Announcement

Collapse
No announcement yet.

যেসব কারণে একজন মুসলমান হত্যার উপযুক্ত হয়ে পড়ে- ৮

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • যেসব কারণে একজন মুসলমান হত্যার উপযুক্ত হয়ে পড়ে- ৮



    সাধারণ জনগণ অস্ত্র প্রয়োগ ও হত্যার অধিকার রাখে

    আইম্মায়ে কেরামের বক্তব্য
    ১. ইবনে কাসীর রহ.
    আল্লাহ তাআলার বাণী-
    {وَلْتَكُنْ مِّنكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلى الخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ اْلمُنكَرِ وَأُوْلَئِكَ هُمُ المُفْلِحُونَ}
    “তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা চাই- যারা (মানুষকে) কল্যাণের দিকে ডাকবে, সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজে বাধা দেবে। আর এরূপ লোকই সফলকাম।” (আলে ইমরান: ১০৪)

    এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন,
    والمقصود من هذه الآية أن تكون فرقة من الأمة متصدية لهذا الشأن، وإن كان ذلك واجبا على كل فرد من الأمة بحسبه، كما ثبت في صحيح مسلم عن أبي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: "من رأى منكم منكرا فليغيره بيده، فإن لم يستطع فبلسانه، فإن لم يستطع فبقلبه، وذلك أضعف الإيمان". وفي رواية: "وليس وراء ذلك من الإيمان حبة خردل". اهـ
    “এ আয়াতের উদ্দেশ্য- এ কাজে উম্মাহর একটি দল নিয়োজিত থাকতে হবে। অবশ্য তা নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী উম্মাহর প্রত্যেকের উপরই ফরয। যেমন, সহীহ মুসলিম শরীফে হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
    ((من رأى منكم منكرا فليغيره بيده فان لم يستطع فبلسانه فان لم يستطع فبقلبه وذلك اضعف الايمان))
    ‘তোমাদের যে কেউ কোন মন্দ কাজ দেখবে, সে যেন স্বহস্তে (শক্তিবলে) তা প্রতিহত করে। যদি তাতে সক্ষম না হয়, তাহলে যেন তার যবান দিয়ে প্রতিহত করে। যদি তাতেও সক্ষম না হয়, তাহলে যেন অন্তর দিয়ে প্রতিহত করে। আর এ (অন্তর দিয়ে প্রতিহত করা) হল দুর্বলতম ঈমান।’
    অন্য বর্ণনায় আছে-
    "وليس وراء ذلك من الإيمان حبة خردل"
    ‘এ(অন্তর দিয়ে প্রতিহত করা)র বাহিরে সরিষার দানা বরাবর ঈমানও নেই’।” (তাফসীরে ইবনে কাসীর: ২/৯১)


    ইবনে কাসীর রহ. এর বক্তব্য থেকে বুঝা গেল- আমরা বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকার উম্মাহর প্রতিটি সদস্যের উপরই ফরয। প্রত্যেকের উপর তার নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী।


    ২. ইমাম নববী রহ.
    قال العلماء: ولا يختص الأمر بالمعروف والنهي عن المنكر بأصحاب الولايات، بل ذلك جائز لاَحاد المسلمين. قال إمام الحرمين: والدليل عليه إجماع المسلمين، فإن غير الولاة في الصدر الأول والعصر الذي يليه كانوا يأمرون الولاة بالمعروف وينهونهم عن المنكر، مع تقرير المسلمين إياهم وترك توبيخهم على التشاغل بالأمر بالمعروف والنهي عن المنكر من غير ولاية، والله أعلم. اهـ
    “উলামায়ে কেরাম বলেন, আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকার শুধু প্রশাসনের লোকদের সাথেই খাছ নয়, বরং মুসলিম জনসাধারণের জন্যও তা বৈধ। ইমামুল হারামাইন রহ. বলেন, ‘এর দলীল: মুসলিম উম্মাহর ইজমা। কারণ, সাহাবায়ে কেরাম এবং তাদের পরবর্তী যামানায় শাসকবর্গ ছাড়া সাধারণ জনগণও আমরা বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকার করতেন। মুসলিম উম্মাহ তাদের সমর্থন করেছেন। শাসন-কর্তৃত্ব ছাড়াই আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকারে লিপ্ত হওয়ার কারণে তারা তাদের কোন তিরস্কার করেননি।’ ওয়াল্লাহু আ’লাম।” (শরহে মুসলিম লিন-নববী: ২/২৩)


