Announcement

Collapse
No announcement yet.

হায়দ্রাবাদ গণহত্যা এবং প্রাসঙ্গিক আলোচনা...

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • হায়দ্রাবাদ গণহত্যা এবং প্রাসঙ্গিক আলোচনা...

    ১৯৪৭ সালের মুসলিমদের চূড়ান্ত রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার ফলাফল হিসেবে বিশাল ভূখন্ড চলে যায় হিন্দুদের হাতে। নিষ্পেষিত, ক্লান্ত মুসলমানেরা পাকিস্তান নামক 'ইসলামী' ভূখণ্ড পেয়েই আবেগাপ্লুত হয়ে পরে। কাশিম নানুতবি, শাহ আব্দুল আজিজ, সাইয়িদ আহমাদ শাহিদ (রাহিমাহুমুল্লাহ) দের উত্তরসূরিরা দায়িত্ব পালন হয়েছে বলে সিদ্ধান্তে উপনীত হোন। ২০০ বছর পরাধীন থাকার পর এটাকে বিজয় ব্যাতিত অন্য কোনো কিছু আখ্যায়তি করতে এখনো নারাজ অসংখ্য অজস্র দেওবন্দি উলামায়ে কেরাম।

    কিন্তু ! দেশভাগের সময় হায়দ্রাবাদের স্বাধীন মুসলমানেরা এমনটা মেনে নিতে পারেনি। হিন্দুদের কাছে নিজেদের ভূমি বিলিয়ে দেয়ার মত আপোসকামী হতে পারেনি হায়দ্রাবাদের স্বাধীন মুসলমানরা। পরাধীন থাকতে না চাওয়ার দরুন হিন্দুদের হাতে গণহারে মারা পরে হায়দ্রাবাদের লক্ষাধিক মুসলমান। আল্লাহ্* তা'আলা তাদের সবাইকে কবুল করে নিন। আমীন।

    এতদিন পর্যন্ত হায়দ্রাবাদের মুসলমানদের আমি বরাবরই আত্মমর্যাদাসম্পন্ন, নির্ভীক ও সত্যাবাদী হিসেবে অনুকরণীয় হিসেবেই জেনে এসেছি।

    কিন্তু হায়! গত বছর মার্চ মাসে যখন রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল হওয়ার রিটের শুনানি এগিয়ে আসছিল তখন, একজন প্রথিতযশা দেওবন্দি আলিমকে যখন সাধারণ তালিবুল ইলম ও মুসলমানরা জিজ্ঞাসা করছিল রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল হলে উলামায়ে কেরামের কাছ থেকে দারুল হারব ফতোয়া আসবে কি না।


    উত্তরে সেই কওমি আলিম হায়দ্রাবাদের মুসলমানদের অদূরদর্শী আখ্যায়িত করে সেখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ (!!) করে এহেন চিন্তা-ভাবনা মুছে ফেলতে বলেন !! ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।



    এছাড়াও, হায়দ্রাবাদ গণহত্যা চলাকালীন ও পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত উলামায়ে কেরামের আশ্চর্য নিরবতা যথেষ্ট আশ্চর্যজনক!

    আজ আমাদের অবস্থা তো সেই বনি ইসরায়েলিদের মত যারা পরাধীন থাকতে থাকতে স্বাধীনতাকেই ঘৃণা করা শুরু করেছিল। আজ আমরা সেই ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানদের অন্ধের মত অনুসরণ করে যাচ্ছি, কর্মে ও মননে উভয় ক্ষেত্রেই সেটা জেনে হোক বা না জেনেই হোক।

