এখন জিহাদ জায়েজ নয়’ – এই ব্যাপারে একটিও দলীল দেয়ার সুযোগ পান নাই। আজব এক মুফতী! আর আজব তার ফতোয়া!!
    .
    মুফতী সাহেবকে বলবোঃ যেকোন দাবী করলে দাবীকারীকেই দলীল দিতে হবে। তাই, বাংলাদেশে কোন কোন দলীলের ভিত্তিতে জিহাদ জায়েজ নয় – তা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করুন নতুবা দলীল-বিহীন এই দাবী পরিত্যাগ করে, এদেশের মুসলিম জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিন।
    .
    ৩। মুফতী ফরায়জী সাহেব এর কথাগুলো দেখে বুঝা যায়, তিনি এই ধারনা করছেন যে, বাংলাদেশ কিংবা অন্যান্য দেশকে দারুল হারব মনে করায় মুজাহিদ উলামাগণ এসব জায়গায় জিহাদের কথা বলছেন। যেমনঃ শাইখ জসীম উদ্দিন রাহমানী (আল্লাহ তাঁর মুক্তি ত্বরাণ্বিত করুন) এর ব্যাপারে মুফতী সাহেব একটি কাল্পণিক কথোপকথনের মধ্যে লিখেছেনঃ
    .
    “আমা*দের নেতা জসীমুদ্দীন রহমানী সশস্ত্র সংগ্রা*মের মাধ্য*মে এ কুফরী সরকার উৎখাত ক*রে ইসলামী হুকুমত কা*য়ে*মের ডাক দি*য়ে*ছেন। এ দারুল হরব*কে দারুল ইসলাম প্র*তিষ্ঠা করার ডাক”।
    .
    এই ব্যাপারে আমরা মুফতী ফরায়জী সাহেব এর জ্ঞাতার্থে বলতে চাই, মুজাহিদ উলামাগণ বর্তমানে জিহাদ ফরজে আইন হবার কারণ হিসেবে মূলতঃ দুইটি কারণ উল্লেখ করেন।
    .
    এক। বিভিন্ন মুসলিম ভূমিতে আগ্রাসী কাফির শক্তির আগ্রাসন। আর এর প্রতিরক্ষায় আক্রান্ত এলাকার মুসলিমরা অপারগ হলে কিংবা অনীহা প্রদর্শন করলে ধীরে ধীরে দুনিয়ার সকল মুসলিমদের উপর ঐ দখলকৃত ভূমি পুনরুদ্ধার করা ফরজে আইন হয়ে যায়। এই ব্যাপারে সালাফদের ইজমা উল্লেখ আছে। চার মাজহাবই এ ব্যাপারে একমত।
    .
    এই ব্যাপারে ইবনে তাইমিয়া (রঃ) বলেনঃ
    إذا دخل العدو بلاد الإسلام فلا ريب أنه يجب دفعه على الأقرب فالأقرب، إذ بلاد الإسلام كلها بمترلة البلدة الواحدة، وأنه يجب النفير اليه بلا إذن والد ولاغريم
    ‘এতে কোন সন্দেহ নেই যে শত্রু কোন কোন মুসলিম এলাকায় প্রবেশ করে, তাহলে ঐ এলাকার বাসিন্দাদের, ক্রমান্বয়ে তাদের নিকটবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের উপর তার প্রতিরক্ষা করা ওয়াজিব হয়ে যায়, কারণ মুসলিমদের ভুমিগুলো হলো একটি ভূমির মতো। তাই এক্ষেত্রে পিতা-মাতা অথবা ঋণদাতার নিকট থেকে অনুমতি ছাড়াই (জিহাদে) বের হয়ে যাওয়া ওয়াজিব। (ফাতাওয়া আল কুবরা, ৪/৬০৮)
    .
    আর এটা তো সবাই জানে যে, কর্ডোভা থেকে শুরু করে দিল্লী, ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান ইত্যাদি কয়েক ডজন মুসলিম ভূমি কাফিররা দখল করে নিয়েছে। এগুলো এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এই ব্যাপারে আপনি মুজাহিদ শাইখ আব্দুল্লাহ আজ্জাম (রঃ) রচিত ‘মুসলিম ভূমির প্রতিরক্ষা’ বইটি দেখতে পারেনঃ লিংকঃ https://archive.org/details/Kklkkkk
    .
    যদি আপনি আপনার দাবীতে সত্যবাদি হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি এখন প্রমাণ করেন যে, একমাত্র ইসরাইল ছাড়া অন্য কোন দেশে চার মাজহাবের ঐক্যমতের এই ফতোয়ার উপর আমল জায়েজ নয়।
    .
    দুই। কোন শাসকের মধ্যে সুষ্পষ্ট কুফরী দেখা গেলে (কুফরুন বাওয়াহ) তাকে অপসারণ করা, তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথাও উলামাদের ইজমাতে উল্লেখ আছে।
    .
    কোন শাসকের মধ্যে প্রকাশ্য কুফরী দেখলে করণীয় এর ব্যাপারে ইজমা উল্লেখ করে ইমাম নববী (রঃ) বলেছেন, قال القاضي عياض أجمع العلماء على أن الإمامة لا تنعقد لكافر وعلى أنه لو طرأ عليه الكفر انعزل قال وكذا لو ترك إقامة الصلوات والدعاء إليها قال وكذلك عند جمهورهم البدعة قال وقال بعض البصريين تنعقد له وتستدام له لأنه متأول قال القاضي فلو طرأ عليه كفر وتغيير للشرع أو بدعة خرج عن حكم الولاية وسقطت طاعته ووجب على المسلمين القيام عليه وخلعه ونصب أمام عادل أن أمكنهم ذلك فإن لم يقع ذلك الا لطائفة وجب عليهم القيام بخلع الكافر ولا يجب في المبتدع إلا إذا ظنوا القدرة عليه فإن تحققوا العجز لم يجب القيام وليهاجر المسلم عن أرضه إلى غيرها ويفر بدينه

    “কাযী ইয়াজ (রঃ) বলেন, ‘এ ব্যাপারে আলেমদের ইজমা রয়েছে যে, কাফিরের হাতে নেতৃত্ব দেয়া যাবে না; সুতরাং তার থেকে যদি কুফরী প্রকাশ পায়, তাহলে তাকে অপসারণ করতে হবে।’” ………
    .
    কাযী ইয়াজ (রঃ) আরো বলেন, “সুতরাং তার থেকে কোন কুফরী বা শরীয়াহ পরিবর্তন বা বিদয়াত প্রকাশ পেলে, সে তার দায়িত্ব থেকে খারিজ হয়ে গেল এবং তার আনুগত্যের হক সে হারালো; আর এ অবস্থায় মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব যে, তারা তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে, তাকে অপসারণ করবে এবং একজন ন্যায়পরায়ণ শাসক নিয়োগ করবে যদি তাদের পক্ষে সম্ভব হয়। আর যদি একদল মানুষ ছাড়া অন্য কারো পক্ষে এটি সম্ভব না হয় তবে ঐ দলটিকে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং ঐ কাফিরকে অপসারণ করতে হবে। তবে বিদ’আতীর ক্ষেত্রে এটি আবশ্যক নয় যদি না তারা মনে করে যে তারা এটি করতে সক্ষম। অর্থাৎ যদি সত্যিই অক্ষমতা বিরাজ করে তাহলে বিদ্রোহ করা আবশ্যক নয়, তবে মুসলমানদেরকে ঐ এলাকা থেকে অন্য কোথাও তাদের দ্বীন নিয়ে হিজরত করতে হবে।” (সহীহ মুসলিম বি শারহুন নববী, কিতাবুল ইমারাহ ১২/২২৮)
    .
    আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী আল হানাফী (রঃ) বলেছেনঃ وقال الداودي الذي عليه العلماء في أمراء الجور أنه إن قدر على خلعه بغير فتنة ولا ظلم وجب وإلا فالواجب الصبر وعن بعضهم لا يجوز عقد الولاية لفاسق ابتداء فإن أحدث جورا بعد أن كان عدلا اختلفوا في جواز الخروج عليه والصحيح المنع إلا أن يكفر فيجب الخروج عليه

    দাউদী (রঃ) বলেছেন, আলেমরা এ ব্যাপারে একমত যে, শাসক জালেম হলে যদি সামর্থ থাকে ফিতনা ও জুলুম ছাড়া তাকে অপসারণ করার তাহলে তা ওয়াজিব। তা না হলে ধৈর্য্য ধরা ওয়াজিব। অন্যরা বলেছেন, ফাসিক ও বিদয়াতীর কাছে নেতৃত্ব দেয়া যাবে না। যদি সে প্রথমে ন্যায়পরায়ণ থাকে ও পরে বিদয়াত ও জুলুম করে তবে তার অপসারণ ও বিরুদ্ধাচারণের ব্যাপারে মতভেদ হয়েছে। সঠিক মত হচ্ছে, তা না করা যতক্ষণ না সে কুফরী করে। তখন তাকে অপসারণ ও তার বিরুদ্ধাচারণ করা ওয়াজিব হয়ে যায়। (উমদাতুল ক্বারী শরহে সহীহুল বুখারী, কিতাবুল ফিতান, ৩০/১১০)
    .
