Announcement

Collapse
No announcement yet.

আমাদের উচিৎ সিসাঢালা প্রাচীর হয়ে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা! -হাকিমুল উম্মাহ্ শাইখ আইমান

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আমাদের উচিৎ সিসাঢালা প্রাচীর হয়ে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা! -হাকিমুল উম্মাহ্ শাইখ আইমান



    আমাদের উচিৎ সিসাঢালা প্রাচীর হয়ে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা!
    (শামের জিহাদি রণাঙ্গনের বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে মুজাহিদিন ও মুসলমানদের প্রতি বিশেষ বার্তা)
    ||
    হাকিমুল উম্মাহ্ শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ
    আমীরে আম, জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ

    আস সাহাব মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত ও আন নাসর মিডিয়া কর্তৃক বাংলায় অনূদিত
    রবিউল আওয়াল ১৪৩৯ হিজরি/ নভেম্বর ২০১৭ ইংরেজি




    অনলাইনে পড়ুন- https://justpaste.it/shaikh_barta

    ডাউনলোড করুন
    pdf (871 KB)







    word (254 KB)






    আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!

  • #2

    আমাদের উচিৎ সিসাঢালা প্রাচীর হয়ে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা!

    (শামের জিহাদি রণাঙ্গনের বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে মুজাহিদিন ও মুসলমানদের প্রতি বিশেষ বার্তা)
    ||

    হাকিমুল উম্মাহ্ শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ
    আমীরে আম, জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ


    আস সাহাব মিডিয়া কর্তৃক প্রকাশিত ও আন নাসর মিডিয়া কর্তৃক বাংলায় অনূদিত
    রবিউল আওয়াল ১৪৩৯ হিজরি/ নভেম্বর ২০১৭ ইংরেজি