    এর কারণ আমরা ইহুদি-খ্রিস্টানদের আইন, নীতি-নৈতিকতা, শিক্ষাব্যবস্থাকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করলেও এই সমাজে বসবাস করতে গিয়ে সেগুলোর ভেতরই ডুবে আছি। হাতে গোণা কয়েকজন আলিম ব্যাতিত এলাকার এস এস সি পরীক্ষার্থীদের জন্য বরকতের দু'আ করেন নি এমন আলিম খুজে পাওয়া ভার বৈ কি।
    হযরত আবু সাঈদ (রা) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম ইরশাদ করেছেন," তোমরাও তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের পদাংক অনুসরণ করবে। একেবারে পায়ে পায়ে। তারা যদি গুইসাপের গর্তে ঢুকে থাকে তাহলে তোমরাও ঐ গর্তে ঢুকে ছাড়বে।" [বুখারী ও মুসলিমের সূত্রে মিশকাত শরীফঃ ৪৫৮ পৃঃ ]

    কুফরতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার ভেতর আমরা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকার কারণেই তো, হায়দ্রাবাদের স্বাধীন মুসলমানদের মত আত্মমর্যাদার মৃত্যুর তুলনায় ভিখারীর মত বেচে থাকাই আমাদের কাছে অধিক পছন্দনীয়।



    নিচে হায়দ্রাবাদের ইতিহাস সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো। মূল লেখাটি লিখেছেন ভাই সাজিদ করিম।


    ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার সময় ৫০০ এর বেশি ছোট ছোট রাজ্য ছিল (যাদেরকে বলা হত প্রিন্সলি স্টেট)।তাদের একেক জনের সাথে বৃটিশের একেক শর্ত ছিল।বৃটিশরা সবাইকে এদের অধীনে নিয়ে এসেছিল কিন্তু বাংলার মত দখল করেনি। স্বাধীনতার সময় তাঁদের বলা হল; হয় ভারতে যোগ দাও, না হয় পাকিস্তানে অথবা নিজেরাই স্বাধীন থাক। হায়দ্রাবাদ, কাশ্মির,সিকিম সহ কিছু রাষ্ট্র নিজেরাই স্বাধীন থাকতে চেয়েছিল, হয়েছিলও কিছু দিনের জন্য।

    কিন্তু ভারত একে একে সবাইকেই বিভিন্ন অজুহাতে দখল করে নেয়।কারো ক্ষেত্রে বলা হল (যেমন হায়দ্রাবাদ) মুসলমান শাসক কর্তৃক নির্যাতিত হিন্দুদের বাঁচাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রবেশ করেছে। অথচ ২০০ বছরেরও বেশী সেখানে মুসলমান শাসক ছিল এবং রাজ্যটি ছিল সবদিক দিয়ে সমৃদ্ধ।কাশ্মিরের ক্ষেত্রে বলা হল কাশ্মিরের রাজার সাথে তাঁদের গোপন চুক্তি ছিল যেখানে দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতার কথা ছিল, যে চুক্তি আজ অবদি কেউ দেখেছি। এই ধরণের অজুহাতে ভারতীয় সেনা দেশগুলোতে প্রবেশ করেছিল, আর বের হয়নি।আমাদের দেশেও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধুয়া তোলা হচ্ছে ইদানিং।

    এইসব রাষ্ট্র দখল করতে এবং দখল বজায় রাখতে ভারত কতটা নির্মম অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে, চালাচ্ছে সেটা অবর্ণনীয়।ভারত কাশ্মিরকে ভারতের অংশ দাবী করা সত্ত্বেও রেকর্ড মতে শুধু কাশ্মিরেই ৯০,০০০০ এর উপর মানুষ হত্যা করেছে, ধর্ষণ করেছে অগনিত।যারা রেকর্ড হয়নি তাদের কথাতো বাদ।’নিজের দেশের’ এত মানুষকেই যারা হত্যা করতে পারে তাঁরা অন্যদেশে কি করতে পারে সেটা সহজে অনুমেয়।

