Announcement

Collapse
No announcement yet.

আল্লাহু আকবার !! যে বাহিনী একটি কাকের আত্মঘাতী আক্রমণে ভীত হয়ে গিয়েছে, তারা করবে জঙ্গি দ

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আল্লাহু আকবার !! যে বাহিনী একটি কাকের আত্মঘাতী আক্রমণে ভীত হয়ে গিয়েছে, তারা করবে জঙ্গি দ


    কর্মব্যস্ত বনানী এলাকা। সময় আনুমানিক বেলা দেড়টা। অসংখ্য যানবাহন আর পথচারীর আসা-যাওয়া চলছে। ঠিক এই সময় বনানী ৭ নম্বর সড়কে থানার সামনে বিকট আওয়াজ। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। শুরু হয় সবার দিগ্*বিদিক ছোটাছুটি।

    এলাকাবাসী প্রথমে ধারণা করে, হয়তো জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। থানার সামনে হওয়ায় আতঙ্কের মাত্রা আরও বহুগুণ বেড়ে যায় সবার মধ্যে। চোখের পলকে চলে আসেন সশস্ত্র অবস্থায় পুলিশ, র*্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ (এপিবিএন) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

    ছোড়েন কয়েকটি ফাঁকা গুলি। ঘিরে ফেলেন আশপাশের এলাকা। বনানীর প্রায় সব সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় তল্লাশি কার্যক্রম। আশপাশের ভবনে খোঁজ নেওয়া হয়। বেশ কিছু সময় ধরে চলতে থাকে ‘হামলাকারী’ খুঁজে বের করার কাজ।

    পুলিশের গুলিতে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত বনানী থানার সামনে ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে যায়।

    কিন্তু কিছুতেই কিছু মিলছিল না। পাওয়া যাচ্ছিল না কারা এই ‘হামলার’ সঙ্গে জড়িত। রুদ্ধশ্বাস এ অবস্থায় বনানী থানার সামনে বিদ্যুতের লাইনের ট্রান্সফরমার থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গেল। ট্রান্সফরমারের সঙ্গে থাকা বিদ্যুতের তারগুলোও পুড়ে গেছে। কিছু তার এলোমেলো হয়ে আছে।



    এ দৃশ্য দেখে খবর দেওয়া হয় বিদ্যুৎ বিভাগকে।গুলশান-১ এর ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)-এর সদস্যরা পরীক্ষা করে জানান, ইন্টারনেট তারে কাক বসার পর তা ছিড়ে গিয়ে বৈদ্যুতিক তারের উপর পরে। ফলে শর্ট সার্কিট হয়ে প্রচণ্ড শব্দের সৃষ্টি হয়। ট্রান্সফরমারটি বিস্ফোরিত হয়েছে। এরই শব্দই ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণে বিদ্যুতের তার পুড়ে গেছে।

    এক ব্যক্তি নাম না প্রকাশের শর্তে জানান,দুপুর দেড়টার দিকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের ফলে বিকট আওয়াজ শোনা যায়। এর পর পরই থানায় কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা জঙ্গি আতঙ্কে ব্যাপক গুলি ছুড়তে আরম্ভ করে।

    অন্য একজন
    প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা যখন জানালেন যে ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে শব্দ হয়েছে, তখন সবার মধ্যে স্বস্তি আসে। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে। বাসা-বাড়িতে আটকে পড়া লোকজনও বের হয়ে আসে।


    বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে কাজ করছিলেন। এ ব্যাপারে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, বিস্ফোরণের কারণে সতর্কাবস্থা নেওয়া হয়েছিল। তবে, এ কারণে কেউ হতাহত হয়নি। ট্রান্সফরমারের বিস্ফোরণে আগুন ধরে তার পুড়েছে।

    গুলিবর্ষণের এ ঘটনায় কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায় নি। আল-&#248।
    ঘটনার পর থেকে বিকেল পর্যন্ত বনানী জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে বনানী থানায় কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

    Reference:


    http://purboposhchimbd.news/2017/03/...%BF-%E0%A6%B8/

    http://www.photonews24.com/bn/2017/0...6%A8%E0%A7%80/
    রবের প্রতি বিশ্বাস যত শক্তিশালী হবে, অন্তরে শয়তানের মিত্রদের ভয় তত কমে যাবে।

  • #2
    মিথ্যা অতি ক্ষুদ্র, তুচ্ছ, দুর্বল যতই কাফিররা বুঝানোর চেষ্টা ক্করুক যে তারা ব্যাপক ক্ষমতাবান, অপরাজেয়, অভেদ্য। আল্লাহ’র শপথ, আল্লাহ’র কাছে কাফিরদের সব হাতিয়ার মাছির মত গুরুত্বও বহন করে না।

    আল্লাহ রহম করুন ইবনুল কায়্যিউম এর প্রতি, যিনি তাঁর ‘নুনিয়াহ’ নামক বইতে বলেছেনঃ



    “তাদের অধিক সংখ্যাকে ভয় করো না, যেহেতু তারা গুরুত্বহীন এবং মাছির মত।“



    হ্যাঁ, সত্যিই তারা মাছির মত বরং মাছির চেয়ে দুর্বলঃ


    “হে লোক সকল! একটি উপমা বর্ণনা করা হলো, অতএব তোমরা তা মনোযোগ দিয়ে শোন; তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের পূজা কর, তারা কখনও একটি মাছি সৃষ্টি করতে পারবে না, যদিও তারা সকলে একত্রিত হয়। আর মাছি যদি তাদের কাছ থেকে কোন কিছু ছিনিয়ে নেয়, তবে তারা তার কাছ থেকে তা উদ্ধার করতে পারবে না, প্রার্থনাকারী ও যার কাছে প্রার্থনা করা হয়, উভয়েই শক্তিহীন।” (সূরা আল হজ্জ ২২:৭৩)
    রবের প্রতি বিশ্বাস যত শক্তিশালী হবে, অন্তরে শয়তানের মিত্রদের ভয় তত কমে যাবে।

    Comment


    • #3
      আপনি কি একটি মাছিকে ভয় করবেন?

