Announcement

Collapse
No announcement yet.

জঙ্গিবাদ দমনে মিডিয়া: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জঙ্গিবাদ দমনে মিডিয়া: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ

    জঙ্গিবাদ দমনে মিডিয়া: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ




    ১৯৮৮ সালে এলেক্স স্কিমিড এবং এলবার্ট জংম্যান তাদের এক গবেষণাতে আতঙ্কবাদের (যেটি প্রচলিত অর্থে জঙ্গিবাদ) ১০৯টি সংজ্ঞা লিপিবদ্ধ করেন। পরবর্তীতে সেই ১০৯টি সংজ্ঞা থেকে জঙ্গিবাদের ২২টি উপাদান পাওয়া যায়। একই গবেষণাতে এই ২২টি উপাদানের মধ্যে কয়েকটি উপাদানের পুনরাবৃত্তির হার বাকিগুলোর চেয়ে বেশি ছিল। যেমন: ‘রাজনৈতিক বক্তব্য’, ‘জন-প্রচারণা’, ও ‘ভীতি প্রদর্শন’। এ তিনটি কৌশল মূলত জঙ্গিবাদের ‘প্রচারণা কৌশল’-এর ফলাফল। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটেও আমরা দেখি, বিভিন্ন সময়ে জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীগুলো উল্লেখিত কৌশলগুলোর আশ্রয় নিয়েছে এবং বেশ সাফল্যের সঙ্গেই তারা যে ধরনের প্রচার চায়, সেটি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
    বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ক্ষেত্রেও মূলত এ তিনটি উপাদানই জঙ্গিবাদের ব্যাপারে প্রচারিত প্রতিবেদনগুলোর মূল উপকরণে পরিণত হয়েছে। ব্রিটেনের জঙ্গিবাদ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ পল উইলকিনসনের ধারণায় ব্যাপারটি গণমাধ্যমের জন্য ‘উভয় সংকট’-এর মতো। একদিকে জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীগুলোর বক্তব্য বা তাদের কর্মকাণ্ড নিজেদের পাঠকের কাছে তুলে ধরলে উগ্রবাদীদের একধরনের প্রচারণা দিয়ে দেওয়া হয়, অন্যদিকে জঙ্গিবাদ দমন বা এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে যদি এ-সংক্রান্ত বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়, তাহলে সেটি সরাসরি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিপরীতে যায়।
    বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর জন্য এই সংকট সম্পূর্ণ নতুন ধরনের এবং এ কারণেই অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশিত খবরগুলো অজ্ঞাতসারেই জঙ্গিবাদী মতবাদের প্রসারের পক্ষে ব্যবহৃত হয়ে যাচ্ছে। এর মূল কারণ হল আমাদের গণমাধ্যমগুলো এখন পর্যন্ত জঙ্গিবাদকে সঠিকভাবে ‘ফ্রেমিং’ করে উঠতে পারেনি, অর্থাৎ জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড কী উদ্দেশ্য নিয়ে সাধিত হচ্ছে, সেটির সম্পূর্ণ দিকগুলো জনমানসে উন্মোচিত হতে পারেনি এবং মিডিয়ার এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলো শুধু বিভিন্ন ঘটনা ও জঙ্গিবাদী হামলাগুলোই আলোকপাত করছে। এতে করে যা হচ্ছে তা হল, যে ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য ও জনমানসে যে পরিবর্তন জঙ্গিদের আশানুরূপ, শুধু সেটিই প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে মোটা দাগে।
    উদাহরণস্বরূপ আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশিত ‘হিট লিস্ট’ বা হুমকিপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের তালিকা নিয়ে করা প্রতিবেদন দেখতে পাই। মূলধারার অধিকাংশ মিডিয়াতে উল্লেখিত লিস্টের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া সত্ত্বেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা সরাসরি উল্লেখ করে দেওয়া হয়। চলমান প্রেক্ষাপটে এ ধরনের ঘটনা নিয়ে করা প্রতিবেদনে নাম আসা ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, সামাজিক সম্মান এবং নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
    এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে সরাসরি হুমকিগুলোর বক্তব্য তুলে ধরার মাধ্যমে মূলত জঙ্গিবাদে টার্গেট ব্যক্তিবর্গের বা সমাজের একটি অংশে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। জঙ্গিবাদী দলগুলোর দেওয়া হুমকির তালিকাগুলোর উৎস এবং সত্যতা বিবেচনা করার সুযোগ যেহেতু সীমিত, সে ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রতিবেদনগুলোর মাধ্যমে তৈরি হওয়া ফলাফল এবং সামাজিক মতামত বিবেচনায় নেওয়ার কথা ভাবা উচিত। এ ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই, চলমান জঙ্গিবাদী হামলাগুলোর মাধ্যমে সমাজের মধ্যে একধরনের ভীতি এবং সেলফ সেন্সরশিপ তৈরি হয়েছে, যেটি মৌলবাদী দলগুলোর একটি প্রকাশ্য লক্ষ্য ছিল।
    এ ক্ষেত্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ব্যক্তির নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হওয়া বা একধরনের নেতিবাচক প্রচারণার মধ্যে দিয়ে পড়ে গিয়ে সামাজিক অবস্থান নিয়ে সমস্যা তৈরি হওয়া। প্রায় প্রতিটি হিট লিস্টে অনেককেই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ‘নাস্তিক’ বা অন্যান্য নেতিবাচক বিশেষণ দিয়ে আখ্যায়িত করা হয়েছে, যেগুলো উগ্রবাদীদের ধারণা সমর্থন করে এবং প্রতিবেদনগুলোতে নেতিবাচক বিশেষণসহ নাম আসার কারণে নানা সামাজিক সমস্যার মুখোমুখি হওয়ারও সম্ভাবনা তৈরি হয়। বলাই বাহুল্য, সত্যতা নিশ্চিত না হওয়া সংবাদের এই অনুশীলনে অনেক নিরপরাধ ব্যক্তির জীবন নিয়েও সংকট তৈরি হয়, যদি তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রতিবেদনে ব্যবহার করা হয়।
    একই ধরনের ভুল লক্ষ্য করা যায় জঙ্গিবাদী ঘটনাগুলোর রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রেও। অনেক মিডিয়া ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে নিহতদের লেখালেখি বা কর্মকাণ্ড নিয়ে অনুসন্ধিৎসু হয়ে উঠেছিল, ফলে জঙ্গিবাদের প্রতি সহনশীল বা সহানুভূতিসম্পন্ন মানুষের কাছে হত্যাগুলোর একধরনের গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে দেওয়া হত্যার দায় স্বীকারের বিবৃতিগুলোর বিস্তারিত বক্তব্য গণমাধ্যমে আসছে, যেটি মূলত জঙ্গিবাদী প্রোপাগান্ডার পক্ষেই যাচ্ছে। এবং লক্ষণীয় হল, প্রথমে উল্লেখিত জঙ্গিবাদের তিন কৌশলের সঙ্গে এসব ঘটনা অত্যন্ত সাযুজ্যপূর্ণ।
    এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের দুটি বিষয় করণীয় হতে পারে। প্রথমটি হল, জঙ্গিবাদের বিস্তারিত এবং মূল বক্তব্য প্রকাশ না করে শুধু মাত্র সারাংশ প্রকাশ এবং হুমকির লক্ষ্য ব্যক্তিবর্গের নাম, বর্তমান অবস্থানসহ সব ধরনের তথ্য গোপনীয় রাখা। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ছদ্মনাম বা মূল নামের সারাংশ ব্যবহার করা যেতে পারে। এবং দ্বিতীয়টি হল, যে কোনো ধরনের জঙ্গিবাদী কনটেন্ট প্রতিবেদনে ব্যবহার করার সময়ে লক্ষ্য রাখা যে এতে করে কেউ আগ্রহী হয়ে সেই কনটেন্টের মূল উৎস খুঁজতে চাইলে যাতে ব্যর্থ হয়।
