Announcement

Collapse
No announcement yet.

স্বর্ণ দিনারের প্রত্যাবর্তন এবং জুলুমের পতন

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • স্বর্ণ দিনারের প্রত্যাবর্তন এবং জুলুমের পতন

    লেখাটি যদিও আইএসের একটি ভিডিও থেকে নেয়া হয়েছে। ফেসবুকের মুহাম্মদ আল বেংগলি নামক এক আইএসের সমর্থক লিখেছেন। কিন্তু এতে শিক্ষণীয় অনেক বিশয় আছে।

    দুনিয়ার অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ, এমনকি নামধারী ইসলামী অর্থনীতিবিদরাও সমগ্র বিশ্বকে অর্থনীতির যে সমাধান দিয়ে দুনিয়া চালাচ্ছেন, তা আসলে মস্ত বড় প্রতারণা বৈ অন্য কিছু নয়। তারা জেনে, না জেনে আমেরিকাকে একটা বিশাল ফেইভার দিয়ে যাচ্ছেন। সেসকল নামধারী ইসলামী অর্থনীতিবিদরাও মুসলিম উম্মাহকে ধোঁকা দিচ্ছেন ইসলামী ব্যাংকিং নামক প্রতারনার ফাঁদ সৃষ্টি করে। তাদের সমাধানের সাথে কি আদৌ ইসলামী অর্থনীতির কোন মিল রয়েছে...??? এই যুগে আমেরিকা ফাসাদের বীজ বপন করে এবং ইহুদীরা তা চাষ করে। দাসত্বের এক পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার নেতৃত্ব প্রদান করে ফ্যাডারেল ডলার নোট নামক এক্ত টুকরো কাগজের উপর ভর করে। যা তারা একাই ছাপিয়েছে এবং বাকি পৃথিবীর উপর চাপিয়ে দিয়েছে। তাদের সকল জুলম ও সীমালঙ্গনের পরও তারা বোকার মত আশা করে যে তাদেরকে এভাবেই ছেড়ে দেওয়া হবে, তাদের পাপ অবাধে চলতে থাকবে। তারা তাদের কুফর দ্বারা স্বল্প সময়ের জন্য অন্ধ হয়, নতুন যুগের উদয়ের ব্যাপারে অচেতন অবস্থায়। কারন নবুওয়্যাতের মানহাজ সকল যুগে কিয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকবে আত ত্বইফাতুল মানসুরাহ’র হাত ধরে। তাদের শয়তানী অর্থনীতি ব্যবস্থার উপর প্রথম আঘাত হানে পুঁজিবাদের দুই মূর্তিকে (টুইন টাওয়ার) গুড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে। যা আমেরিকাকে আফগানিস্তান ও ইরাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায়। যার দরুন তারা অস্বাভাবিকভাবে ঋণে জর্জরিত হয়েছে। আর আমেরিকার পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে দ্বিতীয় এবং যে শক্তিশালী আঘাত হানা হবে তা হল, স্বর্ণ দিনারের প্রত্যাবর্তন। যা তাদের জালিয়াতী ডলার নোটকে ধ্বংসের দিকে ছুড়ে মারবে। আল্লাহর শরীয়ত মানুষের পাঁচটি মৌলিক অধিকারের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্য নিয়ে এসেছে, যার মধ্যে একটি হচ্ছে তাদের সম্পদের নিরাপত্তার বিধান। বস্তুত সোনা এবং রুপা নির্দিষ্ট এবং সাধারণভাবেই পণ্যদ্রব্য বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। প্রাচীন ব্যাবিলন (যা আজকের ইরাকের দক্ষিণাংশ), যেখানে দুই নদী এই শহরের জীবন রেখা, যা ব্যবসা বানিজ্যের প্রাণকেন্দ্র এবং বার্লি ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের জমি চাষের উৎস। অন্যান্য অন্তর্নিহিত মূল্য বিশিষ্ট পণ্যদ্রব্যের সাথে যেসকল পণ্যদ্রব্যের মধ্যে মূল্য বিদ্যমান প্রধান খাদ্যদ্রব্য, যেমন বার্লি এবং খেজুর মানুষের পণ্য এবং সেবা বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে প্রচলিত ছিল। কারন সাধারণভাবেই মানুষের এসকল পন্যের প্রয়োজন ছিল। মানুষের বার্লির প্রয়োজন ছিল, যাতে তারা খাবার জন্য রুটি তৈরি করতে পারে। যা ব্যবহারের পর থেকে যেত, তা পরবর্তীতে পণ্য এবং সেবার মূল্য পরিশোধের জন্য ব্যবহৃত হত। উদাহরণস্বরূপ, মেসোপটেমিয়ার একজন লোক ২ কেজি খেজুরের মুল্যে একটি কুড়াল ক্রয় করতে পারতেন। কিন্তু এই পন্যদ্রব্যসমুহ বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা এবং দুর্বলতা রয়েছে। প্রধান খাদদ্রব্যের নিম্ন সংরক্ষিত মূল্যমান রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, একটি খেজুরের মূল্য একটি বাড়ির মুল্যের তুলনায় অতি ক্ষুদ্র। যদি কোন ক্রেতা খেজুরের মুল্যে কোন বিক্রেতার থেকে একটি বাড়ি কিনতে চান, তাহলে তার অনেক খেজুরের প্রয়োজন। এবং বহনযোগ্যতা তখন একটি সমস্যা হয়ে যায় এবং খেজুরগুলো সংরক্ষণের জায়গার দরকার হয়। খেজুরের মেয়াদ উত্তীর্ণের বিষয়টি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এভাবে উক্ত পণ্যসমূহের মূল্য দূরত্ব, জায়গা, সময়ের উপর নির্ভর করে। কিংবা বিক্রেতা বিনিময় হিসেবে খেজুর বা অন্য পণ্য নাও নিতে পারে। এবং কোন কিছু ক্রয় করার জন্য বিভিন্ন ধরণের পণ্য হাতে রাখাও বাস্তব সম্মত নয়। আদর্শ বিনিময়ের মাধ্যম না থাকলে পণ্য এবং সেবার পরিমাপের ক্ষেত্রেও সমস্যার সৃষ্টি হয়। ফিতরত এবং প্রাকৃতিক স্বভাব থেকেই (যা আল্লাহ তা’আলা মানুষকে দান করেছেন) মানুষ মূল্যবান ধাতুর প্রতি মুগ্ধ, যার মধ্যে স্বর্ণ এবং রৌপ্য অন্যতম। কারন আল্লাহ তা’আলাই সেগুলোকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “মানবকুলকে মোহগ্রস্ত করেছে, নারী, সন্তান-সন্তুতী, রাশিকৃত স্বর্ণ-রৌপ্য, চিহ্নিত অশ্ব, গবাদি পশুরাজি এবং ক্ষেত-খামারের মত আকর্ষণীয় বস্তুসামগ্রী। এসবই হচ্ছে পার্থিব জীবনের ভোগ্যবস্তু। আল্লাহর নিকটই হল উত্তম আশ্রয়”। [সূরা আলে-ইমরানঃ ১৪] আল্লাহ তা’আলা সোনা এবং রুপাকে সকল পণ্য এবং সেবার পরিমাপের আদর্শ মুল্যমান হিসেবে বানিয়েছেন। এবং সেগুলোকে উক্ত কাজের জন্য যথার্থভাবে তৈরি করেছেন। সোনা এবং রুপা বিভাজ্য, কেননা এগুলোকে বিভিন্ন টুকরায় ভাগ করা যায় এবং এতে এগুলোর মূল্য এবং মানের কোন পার্থক্য হয়না। একে গলিয়ে অলংকার বানানো যায়, তা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়না কিংবা এর নির্দিষ্ট কোন স্থায়িত্বকাল নেই। অর্থাৎ তাদের সংরক্ষিত মুল্যমান স্থায়ী, সবাই এর আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে, তা সীমিত পরিমাণে বিদ্যমান, কেউ নিজে থেকে তা বানাতে পারেনা। একটি ক্ষুদ্র পরিমান সোনা উচ্চ সংরক্ষিত মুল্যমান বহন করে। তাই সোনা এবং রুপা ব্যবহার করে ব্যবসা বানিজ্য করা অধিক কার্যকর এবং সকল কিছুর মূল্য সোনা এবং রুপায় নিরধারন করা সম্ভব। এখন কোন ব্যক্তি সহজেই সোনা রুপা ব্যবহার করে বিক্রেতা হতে বাড়ি ক্রয় করতে পারবেন। কিছু শতাব্দী আগে, মিশরে ইউসুফ (আঃ) এর যুগে, যখন তিনি নিজ ভাইদের দ্বারা প্রতারিত হন এবং ঘটনাক্রমে বাজারে বিক্রির জন্য একজন দাসে পরিনত হন, তখন কার্যকরী ব্যবসা বানিজ্যের জন্য দুর্লভ ধাতুসমূহ ধাতব মুদ্রা হিসেবে জারি ছিল। আল্লাহ বলেন, “তারা তাকে (ইউসুফ আঃ কে) কম মূল্যে বিক্রি করে দিল গনাগুনতি কয়েক দিরহামে (রুপার মুদ্রা) এবং তাঁর ব্যাপারে নিরাসক্ত ছিল। [সূরা ইউসুফঃ ২০] মিশরের নীলনদের মত সময়ের বয়ে যাওয়ার পরিক্রমায় আল্লাহ তা’আলা তাঁর অনুগ্রহে সেই দাস ইউসুফ (আঃ) কে ভূমির উপর পূর্ণ কর্তৃত্ব দান করেন। এবং খাদ্যশস্য সংরক্ষণ করে মিশরের দুর্ভিক্ষ হতে লোকদের রক্ষার সম্মান দান করেন। ওইসময় মানুষ বিভিন্ন যায়গা হতে মিশরে জমায়েত হয় ব্যবসা বানিজ্যের জন্য এবং সোনা ও রুপার মুদ্রা দীর্ঘ সময়ের জন্য সমগ্র পৃথিবীর বিনিময়ের মাধ্যমে পরিণত হয়। চীন, হিজরী সালের ১৭০০ বছর পূর্বে, ছোট চতুর্ভুজাকৃতির সোনা বাবসা বানিজ্যে ব্যবহার করত। হিজরী সালের ১৩০০ বছর পূর্বে, লিডিয়া রাজ্য সোনা এবং রুপা থেকে খাঁটিভাবে প্রস্তুতকৃত মুদ্রা ব্যবহার করত। হিজরতের ১০৫০ বছর পূর্বে, এথেন্স স্বর্ণ মুদ্রা ব্যবহার করে। হিজরতের ৭০০ বছর পূর্বে ইউরোপিয়ানরা (রোমান) “আউরিউস” নাম স্বর্ণমুদ্রা ব্যবহার করে। হিজরতের ১০০ বছর পূর্বে পারস্য “দ্রাকমা” নামক রৌপ্য মুদ্রা বা দিরহাম ব্যবহার করে। ইতিহাসের সবচেয়ে সুদৃঢ় উত্তরাধিকারের উত্তানের দিকে অগ্রসর হলে দেখা যায়, রাসুল (স) কে যখন আল্লাহ তা’আলা জমিনে কর্তৃত্ব দান করলেন এবং ইসলামকে দ্বীন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে তা পরিপূর্ণ করলেন, তখন অর্থনীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিসয়ও এতে ছিল। তখন আর্থিক লেনদেনসমূহ সম্পাদিত হয়েছে প্রধান খাদ্যদ্রব্য ও লক্ষনীয়ভাবে খেজুর দ্বারা এবং মূল্যবান ধাতব মুদ্রা দ্বারা, যা অজন অনুসারে পরিমাপ করা হত। তখন তিন ধরণের ধাতব মুদ্রা প্রচলিত ছিল। রোমান সাম্রাজ্যের সোনার দিনার, পারস্য সাম্রাজ্যের রুপার দিরহাম এবং “ফালস” নামক এক ধরণের তামার মুদ্রা যা স্থানীয় ছোট লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হত। রাসুল (স) এগুলোকে পরিবর্তন করেননি। বরং সোনা ও রুপার গুরুত্ব দিনার এবং দিরহাম হিসেবে কুরআন এবং হাদিসে উৎসাহিত করেছে, যা এগুলোকে সম্পদ এবং বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “যদি সমগ্র পৃথিবী পরিমান স্বর্ণও তাঁর বিনিময়ে দেওয়া হয়, তবুও যারা কাফের হয়েছে এবং কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের তাওবাহ কবুল করা হবেনা। [সূরা আলে ইমরানঃ ৯১] সোনা-রূপার গুরুত্ব জান্নাত পর্যন্ত পৌঁছেছে, যেখানে তা জান্নাতীদের ভূষণ হবে। এভাবেই সোনা ও রুপা সময়ের সাথে মানুষের হৃদয়ে চূড়ান্ত সংরক্ষিত মূল্যমান হিসেবে দৃঢ়ভাবে প্রভাব ফেলে। দিনার এবং দিরহাম পণ্য এবং সেবার বিপরীতে পরিমাপ এবং লেনদেনের আদর্শ একক হিসেবে স্থান ধরে রাখে। তাছাড়া ইসলাম এইসকল লেনদেনসমূহকে ধোঁকা, প্রতারণা এবং জালিয়াতি থেকে রক্ষা করে। বিশেষ করে মানবজাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জুলম