    بسم الله والحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وآله وصحبه ومن والاه
    বিশ্বের মুসলিম ভাইয়েরা!
    আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ!
    গত বছরে ব্যাপকভাবে মুজাহিদগণের মাঝে এবং বিশেষত শামের কায়েদাতুল জিহাদের মুজাহিদদের মাঝে বেশ কিছু পরিবর্তন সংগঠিত হয়েছে। মুজাহিদদের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে; এমনকি তা বিভেদ সৃষ্টি, অস্থিরতা, বিশৃঙ্খলা, সীমালঙ্ঘন ও পারস্পরিক লড়াই পর্যন্ত গড়িয়েছে।
    এক বছরেরও অধিক সময় ধরে; [জাবহাতুন নুসরাহ’র আল-কায়েদা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া] যেটাকে তারা (যোগসূত্র বিচ্ছিন্ন করণ) নাম দিয়েছে, সেটার ঘোষণার সময় থেকে নিয়ে-এইসব জটিলতার বিষয়ে আমি কোন কথা বলিনি। হালাব-পরবর্তী পরিস্থিতি এর অনুকূলে ছিল না। এর অর্থ এই নয়, আমি এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও অন্যান্য শাখার আমার ভাইয়েরা নিত্যদিনের ঘটনাপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করছি না। কিন্তু আমরা মিডিয়ার শোরগোল থেকে দূরে থেকে ধীর-স্থিরভাবে সমাধান করাকে প্রাধান্য দিয়েছি।
    আমরা আমাদের ভাইদের জানিয়েছি- তারা যা করেছে একেতো সেটা চুক্তি ভঙ্গ হয়েছে, অধিকন্তু তারা যে ঐক্য কামনা করছে তা কিছুতেই বাস্তবায়ন হবে না।
    কেননা, মূলত এটা আমেরিকান চাপের সামনে পশ্চাদপসারণ। এতে তাঁদের উপর বোমা বর্ষণও বন্ধ হবে না, সন্ত্রাসের অভিযোগ থেকে মুক্তিও মিলবে না। এছাড়াও আরও যেসব অসার যুক্তি-প্রমাণ তারা পেশ করেছে সেগুলোও বাস্তবায়িত হবে না!
    আমরা এও জানিয়েছি যে, যদি বাস্তবেই ঐক্য হয়, তাহলে আমরাই সর্বপ্রথম একে স্বাগত জানাবো এবং তাদের সাথে আমাদের বিদ্যমান সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবো। কিন্তু তারা যেটা করেছে, তা হচ্ছে শুধুমাত্র একটি নতুন সংগঠন প্রতিষ্ঠা, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। আর আজ তা হচ্ছেও। হত্যা, পারস্পরিক লড়াই, একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পরস্পর বিরোধি ফতোয়া- এসব হচ্ছে মুজাহিদদে মাঝে। এদিকে শত্রু প্রতিনিয়ত অগ্রসর হচ্ছে। বসত-ভিটা থেকে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। তুর্কিদের ধ্বংসাত্মক আক্রমণের ভয়াবহতা যথারীতি বহাল আছে। সিরিয়াতে প্রতিনিয়ত আমেরিকান প্লান-প্রোগ্রাম অনুপ্রবেশ করছে। ইরানী ও হিজবুল্লাহ বাহিনী বিভিন্ন ভূখণ্ড গ্রাস করে চলেছে।
    পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে সাধারণ মুজাহিদদেরকে এই ধুম্রজালে ফেলার নীতি অবলম্বনের কারণে যে, “সবকিছু আল-কায়েদার নেতৃবৃন্দের সম্মতিতে হচ্ছে, যারাই আল-কায়েদার বাইয়াতে অটল থেকে আল-কায়েদার নামে কাজ করবে তাদেরকেই বন্দি করা হবে।”
    এরপর যে সকল ভাই (আল-কায়েদার) বাইয়াত আঁকড়ে রয়েছেন, তাঁদেরকে কোণঠাসা করণ রাজনীতি শুরু হয়েছে এবং বিষয়টি লড়াই, নারীদের বন্দী করা এমনকি শিশুদের সাথে রুঢ় আচরণের সীমা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।
    শান্ত-শিষ্ট ও ধীর-স্থিরভাবে বিষয়গুলোকে সংশোধন করা এবং সঠিক পথে পরিচালনা করার নিমিত্তে আমার ও ভাইদের মাঝে বার্তা আদান-প্রদান এবং ধারাবাহিক যোগাযোগ চালু ছিল। সে সময়ে আমরা এই মানহাজই গ্রহণ করেছিলাম এবং কল্যাণপন্থী ব্যক্তিবর্গ আমাদেরকে এরই নসিহত করেছিলেন।
    এক বছরের বেশি হয়েছে আমরা একের পর এক সময় ও সুযোগ দিয়েছি, কিন্তু আমরা দেখেছি, জটিলতা শুধু বৃদ্ধিই পাচ্ছে। ঘৃণা-বিদ্বেষ, মতানৈক্য, হক ও ইজ্জত-সম্মানের উপর সীমালঙ্ঘন একের পর এক বেড়েই চলেছে। আর যা কিছু ঘটছে, তার কারণে শামবাসী উদ্ধিগ্নতায় দিন কাটাচ্ছেন। মুজাহিদগণ অস্থিরতা ও পেরেশানিতে দিনাতিপাত করছেন।
    তাই আমি কিছু সংক্ষিপ্ত কিছু কথা বলতে চাই, যার মাঝে সত্য বাস্তবতাটা তুলে ধরব; সকলের মাঝে স্বস্তি আনয়ের চেষ্টা করব; বিভিন্ন গ্রুপের মাঝে ঐক্য সৃষ্টি এবং সকলের মাঝে সম্পৃতি সৃষ্টির চেষ্টা করব। হতে পারে আল্লাহ তাআলা এই নসিহতগুলোকে মুজাহিদ ও মুসলমানদের অন্তরে কবুল করাবেন। সাথে সাথে আমি জোর তাগিদের সাথে বলছি, আমি ও আমার ভাইয়েরা নসিহতের সর্বপ্রথম মুহতাজ। আমরা ভুল-ত্রুটি থেকে নিজেদেরকে মুক্ত ঘোষণা করি না।
    সর্বপ্রথম যে বিষয়টি শুরু করবো, তা হল- আমি একটি বাস্তবতাকে স্পষ্ট করতে চাই। তা হচ্ছে- শামের জিহাদ প্রতিরক্ষামূলক জিহাদ। যে জিহাদের ব্যাপারে ফুকাহায়ে কেরাম সিদ্ধান্ত দিয়ে গেছেন- এই জিহাদের জন্য কোন কিছুই শর্ত নয়, বরং ভাল-মন্দ, সমমতাদর্শী কি ভিন্নমতাদর্শী সকল মুসলমানকে সাথে নিয়ে আগ্রাসী শত্রুকে সাধ্য অনুযায়ী প্রতিহত করতে হবে।
    দ্বিতীয় বিষয়: শামের জিহাদ গোটা মুসলিম উম্মাহর জিহাদ। কাজেই বলা যাবে না যে, এটা শামবাসীর জিহাদ, সিরিয়াবাসীর জিহাদ; বলা যাবে না- এটা ইদলিববাসীর জিহাদ, এটা দার’আবাসীর জিহাদ কিংবা দামেস্কবাসীর জিহাদ। কাউকে বলা যাবে না যে, “তুমি শাম থেকে বের হয়ে যাও! যদি শামে কাজ কর, তাহলে আমরা তোমাকে বন্দী করবো! তোমাকে বিতাড়নের মাঝেই আমাদের মাসলাহাত।”
    আমাদের ফুকাহায়ে কেরাম মূলনীতি দিয়ে গেছেন, সকল ইসলামী ভূমি একটা ভূখণ্ডের ন্যায়। সকল মুসলমান এক জাতি। তার সর্বনিম্ন সদস্যও সকলের পক্ষ হতে নিরাপত্তা প্রদানের সক্ষমতা রাখে। আর তাঁরা সকলে শত্রুর বিরুদ্ধে এক হাতের ন্যায়। কাজেই (শামের জিহাদকে শামবাসীর মাঝে সীমাবদ্ধ করে দেয়া, বহিরাগতদের শাম থেকে বের করে দেয়া) এই স্বীকৃত মূলনীতির পরিপন্থী।
    শামবাসী কিভাবে এই বাতিল কথাটিকে নিজেদের মাঝে চলতে দিতে পারেন, অথচ মুসলমানদের প্রতিরক্ষায় তাঁদের রয়েছে আলোকিত শুভ্র ইতিহাস?!
    শায়খ ইজ্জুদ্দীন ইবনে আব্দুস সালাম কে? তিনি কি দামেস্কের অধিবাসী নন? তিনি মিসরে হিজরত করেছিলেন। মুসলমানদেরকে তাতারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে উৎসাহিত করেছিলেন। ফলে আল্লাহ তায়ালা আইনে জালুতের যুদ্ধে তাদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের সাহায্য করেছেন।
    কে এই সুলাইমান আল-হালাবী? তিনি কি কায়রোতে জেনারেল ক্লেবরকে হত্যা করেননি?
    কে এই ইজ্জুদ্দীন আল-কাসসাম? তিনি কি লাতাকিয়াস্থ জাবালা অঞ্চলের লোক নন? তিনি ফিলিস্তিনের জিহাদে বেরিয়ে গিয়েছিলেন।
    কে এই শায়খ আবু মুসআব আস সুরি এবং শায়খ আবু খালেদ আস সুরি? তাঁরা কি আফগানিস্তানে হিজরত করেননি?