      আপনি কি একটি মাছিকে ভয় করবেন?

      মুলঃ শায়খ আবু মুহাম্মাদ আসিম আল-মাকদিসী


      بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
      খেয়াল করুন – তাগুতের সাহায্যকারীদের মুখের উপর দৃঢ়ভাবে সত্য বলা, তাওহীদের যে বিষয়গুলো তাদের অপ্রিয় সেই বিষয়গুলো তাদের শুনানো, মিথ্যা উপাস্যদের সমালোচনা; মিথ্যা উপাস্য – এদের উপাসক – এদের সাহায্যকারীদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করা – এসব একদম সঠিক কাজ* সেই মুসলিমদের যারা আল্লাহ’র দ্বীনকে সমুন্নত রাখবে কিয়ামত পর্যন্ত আর তারা তাদের বিরোধীদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।


      যখন কেউ বলে “কোন মুসলিমকে যখন তাগুতের দোসররা বন্দী করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে সেই সময়টা সত্য প্রকাশের উপযুক্ত সময় না কারণ জালিমরা তখন সত্য শুনতে চায় না তারা মুসলিম ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনে সহায়ক হবে এমন কথাই শুনতে চায়।”


      কোন বন্দী যদি দুর্বল হয় এবং প্রকাশ্যে সত্য ঘোষণার ফলাফল সহ্য করতে না পারে, সেক্ষেত্রে তাকে সত্য প্রকাশ করতে হবে না। তবে এখানে শর্ত হল, সে এমন কথা বলবে না যা কুফরি এবং সে সত্যিকারে বাধ্যবাধকতার মধ্যে নাই। অনেকে খুব অল্পতেই বন্দী অবস্থায় কুফরি কথা বলে এই মিথ্যা অজুহাতে যে তাদেরকে বাধ্য করা হয়েছিল।


      এ ধরণের অবস্থায় অস্পষ্ট-দুর্বোধ্য অর্থ বিশিষ্ট শব্দ, যে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয় তার পরিবর্তে অন্য প্রশ্নের উত্তর, “আমি জানি না” –এ ধরণের কথা বলাই শ্রেয়; মিথ্যা ফতওয়া দেওয়ার চাইতে অথবা জ্ঞান ছাড়া আল্লাহ’র দ্বীন সম্পর্কে কথা বলের চাইতে। এভাবে একজন বন্দী কুফরি থেকে, সত্য-মিথ্যার মিশ্রণ ঘটানো থেকে, এবং তাগুতের অনুমোদন করা থেকে বাঁচতে পারে।


      রাসুলুল্লাহ(সঃ) বলেছেন, “যে আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস করে, সে সত্য বলুক অথবা চুপ থাকুক।” [বুখারি (৬০১৮,৬১৩৬,৬৪৭৫), মুসলিম (৪৭), আহমদ (২/২৬৭, ৪৩৩, ৪৬৩), আবু দাউদ (৫১৫৪), তিরমিজি (২৫০০), ইবনে হিব্বান (৫০৬, ৫১৬)]


      অনেক দেশে জিজ্ঞাসাবাদে আপনি কি বললেন তা আপনার ক্ষতি করে না যতক্ষণ না আপনি অদের লিখিত কাগজে সই করেন। এমন জায়গায় আপনি সত্য মুখে বলতে পারেন কাগজে সই না করে। জিজ্ঞাসাবাদের কথাবার্তা টেপ করেও রাখা হতে পারে। আসলে কোন নির্দিষ্ট তাগুতের নাম না বলে সাধারণভাবে সব তাগুতের বিরুদ্ধে কথা বলা সম্ভব। বিভিন্ন অবস্থায় একই সত্য প্রকাশের সঠিক উপায় বিভিন্ন হতে পারে।


      তাওহীদের ওপর প্রতিষ্ঠিত ভাইদের, বিশেষ করে যারা অন্যদের সত্যের দিকে আহ্বান করেন ও সত্য প্রকাশ করেন তাদের জন্য উত্তম হল সমস্ত অত্যাচার, নির্যাতন, জেল-জরিমানার মুখে সত্যের উপর অটল থাকা। মনে রাখবেন আপনি এই পথে নতুন নন, আপনার আগে বহু নবী-রাসুল, সত্যবাদী ও শহীদ এই পথে হেঁটেছেন। অনেক নবীকে হত্যা করা হয়েছে।


      সঠিক পথের মানুষকে করাত দিয়ে কাঁটা হয়েছে। কিন্তু এসব নির্যাতন শুধু তাদের ঈমানকে আরও মজবুত করেছে। আল্লাহ’র বান্দা ও রাসুল (সঃ) বলেছেন, “শহীদদের নেতা হচ্ছে হামজা (রাঃ) এবং সেই লোক যে অত্যাচারী শাসকদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সৎ কাজের আদেশ করে ও অসৎ কাজের নিষেধ করে এবং এ কারণে সে অত্যাচারীর হাতে নিহত হয়। [আস সিলসিলাহ আস সহিহ – ৩৭৪]


      সুতরাং আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে মানুষকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করবেন না। বরং আল্লাহকে খুশি করার জন্য মানুষকে রাগান্বিত করুন। তখন আপনি তাদের অন্তর জয় করতে পারবেন, তাদের উপর প্রাধান্য পাবেন এবং আল্লাহ তাদের অন্তরে আপনার প্রতি বিস্ময় জন্ম দিবেন।