    আর এই ইজমা ইবনে হাজার (রঃ) বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, এ ব্যাপারে ইবনে বাত্তাল (রঃ), ইবনে তীন (রঃ), দাউদী (রঃ) প্রমুখও ইজমা উল্লেখ করেছেন। ইবনে হাজার (রঃ) বলেন,
    وملخصه أنه ينعزل بالكفر إجماعا ” فيجب على كل مسلم القيام في ذلك، فمن قوي على ذلك فله الثواب، ومن داهن فعليه الإثم، ومن عجز وجبت عليه الهجرة من تلك الأرض

    “সারমর্ম হলো তাকে তার কুফরীর কারণে অপসারণ করতে হবে, এ ব্যাপারে ইজমা রয়েছে। সুতরাং প্রতিটি মুসলমানকে এই উদ্দেশ্যে রুখে দাঁড়াতে হবে, যার এই কাজ করার শক্তি আছে তার জন্য রয়েছে সওয়াব, যে এটা অবহেলা করবে সে গুনাহগার হবে, আর যে এতে অসমর্থ তার জন্য ওয়াজিব হবে ঐ এলাকা থেকে হিজরত করা।” (ফাতহুল বারী, কিতাবুল ফিতান, ১৩/১২৩)
    .
    আর আপনি নিজে বাংলাদেশকে ‘দারুল আমান’ মনে করেন, যে ‘দারুল আমানের’ সংজ্ঞা আপনি এভাবে দিয়েছেন যে,
    .
    “অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও স্বীয় ধর্ম পালনে স্বাধীন। কোন ধর্ম পালনেই রাষ্ট্র পক্ষ থেকে কোন বিধি-নিষেধ নেই। তবে আইন চলে মানবরচিত আইন বা কুফরী আইন। তাহলে উক্ত রাষ্ট্রের নাম হবে দারুল আমান”।
    .
    অর্থাৎ, আপনি নিজেও সুস্পষ্টভাবে স্বীকার করেন যে, বাংলাদেশ মানবরচিত কুফরী আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। এর এর বিভিন্ন কুফরী চক্ষুস্মান সকলের কাছেই সুস্পষ্ট। এ রকম স্পষ্ট কুফর বা কুফরুন বাওয়াহ এর ক্ষেত্রে উলামাগণ ইজমা উল্লেখ করেছেন যে, এ রকম শাসকদেরকে হটাতে হবে। এই ব্যাপারে শাইখ আব্দুল ক্বাদির ইবনে আব্দুল আজিজ (ফাঃ আঃ) রচিত ‘আল উমদাহ ফিল ইদাদ আল উদ্দাহ’ কিতাবের ‘জিহাদের ব্যাপারে মৌলিক নীতিমালা’ অধ্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা আছে। বইটির লিংকঃ
    .
    http://shamela.ws/rep.php/book/3988
    .
    যদি আপনি আপনার দাবীতে সত্যবাদি হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি এখন প্রমাণ করেন যে, একমাত্র ইসরাইল রাষ্ট্র ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোন দেশে উপরে উল্লেখিত ইজমার উপরও আমল জায়েজ হবে না।
    .
    উপরুক্ত বইগুলো পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন যে, বাংলাদেশ দারুল হরব নাকি দারুল আমান এর উপর ভিত্তি করে আমাদের উপর জিহাদ ফরজ হয় না। মুজাহিদ উলামাগণ ‘দ্বার’ এর হুকুম এর উপর ভিত্তি করে জিহাদের ফরজিয়াতের কথা বলেন না।
    .