    লক্ষ্য করুন- (আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকার শুধু প্রশাসনের লোকদের সাথেই খাছ নয়, বরং মুসলিম জনসাধারণের জন্যও তা বৈধ।)


    ৩. ইমাম জাসসাস রহ.
    বক্তব্য-১:
    باب فرض الأمر بالمعروف والنهي عن المنكر.
    مطلب: في أن الأمر بالمعروف والنهي عن المنكر فرض كفاية
    قال الله تعالى: {ولتكن منكم أمة يدعون إلى الخير ويأمرون بالمعروف وينهون عن المنكر} ... قد حوت هذه الآية معنيين. أحدهما: وجوب الأمر بالمعروف والنهي عن المنكر. والآخر: أنه فرض على الكفاية ليس بفرض على كل أحد في نفسه إذا قام به غيره. لقوله تعالى: {ولتكن منكم أمة} وحقيقته تقتضي البعض دون البعض, فدل على أنه فرض الكفاية إذا قام به بعضهم سقط عن الباقين. اهـ
    “বাব: আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকার ফরয।
    মতলব: আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকার ফরযে কেফায়া।


    আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
    {وَلْتَكُنْ مِّنكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلى الخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ اْلمُنكَرِ وَأُوْلَئِكَ هُمُ المُفْلِحُونَ}
    ‘তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা চাই- যারা (মানুষকে) কল্যাণের দিকে ডাকবে, সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজে বাধা দেবে। আর এরূপ লোকই সফলকাম।’
    এ আয়াত দু’টি বিষয় বুঝাচ্ছে:

    এক. আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকার ফরয।
    দুই. তা ফরযে কেফায়া। কতকে তা আদায় করে ফেললে, বাকিদের উপর ফরয থাকবে না।
    কেননা, আল্লাহ তাআলা বলছেন- {وَلْتَكُنْ مِّنكُمْ أُمَّةٌ}‘(এ কাজের জন্য) তোমাদের মাঝে একটি দল থাকা চাই।’ যার দাবি- উম্মাহর একটি অংশ, (সকলে নয়)। বুঝা গেল, তা ফরযে কেফায়া। কতকে তা আদায় করে ফেললে বাকিদের থেকে তার দায়িত্ব-ভার সরে যাবে।” (আহকামুল কুরআন: ২/৩৭)


    বক্তব্য-২:
    আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকার সম্পর্কে অনেকগুলো আয়াত উল্লেখ করার পর বলেন,
    فهذه الآي ونظائرها مقتضية لإيجاب الأمر بالمعروف والنهي عن المنكر, وهي على منازل: أولها تغييره باليد إذا أمكن, فإن لم يمكن وكان في نفيه خائفا على نفسه إذا أنكره بيده فعليه إنكاره بلسانه, فإن تعذر ذلك لما وصفنا فعليه إنكاره بقلبه. اهـ
    “এ সকল আয়াত এবং এ জাতীয় অন্যান্য আয়াতের দাবি- আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকার ফরয। এর বিভিন্ন দরজা রয়েছে। সর্বোচ্চ দরজা হল, সম্ভব হলে শক্তি প্রয়োগে প্রতিহত করে দেয়া। যদি তা সম্ভব না হয় এবং শক্তি প্রয়োগে প্রতিহত করতে গেলে জীবনের আশংকা হয়, তাহলে যবান দিয়ে প্রতিহত করবে। যদি পূর্বোক্ত কারণে (অর্থাৎ জীবনের আশংকায়) তাও অসম্ভব হয়, তাহলে অন্তর দিয়ে প্রতিহত করবে।” (আহকামুল কুরআন: ২/৩৮)

