Announcement

Collapse
No announcement yet.

বর্তমান প্রেক্ষাপট ও উলামাদের করনীয়!!!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • বর্তমান প্রেক্ষাপট ও উলামাদের করনীয়!!!

    বর্তমান প্রেক্ষাপট ও উলামাদের করনীয়!!!

    আমাদের সমাজ আজ অন্ধকারের অমানিশায় নিমজ্জিত, অশ্লীলতা আর বেহায়পনায় ডুবে আছে আমাদের গোটা সমাজ ব্যবস্থা । আমাদের বর্তমান অবস্থা যেন জাহেলি যুগকেও হার মানিয়েছে । শিরক-বিদায়াত আর অন্যায়-পাপাচারে ছেয়ে গেছে গোটা দেশ ।
    মানুষেরা মুহাম্মাদে আরাবি সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সল্লাম এর আদর্শকে বাদ দিয়ে গণতন্ত্র নামক কুফরি আদর্শকে জীবন বিঁধান হিসাবে মেনে নিয়েছে । মুসলিমদের ঘাড়ের উপরে বসে আছে তাগুত সরকার । যারা মুসলমানদেরকে বিভিন্ন ভাবে ধোঁকা দিচ্ছে, মানব রচিত আইন দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হচ্ছে । আল্লাহ্*র আইনের বিরুদ্ধে আইন প্রনয়ন করা হচ্ছে, এবং আল্লাহ্*র বান্দাদেরকে সেই আইন মানতে বাধ্য করা হচ্ছে । মদ, জুয়া, পতিতালায়ের মত জঘন্য কাজকে বৈধতা দেয়া হয়েছে । সুধকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে । জিহাদের মত পবিত্র ইবাদাতকে জঙ্গিবাদ বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে, তাওহিদ-বাদি মুসলিম ভাই ও হক উলামাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, অনেককে ফাঁসি দেয়া হয়েছে । নিরপরাধ মুসলিমদের প্রতি চালানো হচ্ছে জুলুম আর নির্যাতন ।
    আজকে মসজিদের খুৎবাকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে । বিভিন্ন ধরনের ইসলামী মাজলিস ও ওয়াজ মাহফিল করতে দেয়া হচ্ছে না । ওলামাদেরকে বিভিন্য ক্ষেত্রে অপমান ও লাঞ্চনা করা হচ্ছে । মানবতার মুক্তির দূত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে কটূক্তি করা হচ্ছে । আল্লাহ্* তায়ালাকে গালি দেওয়া হচ্ছে, দাড়ি, টুপি ও কোরআন মাজিদকে অবমাননা করা হচ্ছে, ইসলামের নাম নিশানা মুছে দেয়ার ষড় যন্ত্রকরা হচ্ছে ।
    আমাদের শাসন ক্ষমতা আজকে আমাদের দেশের সব থেকে বড় বড় শয়তানদের হাতে । তারা মানুষের ও রাষ্ট্রের সম্পদকে নিজেদের সম্পদে পরিণত করেছে, অথচ অনেক গরিব দুঃখী না খেয়ে ধুঁকে ধুঁকে মারা যাচ্ছে। গরীবদেরকে তো তাদের প্রাপ্য অধিকার দেয়া হচ্ছে-ই না বরং তাদের মুখের খাবার কেড়ে নেয়া হচ্ছে । রাষ্ট্রীয় সম্পদ নেতাদের খেয়াল-খুশিমত ব্যবহার করা হচ্ছে, ছোট থেকে বড় প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে চলছে দুর্নীতি ও সুদ ঘুষের কারবার । খুন-খারাবি ও ধর্ষণের মত জঘন্যতম অপরাধ এখন নিত্য দিনের কাজে পরিণত হয়েছে । আমাদের যুব সমাজ আজ মদ, গাজা, ফেন্সিডিল ও ইয়াবার মত ধ্বংসাত্মক নেশায় মাতোয়ারা । মুসলিমরা আজ ইসলামী সংস্কৃতির পরিবর্তে পশ্চিমা সংস্কৃতিকে গ্রহণ করে নিয়েছে । আর আমাদের মা-বোনেরা স্টার জলসা আর বিভিন্য টিভি সিরিয়াল নিয়ে ব্যস্ত । মুসলিম মা বোনদের থেকে আজ পর্দা উঠে গেছে, পর্দার নামে তারা বিভিন্য ডিজাইনের আকর্ষণীয় বোরকা পরিধান করছে । সুন্নাতি পোশাকের পরিবর্তে বিভিন্ন নায়ক-নায়িকাদের পোশাক পরিধান করে চলছে আমাদের মুসলিম ভাই বোনেরা ।