    অন্যান্য আরো কারনের সাথে ভারতীয়দের ইতিহাসে এমন আধিপত্যবাদী মানসিকতার কথা ভেবেই হয়ত তৎকালীন পুর্ব-বংগের মুসলিম নেতারা ১২০০ মাইল দুরের অচেনা পাঞ্জাবী পাঠানের সাথে গেল (অন্যান্য কারণগুলো জানতে পড়তে পারেন নুরুল কবীরের লেখা ; বাঙ্গালী মুসলমান কেন হাজার মাইল দূরের পশ্চিম পাকিস্তানিদের সাথে গেল?) ।তারা হয়ত ভেবেছে পাঞ্জাবীরা আমাদের সাথে গাদ্দারী করলে তাদের থেকে বের হয়ে আসা যাবে।কিন্তু একবার ভারতের পেটে ঢুকে গেলে পরিণতি হত হয় কাশ্মির, আসাম, সিকিম অথবা হায়দ্রাবাদের। পড়ুন হায়দ্রাবাদের দখলে গনহত্যার কথা।



    ……………………………………



    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ক্লান্ত ব্রিটেন সিদ্ধান্ত নিল তারা ভারত উপমহাদেশের শাসনভার ছেড়ে দেবে। সরাসরি ব্রিটিশ শাসিত প্রদেশগুলোর কেউ পাকিস্তানে গেল, আর কেউ ভারতের সঙ্গে রইল। এছাড়াও ভারতে অনেকগুলো রাজ্য ছিল যেগুলো ব্রিটিশদের দ্বারা নয় বরং অনেকটা স্বাধীন রাজা দ্বারা শাসিত হত( উদাহরণস্বরূপ কাশ্মীর, যা হিন্দু মহারাজা হরি সিং কর্তৃক শাসিত হত)।

    এ সকল রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে ধনী ও শক্তিশালী ছিল হায়দ্রাবাদ রাজ্য। হায়দ্রাবাদের নিজস্ব সেনাবাহিনী, এয়ারলাইন্স, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ও মুদ্রা ছিল। ছিল অভ্যন্তরীণ রেল যোগাযোগ ব্যাবস্থা। জনসংখ্যা ছিল দেড় কোটিরও বেশী আর আয়তন বাংলাদেশের দেড়গুণ। হায়দ্রাবাদের তৎকালীন নিযাম-উল-মুলক উসমান আলি খান ছিলেন সে সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি।

    ভারত বিভাগের সময় ব্রিটিশ সরকার কাশ্মীর, হায়দ্রাবাদসহ সকল স্বাধীন রাজ্যকে তিনটির মধ্যে যে কোন একটি বেছে নিতে বলেছিল; হয় ভারতের সাথে একীভূত হওয়া, কিংবা পাকিস্তানের সাথে নতুবা দুটোর বাইরে স্বাধীন থাকা। নিযাম উসমান আলি খান শেষেরটি বেছে নিলেন। ভারতের কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ প্রমাদ গুনলো। ভারতের ঠিক মধ্যখানে একটি স্বাধীন মুসলিম শাসনাধীন রাজ্য তাদের কাছে দুঃস্বপ্নের মত মনে হল। শাসকের আসনে মুসলিমরা থাকলেও হায়দ্রাবাদের মোট জনসংখ্যার ৮৫% ছিল হিন্দু। হিন্দু জাতীয়তাবাদী নেতারা তাই হায়দ্রাবাদ দখল করতে মাঠে নেমে পড়লেন।

    যুদ্ধ হল শুরু

    উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী দলগুলোর ইন্ধনে হায়দ্রাবাদের অভ্যন্তরে কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে মুসলিম জমিদার ও উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের গুপ্তহত্যা শুরু হয়। এক হিসাব মতে প্রায় দুই হাজার ব্যক্তি তাদের হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। এ পরিস্থিতিতে নিযাম স্থানীয় যুবকদের নিয়ে গঠিত রাজাকারদের ( বাংলায় যার অর্থ হয় স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী) দায়িত্ব দেন হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধের। রাজাকারেরা কমিউনিস্টদের পাকড়াও অভিযান শুরু করে, অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। কমিউনিস্টরা সবাই ছিল হিন্দু, সুতরাং এ সুযোগকে কাজে লাগাল ভারত সরকার। বহুল প্রতীক্ষিত হায়দ্রাবাদ দখলের অজুহাত এখন তাদের হাতে; তারা প্রচার করলো উগ্র মুসলিম রাজাকারেরা পাইকারী হারে হিন্দুদের হত্যা করছে।