    বক্তব্য-৩:
    এরপর তিনি এ সম্পর্কে অনেকগুলো হাদিস উল্লেখ করেন। তারপর বলেন,
    وفي هذه الأخبار دلالة على أن الأمر بالمعروف والنهي عن المنكر لهما حالان: حال يمكن فيها تغيير المنكر وإزالته, ففرض على من أمكنه إزالة ذلك بيده أن يزيله; وإزالته باليد تكون على وجوه: منها أن لا يمكنه إزالته إلا بالسيف, وأن يأتي على نفس فاعل المنكر فعليه أن يفعل ذلك. كمن رأى رجلا قصده أو قصد غيره بقتله أو بأخذ مال أو قصد الزنا بامرأة أو نحو ذلك, وعلم أنه لا ينتهي إن أنكره بالقول أو قاتله بما دون السلاح فعليه أن يقتله; لقوله صلى الله عليه وسلم: "من رأى منكرا فليغيره بيده" , فإذا لم يمكنه تغييره بيده إلا بقتل المقيم على هذا المنكر فعليه أن يقتله فرضا عليه. وإن غلب في ظنه أنه إن أنكره بيده ودفعه عنه بغير سلاح انتهى عنه لم يجز له الإقدام على قتله, وإن غلب في ظنه أنه إن أنكره بالدفع بيده أو بالقول امتنع عليه, ولم يمكنه بعد ذلك دفعه عنه, ولم يمكنه إزالة هذا المنكر إلا بأن يقدم عليه بالقتل من غير إنذار منه له فعليه أن يقتله. اهـ
    “এসব হাদিস প্রমাণ, আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকারের দুটি হালত রয়েছে-
    যখন অন্যায় প্রতিহত ও দূরীকরণ সম্ভব। এমতাবস্থায় শক্তিবলে তা প্রতিহত করার সামর্থ্য যার আছে, তার উপর ফরয- তা প্রতিহত করা।
    শক্তিবলে প্রতিহত করার বিভিন্ন সূরত হতে পারে:-
    হয়তো তরবারি ব্যবহার করা এবং অন্যায়ে লিপ্ত ব্যক্তিকে হত্যা করা ব্যতীত তা প্রতিহত করা সম্ভব হবে না। এমতাবস্থায় এমনটা করাই (অর্থাৎ তরবারি প্রয়োগে করে হত্যা করে দেয়াই) তার কর্তব্য।
    যেমন- কেউ দেখলো, এক ব্যক্তি তাকে বা অন্য কোন ব্যক্তিকে হত্যা বা তার মাল লুণ্টন করতে চাচ্ছে, কিংবা কোন মহিলার সাথে যিনা করতে চাচ্ছে, কিংবা এ রকম অন্য কোন অন্যায় করতে চাচ্ছে। আর সে জানে, কথা বা অস্ত্রবিহীন বাধার দ্বারা সে বিরত হবে না। এমতাবস্থায় তার কর্তব্য- তাকে হত্যা করে দেয়া। কেননা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
    "من رأى منكرا فليغيره بيده"
    ‘তোমাদের যে কেউ কোন মন্দ কাজ দেখবে, সে যেন স্বহস্তে (শক্তিবলে) তা প্রতিহত করে।’
    যখন উক্ত অন্যায়ে অটল ব্যক্তিকে হত্যা করা ব্যতীত তা প্রতিহত করা সম্ভব না, তখন তার উপর ফরয- তাকে হত্যা করে দেয়া।
    আর যদি তার প্রবল ধারণা হয় যে, অস্ত্র ছাড়া (খালি) হাতে বাধা দেয়ার দ্বারাই সে বিরত হয়ে যাবে, তাহলে হত্যা করতে যাওয়া জায়েয হবে না।
    আর যদি প্রবল ধারণা হয়, মুখে বা বা (খালি) হাতে বাধা দিতে গেলে সে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে এবং এরপর তার পক্ষ থেকে কোন ধরণের পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যতীতই তাকে হত্যা করে দেয়া ছাড়া তাকে তা থেকে বিরত রাখা এবং অন্যায় প্রতিহত করা সম্ভব হবে না- তাহলে তার জন্য আবশ্যক: তাকে হত্যা করে দেয়া।” (আহকামুল কুরআন: ২/৪০)


