Announcement

Collapse
No announcement yet.

ব্লগারদের কাউন্সেলিং করবে পুলিশ

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ব্লগারদের কাউন্সেলিং করবে পুলিশ

    মুক্তমনা (পড়ুন মুত্রমনা) ব্লগারদের নিরাপত্তায় উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ। প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামে সৈকত বড়ুয়া নামে একজন ব্লগার পুলিশের নিরাপত্তা পাচ্ছেন। একইসঙ্গে ব্লগ-ফেসবুকে লেখালেখি মনিটরিং এবং ব্লগারদের কাউন্সেলিংয়ের সিদ্ধান্তও নিয়েছে পুলিশ।

    ব্লগার হত্যা এবং জঙ্গিবাদি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে বিভিন্ন পরিকল্পনাও তৈরি করছে চট্টগ্রাম নগর ও জেলা পুলিশ।

    বেশ কয়েকজন মুক্তমনা (পড়ুন মুত্রমনা) ব্লগার নৃশংসভাবে খুন হওয়ার পর এ হত্যাকাণ্ড থামাতে এবং ব্লগে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে লেখালেখি নিয়ন্ত্রণে সদর দপ্তরের নির্দেশে চট্টগ্রামে পুলিশ এসব উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে সিএমপি ও জেলায় স্পেশাল টাস্ক গ্রুপ (এসটিজি) গঠন করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর সারা দেশের সকল ইউনিটকে এ ধরনের গ্রুপ গঠনের নির্দেশ দিয়েছে।

    চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, টাস্ক গ্রুপের সদস্যদের চট্টগ্রামে ব্লগার কতজন আছেন, তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়ার জন্য বলেছিলাম। তারা তিনজনকে পেয়েছেন। এদের মধ্যে দু’জন চট্টগ্রামে থাকেন না। একজন আছেন, তাকে আমরা নিরাপত্তা দিচ্ছি। তিনি ব্লগে কী ধরনের লেখালেখি করেন সেটাও আমরা খতিয়ে দেখছি। নিরাপত্তা-কাউন্সেলিংয়ের বিষয়ে গ্রুপ ব্যবস্থা নেবে।

    নগর পুলিশের সহকারি কমিশনার (বিশেষ শাখা) কাজেমুর রশিদ বাংলানিউজকে জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে সৈকত বড়ুয়া নামে একজন ব্লগারের গতিবিধি সার্বক্ষণিক নজরে রাখছে পুলিশ। সৈকত বড়ুয়া বেসরকারি পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটির এমবিএ’র ছাত্র। তার বাড়ি বোয়ালখালী উপজেলায়। থাকেন খুলশীতে।

    ‘সৈকত বড়ুয়াকে সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরা দেয়া তো আমাদের পক্ষে সম্ভব না। তবে আমরা তার গতিবিধি, যাতায়াত মনিটরিং করছি। প্রয়োজনে তাকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরামর্শ দিচ্ছি। তিনি যেন কোন ধরনের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সম্মুখীন না হন, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি। ’ বলেন কাজেমুর রশিদ।

    ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন শুরুর পর মুক্তমনা (পড়ুন মুত্রমনা) ব্লগাররা দেশে আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হন। ব্লগারদের নাস্তিক আখ্যা দিয়ে বক্তব্য-বিবৃতিও আসে। দেশে এ পর্যন্ত পাঁচজন ব্লগার খুন হয়েছেন। তারা হলেন, রাজিব হায়দার, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, অনন্ত বিজয় দাশ এবং নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়।

    এ অবস্থায় গত মাসের (আগস্ট) প্রথম সপ্তাহে পুলিশ সদর দপ্তর দেশের সকল ইউনিটে চিঠি দিয়ে বিভিন্ন নির্দেশনা জারি করে। চিঠিতে ব্লগার ও শিশু হত্যা মামলার হালনাগাদ অবস্থা, জঙ্গিবাদ অপরাধ সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য পর্যালোচনার নিমিত্তে স্পেশাল টাস্ক গ্রুপ গঠনের কথা বলা হয়। এতে গ্রুপ গঠনের জন্য পুলিশ অফিসারদের পদবি উল্লেখ করে দেয়া হয়।

    সূত্রমতে, চিঠিতে গ্রুপের সদস্যদের নিজ নিজ এলাকায় ব্লগারদের সঙ্গে যোগাযোগ, নিরাপত্তা পরামর্শ প্রদানের কথা বলা হয়।

    ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ইমাম ও আলেমদের উদ্দেশ্যে কোরআন-হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে জঙ্গিবাদ বিরোধী বক্তব্য প্রদানের *মাধ্যমে ব্লগার হত্যাকান্ড কমানোর জন্য সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের বিভিন্ন মসজিদে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে চিঠিতে। পুলিশ কর্মকর্তাদের আলেম-ওলামা ও মুসল্লীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পাশাপাশি জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রমে ধর্মীয় নেতাদের সম্পৃক্ত করার নির্দেশনাও এসেছে ওই চিঠিতে।

    একইসঙ্গে ‘উগ্রপন্থী ব্লগারদের’ চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটর করে গ্রুপের সদস্যরা সেসব লেখা বিশ্লেষণ এবং প্রয়োজনে ব্লগারদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

    সূত্রমতে, চিঠি পাবার পর নগরীতে অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (বিশেষ শাখা) রবিউল ইসলাম এবং জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ *সুপার (বিশেষ শাখা) মুহাম্মদ নাঈমুল হাছানকে প্রধান করে সাত সদস্যের দু’টি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রত্যেক কমিটিতে সহকারি পুলিশ সুপার পদমর্যাদার দু’জন এবং চারজন পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে সদস্য করা হয়েছে।

    জনমত গঠনের বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মোহা. আব্দুল জলিল মন্ডল বাংলানিউজকে বলেন, আমি সপ্তাহে তিনটি ওপেন হাউজ ডে প্রোগ্রাম করি। সেখানে ব্লগার হত্যা এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন হওয়ার জন্য বলছি। ধর্মীয় যেসব অনুষ্ঠানে আমি যাই, সেটা মসজিদ হোক আর মন্দির হোক আমি কিন্তু একই বিষয়ে কথা বলি। ধর্ম যে মানুষ খুন সমর্থন করেনা সেটা আমি বলি। এখন নির্দেশনা এসেছে, আমি মসজিদ-মন্দির সবখানেই যাব। ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে অবশ্যই মানুষকে সচেতন করব।

    চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) এবং জেলা এসটিজি’র প্রধান মুহাম্মদ নাঈমুল হাছান বাংলানিউজকে বলেন, ফেসবুক, ব্লগসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কী লেখা হচ্ছে সেটা আমরা মনিটরিং করছি। কোন ব্লগারকে কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন হলে সেটা আমরা করব। মসজিদে গিয়ে ব্লগার হত্যা এবং জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচারণার বিষয়েও আমরা কাজ শুরু করেছি।

    ব্লগার হত্যা ও জঙ্গিবাদি কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ এবং ব্লগে লেখালেখি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সরকারি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বারের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনতোষ বড়ুয়া।

    জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনতোষ বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, সংবেদনশীল এসব বিষয়ে সরকারের এ উদ্যোগ আরও আগে নেয়া উচিৎ ছিল। মৌলবাদি জঙ্গিরা ধর্মকে চাপিয়ে দিতে চান। ধর্মের অপব্যাখা করে অনুভূতিতে আঘাত দেন। আর ব্লগাররা ধর্মকে আঘাত দিয়ে লেখালেখি করে তারাও একই ধরনের বেআইনি কাজ করেন। মৌলবাদিদের যেমন কঠোরভাবে দমন করা উচিৎ, একইভাবে ব্লগারদের কর্মকাণ্ডও নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিৎ। আমার সমাজ, আমার সংস্কৃতি যেটা সমর্থন করেনা, সেটা আমি করতে দেব কেন ?

    তবে ব্লগারদের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের যেসব প্রগতিশীল বিশিষ্টজন জঙ্গি সংগঠনের হুমকিতে আছেন তাদের নিরাপত্তার বিষয়েও সরকারের নজর দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন গণজাগরণ মঞ্চ, চট্টগ্রামের সদস্য সচিব শরীফ চৌহান।

    ‘আনসারউল্লাহ বাংলা টিম নামে একটি জঙ্গি সংগঠন একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন, মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তকে হুমকি দিয়েছে। এভাবে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পর্যায় থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক কর্মী, সংস্কৃতিকর্মীরা হুমকি পাচ্ছেন। তাদের নিরাপত্তায়ও সরকারের সমান মনযোগী হওয়া উচিৎ। ’ বলেন শরীফ চৌহান।

  • #2
    jzk..ya akhi!!

    Comment

    Working...
    X