Announcement

Collapse
No announcement yet.

“কিতাবুত তাহরীদ ‘আলাল ক্বিতাল”, পর্ব-১

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • “কিতাবুত তাহরীদ ‘আলাল ক্বিতাল”, পর্ব-১


















    আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ

    মুহতারাম এডমিন, মডারেটর (দাওয়াহ্ ইলাল্লাহ্ ফোরাম), অন্যান্য সকল জিহাদী ফোরাম ও মিডিয়ার ভাইগণ এবং তাগুতের বিরুদ্ধে সীসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় লড়াইকারী সকল ভাই ও শুভানুধ্যায়ীগণ!

    “আমার অন্তর জুড়ে শুধু রয়েছে জিহাদ, জিহাদ আর জিহাদ।” এই মর্মের একটা হৃদয়গ্রাহী বাণী আছে আব্দুল্লাহ আযযাম রহিঃ এর। এমনি কিছু অনুভূতি বুকে ধারণ করে, জিহাদ বিষয়ে হৃদয় নিঃসৃত কিছু কথার সমষ্টি নিয়ে আপনাদের সমীপে একটি ছোট্ট হাদিয়া.......... একটি ব্যতীক্রমধর্মী কিতাব.................
    কিতাবটির নাম “কিতাবুত তাহরীদ ‘আলাল ক্বিতাল” (সংক্ষেপে “কিতাবুত্ তাহরীদ”)

    আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেন,
    يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ حَرِّضِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ عَلَى ٱلۡقِتَالِ
    “হে নবী! আপনি মুমিনদেরকে যুদ্ধের জন্য উৎসাহিত করুন।”(সূরা আনফাল 8:65)

    প্রিয় ভাই! বর্তমানে জিহাদ যেমন প্রতিটি সক্ষম মুসলিমের উপর ফরযে আইন, ঠিক তেমনি জিহাদের জন্য সার্বিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে উম্মাহকে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করা (তাহরীদ ‘আলাল ক্বিতাল)-ও ফরযে আইন; ঠিক যেমনটি সালাতের জন্য ওযু ফরযে আইন। কেননা জিহাদী আন্দোলনকে সফল করা তো আর একা একজন কিংবা দুয়েকজনের পক্ষে সম্ভবপর নয়। এর জন্য চাই সমগ্র মুসলিম উম্মাহর সম্মিলিত প্রয়াস। সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে (বিশেষত বাংলা ভাষা-ভাষী উম্মাহকে) জাগ্রত করার লক্ষ্যেই আমাদের এই প্রয়াস “কিতাবুত তাহরীদ ‘আলাল ক্বিতাল”।

    জিহাদ আল্লাহ পাকের ফরয বিধান। আর আল্লাহ পাক কারো উপর তার সাধ্যাতীত কোন কিছু চাপিয়ে দেন না। ইসলাম ফিতরাত তথা মানবের সহজাত প্রবৃত্তির ধর্ম। একজন মু’মিনের ‘ঈমান’ এমনি এক শক্তির নাম যা উপযুক্ত পরিবেশ, সঠিক দিক-নির্দেশনা এবং পথ প্রদর্শন পেলে বিস্ফোরিত হয়। তাই আমাদের এখন ফরয দায়িত্ব হলো বর্তমান যামানার মুসলিমের সুপ্ত কিংবা গুপ্ত, অথবা বিলুপ্তপ্রায় সেই জিহাদী চেতনায় ঝড় কিংবা সাইক্লোন সৃষ্টি করা, আর এমন ঈমানী স্ফুলিঙ্গ তৈরী করে দেয়া যা জিহাদের দাবানলে পরিণত হয়ে দুনিয়ার তাবৎ বাতিলকে ভস্ম করে দিবে, ইনশাআল্লাহ।
    এই লক্ষ্যকেই সামনে রেখে আল্লাহ পাকের মেহেরবানীতে কিছুটা চেষ্টা করা হয়েছে আপনাদের সামনে সামান্য একটি উপহার পেশ করতে, যার নাম “কিতাবুত্ তাহরীদ”। আশা করা যায়, ইনশাআল্লাহ কিতাবটি পাঠক উম্মাহর ঘুমন্ত হৃদয়গুলোকে জাগ্রত করে দিবে, পাথরসম অন্তরগুলো থেকে প্রবাহিত করবে জিহাদপ্রেমের অমীয়ধারা, হীম-শীতল রক্তগুলো পরিণত হবে বিস্ফোরণ্মুখ গোলা-বারুদে, ‘আশীদ্দাউ আলাল কুফ্ফারের’ মূর্ত প্রতীকে, দিকে দিকে সৃষ্টি করবে জিহাদের গুঞ্জরণ আর চূর্ণ হবে আকীদা ও ভ্রান্ত বিশ্বাসের দুর্জ্ঞেয় সব প্রাচীর। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা যেন এমনিভাবে কবুল ফরমান। আমীন।
    প্রিয় ভাই! আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই কিতাবের কথাগুলো প্রকৃতপক্ষে আমার হৃদয়ের একার কথা নয়, এই কথা ও ব্যথা উম্মাহ দরদী প্রতিটি মুজাহিদ ভাইয়ের ক্ষত-বিক্ষত হৃদয়ের তপ্ত অনুভূতি ও রক্তাক্ত কথামালা। আল্লাহ্ পাক সারা দুনিয়ার সকল মুজাহিদ ভাইদেরকে কবুল ফরমান, তাদেরকে কুদরতীভাবে নুসরত করেন ও বিজয় দান করেন এবং আমাকেও এই কাফেলার একজন সৈনিক বানিয়ে দেন। আমীন।



    সংক্ষিপ্ত কিতাব পরিচিতি:

    কিতাবটি ছয় পর্বে সমাপ্ত হবে ইনশাআল্লাহ।
    প্রথম পর্ব: আগ্নেয়গিরি হতে অগ্নুৎপাত
    দ্বিতীয় পর্ব: তাওহীদ ও জিহাদ
    তৃতীয় পর্ব: ভালোবাসি তোমায়, হে জিহাদ!
    চতুর্থ পর্ব: তোমাকেই শুধু চাই, হে শাহাদাত!
    পঞ্চম পর্ব: আর কতকাল আমরা নিজেদেরকে এমনিভাবে ধোকা দিব?
    ষষ্ঠ পর্ব: অগ্নিস্ফুলিঙ্গ হতে দাবানল



    মুহতারাম ভাইয়েরা, আপনাদের একজন নগন্য ভাই হিসেবে অনুরোধ করব, আমরা সকলেই ইনশাআল্লাহ মেহেরবানী করে নিজেরা কিতাবটি পড়ব এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য ‍উপকারী মনে হলে উম্মাহর কাছে পৌঁছে দিব, ইনশাআল্লাহ্। আল্লাহ পাক আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াসকে যেন সহজ করেন এবং কবুল করেন। আমীন।
    সর্বোপরি, আপনাদের কাছে দোয়ার দরখাস্ত, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেন কিতাবটিকে কবুল করেন, আমাদের নাজাতের উসীলা বানিয়ে দেন এবং সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য উপকারী বানিয়ে দিন। আমাকেও মুজাহিদ ফী সাবীলিল্লাহ এবং দা‘ঈ ইলাল্লাহ হিসেবে কবুল করুন। এবং সর্বশেষে শাহাদাতের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে “রফীকে আ’লা”র সাথে মিলিত হওয়ার তাওফীক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমীন। ছুম্মা আমীন।


    ************************************************** ************************************************** *
    কিতাবের পিডিএফ লিংক-

    লিংক-১:


    https://archive.org/details/kitabuttahrid1




    Full Text Link:

    https://justpaste.it/3xq3t


    জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।


    ************************************************** ************************************************** ***
    ************************************************** ************************************************** ***


    ************************************************** ************
    ************************************************** ***********

    এই পর্যন্ত প্রকাশিত কিতাবুত তাহরীদ এর (পরবর্তী পর্বগুলো) পড়ুন নিচের লিংকে

    পর্ব-১: আগ্নেয়গিরি হতে অগ্নুৎপাত:
    দাওয়াহ্ ইলাল্লাহ্’ ফোরাম পোস্ট লিংক-https://bit.ly/tahrid1
    পিডিএফ লিংক: https://archive.org/details/kitabuttahrid1
    ....................................
    পর্ব 02: তাওহীদ ও জিহাদ
    দাওয়াহ্ ইলাল্লাহ্’ ফোরাম পোস্ট লিংক- https://bit.ly/tahrid2
    পিডিএফ লিংক: https://archive.org/details/kitabuttahrid2
    ....................................
    পর্ব ০৩: ভালোবাসি তোমায় হে জিহাদ!
    দাওয়াহ্ ইলাল্লাহ্’ ফোরাম পোস্ট লিংক- https://bit.ly/tahrid3
    পিডিএফ লিংক: https://archive.org/details/tahrid3
    ......................................
    পর্ব ০৩: তোমাকেই শুধু চাই হে শাহাদাত!
    দাওয়াহ্ ইলাল্লাহ্’ ফোরাম পোস্ট লিংক- https://bit.ly/tahrid4

    পিডিএফ লিংক: https://archive.org/details/tahrid4_20230125
    ************************************************** **********

    ************************************************** ***********
    ইসলামের সোনালি অতীত, উম্মাহর বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যত বিজয়গাঁথা নিয়ে একটি কিতাব-
    কালজয়ী ইসলাম”
    দাওয়াহ্ ইলাল্লাহ্ পোস্ট লিংক: https://bit.ly/kaljoyi-islam
    পিডিএফ লিংক: https://bit.ly/kaljoie-islam
    জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।


    ************************************************** ************************************************** ***
    ************************************************** ************************************************** ***



    كتاب التحريض على القتال

    কিতাবুত্ তাহরীদ ‘আলাল ক্বিতাল
    (প্রথম পর্ব)






    ========================================

    بسم الله الر حمن الر حيم

    يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ حَرِّضِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ عَلَى ٱلۡقِتَالِ


    "‌হে নবী! আপ‌নি মু‌মিনদেরকে যু‌দ্ধের জন‌্য উদ্বুদ্ধ করুন।"

    (সূরাআনফাল০৮:৬৫)



    তাহরীদআলাল ক্বিতাল”: একটি ভুলে যাওয়া ফরযঃ
    .................................................. .................................................. ...........