থেকে যা হচ্ছে – আর রিবা অর্থাৎ সুদ। বস্তুত, সুদ এতই ঘৃণিত যে, যারা এর লেনদেন থেকে নিজেদের বিরত রাখেনা তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহ তা’আলা যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “অতঃপর তোমরা যদি তা (সুদ) পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। [সূরা বাকারাহঃ ২৭৯] আর এভাবেই সুদের শিকলে আঘাত করে ইসলামের সোনালী যুগে বারাকাহ ফিরে আসে। শুধুমাত্র নামে যাকাত ছাড়া সম্পূর্ণ করমুক্ত ব্যবসা-বানিজ্য সমৃদ্ধি লাভ করে। রাষ্ট্রের ক্রমবিকাশ লাভের সাথে ৭৭ হিজরীতে আমিরুল মু’মিনীন আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ান দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তৎকালীন মুদ্রাসমূহ হতে সকল প্রকার শিরকী চিহ্ন এবং হারাম চিত্রসমূহকে মুছে ফেলেন এবং প্রথমবারের মত দিনার প্রস্তুত করার আদেশ প্রদান করেন। তাছাড়া খলিফাহ মুদ্রা সঞ্চালনের ক্ষেত্রে এর বিশুদ্ধতা এবং ওজনের সুরক্ষার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যেভাবে আল্লাহ আদেশ করেন, “মেপে দেওয়ার সময় পূর্ণ মাপে দেবে এবং সঠিক দাঁড়িপাল্লায় ওজন করবে। এটা উত্তম, এর পরিণাম শুভ। [সূরা বানী ইসরাঈলঃ ৩৫] আর একারনেই মুমিনগণ মাপ পূর্ণ করেন এবং সোনার দিনার চাঁছা হতে নিজেদের বিরত রাখেন। আল্লাহ তা’আলার আদেশে ইসলাম বিস্তৃতি লাভ করতে থাকে এবং তা জ্ঞানের ফোয়ারা বাগদাদ হতে ইউরোপের ভূমি নয়নাভিরাম আন্দালুস (স্পেন) বিজয়ের মাধ্যমে উপনিবেশ স্থাপন করে। আন্দালুস ইসলামের ছায়াতলে এসে সুদমুক্ত হয়, সোনার দিনার ও রুপার দিরহামে মূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে করমুক্ত ব্যবসা-বানিজ্যে উন্নতি লাভ করে। কিন্তু যখন আন্দালুস ইসলামের আলোয় আলোকিত ছিল, তখন বাকি ইউরোপ ছিল কুফরের অন্ধকারে নিমজ্জিত, কলহে আপতিত, লভ-লালসা ও অশ্লীলতায় আক্রান্ত। রাজ্যসমূহ সবাই নিজেদের আলাদা মুদ্রা ব্যবহার করত, যা এক মুদ্রাকে অপর মুদ্রায় বিনিময় করা এবং এই সেবার জন্য দাম চাওয়ার ব্যবসাকে একটি লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করে। তাছাড়া ব্যাংকাররা সোনা এবং রুপার মুদ্রার দিকে আকৃষ্ট করতে তাদের ভাণ্ডারে মজুদকৃত মুদ্রার উপর সুদ প্রদান করতে থাকে। অতঃপর, ব্যাংকাররা উপলব্ধি করল সকল জমাকারী একসাথে তাদের সোনা এবং রুপার মুদ্রা উত্তোলন করছেনা, যা দুর্নীতির পরবর্তী ধাপকে সংকেত দেয়। এটি “ফ্র্যাকশনাল রিজার্ভ ব্যাংকিং” নামে পরিচিত হয়। যার ব্যাখ্যা হল- একজন ব্যক্তি ব্যাংকে ২০টি স্বর্ণমুদ্রা জমা করে এই শর্তে যে, সে জমাকৃত মুদ্রার উপর প্রতি মাসে একটি স্বর্ণমুদ্রা সুদ হিসেবে পাবে। যদি আরও ৪জন ব্যক্তি একই কাজ করেন, তাহলে ব্যাংকের ভাণ্ডারে ১০০ স্বর্ণমুদ্রা জমা হবে। কিন্তু ওই একটি স্বর্ণমুদ্রা সুদসহ তার জমাকৃত স্বর্ণ নিতে সকলে একসাথে আসেনা। যদি একজন আসে, তাহলে সে তার মজুদকৃত স্বর্ণমুদ্রা এবং সুদসহ ২১টি স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে যায়। তার ওই সুদের একটি স্বর্ণমুদ্রা কিন্তু ব্যাংক নিজের থেকে দেয়না। ব্যাংকের কাছে জমাকৃত ১০০ থেকেই ২১টি দেয়। ফলে ব্যাংকে আর জমা থাকে ৭৯টি স্বর্ণমুদ্রা। বাকি ৪জন তাদের ডিপোজিট থেকে স্বর্ণমুদ্রা একসাথে উত্তোলন করবেনা এই আশায় ব্যাংক তাদের কাস্টমারদের ডিপোজিট থেকে একটি অংশ (ধরা যাক ২০টি) ঋণ হিসেবে প্রদান করতে পারে এই শর্তে যে, ঋণ পরিশোধের সময় তারা ২টি করে স্বর্ণমুদ্রা সুদ হিসেবে দিবে। ব্যাংক এখানে এমন সম্পদ ব্যবহার করে তাদের সম্পদ বৃদ্ধি করছে যা তাদের নয়, তাদের কাস্টমারদের। আর এই পদ্ধতির অনুসরণ করে আজ “ব্যাংক নোট” নামক কাগজের উত্তানের ঘটেছে। প্রথমদিকে মানুষেরা সুদ লাভের জন্য সোনা ও রুপা জমা করার জন্য একটি রশিদ বা প্রমিটরি নোট গ্রহণ করত, যেখানে বহনকারীর জন্য সোনা ও রূপার মুদ্রার পরিমাণ উল্লেখ থাকত। এই নোট বহনকারীকে নিছক এতে উল্লেখকৃত মোট সম্পদ মুদ্রা হিসেবে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি বহন করে। আসল সম্পদ সোনা এবং রূপার মধ্যে বিদ্যমান, নোটের মধ্যে নয়। এই ব্যাংক ব্যবসা এতটাই লাভজনক হয়ে দাড়ায় যে, বিদেশী বণিকদের সাথে ব্যবসা করার জন্য বহুজাতিক শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভেনিস থেকে লন্ডন পর্যন্ত। লন্ডনে প্রথম রিজার্ভ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় এবং নামকরণ করা হয় “ব্যাংক অব ইংল্যান্ড”। কিন্তু তা ইংরেজ সরকারের ক্ষমতা দ্বারা সমর্থিত ছিল। ফলে এটি প্রাতিষ্ঠানিক রুপ লাভ করে এবং কাগজের নোটের ব্যবহারকে বলপ্রয়োগ করে আরোপ করে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে ব্যবহার করে ইউরোপ জুড়ে এই জুলুমবাজ তন্ত্র বেড়ে উঠে এবং দ্রুত বিস্তার লাভ করে। প্রাথমিক অবস্থায় ব্যাপক বিরোধিতার পর ১৩৩২ হিজরী (১৯১৩ সালে) এই ব্যবস্থার নকল করে আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত হয় “দ্যা ফ্যাডারেল রিজার্ভ”। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে নকল করে এটিও ছিল ব্যক্তি মালিকানাধীন কর্পোরেশন এবং সরকারের প্রতি এক বিশেষ ব্যাংকার, যাকে চাহিদা অনুসারে স্বর্ণমানে পূরণীয় ফ্যাডারেল রিজার্ভ নোট ছাপানোর ক্ষমতা দেয়া হয়। অর্থাৎ, স্বর্ণমানের সাথে এই নোটের সংযোগের ফলে এই জালিয়াতি নোট কিছুটা গ্রহণযোগ্যতা পায়। ফ্যাডারেল রিজার্ভ এর প্রতিষ্ঠার এক বছরের মধ্যে জাতিসমুহ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করে। ব্রিটেন তার পুরনো দালাল রাফিদা শিয়াদের (ইরান) সহায়তায় ইরাকে প্রবেশ করে। তারা মুসলিমদের ভূমি এবং এর তেল যুদ্ধলব্দ সম্পত্তি হিসেবে দখল করে। সাইক্স-পিকো চুক্তি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ক্রুসেডাররা মুসলিমদের ভূমিসমূহকে ভেঙ্গে ছোট ছোট জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করে এবং ইহুদীদের জন্য তাদের নিজেদের রাষ্ট্র বরাদ্দ করা হয়। একটি রাষ্ট্র (ইসরাঈল) যা অসংখ্য মুসলিমদের হত্যাযজ্ঞের উপর ভর করে প্রতিষ্ঠিত এবং নব্য প্রতিষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী দালাল আরব ত্বগুতদের দ্বারা সুরক্ষিত। যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত আমেরিকা লড়াইয়ের বাহিরে থাকে, যা তাদের অর্থনীতিকে পাকাপোক্ত করে অস্ত্র উৎপাদন এবং আটলান্টিক হয়ে ইউরোপে তা সরবরাহ করার মাধ্যমে। আমেরিকান শ্রমিকদের ফ্যাডারেল রিজার্ভ নোট নামক এক টুকরো কাগজ দিয়ে বেতন প্রদান করা হত। এবং ইউরোপ থেকে প্রদেয় গ্রহণ করা হত সম্পদের প্রকৃত একক সোনা দ্বারা। যুদ্ধের ব্যয় বহনের জন্য ইউরোপের ত্বগুতরা তাদের স্বর্ণমান পরিত্যাগ করে এবং এভাবে তারা নোটসমূহের স্বর্ণ নির্ভরতার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে। যেহেতু নোটসমূহের আর কোন স্বর্ণ নির্ভরতা রইল না, তাই সরকারগুলো বেশি করে নোট ছাপাতে থাকল। জার্মানিতে ব্যাংক নোটের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। যখন রাষ্ট্রসমূহ পণ্যদ্রব্য এবং সেবার চাহিদা বিবেচনা না করে নোট ছাপাতে থাকে, তখন স্বাভাবিকভাবেই পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়। জার্মানিতে যুদ্ধের শুরুতে যে রুটির দাম ১০০ মার্ক ছিল, যুদ্ধের শেষে তা ২ বিলিয়ন হয়ে যায়...!!! ফলে জার্মানির জনগণ ত্বগুতদের কাছে শুধু তাদের স্বর্ণই হারায়নি, বরং তারা তাদের সঞ্চয়ও হারায়। কারন মার্ক অর্থহীন কাগজের টুকরো হয়ে দাড়ায়, যা রাস্তায় স্তূপাকারে পড়ে থাকত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার সাথে সাথে আমেরিকাও দেশীয় পর্যায়ে স্বর্ণমান পরিত্যাগ করে। একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে আমেরিকার জনগণের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে তাদের সকল সোনা হস্তান্তরের আদেশ করে। এরপর ফ্যাডারেল রিজার্ভ নতুন বিল ছাপায় এবং তা থেকে “স্বর্ণমানে পূরণীয়” শব্দটি উঠিয়ে নেয়। এখন দেশীয় পর্যায়ে একটি ফ্যাডারেল নোট শুধু মাত্র অন্য একটি ফ্যাডারেল নোট দ্বারা পূরণীয়। সোনাকে বাইরে রেখে ব্যাংক নোট সকল প্রকার পণ্যদ্রব্য এবং সেবার প্রাথমিক পরিমাপক হয়ে যায়। ব্যাংকাররা অবশেষে সফলতার সাথে সোনাকে প্রতিস্থাপন করে, যাকে আল্লাহ তা’আলা চূড়ান্ত পরিমাণ হিসেবে তৈরি করেছেন। সোনা, যা সত্যিকারের সম্পত্তি, যাকে গলিয়ে মুদ্রায় পরিণত করার আগে ভূমির অভ্যন্তর থেকে বের করা হয়। তা এক টুকরো কাগজ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। যা পৃথিবীব্যাপী ত্বগুতদের বিচক্ষণতায় জনগণের উপর বল প্রয়োগ করে আরোপিত হয়েছে। এই মহা জোচ্চুরির কিছু সময় পরেই পৃথিবী ২য় বিশ্বযুদ্ধের আঘাতে কম্পিত হয়। যুদ্ধরত জাতিসমুহ আরও একবার সম্পূর্ণ যুদ্ধব্যাপী তাদের স্বর্ণ সরবরাহসমূহ সম্পূর্ণরুপে ব্যয় করে ফেলে। কিন্তু আমেরিকা এইবারও তাদের পূর্বের কৌশলের মতো প্রথম দিকে লড়াইয়ের বাহিরে থাকে। স্বর্ণের বিনিময়ে যুদ্ধোপকরণ, খাবার এবং অন্যান্য উপকরণ বিক্রি করে দুই বিশ্বযুদ্ধের বদৌলতে সোনার বিশাল প্রবাহের সাথে স্বর্ণের বাজেয়াপ্তকরন, দুই মিলে আমেরিকা এখন পৃথিবীর মোট সোনার একটি বড় অংশের অধিকারী। এই