বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরামে আপনাদেরকে স্বাগতম।
আপনার আসল ইমেইল এড্রেস দিয়ে এখানে আইডি খুলবেন না। আগে আসল ইমেইল আইডী দিয়ে থাকলে সেটাও পরিবর্তন করুন।
পাসওয়ার্ড ও ইমেইল এড্রেস পরিবর্তনের জন্য Settings - Edit Email and Password এ ক্লিক করুন।
আমাদের বর্তমান আইপি এড্রেসঃ https://82.221.139.217
***
বাংলা না দেখা গেলে, এখানে ক্লিক করুন
*****
ফোরামে সদস্য হতে চাইলে এখানে রেজিষ্টার করুন
*****
ফোরামের অনিওন এড্ড্রেস dawah4m4pnoir4ah.onion
*****
এমন কেউ যে অনেক কিছুতেই সীমিত পরিমাণে শিখেছে কিন্তু কোন কিছুতেই মুন্সীয়ানা অর্জন করতে পারে নি। আমাদের প্রজন্ম সম্পর্কে এই কথাটা খুব সুন্দরভাবে মিলে যায়। অধিকাংশের ক্ষেত্রে। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। আমরা অনেক কিছুই শুরু করি, কিন্তু শেষ করা হয় না। আমরা খুব তাড়াতাড়ি শিখি, আরো তাড়াতাড়ি ভুলে যাই। বাবাদের জেনারেশানের দিকে তাকালে দেখি তারা কোন কিছু ক্যাচ করতে বা নতুন কোন স্কিল শিখতে তুলনামূলকভাবে বেশি সময় নেন। কিন্তু একবার যা শিখেছেন তা সহজে ভুলেন না। যা শিখেছেন তা গভীরভাবেই শিখেছেন। মুখ চালিয়ে নতুন কাউকে বুঝ দেবার মতো শেখা না। আমাদের ক্ষেত্রে মনে হয় উল্টোটাই সত্য। আমরা সব কিছু নিয়েই কিছু না কিছু হয়তো বলতে পারি, কিন্তু করতে পারি কমই। আর যাই বলি বা করি না কেন তার পেছনে থাকে এভারেস্টসম সেন্স অফ এন্টাইটেলমেন্ট আর সেলফ ইম্পরট্যান্স।
.
জাতিগত ভাবে আমরা উপদেশ দিতে ভালোবাসি। সব ব্যাপারেই আমাদের কিছু না কিচু বলার আছে। যেটা জানি সেটা নিয়ে, যেটা জানি না সেটা নিয়েও। কোন বলটা কিভাবে করলে ভালো হতো, কোন পাসটা কিভাবে দিলে কাজ হতো – এটা দূর থেকেই আমরা নিশ্চিত ভাবে জানি। সমস্যা হল পর্যবেক্ষন আর মত দিতে ব্যস্ত হবার কারনে যার সমালোচনা করা হচ্ছে তার কাজটা সমালোচনাকারীরা করার সময় পায় না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা বিশেষজ্ঞদের মত গ্রহন করি। ডাক্তারদের উপর গিয়ে আমরা ডাক্তারি করি না। নির্দ্বিধায় ডাক্তার যদিও পেটাই। বিজ্ঞানীদের চাইতে আমরা বিজ্ঞান বেশি বুঝি না। যদিও কলাবিজ্ঞানীরা প্রায়ই এমন ভাব নিতে চায়। বিযনেসের সাবজেক্ট নিয়ে পড়া একটা ছেলে ডিস্ক প্রল্যাপ্সের চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করে না। কবি-কবি সুশীল-শাহবাগী ভাবধারা ছেলেটা কোয়ান্টাম কেমিস্ট্রি নিয়ে হুট করে একটা কথা বলে বসে না। অ্যাকাউন্টিং নিয়ে জীবনে চিন্তা না করা মানুষটা নিয়ে চার্টাড অ্যাকাউন্টেন্টকে জ্ঞান দেয় না। মোটের উপর আমরা বুঝি যে কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে একজন স্পেশালিস্ট আর একজন সাধারণ মানুষের জ্ঞান একই পর্যায়ের হয় না।
ব্যতিক্রম হল ইসলাম। এই বিষয়ে আমরা চুপ করি না। চকচকে গালের ছেলেটা থেকে শুরু করে এক্সিবিশানিযম করে চলা মেয়েটা পর্যন্ত কেউ এই বিষয়ে কারো চাইতে কম যায় না। আমরা যেকোন ইস্যুতে ছুটে আসি – আলিমদের ভুল ধরার জন্য। জীবনে একবার সীরাহ উল্টে না দেখা মানুষটা হুমায়ূন কপচে প্রমান করতে চায় মূর্তি কেন ইসলামে জায়েজ। সারাদিন ‘পিনিকে’ কাটিয়ে দেওয়া ছেলেটা এসে বোঝাতে চায় কোনটা ‘সঠিক ইসলাম’ আর কোনট উগ্রপন্থা। নিজের বন্ধুর মায়ের শরীর নিয়ে কিছুক্ষন আগে রসালো আলোচনা করা ছেলেটা কী-বোর্ডের সামনে বসে নারীবাদ, নারী অধিকার আর নারীর সম্মানের পক্ষে ক্রুসেইডারে পরিণত হয়। আলিমরা নারীদের পর্দা করতে গিয়ে কতোটা পশ্চাৎপদতার প্রমাণ দিয়েছে তার ব্যবচ্ছেদ করে। এভাবে চলতে থাকে। চলতেই থাকে...