      ইমাম আহমদ বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “একজন মানুষের উচিত নয় লোকজনের ভয়ে সত্য বলা থেকে বিরত থাকা যখন সে এমন অবস্থা দেখে যেখানে সত্য প্রকাশ করা উচিত কারণ সত্য বলা অথবা গুরুত্বপূর্ণ কিছু উল্লেখ করা তার আয়ু কমায় না বা জীবিকা বিলম্বিত করে না।”[আস সিলসিলাহ আস সহিহ – ১৬৮]


      আর এধরণের অবস্থা আল্লাহ দেখেন, তার ফেরেশতারা দেখে এবং লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়। সুতরাং নিজের জন্য এমন একটা লিপি তৈরি হতে দেন যে অবস্থায় আপনি আল্লাহ’র শত্রুদের থেকে দূরে ছিলেন এবং আল্লাহ’র নিকটবর্তী ছিলেন এবং ঘটনাটিকে আপনি ব্যাবহার করতে পারবেন এমন এক দিনে যখন কোন সম্পদ বা সন্তান কাজে আসবে না এবং শুধুমাত্র তারাই বাঁচবে যারা পরিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে আল্লাহ’র কাছে আসবে।


      ইবনুল কায়্যুম (রঃ) তার “ইগাদাত আল লাহফান” নামক গ্রন্থে লিখেছেন, “শয়তানের ষড়যন্ত্রের একটা হল সে বিশ্বাসীদেরকে তার সেনা ও মিত্রদের ব্যাপারে ভীত করে তোলে। এজন্য তারা শয়তানের বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক চেষ্টা চালায় না, ভাল কাজের আদেশ করে না এবং খারাপ কাজে নিষেধ করে না। এটা শয়তানের সবচেয়ে বড় চক্রান্তগুলোর একটা।”


      আল্লাহ বলেছেন, “এরা যে রয়েছে, এরাই হলে শয়তান, এরা নিজেদের বন্ধুদের ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করে। সুতরাং তোমরা তাদের ভয় করো না। আর তোমরা যদি ঈমানদার হয়ে থাক, তবে আমাকে ভয় কর।” (সূরা আল ইমরান ৩:১৭৫)


      কাতাদাহ আয়াতটির ব্যাখ্যায় বলেছেন, “শয়তান তার বাহিনীকে বড় ও শক্তিশালী হিসেবে বিশ্বাসীদের অন্তরে পেশ করে।” এজন্য আল্লাহ বলেছেন, “……সুতরাং তাদের ভয় কর না এবং আমাকে ভয় কর যদি বিশ্বাসী হয়ে থাক।” সুতরাং আল্লাহ’র প্রতি বিশ্বাস যত শক্তিশালী হবে, অন্তরে শয়তানের মিত্রদের ভয় তত কমে যাবে। আল্লাহ’র প্রতি বিশ্বাস যত দুর্বল হবে, শয়তানের মিত্রদের তত ভয়ংকর মনে হবে।


      হ্যাঁ, আল্লাহভীতি যার অন্তর পূর্ণ করে তার অন্তরে অন্যকে ভয় করার জায়গা অবশিষ্ট থাকে না। যখন কোন লোক উপলব্ধি করে যে আল্লাহ সর্বোচ্চ, সর্বশক্তিমান, সব কিছুর উপর আল্লাহ’র সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ, তখন তার কাছে অন্য যেকোনো কিছুই তুচ্ছ নগণ্য মনে হবে। সে যদি নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করে, যে সব কিছুর মুখোমুখি সে হচ্ছে সেগুলো তার জন্যই ছিল এবং যে সবের সম্মুখীন সে হয়নি সেগুলো তার জন্য ছিল না এবং যদি সকল জিন ও মানুষ একত্রিত হয়ে তার ক্ষতি চায় তারা তার ক্ষতি করতে পারবে না শুধুমাত্র আল্লাহ যদি কোন ক্ষতি চান সেটুকু ছাড়া। যদি সে এটা উপলব্ধি করে আল্লাহ তাকে দৃঢ় রাখবেন এবং তার অন্তরকে শক্তিশালী করবেন। পৃথিবীর সকলে তার বিরুদ্ধে একত্রিত হলেও সে তার পথ থেকে সরবে না বরং তার ঈমান ও আল্লাহ’র নিকট সমর্পণ আরও বেড়ে যাবে।
      বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আল্লাহ’র দুশমনেরা যে পদ্ধতি ব্যবহার করে তা হল বিশ্বাসীদের অন্তরে আল্লাহ’র দুশমনদের ব্যাপারে ভয়, অজানা আতংক, বিস্ময় তৈরি করা। তারা তাদের ক্ষমতা, তাদের সংখ্যা, সেনাবাহিনী, অস্ত্র, গোয়েন্দা সংস্থা, প্রচার মাধ্যম, বুদ্ধি-কৌশলের মাধ্যমে মুসলিমদের অন্তরে ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করে।


      তারা মুসলিমদের এমন ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করে যে পুরা পৃথিবী তাদের হাতের মুঠোয়, তারা ছোট, বড় সকল বিষয়ের খোঁজ-খবর রাখে। তারা তাদের বিভিন্ন সংস্থাগুলোর ক্ষমতা অতিরঞ্জন করে প্রচার করে। তাদের এরকম আচরণের কথা আল্লাহ পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করেছেন, “আল্লাহ কি তাঁর বান্দার পক্ষে যথেষ্ট নন? অথচ তারা আপনাকে আল্লাহর পরিবর্তে অন্যান্য উপাস্যদের ভয় দেখায়। আল্লাহ যাকে গোমরাহ করেন, তার কোন পথপ্রদর্শক নেই।” (সূরা আয যুমার ৩৯:৩৬)