    বরং বাস্তব সত্য হচ্ছে এই যে, মুসলিম ভূমির প্রতিরক্ষার ফরজটি সকল প্রকার দ্বারের অধিবাসীদের জন্যই ইজমা অনুযায়ী ফরজ হবে। আর শাসক ‘কুফরুন বাওয়াহ’ করলে সেটা দারুল ইসলাম হলেও তাকে অপসারণ করা ওয়াজিব হবে। এগুলো উম্মাতের উলামায়ে কেরামের ইজমা।
    .
    শাইখ জসীম উদ্দিন রাহমানী (ফাঃ আঃ)-ও বিভিন্ন বয়ানে উপরুক্ত কারণগুলো উল্লেখ করে জিহাদ ফরজ এর কথা এ দেশের মানুষকে বারংবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এর বাইরেও তিনি শাতিমুর রাসুল (সাঃ)-দের হত্যা করার জন্যও মুসলিম যুবকদেরকে উৎসাহিত করেছেন। যা সালাফে সালেহীনদের বক্তব্য ও আ’মলের সাথে সম্পূর্ণভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আল্লাহ শাইখকে দুনিয়া ও আখিরাতে যথাযথ প্রতিদান দিন। আর শাতেমুর রাসুল (সাঃ)-দেরকে হত্যা করার জিহাদকে আপনি নিজেও অস্বীকার করবেন বলে, আমাদের মনে হয় না। কারণ এটাও জমহুর উলামাদেরই মতামতের উপর আ’মল।
    .
    উপরুক্ত কারণগুলোর ভিত্তিতে মুজাহিদ আলেমগণ বাংলাদেশসহ সকল দেশে সশস্ত্র জিহাদ ফরজ বলে উল্লেখ করেন। আর দলীল হিসেবে আমরা উলামাদের ইজমার কথা উল্লেখ করলাম। এবার আপনি আপনার দলীল এনে প্রমাণ করে দিন যে, বাংলাদেশে সশস্ত্র জিহাদ জায়েজ নয় – যদি আপনি সত্যবাদি হয়ে থাকেন।
    .
    ৪। যদিও আমরা মনে করি, বাংলাদেশ দারুল আমান নাকি দারুল কুফর এর উপর ভিত্তি করে আমাদের উপর জিহাদ ফরজ হয় না, কারণ মুজাহিদ উলামাগণ এই রকম বলেন না। তারপরও আপনার ‘দারুল আমান’ নিয়ে আলোচনার ব্যাপারে কিছু কথা আছে। দারুল আমানের সংজ্ঞা হিসেবে আপনার দেয়া রেফারেন্স কামুসুল ফিক্বহ-৩/৩৯৯-তে উল্লেখ আছেঃ
    .
    অর্থাৎ, “দারুল আমান ঐ এলাকা, যেখানে মূল ক্ষমতা (রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা) কাফিরদের (গাইরে মুসলিম) হাতে থাকে, কিন্তু মুসলিমরা নিরাপদ থাকে। মুসলিমরা দ্বীনি দাওয়াতের ফরজিয়াত আদায় করতে পারে, আর এমন সব ইসলামী আহকাম পালন করতে পারে যেগুলো পালন করার জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দরকার হয় না”।
    .
    আপনার রেফারেন্সে দেয়া এই সংজ্ঞা অনুযায়ীও আপনাদের মতামত অনুযায়ী বাংলাদেশ ‘দারুল আমান’ হয় না। কারণঃ
    .
    ক) রাষ্ট্রীয় পরিচালনার ক্ষমতা কাফিরদের (গাইরে মুসলিম) হাতে থাকে।
    .
    - আপনার মতে কি হাসিনা-খালেদারা ও তাদের সরকারগুলো কাফির-মুরতাদ তথা গাইরে মুসলিম? আপনি কি এটা মনে করেন? এরকম কিছু তো আপনাদের তরফ থেকে আমরা কখনো শুনিনি।
    .
    - যদি হাসিনা-খালেদা তথা এই শাসকগোষ্টী গাইরে মুসলিম (মুরতাদ) হয়ে থাকে, তাহলে তাদের আনুগত্যের দাবী কেন করে থাকেন?
    .
    - যদি হাসিনা-খালেদা তথা এই শাসকগোষ্টী গাইরে মুসলিম (মুরতাদ) হয়ে থাকে, তাহলে তাদের অপসারনের চেষ্টা কেন করেন না, যা ইজমা অনুযায়ী ওয়াজিব?
    .