    নিযাম-উল-মুলক উসমান আলি খান তার পরিষদের সাথে, ছবিটি ১৮৯৯ সালে নেয়া (সৌজন্যে বিবিসি)

    ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮ সালে ‘অপারেশন পোলো’ সাংকেতিক নামে ভারতীয় সেনাবাহিনী চারদিক থেকে হায়দ্রাবাদ আক্রমণ শুরু করে। বিশ্বের কেউ সেদিন হায়দ্রাবাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। লক্ষাধিক ভারতীয় সৈন্যের বিপরীতে হায়দ্রাবাদের ট্রেনিংপ্রাপ্ত প্রফেশনাল সৈন্যের সংখ্যা ছিল মাত্র ছয় হাজার, তাদের সাথে ছিল আর বিশ হাজার রাজাকার বাহিনী। এ অসম লড়াইয়ে চারদিন প্রতিরোধ করে অবশেষে পরাজয় মানে হায়দ্রাবাদ বাহিনী। ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে সিকান্দারাবাদে ভারতীয় মেজর জেনারেল জয়ন্ত নাথ চৌধুরীর নিকট আত্মসমর্পণ করেন হায়দ্রাবাদের সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল সাইয়েদ আহমেদ এল এদরুস। স্বাধীনতা হারিয়ে হায়দ্রাবাদ ভারতের একটি প্রদেশে পরিণত হয়।

    গণহত্যা


    সুন্দরলাল রিপোর্ট

    হায়দ্রাবাদ দখলের পরপরই গণহত্যার খবর আসতে থাকে। আবার ভারতজুড়ে মুসলিমদের গণঅসন্তোষের ভয়ে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু কংগ্রেসের সংসদ সদস্য পন্ডিত সুন্দরলালের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন যাতে হিন্দু-মুসলিম উভয় ধর্মেরই সদস্য ছিল। এ কমিটি হায়দ্রাবাদ ঘুরে এসে তাদের রিপোর্ট জমা দেয় যা সুন্দরলাল রিপোর্ট নামে পরিচিত। নেহেরু থেকে শুরু করে মনমোহন পর্যন্ত, ভারত সরকার এ রিপোর্ট সম্পর্কে গোপনীয়তা বজায় রেখেছে। গণহত্যার বিষয়ে বহির্বিশ্ব ও ভারতের জনগণকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাখা হয়। সর্বশেষে ২০১৩ সালে দিল্লীর নেহেরু স্মৃতি জাদুঘরে এ রিপোর্ট জনসম্মুখে আসে। কমিটির মতে, খুব কম করে ধরলেও ২৭০০০ থেকে ৪০,০০০ মানুষ নিহত হয়েছিলেন। যদিও এ জি নুরানি ও অন্যান্য গবেষকদের মতে এ সংখ্যা দুই লাখ বা তার থেকেও বেশী। কমিটির রিপোর্টে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভারতীয় সেনাবাহিনী এ সকল গণহত্যায় সরাসরি জড়িত ছিল।

    “বেশ কয়েক জায়গায়, সামরিক বাহিনীর সদস্যরা শহর ও গ্রাম থেকে মুসলিম পুরুষদের ধরে নিয়ে এনে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছে।”

    সেনাবাহিনী মুসলিম পুরোপুরি নিরস্ত্র করলেও হিন্দুদের তো নিরস্ত্র করা হয়ইনি বরং সেনাবাহিনী উৎসাহিত করেছে আর কিছু ক্ষেত্রে বাধ্য করেছে স্থানীয় হিন্দুদের, মুসলিমদের বাড়িঘর ও দোকানপাট লুটপাট করার জন্য। সুন্দরলাল রিপোর্টের সাথে পেশ করা একটা গোপনীয় নোটে হিন্দুদের রক্তলোলুপ এই চরিত্রের এক জঘন্য নমুনা দেখা যায়।


