Announcement

Collapse
No announcement yet.

সিংহ যার ভাষা বুঝে, রাতে আবেদ দিনে মুজাহিদ :::: আকাবিরদের স্মৃতিচারণ-১

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সিংহ যার ভাষা বুঝে, রাতে আবেদ দিনে মুজাহিদ :::: আকাবিরদের স্মৃতিচারণ-১

    সিংহ যার ভাষা বুঝে, রাতে আবেদ দিনে মুজাহিদ

    -------------------------------------আকাবিরদের স্মৃতিচারণ-১

    জাফর ইবনে যায়দ বর্ণনা করেন,

    একবার আমরা এক মুসলিম সেনাদলের সঙ্গে কাবুল অভিযানের উদ্দেশ্যে বের হলাম। কাবুল জয়ের উদ্দেশ্যে প্রেরিত এই সৈন্যদলের একজন সৈনিক হিসেবে শামিল হয়েছিলেন বিখ্যাত তায়েবেয়ী ছিলাহ ইবনে আশয়াম রহ.

    আমি মনে মনে ভাবলাম………………..
    “কোথায় লোকটির নামায আর রাতজাগা ইবাদত! তবে কি লোকেরা খামোখা বলাবলি করে যে সারাত দাড়িয়ে নামায পড়তে পড়তে তার পা গুলো ফুঁলে যায়?!
    গোটা সেনাদল তখন ঘুমে বিভোর, হঠাৎ দেখলাম তিনি জেগে উঠলেন। অন্ধাকরের আড়াল নিয়ে সেনাদের জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে পড়লেন। কিছুটা দূরের ঘন গাছপালায় ঘেরা অরন্যে প্রবেশ করলেন।

    আমি পিছু নিলাম তার…………….

    সেই অরন্যের বেশ কিছুটা গভীরে পৌছার পর কেবলা মুখী হয়ে দাড়ালেন। আল্লাহু আকবার বলে নাময শুরু করলেন। আমি তাকিয়ে রইলাম তার চেহারর দিকে। পূর্নিমার চাঁদের আলোয় ঝলমল করছিল তাঁর মুখাবয়ব। অত্যন্ত শান্ত অঙ্গপ্রতঙ্গ…. প্রাশন্ত হৃদয়…….. যেন এই গভীর নির্জনতার মধ্যে তিনি খুঁজে পাচ্ছেন প্রিয়তমের অন্তরঙ্গতা… দূরত্বের মধ্যে নৈকট্য.. আঁধারে ঔজ্জল্য….

    তিনি ছিলেন মগ্ন আত্মহারা অবস্থায়… হাঠাৎ দেখি অরণ্যের পূর্বকোণ থেকে এগয়ে আসছে এক সিংহ। আমি কয়েকাবর চোখ কচলে আবার তাকালাম। এভাবে বার বার তাকিয়ে যখন নিশ্চত হলাম সিংহের উপস্ততি, তখন তো ভয়ে আমার জান যাবার উপক্রম হলো। উপায় না দেখে কোনো রকমে উঁচু এক গাছের ডালে উঠে হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম।

    সিংহটি ক্রমেই এগিয়ে আসছিল, অথচ তিনি যেমন ছিলেন তেমনই নামযে মত্ত হয়ে আছেন। হয়তো তিনি বুঝতেই পারেননি, কত বড় বিপদের মুখে তিনি পড়েছেন। সিংহটি মাত্র কয়েক কদম দূরে। এতক্ষণে তো তিনি নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন সিংহের উপস্তিতি। কিন্তু তাঁর অবস্থা দেখে আমি সেটা নিশ্চত হতে পারলাম না।
    তাঁর মাঝে কোনো ভাবান্তর হলোনা। কোন দিকে তাঁকে তাকাতেও দেখলাম না……. , তিনি স্বাভাবিকভাবে সেজদায় গেলন, আমার মনে হলো হয়তো সিংহ থাবা বসাবে এবার তাঁর ওপর।
    না, তিন সেজদা থেকে উঠে বসলেন, সিংহটি তাঁর সামন এসে থামল, সম্ভবত তাকে পর্যবেক্ষণ করল গভীরভাবে।
    তিনি সালাম ফেরালেন, সামনে দাঁড়ানো সিংহের দিকে গভীর শান্তদৃষ্টিতে তাকালেন…. ঠোঁট নাড়িয়ে কিছু একটা বললেন অথবা পাঠ করলেন যা আমি শুনতে পেলামনা। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে দেখলাম সিংহটি সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াল। যে পথ দিয়ে এসেছিল আবার সেদিকেই ফিরে যেতে লাগল।