    الحمد لله وحده والصلاة والسلام على من لا نبي بعده- أما بعد
    বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি, মুসলিম উম্মাহর উপর একের পর এক অবিরাম আগ্রাসন, মুসলিম ভূমিসমূহ হতে মুসলমানদের উৎখাত ও জবরদখল, বন্দী ভাইদের উপর অবর্ণনীয় অত্যাচার আর মা-বোনদের বে-ইজ্জতি, মুসলিম দেশগুলোতে মুরতাদ সরকারের উপস্থিতি ইত্যাদি বিবেচনায় উম্মাহর ‘হকপন্থী’ ফুকাহায়ে কেরাম এই মত পোষণ করেন যে- “বর্তমানে জিহাদ ও ক্বিতাল (সশস্ত্র যুদ্ধ) সারা বিশ্বের প্রতিটি সক্ষম মুসলমানের উপর ফরযে আইন, যতক্ষণ না মুসলিম ভূমিসমূহ আবারো পুনরুদ্ধার হচ্ছে, মুরতাদ সরকারগুলোকে হটানো হচ্ছে এবং সারা বিশ্বে খিলাফাহ কায়েম হওয়ার মাধ্যমে মুসলমানদের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হবে। যুদ্ধ করতে সক্ষম কেউই এই হুকুমের বহির্ভূত নয়।”

    ‘ফরযে আইন’ বলা হয় আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘লার ঐ সকল ফরয হুকুমকে যেগুলো আদায় করা প্রতিটি মুসলমানের উপর আলাদাভাবে ব্যক্তিপর্যায়ে ফরয। যেমন: প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত নির্দিষ্ট সময়ে আদায় করা, রমযান মাসে সিয়াম পালন করা, নামায শুদ্ধ হয় পরিমাণ কুরআন কারীম শুদ্ধ করা ও মুখস্থ করা ইত্যাদি।

    আর যে সকল হুকুম আলাদাভাবে ব্যক্তিপর্যায়ে ফরয নয়, কিছু মুসলমান আদায় করলে সকলের পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যায়, তাদেরকে ‘ফরযে কিফায়া’ বলা হয়। যেমন: জানাযার সালাত, কুরআন কারীম হিফয্ করা ইত্যাদি।

    আর কিছু কিছু হুকুম অবস্থার আলোকে কখনো ফরযে কিফায়া আবার কখনো ফরযে আইন হয়ে যায়। যেমন জিহাদ করা/আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করা; যা সাধারণভাবে ‘ফরযে কিফায়া’, ক্ষেত্র বিশেষে ‘ফরযে আইন’। বর্তমানে জিহাদ অবশ্যই ফরযে আইন, তথা ব্যক্তিগতভাবে সক্ষম প্রতিটি মুসলমানের উপর জিহাদ করা বর্তমানে ফরয। কেউ এই হুকুম পালন না করলে সে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার নিকট ‘ফরয তরককারী’ (ফাসেক) হিসেবে গণ্য হবে; যদিও সে দ্বীনের অন্য কোনো শাখায় মেহনত করে থাকে।

    দ্বীনের অন্য কোনো ক্ষেত্রে মেহনত করলেও যেমন সালাত আদায় করা কিংবা সিয়াম পালন করার হুকুম রহিত হয়ে যায় না, ঠিক তেমনি জিহাদ ফরযে আইন অবস্থায় অন্য কোন মেহনতের ওযরে জিহাদ পরিত্যাগ করা যাবে না। অবশ্যই প্রত্যেককে জিহাদ করতে হবে। নতুবা সে ফরয তরককারী (ফাসেক) হিসেবে গণ্য হবে, যদিও তিনি দ্বীনের অন্যান্য ক্ষেত্রে ‘তারকাসম’(!) হন। এই অবস্থায় জিহাদ ত্যাগ করা ‘গুনাহে কবীরা’। আর একটি কবীরা গুনাহ্ই জাহান্নামে নেয়ার জন্য যথেষ্ট।

    দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমানে জিহাদ করাটা মুসলিম উম্মাহর জন্য যতটুকু জরুরী, উম্মাহ ঠিক ততটুকুই গাফেল। উম্মাহ্ এখনো গভীর নিদ্রায় শায়িত। তাই এখন সময় উম্মাহ্কে জাগ্রত করার।
    বর্তমানে জিহাদ যেমন প্রতিটি সক্ষম মুসলিমের উপর ফরযে আইন, ঠিক তেমনি জিহাদের জন্য সার্বিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে উম্মাহকে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করা (তাহরীদ ‘আলাল ক্বিতাল)-ও ফরযে আইন; ঠিক যেমনটি সালাতের জন্য ওযু ফরযে আইন। কেননা জিহাদী আন্দোলনকে সফল করা তো আর একা একজন কিংবা দুয়েকজনের পক্ষে সম্ভবপর নয়। এরজন্য চাই সমগ্র মুসলিম উম্মাহর সম্মিলিত প্রয়াস। সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে জাগ্রত করার লক্ষ্যেই আমাদের আজকের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস “কিতাবুত তাহরীদ্ আলাল ক্বিতাল”।

    সশস্ত্র জিহাদ তথা ক্বিতাল/যু‌দ্ধের জন্য মুমিনদেরকে উৎসাহিত করার জন্য আল্লাহ পাক তাঁর প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আদেশ করে ইরশাদ করেন,

    يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ حَرِّضِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ عَلَى ٱلۡقِتَال
    “হে নবী! আপনি মুমিনদেরকে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করুন।”(সূরা আনফাল ০৮:৬৫)

    فَقَٰتِلۡ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ لَا تُكَلَّفُ إِلَّا نَفۡسَكَۚ وَحَرِّضِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَۖ
    “(হে নবী!) আপনি (একা হলেও) আল্লাহর পথে যুদ্ধ করুন; আপনার আপন সত্ত্বা ব্যতীত অন্য কারো দায় আপনার উপর বর্তাবে না (আপনার ডাকে অন্য কেউ যদি জিহাদ না করে তাহলে এজন্য আপনি দায়ী নন)। আর আপনি মুমিনদেরকে যুদ্ধের জন্য উৎসাহিত করতে থাকুন।” (সূরা নিসা ৪: ৮৪)

    রাসূলুল্লাহ ﷺ এই ফরয দায়িত্ব আদায় করে আমাদের দেখিয়ে গেছেন কিভাবে তা করতে হয়- নিজে ময়দানে বীরত্ব প্রকাশের মাধ্যমে কিংবা কখনো জিহাদ ও শাহাদাতের ফাযায়েল বর্ণনা করে, কখনোও বা উত্তপ্ত ভাষণের মাধ্যমে, কখনো দুনিয়াবী যিন্দেগীর হাকীকত অনুধাবন করিয়ে আবার কখনোবা জান্নাতের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে। আর প্রিয় নবীর প্রিয় সাহাবা রাদিয়াল্লাহু আনহুম আযমাঈনগণও তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে উম্মাহকে জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করে গিয়েছেন। কয়েকটি উদাহরণ-

    *** উহুদ যুদ্ধের পরের ঘটনা। আবু সুফিয়ান (তখনও তিনি মুসলমান হননি) রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বদরের প্রান্তরে দ্বিতীয়বার যুদ্ধের আহ্বান করেন। নবীজী ﷺ তার এই আহ্বানকে সানন্দে গ্রহণ করেন। এদিকে আবু সুফিয়ান কুরাইশ নেতৃবৃন্দকে বলেন, তিনি সৈন্য পাঠানোর আগে মুসলমানদের ভীত-সন্ত্রস্ত করতে চান। তিনি এ লক্ষ্যে ইহুদীদের হাত করেন এবং দ্বিগুণ পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে তাদেরকে মদীনায় পাঠান। তাদের দায়িত্ব ছিল, মদীনায় গিয়ে এই গুজব ছড়ানো যে, কুরাইশরা বিশাল এক বাহিনী নিয়ে বদরে আসছে, যা ইতোপূর্বে মুসলমানরা দেখেনি। মদীনার মুসলমানরা এই গুজবকে সত্য বলে বিশ্বাস করে। ফলে তাদের চেহারায় এক মারাত্মক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। শেষ পর্যা‌য়ে এই গুজব এবং তাতে সাহাবায়ে কেরামের ভীতির কথা নবীজী ﷺ-এর পবিত্র দরবারে পৌঁছলে, তিনি সাহাবায়ে কেরামকে উদ্দেশ্য করে বললেন-
    والذي نفسي بيده، لأخرجن وإن لم يخرج معي أحد
    (হে সাহাবীরা! তোমরা যদি মূর্তি-পূজারী মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ করতে ভয় পেয়ে থাক, তাহলে শুনে নাও!) যে সত্তার হাতে আমি মুহাম্মাদের প্রাণ, তাঁর নামে শপথ করে বলছি, কেউ না গেলেও আমি একাই তাদের মোকাবেলার জন্য বদরে যাবো।
    নবীজী ﷺ-এর এক কথাতেই সাহাবায়ে কেরামের মাঝে গোজবের প্রতিক্রিয়া দূর হয়ে যায়। পরের দিনই মুসলমানরা বদরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। ঐদিকে আবু সুফিয়ানও প্রথমে তার বাহিনী নিয়ে বের হয়েছিলেন, কিন্তু অজানা ভীতির কারণে, মাঝপথ থেকে তিনি তার বাহিনী নিয়ে যুদ্ধ না করেই মক্কায় পালিয়ে যান। (আল মাগাযি লিল ওয়াকিদি, ৩৮৭/১)

    *** রাসূলুল্লাহ ﷺ সাহাবায়ে কেরামকে শাহাদাতের প্রতি উৎসাহ প্রদান করার জন্য নিজে শাহাদাতের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করে ইরশাদ ফরমান,
    والذي نفسي بيده لوددت أني أقتل في سبيل الله، ثم أحيا، ثم أقتل، ثم أحيا، ثم أقتل، ثم أحيا ثم أقتل
    “সে সত্তার শপথ যাঁর হাতে মুহাম্মাদের জান! অবশ্যই আমি আশা করি: আমি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে যাব এবং এতে শহীদ হয়ে যাব, এরপর আবার জিহাদে যাব এবং আবার শহীদ হবো, এরপর আবার জিহাদে যাব এবং আবার শহীদ হয়ে যাবো।” (বুখারী-৩১২৩ এবং মুসলিম-১৮৭৬)

    *** মদীনায় রাসূলুল্লাহ্ ﷺ স্বপ্নে দেখেন যে, তিনি এবং সাহাবায়ে কেরাম মসজিদে হারামে প্রবেশ করেছেন। তিনি কাবাঘরের চাবি গ্রহণ করেছেন এবং সাহাবাসহ তাওয়াফ করছেন। অতঃপর ষষ্ঠ হিজরীর পহেলা জিলকদ চৌদ্দশ, মতান্তরে পনেরশ সাহাবীসহ রাসূলুল্লাহ ﷺ মক্কার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। সঙ্গে নিলেন মুসাফিরসুলভ অস্ত্র (কেবল কোষবদ্ধ তরবারি)।
    মক্কার কুরাইশরা নবীজি ﷺ-এর আগমনের সংবাদ শোনামাত্রই পরামর্শ করে যে কোনো মূল্যে তাঁকে বাইতুল্লাহ্য় প্রবেশে বাধা দেয়ার সংকল্প করে।
    নবীজি ﷺ সানিয়াতুল মারার নামক স্থানে উপস্থিত হলে বুদায়ল ইবনু ওয়ারাকা খুযাঈ তার খুযাআ গোত্রের কতিপয় ব্যক্তিদের নিয়ে রাসূলুল্লাহ্ ﷺ এর কাছে আসল। তারা তিহামাবাসীদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল ﷺ-এর প্রকৃত হিতাকাঙ্ক্ষী ছিল। বুদাইল বলল, আমি কা‘ব ইবনু লুওয়াই ও আমির ইবনু লুওয়াইকে দেখে এসেছি। তারা হুদাইবিয়ার প্রচুর পানির নিকট অবস্থান করছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে বাচ্চাসহ দুগ্ধবতী অনেক উষ্ট্রী। তারা আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ও বাইতুল্লাহ্ যিয়ারতে বাধা দেয়ার জন্য প্রস্তুত। তখন আল্লাহর রসূল ﷺ গর্জে উঠলেন,
    إِنَّا لَمْ نَجِئْ لِقِتَالِ أَحَدٍ، وَلَكِنَّا جِئْنَا مُعْتَمِرِينَ، وَإِنَّ قُرَيْشًا قَدْ نَهِكَتْهُمُ الْحَرْبُ، وَأَضَرَّتْ بِهِمْ، فَإِنْ شَاءُوا مَادَدْتُهُمْ مُدَّةً، وَيُخَلُّوا بَيْنِي وَبَيْنَ النَّاسِ، فَإِنْ أَظْهَرْ فَإِنْ شَاءُوا أَنْ يَدْخُلُوا فِيمَا دَخَلَ فِيهِ النَّاسُ فَعَلُوا، وَإِلاَّ فَقَدْ جَمُّوا، وَإِنْ هُمْ أَبَوْا فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، لأُقَاتِلَنَّهُمْ عَلَى أَمْرِي هَذَا حَتَّى تَنْفَرِدَ سَالِفَتِي، وَلَيُنْفِذَنَّ اللَّهُ أَمْرَهُ
    ‘আমি তো কারো সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসিনি; বরং ‘উমরাহ করতে এসেছি। যুদ্ধ অবশ্যই কুরাইশদের দুর্বল করে দিয়েছে, কাজেই তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা চাইলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাদের সঙ্গে সন্ধি করতে পারি, আর তারা আমার ও কাফিরদের মধ্যকার বাধা তুলে নিবে। যদি আমি তাদের উপর বিজয় লাভ করি তাহলে অন্যান্য ব্যক্তি ইসলামে যেভাবে প্রবেশ করেছে, তারাও ইচ্ছা করলে তা করতে পারবে। আর না হয়, তারা এ সময়ে শান্তিতে থাকবে। কিন্তু তারা যদি আমার প্রস্তাব অস্বীকার করে, তাহলে সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমার গর্দান আলাদা না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাব। আর অবশ্যই আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করবেন।’ (বুখারী-২৭৩২)