    যদি শামবাসীর কাছে খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ রাদি. অথবা আবু উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ্ রাদি. অথবা তুর্কি বংশীয় নুরুদ্দীন জিঙ্কি অথবা কুর্দি বংশীয় সালাহউদ্দিন আইয়ুবি অথবা কাউকাজের কুতুজ কিংবা ইয়েমানের উসামা ইবনে লাদেন আসতেন, তাহলে কি তাঁরা তাঁদের বলতে পারতেন- “তোমরা শাম থেকে বের হয়ে যাও! তোমরা সিরিয়ান নও!? তোমরা আমাদের উপর বোমা বর্ষণ, সন্ত্রাসের অপবাদ আর সাহায্য বন্ধ হয়ে যাওয়া টেনে নিয়ে আসবে।”
    কাজেই এই কোন ধরনের বেদআত এটা যে, “আমাদের বহিরাগত কোন সম্পর্ক নেই”? যদি খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ রাদি. শামবাসীর কাছে আসতেন, তাহলে কি তাঁরা তাকে বলতেন- “আপনি বের হয়ে যান। কারণ, আবু বকর সিদ্দিক রাদি. ও উমর ইবনুল খাত্তাব রাদি. এর সাথে আপনার বহিরাগত সম্পর্ক আছে।”
    তৃতীয় যে বিষয়টির প্রতি আমি প্রতি ইশারা করতে চাই, তা হল- অঙ্গীকার ও বাইয়াত শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ বড় বড় বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত, যেগুলো নিয়ে খেল তামাশা চলে না, বরং শরিয়ত সেগুলো পূর্ণ করা আবশ্যক করেছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ইরশাদ করেন-
    {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَوْفُوا بِالْعُقُودِ}
    অর্থ: “হে মুমিনগণ, তোমরা অঙ্গীকারসমূহ পূর্ণ কর!” (সুরা মায়েদা-০১)
    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আরও ইরশাদ করেন-
    {وأَوْفُوا بِعَهْدِ اللَّهِ إِذَا عَاهَدْتُمْ وَلَا تَنْقُضُوا الْأَيْمَانَ بَعْدَ تَوْكِيدِهَا وَقَدْ جَعَلْتُمُ اللَّهَ عَلَيْكُمْ كَفِيلًا إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا تَفْعَلُونَ وَلَا تَكُونُوا كَالَّتِي نَقَضَتْ غَزْلَهَا مِنْ بَعْدِ قُوَّةٍ أَنْكَاثًا تَتَّخِذُونَ أَيْمَانَكُمْ دَخَلًا بَيْنَكُمْ}
    অর্থ: “আল্লাহর নামে অঙ্গীকার করার পর সে অঙ্গীকার পূর্ণ কর। পাকাপাকি কসম করার পর তা ভঙ্গ করো না, যখন তোমরা আল্লাহকে নিজেদের *উপর সাক্ষী করেছ। তোমরা যা কর আল্লাহ তা জানেন। তোমরা ঐ মহিলার মত হয়ো না, যে মজবুতভাবে সূতা পাকানোর পর তা টুকরো টুকরো করে ছিড়ে ফেলে; ফলে তোমরাও নিজেদের কসমসমূহ (ভেঙে) পারস্পরিক অনর্থ সৃষ্টির মাধ্যম বানাবে।” (সূরা নাহল: ৯১-৯২)
    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আরও ইরশাদ করেন-
    {وَلَا تَتَّخِذُوا أَيْمَانَكُمْ دَخَلًا بَيْنَكُمْ فَتَزِلَّ قَدَمٌ بَعْدَ ثُبُوتِهَا وَتَذُوقُوا السُّوءَ بِمَا صَدَدْتُمْ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ وَلَكُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ وَلَا تَشْتَرُوا بِعَهْدِ اللَّهِ ثَمَنًا قَلِيلًا إِنَّمَا عِنْدَ اللَّهِ هُوَ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ}
    অর্থ: “তোমরা স্বীয় কসমসমূহকে পারস্পরিক কলহ দ্বন্দ্বের বাহানা করো না। তা হলে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর পা ফসকে যাবে এবং তোমাদেরকে শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করতে হবে এ কারণে যে, তোমরা আল্লাহর পথে বাধা দান করেছ এবং তোমাদের কঠোর শাস্তি হবে। তোমরা আল্লাহর অঙ্গীকারের বিনিময়ে সামান্য মূল্য গ্রহণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে যা আছে, তা উত্তম তোমাদের জন্যে, যদি তোমরা প্রকৃত সত্য উপলব্ধি করতে পার।” (সূরা নাহল: ৯৪-৯৫)
    আমি এখানে অত্যন্ত জোর দিয়ে একটি অকাট্য বিষয়ের কথা বলতে চাই। তা হল- আমরা কাউকে আমাদের বাইয়াত থেকে বের করে দেইনি। আমরা শুধুমাত্র ইবরাহীম আল বদরী এবং তার অনুসারিদেরকে জামাআত থেকে বহিষ্কার করেছি। কিন্তু আমরা কাউকে আমাদের বাইয়াত থেকে বের করে দেইনি; জাবহাতুন নুসরাকেও না অন্য কাউকেও না। আমরা এও গ্রহণ করিনি যে, জাবহাতুন নুসরাহ’র বাইয়াত গোপনে গোপনে হবে, বরং একে আমরা ধ্বংসাত্মক ভুল বলে গণ্য করেছি।
    আমাদের ও আমাদের যারা বাইয়াত দিয়েছেন তাঁদের প্রত্যেকের মধ্যকার বাইয়াত একটি অবশ্যপালনীয় চুক্তি, যা ভঙ্গ করা হারাম এবং পূর্ণ করা আবশ্যক।
    এখানে আমি উল্লেখ করবো যে, আমি যখন নুসরাহ ও দাওলার মাঝে মীমাংসামূলক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য জামাআত কায়েদাতুল জিহাদের পক্ষ থেকে শায়খ আবু খালেদ আস সুরিকে প্রতিনিধি নিযুক্ত করলাম, তখন তিনি আমার কাছে একটি পত্র পাঠান। বাইয়াত নিয়ে বদরীর জামাতের খেল-তামাশার ব্যাপারে তিনি তাতে বলেন,
    “আমি আপনার কাছে কথাটি গোপন করবো না। বিবাদ যখন সংগঠিত হয়েছে তখন তার সাথে অন্যায় ও অপবাদও মিশ্রিত হয়েছে। যদি আপনি তাদের কাছে শুরাইহ’কে কাজী হিসেবে এবং ইয়াস ইবনে মুয়াবিয়াকে সালিস হিসেবে প্রেরণ করেন, তবুও তারা সন্তুষ্ট হবার মতো লোক নয়। কারণ, আল-কায়েদা তাদের কাছে একটা নাম মাত্র, যা নিয়ে তারা বড়াই করে বেড়ায়; এমন কোন সংগঠন নয়, যার তারা অনুসরণ করবে। তাদের প্রবৃত্তির অনুকূলে হলে তো ভাল, অন্যথায় যখনই তার প্রতিকূলে যায় তখন আর কোন আনুগত্য নেই!”
    এ কারণে আমি আমার সম্মানিত ভাইদেরকে বলবো, যারা জামাআত কায়েদাতুল জিহাদকে বাইয়াত দিয়েছেন: ওহে সম্মানিত প্রিয় ভাইয়েরা! নিশ্চয় যে বাইয়াত আপনারা আমাকে এবং জামাআত কায়েদাতুল জিহাদকে দিয়েছেন, তা একটি মর্যাদার বিষয় যা নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি এবং তা আমাদের গৌরব ও আমাদের মাথার তাজ। আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করি যেন, তিনি আমাদেরকে এর উপযুক্ত বানিয়ে দেন এবং দোয়া করি যেন আপনারা (আমাদেরকে) যেমন ধারনা করেন, তিনি আমাদেরকে এর চেয়েও উত্তম বানিয়ে দেন; আমাদের ওই সকল অপরাধ ক্ষমা করে দেন, যা আপনারা জানেন না!
    অতএব, হে আল্লাহর বান্দারা! আপনারা আপনাদের অঙ্গীকার ও প্রতিজ্ঞার উপর অটল থাকুন! কোন হাঁক-ডাক, কোন সংশয়-সন্দেহ বা কোন নব্য মতাদর্শের আহ্বানের কারণে স্থানচ্যুত হবেন না! দোদুল্যমান হবেন না! অঙ্গীকার ভঙ্গের কবিরাহ গুনাহ থেকে বেঁচে থাকুন! রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
    إذا جمع الله الاولين والآخرين يوم القيامة يرفع لكل غادر لواء فقيل هذه غدرة فلان بن فلان
    অর্থঃ “যখন কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা পূর্ববর্তী-পরবর্তী সকলকে একত্রিত করবেন, তখন প্রত্যেক গাদ্দারের জন্য একটি ঝাণ্ডা গেড়ে দিবেন এবং বলা হবে এ হচ্ছে অমুকের পুত্র অমুকের গাদ্দারী!”
    নিশ্চই এই বাইয়াত আমাদের উপর আবশ্যক করে দিয়েছে আপনাদেরকে নসিহাহ প্রদান, সৎপথে পরিচালনা, আপনাদের প্রতি লক্ষ্য রাখা ও গুরুত্ব দেয়া। আর আপনাদের উপর আবশ্যক করে দিয়েছে আমাদের কথা শোনা ও আনুগত্য করার।