    ১৯৪৮ হায়দ্রাবাদ গনহত্যায় মুসলিমদের ধরপাকরের দৃশ্য

    “অনেক জায়গায় আমাদের দেখানো হয় কুয়া যেগুলো ছিল পচা লাশে ভরা। এ রকম এক ক্ষেত্রে আমরা ১১ টি লাশ দেখেছি যার মধ্যে ছিল একজন মহিলা যার ছোট শিশুটি তার স্তনের সাথে লেগেছিল।”

    “দেখেছি ডোবা-নালার মধ্যে লাশ ছড়িয়ে আছে। বেশ কয়েক জায়গায় দেহ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল ; আমরা গিয়ে দেখেছি পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া হাড় আর খুলি এখনও সেখানে পড়ে আছে।”

    শুধু হত্যা আর লুটই নয়, অসংখ্য মুসলিম মহিলা সশস্ত্র হিন্দু মিলিশিয়াদের হাতে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। মুহাম্মাদ হায়দারের ভাষায়, “ হাজার হাজার পরিবার ভেঙ্গে গিয়েছিল, শিশুরা তাদের পিতামাতার কাছ থেকে আর স্ত্রীরা তাদের স্বামীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন। মহিলা ও তরুণীদের ধাওয়া করা হত আর ধর্ষণ করা হত”।

    যাদের সামর্থ্য ছিল তারা পাকিস্তানে হিজরত করেছিলেন। জাতিসঙ্ঘ ও মানবাধিকার তখন অন্ধ ছিল। বিশ্বের “সর্ববৃহৎ গনতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে” এ অপরাধের জন্য কাউকে শাস্তি পেতে হয়নি, কারো বিচার হয়নি বরং এর দৃশ্যায়ন আবার ঘটেছিল গুজরাটে।

    …………………………
    “হায়দারাবাদ : একটি মুসলিম ট্র্যাজেডি” শীর্ষক এক প্রবন্ধে অধ্যাপক উইলফ্রেড ক্যান্টওয়েল স্মিথ প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য উল্লেখ করে লিখেছেন, “যুদ্ধ থেমে যাওয়ার পর মুসলমানরা (গণহারে) ব্যাপক আঘাত ও পাশবিক হামলার শিকার হয়। ধ্বংসযজ্ঞের পর যারা বেঁচে ছিলেন তারাও ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছিলেন। তাদের হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা হয় এবং উচ্ছেদ করা হয় কয়েক লাখ মানুষকে। মুসলিম বাহিনীর সহযোগীদের কথিত সহিংসতার প্রতিশোধ নেওয়ার অজুহাত দেখিয়েই এইসব নারকীয় অভিযান চালানো হয়েছিল। (১৯৫০ সালে প্রকাশিত ‘দ্য মিডল-ইস্ট জার্নাল’, খণ্ড-৪) [ হায়দারাবাদ পতন : এক গোপন সত্যের সন্ধানে, নূরুর রহমান, ১০ অক্টোবর ২০১৩, সাম্প্রতিক দেশকাল]

    রেফারেন্স এবং প্রাসঙ্গিক পোস্টঃ

    Pandit Sundarlal Committee Report on the Massacres in Hyderabad (1948)

    Hyderabad 1948: India’s hidden massacre-BBC report

    হায়দ্রাবাদ ১৯৪৮ : ভারতের গোপন গণহত্যা– যুগান্তর , ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩

    একটি জাতির স্বাধীনতা খোয়ানোর কষ্টঃ লেন্দুপ দর্জি ও সিকিমের ভাগ্য

    স্বাধীন ভারতে কেমন আছে সংখ্যালঘু মুসলিমরা?
    إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِينَ ‏

    "যখন আমরা কোন সম্প্রদায়ের নিকট পৌছি যুদ্ধের জন্য, এটি তাদের জন্য দুর্বিষহ সকাল যাদেরকে পূর্বে সতর্ক করা হয়েছিল।"

    (সহিহ বুখারি, ৩৭১)

  • #2
    জাযাকাল্লাহ ভাই! ঐতিহাসিক আলোচনা। ভাল। চালিয়ে যান ইংশাআল্লাহ। বর্তমান মুসলিমদের সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।

    Comment

    Working...
    X