শক্তিশালী অবস্থানে থেকে আমেরিকা ব্রিটন উডসে ৪০টি দেশকে সাথে নিয়ে একটি সমাবেশের আয়োজন করে। তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী এক নতুন ব্যাংকিং এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থার উদ্ভাবন করে, যার নামকরণ করা হয় – “ব্রিটন উডস পদ্ধতি”। এই নতুন পদ্ধতি অনুসারে ফ্যাডারেল রিজার্ভ নোট (এক আউন্স=৩৫ ডলার) এই স্থায়ী দরে সোনার বিপরীতে পূরণীয় হবে এবং বাকি দেশগুলো তাদের নোটগুলোকে ফ্যাডারেল রিজার্ভ নোটের সাথে সম্পর্কযুক্ত করবে। ফলে ফ্যাডারেল রিজার্ভ পৃথিবীর সকল জাতিসমূহের ব্যাংকারে পরিণত হয়। অতঃপর, এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাণিজ্য করার জন্য সকল দেশকে ডলার জমা করে মজুদ করতে হবে। আর কিভাবে তারা ডলার জমা করবে...? আমেরিকাকে তাদের রপ্তানিকৃত দ্রব কিংবা সোনা দিতে হবে। আর বিনিমিয়ে ফ্যাডারেল রিজার্ভকে যা করতে হবে তা হল, প্রায় মূল্যহীন কিছু কাফজের টুকরো তথা ডলার ছাপাতে হবে। ঔদ্ধত্য এবং মূল্যহীন ডলার নোটে পরিপূর্ণ হয়ে আমেরিকা এখন তাদের পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নিরধারন করে। এর শুরু করে তারা কমিউনিস্ট মুশরিক রাষ্ট্র ভিয়েতনামকে দিয়ে। ভিয়েতনামে যুদ্ধের ব্যয়ভার বহন করতে ফ্যাডারেল রিজার্ভ এমন পরিমাণ নোট ছাপায় এবং আমেরিকার সরকারকে ঋণ প্রদান করে, যা তারা কক্ষনোই স্বর্ণ দ্বারা পূরণ করতে পারবেনা। বিশ্বব্যাপী জাতিসমুহ এই জালিয়াতি বুঝতে পেরে ভিয়েতনাম যুদ্ধ শেষ হওয়ার বছর তারা তাদের নিজেদের স্বর্ণমানে পরিবর্তনের অধিকার অনুশীলন করে, যা সোনার প্রবাহ আমেরিকার বাহিরে দিতে শুরু করে। তাদের এই স্বর্ণ মজুদ ধরে রাখতে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ফ্যাডারেল রিজার্ভ একটি আত্মগৌরবপূর্ণ প্রেসিডেন্সিয়াল অধ্যাদেশ জারি করে। এবার তা প্রেসিডেন্ট নিক্সন দ্বারা অর্পিত হয়। প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এই অপকর্মটি করেন বলে একে বলে 'নিক্সন শক'। সকল স্বর্ণমানে পূরণের অধিকারকে বাতিল করে প্রেসিডেন্ট নিক্সন “ব্রিটন উডস’’ পদ্ধতির অবসান ঘটায়। অর্থাৎ, প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফ্যাডারেল রিজার্ভ নোট আর স্বর্ণ নির্ভর রইল না। এখন তা মূল্যহীন কাগজের টুকরো ছাড়া কিছুই নয় এবং ডলার আর সোনার বদলে পরিবর্তনযোগ্য রইল না। অতঃপর ফ্যাডারেল রিজার্ভের সাবেক ইহুদী চেয়ারম্যান অ্যালান গ্রীনস্পান উদ্ধতপূর্ণ হয়ে দাবি করে; “{যুক্তরাষ্ট্র এখন যেকোনো ঋণ পরিশোধ করতে পারবে। কারন আমরা এখন তা করতে ডলার ছাপাতে পারব। অতঃপর “ডিফল্ট প্রবাবিলিটি” (DP) শূন্য”}। বস্তুত এই নিক্সন অধ্যাদেশ অনুসারে ফ্যাডারেল রিজার্ভ কর্তৃক চলতি বেস ডলারের পরিমাণ ২০০ মিলিয়ন থেকে বেড়ে দাড়ায় ২.৫ ট্রিলিয়ন (২৫০ বিলিয়ন) ডলার। এই ফ্র্যাকশনাল রিজার্ভ ব্যাংকিং প্রক্রিয়া অনুসারে, ফ্যাডারেল রিজার্ভ পদ্ধতির অধীনে অন্যান্য ব্যাংকসমূহ এক নতুন ধরণের ডিজিটাল ডলার তৈরি করার অনুমতি পায়, যার নাম “ব্যাংক ক্রেডিট” ঋণ চুক্তি, উদাহরণস্বরূপ মর্টগেজ (বন্ধক) এর বিপরীতে। এখন এই শয়তানি পদ্ধতির চরম পর্যায়ে তা এক প্রতারনার বিষয় প্রয়োগ করার উদ্যোগ নেয় – সুদ। ফ্যাডারেল রিজার্ভ থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য আমেরিকা সরকার প্রথমে একটি বন্ড ইস্যু করে। সাধারণ ভাষায় যা হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার ঋণ করার এবং সুদসহ তা পরিশোধ করার চুক্তি মাত্র। ফ্যাডারেল রিজার্ভ পরবর্তীতে ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহ থেকে এই বন্ডগুলো ক্রয় করে এবং এই লেনদেনের শেষে ফ্যাডারেল রিজার্ভ নোটসমূহ ছাপাইকৃত হয়ে অস্তিত্বে আসে। কিন্তু ফ্যাডারেল রিজার্ভ যখন একটি বন্ডের বিপরীতে ডলার তৈরি করে অথবা ব্যাংকসমূহ যখন ঋণচুক্তির বিপরীতে ডলার তৈরি করে, তার জন্য আসলে শুধুমাত্র এই ঋণের মূলধনের পরিমাণ ডলারই তৈরি করা হয়। কিন্তু এই ঋণ সুদসহকারে পরিশোধ করতে হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে; “যদি ব্যাংকসমূহ ঋণের মাধ্যমে ডলার তৈরি করে, তাহলে এই সুদ পরিশোধ করার জন্য যে ডলার প্রয়োজন, তা কথা থেকে আসে...??? কথা হল, এর আসল কোন অস্তিত্ব নেই। এই জালিয়াতি পদ্ধতির অধীনে, ঋণের মোট পরিমাণ – মূলধনের সাথে সুদ (সুদ-আসল) সবসময় ঋণের চেয়ে বেশিই হবে। তাই অনবরত অরিরিক্ত ডলার ধারণকৃত হয়ে অস্তিত্বে আসবে ঋণের উপর এই জুলুমের সুদ পরিশোধ করার জন্য। যেমনটি অর্থনীতি বিশ্লেষক মাইক মেলনি বর্ণনা করেন; “{যখন আপনার সম্পূর্ণ মুদ্রার সরবরাহই