Announcement

Collapse
No announcement yet.

কুফরে আমলী এবং কিছু বিভ্রান্তির নিরসন -৯

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কুফরে আমলী এবং কিছু বিভ্রান্তির নিরসন -৯

    আল্লাহ তাআলার শরীয়ত বিরোধি আইন প্রণয়ন কুফরে আমলী যার দ্বারা ব্যক্তি দ্বীন থেকে বের হয়ে মুরতাদ হয়ে যায়

    আল্লাহ তাআলার শরীয়ত বিরোধি আইন প্রণয়ন কুফরে আমলী। অর্থাৎ তা এমন কাজ স্বয়ং যার দ্বারাই ব্যক্তি মুরতাদ হয়ে যায়। তাতে লিপ্ত হওয়ার পর আর তার আকীদা বিশ্বাসের দিকে তাকানোর প্রয়োজন নেই। তার আকীদা বিশ্বাস যাই হোক সে মুরতাদ। সে আল্লাহ তাআলার শরীয়তকে অপছন্দ করে কি’না, শরীয়ত বিরোধি আইনকে শরয়ী বিধানের উপর প্রাধান্য দেয় কি’না… ইত্যাদী কোন কিছুই দেখার দরকার নেই। আকীদা বিশ্বাস যদি পূর্ণ দুরস্তও থাকে, মুখে যদি সব কিছুর স্বীকৃতিও প্রদান করে, বাহ্যিক নামায-রোযা ইত্যাদী সকল দ্বীনের বিধান যদি পালনও করে তবুও সে মুরতাদ।



    আমরা পূর্বে আলোচনা করে এসেছি যে, আন্তরিক বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকারোক্তি এবং বাহ্যিক ইবাদত বন্দেগির পাবন্দ হওয়া সত্ত্বেও কাফের হতে পারে। কাজেই আপত্তির কোন সুযোগ নেই যে, ‘আমাদের শাসকরা তো শরীয়তকে অপছন্দ করে বলে না, মৌখিক ইসলামের দাবিও করে, নামায-রোযাও পালন করে- এতদসত্ত্বেও কাফের হবে কিভাবে?’ কারণ, আমরা তাদেরকে শরীয়ত অপছন্দ করার কারণে কিংবা শরীয়তকে হক বলে বিশ্বাস না করা কিংবা স্বীকার না করার কারণে কাফের বলছি না। আমরা তাদেরকে কাফের বলছি কারণ তারা এমন কাজে লিপ্ত হয়েছে যা নিজেই স্বয়ংসম্পূর্ণ কুফর। তাতে লিপ্ত হওয়াই কাফের হওয়ার জন্য যথেষ্ট। সাথে আর কোন কিছুর দরকার নেই। তবে হ্যাঁ, তাদের থেকে যদি অন্য কুফরও পাওয়া যায় তাহলে সেটা (কুফর আলাল কুফর) তথা কুফরীর উপর আরোও কুফরী হবে।




    শরীয়ত বিরোধি আইন প্রণয়নের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস:

    শরীয়ত বিরোধি আইন প্রণয়নের ইতিহাসকে মৌলিকভাবে চারটি ধাপে ভাগ করতে পারি, যার দুটি আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবী হিসেবে প্রেরিত হওয়ার আগে, আর দু’টি আমাদের শরীয়ত নাযিল হওয়ার পর।


    আমাদের শরীয়ত নাযিল হওয়ার পূর্বে:

    ১. ইয়াহুদ ও নাসারা আলেমদের শরীয়ত বিরোধি আইন প্রণয়ন।
    ২. জাহিলী যামানায় আরবীয় মুশরিক নেতাদের শরীয়ত বিরোধি আইন প্রণয়ন।


    আমাদের শরীয়ত নাযিল হওয়ার পর:
    ১. তাতারীদের কতৃক শরীয়ত বিরোধি আইন প্রণয়ন।
    ২. উসমানী খিলাফত পতন পরবর্তী শাসকবর্গ কতৃক শরীয়ত বিরোধি আইন প্রণয়ন।






    তাতারীরা মুসলমান হওয়ার পর আল্লাহ তাআলার শরীয়ত দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার পরিবর্তে তাদের নেতা চেঙ্গিস খান কতৃক প্রণিত ‘ইয়াসিক’ নামক সংবিধান দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতো। এ কারণে তৎকালীন উলামায়ে কেরাম তাদেরকে কাফের ফতোয়া দিয়েছেন। যারা ইসলামী আদালতে বিচারের জন্য না গিয়ে তাতারীদের আদালতে বিচারের জন্য যাবে তারাও কাফের হয়ে যাবে বলে ফতোয়া দেয়া হয়। যারা তাতারীদের পক্ষ হয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবে তারাও কাফের হয়ে যাবে বলে ফতোয়া দেয়া হয়। এ ব্যাপারে হাফেয ইবনে কাসীর রহ. (মৃত্যু ৭৭৪হি.) এবং শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (মৃত্যু ৭২৮হি.) এর ফতোয়া উল্লেখযোগ্য।