      জালিমদের এসব প্রচার-প্রপাগানডা, শুধু দুর্বল ইমানদারদেরই প্রভাবিত করে যারা আল্লাহকে ভয় করার পরিবর্তে শয়তানের বাহিনীদের ভয় করে। এসব দুর্বল লোকেরা বিশ্বাসীদের জন্য ঝুঁকির কারণ।
      আল্লাহ বলেন, “যদি তোমাদের সাথে তারা বের হত, তবে তোমাদের অনিষ্ট ছাড়া আর কিছু বৃদ্ধি করতো না, আর অশ্ব ছুটাতো তোমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশে। আর তোমাদের মাঝে রয়েছে তাদের গুপ্তচর। বস্তুতঃ আল্লাহ যালিমদের ভালভাবেই জানেন।” (সূরা আত তাওবা ৯:৪৭)


      বিশ্বাসীদের কঠিন সময়ে উৎসাহহীন, নেতিবাচক মানসিকতাসম্পন্ন, ভীত দুর্বল লোকেরা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। কারণ এ ধরণের কঠিন পরিস্থিতিতে বিশ্বাসীদের উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন, প্রয়োজন সত্যের উপর দৃঢ় থাকার, অন্তরকে শক্তিশালী রাখার। তাদেরকে মনে করিয়ে দেয়া দরকার পূর্ববর্তী বিশ্বাসীরা কিভাবে ভয়ংকর প্রতিকূলতার মধ্যে ঈমানের উপর দৃঢ় থেকেছেন। আল্লাহ এরকম সময়ে নিরুৎসাহ প্রদানের ও নেতিবাচক থাকার নিন্দা করেছেন।


      আল্লাহ বলেন, “আর যখন তাদের কছে পৌঁছে কোন সংবাদ শান্তি-সংক্রান্ত কিংবা ভয়ের, তখন তারা সেগুলোকে রটিয়ে দেয়। আর যদি সেগুলো পৌঁছে দিত রসূল পর্যন্ত কিংবা তাদের শাসকদের পর্যন্ত, তখন অনুসন্ধান করে দেখা যেত সেসব বিষয়, যা তাতে রয়েছে অনুসন্ধান করার মত। বস্তুতঃ আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা যদি তোমাদের উপর বিদ্যমান না থাকত তবে তোমাদের অল্প কতিপয় লোক ব্যতীত সবাই শয়তানের অনুসরণ করতে শুরু করত!” (সূরা আন নিসা ৪:৮৩)


      এগুলো কঠিন সময় ও অবস্থা যখন আল্লাহ বিশ্বাসীদেরকে পরীক্ষা করেন তাদেরকে পরিশুদ্ধ করার জন্য এবং ভাল মানুষদের খারাপ মানুষ থেকে আলাদা করার জন্য।


      আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, “এরা যে রয়েছে, এরাই হলে শয়তান, এরা নিজেদের বন্ধুদের ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করে। সুতরাং তোমরা তাদের ভয় করো না। আর তোমরা যদি ঈমানদার হয়ে থাক, তবে আমাকে ভয় কর।” (সূরা আল ইমরান ৩:১৭৫)


      আল্লাহ একটু পরেই বলেছেন, “আল্লাহ , ঈমানদারগণকে সে অবস্থাতে রাখবেন না যাতে বর্তমানে তোমরা রয়েছ যতক্ষণ না তিনি মন্দ থেকে ভাল কে আলাদা করেন, আর আল্লাহ এমন নন যে, তোমাদিগকে গায়বের সংবাদ দেবেন। কিন্তু আল্লাহ স্বীয় রসূল গণের মধ্যে যাকে ইচ্ছা বাছাই করে নিয়েছেন। সুতরাং আল্লাহর ওপর এবং তাঁর রসূলগণের ওপর তোমরা প্রত্যয় স্থাপন কর। বস্তুতঃ তোমরা যদি বিশ্বাস ওপরহেযগারীর ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকে থাক, তবে তোমাদের জন্যে রয়েছে বিরাট প্রতিদান।” (সূরা আল ইমরান ৩:১৭৯)


      এজন্য বিশ্বাসীরা যারা আল্লাহ’র সাথে কৃত চুক্তিতে সত্য থেকেছে তারা শয়তানের ষড়যন্ত্রে প্রভাবিত হয় না। সত্যের প্রতি তাদের মানসিকতার কোন পরিবর্তন আসে না।বরং তাদের ঈমান ও আত্মসমর্পণ আরও বেড়ে যাবে। আল্লাহ আরও বলেছেন, “যাদেরকে লোকেরা বলেছে যে, তোমাদের সাথে মোকাবেলা করার জন্য লোকেরা সমাবেশ করেছে বহু সাজ-সরঞ্জাম; তাদের ভয় কর। তখন তাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ়তর হয়ে যায় এবং তারা বলে, আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট; কতই না চমৎকার কামিয়াবীদানকারী। অতঃপর ফিরে এল মুসলমানরা আল্লাহর অনুগ্রহ নিয়ে, তাদের কিছুই অনিষ্ট হলো না। তারপর তারা আল্লাহর ইচ্ছার অনুগত হল। বস্তুতঃ আল্লাহর অনুগ্রহ অতি বিরাট। এরা যে রয়েছে, এরাই হলে শয়তান, এরা নিজেদের বন্ধুদের ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করে। সুতরাং তোমরা তাদের ভয় করো না। আর তোমরা যদি ঈমানদার হয়ে থাক,তবে আমাকে ভয় কর।” (সূরা আল ইমরান ৩:১৭৩-১৭৫)


      বিশ্বাসীদের নৈতিকভাবে দুর্বল করা এবং ভীতি প্রদর্শনের ব্যাপারে মুনাফিকদের অবস্থান এই আয়াতগুলির পূর্বে আল্লাহ বলেছেন এবং মুনাফিকদের প্রতিউত্তরও দিয়েছেন, “ওরা হলো যে সব লোক, যারা বসে থেকে নিজেদের ভাইদের সম্বদ্ধে বলে, যদি তারা আমাদের কথা শুনত, তবে নিহত হত না। তাদেরকে বলে দিন, এবার তোমাদের নিজেদের উপর থেকে মৃত্যুকে সরিয়ে দাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক।” (সূরা আল ইমরান ৩:১৬৮)