    এ ছাড়াও জঙ্গিবাদ সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের আত্মজিজ্ঞাসু হয়ে দুটি প্রশ্ন করা উচিত। প্রথমটি হল, জঙ্গিবাদ সংশ্লিষ্ট কোনো ধরনের বার্তা তারা পৌঁছে দিচ্ছে। দ্বিতীয়টি হল, জঙ্গিবাদ সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনগুলো কোন ধরনের বিতর্ক নির্মাণে ভূমিকা রাখছে ও প্রতিবেদন তৈরির পূর্বে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা বিষয়বস্তুর ব্যাপারে কোনো ধরনের বিতর্ক পাঠকদের মধ্যে চলছে কি না, যেহেতু এটি ইতিমধ্যেই স্বীকৃত যে গণমাধ্যম জন-মতামত প্রভাবিত করে এবং কিছু ক্ষেত্রে জন-মতামত গঠনও করতে পারে।
    ২.
    প্রখ্যাত ফরাসি পত্রিকা ‘লা মঁদ’ গত ২৭ জুলাই প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা জঙ্গিবাদী হামলাগুলোতে নিহতদের কোনো ধরনের ছবি প্রকাশ করবে না। একইসঙ্গে তারা হামলার সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো ধরনের ছবি, হামলাকারীদের জীবিত বা নিহত অবস্থার ছবিসহ যে কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রকাশনায় ব্যবহৃত হওয়া কোনো ধরনের কনটেন্ট বা তথ্য পুনঃপ্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ হিসেবে তারা বলেছে, এতে করে মৃত্যু-পরবর্তী সময়ে কোনো জঙ্গির ভাবমূর্তি তার সমর্থকদের কাছে উজ্জ্বল না করা। বাংলাদেশের মিডিয়া জগতেও এ-সংক্রান্ত বিতর্ক সৃষ্টি করে একধরনের সমাধানে পৌঁছানো বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
    পাশাপাশি সমভাবে গুরুত্বের দাবি রাখে জঙ্গি হামলা এবং তদন্তের ব্যাপারে মিডিয়াতে প্রকাশিত তথ্যগুলো। বিভিন্ন সময়ে একই জঙ্গি হামলার ব্যাপারে পূর্বে প্রকাশিত তথ্য এবং পরবর্তীতে প্রকাশিত তথ্য সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, সেটি নিশ্চিত করার দায় গণমাধ্যমের, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা অন্য কারো নয়। পাঠকদের কাছে সঠিক তথ্য নিশ্চিত করে পৌঁছানোর দায়বদ্ধতা থেকেই এই অতিরিক্ত কর্তব্য পালন করা উচিত।
    জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের তথ্য বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে প্রকাশিত তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করার পদ্ধতিগত প্রক্রিয়াগুলোতে পার্থক্য আছে। জঙ্গিবাদী দল এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দুটি উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলো প্রকাশের ক্ষেত্রে দুই ধরনের বিষয় কাজ করে। যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অধিকাংশ তথ্যই অফিশিয়াল বা ডকুমেন্টেড, সেখানে জঙ্গি দলগুলোর তথ্য প্রকাশের প্রক্রিয়াটি প্রচণ্ড জটিল এবং তথ্য প্রকাশের মাধ্যমগুলো অস্থিতিশীল। তাই এ ক্ষেত্রে সুযোগ থেকেই যায় যে মাধ্যমের এই অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিয়ে অনেক অবাস্তব এবং মিথ্যা তথ্য নানা পক্ষের মাধ্যমে নিজস্ব এজেন্ডা তৈরির লক্ষ্যে ব্যবহৃত হবে।
    একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী আনসার আল ইসলাম প্রথম দিকে তাদের বিবৃতিগুলো প্রকাশ করত তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। পরবর্তীতে এ গোষ্ঠীর সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের প্রকাশ্য তথ্যগুলো আসতে লাগল ডার্কনেট-ভিত্তিক একটি ওয়েবসাইট থেকে, যেখানে প্রবেশ করাও খুব একটা সহজসাধ্য নয়। আল কায়েদার সঙ্গে তাদের যোগদানের পরবর্তী সময়ে আবার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে তারা বেছে নিল টেলিগ্রাম অ্যাপ্লিকেশনের পাবলিক চ্যানেলগুলো।