    আমাদের উচিৎ এক হস্তের ন্যায় হয়ে যাওয়া! পরস্পর ভালোবাসা ও সম্পৃতির বন্ধনে আবদ্ধ এবং ঐক্যবদ্ধ থাকা, আল্লাহর বন্ধুদের প্রতি কোমল এবং তাঁর শত্রুদের প্রতি কঠোর হওয়া। সর্বত্র মুসলমান ও দুর্বলদের সাহায্য করা। আর সকল কল্যাণে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলাই সাহায্যের স্থল।
    আমি আমার ভাতৃবৃন্দ, শামের জামাআত কায়েদাতুল জিহাদের সৈনিকদের কাছে কামনা করি, তাঁরা প্রত্যেক সত্যবাদী মুজাহিদের সাথে সহযোগিতা করে যাবেন। ঐক্যের প্রচেষ্টা চালাবেন ও মতভেদ দূর করার চেষ্টা করবেন। কল্যাণের দিকে অগ্রগামী থাকবেন। শাহাদাতের জন্য প্রতিযোগিতা করবেন। যুদ্ধের বেলায় অগ্র সারিতে থাকবেন। মুজাহিদিন, মুহাজিরিন, দুর্বল ও সকল মুসলমানদের খেদমতে সর্বাগ্রে থাকবেন। আত্মত্যাগ ও কুরবানী প্রদান এবং মুজাহিদিন ও মুসলমানদের মাঝে সম্পৃতি সৃষ্টির ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে থাকবেন আর অনিষ্ট, মতানৈক্য ও ঝগড়া-বিবাদ থেকে সবার চেয়ে দূরে থাকবেন।
    এটি আমার পক্ষ থেকে তাঁদের প্রতি সুস্পষ্ট নির্দেশ যে- বার্থিস্ট, সাফাবি-রাফেজি, ক্রুসেডার ও দলত্যাগী খারেজীদের বিরুদ্ধে জিহাদ ও কিতালের ক্ষেত্রে তাঁরা তাঁদের সহমতপোষণকারী কি ভিন্নমতপোষণকারী সকল মুজাহিদ ভাইয়ের সাথে সহযোগিতা করে যাবেন।
    কিন্তু আমি তাঁদেরকে কঠোরভাবে নিষেধ করছি এবং পরিপূর্ণ সতর্ক করছি, যেন তাঁরা এমন কাউকে সহায়তা না করেন, যে জুলুম ও সীমালঙ্গন করে; মুসলামানদের হক বা কাফেরদের শরীয়তস্বীকৃত অধিকার নষ্ট করে।
    কাজেই তাঁরা যেন কোন হারাম রক্ত প্রবাহিত না করেন; কোন নিষিদ্ধ মাল গ্রহণ না করেন; কোন মুসলিমের মান-সম্মান ও ইজ্জত-আব্রুর উপর আঘাত না হানেন; এমন কোন কাফেরকে যেন কষ্ট না দেন, শরীয়ত যার হক সংরক্ষণ করেছে।
    যদি এর ব্যতিক্রম কেউ করেন তাহলে আমি ও আমার ভাইয়েরা তাঁদের কর্মকাণ্ড থেকে মুক্ত। আমি কি পৌঁছে দিতে পেরেছি? হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী থাকুন!
    আমি আমার ভাতৃবৃন্দ, শামের জামাআত কায়েদাতুল জিহাদের সৈনিকদের কাছে (এও) কামনা করি, তাঁরা যেন তাঁদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। আল্লাহ তাআলার সাহায্য ও তাওফিকে তাঁদের নেতৃবৃন্দ প্রতিনিয়ত তাঁদের খেদমতে হাজির আছেন।
    চতুর্থ বিষয়: আমরা শাম ও শামের বাইরে অন্যান্য ভূমিতেও ঐক্যের আহবান জানাই। শামে আমাদের অনেক ভাই শামের জিহাদের শুরু থেকেই আমাদের এই বারংবার আহ্বানের কথা আলোচনা করে থাকেন। তাঁরা আলোচনা করেন যে, যখন ‘আল-জাবহাতুল ইসলামিয়্যাহ’র ঘোষণা হল, আমি আমার দুই- ভাই শায়খ আবু খালেদ আস সুরি রাহিমাহুল্লাহ এবং শায়খ জাওলানি (আল্লাহ তাআলা তাঁকে তাওফিক দান করুন) এর কাছে এই মর্মে পত্র পাঠিয়েছি যে, জাবহাতুন নুসরাহ এই জাবহার সাথে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে না কেন? এবং আমি তাঁদের উভয়কে ঐক্যের প্রচেষ্টা চালানোর প্রতি উৎসাহিত করেছি। আর (বলেছি) যখন তাঁরা কোন বিষয়ে পূর্ণ একমত হবেন, তখন যেন প্রথমে পত্রযোগে আমাকে তা অবহিত করেন!
    শামে আমি আমার ভাইদের মনে করিয়ে দিতে চাই, জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ এই বিষয়টি বারবার পুনরাবৃত্তি করেছে যে, তাঁরা জাবহাতুন নুসরাহ’র সাথে তখনই সাংগঠনিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে প্রস্তুত যখন দুটি বিষয় বাস্তবায়িত হবে, তৃতীয় কোন সুযোগ নেই-
    প্রথমটি: শামের মুজাহিদদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
    দ্বিতীয়টি: শামে একটি ইসলামী হুকুমত কায়েম হতে হবে এবং শামবাসী তাঁদের জন্য একজন ইমাম নির্বাচন করে নিতে হবে।
    তখন এবং কেবল তখনই- এর পূর্বে নয়- আমরা আমাদের সাংগঠনিক সম্পর্ক থেকে মুক্ত হবো এবং আমাদের শামের অধিবাসীরা যা বাস্তবায়ন করবে, আমরা তার অভিবাদন জানাবো। আর আমাদের মাঝে ইসলাম ও জিহাদের ভ্রাতৃত্ব বজায় থাকবে।
    আর ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কেবল নতুন নতুন সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা, যেগুলোতে তামাশাপূর্ণভাবে সংযুক্ত হওয়া ও বিচ্ছিন্ন হওয়ার ধারা চলতে থাকবে- আমরা তো এটাই প্রত্যাখ্যান করেছি।
    আমার মনে হয়, জামাআত কায়েদাতুল জিহাদই সর্বপ্রথম এমনটি করতে পেরেছে, আমার জানা মতে আমাদের বর্তমান যামানায় এমনটি আর কোন জামাআত করতে পারেনি। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা- তিনি যেন একে খালেস তাঁর সন্তুষ্টির জন্য বানিয়ে দেন।
    পরিশেষে আমি দুটি বার্তার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই-
    প্রথমটি- আমাদের শামের অধিবাসীদের প্রতি। আমি তাঁদের বলবো-
    আপনারা আমেরিকার ভীতিসঞ্চারক কল্পকথায় বিশ্বাস করবেন না! তারা আপনাদের বলছে, আল-কায়েদাই শামের সকল সমস্যার মূল এবং একে বের করে দেওয়াই সকল সমস্যা সমাধানের চাবিকাঠি।
    তারা কি কতক গ্রুপকে বলেনি, ‘আল-কায়েদা থেকে দূরে থাক! তাহলে বোমা বর্ষণ বন্ধ হবে।’ তা কি বন্ধ হয়েছে?
    ‘আল-কায়েদা থেকে দূরে থাক, তাহলে তোমাদের সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করা হবে না!’ তবে কি আপনাদের সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করা হয়নি?
    ‘আল-কায়েদা থেকে দূরে থাক, তাহলে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে!’ তা কি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে?
    আমার শামের মুসলিম ভাইয়েরা! ঐক্য নিয়ে সংগঠিত বিবাদ-সংঘাতের সাথে আল-কায়েদার কোন সম্পর্ক নেই। যারা ঐক্য চায় না, আপনারা তাঁদের চেনেন। আপনারা তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করুন! *তারা এমন বিষয়ে চুক্তি নিয়ে বিতর্ক করতে প্রস্তুত, যা তাদের পক্ষে মুহূর্তের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। আল-কায়েদার এখানে কী দখল আছে?
    আল-কায়েদা তাদের বলছে, তোমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যাও! আর শামবাসী নিজেদের জন্য একজন ইমাম নির্বাচন করে নেবে। এমনটা হলে তখন আমরাই সর্বাগ্রে তার সমর্থনকারী হবো। এতদসত্ত্বে তারা কেন ঐক্যবদ্ধ হয়নি?
    দ্বিতীয় বার্তাটি আমাদের প্রিয় ও আমাদের মাথার মুকুট শামের বীর মুজাহিদদের প্রতি। আমি তাঁদের বলবো-
    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ইরশাদ করেন-
    {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمْ فِئَةً فَاثْبُتُوا وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ وَاصْبِرُوا إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ}