ঋণের উপর ভিত্তি করে, তার সাথে সুদ এবং এই সুদ পরিশোধ করার মুদ্রা এখনো অস্তিত্বেই আসেনি, এর মানে আপনাকে আরও বেশি ঋণের গভীরে যেতে হবে। এবং জনগণ যদি সর্বদা মুদ্রা সরবরাহের সময় ঋণকৃত সুদাসলকে পরিশোধ করার জন্য অধিক ঋণ গ্রহণ না করে তাহলে পুরো বিষয়টিই সংকোচ ধ্বস (Deflationary Collapse) এর দিকে যাবে”}। এর মানে হচ্ছে, মুদ্রাস্ফীতি এই শয়তানী পদ্ধতির একটি স্বভাবজাত এবং অন্তহীন অংশ। কারন, এর মধ্যে ভরাট করার জন্য অনবরত নতুন ডলারের প্রয়োজন। অতঃপর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি চলতে থাকবে। বস্তুত ফ্যাডারেল রিজার্ভের অস্তিত্বে আসার সময় থেকেই ডলার এর মূল্যমান হারিয়ে ফেলেছে। বিষয়টি আরও বোধগম্য হওয়ার জন্য উদাহরণ হল; ফ্যাডারেল রিজার্ভ এর শুরুর দিকে একটি পাউরুটির দাম ছিল ৬ সেন্ট, এখন তা ১.৫০ ডলার। এখানে মূল্যবৃদ্ধির হার ২২০০%, যেমনটি রন পল প্রদর্শন করেন। এটি একটি সুস্পষ্ট জোচ্চোরি, যা মানুষের সঞ্চয়কে ডাকাতি করে ছিনিয়ে নেয়। রন পল বলেন, “{এখানে ডলারের একটি সঞ্চয় রয়েছে এবং মানুষের অর্থ চুরি হচ্ছে। যেসকল লোক সঞ্চয় করছেন, তারা ডাকাতির শিকার হচ্ছেন। যদি ডলারের ১০% মূল্য হ্রাস হয়, তাহলে মানুষ ১০% ডাকাতির স্বীকার হয়”}। এখন এই বিশাল পরিমাণ ডলারের অস্তিত্বে আসার সাথে সাথে, নতুন দুটি প্রশ্নের উদয় হয়; “আমেরিকা কেন এই মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব স্পষ্ট অনুভব করছেনা...???” এবং কেন এই জালিয়াতি নোটের চাহিদা অনবরত জারি রয়েছে...??? এই দুটি প্রশ্নের উত্তর এমন এক জিনিসের সাথে সম্পর্কযুক্ত করে, যা ছাড়া কোন জাতি কার্যতভাবে পরিচালিত হতে পারেনা। আর তা হচ্ছে “তেল”, যাকে আমেরিকানরা “কালো সোনা” বলে থাকে। তেল যা মোটরযান, পাওয়ার প্লান্ট এবং কারখানাগুলোতে জ্বালানী সরবরাহ করে। এটি অর্থনীতির জীবনী শক্তি। এবং এটি যুদ্ধের যন্ত্রপাতিকে জ্বালানী সরবরাহ করে তা দেশগুলোকে সুরক্ষিত করতে সাহায্য করে। যার দরুন তেলের চাহিদা সর্বদা প্রচুর এবং এর ফলে মার্কিন ডলারের চাহিদাও। তাই, নিক্সন অধ্যাদেশ অনুসারে আমেরিকান সরকার তাদের ত্বগুত দালাল সৌদি সরকারকে “ওপেকে” (OPEC) শক্তিশালী প্রভাব ধরে রাখার জন্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে। “ওপেক” এমন এক সংস্থা, যার সদস্য হচ্ছে প্রধান তেল উৎপাদনকারী জাতিসমুহ, যাতে তারা তেলের মূল্য নিজেদের প্রয়োজন অনুসারে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এবং তেল যেন শুধুমাত্র ফ্যাডারেল রিজার্ভ ডলারের বিনিময়ে বিক্রি হয়, এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারে। আর এর বিনিময়ে আমেরিকা এই ত্বগুত আরব সরকারকে সামরিক এবং রাজনৈতিকভাবে সহায়তা করতে থাকবে। এই চুক্তি “পেট্রোল ডলার পদ্ধতি” নামে পরিচিত হয়। প্রথমত, এই পদ্ধতির মানে হচ্ছে ফ্যাডারেল রিজার্ভ দ্বারা দিকনির্দেশিত হয়ে আমেরিকা ইচ্ছামত ডলার ছাপাতে পারবে যার মূল্য ঐ ছাপার কাজে ব্যবহৃত কাগজের মুল্যের চেয়ে বেশি নয়, যাতে তেল ক্রয় করা যায়। যা ত্বগুতরা মুসলিমদের কাছ থেকে চুরি করেছে এবং যা সোনার বিনিময়ে বিক্রি করার কথা ছিল। দ্বিতীয়ত, যেহেতু এখ তেল ক্রয়ের জন্য বাকি জাতিগুলোর মার্কিন ডলার দরকার, তাই আমেরিকা এখন তাদের মুদ্রাস্ফীতি বিদেশে স্থানান্তর করতে পারবে, যেমনটি অর্থনীতি সমালোচক এডওয়ার্ড গ্রাফিন বিশ্লেষণ করেন। তিনি বলেন, “ফ্যাডারেল রিজার্ভ যে ডলার তৈরি করেছে তার একটি বড় অংশ বিদেশে স্থানান্তর করা হয়েছে। আমি আমার গবেষণার প্রথমদিকে এই কথাটি শুনতে পাই যে, আমেরিকা তার “মুদ্রাস্ফীতি রপ্তানি করছে। আমি চিন্তা করি, সেটা আবার কি? আপনি কিভাবে আপনার মুদ্রাস্ফীতি রপ্তানি করবেন? একটি বাক্সে করে পাঠিয়ে দিবেন? না হয় কি করবেন? হ্যাঁ, এখন বুঝতে পেরেছি। আপনি অন্যান্য দেশের জন্য তৈরিকৃত ডলার প্রেরণের মাধ্যমে আপনার মুদ্রাস্ফীতি রপ্তানি করবেন। আর বিনিময়ে তারা আপনাকে টিভি, ফ্রিজ, গাড়ি প্রেরণ করবেন। অর্থাৎ আপনি পাবেন যন্ত্রপাতি আর তারা পাবে ছোট ছোট কাগজের টুকরো। আমেরিকানদের জন্য বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ”। এমনকি যদি দেশসমূহ ডলারের বিনিময়ে পণ্য রপ্তানী নাও করে, তবুও দেশসমূহকে ফ্যাডারেল রিজার্ভ ডলার মজুদ রাখতে হবে। তেল আমদানি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিচালনার জন্য। এর মানে ডলারগুলো আমেরিকার বাহিরেরি থেকে যাবে। তৃতীয়ত, এই পেট্রো ডলার পদ্ধতি আমেরিকাকে অনবরত তাদের আয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় করতে সাহায্য করেছে। বিস্তারিত বলতে গেলে, ২০১৪ সালে আমেরিকার বাৎসরিক আয় ছিল প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন ডলার, আর ব্যয় হল ৩.