    কেন আমাদের আজ এই করুণ অবস্থা ? কেন আমাদের সমাজ আজ অন্ধকারে ডুবে আছে ?
    কেন আমাদের মা-বোন ধর্ষিতা হচ্ছে? কেন কোথাও কোন ন্যায় বিচার নেই, কোথাও কোন শান্তি নেই? কেন আমাদের আলেম সমাজ আজ লাঞ্চিত হচ্ছে ? কি কারনে আজ আমাদের মাথার উপর আল্লাহ্* দ্রোহীরা চেপে বসে আছে ?
    এর উত্তর আমাদের জানা আছে, এই সব গুলোই হচ্ছে আমাদের হাতের অর্জন । কারণ, আজ আমরা আমাদের দায়িত্বকে ভুলে গিয়েছি, আজ আমরা দুনিয়া নিয়ে খুব ব্যস্ত । আমাদের উপর লাঞ্চনাকে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে, কারন আজ আমরা জিহাদ নামক ইবাদাতকে ছেড়ে দিয়েছি । শত্রুরা আমাদের ঘাড়ের উপর চেপে বসে আছে । কারণ, আমাদের মধ্যে মৃত্যুর ভয় আর দুনিয়ার প্রতি ভালবাসা ঢুকে গেছে । আজ আমরা ভুলে গেছি যে মুসলিম হিসাবে আমাদের দায়িত্ব কী ? ওলামা হিসাবে দায়িত্ব কী ? দ্বীনের একজন দ্বায়ী হিসাবে দায়িত্ব কি ? আমরা ভুলে গিয়েছি রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে, সামাজিক ক্ষেত্রে, পারিবারিক ক্ষেত্রে আমাদের কর্তব্য কি ? একজন মুসলিম হিসাবে, রাসুল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শ্রেষ্ঠ উম্মাত হিসাবে, নবীদের উত্তরসরি হিসাবে, আল্লাহ্* রব্বুল আলামিন এর একজন বান্দা হিসাবে, আল্লাহ্*র খলীফা হিসাবে আমাদের কি কোনই দায়িত্ব নেই ? আমাদের মধ্যে যারা মাসজিদে ইমামতি ও মাদ্রাসায় তালীম ও সামান্য দাওয়াতি কাজ করে খুশি আছি, শুধু এটাই কি আমাদের দায়িত্ব ? একজন শ্রেষ্ঠ নবীর শ্রেষ্ঠ উম্মাত হিসাবে এটাই কি যথেষ্ট ? নাকি আরও কোন কিছু করার আছে ? আল্লাহ্* তায়ালা কি এতটুকু দায়িত্ব দিয়েই আমাদেরকে এই ধরাতে পাঠিয়েছেন ?
    আল্লাহ্*র কসম ! এতটুকু দায়িত্ব পালন করা অবশ্যই কোন আলেম বা কোন একজন মুসলিম এর জন্য যথেষ্ট হতে পারেনা । আমরা যদি নবী-রাসুল, সাহাবায়ে কেরাম ও প্রত্যেক যুগের হক ওলামাদের দিকে তাকাই তাহলেই আমরা অনুভব করতে পারি যে, একজন আলেম বা একজন মুসলিমের দায়িত্ব কি হতে পারে !
    কতটা কাজ করে গেছেন হযরত আবু-বকর, হযরত ওমর, হযরত উসমান, হযরত আলী (রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুম) সহ অন্যান্য সাহাবায়ে কেরাম । কতটা কষ্ট সহ্য করে গেছেন হযরত আবু হুরায়রা, হযরত বেলাল, হযরত সালমান ফারসি, হযরত আম্মার, হযরত হাঞ্জালা, হযরত খাব্বাব রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুম সহ অন্যান্য সাহাবায়ে কেরামগন । আমরা কি কল্পনা করতে পারি যে তারা দ্বীনের জন্য কতটা কষ্ট করেছেন ?
    আমাদের ইমাম হযরত আবু হানিফা, আহমাদ ইবনে হাম্বল, ইমাম ইবনে তাইমিয়া, ইমাম বুখারি (রহঃ) সহ অন্যান্য ওলামাগন কতটা কাজ করে গেছেন দ্বীনের জন্য আমরা কি কল্পনা করতে পারি ?