    অর্থ: “হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন কোন বাহিনীর সাথে মোকাবেলায় লিপ্ত হও, তখন সুদৃঢ় থাক এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর যাতে তোমরা উদ্দেশ্যে কৃতকার্য হতে পার। এবং আল্লাহ তাআলার নির্দেশ মান্য কর এবং তাঁর রসূলের। পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তা কর, তবে তোমরা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবে। আর তোমরা ধৈর্য ধারণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা`আলা ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন।” (সুরা আনফাল: ৪৫-৪৬)
    (বলুন) অঙ্গীকার ভঙ্গ করা কি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য? বিবাদ-বিসম্বাদ কি নুসরত লাভের দিকে নিয়ে যাবে, না‘কি হতাশার দিকে?
    আমরা আজব ও বিরল কথা-বার্তা শুনতে পাচ্ছি। কোন ভাই বলছেন, অমুক শায়খ আমাদের ফতোয়া দিয়েছেন, “যে আল-কায়েদার দিকে আহবান করবে, তাঁকে বন্দী করা হবে!”
    হে অমুক! তুমি কোথায় ছিলে যখন শামে আল-কায়েদার নিকট সাহায্য চাওয়া হচ্ছিল এবং তার হাতে বাইয়াত দেওয়া হচ্ছিল?
    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা কি আল-কায়েদাকে শামে ইবরাহীম আল বদরীকে পরাভূত করা এবং তার প্রতারণা ও মিথ্যাচারকে প্রতিহত করার সবচেয়ে বড় এক উসীলা বানাননি?
    এই আল-কায়েদা-ই কি স্পষ্ট প্রমাণ করেনি যে, শায়খ আবু খালেদ আস সুরির হত্যাকারীরা নব-তাকফিরিদের দলভুক্ত?
    এই আল-কায়েদা-ই কি ইবরাহীম আল বদরী ও তার দলবলকে নিজ জামাআত থেকে বহিষ্কার করেনি? এই আল-কায়েদা-ই কি তার মিথ্যা, প্রতারণা ও ধোঁকাবাজি সুস্পষ্ট দলিল-প্রমাণ ও তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে স্পষ্ট করেনি? এই আল-কায়েদা-ই কি তার দাবিকৃত মিথ্যা খেলাফতকে শরীয়ত বিবর্জিত সাব্যস্ত করেনি?
    আল্লাহ না করুন যদি আল-কায়েদা বদরীর সাথে সমঝোতা করে নিত, অথবা সত্য প্রকাশে পিছুটান দিত, তাহলে- গায়েবের বিষয় আল্লাহই ভালো জানেন- ইবরাহীম আল বদরী জাবহাতুন নুসরাহকে গ্রাস করে ফেলত। আর যদি জাবহাতুন নুসরাহকে গ্রাস করেই ফেলতো, তাহলে শামে তাকে (বদরীকে) প্রতিহত করার আর কেউ থাকতো না। কিন্তু তার গলার কাটা হয়ে যে দাঁড়িয়েছে এবং তাকে শরীয়ত বিবর্জিত যে সাব্যস্ত করেছে, সে তো আল-কায়েদা-ই। এ কারণেই তার দাজ্জাল ও মিথ্যুক অনুসারীরা আল-কায়েদার উপর তাদের ক্রোধের পেয়ালা ঢেলেছে।
    যখন আল-কায়েদার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে দাওলা ও নুসরাহ’র চলমান বিবাদ নিরসনের সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হল, তখন শাম(বাসী) আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠল। আমার কাছে শায়খ জুলানি (ওয়াফফাক্বাহুল্লাহ) পত্র পাঠালেন যে, এটি একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত।
    এখন তিনি ইতিহাসের জন্য কি রাখলেন? (বাকি রাখলেন)
    যখন বদরী ও তার দাজ্জাল অনুসারীরা তাদের বাতিল দাওয়া-দাবীর মাধ্যমে শামে মুজাহিদদের একতাকে শঙ্কাগ্রস্ত করছিল, তখন তৎক্ষণাৎ বিভিন্ন দিক থেকে আল-কায়েদার হাতে বাইয়াত করা হল। তার কাছে বিভিন্ন দিক থেকে অসংখ্য পত্র আসতে লাগলো যে, আপনারা শামকে উদ্ধার করুন! অত:পর যখন বদরীর আশঙ্কা দূরীভূত হল, তখন “(আল-কায়েদার সাথে) যোগসূত্র বিচ্ছিন্ন করণ”, “বিচ্ছিন্ন (শামবাসী)র মাঝে ঐক্য গড়ন”, “জটিলতা নিরসন”- ইত্যাদি নব নব বানোয়াট শব্দ বের হওয়া শুরু হল। অথচ আমাদের সম্মানিত ভাই আব্দুর রহিম আত্তুন, শায়খ তারসুসির (ওয়াফফাক্বাহুমাল্লাহ) এক জবাবে এবং ‘ইহাআতুন জিহাদিয়্যাহ’ নামক ম্যাগাজিনে তাঁর আলোচনায় জোর দিয়ে বলেছেন, তাদের মাঝে এবং আল-কায়েদার মাঝের সম্পর্ক কেবল নিছক যোগসূত্র নয়, বরং এ সম্পর্ক বাইয়াতের সম্পর্ক।
    তাদের এসব কর্মের বৈধতার পক্ষে- ‘শামবাসীর মাসলাহাত’, ‘বোমা বর্ষণ বন্ধ করণ’, ‘সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ থেকে মুক্তি’, ‘শামের মুজাহিদদের ঐক্য’, ‘আহলুস সুন্নাহর প্রকল্প’- ইত্যাদি খোঁড়া অযুহাত দাঁড় করানো হতে থাকলো। (জিজ্ঞেস করি) এটা আহলুস সুন্নাহর প্রকল্প? নাকি আহলুস সুন্নাহর পরস্পরের দ্বন্ধ ও সংঘাতের প্রকল্প?
    এক বছরেরও অধিক সময় ধরে আমাদের ও আমাদের ভাইদের মাঝে ধারাবাহিক চিঠি-পত্র ও যোগাযোগ চলছে। হে আমাদের সম্মানিত ভাইয়েরা! হয়তো শামে মুজাহিদরা ঐক্যবদ্ধ হবে, নতুবা আপনারা আপনাদের (পূর্বের) জামাআতে (তথা আল-কায়েদায়) ফিরে যাবেন! কারণ, বাহানা আর টাল-মাটাল ছাড়া ছাড়া কিছুই তো দেখছি না। ‘আপনি কি চাচ্ছেন শামবাসীর উপর বোমা বর্ষণ হোক’? ‘আপনি কি ঐক্যে বাঁধা দিতে চাচ্ছেন?’- ইত্যাদি অসার যুক্তি-প্রমাণই তো কেবল উত্থাপন হচ্ছে।
    ওহে ভাইয়েরা! আল্লাহ তায়ালার দয়া ও করুণায় আপনারা আপনাদের নিজেদের চাইতেও বড় একতার মাঝে রয়েছেন। আল্লাহ তাআলার ফজল ও করমে আপনারা ইমারতে ইসলামীয়া’র হাতে বাইয়াতবদ্ধ জামাআত কায়েদাতুল জিহাদে ব্যাপক-বিস্তৃত ও একতাবদ্ধ জিহাদি জামাআতে আছেন।
    এরপরও কি প্রতিউত্তর আসবে যে- ‘নাহ্! আল-কায়েদা তো একটা (সাময়িক) ব্যবস্থাপনা ছিল, যার প্রয়োজন শেষ হয়ে গেছে; আমরা বর্তমানে এমন যামানায় উপনীত হয়েছি যেখানে প্রয়োজন সমগ্র উম্মাহ’র (ব্যাপক-বিস্তৃত) জিহাদ, এখন আর আমরা সংগঠনভিত্তিক (ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র) জিহাদের যামানায় রইনি- অথচ বাস্তবে তারা নিজেরাই বিভিন্ন সংগঠনের দ্বন্ধ-সংঘাতে নিমজ্জিত- ; আল-কায়েদা আমাদের উপর ধ্বংস টেনে আনবে, কোথায় গেল শামবাসীর মাসলাহাত’??
    ওহে ভাইয়েরা! আমরা আপনাদের বাধ্য করিনি! বলপ্রয়োগও করিনি। তেজ-ধার ছুরি কিংবা বক্ষ-বিদারক বুলেটের ভয়ও দেখাইনি।
    এই সামান্য অস্থায়ী ক্ষমতা, যেখানে ভয়ভীতি আর অস্থিরতা ছেয়ে আছে- এটি লাভ করেই যদি আমাদের অবস্থা এই হয়, তাহলে যখন আমরা পূর্ণ ক্ষমতা লাভ করবো তখন আমরা পরস্পর পরস্পরের সাথে কেমন আচরণ করবো?!
    আমরা কারো কাছে কোন প্রতিদান বা কোন কৃতজ্ঞতা চাই না! কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদের ভাইরা আমাদের উপর সুস্পষ্ট জুলুম করছেন। আর আপনজনের জুলুম, ধারালো তরবারির আঘাতের চেয়েও অধিক যন্ত্রণাদায়ক!
    ওহে শায়েখ অমুক! আল্লাহ তাআলা যে, (আল-কায়েদার মাধ্যমে) জালেম ও অত্যাচারী ইবরাহীম আল বদরীর অনিষ্টতা আপনাদের থেকে দূর করেছেন আপনি কি এভাবেই তার শুকরিয়া আদায় করছেন? আপনি কি চান, এই নেয়ামত উঠিয়ে নেওয়া হোক এবং আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে পুনরায় তার মত কোন জালেম ও অত্যাচারী দ্বারা পরীক্ষা করুক?
    ওহে শায়েখ অমুক! যে আল কায়েদার প্রতি আহ্বানকারীদের আপনি বন্দী করার হুমকি দিচ্ছেন- প্রিয় শায়েখ আবু খালেদ আস সুরি তো এই আল-কায়েদার মানহাজের সাথে সম্পৃ্ক্ত হবার প্রতিই জোর দিয়েছিলেন। ১৪৩৩ হিজরির জুমাদাস সানি মাসে তিনি আমার কাছে একটি পত্র প্রেরণ করেন, যার সমাপ্তি-অংশ খুব সুন্দর ছিল। তিনি বলেন-