    হ্যঁ বলছিলাম বিখ্যাত তাবেয়ী ছিলাহ ইবনে আশয়ামের কথা,
    ছিলাহ ইবনে আশয়াম রাতজাগা আবেদদের অন্যতম…
    দিনে মুজাহিদদের মাঝে অন্যন্য…


    অন্ধকার যখন জগতের ওপর পর্দা ঝুলিয়ে দিত, জগতের মানুষ যখন নিদ্রার সাগরে তালিয়ে যেত… উঠে তিন সুন্দর ভাবে ওযু করতেন, জায়নামযে দাঁড়িয়ে নামায শুরু করতেন, নিজ প্রভুর প্রেমে মত্ত হয়ে উঠতেন।
    ছিলাহ ইবনে আশয়াম তার ইবাদতের এই অভ্যাসে কখনোই ত্রুটি করতেন না। এর কোনোই তারতম্য হতোনা দেশে, বিদেশে, ব্যস্ততায় কিংবা অবসরে।
    যিনি নববধুকে নিয়ে বাসর রাতটি কাটিয়ে দিলেন যায়নামাজে, স্বামী-স্ত্রী সালাম বিনিময়ের পর বাসর ঘরের সুন্নাত হিসেবে দুরাকাত নামায আদয়ের জন্য দাড়িয়ে গেলেন। এর পর নামযের মজা ও তিব্র আকর্ষণ তাঁদের পেয়ে বসল। কেটে গেল পূর্ণ রজনী। অন্য দিকে খিয়াল করা কোনো ফুরসত পেলেন না।

    ছিলাহ ইবনে আশয়াম কেবল একজন আল্লাহপ্রেমিক, মুত্তাকি, পরহেযগার, আবেদ ও যাহেদই ছিলেন না। এর সংগে তিনি একজন সাহসী, শক্তিশালী বীর মুজাহিদ ও ছিলেন।

    জাফর ইবনে যায়েদ এক যুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেছেন এ ভাবে……….

    আমরা যখন শত্রু দলের মুখামুখি শ্রেনীবদ্ধ হয়ে দাড়িয়ে ছিলাম, ছিলাহ ও তার সঙ্গী হিশাম বাহিনীর কাতর থেকে বেরিয়ে এলেন, মাত্র ওই দুজনই শত্রুর অগ্রবর্তী দলের ওপর বর্শা আর তরবারির আঘাত করতে লাগলেন। তারা টিকতে না পেরে পিছে হটতে বাধ্য হলো। শত্রু বাহিনীর লোকেরা বলা বালি করতে লাগল……….
    মুসলিম বাহিনীর মাত্র দুজন লোক আমাদের এমন নাজেহাল করে ছাড়ল। তাহলে ওরা সকলে মিলে আক্রমণ শরু করলে আমরা কোথায় গিয়ে রক্ষা পাব। তার চেয়ে ভাল চলো ওদের কাছে আত্মসমর্পণ করি।


    সিয়ারুম মনি হায়াতিত তায়েবেঈণ
    আব্দুর রহমান রাফাত পাশা রহ.

    আয় আল্লাহ! হে আমাদের রব্ব, আপনি দয়া করে আমাদেরকে শামিল করে নিন আপনার প্রিয় বান্দাদের কাতারে। আমাদের গুনাহগুলো মাফ করে দিন, আমাদের অযোগ্যতাগুলো যোগ্যতার দ্বারা পূর্ণ করে দিন। আমিন। দ্বীনকে বিজয়ী করুন, আমদের কে পূর্ণসফলতা দান করুন। আমিন।

  • #2
    Jajhakalallah

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহ ভাই , ধারাবাহিকতা রাখলে ভালো হবে ইনশাআল্লাহ্*
      আর বহু নবী ছিলেন, যাঁদের সঙ্গী-সাথীরা তাঁদের অনুবর্তী হয়ে জেহাদ করেছে; আল্লাহর পথে-তাদের কিছু কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তু আল্লাহর রাহে তারা হেরেও যায়নি, ক্লান্তও হয়নি এবং দমেও যায়নি। আর যারা সবর করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন। (আলে ইমরান ১৪৬)

      Comment


      • #4
        জাযাকাল্লাহ

        Comment


        • #5
          জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।ধারাবাহিকতা কামনা করছি।

          Comment

          Working...
          X