    হক্ব কথা বলার জন্য এই সব বড় বড় ইমামরা কি কারা-ভোগ করেন নি ? নাকি জালিম সরকারের ভয়ে হক্বকে লুকিয়ে ছিলেন ?
    তাহলে কেন আজ আমরা হককে জানার পরেও তা জালিম সরকারের ভয়ে লুকাচ্ছি ?
    আমরা কেন আল্লাহ্*কে ভয় না করে, জাহান্নামকে ভয় না করে এই তাগুত সরকারকে ভয় পাচ্ছি ?
    হে আমাদের সন্মানিত ওলামাগণ ! আমাদেরকে ভয় পেলে চলবেনা । আমরাতো মুসলিম জাতি, মুসলিম জাতি তো কারো নিকটে মাথা নত করেনা ।আমারাতো সেই বীরের জাতি যাদের মধ্যে ছিল হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ, সা’দ বিন আবি ওয়াক্কাস, হামজা, আলী ও ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুম এর মত বড় বড় সাহসী বীর ।
    আমাদেরকে ভুলে গেলে চলবেনা মুহাম্মাদ বিন কাসিম, সালাউদ্দিন আইয়্যুবি, তারেক বিন যিয়াদ এর মত বড় বড় বীর সেনাদের কথা, যারা দেশের পরদেশ জয় করে ছিলেন ।
    আজ আমাদের কী হলো, কেন আমরা আমাদের পূর্ব পুরুষদের ইতিহাস ভুলে গিয়েছি ? কেন আমরা চার দেয়ালের মাঝে সীমাবদ্ধ আছি ?
    হে সন্মানিত ওলামাগণ ! আমরা যদি আমাদের বর্তমান পরিস্থিতে এভাবেই চুপ করে বসে থাকি তাহলে কি আমাদের পরিস্থিতি আরও ভালো হবে ? নাকি দিন দিন আরও ভয়াবহ আকার ধারন করবে ? কবে এই জাতি তাগুত সরকারের হাত থেকে মুক্তি পাবে ? আর কবেই বা মুসলিমরা স্বাধীন ভাবে আল্লাহ্* রাব্বুল আলামিনের ইবাদাত করতে পারবে ?
    এখনও যদি আমরা ঘরে বসে থাকি তাহলে কবে আমাদের মা-বোনেরা হিজাব পরে চলাফেরা করবে ? আর কবেই বা মানুষেরা তাদের সকল খারাপ কাজ থেকে ফিরে ইসলামের পথে আসবে ? কবে এই দেশে ইসলামী খিলাফাহ প্রতিষ্ঠিত হবে ? আর কতদিন পরে একজন মুসলিম স্বাধীন ভাবে বলতে পারবে আমি আল্লাহ্* ছাড়া আর কারো শাসন মানিনা, আল্লাহ্* ছাড়া আর কাউকে ভয় করিনা ।
    হ্যাঁ, আমাদের ওলামাগণ ! এখনই সময় আমাদের জেগে ওঠার । হ্যাঁ এখনই । আমাদের আর পিছু ফিরে তাকাবার সময় নেই । জাতিকে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে অবশ্যই বের করে আনতে হবে, এজন্য আমাদের (ওলামাদের) যা করনীয়. . . .
    ওলামাদেরকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে হক্বের পক্ষে কথা বলে যেতে হবে । এক্ষেত্রে জুলুমও নির্যাতনের ভয় করা যাবেনা এবং জালিমের রক্ত চক্ষুকেও পরোয়া করা যাবেনা ।
    মাসজিদের খতীব ও বক্তাগণ তাঁদের বক্তিতার মাধ্যমে মানুষের মাঝে তাওহীদের সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরতে হবে ।
    উম্মাহর সামনে সাফ করে দিবে যে, আল্লাহ-ই আইন প্রণয়ন সহ সকল ক্ষমতার মালিক এবং এটি তাওহীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশও বটে । তাদের এটি বোঝাবো যে, সার্বভৌমত্ব শুধুমাত্র তাঁরই জন্য এবং পারস্পরিক বিবাদমান সমস্ত বিষয়গুলো শরঈ আইন অনুযায়ী ফায়সালা করা উচিৎ।
    মুহাম্মদ ছালাউদ্দিন।।।।

    an-nafir । 1438 । 2017 । issue-1

  • #2
    যাজাকাল্লাহ ৷ আল্লাহ তা'য়ালা আল-ফোরকান মিডিয়াকে উত্তম উত্তম উপহার দেয়ার তওফিক দান করুন ৷ আমিন ৷

    Comment

    Working...
    X