      তারপর আল্লাহ শহীদদের মর্যাদা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেছেন যারা তার সাথে কৃত চুক্তি পূরণ করেছেঃ
      “আর যারা আল্লাহর রাহে নিহত হয়, তাদেরকে তুমি কখনো মৃত মনে করো না। বরং তারা নিজেদের পালনকর্তার নিকট জীবিত ও জীবিকাপ্রাপ্ত। আল্লাহ নিজের অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তার প্রেক্ষিতে তারা আনন্দ উদযাপন করছে। আর যারা এখনও তাদের কাছে এসে পৌঁছেনি তাদের পেছনে তাদের জন্যে আনন্দ প্রকাশ করে। কারণ, তাদের কোন ভয় ভীতিও নেই এবং কোন চিন্তা ভাবনাও নেই। আল্লাহর নেয়ামত ও অনুগ্রহের জন্যে তারা আনন্দ প্রকাশ করে এবং তা এভাবে যে, আল্লাহ, ঈমানদারদের শ্রমফল বিনষ্ট করেন না। যারা আহত হয়ে পড়ার পরেও আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের নির্দেশ মান্য করেছে, তাদের মধ্যে যারা সৎ ও পরহেযগার, তাদের জন্য রয়েছে মহান সওয়াব। যাদেরকে লোকেরা বলেছে যে, তোমাদের সাথে মোকাবেলা করার জন্য লোকেরা সমাবেশ করেছে বহু সাজ-সরঞ্জাম; তাদের ভয় কর। তখন তাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ়তর হয়ে যায় এবং তারা বলে, আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট; কতই না চমৎকার কামিয়াবীদানকারী।” (সূরা আল ইমরান ৩:১৬৯-১৭৩)


      “আল্লাহ কি তাঁর বান্দার পক্ষে যথেষ্ট নন? অথচ তারা আপনাকে আল্লাহর পরিবর্তে অন্যান্য উপাস্যদের ভয় দেখায়। আল্লাহ যাকে গোমরাহ করেন,,তার কোন পথপ্রদর্শক নেই।” (সূরা আয যুমার ৩৯:৩৬)


      রাসুল (সঃ) কে উপরের কথাগুলো উল্লেখ করে আল্লাহ তাঁকে শিখিয়েছেন নিচের আয়াতের কথাগুলোঃ
      “যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, আসমান ও যমীন কে সৃষ্টি করেছে? তারা অবশ্যই বলবে-আল্লাহ। বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি আল্লাহ আমার অনিষ্ট করার ইচ্ছা করেন, তবে তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদেরকে ডাক, তারা কি সে অনিষ্ট দূর করতে পারবে? অথবা তিনি আমার প্রতি রহমত করার ইচ্ছা করলে তারা কি সে রহমত রোধ করতে পারবে? বলুন, আমার পক্ষে আল্লাহই যথেষ্ট। নির্ভরকারীরা তাঁরই উপর নির্ভর করে।”
      (সূরা আয যুমার ৩৯:৩৮)


      আল্লাহ ছাড়া আর যা কিছু আছে সবই আল্লাহ’র সৃষ্টি এবং সম্পূর্ণভাবে আল্লাহ’র উপর নির্ভরশীল। সুতরাং যারা সত্যিকার অর্থে আল্লাহ’র উপর ভরসা করে তারা কিভাবে আল্লাহকে ভয় না করে শয়তানের অনুসারীদের অস্ত্র, কায়দা, কৌশল, প্রচার-প্রপাগানডাকে ভয় করে?
      নবী-রসূলদের ইতিহাস বিবেচনা করে দেখেন। ঔদ্দত্ত অহংকারী সম্প্রদায়ের কঠোর হুমকির মুখে নবী ও রসূলদের আদর্শগত অবস্থানের দৃঢ়তা দেখুন এবং নিজের অন্তরকে শক্তিশালী করুন।


      নূহ (আঃ) এর উদাহরণটা দেখুনঃ

      “আর তাদেরকে শুনিয়ে দাও নূহের অবস্থা যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বলল, হে আমার সম্প্রদায়, যদি তোমাদের মাঝে আমার অবস্থিতি এবং আল্লাহর আয়াতসমূহের মাধ্যমে নসীহত করা ভারী বলে মনে হয়ে থাকে, তবে আমি আল্লাহর উপর ভরসা করছি। এখন তোমরা সবাই মিলে নিজেরদের কর্ম সাব্যস্ত কর এবং এতে তোমাদের শরীকদেরকে সমবেত করে নাও, যাতে তোমাদের মাঝে নিজেদের কাজের ব্যাপারে কোন সন্দেহ-সংশয় না থাকে। অতঃপর আমার সম্পর্কে যা কিছু করার করে ফেল এবং আমাকে অব্যাহতি দিও না।”
      (সূরা ইউনুস ১০:৭১)


      হুদ (আঃ) এর ঘটনাটা পর্যালোচনা করে দেখুন তিনি তাঁর সম্প্রদায়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন একা এবং তাঁর সম্প্রদায় ছিল তখনকার সময়ের সমচেয়ে শক্তিশালী, কুখ্যাত সম্প্রদায়। তারা তাদের মিথ্যা উপাস্যদের ব্যাপারে ভয় দেখিয়ে হুদ (আঃ) কে থামানোর চেষ্টা করেছিলঃ
      “বরং আমরাও তো বলি যে, আমাদের কোন দেবতা তোমার উপরে শোচনীয় ভূত চাপিয়ে দিয়েছে। হুদ বললেন-আমি আল্লাহকে সাক্ষী করেছি আর তোমরাও সাক্ষী থাক যে, আমার কোন সম্পর্ক নাই তাঁদের সাথে যাদের কে তোমরা শরিক করছ” (সূরা হুদ ১১:৫৪)