    *** মুতার যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে এক ভয়াবহ অসম যুদ্ধ। এই যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ ﷺ তিনজন সেনাপতি নির্বাচন করে দিয়েছিলেন এই শর্তে যে, একজন শহীদ হলে আরেকজন পতাকা তুলে নিবেন। মুতার যুদ্ধে মাত্র তিন হাজার মুসলিম সৈন্য দুই লক্ষাধিক রোমান-আরব সম্মিলিত বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। মুসলমানরা এই বিশাল সংখ্যক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের ব্যাপারে প্রস্তুত ছিলেন না। আসলে তারা কল্পনাও করেননি, কাফেরদের বাহিনী এত বিশাল হবে। তাই সিদ্ধান্ত হলো, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে পত্র পাঠিয়ে শত্রুর লোক লস্করের সংখ্যা জানাবেন। তিনি হয় আরো সৈন্য পাঠাবেন, নচেত যা ভালো মনে করেন নির্দেশ দিবেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রাদিয়ালাহু আনহু দাঁড়িয়ে গেলেন এবং মুসলমানদেরকে যুদ্ধের জন্য উৎসাহিত করে এক জ্বালাময়ী ভাষণ দিলেন,

    يَا قَوْمِ، وَاَللَّهِ إنَّ الَّتِي تَكْرَهُونَ، لَلَّتِي خَرَجْتُمْ تَطْلُبُونَ الشَّهَادَةُ، وَمَا نُقَاتِلُ النَّاسَ بِعَدَدِ وَلَا قُوَّةٍ وَلَا كَثْرَةٍ، مَا نُقَاتِلُهُمْ إلَّا بِهَذَا الدِّينِ الَّذِي أَكْرَمَنَا اللَّهُ بِهِ، فَانْطَلِقُوا فَإِنَّمَا هِيَ إحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ إمَّا ظُهُورٌ وَإِمَّا شَهَادَةٌ

    “হে মুসলমানগণ! আল্লাহর কসম, আজ তোমরা যা অপছন্দ করছ সেটাই তোমরা কামনা করছিলে। আর তা হলো শাহাদাত। আমরা সংখ্যা-শক্তি বা সংখ্যাধিক্যের জোরে লড়াই করি না। যে জীবনব্যবস্থার দ্বারা আল্লাহ আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন সেটির জন্য আমরা লড়াই করি। অতএব এগিয়ে যাও, বিজয় বা শাহাদাত এ দুটো উত্তম জিনিসের যে কোন একটা অবশ্যই আমাদের জন্য নির্ধারিত আছে।” (সীরাতে ইবনে হিশাম, ৩৭৫/২)

    এভাবে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করার অসংখ্য ঘটনায় সীরাত ও হাদীসের গ্রন্থসমূহ সমৃদ্ধ। সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলার জন্য।

    প্রিয় ভাই!
    জিহাদ আল্লাহ পাকের বিধান। আর আল্লাহ পাক কারো উপর তার সাধ্যাতীত কোন কিছু চাপিয়ে দেন না। ইসলাম ফিতরাত তথা মানবের সহজাত প্রবৃত্তির ধর্ম। একজন মু’মিনের ‘ঈমান’ এমনি এক শক্তির নাম যা উপযুক্ত পরিবেশ, সঠিক দিক-নির্দেশনা এবং পথ প্রদর্শন পেলে বিস্ফোরিত হয়। তাই আমাদের এখন ফরয দায়িত্ব হলো একজন মুসলিমের সুপ্ত কিংবা গুপ্ত, অথবা বিলুপ্তপ্রায় সেই জিহাদী চেতনায় ঝড় কিংবা সাইক্লোন সৃষ্টি করা, আর এমন ঈমানী স্ফূলিঙ্গ তৈরী করে দেয়া যা জিহাদের দাবানলে পরিণত হয়ে দুনিয়ার তাবৎ বাতিলকে ভস্ম করে দিবে।

    আল্লাহ পাক আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াসকে কবুল করুন। আমাদের নাযাতের উসীলা বানান। আমাদেরকে মুজাহিদ ফী সাবীলিল্লাহ এবং দা‘ঈ ইলাল্লাহ হিসেবে কবুল করুন। এবং সর্বশেষে শাহাদাতের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে “রফীকে আ’লা”র সাথে মিলিত হওয়ার তাওফীক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমীন। ছুম্মা আমীন।
    -মুস‘আব ইল‌দিরিম
    ২৩ রমযান, ১৪৪৩ হিজরি
    (২৫ এপ্রিল, ২০২২ ঈসায়ী)
    রাত ১২:৫৫ মি., রোজ সোমবার।



    ************************************************



    প্রথম পর্ব:
    আগ্নেয়গিরি হতে অগ্নুৎপাত

    সূচিপত্র
    কিছু ব্যথা: ১৬
    উম্মাহ এলবাম (ফটো গ্যালারী): ২২
    ফিলিস্তিন অধ্যায়: ২২
    সিরিয়া ও ইরাক অধ্যায় : ২৭
    ‘গুয়ান্তানামো বে’ কারাগার অধ্যায়: ৩৩
    উইঘুর অধ্যায়: ৩৫
    কাশ্মীর, ভারত অধ্যায়: ৩৭
    আরাকান (রোহিঙ্গা) অধ্যায়: ৪৩
    কিছু আত্মসমালোচনা: ৪৮
    ব্যথার ঔষধ: ৬৯



    কিছু ব্যথা


    সারা বিশ্বব্যাপী কুফ্ফারদের বিষাক্ত থাবার আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত, রক্তাক্ত এক জাতির নাম ‘মুসলিম জাতি’। মাশরিক থেকে মাগরিব, শিমাল থেকে জুনুব - মুসলিম জাতি আজ ‘অসহায়’ বানে ভাসা খড়কুটার ন্যায়। যুগ যুগ ধরে যে জাতি বিশ্বকে নেতৃত্ব দিল, যে জাতি সম্মান ও ইজ্জতের স্বর্ণশিখরে আরোহন করেছিল, যে জাতি বিশ্ববাসীকে সভ্যতার আলোর সন্ধান দিয়ে আসল, আজ সে জাতিই অসভ্য, বর্বর কুফ্ফারদের আক্রমনের একমাত্র লক্ষ্য। আজ মুসলমানদের ইতিহাস মানেই রক্তক্ষরণের ইতিহাস। আজ মুসলমানদের ইতিহাস মানেই অপমান-অপদস্তি, যুলুম-নির্যাতন, ধর্ষণ-অপহরণ, গুম আর জেলবন্দির ইতিহাস। আজ মুসলমানদের ইতিহাস মানেই অধিকার হরণ আর পরাধীনতার ইতিহাস। আজ মুসলমানদের ইতিহাস মানেই ‘ঈমান বিক্রয়কারী’ মুনাফেক আর গাদ্দার কর্তৃক বিশ্বাসঘাতকতায় শিকার হওয়ার ইতিহাস। আজ মুসলিম দেশগুলোতে মুসলমানরা সংখ্যায় বেশি হওয়া সত্ত্বেও তাদের সাথে সংখ্যালঘুদের ন্যায় আচরণ করা হচ্ছে; ধর্মীয় স্বাধীনতা হতে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কিন্তু কেন আজ মুসলমানদের এই দুরবস্থা???

    অথচ আমাদের ছিল এক সোনালী অতীত, গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য। একদিন অর্ধজাহান শাসন করেছি আমরা। পৃথিবীর এক প্রান্ত হতে অপর প্রান্তে ঘোড়া ছুটিয়েছে আমাদের বীরেরা। আমাদের দেহ ছিল তেজোদ্দীপ্ত। শির ছিল উন্নত। সেদিন আমাদের খুনে স্ফূলিঙ্গ উঠতো, নিঃশ্বাসে লাভা ছড়াতো। সন্ধ্যাবেলা আমরা তাঁবুতে ফিরতাম ক্লান্ত-শ্রান্ত দেহে, রক্তাক্ত বদনে। তথাপি গভীর রজনীতে আমাদের তাঁবুগুলো থেকে ভেসে আসতো কান্নার ধ্বনি। আমরা ছিলাম দিনের বীর, রাতের সন্ন্যাসী। কন্টকাকীর্ণ, দুর্গমগিরি আমাদের কাফেলাকে রুখতে পারেনি। তেমনি পারেনি সাগরের উত্তাল তরঙ্গমালা। সমুদ্রবুকে ঘোড়া হাঁকানো সে তো আমাদের গর্ব। গভীর জঙ্গলে হিংস্র হায়েনার সাথে সহাবস্থান সে তো আমাদের ঐতিহ্য। এভাবেই ইতিহাসের পরতে পরতে আমরা জন্ম দিয়েছি অবিশ্বাস্য নানা বিশ্বাসের। পৃথিবীর কোথাও আমাদের কেউ লাঞ্ছিত হবে, এটি ছিল অসম্ভব। আমাদের দিকে কেউ চোখ তুলে তাকাবে, এটা ছিল অকল্পনীয়।

    কিন্তু হায়! আজ সবই অতীত ইতিহাস। যেন রূপকথার গল্প। দুই চোখ মেলে পৃথিবীর চারিদিকে একটু তাকিয়ে দেখি, কোথায় এসে দাঁড়িয়েছি আজ আমরা। চক্ষুদ্বয় অশ্রুসজল হয়ে যাবে। হৃদয় টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। জবান স্তব্ধ হয়ে যাবে। দেহ নিথর হয়ে আসবে। যেন হাহুতাশ আর আফসোস করা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই। কিন্তু কেন?

    ইসলামের প্রাথমিক যুগে একবার মদীনায় আদমশুমারি হয়েছিল। তখন সাহাবায়ে কেরামের সংখ্যা ছিল মাত্র দেড় হাজারের মত। এই দেড় হাজার সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহুম আযমাঈনগণকে নিয়েই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনাকেন্দ্রিক ইসলামী সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন, যার বিস্তৃতি হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহুর যামানাতেই অর্ধপৃথিবী ছাড়িয়ে যায়।
    প্রশ্ন হলো, পৃথিবীতে আল্লাহর দ্বীন ও মুসলমানদের নিরাপত্তা কায়েমের জন্য যদি দেড় হাজার সাহাবীই যথেষ্ট হয়, তাহলে বর্তমান বিশ্বে একশ সত্তর কোটি মুসলমান গেল কোথায়?

    লক্ষ লক্ষ হাফেয-আলেম-মুফতী, লেখক, গবেষক, তালিবে ইলম, সালেকীন-যাহেদীন, দাঈ-মুবাল্লিগ থাকা সত্ত্বেও কেন আজ মুসলমানদের এই হালত?

    কেন আজ পশ্চিমা শক্তি মুসলিম বিশ্বের উপর অবিরত ক্রুসেড পরিচালনা করে যাচ্ছে?

    কেন আজ মুসলমানদের ঘরে ঘরে কারবালার মাতম আর আহাজারি? কেন আজ মায়ের বুক খালি হচ্ছে, ভাইয়ের বুক থেকে রক্ত ঝরছে?

    কেন আজ গর্ভবতী মায়ের গর্ভের শিশুকে স্নাইপার দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে?

    কেন আজ দুধের অবুঝ শিশুর শাহাদাতের উপর মমতাময়ী মায়ের আহাজারি আর আর্তচিৎকার?

    আজ কোন্ সাহসে একজন মাত্র খ্রিস্টান মসজিদে ঢুকে শতাধিক মুসলমানকে “ভিডিও গেমস খেলা”র মতো হত্যা করছে?

    আজ কেন বোমার আঘাতে মুসলমানের দেহ টুকরা টুকরা হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে?