    খ) ‘কিন্তু মুসলিমরা নিরাপদ থাকে’।
    .
    বাংলাদেশে সকল মুসলিমরা কি বর্তমানে নিরাপদ আছে কিংবা পূর্বে ছিল?
    .
    - হ্যাঁ, ঐ সকল মুসলিমরা নিরাপদ যারা ভুলেও এদেশে শরীয়াত প্রতিষ্টার কথা বলে না। এদেশের কুফরী সংবিধান পরিবর্তনের কথা বলে না। ফরজে আইন জিহাদে শরীক হবার আহবান জানায় না - সেটা হোক আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন কিংবা অন্য কোন এলাকায়।
    .
    - যদি আপনি মনে করেন এখানে মুসলিমরা নিরাপদ, তাহলে আপনি আফগানিস্তান কিংবা সিরিয়া কিংবা ফিলিস্তিনের জিহাদের পক্ষে বয়ান দিয়ে আল্লাহ্*র নির্দেশ অনুযায়ী মানুষকে তাহরীদ করুন তো দেখি… তাহলে হয়তো বুঝে যাবেন – এটা কেমন দারুল আমান!!
    .
    - এখানে ঐ সকল মুসলিমরা কখনো নিরাপদ নয় যারা প্রচলিত কুফরী আইন পরিবর্তন করে শরীয়াত কায়েম করার কথা বলেন, যারা কুফরী সংবিধান পরিবর্তন করার কথা বলেন। যদি আপনি মনে করেন এখানে মুসলিমরা নিরাপদ, তাহলে এদেশের কুফরী আইন ও শাসনকে পরিষ্কার কুফরী উল্লেখ করে বয়ান দিয়ে আল্লাহ্*র নির্দেশ অনুযায়ী মানুষকে এই কুফর পরিত্যাগ করা আহবান করেন তো দেখি… তাহলে হয়তো বুঝে যাবেন – এটা কেমন দারুল আমান!!
    .
    শুধু ফিকহী ইখতেলাফী বিষয়ে মাঠ গরম করে সস্তা বাহবা পেলেও পেতে পারেন, কিন্তু বাস্তবে এই ভূমি কি দারুল আমান নাকি দারুল কুফর – তার হাকীকত বুঝতে পারবেন না।
    .
    গ) ‘মুসলিমরা দ্বীনি দাওয়াতের ফরজিয়াত আদায় করতে পারে’।
    .
    - হ্যাঁ যদি শুধু নামাজ, রোযা, জিকির আর ইখতেলাফী মাসআলা নিয়ে বাহাসের দাওয়াতের কথা বলেন, তাহলে ঠিক আছে।
    .
    কিন্তু আপনি তাওহীদ আল হাকিমিয়া তথা আল্লাহ্*র জমিনে আল্লাহ্*র আইন বাস্তবায়ন, আল্লাহ্*র দেয়া হুদুদগুলো বাস্তবায়নের দাওয়াত দেন, আল্লাহ্*র দেয়া হারামগুলো বাতিল করে শরীয়াতের আহকামগুলো বাস্তবায়নের দাওয়াত দেন, তাহলে বুঝতে পারবেন – এটা কেমন দারুল আমান!!
    .
    - হ্যাঁ, অনেকেরই মনোরঞ্জনের বিষয় ‘ফিকহী ইখতেলাফ’ নিয়ে বাহাস করলে আপনি হবেন সমাজের অনেকের চোখে ‘হিরো’। কিন্তু এই ‘হিরো’ আবার ‘জিরো’ হয়ে যাবেন যদি কিছুদিন আল্লাহ্*র দেয়া শরীয়াতের কায়েমের দাওয়াত দিতে থাকেন। আল্লাহর দেয়া ফরজ বিধান ক্বিতালের ব্যাপারে মানুষকে তাহরীদ করতে থাকেন। তখন বুঝতে পারবেন, এদেশে দ্বীনি দাওয়াতের ফরজিয়াত আদায় করা যায় কিনা?
    .
    নাকি আপনি মনে করেন, শুধু নামাজ, রোযা, জিকির আর ইখতেলাফী মাসআলা নিয়ে বাহাসের দাওয়াত দিলেই এই ফরজিয়াত আদায় হয়ে যায়??
    .
    ৫। একইভাবে আপনি দারুল আমানের সংজ্ঞা লিখেছেনঃ
    .