      হুদ (আঃ) পর্বতসম দৃঢ়তা নিয়ে আল্লাহ’র উপর ভরসা করে তাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিলেনঃ

      “বরং আমরাও তো বলি যে, আমাদের কোন দেবতা তোমার উপরে শোচনীয় ভূত চাপিয়ে দিয়েছে। হুদ বললেন-আমি আল্লাহকে সাক্ষী করেছি আর তোমরাও সাক্ষী থাক যে, আমার কোন সম্পর্ক নাই তাঁদের সাথে যাদের কে তোমরা শরিক করছ; তাকে ছাড়া, তোমরা সবাই মিলে আমার অনিষ্ট করার প্রয়াস চালাও, অতঃপর আমাকে কোন অবকাশ দিও না। আমি আল্লাহর উপর নিশ্চিত ভরসা করেছি যিনি আমার এবং তোমাদের পরওয়ারদেগার। পৃথিবীর বুকে বিচরণকারী এমন কোন প্রাণী নাই যা তাঁর র্পূণ আয়ত্তাধীন নয়। আমার পালনকর্তার সরল পথে সন্দেহ নেই।” (সূরা হুদ ১১:৫৪-৫৬)


      ইবরাহীম (আঃ) এর অবস্থা চিন্তা করুন যখন তিনি তাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিলেনঃ
      তোমরা কি আমার সাথে আল্লাহর একত্ববাদ সম্পর্কে বিতর্ক করছ; অথচ তিনি আমাকে পথ প্রদর্শন করেছেন। তোমরা যাদেরকে শরীক কর, আমি তাদেরকে ভয় করি না তবে আমার পালনকর্তাই যদি কোন কষ্ট দিতে চান। আমার পালনকর্তাই প্রত্যেক বস্তুকে স্বীয় জ্ঞান দ্বারা বেষ্টন করে আছেন। তোমরা কি চিন্তা কর না ? যাদেরকে তোমরা আল্লাহর সাথে শরীক করে রেখেছ, তাদেরকে কিরূপে ভয় কর, অথচ তোমরা ভয় কর না যে, তোমরা আল্লাহর সাথে এমন বস্তুকে শরীক করছ, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ তোমাদের প্রতি কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি। অতএব, উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে শাস্তি লাভের অধিক যোগ্য কে, যদি তোমরা জ্ঞানী হয়ে থাক।” (সূরা আল আনআম ৬:৮০-৮১)


      “যারা ঈমান আনে এবং স্বীয় বিশ্বাসকে শিরকের সাথে মিশ্রিত করে না, তাদের জন্যেই শান্তি এবং তারাই সুপথগামী।” (সূরা আল আনআম ৬:৮২)


      সত্যিকারের নিরাপত্তা, প্রশান্তি এবং দৃঢ়তা তাদের জন্য যারা শুধু আল্লাহ’র উপাসনা করে এবং তাঁর সাথে কাউকে কোনভাবেই শরীক করে না।


      চিন্তা করুন মুসা (আঃ) এর ঈমান যখন ফিরাউন তার দলবল নিয়ে সাগর তীরে মুসা (আঃ) ও তাঁর অনুসারী বনী ইসরাইলদের ধরে ফেলার অবস্থায় চলে গিয়েছিল। মুসা (আঃ) অনুসারীদের নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন ফিরাউনদের থেকে তাদের দ্বীন রক্ষার জন্য এবং পালাবার পথে সাগর তীরে হঠাৎ করে ফিরাউনের বিশাল বাহিনী পেছন থেকে তাদের দিকে ধেয়ে আসছিল।


      মুসা (আঃ)এর অনুসারীদের অবস্থা ছিলঃ
      “যখন উভয় দল পরস্পরকে দেখল, তখন মূসার সঙ্গীরা বলল, আমরা যে ধরা পড়ে গেলাম।” (সূরা আশ শুয়ারা ২৬:৬১)


      কিন্তু এমন চরম বিপদজনক, জটিল এবং ভীতিকর অবস্থাতেও মুসা (আঃ) এর অবস্থা ছিলঃ
      “কখনই নয়, আমার সাথে আছেন আমার পালনকর্তা। তিনি আমাকে পথ বলে দেবেন।” (সূরা আশ শুয়ারা ২৬:৬২)


      তারপর দেখুন মুসা (আঃ) এর আল্লাহ’র উপর দৃঢ় থাকা ও ভরসা করার প্রতিদানঃ
      “অতঃপর আমি মূসাকে আদেশ করলাম, তোমার লাঠি দ্বারা সমূদ্রকে আঘাত কর। ফলে, তা বিদীর্ণ হয়ে গেল এবং প্রত্যেক ভাগ বিশাল পর্বতসদৃশ হয়ে গেল। আমি সেথায় অপর দলকে পৌঁছিয়ে দিলাম। এবং মূসা ও তাঁর সংগীদের সবাইকে বাঁচিয়ে দিলাম। অতঃপর অপর দলটিকে নিমজ্জত কললাম। নিশ্চয় এতে একটি নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী ছিল না। আপনার পালনকর্তা অবশ্যই পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।“ (সূরা আশ শুয়ারা ২৬:৬৩-৬৮)


      ফিরাউনের জাদুকরদের অবস্থান চিন্তা করুন যখন তারা ঈমান এনেছিল এবং অতঃপর কঠোর হুমকি ও ভীতি প্রদর্শনের কাছে নতি স্বীকার করে নি।


      “ফেরাউন বললঃ আমার অনুমতি দানের পূর্বেই? তোমরা কি তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলে; দেখছি সেই তোমাদের প্রধান, সে তোমাদেরকে যাদু শিক্ষা দিয়েছে। অতএব আমি অবশ্যই তোমাদের হস্তপদ বিপরীত দিক থেকে কর্তন করব এবং আমি তোমাদেরকে খর্জুর বৃক্ষের কান্ডে শূলে চড়াব এবং তোমরানিশ্চিত রূপেই জানতে পারবে আমাদের মধ্যে কার আযাব কঠোরতর এবং অধিকক্ষণ স্থায়ী। (সূরা ত্বাহা ২০:৭১)