    ‘হে আমার সম্মানিত শায়েখ! নিশ্চই আমি পরিবর্তিত হইনি এবং আমরা যে মানহাজ, ফিকির এবং লক্ষ্য- উদ্দেশ্যে ছিলাম, তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেইনি। আমাদের মাঝে যে ভালোবাসা ছিল, তা এখনো অটুট রয়েছে, বরং বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দৃঢ় হয়েছে। আর নিশ্চই আমি আপনার একজন বিশ্বস্ত হিতাকাঙ্ক্ষী ও মহব্বতকারী ভাই, যেমনটি ইতিপূর্বেও আপনি আমার থেকে লক্ষ্য করেছেন’।
    তিনি আরো বলেন-
    পরিশেষে আমি আল্লাহর কাছে দুয়া করছি যেন, তিনি আপনাকে ইসলাম দ্বারা এবং ইসলামকে আপনার দ্বারা শক্তিশালী করেন। আপনাকে মুসলমানদের সঞ্চিত সম্পদ হিসেবে বাকি রাখেন এবং আমাদের তাঁর নির্দেশ কায়েম করা অবস্থায় তাঁর আনুগত্যের সাথে দামেস্কের গুতায় একত্রিত করেন’।
    হে আবু খালেদ! আল্লাহ আপনার উপর দয়া করুন!
    তিনি আমাকে বলেননি যে, ‘যদি আপনি শামে আসেন, তাহলে হয়তো আপনি আমার অধীনস্ত হবেন, নাহলে আমি আপনাকে বন্দী করবো’!
    তিনি তো আমাকে বলেননি যে, ‘আমরা আপনাকে কিছুতেই নতুন দল গঠন করতে দেব না’।
    সুবহানাল্লাহ! শামে কি আল কায়েদা নতুন দল হয়ে গেল?
    কেন আমাদের মধ্য থেকে মুহাব্বাত দূর হয়ে গিয়েছে? এবং তাঁর স্থানে জায়গা করে নিয়েছে ঝগড়া-বিবাদ, অন্তরের কঠোরতা, বাইয়াত থেকে পরিত্রাণের পরিকল্পনা, ভাইদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করা, তাঁদেরকে তাড়িয়ে দেওয়া, পরাভূত করা?
    এই বিষয়গুলো কি সাহায্য ও বিজয়ের উপকরণ? না পরাজয়ের ভূমিকা মাত্র?
    শাম থেকে আল কায়েদাকে বের করার দ্বারা শত্রুদের উদ্দেশ্যে সিরিয়া থেকে সর্বশেষ সিরিয়ান মুজাহিদটিকেও বের করে দেয়া। আমি আবারো বলছি, শুনে রাখুন! শাম থেকে আল কায়েদাকে বের করার দ্বারা শত্রুদের উদ্দেশ্যে সিরিয়া থেকে সর্বশেষ সিরিয়ান মুজাহিদটিকেও বের করে দেয়া।
    এই তো মুহাম্মাদ মুরসি, তার পরিণতি তো শিক্ষাগ্রহণকারীর জন্য শিক্ষা। এই তো জোরপূর্বক মুসলমানদের বিতাড়ন ধারা ভয়ংকর আকারে চলমান আছে।
    হে ফাতাওয়া প্রদানকারী! আপনি কি আমার সাথে শায়েখ আবু খালেদ আস সুরিকেও গ্রেফতার করবেন? কেননা তিনি তো ফিকির, মানহাজ এবং লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের দিক থেকে আল কায়েদার অনুসারী ছিলেন।
    হে আবু খালেদ! আল্লাহ আপনার উপর রহম করুন! আপনার অনুপস্থিতি আমরা খুব বেশী অনুভব করছি।
    বিষয়টি পুরুষদের গ্রেফতার করার সীমাতেই থেমে থাকেনি, বরং ধৈর্যশীল মুহাজির মহিলাদের গ্রেফতার ও তাঁদের বাচ্চাদের সাথে রূঢ় আচরণ পর্যন্ত গড়িয়েছে।
    কেন আমাদের এই অধঃপতন? বিষয়টি কি একবার থেমে দেখার নয়, বরং বারবার ভেবে দেখার নয়?
    অপর একজন বলে- অমুক অমুক শায়েখ আমাকে ফাতাওয়া দিয়েছেন যেন আমি আল কায়েদার বাইয়াত ভঙ্গ করি। হে আমার সম্মানিত ভাই! আপনি তাহলে কিয়ামতের দিন তাঁদের উভয়কে ডাক দেবেন, যেন তারা আপনাকে রক্ষা করে, যেদিন প্রত্যেক গাদ্দারের জন্য একটি পতাকা উত্তোলিত করা হবে। তারা কি আপনাকে রক্ষা করতে পারবে? আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন-
    ﴿لِكُلِّ امْرِئٍ مِنْهُمْ يَوْمَئِذٍ شَأْنٌ يُغْنِيهِ﴾
    অর্থঃ ‘সেদিন প্রত্যেকেই নিজ চিন্তায় মশগুল থাকবে, নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে’। (সুরা আবাসা-৩৭)
    আপনারাই তো বদরী ও তাঁর সাথীদের নিন্দা জ্ঞাপন করে বলতেন, তাদের বৈধতা নেই, কেননা তারা আল কায়েদার বাইয়াত ভঙ্গ করেছে। তাহলে আপনারা কিভাবে ওই জিনিসকে নিজেদের জন্য বৈধ মনে করছেন, যা অন্যদের জন্য অবৈধ সাব্যস্ত করেছেন?
    ﴿أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنْسَوْنَ أَنْفُسَكُمْ﴾
    অর্থঃ ‘তোমরা কি লোকজনকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও আর নিজেদের কথা ভুলে যাও’। (সুরা বাকারা-৪৪)
    বিষয়টি কোন একক দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং সিরিয়ায় বাইয়াতের বিষয়টি রেলস্টেশনের মত হয়ে পড়েছে। হরেক রকমের যাত্রীদল- কেউ আসছে, কেউ যাচ্ছে, কেউ পার হচ্ছে, কেউ বিদায় দিচ্ছে, কেউ অভ্যর্থনা জানাচ্ছে, কেউ সুবিধাভোগী চাকুরিজীবী, কেউ পিকনিকে আসা পর্যটক।
    হে আমার ভাইয়েরা! বাইয়াত তো একটি শরয়ী অঙ্গীকার। আর মহান আল্লাহ তায়ালা আদেশ-নিষেধের প্রতি সম্মান প্রদর্শন শরীয়তের মূলনীতিসমূহের একটি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ইরশাদ করেন-
    ﴿ذَلِكَ وَمَنْ يُعَظِّمْ حُرُمَاتِ اللَّهِ فَهُوَ خَيْرٌ لَهُ عِنْدَ رَبِّهِ﴾
    অর্থঃ ‘এটা শ্রবণযোগ্য। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ যেসব জিনিসকে সম্মান দিয়েছেন সেগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে, তার পালনকর্তার নিকট তা তার জন্যে অতি উত্তম’। (সুরা হজ- ৩০)
    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আরও বলেন-
    ﴿ ذَلِكَ وَمَنْ يُعَظِّمْ شَعَائِرَ اللَّهِ فَإِنَّهَا مِنْ تَقْوَى الْقُلُوبِ﴾
    অর্থঃ ‘এটা শ্রবণযোগ্য। আর কেউ আল্লাহ তায়ালার শাআয়েরগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তা তো তার হৃদয়ের আল্লাহভীতি প্রসূত’। (সুরা হজ- ৩২)
    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আরও বলেন-
    ﴿فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾
    অর্থঃ ‘অতএব যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তাদের ভয় করা উচিত না জানি তাদের উপর কোন বিপদ আপতিত হয় অথবা যন্ত্রণাদায়ক কোন শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করে’। (সুরা নুর-৬৩)
    হে আমাদের ভাইয়েরা! আমাদের বন্ধুরা! ও আমাদের মাথার তাজ শামের মুজাহিদিন! আমরা যেন এই দৌড়ঝাঁপ ও পরিবর্তনের পূর্বের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করি। স্বল্পসময়ে জেলা ও প্রদেশগুলো বিজিত হয়েছে, শত্রুরা শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছে, আপনারা বড় বড় গনিমত লাভ করেছেন। আপনারা আপনাদের ঝাণ্ডাগুলোতে লিখেছেন, ‘আমরা একতাবদ্ধ হয়েছি, তাই আল্লাহ তাআলা আমাদের সাহায্য করেছেন’। অতঃপর আমরা এই পরিবর্তন ও বিবর্তন এবং আমেরিকার ভয় অন্তরে অনুপ্রবেশ করার পর আমাদের অবস্থা দেখি এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার এ বাণী স্মরণ করি-