    আজ কেন মুসলমানদের জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে, হত্যা করে গ্রামের পর গ্রাম, শহরের পর শহর বিরান করে দেয়া হচ্ছে?

    আজ কেন মুসলমানদেরকে তাদের ভূমি থেকে বিতাড়িত করা হচ্ছে?

    আজ কেন রাসায়নিক বোমা মেরে হাজার হাজার মুসলিম শিশুকে শহীদ করা হচ্ছে?

    আজ কেন মায়ের বুক থেকে কোলের শিশুকে কেড়ে নিয়ে পদদলিত করে হত্যা করা হচ্ছে?

    আজ কেন আফগান থেকে কাশ্মির পর্যন্ত, ইরাক থেকে ফিলিস্তিন পর্যন্ত, চেচনিয়া থেকে উইঘুর পর্যন্ত, মায়ানমার থেকে আসাম পর্যন্ত, ইয়েমেন থেকে সিরিয়া পর্যন্ত অভিশপ্ত ইহুদী আর হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান মালাউনরা পানির মত সস্তা মনে করে মুসলমানদের রক্ত প্রবাহিত করছে?

    আবু গারীব কারাগারের ফাতেমা নূর থেকে নিয়ে মুসলিম নারী ড. আফিয়া সিদ্দিকীর মত অগণিত বোনেরা কেন আজ তাদের বর্বরতার শিকার হচ্ছে?

    আজ কেন আমার মা-বোনকে ধর্ষণ করে তাদের স্তন কাটা হচ্ছে? তাদের লজ্জাস্থান বিকৃত করা হচ্ছে?

    আজ কেন আমার মা-বোনের গর্ভে কুকুর, শূকর আর হায়েনাদের ভ্রূণ প্রস্ফূটিত হচ্ছে?

    আজ কেন বোরকা পরিহিতা আমার বোনকে হত্যা করে বুকের উপর পা রেখে জারজ হারামীর বাচ্চারা কফি খাচ্ছে?

    কেন আজ মুসলমানদেরকে পতঙ্গের ন্যায় আগুনে পুড়িয়ে কুফ্ফাররা আনন্দ উল্লাস করছে?

    গুয়ান্তানামো বে থেকে বাগরাম জেল পর্যন্ত, কেল্লায়ে জঙ্গী থেকে শিবারগান জেল পর্যন্ত এবং সিআইএ এর গোপন কারাগার থেকে নিয়ে মোসাদ আর ‘র’ এর বন্দীশালা পর্যন্ত, রিমান্ডের নামে কেন আজ হাজারো মুসলিম নওজোয়ান আমেরিকা ও তাদের সাঙ্গ-পাঙ্গদের জুলুমের চাকায় নিষ্পেষিত হচ্ছে?

    আজ তাগুতের কারাগারগুলোতে আমার মুসলিম ভাই-বোনদেরকে উলঙ্গ করে পিরামিড বানানো হচ্ছে; লজ্জাস্থানগুলোতে ইলেক্ট্রিক শক দেয়া হচ্ছে; নখ উপড়ে ফেলা হচ্ছে; নখের নিচে সুঁচ ঢোকানো হচ্ছে; বাঁশ-ডলা দেয়া হচ্ছে; দিন-রাত পিটিয়ে রক্তাক্ত করে শহীদ করে দেয়া হচ্ছে; কেন?

    আজ কেন মসজিদ সমূহ আগুনে ভস্ম করা হচ্ছে? কুরআন কারীমকে জ্বালিয়ে অবমাননা করা হচ্ছে?

    আজ কেন, কোন্ সাহসে মাল্উন হিন্দুরা নাপাক মূর্তির পায়ের নিচে কুরআন রেখে কুরআনের অবমাননা করছে? এই অবমাননা কি কেবল কুরআনের?? এই অবমাননা আল্লাহ্ তা‘আলার, এই অবমাননা আল্লাহর রাসূলের, এই অবমাননা প্রতিটি মুসলমানের!

    আজ কেন মালাউন হিন্দুরা মুসলমানদেরকে “জয় শ্রীরাম” বলতে বাধ্য করছে?

    গো-মূত্র পানকারী নাপাক হিন্দু সন্ত্রাসীরা ‘গরু কুরবানী’ করার অপরাধে কেন আজ মুসলমানদের হত্যা করছে?

    আজ সারা দুনিয়ায় এত মুসলমান থাকতেও নাস্তিক-মুরতাদ জারজ-হারামীরা কেন, কোন্ সাহসে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে নিয়ে কটুক্তি করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে? আজ কিভাবে তারা আল্লাহর রাসূলের ব্যঙ্গচিত্র অংকন করার সাহস পাচ্ছে?

    কী সেই কারণ, যার জন্যে মুসলমানদের প্রথম কেবলা ‘বাইতুল মাকদিস্’ নাপাক ইহুদীরা যেদিন দখল করে, সেদিন বুক ফুলিয়ে গর্বভরে বলছিল, “মুহাম্মাদ তো চলে গেছে, কিছু রমণী রেখে গেছে!”?

    ইউরোপ-আমেরিকার গৃহপালিত জানোয়ার ইসরাঈল আজ কেন, কোন্ সাহসে ট্যাংক ও স্থলবাহিনী দিয়ে ঘেরাও করে গাজাকে মুসলমানদের জন্য এক অগ্নি-কারাগারে পরিণত করেছে?

    আজ যুদ্ধ-বিধ্বস্ত মুসলিম এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের নিকট কুফ্ফারদের বিমান থেকে বর্ষিত বোমা ছাড়া খাবার মতো কিছুই নেই, সেখানকার মুসলমানরা একবেলা আহারের জন্য হারাম কুকুর-বিড়ালও পাচ্ছেনা, কেন?

    কিসের জন্য আজ মুসলমানরা বানে ভেসে আসা খরকুটোর মতো? কী
    তার কারণ? কেন এমন হচ্ছে?.........



    [ বি‌শ্বে মুস‌লিম উম্মাহর বর্তমান পরি‌স্থি‌তির উপর এক‌টি ফ‌টো গ‌্যালারী-

    উম্মাহ এলবাম (ফটো গ্যালারী): ২২
    ফিলিস্তিন অধ্যায়: ২২
    সিরিয়া ও ইরাক অধ্যায় : ২৭
    ‘গুয়ান্তানামো বে’ কারাগার অধ্যায়: ৩৩
    উইঘুর অধ্যায়: ৩৫
    কাশ্মীর, ভারত অধ্যায়: ৩৭
    আরাকান (রোহিঙ্গা) অধ্যায়: ৪৩]

    লিংক:


    https://archive.org/details/ummah-al...musab-yildirim


    ************************************************** ********************


    কিছু আত্মসমালোচনা
    .................................



    আজ কোথায় পাশ্চাত্যের পা-চাটা গোলামেরা; ৫৭টি দেশের মুসলিম শাসকরা আজ কোথায়?

    কেন আজ তারা অসহায় মুসলমানদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে না? কেন তারা মুসলমানদের পক্ষে যুদ্ধের পতাকা উত্তোলন করছে না?

    ইসলামের শুরু হতে আজ পর্যন্ত আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা, হাকিম বিন জাবালাহ, আশতার মালিক, মুখতার ছাকাফী, হাসান বিন সাব্বাহ, ইবনে আলকমা, নাসীরুদ্দীন তুসী, ফাতেমী শিয়া, মীর জাফর, মীর সাদিক, ইয়াহিয়া খানের মতো মুনাফিকদের উত্তরসূরীদের খাতায় মুসলিম দেশের মুসলমান নামধারী শাসকবৃন্দ কেন তাদের নাম লিখিয়েছে?

    আজ পৃথিবীর কোণায় কোণায় মুসলমানদের লাশের উৎকট গন্ধ! দিকে দিকে মুসলমানদের বিভৎস লাশ আর জীবিতদের অর্ধমৃত-মানবেতর জীবন!

    এসব দেখেও কেন আজ বুক ফাটা কান্না আসে না?

    এক মুসলমান মেয়ের ডাকে সিন্ধু বিজেতা মুসলিমের সন্তান পরিচয়দাতারা আজ ফাতেমা নূর, ড. আফিয়া সিদ্দিকী আর অন্যান্য শহীদানের ডাকে কেন ছটফট করে না?

    এক খ্রিস্টান নারীর আহ্বানে স্পেন বিজয়ী মুসলমানের অনুসারীরা আজ ক্রুসেডীয় জুলুমের শিকার হাজারো বসতহীন মুসলিম বাচ্চাদের প্রতিরক্ষার জন্য কেন ময়দানে আসে না?

    আজ কোথায় একশ সত্তর কোটি মুসলমান? কোথায় তারা?...........

    আজ কোথায় উম্মতের খালিদ বিন ওয়ালিদ?
    কোথায় উম্মাহর মুছান্না ইবনে হারেছা?
    কোথায় কা’কা’ ইবনে আমর?
    কোথায় নুমান ইবনে মুকরিন?
    কোথায় সা‘দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস?
    কোথায় সে মানবতার বাহাদুরী?
    কোথায় মুসলিম প্রজন্মের বিবেক-বুদ্ধি?
    কোথায় ইজ্জত-সম্মান ও আত্মমর্যাদাবোধ?
    কোথায় ঘুনে ধরা সমাজের সংশোধনী পদক্ষেপ?
    কোথায় দ্বীনের সঠিক বুঝ? কোথায় সঠিক আকীদা?
    কোথায় জান্নাতাকাঙ্ক্ষী পবিত্র জামাত?
    কোথায় আল্লাহর পথের যোদ্ধারা?
    কোথায় সৎ কাজের আদেশ দাতারা?
    কোথায় অসৎ কাজের নিষেধকারীরা?
    কোথায় তারা, যারা নিজেদের ইজ্জত-সম্মান, স্ত্রী-সন্তান, ঘর-বাড়ি ও ধন-সম্পত্তি রক্ষায় লড়াই করে?
    উম্মতের দরদীরা আজ কোথায়?
    কোথায়? কোথায় তারা??................

    আজও কি প্রতিটি মুসলমানের উপর জিহাদ ‘ফরযে আইন’ হয়নি?

    এখনো কি মুসলমানদের জন্য ময়দানের ইবাদত (জিহাদ) করার সময় আসেনি?
    আজও যদি না হয়, তাহলে আর কবে হবে?.......................

    এত কিছুর পরও কি আমরা জাগ্রত হব না?
    এত কিছুর পরও কি আমাদের হুঁশ ফিরবে না?
    এরপরও কি আমাদের চুপ করে বসে থাকার সুযোগ আছে?

    আজ কোথায় সারা দুনিয়ার দ্বীনদার ভাইয়েরা?



    ***আজ কোথায় আমার দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতের সাথী ভাইয়েরা?

    কেন আমরা ময়দানে আসছি না? কেন আমরা জিহাদ ও কিতালের মেহনত করছি না?

    কেন আমরা আজ দাওয়াতকেই ‘সবচেয়ে বড় নবীওয়ালা কাম’ মনে করে জিহাদ ত্যাগ করেছি?

    কেন আমরা আজ ময়দানে না এসে মসজিদে বসে থেকে ‘জিহাদের ফাযায়েল’ তালাশ করছি?

    কেন আমরা কেউ কেউ মুসলমানদের রক্ত ঝরানোকেই ‘জিহাদ’ মনে করছি? বাতিল নয়, কেন আমাদের লাঠি আজ উম্মতেরই মাথা ফাটাচ্ছে? কেন আজ আমাদের হতভাগা তরবারিগুলো মুসলিম মায়ের বুককেই খালি করছে?

    কেন আমরা আজও প্রকৃত দাওয়াতের দিকে ফিরে আসছি না?

    কেন আমরা আজও প্রকৃত ‘অসৎ কাজের নিষেধ’ করছি না?

    কেন আমরা আজও মসজিদে জিহাদের এলান করি না? কেন আমরা আজও মসজিদে জিহাদের বয়ান করি না?

    কেন আমরা আজও তালিমের হালকায় “ফাযায়েলে জিহাদ” পড়ি না?

    আজও কেন আপসে ‘ক্বিতাল ও শাহাদাতের’ মুজাকারা হয় না?