    অস্ত্র প্রয়োগ ও হত্যার ব্যাপারে জাসসাস রহ. এর বক্তব্য সুস্পষ্ট।


    ৪. ইমাম কুরতুবী রহ.
    فالمنكر إذا أمكنت إزالته باللسان للناهي فليفعله، وإن لم يمكنه إلا بالعقوبة أو بالقتل فليفعل، فإن زال بدون القتل لم يجز القتل، وهذا تلقي من قول الله تعالى:" فقاتلوا التي تبغي حتى تفيء إلى أمر الله". وعليه بنى العلماء أنه إذا دفع الصائل على النفس أو على المال عن نفسه أو عن ماله أو نفس غيره فله ذلك ولا شي عليه. ولو رأى زيد عمراو قد قصد مال بكر فيجب عليه أن يدفعه عنه إذا لم يكن صاحب المال قادرا عليه ولا راضيا به. اهـ
    “যদি যবান দ্বারা অন্যায় প্রতিহত করতে পারে, তাহলে তাই করবে। আর যদি শাস্তি বা হত্যা ছাড়া সম্ভব না হয়, তাহলে তাই করবে। হত্যা ছাড়া প্রতিহত হয়ে গেলে হত্যা জায়েয হবে না। এই মাসআলা গৃহীত হয়েছে আল্লাহ তাআলার এ বাণী থেকে-
    " فقاتلوا التي تبغي حتى تفيء إلى أمر الله"
    ‘(মুসলিমদের দুটি দল পরস্পর আত্মকলহে লিপ্ত হলে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিও। অতঃপর তাদের একটি দল যদি অন্য দলের উপর বাড়াবাড়ি করে, তাহলে) যে দল বাড়াবাড়ি করছে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, যাবত না সে আল্লাহর হুকুমের দিকে ফিরে আসে।’
    এর ভিত্তিতেই উলামায়ে কেরাম বলেন, কোন ব্যক্তির নিজের জান-মালের উপর বা অন্য কারো জান-মালের উপর কেউ আক্রমণ করলে, সে উক্ত আক্রমণকারীকে প্রতিহত করতে পারবে এবং এর বিপরীতে তার উপর কোন জরিমানা বর্তাবে না। যায়েদ যদি আমরকে দেখে যে, সে বকরের মাল লুণ্টন করতে চাচ্ছে, তাহলে দেখতে হবে- মালের মালিক যদি আক্রমণকারীকে প্রতিহত করতে সক্ষম না হয় এবং সে মাল প্রদানে সম্মতও নয়, তাহলে যায়েদের উপর ফরয বকরকে রক্ষা করা এবং আমরকে প্রতিহত করা।” (তাফসীরে কুরতুবী: ৪/৪৯)



    আশাকরি এ বক্তব্যগুলো থেকেই পরিষ্কার হয়েছে যে, সাধারণ জনগণ প্রয়োজনে অস্ত্র প্রয়োগ ও হত্যা করে অন্যায় প্রতিহত করতে পারবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সহীহ বুঝ দান করুন। আমীন।






  • #2
    আখিঁ ফিল্লাহ, জাযাকাল্লাহ। প্রিয় আখিঁ, আপনার পোস্টের অপেক্ষায় ছিলাম। জাযাকাল্লাহ। এ বিষয়ে লিখা শেষ হলে আছাবিয়্যাহ এর উপর লিখার অনুরোধ থাকলো।
    এদেশে যত পতিতালয় আছে তাতেও তো আমাদের হস্তক্ষেপ করা সময়ের দাবী। আমাদের চুখের সামনে হাজার মানুষ খুন হচ্ছে, আমাদের জ্ঞানের ভেতরেই রয়েছে পতিতাদের ঠিকানা, তাহলে আর কবে আনছার আল ইসলাম জাগবে!!!!!!
    আল্লাহ আমাদের ঈমানী হালতে মৃত্যু দান করুন,আমিন।
    আল্লাহ আমাদের শহিদী মৃত্যু দান করুন,আমিন।

    Comment


    • #3
      যাজাকাল্লাহু আহসানাল যাজা

      Comment


      • #4
        Jazakallah.

        Comment


        • #5
          jazakallah

          Comment


          • #6
            zajakallah

            Comment


            • #7
              ------------------
              Last edited by আবু আহমাদ হিন্দী; 03-03-2018, 07:45 AM.

              Comment

              Working...
              X