    বিভিন্ন মাধ্যমে জঙ্গিবাদী তথ্য প্রকাশের এ অভ্যাসটি প্রায় সব গোষ্ঠীর মধ্যেই লক্ষণীয় এবং জঙ্গিবাদী তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে বিশেষ করে সাংবাদিকদের মধ্যে এসব ব্যাপারে পর্যাপ্ত ও সম্যক ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি। এ ব্যাপারে পারদর্শিতাই গুজব হতে প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের কাজে সহায়তা করবে এবং এর মাধ্যমেই কোনটি হুমকি বা কোন তথ্য সরাসরি জঙ্গিদের কাছ থেকে এসেছে অথবা কোনটি জঙ্গিগোষ্ঠীর নাম ব্যবহার করে অন্য কেউ ছড়িয়েছে, সেটি বিচার করা সহজ হবে।
    তবে জঙ্গিবাদ সংক্রান্ত যে কোনো ধরনের মিথ্যা তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবেই জঙ্গিদের জনপ্রচারণাতেই সাহায্য করে এবং সব থেকে বেশি অসুবিধা সৃষ্টি করে এ-সংক্রান্ত ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর প্রয়োজনীয় তদন্তে। তদন্তের কার্যকারণ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে জন-মতামতের ভূমিকা অপরিসীম এবং সেই বিবেচনাতে অনেক সময়েই এ ধরনের প্রচারণার নেতিবাচক প্রভাব বেশি।
    ৩.
    আইএসের মতো চতুর্থ প্রজন্মের জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর প্রোপাগান্ডার মূল উপকরণ হল ভীতি প্রদর্শন ও ভীতি সঞ্চার করা। মূলত এর মাধ্যমেই তারা তাদের নির্ধারিত প্রতিপক্ষের ব্যাপারে তাদের মনোভাব, অবস্থান ও বক্তব্য একইসঙ্গে তুলে ধরে। লক্ষণীয় বিষয় হল, তাদের শত্রুদের ব্যাপারে চরম প্রতিহিংসামূলক ও নিষ্ঠুর আচরণ প্রচারণার মূল উপজীব্য করে তুললেও, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে নিহত হওয়া যোদ্ধাদের একই ধরনের পরিনতি তারা প্রকাশ করে না। অপরদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিহত হওয়া সদস্যদের ছবি প্রকাশিত হলে সেগুলোকে উপজীব্য করে তারা তাদের সদস্য ও সমর্থকদের উত্তেজিত ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করার কাজে ব্যবহার করে এবং একই সঙ্গে এগুলো জনসমর্থন বাড়ানোর কাজেও ব্যবহার করার সম্ভাবনা থেকে যায়।
    গত ১০ জুলাই আনসার আল ইসলামের ডার্কনেটে থাকা ওয়েবসাইটে গুলশান হামলা নিয়ে একটি আলোচনাতে আল কায়েদার বাংলাভাষী একজন জঙ্গি বিভিন্ন সময়ে করা হামলাগুলোর নানামুখী উদ্দেশ্যগুলো স্পষ্ট করে তুলে ধরে। জঙ্গিবাদী হামলাগুলোর ক্ষেত্রে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের পাশাপাশি প্রচারনায় সহায়ক জনমত গঠনের ব্যপারটিও যে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায়, এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন পক্ষের, যাদের অধিকাংশকেই এ জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো শত্রু বলে মনে করে, তাদের মধ্যে ভিন্নমুখী মত ও মতবিরোধ তৈরি করার কৌশলটিও সেখানে পরিষ্কারভাবে বলা হয়।
    বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে কোনো জঙ্গি হামলার অন্যতম লক্ষ্য হয়ে উঠেছে জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক ও সামাজিক মেরুকরণ সৃষ্টি। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো যেভাবে মিডিয়াকে ব্যবহার করতে চায়, সেভাবে ব্যবহৃত না হওয়ার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কৌশলগুলো চিহ্নিত করতে হবে দ্রুতগতিতে।
    এটি করা না গেলে দীর্ঘমেয়াদের প্রচারণা যুদ্ধে জিতে যাবে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো, হেরে যাবে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ।