    কেন আজও মাশোয়ারা মজলিসে জিহাদের পরামর্শ হয় না?

    আজও কেন আমাদের মুরুব্বীরা “আজীবন চিল্লা”র (হিজরত ও জিহাদের) তাশকিল করেন না?

    প্রাণপ্রিয় মুবাল্লিগ ভাইয়েরা!
    আমাদের ‘খুরুজ’ কবে জিহাদের জন্যে হবে?
    আমাদের ‘গাশ্ত’ কবে অভিযানের রূপ নিবে?
    ‘আড়াই ঘণ্টার মেহনত’ শেষ হয়ে আমাদের যিন্দেগী কবে জিহাদের জন্য ওয়াক্ফ হবে?

    আমাদের ‘ঈমান গড়ার মেহনত’ কবে শেষ হবে? আমাদের ঈমান আমাদেরকে কবে জিহাদের উপযুক্ত করবে?

    আমাদের ‘মারকাজের পাহারাদারি’ কবে ‘মুসলিম ভূমির সীমানার পাহারাদারি’ (রিবাত-এ) রূপ নিবে?

    আমাদের হীম-শীতল রক্ত কবে কুফ্ফারদের বিরুদ্ধে বারুদে পরিণত হবে?

    আমাদের হাতের লাকড়িগুলো কবে মেশিনগান হয়ে কথা বলবে?

    আমাদের পিঠের গাট্টিগুলো কবে ‘মাইনে’ পরিণত হবে?

    আমাদের ছামানাগুলো কবে বোমা হয়ে বিস্ফোরিত হবে?

    আমাদের চুলাগুলো থেকে কবে ‘প্রতিশোধের আগুন’ উত্থিত হবে?

    আর কতকাল আমার ভাইদের জন্য ময়দান অপেক্ষায় থাকবে? আর কতদিন?.............



    ***কোথায় আজ হক্কানী পীর সাহেবানরা? কোথায় তাদের মুরীদানরা? কোথায় আজ খানকাহ্ওয়ালা ভাইয়েরা??

    প্রাণপ্রিয় ভাইয়েরা!
    কেন আজ আমরা ঘরে বসে থেকে, এক ফোঁটা ঘামও না ঝরিয়ে, নিজেদেরকে ‘মুজাহিদে আকবর’ মনে করছি?

    আমরা কোন্ বৈরাগ্য অবলম্বন করছি? জিহাদের চেয়ে বড় কোনো বৈরাগ্য আছে কি?

    আমরা কোন্ ‘নফসের কুরবানী ও মুজাহাদা’ করছি? জিহাদের চেয়ে বড় ‘নফসের কুরবানী ও মুজাহাদা’ আছে কি?

    আমরা কোন্ খাল্ওয়াত (একাকীত্ব) অবলম্বন করছি? পাহাড়ের অন্ধকার গুহার চেয়ে সুন্দর খাল্ওয়াত আর কোথাও পাব কি?

    আমাদের খানকাহ্গুলো কবে দুর্গে পরিণত হবে?

    আমাদের ‘মাজলিস’গুলোতে কবে জিহাদের আলোচনা হবে?

    জিহাদ হতে পলায়ন কি আত্মার রোগ নয়?

    অন্তরে ‘তাগুত ও বাতিলের প্রতি ভয়’ থাকা কি আত্মার ব্যাধি নয়?

    ‘মৃত্যুর ভয়’ দূর করার মেহনত কি ইসলাহী মেহনত নয়?

    কাপুরুষতার গলায় ছুরি চালানো কি ‘তায্কিয়া’ নয়?

    প্রিয় ভাই!
    জিহাদ আল্লাহ পাকের হুকুম নয় কি?
    জিহাদ পরিত্যাগ করা ‘গুনাহে কবীরা’ নয় কি?
    আত্মার পরিশুদ্ধি করা যেই আল্লাহ তা‘আলার ফরয বিধান, জিহাদ করাটাও সেই একই আল্লাহ তা‘আলার ফরয বিধান নয় কি?

    বলুন!
    আমাদের নিঃশব্দ যিকিরগুলো কবে ‘গগনবিদারী রণহুঙ্কার’ হয়ে বাজবে?

    আমাদের হাতের তাসবিহ্গুলো কবে শহীদের লাশ গণনা করবে?

    আমাদের অশ্রুসিক্ত জায়নামাযগুলো কবে বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত হবে? কবে আমরা জাগ্রত হব? আর কবে?................



    ***আজ কোথায় আমার ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মী ভাইয়েরা?

    জিহাদ মনে করে যারা রাজপথ কাঁপাচ্ছি, কেন আমরা প্রকৃত জিহাদের জন্য ময়দানে ছুটে যাচ্ছি না?

    মঞ্চে যারা ‘গণতন্ত্রের জয়গান’ গাই, তারা কেন ময়দানে এসে তাকবীরে তাকবীরে আকাশ বাতাস মুখরিত করছি না?

    মিছিলে যারা বাতিলের বিপক্ষে শ্লোগান দিয়ে গলা ফাটাচ্ছি, ময়দানে এসে বাতিলের বিরুদ্ধে কেন আমরা অস্ত্র ধরছি না?

    ও আমার প্রাণপ্রিয় ভাইয়েরা!
    আমাদের সভা-সমাবেশগুলো থেকে এখনো কেন জিহাদের আওয়াজ ভেসে আসে না?

    তথাকথিত ‘ভোটযুদ্ধ’ বাদ দিয়ে কেন আমরা হক ‘সশস্ত্র জিহাদ’ করছি না?

    আব্রাহাম লিঙ্কনের গান্ধা গণতন্ত্রের মাধ্যমে আজ পর্যন্ত কোথায় ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয়েছে?

    এরদোগান আর মুরসি কি পেরেছেন মদকে হারাম করতে? তারা কি পেরেছেন সুদকে উৎখাত করতে? তারা কি পেরেছেন পতিতালয়গুলোকে বন্ধ করতে? তারা ক্ষমতায় গিয়ে কতভাগ ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছেন?

    আল্লাহর রাসূল ﷺ সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে কয়দিন মিছিল করেছিলেন? তাদের দাবীগুলোকে নিয়ে কয়দিন কুফ্ফারদের কাছে স্মারকপত্র প্রদান করেছিলেন?

    আল্লাহর রাসূল ﷺ কুফুরির সাথে কয়দিন আপোষ করেছিলেন?

    জিহাদই কি প্রকৃত ইসলামী রাজনীতি নয়?
    আর কতদিন আমরা নিজেদেরকে ধোঁকা দিব?
    আর কতদিন আমরা নিজের মনকে মিথ্যা বুঝ দিব? আর কতদিন?...............



    ***আজ কোথায় আমার দানশীল, দানবীর ভাইয়েরা?
    যারা আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্য অকাতরে দান করেন, তারা আজ কোথায়?

    প্রিয় ভাই আমার!
    আমরা যারা মসজিদ, মাদরাসায় দুই হাত উজাড় করে দান করি, আমরা কেন জিহাদের ময়দানে দান করার কথা ভাবি না? অথচ জিহাদের জন্য দান করা প্রয়োজন ও সওয়াবের দিক দিয়ে অধিক উপযোগী!

    আমরা যারা গরীব মিসকিনদের দান করার জন্য সর্বদা এগিয়ে আসি, আমরা কেন গোরাবা (অপরিচিত) মুজাহিদ ভাইদের দিকে হাত বাড়াই না? অথচ জিহাদের কাজ আঞ্জাম দেয়ার জন্য প্রয়োজন অপরিসীম অর্থকড়ি?

    যেসব মুজাহিদ ভাই নিজের ঘর-সংসার ফেলে, অর্থ-সম্পদ ফেলে আল্লাহর রাস্তায় খালি হাতে বেড়িয়ে যায়, তাদেরকে কে দান করবে?

    খোদার রাহে বেড়িয়ে পড়া মুজাহিদের অসহায় পরিবারের অর্থ যোগান কে দিবে?

    আল্লাহর রাস্তার শহীদ ভাইদের পরিবারবর্গের অশ্রু কে মুছে দিবে? সেই সকল ক্ষুধার্ত ভাই-বোনদের মুখে কে আহার তুলে দিবে?

    তাগুতের কারাগারে বন্দী ভাইদের মুক্ত করার জন্য টাকা কে যোগাড় করবে?

    উপার্জনে অক্ষম যুদ্ধাহত গাজী ভাইদের পাশে কে এসে দাঁড়াবে?

    আজ সারা দুনিয়ায় জিহাদের মেহনতকে জিন্দা করার জন্য, দুনিয়ার বুকে ইসলামের চিহ্ন বাকী রাখার জন্য হাজার হাজার নয়, লক্ষ লক্ষ নয়, কোটি কোটি টাকার প্রয়োজন। কে দিবে এই অর্থ, আমরা যদি এগিয়ে না আসি তো কারা এগিয়ে আসবে?



    ***আজ কোথায় আহলে হাদীস/সালাফী ভাইয়েরা?

    সহীহাইনে কি ‘কিতাবুল জিহাদ’ নেই?
    সহীহাইনে কি ‘কিতাবুল মাগাযী’ নেই?
    এ সকল হাদীসের উপর কে আমল করবে?
    সালাফদের যিন্দেগীতে কি জিহাদ ছিল না?
    সালাফদের সীরাতে কি ই‘দাদ ছিল না?
    আমাদের সালাফরা কি ‘দিগ্বিজয়ী বীর’ ছিলেন না?

    আমাদের সালাফদের ভয়ে কি কুফ্ফারদের ঘুম মিটে যেত না?
    আমাদের সালাফদের নাম শুনলেই কি তাদের অন্তরাত্মা কেঁপে উঠত না?

    তাহলে কেন আমাদের এই অবস্থা? কেন আমাদের এই জিহাদবিমুখতা?

    আমরা তাহলে কোন্ সালাফদের অনুসরণ করছি?

    প্রিয় ভাই আমার!
    একজন মুসলমান ভাই একটি মুস্তাহাবের উপর আমল করল না, তাতেই আমার মনে অনেক ব্যথা অনুভূত হয়, অথচ আজ সারা দুনিয়া থেকে ইসলাম মিটে যাচ্ছে, উম্মাহর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে, ক্রুসেডাররা একজোট হয়ে ইসলাম ও মুসলমানদের শেষ চিহ্নটুকু মুছে দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে, তারা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলেছে, অথচ আমরা ঘুমিয়ে আছি, আমরা ছোটখাটো বিষয়ে মতানৈক্য করে একে অন্য হতে আলাদা হয়ে যাচ্ছি, একে অন্যকে গালমন্দ করছি, শরীয়তের শাখাগত বিষয় নিয়ে মেতে রয়েছি, অথচ বর্তমান যামানার জন্য সবচেয়ে বড় ফরয আমার ও উম্মতের কাছ থেকে ছুটে যাচ্ছে- সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপই করছি না!

    উম্মত শরীয়ত বাদ দিয়ে পশ্চিমা সংস্কৃতি ও রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে নিজেদের উন্নতি খুঁজে বেড়াচ্ছে, দলে দলে জাহান্নামের দিকে ধাবিত হচ্ছে, অথচ সেজন্য আমার হৃদয় ব্যথিত হচ্ছে না! আমার চক্ষুদ্বয় অশ্রুসিক্ত হচ্ছে না! আমার অন্তরে কোনো ভাবোদয় হচ্ছে না! কেন ভাই, কেন?

    কবে আমরা জিহাদের কথা ভাবব?
    কবে আমরা জিহাদের পথে হাঁটব?
    কবে আমরা জিহাদের কথা বলব?
    কবে ভাই, কবে?.......



    ***কোথায় আমার প্রাণপ্রিয় মা ও বোনেরা!

    সেই মায়েরা আজ কোথায়, যারা আল্লাহর রাস্তায় সন্তান কুরবানী করার জন্য আল্লাহর কাছে সন্তান কামনা করতো?

    সেই মায়েরা আজ কোথায়, যারা তাদের সন্তানদেরকে শহীদ হিসেবে দেখার জন্য ছোট্ট সময় দুগ্ধপান করাতো?