    ইবনে কাসীর রহ. এর এ ব্যাপারে দু’টি ফতোয়া রয়েছে।

    একটিতে তিনি তাতারীদেরকে কাফের ফতোয়া দিয়েছেন। এটি তাফসীরে ইবনে কাসীরে সূরা মায়েদার ৫০ নং আয়াত-
    أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ حُكْمًا لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ
    (তারা কি জাহিলিয়্যাতের শাসন ব্যবস্থা কামনা করে! বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য শাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে আল্লাহর চেয়ে শ্রেষ্ঠ আর কে আছে?) এর ব্যাখ্যায় বিদ্যমান।



    আরেকটিতে যারা ইসলামী আদালত ছেড়ে তাতারীদের আদালতে যাবে তাদেরকে কাফের ফতোয়া দিয়েছেন। এটি তারঁ বিখ্যাত ইতিহাস গ্রন্থ ‘আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া’তে ৬২৪হিজরীর আলোচনাধীন চেঙ্গিস খানের জীবনী অংশে বিদ্যমান।





    ইবনে তাইমিয়া রহ. যেসব নামধারী মুসলমান তাতারদের পক্ষ হয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল তারা মুরতাদ হয়ে গেছে বলে ফতোয়া জারি করেন। তাঁর ফতোয়াটি ‘মাজমুউল ফাতাওয়া’র ২৮ নং খণ্ডের ৫৩০ পৃষ্ঠায় বিদ্যমান।

    ***



    প্রথম বিশ্বযুদ্ধে উসমানী খিলাফতের পতনের পর
    প্রায় গোটা বিশ্ব কাফেরদের হাতে চলে যায়। নামধারী মুসলমানরা কাফেরদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ক্ষমতায় বসে। তারা আল্লাহ তাআলার শরীয়ত প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের রচিত শরিয়ত বিরোধি আইন দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করে। এ কারণে সর্বজন শ্রদ্ধেয় যুগশ্রেষ্ঠ উলামায়ে কেরাম তাদেরকে মুরতাদ ফতোয়া দেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েক জন হলেন,

    - শাইখুল ইসলাম মুস্তফা সবারী রহ.
    - শাইখুল ইসলাম জাহেদ কাওসারী রহ.
    - সায়্যিদ কুতুব রহ.
    - শায়খ মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহীম রহ.
    - আল্লাম শানকীতী রহ.
    - আহমাদ শাকের রহ.
    - আব্দুল্লাহ আযযাম রহ. প্রমুখ।


    উলামায়ে কেরাম তাদেরকে মুরতাদ ফতোয়া দেন এবং এ কথাও পরিষ্কার বলে দেন যে, তাদের কুফর তাদের আকীদা বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল নয়। তাদের আকীদা বিশ্বাস যাই হোক তারা মুরতাদ।
    ***





    তাতারীদের এবং উসমানী খিলাফত পরবর্তী শাসকবর্গ সম্পর্কে সারগর্ভ আলোচনা (দারুল ইসলাম ও দারুল হরব প্রসঙ্গে মুফতী তাকি উসমানী সাহেব দা.বা. এর দাবির পর্যালোচনা) নামক পুস্তিকায় করা হয়েছে। তাই এখানে আর সে ব্যাপারে আলোচনায় যাবো না। এখানে প্রথম দু’টি ধাপ অর্থাৎ -
    ১. ইয়াহুদ ও নাসারা আলেমদের শরীয়ত বিরোধি আইন প্রণয়ন।
    ২. জাহিলী যামানায় আরবীয় মুশরিক নেতাদের শরীয়ত বিরোধি আইন প্রণয়ন।
    নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ!

    Last edited by Ahmad Al-hindi; 06-01-2017, 06:12 AM.

  • #2
    জাযাকাল্লাহ

    Comment


    • #3
      আল্লাহ শাইখের ইলম দ্বারা আমাদের উপকৃত করুন। শাইখের সমস্ত উস্তায-ছাত্রদের গযওয়াতুল হিন্দের মুজাহিদ হিসাবে কবুল করুন। আমীন।

      Comment


      • #4
        জাজাকাল্লাহ আখি

        Comment


        • #5
          জাযাকাল্লাহু আহনাল জাযা। আল্লাহ আপনার মেহনতকে কবুল করুন। আমিন।
          #প্রিয় শাইখ, কিছু জানতে ইচ্ছুক:
          # ড্রপ, নাকে, কানে, চোখে ব্যবহার করলে রোজার কোনো সমস্যা হবে?
          # সেহরি খাওয়াবস্থায় আযান দিয়ে দিলো, ও আযানের ভেতরে কয়েক লুকমা খানা খেয়ে ফেললো এ অবস্থায় রোজার কোনো সমস্যা হবে?
          আল্লাহ আমাদের ঈমানী হালতে মৃত্যু দান করুন,আমিন।
          আল্লাহ আমাদের শহিদী মৃত্যু দান করুন,আমিন।

          Comment


          • #6
            জাজাকাল্লাহ আখি

            Comment


            • #7
              জাযাকাল্লাহ মুহতারাম শাইখ।
              বর্বর হিংস্র হায়েনার বিষাক্ত থাবায় আমাদের মা-বোন আর ভাইদের রক্তে ভেসে যাচ্ছে আমাদেরই নিজ ভূমি। আর তুমি........তবুও তুমি বসে থাকবে ? জেনে রেখো! তোমাকে অবশ্যই এ নির্যাতিত উম্মার রবের সামনে দাঁড়াতে হবে।

              Comment

              Working...
              X