.
যারা সারাজীবন ইসলাম নিয়েই পড়াশুনা করেছেন তারা ইসলাম নিয়ে জানেন না। কিন্তু মদ খাওয়া ছেলেটা, বয়ফ্রেন্ডে খাওয়া মেয়েটা, রেইন্ট্রি থেকে সোহরাওয়ার্দিতে ঘুরেবেড়ানো সুযোগসন্ধানীরা জানে - ঠিকমতো দুই লাইন ক্বুরআন পড়তে না পারা মানুষেরা জানে – জুমাবারের নামাযী মানুষেরা জানে – আযান শুনে মাথায় ঘোমটা দেনেওয়ালিরা জানে – মনের পর্দা বড় পর্দা আওড়ানো লোকগুলো জানে – সারাদিন রক-মেটাল কিংবা র*্যাপ নিয়ে পড়ে থাকারা জানে – বলিউড, হলিউড, টলিউড, ঢালিউড নিয়ে মেতে থাকারা জানে – যি বাংলা, স্টার জলসাওয়ালিরা জানে – শাহরিয়ার কবিররা জানে – মুন্নি সাহারা জানে – একুশে টিভির দুই সাইয ছোট কাপড় পড়া অপু বিশ্বাস সাইযের ফুটবলগুলো জানে – কোয়ান্টাম করা আঙ্কেলরা জানে – বুদ্ধিজীবি জানে – শাহবাগী জানে – লীগ জানে – দল জানে – কোনটা সঠিক ইসলাম এরা সবাই জানে - শুধু জানেন না আলিমরা।
.
তাই তারা এবং তাদের সাথে আর যারাই ওই কথাগুলো বলবে যা ক্বুরআন ও সুন্নাহতে আছে, যা সালাফ আস সালেহিনের জীবনিতে আছে তারা সবাই ‘প্রতিক্রিয়াশীল মৌলবাদি গোষ্ঠী’। আর বাকিরা তালেবরেরা হলেন সঠিক ইসলামের অনুসারী।
.
অথচ চাপাবাজি করে Jack of all trades হবার পদ্ধতি যদি কোন অদ্ভূত কারনে পৃথিবীর বাকি সব কিছুর ক্ষেত্রে কার্যকরী হতোও, তবু ইসলামের ক্ষেত্রে এটা কখনোই কার্যকরী হতো না। কারন ইসলামে নিজের খেয়ালখুশি, নিজের ভালো লাগা, মন্দ লাগা অনু্যায়ী গলাবাজি, বিবৃতিবাজীর কোন জায়গা নেই। দ্বীন হল শোনা ও মানা। “আমার কি মনে হয়”, সমাজের কাছে কি গ্রহনযোগ্য – এগুলো দ্বীন না। কোন বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কোন কথা থাকার পর সেখানে মুমিনদের আর কিছু বলার থাকে না। বরং তাদের কাজ হল ‘শোনা ও মানা’। দুঃখজনকভাবে আমাদের টেন্ডেসি হল শোনা ও ত্যানা প্যাচানো। শোনা ও “আমার মনে হয়...” বলা। লা হাওলা ওয়ালা ক্বু’আতা ইল্লাহ বিল্লাহ
.
ইসলামে কোন প্রিস্টক্লাস নেই। আলিমরা যে ভুল করেন না বা ভুল করতে পারেন না, তারা যে সাধারণ মানুষ না – এমন না। কোন একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর কর্তৃত্বের ধারণা ইসলামে নেই। তবে ইসলাম ডেমোক্রেসি না। কিন্তু তাঁর অর্থ এই না যে যার যেমন ইচ্ছে তেমন ভাবে ইসলামের ব্যাখ্যা সে করবে। দ্বীন নিয়ে বিন্দুমাত্র জ্ঞান না থাকা মানুষ আর ক্বুরআন ও হাদিস নিয়ে যে জ্ঞান অর্জন করেছে অবশ্যই তারা দুজন সমান না। আর তাই দ্বীন নিয়ে একজন আলিমের কথা আর একজন সাধারণ মানুষের কথার ওজনও সমান না। তবুও আমাদের সব সম্ভবের দেশে কোন এক অদ্ভূত কারনে সবাই এখন সঠিক ইসলাম বোঝে শুধু আলিমরা ছাড়া।
.
.
‘ইলম অর্জনের কারনে ইসলামের ব্যাপারে বুঝ আর উপলব্ধির কী রকম পরিবর্তন হতে পারে?
.
একটা উদাহরন দেখা যাক।
.
আল্লাহ –প্রতিবার এ নামটা বলা বা শোনার সময় ঠিক কী অনুভূতি হয়?
.
মনে মনে নিজের উত্তরটা গুছিয়ে নিন। তারপর একজন আলিমের জবাব শুনুন।
Comment