      কোন ধরণের ভয় ও দ্বিধা ছাড়াই জাদুকররা বলেছিলঃ
      “আমাদের কাছে যে সুস্পষ্ট প্রমাণ এসেছে তার উপর এবং যিনি আমাদের কে সৃষ্টি করেছেন তাঁর উপর আমরা কিছুতেই তোমাকে প্রাধান্য দেব না। অতএব, তুমি যা ইচ্ছা করতে পার। তুমি তো শুধু এই পার্থিব জীবনেই যা করার করবে। আমরা আমাদের পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি যাতে তিনি আমাদের পাপ এবং তুমি আমাদেরকে যে যাদু করতে বাধ্য করেছ, তা মার্জনা করেন। আল্লাহ শ্রেষ্ঠ ও চিরস্থায়ী।” (সূরা ত্বাহা ২০:৭২-৭৩)


      আল্লাহ’র রসূল মুহাম্মদ (সঃ) সবচেয়ে ভাল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। চিন্তা করুন হাদিসটি যেটি আমর ইবনু আস (রাঃ) থেকে ইমাম আহমদ ও আরও কয়েকজন সহিহ সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন।

      সময়টাতে মুসলিমরা ছিল দুর্বল। মক্কার কাফিররা রাসুলুল্লাহ (সঃ)কে চারদিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিল এবং তাদের একজন রাসুলুল্লাহ (সঃ)এর পোশাকের কলার ধরে তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলঃ
      “তুমি কি সেই লোক যে এমন-এমন বলে?” তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, স্পষ্ট ও সোজাসুজি কোন ধরণের ভয় ও দ্বিধা ছাড়াঃ “হ্যাঁ, আমিই সে যে এমন কথা বলে।” এবং এর পূর্বে বলেছিলঃ “শোন, কুরাইশরা! শপথ আল্লাহ’র যার হাতে আমার প্রাণ, আমি তোমাদের কাছে এসেছি জবাই সাথে নিয়ে।”
      [মুসনাদে আহমাদ’ (৭০৩৬)এর তাহকীক করে আহমাদ শাকীর এটাকে সহিহ বলেছেন। আলবানীও এটাকে সহিহ বলেছেন। সহিহ মাওয়ারিদ আদ দামান (১৪০৩, ১৪০৪)]


      উপস্থিত সকলে আল্লাহ’র রসূল(সঃ)এর এ কথায় ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েছিল এবং তারা সবাই চুপ করে স্থির হয়ে গিয়েছিল এবং পূর্বে যারা তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ছিল তারা নম্রভাবে কথা বলেছিল।


      রসুল(সঃ) তাঁর উপর অবতীর্ণ কুরআনের মাধ্যমে সাহাবাদের অব্যাহতভাবে কুরআনের উপর দৃঢ় থাকতে বলতেন। তিনি সাহাবাদের মনে করিয়ে দিতেন পূর্বের সেসব লোকদের কথা যারা কঠিনতম অবস্থাতেও দৃঢ় ও শক্ত থেকেছেঃ
      “তোমাদের পূর্বে একজনকে ধরা হয়েছিল এবং তার জন্য মাটিতে গর্ত খুঁড়া হয়েছিল এবং গর্তে তাকে স্থাপন করা হয়েছিল। একটি করাত এনে তার মাথার উপর স্থাপন করা হয়েছিল এবং তাকে কেটে অর্ধার্ধি করা হয়েছিল এবং তার হাড় থেকে তার গোশত আঁচড়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসব কিছু তাকে তার দ্বীন থেকে এক চুলও দূরে নেয়নি। আল্লাহ’র শপথ, আল্লাহ এই দ্বীনকে সম্পূর্ণ করবেন যতক্ষণ না সানা থেকে হাদরা মাউত পর্যন্ত একজন ভ্রমণ করবে এবং সে কোন লোকের ভয় করবে না আল্লাহ ছাড়া এবং তার ভেড়ার জন্য নেকড়ে ছাড়া। যাইহোক, তোমরা খুব তাড়াহুড়ো করছ।” (বুখারি-৩৬১২,৬৯৪৩)



      বাস্তবতা হচ্ছেঃ মিথ্যা অতি ক্ষুদ্র, তুচ্ছ, দুর্বল যতই কাফিররা বুঝানোর চেষ্টা ক্করুক যে তারা ব্যাপক ক্ষমতাবান, অপরাজেয়, অভেদ্য। আল্লাহ’র শপথ, আল্লাহ’র কাছে কাফিরদের সব হাতিয়ার মাছির মত গুরুত্বও বহন করে না।


      আল্লাহ রহম করুন ইবনুল কায়্যিউম এর প্রতি, যিনি তাঁর ‘নুনিয়াহ’ নামক বইতে বলেছেনঃ


      “তাদের অধিক সংখ্যাকে ভয় করো না, যেহেতু তারা গুরুত্বহীন এবং মাছির মত।“


      হ্যাঁ, সত্যিই তারা মাছির মত বরং মাছির চেয়ে দুর্বলঃ

      “হে লোক সকল! একটি উপমা বর্ণনা করা হলো, অতএব তোমরা তা মনোযোগ দিয়ে শোন; তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের পূজা কর, তারা কখনও একটি মাছি সৃষ্টি করতে পারবে না, যদিও তারা সকলে একত্রিত হয়। আর মাছি যদি তাদের কাছ থেকে কোন কিছু ছিনিয়ে নেয়, তবে তারা তার কাছ থেকে তা উদ্ধার করতে পারবে না, প্রার্থনাকারী ও যার কাছে প্রার্থনা করা হয়, উভয়েই শক্তিহীন।” (সূরা আল হজ্জ ২২:৭৩)