    সেই মায়েরা আজ কোথায়, যাদের মাতৃদুগ্ধে এই পরিমাণ ধার ছিলো যে, তাদের সন্তানরা কিসরা-কায়সারের সাম্রাজ্যগুলোকে তছনছ করে দিয়েছিলো?

    সেই মায়েরা আজ কোথায়, যারা নিজের হাতে অস্ত্র ক্রয় করে সন্তানের হাতে তুলে দিতো, এই আশায় যে, তার সন্তান আল্লাহর রাস্তায় শাহাদাত লাভ করবে?

    সেই মায়েরা আজ কোথায়, যারা তাদের পুত্র বধূ হিসেবে জান্নাতের হূরদের দেখতে বেশি ভালোবাসতো?

    সেই মায়েরা আজ কোথায়, যারা তাদের সন্তানদের সাথে হূরের বিবাহের জন্য মোহরানা দুনিয়াতেই আদায় করে দিতো?

    সেই মায়েরা আজ কোথায়, যারা তাদের সন্তানদের শাহাদাতের উপর গর্ববোধ করতো?

    আজ কোথায় আমার সেই মায়েরা, যাদের সন্তান শহীদ হলে তার গৃহে বিয়ে বাড়ির আমেজ চলে আসতো? আনন্দ মিছিল বের হতো? আজ কোথায় তারা?

    আজ কোথায় সেই বোনেরা, যারা জিহাদ হতে পিছুহটা ভাইদেরকে ভর্ৎসনা করত? তিরস্কার করে তাদেরকে বালা আর বোরকা এগিয়ে দিত?

    কোথায় আজ ছফিয়্যাহ বিনতে আব্দুল মুত্তালিব?
    কোথায় আজ উম্মে উমারা?
    কোথায় আজ আসমা বিনতে আবু বকর? (রাদিয়াল্লাহু আনহুন্না আযমাঈন)

    সেই মায়েরা আজ কোথায়? সেই বোনেরা আজ কোথায়?

    সেই স্ত্রীরা আজ কোথায়, যারা বাসর ঘর থেকে তাদের স্বামীদেরকে হাসিমুখে জিহাদের ময়দানে পাঠিয়ে দিতো?

    কোথায় আজ তারেক বিন যিয়াদ আর মুহাম্মাদ বিন কাসীমের বোনেরা?

    পরম মমতাময়ী, সোহাগিনী, প্রেমময়ী কিন্তু পাহাড়ের মতো অটল-অবিচল ঈমানওয়ালী; আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে মহব্বতকারিনী, প্রিয়তমের বিচ্ছেদে সবরকারিনী আমার সেই বোনেরা আজ কোথায়?

    কেন তারা আবারো বুকে পাথর বেঁধে ধৈর্য্য ধারণ করছে না?

    কেন তারা আজ আরো লাখো মুসলিম মা-বোনের উপর অত্যাচার-নির্যাতন আর ধর্ষণের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য তাদের স্বামী-সন্তান-ভাইদেরকে ময়দানে পাঠাচ্ছে না?

    আল্লাহ তাআলা আমাদের হাবীব ﷺ এর উম্মতের মা-বোনদের প্রতি রহম করুন। তাদের ইযয্ত-আব্রুর সর্বোচ্চ হেফাযত করুন। আমীন।



    ***আজ কোথায় মিম্বারওয়ালা ভাইয়েরা?

    আমাদের মিম্বারগুলোতে আজও কেন জিহাদের আযান শুনা যায় না?

    আজও কেন আমাদের মিম্বারগুলোতে আমরা নবীওয়ালা ইসলামের আলোচনা করি না? সেখানে আজও কেন জিহাদের ‘মুযাকারা’ হয় না?

    মিম্বারগুলো থেকে কেন আজ সাধারণ মুসল্লিদের জিহাদী জযবা জাগ্রত হয় না? কেন?.............



    ***কোথায় আজ উম্মতের ওয়ায়েজ-বক্তারা?

    যখন আমরা মাইক কাঁপাচ্ছি, তখন কেন আমরা উম্মতকে জাগ্রত করছি না?

    উম্মতকে জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করা, কিতালের জন্য তাশকিল করা কি আমাদের দায়িত্ব নয়?

    তাহলে কোন্ বয়ান আমাদেরকে “আন্তর্জাতিক খ্যাতি” এনে দিয়েছে?



    ****কোথায় আজ উম্মতের রাহ্বার- উলামা ভাইয়েরা? আমার প্রাণপ্রিয় তালিবুল ইলম ভাইয়েরা আজ কোথায়?

    আজও কেন আমরা নিশ্চুপ?

    আহ্! কী আর বলবো! কষ্টে যেন আজ বুক ফেটে যাচ্ছে, হৃদপিণ্ড স্তব্ধ- স্থবির হয়ে যাচ্ছে! মুখ দিয়ে যেন আর কথা বের হতে চাচ্ছে না?

    আজ আমরা আলেম সমাজ কি চার দেয়ালের মাঝে বসে আছি না?

    আজ উম্মতের এই অবস্থার জন্য আমাদেরকেই সবচেয়ে বেশি জবাবদিহি করতে হবে!

    আমাদেরকে কি সেই জিনিস দেয়া হয়নি, যা দেয়া হয়েছিল নবী-রাসূলদেরকে?

    আমাদেরকে কি সেই জিনিস দেয়া হয়নি, যা দেয়া হয়েছিল সাহাবায়ে কেরামদেরকে?

    উম্মতের নেতৃত্ব কি আমাদেরই দেয়ার কথা ছিল না?

    উম্মতের দুর্দিনে আমাদেরই কি প্রথম এগিয়ে আসার কথা ছিল না?

    উম্মতের ব্যথায়, উম্মতের কষ্টে আমাদেরই কি প্রথম অশ্রুপাত করার কথা ছিল না?

    আমাদেরই কি প্রথম ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা ছিল না?

    সর্বপ্রথম আমাদেরই কি হাতে অস্ত্র তুলে নেয়ার কথা ছিল না?

    আমাদেরই কি উম্মতের শ্রেষ্ঠ বীর হওয়ার কথা ছিল না?

    উম্মতকে সঠিক ইসলামের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব কার?
    নবীওয়ালা এবং সাহাবাওয়ালা ইসলামের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব কার?
    উম্মতকে জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করার দায়িত্ব কার?
    আহ্! কী হলো আজ আমাদের!..............

    যে কুরআন সাহাবাদেরকে “বীরত্বের মুকুট” পরিয়েছিল, সেই কুরআনের বাহকরা আমরা আজ কেন “নারীত্বের মালা” গলায় ধারণ করেছি?

    যে কুরআন সাহাবায়ে কেরামকে “আল্লাহর সিংহ”, “আল্লাহর বাঘ” আর “আল্লাহর তরবারি” বানিয়েছিল, সেই কুরআনের বাহকরা আমরা আজ কেন “অসহায়-নিরীহ” হয়ে গিয়েছি?

    যে কুরআন সাহাবাদেরকে ঘরে থাকতে দিত না, ময়দানে তাড়িয়ে নিয়ে যেত, সেই কুরআনের বাহকরা আমরা আজ কেন ‘অবলা গৃহবধূ’র মত হয়ে গিয়েছি?

    যে কুরআন সাহাবাদেরকে “পারমাণবিক বোমা” বানিয়েছিল, সে কুরআনের বাহকরা আমরা আজ কেন একটা “ককটেল”ও হতে পারছি না?

    কেন আজ কুরআন আমাদের গলার নীচে নামছে না?

    আজ আমরা যাদের বর্ণিত হাদীস অধ্যয়ন করছি, সেই সকল মহান সাহাবীদের যিন্দেগীর দিকে কেন তাকিয়ে দেখছি না?

    সাহাবাদের এলেম যদি তাঁদেরকে যোদ্ধা বানায়, এ যামানায় আমাদের এলেম কেন আমাদেরকে “ভীরু-কাপুরুষ”, “জিহাদ বিরোধী” বানায়?

    কেন আজ আমরা সাহাবাদের মতো গর্জে উঠছি না, কেন আজ আমরা বাকরুদ্ধ?

    কেন আজ আমাদের মাঝে পৌরুষত্ব জেগে উঠছে না?

    কেন আজ বাতিল আমাদেরকে ‘মশা-মাছি তুল্য’ মনে করে? কী তার কারণ? কেন এমন হচ্ছে?............

    কেন আমরা আজ নিজেদের ঈমান সস্তায় বিক্রি করে দিচ্ছি?
    কেন আমরা বাতিলের গোলামী করছি? আজ কিভাবে আমরা ক্ষমতাসীনদের খাবারের টেবিলে আমন্ত্রিত হচ্ছি? তাগুতদের উপঢৌকনে আমরা কিভাবে সজ্জিত হচ্ছি? বাতিলের বিষাক্ত ফল আহার করে আমরা কেন বাতিলের গুণকীর্তন করছি?

    আজ কেন আমরা তাগুত সরকারের তাবেদারি করছি? কেন আজ আমরা অনেকেই জিন্দিক তাগুত শাসকবর্গের ক্রোড়ে প্রতিপালিত হচ্ছি?

    আজ কেন আমাদের শিক্ষার সরকারি স্বীকৃতির প্রয়োজন হচ্ছে?

    যে সকল মর্দে মুজাহিদ উম্মতের জন্য নিজের বুকের রক্ত ঢেলে দিচ্ছে, আজ কেন তাদেরকে আমরাও ‘জঙ্গী’, ‘সন্ত্রাসী’ বলে গালি দিচ্ছি?

    আজ কেন আমরা ‘দারুল হারব’ কে ‘দারুল আমান’ ফতোয়া দিচ্ছি?
    “জিহাদ ফরযে আইন হয়ে গিয়েছে”- কেন আমরা এই ফতোয়া দিতে ভয় পাচ্ছি?
    আমরা কী উম্মতের অবস্থা দেখছি না?
    অসহায় নারী-শিশু-বৃদ্ধদের আহাজারি আর আর্তনাদ কি আমাদের কানে পৌঁছে না?

    আমরা কিসের অপেক্ষা করছি? আমরা কার অপেক্ষা করছি?
    আমরা কোন্ দিনের অপেক্ষা করছি? আমরা কি সেদিন “জিহাদ ফরযে আইন” ফতোয়া দিব, যেদিন আমাদের চোখের সামনে আমাদের স্ত্রীদেরকে গণধর্ষণ করা হবে? নাকি, যেদিন আমাদের চোখের সামনে আমাদের কন্যাকে বে-ইজ্জতি করা হবে? যেদিন আমাদের মায়েদের স্তন কাটা হবে? যেদিন আমাদের কোলের শিশুকে পায়ের নিচে পিষ্ট করে হত্যা করা হবে? যেদিন আমাদের দুধের শিশুকে আগুনে নিক্ষেপ করা হবে? যেদিন আমাদের মাদরাসাগুলোকে তালাবদ্ধ করে দেয়া হবে? যেদিন আমাদেরকে পাইকারী হারে হত্যা করা হবে? যেদিন আমাদেরকে আবারো গাছে ঝুলানো হবে? সেদিন?

    মাদরাসাগুলোকে কুফ্ফার সরকারের কাছে ‘জঙ্গীমুক্ত’ হিসেবে পরিচয় দিতে কেন আজ এত ব্যস্ততা?
    জিহাদের কথা বলায় তালিবুল ইলমদেরকে পিটিয়ে মাদরাসা থেকে কেন বহিস্কার করে দিচ্ছি?
    আজ কেন আমরা জিহাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি? কেন আজ পৃথিবী থেকে জিহাদকে বিদায় জানানোর জন্য “জিহাদ বিরোধী” ফতোয়ায় লাখো মুফতী (?) স্বাক্ষর করছি?

    কেন আজ আমরা এ.সি রুমে বসে, পোলাও-কোরমা-বিরিয়ানী খেয়ে, তপ্ত ময়দানের “না খেতে পাওয়া” ক্ষুধার্ত জানবাজ মুজাহিদ ভাইদের বিরুদ্ধে ফতোয়াবাজী করছি?