    “দারুল আমান কাকে বলে? যে সকল রাষ্ট্রে মুসলিমগণ স্বাভাবিকভাবে স্বীয় ধর্ম পালনে সক্ষম। চাই তারা সংখ্যাগরিষ্ট হোক বা সংখ্যালঘিষ্ট। কিন্তু ইসলামের শাস্তির বিধান প্রয়োগ করতে সক্ষম নয়। তবে দ্বীন প্রচার ও পালনে স্বাধীন। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও স্বীয় ধর্ম পালনে স্বাধীন। কোন ধর্ম পালনেই রাষ্ট্র পক্ষ থেকে কোন বিধি-নিষেধ নেই। তবে ইসলামী আইন উক্ত রাষ্ট্রে প্রচলিত নয়। আইন চলে মানবরচিত আইন বা কুফরী আইন”।
    .
    “বর্তমানে পৃথিবীর অধিকাংশ রাষ্ট্রই দারুল আমান। এমনকি আমেরিকা ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোও। কারণ সেখানে সকল ধর্মাবলম্বীরাই স্বীয় ধর্ম পালনে ও প্রচারে স্বাধীন। রাষ্ট্র পক্ষ থেকে কোন প্রকার বিধি-নিষেধ নেই। যদিও সরকারী আইন ইসলামী নয়। এ হিসেবে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ অধিকাংশ রাষ্ট্রই দারুল আমানের অন্তর্ভূক্ত”।
    .
    বিদগ্ধ মুফতী সাহেব!! খেয়াল করে দেখুনঃ
    .
    ক) মুসলিমগণ স্বাভাবিকভাবে স্বীয় ধর্ম পালনে সক্ষম।
    .
    হ্যাঁ, আমরা অনেকগুলো ইবাদত স্বাভাবিকভাবে করতে পারি বটে কিন্তু আমরা শরীয়াতের বর্ণিত সকল ইবাদত পালন করতে পারি না। তাই, এদেশে মুসলিমরা স্বাভাবিকভাবে স্বীয় ধর্ম পালনে সক্ষম না।
    .
    - আপনি কি এ সকল মুরতাদ সরকারকে জানিয়ে শুধু একাকী আফগানিস্তানে জিহাদে শরীক হবার জন্য যেতে পারবেন? এই সরকারগুলো কি আপনাকে যেতে দিবে? এই জিহাদে শরীক হওয়া কি ইবাদতের মধ্যে সামিল নয়? এটা কি ধর্ম পালনের মধ্যে পড়ে না? নাজ্জাসীর রাজ্য থেকে তো সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) চাইলে গিয়ে রাসুল (সাঃ) ও কাফিরদের মধ্যে সংগঠিত জিহাদে শরীক হতে পারতেন। সেখানে এই ইবাদতে বাঁধা ছিল বলে মনে হয় না।
    .
    - আপনি কি আপনার বয়ানে, আলোচনায় সিরিয়া, আফগানিস্তান, মিশর, ফিলিস্তিনের জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর (যেগুলোকে আপনার কাছে শরীয়াতসম্মত মনে হয়) আলোচনা করতে পারবেন? আপনি কি সাধারণ জনগণকে ও আপনার ছাত্রদেরকে ঐসব ময়দানে ক্বিতালের শরীক হবার জন্য জন্য উদ্ভুদ্ধ করতে পারবেন? মুমিনদেরকে ক্বিতালের জন্য উদ্ভুদ্ধ করা কি একটা ইবাদত নয়? এটাও কি ধর্ম পালন নয়?
    .
    - আপনি কি এদেশে শরীয়াত কায়েমের জন্য আহবান জানাতে পারবেন? এই কুফরী সংবধানকে কুফরী উল্লেখ করে এ থেকে সাধারণ জনগণকে দূরে সরে যেতে বলতে পারবেন? মানুষকে এই হক্বের দাওয়াত দেয়া কি ইবাদতের মধ্যে সামিল নয়? এটা কি ধর্মের একটা অংশ নয়?
    .
    নাকি আপনার মতে, দারুল আমানে শরীয়াত কায়েমের চেষ্টা করাও জায়েজ নয়?? যদি দারুল আমানে শরীয়াত কায়েমের চেষ্টা করাও জায়েজ না থাকে, তাহলে কিন্তু আপনি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এটাই বলছেন, যে একমাত্র ইসরাইল রাষ্ট্র ছাড়া দুনিয়ার অন্য কোথাও আল্লাহ্*র শরীয়াত কায়েমের চেষ্টা করা জায়েজ নেই!!