৫ মিলিয়ন ডলার, পার্থক্য ৫০০ বিলিয়ন ডলার...!!! অতঃপর এই বিশাল পার্থক্যকে পরিশোধ করতে আমেরিকার অতিরিক্ত যে ডলার দরকার তা ঋণ নিতে বন্ড ইস্যু করে। একে বলে ব্যয় ঘাটতি। তাহলে আমেরিকা কিভাবে এই ব্যয় ঘাটতির সাথে এক বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে টিকে আছে...??? আবারো উত্তর লুকিয়ে আছে পেট্রো ডলার পদ্ধতির মধ্যে। পেট্রো ডলার পদ্ধতি মার্কিন ডলারের প্রচুর চাহিদা পূরণ করেছে। যা মার্কিন বণ্ডকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। এই সুবিধার তাৎপর্য বুঝার জন্য উদাহরণ হল, মার্কিন ডলারের বিনিময়ে চীন আমেরিকার কাছে রপ্তানী পণ্য প্রেরণ করে, যা চীনের ডলার রিজার্ভে জমা হতে থাকে। কিন্তু এই ডলারকে পড়ে থাকতে না দিয়ে চীন এই ডলারের একটি বড় অংশ দিয়ে মার্কিন বন্ড ক্রয় করে যা সুদ প্রদান করে। অতঃপর ডলার আবার আমেরিকায় ফিরে আসে। আমেরিকা আবার একই ডলার ব্যবহার করে আরও দ্রব্য আমদানি করে। অর্থাৎ সবশেষে, ডলারের একটি বড় অংশ আমেরিকার বাহিরেই থেকে যায়। এবং মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব উপলব্দি না করে আমেরিকা সর্বদা তার আয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় চালিয়ে যেতে পারে। একটি বড় বক্রাঘাত হল, পেট্রো ডলার পদ্ধতির অধীনে সৌদি এবং অন্যান্য আরও দালাল সরকারসমূহ যারা ইতিমধ্যে তেলের মালিক, তাদের এই তেল থেকে প্রাপ্ত রাজস্বে বড় একটি অংশ আবার মার্কিন বন্ড ক্রয় করার জন্য ব্যবহার করতে হয়। যা সুদ প্রদান করে, যা আমেরিকাকে এই ডলারসমূহ আবার নতুন আমদানি বা সামরিক সামর্থ্য অর্জনের জন্য পুনরায় ব্যবহার করার সুযোগ প্রদান করে। বস্তুত, আমেরিকার এই বন্ডসমূহের বড় অংশ পৃথিবীর এমন সব জাতিসমূহের দখলে তা দুশ্চিন্তার বিষয়। চীন একাই ১২৬৩ বিলিয়ন, জাপান ১২১০ বিলিয়ন, ব্রাজিল ২৪৬ বিলিয়ন, যুক্তরাজ্য ১৮৫ বিলিয়ন, তেল রপ্তানিকারকরা ২৫৫ বিলিয়ন ও অন্যান্য। কিন্তু এই পেট্রো ডলার পদ্ধতি, যা আমেরিকার বণ্ড মার্কেটকে টিকিয়ে রাখতে এবং ত্বগুতদেরকে মুসলিমদের সম্পদ লুণ্ঠন করতে সহায়তা করে। আবার এটাই তাদের চরম দুর্বলতা। এখানে যখন তারা আঘাতপ্রাপ্ত হবে, তখন তাদের জুলুমের এই ব্যাংক নোটের মৃত্যু ডেকে নিয়ে আসবে। অন্যায় আর জুলুমের প্রতীক আমেরিকাকে অবনমিত করবে। কারন এই পদ্ধতি জুলুমবাজ ব্যাংক হতে জন্ম নিয়েছে এবং সুদের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ঐ দেশ সমেত যা এর পৃষ্ঠপোষকতা করে একই সুদ ভিত্তিক বুনিয়াদের উপর ধ্বংস হবে যার উপর ভর করে তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। আমেরিকার অর্থনীতিতে দুটি প্রকাশ্য দুর্বলতা রয়েছে। প্রথমত, যদি এই পদ্ধতির ব্যাংক ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য অবিরাম ডলার সরবরাহ না করা হয়, তাহলে এই সম্পূর্ণ জালিয়াতি পদ্ধতি নিজে থেকেই ধ্বংস হয়ে যাবে। দ্বিতীয়ত, চলমান ভু-রাজনৈতিক অভ্যুথানের প্রধান জাতিগুলো রাশিয়া এবং চীনের নেতৃত্বে পরিচালিত। তারা ইতিমধ্যেই মার্কিন বন্ড মার্কেট ও পেট্রো ডলার পদ্ধতির উপর আঘাত হানার ইচ্ছা এবং সামর্থ্য প্রদর্শন করেছে, সহজেই মার্কিন ডলার ডাম্পিং এর মাধ্যমে যেমনটি অর্থনীতি বিশ্লেষক জিম রিকার্ডস উল্লেখ করেন, “{আমেরিকার ঋণের একটি বড় অংশ বিদেশীদের মালিকানাধীন। তারা কারা? চীন, রাশিয়া এবং অন্যান্য দেশসমূহ যারা আসলে আমাদের বন্ধু দেশ নয়। কিন্তু তারা যখন চায় তখনই ডাম্প করতে পারে। হ্যাঁ, চিন্তা করুন, আসলে তাই হচ্ছে। সাম্প্রতিক মার্কিন বন্ডে “ফরেইন হোল্ডিং” পড়তে শুরু করেছে। এদিকে রাশিয়া মাসের পর মাস ট্রেজারি ডাম্প করছে। সেটা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি অর্থনৈতিক যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার প্রস্তুতির পরিষ্কার সংকেত”}। যখন জাতিসমূহ মার্কিন বন্ড ডাম্পিং শুরু করবে, সুদের ভিত্তিতে ঋণ গ্রহণ করার আসল ফলাফল তখন অনুভুত হবে। জিম রিকার্ডস আরও বলেন, “{এখন বিদেশীরা ট্রেজারি ডাম্প করছে এবং যদি কেউ তা না কিনে, ভেবে দেখুন, সুদের হার বেড়ে যাবে। তারা স্টক মার্কেট, হাউজিং মার্কেট ডুবিয়ে দিবে। উচ্চ সুদের হার মানে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি। অতঃপর সুদের হার যদি আরও একটু বৃদ্ধি পায়, তাহলে আপনি মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবেন এবং তা থেকে রক্ষা পাওয়ার কোন উপায় নেই”}। আর যখন “পেট্রো