    ﴿وَلَقَدْ صَدَقَكُمُ اللَّهُ وَعْدَهُ إِذْ تَحُسُّونَهُمْ بِإِذْنِهِ حَتَّى إِذَا فَشِلْتُمْ وَتَنَازَعْتُمْ فِي الْأَمْرِ وَعَصَيْتُمْ مِنْ بَعْدِ مَا أَرَاكُمْ مَا تُحِبُّونَ مِنْكُمْ مَنْ يُرِيدُ الدُّنْيَا وَمِنْكُمْ مَنْ يُرِيدُ الْآخِرَةَ ثُمَّ صَرَفَكُمْ عَنْهُمْ لِيَبْتَلِيَكُمْ وَلَقَدْ عَفَا عَنْكُمْ وَاللَّهُ ذُو فَضْلٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ﴾
    অর্থঃ ‘আল্লাহ তায়ালা তার ওয়াদা পূরণ করেছেন, যখন তোমরা তাঁরই নির্দেশে ওদের হত্যা করছিলে। অতপর যখন তোমরা দূর্বলতা প্রদর্শন করলে এবং কর্তব্য স্থির করার ব্যাপারে বিবাদে লিপ্ত হলে, আর কাঙ্খিত (বিজয়) দেখার পর (নিজেদের আমিরের আদেশ) অমান্য করলে, যেক্ষেত্রে তোমাদের কারো কাম্য ছিল দুনিয়া আর কারো বা কাম্য ছিল আখেরাত। অতঃপর তিনি তোমাদের ফিরিয়ে দিলেন ওদের (উপর বিজয়) থেকে, যাতে তিনি তোমাদের পরীক্ষা করতে পারেন। তবে এখন তিনি তোমাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। আল্লাহর তায়ালা তো মুমিনদের প্রতি বড় অনুগ্রহশীল’। (সুরা আলে ইমরান- ১৫২)
    হে আল্লাহ! আপনি আমাদের ক্ষমা করুন! আমাদেরকে আপনার অনুগ্রহ দান করুন! আমরা যে আচরণ পাওয়ার উপযুক্ত, দয়া করে আপনি আমাদের সাথে তেমন আচরণ করবেন না!
    ইমাম বুখারী ‘যুদ্ধের পূর্বে নেক আমল’ এই শিরোনামে একটি পরিচ্ছেদ এনেছেন, এতে তিনি লিখেছেন, আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, ‘তোমরা তো তোমাদের নেক আমলের মাধ্যমেই যু্দ্ধ কর’।
    অথচ অমুক শায়েখ বলছেন, আমরা কোনভাবেই নতুন দলগঠনের সুযোগ দেব না।
    এই শায়েখের আমীর ও শায়েখ হচ্ছেন শায়েখ আবু খালিদ আস সুরী রাহিমাহুল্লাহ্। তারা যে আল-কায়েদাকে নব্য জামাত আখ্যায়িত করে (শামে) তার শাখাকে মেনে নিতে পারছে না, দাওলা ও জাবহার মাঝে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য সেই আল কায়েদারই প্রতিনিধি হিসাবে শায়েখ আবু খালিদ সুরী রাহিমাহুল্লাহকে যখন আমি প্রতিনিধি নির্ধারণ করলাম, তখন তিনি আমার কাছে একটা চিঠি লিখলেন, যা ছিল ভালবাসা ও শিষ্টাচারে পরিপূর্ণ। সেখানে তিনি লিখেছেন:
    ‘আমার প্রিয়তম শায়েখ আবুল ফাতাহর (শায়েখ আইমানের উপনাম) নিকট! আল্লাহ আপনাকে রক্ষা করুন, আপনার নেগাহবানী করুন!
    কষ্টের এই বছরগুলোতে, নিদারুণ এই দিনগুলোতে কোন জিনিস আমার হৃদয়কে এতটা পুলকিত করেনি, আমার বক্ষকে এতটা প্রসন্ন করেনি, আমার জন্য এ পরিমাণ সুসংবাদ বয়ে আনেনি, যেমনটা করেছে আমাকে লিখা আপনার এ মহৎ চিঠিটি।’
    অতঃপর তিনি বলেন-
    ‘দাওলা এবং জাবহার মধ্যে সংকট সমাধানে যদি আপনি আমাকে সহযোগী বিবেচনা করে থাকেন, তাহলে আমি আল্লাহর কাছে কামনা করি, আমি যেন আপনার সৎ ও শুভাকাঙ্ক্ষী পরামর্শদাতা হতে পারি এবং এমন ব্যক্তি হতে পারি, যে আপনজনদের সাথে মিথ্যা বলে না।’
    তাহলে এখন কি পরিবর্তন হয়ে গেল? কি এখন বদলে গেল?
    অন্য একজন প্রিয় শায়খ একটি আম সমাবেশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, আল কায়েদা নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে! তোমরা আল কায়েদাকে ভুলে যাও!
    সুবহানাল্লাহ! হে প্রিয় শায়েখ! আপনি তো আমার মতই একজন নিঃস্ব ও বিতাড়িত।
    (কথায় আছে) বিপদ বিপদগ্রস্থদের একত্রিত করে।
    আপনার কি ভালো লাগবে যে, আল কায়েদা আপনার ব্যাপারে বলবে, অমুক তো শেষ! আপনারা অমুককে ভুলে যান!
    ইনশাআল্লাহ আমরা কখনোই তা বলবো না! হে প্রিয় শায়েখ! আপনি কি জানেন, কেন আমরা তা বলবো না?
    কেননা, আমরা মোল্লা মুহাম্মাদ উমর ও মোল্লা মুহাম্মাদ আখতার মানসুর রাহিমাহুমাল্লাহ’র মাদরাসা থেকে বের হয়েছি। ইমারাতে ইসলামী’র মাদরাসা থেকে বের হয়েছি, যা ওয়াদাপূরণ, সৎচরিত্র, আশ্রয় প্রার্থনাকারীকে রক্ষা করা এবং সে পথে রাজত্ব ও দুনিয়াকে বিসর্জন করার মাদরাসা। যে মাদরাসার ব্যাপারে আমাদের নেতা কা’ব ইবনে যুহাইর রাযি. এর কথা প্রযোজ্য হয়। -
    وإذا نزلت ليمنعوك إليهم أصبحت عند معاقل الأغفار
    ‘যখন তুমি তাদের কাছে অবতরণ করলে, যেন তারা তোমাকে শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করে, তখন তুমি সুরক্ষিত দূর্গে আশ্রয় গ্রহণ করলে!’
    রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
    المسلم أخو المسلم: لايظلمه، ولا يخذله، ولا يحقِّره.
    অর্থঃ ‘এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই! সে তার উপর জুলুম করে না, তার সাহায্য থেকে বিরত থাকে না এবং তাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে না!’
    ইমাম বুখারি রহ. এর বর্ণনায় এসেছে-
    المسلم أخو المسلم: لايظلمه، ولا يسلمه.
    অর্থঃ ‘এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই, সে তার উপর জুলুম করে না, তাকে শত্রুর হাতে সোপর্দ করে না।’
    وإن الذي بيني وبين بني أبي وبين بني عمي لمختلفٌ جدا
    أراهم إلى نصري بِطَاءً وإن هم دعوني إلى نصرٍ أتيتهم شدَّا
    فإن يأكلوا لحمي وفرت لحومهم وإن يهدموا مجدي بنيت لهم مجدا
    وإن بادهوني بالعداوة لم أكن أبادههم إلا بما ينعت الرشدا
    وإن قطعوا مني الأواصر ضِلَّةً وصلت لهم مني المحبة والودا
    [‘আমার অবস্থা এবং আমার আপন ভাই ও চাচাত ভাইদের অবস্থা বড়ই ভিন্ন।
    আমি তাঁদেরকে আমার সাহায্য করার ক্ষেত্রে অনুৎসাহী ও ধীরগামী পাই, অথচ তারা আমাকে সাহায্যের জন্য ডাকলে আমি ছুটে যাই।
    তারা আমার গোস্ত খেলেও, আমি তাদের গোস্ত বাড়িয়ে দেই (অর্থাৎ তারা আমার বদনাম করলেও আমি তাদের প্রশংসাই করি)। তারা আমার মর্যাদা ধূলিসাৎ করলেও আমি তাদের জন্য গৌরব ও সম্মানই বিনির্মাণ করি।
    তারা আমার সাথে শত্রুতা করলেও আমি তাদের জন্য কল্যাণই কামনা করি।
    তারা বিভ্রান্তির কারণে আমার সাথে সম্পর্কছিন্ন করলেও, তাদের প্রতি আমার তরফ থেকে ভালোবাসা ও মুহাব্বতই পৌঁছে’।]
    যদিও আমাদের ভাইয়েরা আমাদের অগ্রগামিতা, আমাদের হকসমূহ এবং আমাদের সাথে কৃত অঙ্গীকারসমূহ ভুলে গিয়েছে কিন্তু আমরা তাঁদের মর্যাদা, আত্মত্যাগ ও কুরবানি ভুলবো না। আল্লাহ তাআলার কাছে আমরা দুয়া করি, তিনি যেন আমাদেরকে ও তাঁদেরকে কবুল করেন।
    على أنَّ قومي ما ترى عين ناظرٍ كشِيْبِهم شِيْباً ولا مُرْدهم مُرْدا
    بفضلٍ وأحلام وجودٍ وسؤددٍ وقومي ربيعٌ في الزمان إذا شدّا
    ‘কোন দর্শনকারীর চক্ষু আমার গোত্রের শুভ্রকেশী বৃদ্ধদের ন্যায় কোন বৃদ্ধ কিংবা শ্মশ্রুবিহীন বালকদের ন্যায় কোন বালক দেখেনি।
    মর্যাদা, বিবেক-বুদ্ধি, দান-দক্ষিনা ও নেতৃত্বের ক্ষেত্রে। বিপদ-আপদের সময়ও আমার জাতি যেন যুগের বসন্ত’।
    বিষয়টি শুধু আল-কায়েদাকে অবজ্ঞা করা বা অপরিচিত মনে করার মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, বরং শামের জিহাদী অঙ্গন পারস্পারিক দ্বন্দ্বের এক বধ্যভূমিতে পরিণত হচ্ছে।
    তারা একে অপরকে অভিযুক্ত করছে। একে অপরের উপর ফাতাওয়ার বোমা বর্ষণ করছে। প্রতিটি গ্রুপ নিজেদের জন্য একদল মুফতী তৈরী করে নিচ্ছে।