      এবং এমনকি যদিও মিথ্যার অনুসারীরা সমৃদ্ধির কিছু সময় পার করে কিন্তু সত্যের অনুসারীরা সমৃদ্ধির আরও বেশি বেশি সময় পার করে। কাফির অবিশ্বাসীদের প্রকৃত চরিত্র এবং তাদের ক্ষমতার অসারতা পরিষ্কার হয়ে ফুটে উঠেছে কালের পরিক্রমায়। আর কাফির, মুশরিকদের উঠেছে তাদের মাধ্যমে যারা আল্লাহ’র সাথে কৃত ওয়াদা পূরণ করেছে, তাদের কেউ কেউ কৃত চুক্তি ইতিমধ্যে পুরা করেছে আর কেউ কেউ পুরা করার অপেক্ষায় আছে।


      বর্তমান অবস্থায় এমন বিশ্বাসীদের খুবই প্রয়োজন।


      সবশেষেঃ-



      আল-কুরআন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় ঐ সব ক্ষণিকের জন্য অস্তিত্বশীল জাতিদের কথা যারা জমিনে আল্লাহ’র নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করত এবং ফাসাদ সৃষ্টি করত।

      ঐ সব জাতিদের কথাও আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যারা উপরে উল্লেখিত জাতিগুলোর চেয়েও শক্তিশালী ছিলঃ

      “আপনি কি লক্ষ্য করেননি, আপনার পালনকর্তা আদ বংশের ইরাম গোত্রের সাথে কি আচরণ করেছিলেন, যাদের দৈহিক গঠন স্তম্ভ ও খুঁটির ন্যায় দীর্ঘ ছিল এবং যাদের সমান শক্তি ও বলবীর্যে সারা বিশ্বের শহরসমূহে কোন লোক সৃজিত হয়নি এবং সামুদ গোত্রের সাথে, যারা উপত্যকায় পাথর কেটে গৃহ নির্মাণ করেছিল। এবং বহু কীলকের অধিপতি ফেরাউনের সাথে যারা দেশে সীমালঙ্ঘন করেছিল। অতঃপর সেখানে বিস্তর অশান্তি সৃষ্টি করেছিল। অতঃপর আপনার পালনকর্তা তাদেরকে শাস্তির কশাঘাত করলেন।” (সূরা আল ফাজর ৮৯:৬-১৩)


      “আপনি কি দেখেননি আপনার পালনকর্তা হস্তীবাহিনীর সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন? তিনি কি তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেননি? তিনি তাদের উপর প্রেরণ করেছেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখী, যারা তাদের উপর পাথরের কংকর নিক্ষেপ করছিল। অতঃপর তিনি তাদেরকে ভক্ষিত তৃণসদৃশ করে দেন।” (সূরা আল ফীল১০৫:১-৫)


      আল-কুরআন এই জাতিগুলোর শেষ পরিণতি আমাদের সামনে তুলে ধরে এবং পৃথিবীতে তাদের ও তাদের বাসস্থানসমূহ মূলোৎপাটিত অবস্থায় আমরা দেখতে পাই আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করেছিলেন এবনহ বিশ্বাসীদের বিজয় দান করেছিলেন। তাদের ক্ষমতার বড়াই, সংখ্যাধিক্যের অহংকার, তাদের একদম কোন কাজে আসে নাই। আল্লাহ’র বিরুদ্ধে তাদের সাহায্য করার কে ছিল? বিশ্বাসীদের সাহায্যকারী হচ্ছেন আল্লাহ আর অবিশ্বাসীদের কোন সাহায্যকারী নাই।


      “তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি? করলে দেখত, তাদের পূর্ববর্তীদের কি পরিণাম হয়েছে। তারা তাদের চেয়ে সংখ্যায় বেশী এবং শক্তি ও কীর্তিতে অধিক প্রবল ছিল, অতঃপর তাদের কর্ম তাদেরকে কোন উপকার দেয়নি। তাদের কাছে যখন তাদের রসূলগণ স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ আগমন করেছিল, তখন তারা নিজেদের জ্ঞান-গরিমার দম্ভ প্রকাশ করেছিল। তারা যে বিষয় নিয়ে ঠাট্টাবিদ্রুপ করেছিল, তাই তাদেরকে গ্রাস করে নিয়েছিল। তারা যখন আমার শাস্তি প্রত্যক্ষ করল, তখন বলল, আমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করলাম এবং যাদেরকে শরীক করতাম, তাদেরকে পরিহার করলাম। অতঃপর তাদের এ ঈমান তাদের কোন উপকারে আসল না যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করল। আল্লাহর এ নিয়মই পূর্ব থেকে তাঁর বান্দাদের মধ্যে প্রচলিত হয়েছে। সেক্ষেত্রে কাফেররা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।” (সূরা আল গাফির ৪০:৮২-৮৫)


      সুতরাং এগুলো হচ্ছে বাস্তবতা যাতে আছে চিন্তার উপাদান আমাদের নিজের জন্য এবং আমাদের বিরোধীদেরও যাতে তারা তাদের জীবনধারা নতুন করে চিন্তা করেঃ

      “আর কাফেররা যেন মনে না করে যে, তারা ছাড়া পেয়ে যাবে, কখনও এরা (আল্লাহকে) ব্যর্থ করতে পারবে না।” (সূরা আল আনফাল ৮:৫৯)



      gurabamedia.wordpress.com/2013/03/

      ( জান্নাতের সবুজ পাখি। ইন শাহ আল্লাহ।)

      রবের প্রতি বিশ্বাস যত শক্তিশালী হবে, অন্তরে শয়তানের মিত্রদের ভয় তত কমে যাবে।

      Comment


      • #4
        zajakallah......

        Comment


        • #5
          ভাই জাজাকাল্লাহ

          Comment

          Working...
          X