ডলার” পদ্ধতি ধ্বংস হবে এবং দেশসমূহ তাদের রিজার্ভ থেকে ডলার ফেরত দিতে শুরু করবে, তখন মার্কিন ডলারের মূল্যমানও পড়ে যাবে। যেমনটি অর্থনীতি বিশ্লেষক গ্রাফিন গুরুত্ব আরোপ করেন, “{যখন সময় আসবে, যতটুকু মনে হচ্ছে তা এখনই আসছে, যখন বাকি পৃথিবী বলছে, “উহ, আহ, আমরা আর এই খেলা খেলতে চাইনা”। তখন ডলারসমূহ আমেরিকায় ফিরে আসবে। জনগণ ভাববে, “আমরা এইগুলো আর চাইনা, এগুলো দিয়ে আমরা কি করব?” একবার এই চক্র শুরু হল এবং আমরা পূর্বে রপ্তানিকৃত আমাদের অর্থ ধীরে ধীরে ফিরে পেতে শুরু করলাম। কিন্তু যখন তা একটি প্লাবনে পরিণত হবে এবং তা দ্রুত ফিরে আসতে শুরু করবে, তখন আমরা আমাদের পূর্বের রপ্তানিকৃত মুদ্রাস্ফীতি ফিরে পাচ্ছি। এবং তারপর আমরা দেখব যুক্তরাষ্ট্রে অর্থের পরিমাণ এর দ্রুত গতিতে বেড়ে যাচ্ছে যে, ফ্যাডারেল রিজার্ভ তা আর তৈরি করতে পারবেনা। কারন আমরা আমাদের পূর্বের অর্থ ফিরে পাচ্ছি। তখন আমরা আমেরিকা কি আমদানি করবে এর অনুসারে বাস্তবে মার্কিন ডলারের পতন দেখতে পাব”}। একই সাথে, অন্যান্য ত্বগুত রাষ্ট্রগুলোও অতি দ্রুত সরে যেতে পারবেনা। কারন তারাও এই পদ্ধতি ব্যবহার করে নিজেদের জালিয়াতির নোট ছাপিয়ে ফায়দা হাসিল করেছে। অতঃপর তারা একটি অপেক্ষার খেলা খেলে ভু-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ট্রিগার যা ডলারের চূড়ান্ত পতন নিয়ে আসবে, তা চেপে ধরে সোনা ফেরত নেয়া এবং মজুদ করার মাধ্যমে নিজেদের রক্ষা করার জন্য আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। যা কিনা পৃথিবীর একমাত্র প্রকৃত সম্পদের মানদণ্ড এবং বিনিময়ের মাধ্যম।

    কাগজের নোটের আরও কিছু সমস্যা আছে। তা ভিজে যায়, ছিঁড়ে যায়, পুড়ে যায়, নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু স্বর্ণ, রুপা, তামা তা হয়না। বুঝতেই পারছেন, দুনিয়ার সবচেয়ে বড় বাটপাররাই আজ দুনিয়ার নিয়ন্ত্রক। এই বাটপাররাই আমাদের মানবাধিকার শিখায়, সততা শিখায়, সন্ত্রাসবাদ শিখায়। অথচ আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখতে পারেনা। আর আমি, আপনি সবাই ইনডিরেক্টলি ইরাক, আফগানিস্তান, ইসরাইল সব জায়গায় যুদ্ধের খরচ আমেরিকাকে যুগিয়ে যাচ্ছি ডলার ব্যবহার করে। আমরা যতই বলিনা কেন, অমুক আমেরিকার সৃষ্টি, তমুক ইসরাইলের সৃষ্টি, কিন্তু আমরাই খ্রিস্টানদের তৈরি গণতন্ত্র গিলে ফেলেছি, ইহুদীদের সুদের কারবার ব্যবস্থা খেয়ে নিয়েছি। আবার আমেরিকা, ইসরাইলের বিরোধিতা করছি। কিন্তু আল্লাহ তা’আলা তাঁর পবিত্র কালামে বলে দিয়েছেন, “তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে- তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে কর্তৃত্ব দান করা হবে। যেমনটি তিনি কর্তৃত্ব দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি তাদের জন্য যে দ্বীনকে পছন্দ করেছেন সেটাকে অবশ্যই মজবুত ভিত্তিতে সুদৃঢ় করবেন। তাদের ভয়-ভীতিকে শান্তি ও নিরাপত্তায় পরিণত করে দেবেন যাতে তারা কেবল আমারই এবাদত করে এবং আমার সাথে কাউকে শরিক না করে। এরপর যারা (এ বিশাল নেয়ামতকে) অস্বীকার করবে, তারাই ফাসেক ও অবাধ্য।” [সূরা নুরঃ ৫৫] আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন – “আল্লাহ তা’আলা সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং সাদাকাহকে বৃদ্ধি করেন। [সূরা বাকারাহঃ ২৭৬] সুতরাং, আল্লাহ পরাক্রমশালী তাঁর সত্যবাদী এবং শিরকবিহীন ইবাদতকারী বান্দাদের জমিনে ক্ষমতা দানের মাধ্যমে জমিনকে পবিত্র করবেন এবং ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করে ন্যায়ের রাজ্য বানাবেন। এরই ধারাবাহিকতায় আল্লাহ তা’আলার মুয়াহহীদ বান্দাগণ সুদকে ধ্বংস করার এবং স্বর্ণমুদ্রা ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করে দিয়েছেন, দিনার ও দিরহামের সুন্নাহকে প্রত্যাবর্তন অরেছেন। “আল্লাহ তাঁর নূরকে পূর্ণতা দান করবেনই, যদিও কাফিররা তা অপছন্দ করে”। [আস সফঃ ৮] “তোমরাই হবে বিজয়ী, যদি তোমরা মু’মিন হও”। [সূরা আলে ইমরানঃ ১৩৯]
    Last edited by ibn jiad; 10-31-2017, 08:05 PM.

  • #2
    জাযাকাল্লাহ

    Comment


    • #3
      এই লেখাটি আমাদেরকে একটি মেসেজ দিচ্ছে । তা হল, এখন থেকেই নিজেদের নিকট স্বর্ণ জমা করতে থাকা ।
      এই বিষয়ে আমিরে কাইদাতুল জিহাদ ফি শিবহিল কররতুল হিন্দিয়াহ শায়েখ আসেম উমর হাফিজাহুল্লাহ, তাঁর লেখা "ইমাম মাহদি ও দাজ্জাল" বইয়ে কিছুটা আলোচনা করেছেন। সুতরাং আমাদের সতর্ক হওয়া দরকার , কুফফাররা আমাদের ব্যাংক ব্যাল্যান্সগুলো ছিনিয়ে নেয়ার পূর্বেই।

      Comment

      Working...
      X