    .
    সুবহানাল্লাহ, যদি আপনি এই ফতোয়া দেন, তাহলে শয়তান হয়তো খুশী হয়ে আপনাকে গুরু মেনে নিবে! শয়তানের জন্য এত বড় খেদমত হয়তো দুনিয়ার আর কেউ করতে পারবে না!!!
    .
    খ। ‘তবে দ্বীন প্রচার ও পালনে স্বাধীন’।
    .
    না, বরং বাস্তবতা হচ্ছে দ্বীনের কিছু কিছু বিধান প্রচার ও পালনে স্বাধীন যেগুলো এই কুফরী শাসন ব্যবস্থার বিপক্ষে যায় না, যেগুলো এই কুফরী শাসন ব্যবস্থা নিজের জন্য ঝুকিপূর্ণ মনে করে না। কিন্তু দ্বীনি অনেক বিধানের প্রচার ও পালনই এই মুরতাদ সরকার সহ্য করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা।
    .
    ৬। আপনি লিখেছেন,
    “নী*রিহ বেসাম*রিক বিধর্মী হত্যার নাম কিছু*তেই জিহাদ নয়। প*রিস্কার সন্ত্রাস”।
    .
    আপনি কাদেরকে নিরীহ দাবী করেছেন তা পরিষ্কার নয়। আপনি কিঃ
    .
    - শাতেমুর রাসুল (সাঃ)-দেরকে নিরীহ বলছেন?
    - আপনি কি আগ্রাসী আমেরিকান কুফফারদেকে নিরীহ বলছেন?
    - আপনি কি ন্যাটো জোটভূক্ত ক্রুসেডার দেশগুলোকে নিরীহ বলছেন?
    .
    আপাতত আপনার এই ‘নিরীহ বেসামরিক’দের ব্যাপারে শাইখ সালিহ আল উসাইমিন (রঃ) এর ছোট্ট একটা আলোচনা শুনতে বলবো। এর লিংক হচ্ছে এইঃ www.youtube.com/watch?v=bPVpv_afBHA
    .
    আল্লাহ সবাইকে হক্বকে হক্ব হিসেবে দেখার, এবং তা অনুসরণ করার তৌফিক দান করুন। আল্লাহ সবাইকে বাতিলকে বাতিল হিসেবে দেখার এবং তা পরিত্যাগ করার তৌফিক দান করুন।
    .
    [সংগ্রহীত]
    সম্পূর্ণ লেখাটির লিঙ্ক - http://tinyurl.com/Radd-e-Luthfor-Forayji
    সবাই সংরক্ষন করে রাখুন

    https://www.facebook.com/PleaseGiveP...309818963720:0

  • #2
    জাযাকুমুল্লাহ ! এভাবেই দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে হবে ।
    দলিল ভিত্তিক আলোচনা করে এভাবেই এদের মুখোস সকলের সামনে উন্মোচন করে দিতে হবে
    ইয়া রাহমান ! বিশ্বের নির্য়াতিত মুসলিমদেরকে সাহায্য করুন। তাগুতদেরকে পরাজিত করুন। আমিন।

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহ! এই লোকটার অনেকে প্রশংসা করতো; আমার কখনোই এর প্রতি আস্থা আসতো না। এখন তার আসল চেহারা আরও ক্লিয়ার হলো।
      বর্বর হিংস্র হায়েনার বিষাক্ত থাবায় আমাদের মা-বোন আর ভাইদের রক্তে ভেসে যাচ্ছে আমাদেরই নিজ ভূমি। আর তুমি........তবুও তুমি বসে থাকবে ? জেনে রেখো! তোমাকে অবশ্যই এ নির্যাতিত উম্মার রবের সামনে দাঁড়াতে হবে।

      Comment


      • #4
        জাযাকাল্লাহ আখি ! এদের গোমর ফাঁস করার জন্য ।
        আপনার লেখালেখিতে এ’তেদাল রয়েছে । বিজয় আমাদেরই হবে বিইযনিল্লাহ। চালিয়ে যান ইনশাআল্লাহ।
        কাঁদো কাশ্মিরের জন্য !..................

        Comment

        Working...
        X