    কিসে আমাদেরকে এমনটি করতে বাধ্য করছে? কেন আমরা ন্যাক্কারজনক এইসব ফতোয়া দিয়ে তৃপ্তিবোধ করছি?
    এসব নষ্ট ফতোয়াবাজী করে আজ আমরা কিসের দায়মুক্ত হতে চাই? এসব করে আমরা কাকে সন্তুষ্ট করতে চাই?

    আল্লাহ, তাঁর রাসূল ﷺ এবং একনিষ্ঠ মুমিনগণ আমাদের এসকল কর্মকাণ্ডকে কক্ষনো মেনে নিবেন না! আমাদের উপর কক্ষনো সন্তুষ্ট হবেন না! কস্মিনকালেও না! ময়দানে মাহ্শারে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের দিকে তাকিয়েও দেখবেন না!!

    মুজাহিদরা কেন? কেন আমাদের কলম আজ বাতিলের বিরুদ্ধে চলে না? আজ কেন আমাদের কলম সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলে না? নারী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কেন আমরা কথা বলি না? আমাদের পৌরুষত্ব কেন নারী নেতৃত্বের মসনদকে গুড়িয়ে দেয় না?

    আজ কোন্ হেকমতের কারণে আলেমকুল শিরোমণি ‘হাজারো আলেমের রক্তে রঞ্জিত’ নারী নেত্রীর হাতে হাত মিলিয়ে মুসাফাহা করেন?

    আজ কেন ‘তাগুত কন্যা’কে ‘ক্বওমী জননী’ উপাধি দেয়া হচ্ছে? এই শিক্ষা কোন্ ইসলামের? এই শিক্ষা কোন্ কুরআনের? এই শিক্ষা কোন্ হাদীসের?

    আজ কেন মুশরিকদেরকেও ‘কাফের’ বলতে আমরা কেউ কেউ লজ্জা (!) পাচ্ছি? নাস্তিককে ‘নাস্তিক’ বলতে আমরা ভয় (!) পাচ্ছি? কেন আমরা সমাজে নাস্তিক-মুরতাদ খোঁজে পাচ্ছি না?

    আমরা কার অনুসরণ করছি? আমরা কোন ইসলামকে আঁকড়ে ধরে আছি?

    আমরা কোন্ রাসূলের ওয়ারিশ? আমরা কোন্ নবীর নায়েব?

    আমাদের নবী কি তরবারির নবী (নাবীউস্ সাইফ্) ছিলেন না?
    আমাদের নবী কি ‘যুদ্ধে’র নবী (নাবীউল্ মালাহিম্) ছিলেন না? কুফ্ফারদেরকে জবাই করতে কি তাঁকে প্রেরণ করা হয়নি?
    নবীজির যিন্দেগীতে কি ছোট-বড় ৬৩ টি যুদ্ধাভিযান ছিল না? তাহলে আমাদের যিন্দেগীতে জিহাদ কোথায়? আমাদের সিল‌সিলাতে কোথায় এসে জিহাদ ‘নাই’ হয়ে গেল?

    ‘দ্বীন প্রতিষ্ঠা ও ইসলামী রাজনীতি’র নামে আজ কেন আমরা জিহাদ বাদ দিয়ে কুফুরী ও ভ্রান্ত পন্থা অবলম্বন করছি?

    কেন আমরা আব্রাহাম লিংকনের পঁচা-গান্ধা, নিরেট কুফর ‘গণতন্ত্র’কে ইসলামী রাজনীতি নাম দিয়েছি?

    কেন আমরা আজ ‘ইসলামী গণতন্ত্রের’ নামে পশ্চিমা জাতির ‘নষ্ট দুধ’ গোগ্রাসে পান করছি? কেন?

    আমাদের কিসের অভাব? কেন আমরা মুসলিম উম্মাহ্কে ধোকা দিচ্ছি?

    ‘সুদ ভিত্তিক অর্থনীতি’ই কি ইসলামী অর্থনীতি? ‘গণতন্ত্রের পতিতাবৃত্তি’ই কি ইসলামের নারী স্বাধীনতা?

    ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ- কে গালি দেয়া’-ই কি গণতন্ত্রের বাক স্বাধীনতা নয়?

    ‘মাদকসেবন আর অবাধ যৌনাচার’-ই গণতন্ত্রের ‘ব্যক্তি-স্বাধীনতা’ নয়?

    দ্বীন কায়েমের জন্য মিটিং-মিছিল করা, খালি হাতে কেবল তাসবীহ আর জায়নামায নিয়ে অবরোধ করা- এগুলো কার সুন্নাহ?

    আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের শানে কটুক্তি কারীদের বিচারের জন্য তাগুতের কাছেই বিচার চাওয়া, তাদেরকে স্মারকলিপি প্রদান করা- এগুলো কার তরীকা?

    কেন আমরা এগুলোকে ঈমানী দায়িত্ব বলে উম্মাহর সামনে পেশ করছি?

    এসবের সাথে রাসূলে আরাবী মুহাম্মাদ ﷺ- এর আনীত দ্বীন ও মানহাজের কি সামঞ্জস্য রয়েছে? এগুলোর সাথে ইসলামের কী মিল রয়েছে?

    কেন আমরা নিজেরা বিভ্রান্ত হচ্ছি, উম্মাহ্কেও বিভ্রান্ত করছি?

    কেন আমরা এসব নিত্য নতুন ‘জাহান্নামী’ আকীদা ও বিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছি? কেন? কেন ভাই, কেন??

    না, ভাই, না! আর চুপ করে থাকা যায় না!! দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে!!!

    আজ আমার মুখের লাগাম খুলে গিয়েছে! আজ কেউ আমার যবান ধরে রাখতে পারবে না!

    আজ আমি বিদ্রোহী! বাতিল ও তার গোলামদের জন্য আজ আমি অভিশাপ! আজ আমি সর্বত্র ‘দ্রোহের ঝাণ্ডা' উড্ডয়ন করেছি!

    আজ আমি যত মনগড়া, স্ব-রচিত, নব্য ইসলামের বিরদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করছি!

    আজ আমি শান্তিপূর্ণ (!), ভ্রান্ত, তথাকথিত আধুনিক ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করছি!

    যে ইসলাম বাতিলের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখায় না, যে ইসলাম ‘দিগ্বিজয়ী সিপাহসালার’ তৈরি করে না, পক্ষান্তরে যে ইসলাম ঘরকুনো ‘কাপুরুষে’র জন্ম দেয়, উম্মতকে খোঁজা করে দেয়, আমার দ্রোহ আজ সে ইসলামের বিরুদ্ধে!

    দিকে দিকে ‘ঈমানের কেল্লাগুলোতে’ আজ আমি সেই ইসলামের নিশান উত্তোলন করছি, যে ইসলাম সাহাবাদেরকে শিখিয়েছিলেন স্বয়ং নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

    আজ আমি সেই ইসলামের গানই গাইব, যে ইসলামকে পরম মমতায় বুকে আগলে রেখেছিলেন সাহাবায়ে কেরামগণ!

    না, আজ আমার যবান থেকে ‘গীত’ নয়, অনল বর্ষিত হবে। আজ আমার কলম ‘তরবারি’ হয়ে ‘উন্মত্ত খু‌নের পয়গাম রচনা করে যা‌বে।
    আজ আমার দে‌হের প্রতি‌টি শিরা-উপ‌শিরায় 'রক্ত' নয়, আগুন বই‌ছে।

    আজ আমার অ‌স্থিমজ্জা ‘রক্তকণিকা’ নয়, ‘অগ্নিস্ফূলিঙ্গ’ তৈরি করছে!

    আজ আমি লেলিহান অগ্নিশিখা প্রজ্জ্বলন করেছি, যা প্রতিশোধের দাবানল হয়ে সমস্ত বাতিল, তাবেদারদের শিবির জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দিবে।

    আজ আমি আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় করবো না, কারো শক্তি কিংবা ক্ষমতার পরোয়া করবো না, কারো রক্ত-চক্ষুকে তোয়াক্কা করবো না!

    আজ আমি কোনো নিন্দুকের নিন্দার পরোয়া করবো না! আমাকে যে যাই বলুক তাতে আমার কিছুই আসে যায় না!

    আজ কেউ না আসুক, আমি একাই লড়ব! সারা দুনিয়ার ত্বগুতের বিরুদ্ধে আমি একাই জিহাদ করব!

    আমি জানাজা চাই না, কাফন-দাফন চাইনা, আজ আমি শাহাদাত চাই! ইসলাম মিটে যাওয়ার আগে আমি নিজেই মিটে যেতে চাই!.....

    কী হবে এ জীবন দিয়ে, কী হবে আর বেঁচে থেকে!

    আজ কোনো স্বৈরাচার কিংবা যালেম, কেউই আমাকে ফিরাতে পারবে না!

    আল্লাহ, তার রাসূল ﷺ এবং “উম্মতে মুহাম্মাদী”র জন্য আমার জান কুরবান!

    যেদিকে তাকাই সেদিকেই উম্মতের এ হালত দেখে, যেদিকেই কর্ণপাত করি, সেদিক হতেই উম্মতের আর্তনাদ শুনে, আজ আমি প্রচণ্ড ক্ষেপে গিয়েছি, তাই আজ সত্যকে ‘সত্যরূপে’ প্রকাশ করতে কোনো দ্বিধা-সঙ্কোচ করবো না, দয়াকরে আমাকে কেউ বাধা দিবেন না! আজ কেউই আমার গলা টিপে ধরবেন না!.........

    যারা প্রকৃত অর্থে “আহলে হক”, যাদের যিন্দেগী আমার রাসূলের ﷺ যিন্দেগীর সাথে মিলে, যাদের যিন্দেগী সাহাবাদের যিন্দেগীর মতো, উম্মতের সেই সকল গোরাবা (অপরিচিত) ভাইদের জন্য আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক!

    আমি তাদের ক্রীতদাস, ইচ্ছা করলে তারা আমাকে গোলাম বানিয়ে রাখবে, নতুবা আযাদ করে দিবে। আমি তাদের জুতা বহন করে দিবো, তাদের জুতা সোজা করে দিবো। তাদের পায়ের জুতাকে আমার মাথার টুপি বানিয়ে রাখবো। তাদের জন্য আমার জীবন বিলিয়ে দিবো।.........




    ********************************


    ব‌্যথার ঔষধ.........
    (কিতাব দ্রষ্টব‌্য)

    জাযাকুমুল্লাহু খাইরান
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 07-26-2022, 03:52 PM.