    Last edited by আবুল ফিদা; 11-20-2016, 09:25 PM.
    দ্বীনকে আপন করে ভালোবেসেছে যারা,
    জীবনের বিনিময়ে জান্নাত কিনেছে তারা।

  • #2
    Zajakallah akhi fellah.
    سبيلنا سبيلنا الجهاد الجهاد
    طريقنا طريقنا الجهاد الجهاد

    Comment


    • #3
      বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশিত ‘হিট লিস্ট’ বা হুমকিপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের তালিকা নিয়ে করা প্রতিবেদন দেখতে পাই। মূলধারার অধিকাংশ মিডিয়াতে উল্লেখিত লিস্টের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া সত্ত্বেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা সরাসরি উল্লেখ করে দেওয়া হয়।
      আনসার আল ইসলাম প্রথম দিকে তাদের বিবৃতিগুলো প্রকাশ করত তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। পরবর্তীতে এ গোষ্ঠীর সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের প্রকাশ্য তথ্যগুলো আসতে লাগল ডার্কনেট-ভিত্তিক একটি ওয়েবসাইট থেকে, যেখানে প্রবেশ করাও খুব একটা সহজসাধ্য নয়। আল কায়েদার সঙ্গে তাদের যোগদানের পরবর্তী সময়ে আবার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে তারা বেছে নিল টেলিগ্রাম অ্যাপ্লিকেশনের পাবলিক চ্যানেলগুলো।

      আইএসের মতো চতুর্থ প্রজন্মের জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর প্রোপাগান্ডার মূল উপকরণ হল ভীতি প্রদর্শন ও ভীতি সঞ্চার করা। মূলত এর মাধ্যমেই তারা তাদের নির্ধারিত প্রতিপক্ষের ব্যাপারে তাদের মনোভাব, অবস্থান ও বক্তব্য একইসঙ্গে তুলে ধরে। লক্ষণীয় বিষয় হল, তাদের শত্রুদের ব্যাপারে চরম প্রতিহিংসামূলক ও নিষ্ঠুর আচরণ প্রচারণার মূল উপজীব্য করে
      গত ১০ জুলাই আনসার আল ইসলামের ডার্কনেটে থাকা ওয়েবসাইটে গুলশান হামলা নিয়ে একটি আলোচনাতে আল কায়েদার বাংলাভাষী একজন জঙ্গি বিভিন্ন সময়ে করা হামলাগুলোর নানামুখী উদ্দেশ্যগুলো স্পষ্ট করে তুলে ধরে। জঙ্গিবাদী হামলাগুলোর ক্ষেত্রে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের পাশাপাশি প্রচারনায় সহায়ক জনমত গঠনের ব্যপারটিও যে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায়, এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন পক্ষের, যাদের অধিকাংশকেই এ জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো শত্রু বলে মনে করে, তাদের মধ্যে ভিন্নমুখী মত ও মতবিরোধ তৈরি করার কৌশলটিও সেখানে পরিষ্কারভাবে বলা হয়।
      -------------------------------

      জাঝাকুমুল্লাহ আখি

      Comment


      • #4
        যাজাকাল্লাহ আখি ফিল্লাহ
        আল&#2509

        Comment


        • #5
          জাযাকাল্লাহ।

          Comment

          Working...
          X