  • #2
    মুহতারাম @ কল্যাণের সন্ধান ভাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি!
    যদি আপনার কাছে এই পিডিএফটির টেক্সট থাকে, তাহলে মূল পোস্টের নিচে বা কমেন্টে যুক্ত করে দিতে পারেন।
    আল্লাহ তা‘আলা আপনাদের খেদমত ও মেহনতকে কবুল ও মাকবুল করুন এবং উভয় জাহানে উত্তম বদলা দান করুন।
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহ। আল্লাহ আপনার খিদমাতকে কবুল করুন। আমাদের সবাইকে জিহাদের জন্য খাঁটি উৎসর্গপ্রাণ বানিয়ে দিন। দ্বীনের হক অনুযায়ী নিজেদেরকে পেশ করার তাওফিক দান করুন। আসলে তাজকিয়া, তাকওয়া, তাওয়াক্কুল, দাওয়াহ, ইদাদ, জিহাদ ইত্যাদি মুখে বলা অনেক সহজ। কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে আল্লাহর চাওয়া অনুযায়ী এগুলো আমলে ধারণকারী লোকের সংখ্যা কতই না কম! আল্লাহ তাআলা যেন আমাদেরকে আহলে দিল বান্দা বানিয়ে দেন, তাঁর সাথে সততা দান করেন। আমীন।
      فَلۡيُقَٰتِلۡ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ ٱلَّذِينَ يَشۡرُونَ ٱلۡحَيَوٰةَ ٱلدُّنۡيَا بِٱلۡأٓخِرَةِۚ وَمَن يُقَٰتِلۡ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ فَيُقۡتَلۡ أَوۡ يَغۡلِبۡ فَسَوۡفَ نُؤۡتِيهِ أَجۡرًا عَظِيمٗا

      কাজেই আল্লাহর কাছে যারা পার্থিব জীবনকে আখেরাতের পরিবর্তে বিক্রি করে দেয় তাদের জিহাদ করাই কর্তব্য। বস্তুতঃ যারা আল্লাহর রাহে জিহাদ করে এবং অতঃপর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদেরকে মহাপুণ্য দান করব।(সূরা নিসা, আয়াত ৭৪)

      Comment


      • #4
        Originally posted by Munshi Abdur Rahman View Post
        মুহতারাম @ কল্যাণের সন্ধান ভাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি!
        যদি আপনার কাছে এই পিডিএফটির টেক্সট থাকে, তাহলে মূল পোস্টের নিচে বা কমেন্টে যুক্ত করে দিতে পারেন।
        আল্লাহ তা‘আলা আপনাদের খেদমত ও মেহনতকে কবুল ও মাকবুল করুন এবং উভয় জাহানে উত্তম বদলা দান করুন।
        আমীন। ইয়া রাব্বাল আলামীন।

        জ্বি মুহতারাম ভাই। টেক্সট যুক্ত করা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।

        উম্মাহর কাছে জিহাদের শ্বাশত আহবানকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যারা নিরলসভাবে বিভিন্ন মিডিয়া, ফোরাম, চ্যানেল, ওয়েবসাইট সহ বিভিন্ন প্লাটফর্মে কাজ করছেন আল্লাহ তাআলা যেন সবাইকে কবুল করে নেন। উত্তম বদলা দান করেন। আমীন।

        Comment


        • #5
          Originally posted by মুহিব্বুল্লাহ View Post
          জাযাকাল্লাহ। আল্লাহ আপনার খিদমাতকে কবুল করুন। আমাদের সবাইকে জিহাদের জন্য খাঁটি উৎসর্গপ্রাণ বানিয়ে দিন। দ্বীনের হক অনুযায়ী নিজেদেরকে পেশ করার তাওফিক দান করুন। আসলে তাজকিয়া, তাকওয়া, তাওয়াক্কুল, দাওয়াহ, ইদাদ, জিহাদ ইত্যাদি মুখে বলা অনেক সহজ। কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে আল্লাহর চাওয়া অনুযায়ী এগুলো আমলে ধারণকারী লোকের সংখ্যা কতই না কম! আল্লাহ তাআলা যেন আমাদেরকে আহলে দিল বান্দা বানিয়ে দেন, তাঁর সাথে সততা দান করেন। আমীন।
          ওয়া ইয়্যাক। আল্লাহ্ তা‘আলা আপনাকেও কবুল করুন।আপনার মাগফিরাত ফরমান।আমাদের সবাইকে জিহাদের জন্য খাঁটি উৎসর্গপ্রাণ বানিয়ে দিন। দ্বীনের হক অনুযায়ী নিজেদেরকে পেশ করার তাওফিক দান করুন।আমাদেরকে আল্লাহ্ পাকের সাথে সত্যবাদী বানিয়ে দিন।আমীন।

          Comment


          • #6
            উৎসর্গ:-
            “কিতাবুত্ তাহরীদ্ ‘আলাল ক্বিতাল” কিতাবটি সেই সকল মর্দে “মুজাহিদ ফী সাবিলিল্লাহ্” ভাইদের প্রতি উৎসর্গ করা হল-
            • যারা হক প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এবং তাগুত ও বাতিলের মূলোৎপাটনে শীশাঢালা প্রাচীর।
            • যারা নিজেদের জান-মাল আল্লাহর কাছে বিক্রয় করে দিয়েছেন জান্নাতের বিনিময়ে।
            • যারা নিজেদের বাড়ী-ঘর ত্যাগ করে পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গল ও গিরিগুহাকে নিজ আবাসস্থল বানিয়ে নিয়েছেন।
            • যারা কখনো বন্দুকের ছায়াতলে আবার কখনো ট্যাংকের গোলায় জান্নাত খুঁজে বেড়ান।
            • যারা অসহায় উম্মাহর নারী-শিশু ও মজলুমানদের ফরিয়াদের জবাবে অলী ও নাসীর (বন্ধু ও সাহায্যকারী) রণাঙ্গনে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।
            • যারা উম্মাহর ইয়াতীম শিশুদের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য নিজেদের সন্তানদেরকে ইয়াতীম করছেন।
            • যারা উম্মাহর মা-বোনদের ইজ্জত-আব্রু আর সম্ভ্রম রক্ষার্থে নিজেদের মা-কে সন্তানহারা আর স্ত্রীকে বিধবা বানাচ্ছেন।
            • যারা গভীর রজনীতে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে মহান রবের দরবারে শাহাদাতের মৃত্যুর জন্য আবেদনে মগ্ন।
            • যারা দুশমনের মোকাবেলা করতে গিয়ে হাত-পা, নাক-কান ইত্যাদি হারিয়ে পঙ্গুত্বের জীবন যাপন করছেন।
            • যারা ঘোড়ার লাগাম ধরে কোনো অসহায় নারী ও শিশুর চিৎকার ও মজলুম ভাইয়ের আহ্বানে সাড়া দেওয়ার জন্য সদা প্রস্তুত।
            আমার প্রাণপ্রিয় মুজাহিদ ভাইয়েরা!
            আপনাদের করকমলে আমার হ্রদয়ের উষ্ণ ভালোবাসার এক চিলতে এই নযরানা মেহেরবানী করে গ্রহণ করুন।

            আপনাদের এক নগণ্য আশেক
            -মুসআব ইলদিরিম

            Comment


            • #7
              ওয়াও । অসাধারণ একটি পোস্ট।
              পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

              Comment


              • #8
                অন্তর কে নাড়া দিলো, চিন্তার জগতে নতুন স্রোতের উত্থান ঘটালো।

                আল্লাহর কসম, এটি দাওয়াতের জগতে নতুন বিপ্লব ঘটাবে, ইং শা আল্লাহ
                ''এই উম্মাহর অবস্থা পরিবর্তন হবে না , যদি না মুসলিমরা সাহাবায়ে কেরাম যা করেছিলেন তার দিকে ফিরে যায়'' - শাইখ আনোয়ার আল আওলাকি রহি.

                Comment


                • #9
                  আল্লাহ মুসআব ইলদিরিম ভাই এর ইলম ও কলমের জোরকে আরও বাড়িয়ে দিক আর সৃষ্টি করুক নতুন বিপ্লব।
                  ''এই উম্মাহর অবস্থা পরিবর্তন হবে না , যদি না মুসলিমরা সাহাবায়ে কেরাম যা করেছিলেন তার দিকে ফিরে যায়'' - শাইখ আনোয়ার আল আওলাকি রহি.

                  Comment


                  • #10
                    Originally posted by mahmud123 View Post
                    ওয়াও । অসাধারণ একটি পোস্ট।
                    মুহতারাম mahmud123 ভাই!
                    জাযাকাল্লাহু খাইরান।
                    আল্লাহ্ পাক কবুল করুন। আমীন।

                    Comment


                    • #11
                      Originally posted by Muhammad Hassan View Post
                      অন্তর কে নাড়া দিলো, চিন্তার জগতে নতুন স্রোতের উত্থান ঘটালো।

                      আল্লাহর কসম, এটি দাওয়াতের জগতে নতুন বিপ্লব ঘটাবে, ইং শা আল্লাহ
                      মুহতারাম Muhammad Hassan ভাই!
                      জাযাকাল্লাহু খাইরান।
                      আল্লাহ্ পাক কবুল করুন। আমীন।

                      Comment


                      • #12
                        Originally posted by Muhammad Hassan View Post
                        আল্লাহ মুসআব ইলদিরিম ভাই এর ইলম ও কলমের জোরকে আরও বাড়িয়ে দিক আর সৃষ্টি করুক নতুন বিপ্লব।
                        আল্লাহুম্মা আমীন। ছুম্মা আমীন।

                        Comment


                        • #13
                          “কিতাবুত্ তাহরীদ্ ‘আলাল ক্বিতাল” কিতাবটি ইনশাআল্লাহ যাদের চুলকানি ও অন্তর্জ্বালা ভয়ানকভাবে বৃদ্ধি করবে:
                          • যারা তাদের প্রভু ইয়াহূদী ও খৃষ্টানদের খুশি করার জন্য কুরআন থেকে জিহাদকে সম্পূর্ণরূপে তুলে দিতে আগ্রহী।
                          • যারা কুরআন ও হাদীসে অসংখ্য জায়গায় বর্ণিত জিহাদকে ‘ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ’ বলে আখ্যায়িত করে মুসলিম যুব সমাজকে বিভ্রান্ত করার কাজে লিপ্ত।
                          • যারা কুরআন হাদীসের অসংখ্য জায়গায় বর্ণিত জিহাদকে অস্বীকার করতে না পেরে শুধুমাত্র ‘আত্মরক্ষামূলক জিহাদে’র কথা বলে তাদের পরম বন্ধু ইয়াহুদী-খৃস্টানদের খুশি করতে চায়।
                          • যারা জিহাদকে নফসের জিহাদ, কলমের জিহাদ, কথার জিহাদ ও মিছিল-মিটিংয়ের জিহাদের মাধ্যমে অপব্যাখ্যা করে মুসলিম উম্মাহকে বিভ্রান্তির বেড়াজালে আবদ্ধ করেছে।
                          • যারা জিহাদকে ‘বর্তমান যামানার জন্য অনুপযোগী ও হিকমাহ পরিপন্থী’ মনে করে।
                          • যারা দ্বীন কায়েমের সঠিক পথ পরিত্যাগ করে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্র ও ‘পোপতন্ত্রের ইসলামী ভার্সন’ পীরতন্ত্রের মাধ্যমে দ্বীন কায়েমের ব্যর্থ চেষ্টায় লিপ্ত।
                          • যারা ‘ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি’ কিংবা ‘রাজনীতি ও জিহাদ নিরপেক্ষ ধর্ম’ দিয়ে সমাজে দ্বীন কায়েম করতে ইচ্ছুক।
                          • যারা ধর্মকে রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে আলাদা করে বহু ইলাহ ও বহু রবের ইবাদতে লিপ্ত।
                          • তথাকথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ তাগুতের ভাড়াটিয়া বাহিনী, গোয়েন্দা বিভাগ, কাউন্টার টেররিজম ইত্যাদি যাদের মাথা ব্যথা কেবল মুজাহিদদেরকে নিয়ে।
                          • সেই সকল তথাকথিত ‘সুশীল সমাজ’ যারা চায় মুসলমান যুবকদের মাঝে খাহেশাহ্ ও ফাহেশাহ্ বিস্তার লাভ করুক।
                          • এক কথায় সকল নাস্তিক, মুরতাদ, তথাকথিত প্রগতিশীল, ইসলাম বিদ্বেষী।
                          ======যাদের চুলকানির একমাত্র ঔষধ “জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ”।
                          -মুসআব ইলদিরিম

                          Comment


                          • #14
                            মাশাল্লাহ। খুব ভালো লাগছে বইটার পিডিএফ পড়ে। অনেক অনুপ্রেরণা পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। বাকি পর্বের পিডিএফ এর অপেক্ষায় আছি।
                            বদরের হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার!

                            Comment


                            • #15
                              Originally posted by Abu Waalid View Post
                              মাশাল্লাহ। খুব ভালো লাগছে বইটার পিডিএফ পড়ে। অনেক অনুপ্রেরণা পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। বাকি পর্বের পিডিএফ এর অপেক্ষায় আছি।



                              মুহতারাম Abu Waalid ভাই!
                              জাযাকাল্লাহু খাইরান। আপনার নেক দুআয় আমাদেরকে শামিল রাখবেন ভাই।
                              কিতাবটির বাকি পর্বের কাজ চলমান, আলহামদুলিল্লাহ।
                              কিতাবটিকে আল্লাহপাক কবুল করুন। উম্মতের জন্য উপকারী বানিয়ে দিন। আমীন।

                              Comment

                              Working...
                              X