    হেকমত-মাসলাহাতের নামে অঙ্গীকার ও প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করা হচ্ছে। কেউ আজ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করছে, তো আগামীকালই তা থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। কেউ বলছে, ‘আমি গোপনে আমার বাইয়াতের উপর রয়েছি, কিন্তু কয়েকদিন পরই বাইয়াত থেকে অবমুক্ত হয়ে যাচ্ছে। কেউ নতুন সংগঠনে যোগ দিচ্ছে, অতঃপর তা থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে, তাদের সাথেই যুদ্ধ করছে।
    যুদ্ধের দিকনির্দেশক বিনষ্ট হয়ে গেছে, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য হারিয়ে গেছে, যেখানে আমাদের এই বাস্তবতা স্মরণ রাখা দরকার ছিলো যে, আমরা শামে প্রতিরক্ষামূলক জিহাদ করছি, সুতরাং এক্ষেত্রে সকল মুসলিমের সাথে মিলে (নাসারা-নুসাইরী-শিয়াদের বিরুদ্ধে) জিহাদ করতে হবে, যতক্ষণ না শত্রুকে প্রতিহত করার মত সক্ষমতা অর্জন হয়- এর পরিবর্তে শামের মুজাহিদদের প্রতিটি দল অন্য সকল দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে। যেন শামে আহলুস সুন্নাহর মিশনই হয়ে গেছে পরস্পর যুদ্ধ করা। যে গতকাল পর্যন্ত আমাদের বন্ধু ও অংশীদার ছিল, যার সাথে সম্পর্ক থাকায় আমরা গর্ব করতাম, সে আজ বিশ্বাসঘাতক ও কাফেরদের ক্রীড়নকে পরিণত হয়েছে, যাকে মিটিয়ে দেয়া আবশ্যক হয়ে পড়েছে। যুদ্ধের অবস্থা হ-য-ব-র-ল হয়ে গেছে। আমরা আল্লাহর রহমতে এসব হতে মুক্ত।
    হে আমাদের বন্ধুগণ! আমাদের ভাইয়েরা! আমাদের মাথার তাজ শামের মুজাহিদগণ! আপনারা নিজেদের মধ্যকার যুদ্ধবিগ্রহ দ্বারা বাইতুল মাকদিস, লেবানন, ইরাক, মিশর ও জর্ডানের মুমিনদের হৃদয়গুলোকে বিদীর্ণ করে দিয়েছেন, যারা আপনাদের দিকে এই আশায় চেয়ে ছিল যে, আপনারা হবেন তাদের মুক্তির মাইলফলক, তাদের জন্য বয়ে আনবেন সম্মান ও স্বাধীনতার আলোকিত ভোরের সুসংবাদ।
    হে আমাদের বন্ধুগণ! আমাদের ভাইয়েরা! আমাদের মাথার তাজ শামের মুজাহিদগণ! এখন আমাদের উপর আবশ্যক হলো, আমরা নিজেদের মধ্যকার মতবিরোধগুলো দাফন করে ফেলবো। পরস্পর যুদ্ধবিগ্রহ থেকে বিরত থাকবো এবং বিশ্বজোড়া শয়তানি শক্তির ঐক্যবদ্ধ আগ্রাসন প্রতিরোধে আমরা উম্মাহর সাথে সবাই এককাতারে শামিল হয়ে যাবো, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করবো। কেননা এটা প্রতিরক্ষামূলক জিহাদ। আমরা কি তা ভুলে গেছি?
    এতটুকুতেই ক্ষান্ত নয়, বরং শামের জিহাদি অঙ্গন ধীরে ধীরে উম্মাহর দুঃখজনক ট্র্যাজেডি থেকেও দূরে সরে যাচ্ছে।
    জাযিরাতুল আরবে (শাসক) সাউদ পরিবার দুই দিনে বা তিন দিনে চুয়াল্লিশজন শীর্ষস্থানীয় দাঈ ও মুজাহিদকে হত্যা করেছে, অথচ শামের কোন জিহাদি দলের পক্ষ থেকে এর প্রতিবাদে একটি শব্দও বের হয়নি।
    কেন এই বিমুখতা? এ কারণে কি যে, তারা চেষ্টা করছে- যদিও তাদের এই চেষ্টা নিরর্থক- আমেরিকা-সউদি আরব আল-কায়েদার সাথে যেমন শত্রুতা করে, তাদের সাথে তেমনটা না করুক?
    আচ্ছা, আমেরিকা-সউদী আরব আল-কায়েদার সাথে দুশমনি করে কেন? দুশমনি করে কারণ, আল-কায়েদা উম্মাতে মুসলিমার অধিকার রক্ষায় লড়াই করে। কাফেরদের দালাল ও বিশ্বাসঘাতক (শাসক শ্রেণীর) গোমড় ফাঁস করে দেয়। জনসম্মুখে সুস্পষ্ট ঘোষণা করে দেয় যে, জাযিরাতুল আরবের শাসক এবং উপসাগরীয় শেখরা চোর, যারা *মুসলমানদের সম্পদ চুরি করে নিয়ে তাদের দুশমনদের হাতে অর্পণ করে। এই চুরি- যাকে শায়খ উসামা বিন লাদেন রাহিমাহুল্লাহ মানব ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা বড় চুরি আখ্যায়িত করেছেন- এসব দালালদের দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে, যারা নিজেদেরকে যুগের কায়সার আমেরিকার পরম অনুগত বানিয়ে নিয়েছে।
    এ কারণে অবশ্যই অবশ্যই আমেরিকা আল-কায়েদাকে অপছন্দ করবে। আর আমেরিকা যাদের অপছন্দ করে, আমাদের উচিৎ আমাদের নিজেদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখা (!)। এমনকি আমেরিকা যদি আমাদের উপর বোমা বর্ষণ করে, আমাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দেয়, আমাদের ভূমিগুলো বণ্টন করে নিয়ে যায়, সিসি-হাফতারের মতো অন্য কোন দালালকে আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়- তবুও।
    বিভক্তির পক্ষপাতিরা বলে বেড়ায়, আল-কায়েদা নিজেদের উপর সারা বিশ্বের শত্রুদের টেনে এনেছে। আর আমরা চাই আমাদের ব্যাপারটা শামেই সীমাবদ্ধ রাখতে।
    আল-কায়েদা- ওহে বিভক্তিবাদিরা!- লড়াই করছে উম্মাহ, উম্মাহ’র দ্বীন, সম্মান, শক্তি ও সম্পদ রক্ষায়। আর তোমরা- ওহে বিশ্লেষকেরা!- নিজেদেরকে প্রশ্ন করনি যে: কেন সারা দুনিয়া শামের বিরুদ্ধে একত্র হয়েছে? জিহাদ যদি শামের একটা বিচ্ছিন্ন ব্যাপার হতো, যদি তা কেবল শামেই সীমাবদ্ধ থাকত- তাহলে কি এ সকল (কুফরী) শক্তি, জোট ও রাষ্ট্র শামে মুসলিম উম্মাহর জাগরণের মোকাবেলায় একত্র হত??
    শামের সমস্যা ফিলিপাইন নির্বাচন কিংবা ইউক্রেনের শাসক কে হবে- এই সমস্যার মতো নয়। বরং শাম ইসলাম ও তার দুশমনদের মধ্যকার বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের এক ময়দান। ক্রুসেড যুদ্ধের এটিই বর্তমান কেন্দ্রভূমি। এটাই বাস্তবতা, বিভক্তিবাদিরা যা থেকে নিজেদের চোখ বন্ধ রাখতে চায়, অথচ তা তাদের গর্দান পরিবেষ্টন করে নিচ্ছে।
    একই ধারাবাহিকতায় (উল্লেখ করা সমীচিন মনে হচ্ছে) আমাদের শায়খ, মুজাহিদদের শায়খ- উমার আব্দুর রহমান ইন্তিকাল করলেন। আলেম, মুজাহিদ, ধৈয্যশীল, আপন দ্বীন নিয়ে গৌরববোধকারী, সুউচ্চ পাহাড়সম এবং মহান এক ব্যক্তিত্ব তিনি, যিনি নতিস্বীকার কাকে বলে জানতেন না। যিনি দৃষ্টিশক্তিহীনতা, অসুস্থতা ও বন্দীত্ব- এই তিন ধরণের কষ্টে আবদ্ধ ছিলেন। তিনি ইন্তেকাল করলেন। অথচ তাঁর মর্সিয়াস্বরূপ- আমার জানা মতে- শামের কোন জিহাদের দলের পক্ষ থেকে একটা শব্দও বের হল না। যদি ভুল বলে থাকি তাহলে আমাকে অবগত করাবেন।
    এ কি লজ্জাকর বিষয় নয় যে- শামের বিপ্লবী মুজাহিদরা তাঁকে ভুলে থাকবে, অথচ তাঁর আইনজীবী লিন স্টিওয়ার্ট তাঁকে স্বরণ রাখছে; যে আইনজীবি তাঁর পক্ষ নেয়ার এবং তাঁর বক্তব্যগুলো বর্ণনা করার অপরাধে সাত বছর জেল খেটেছেন!? তা সত্ত্বে যে হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেছেন, তিনি সেখানে গিয়েছেনে এবং ওফাদারির পরিচয়স্বরূপ একটি ফুলের তোড়া অর্পণ করেছেন।
    কেবল শামের বাইরেই নয়, বরং স্বয়ং শামেও আন্দোলনরত জিহাদি গ্রুপগুলো আকাবির মুজাহিদ ও মাশায়িখদের *ব্যাপারে একই আচরণ করছে। এই যে আমাদের প্রিয় ভাই, দুনিয়াবিমুখ কমান্ডার শায়খ আবুল খাইর রাহিমাহুল্লাহ। মুজাহিদের মাঝেই তিনি শাহাদাত বরণ করেছেন, অথচ শামের জিহাদি গ্রুপগুলো থেকে তাঁর মর্সিয়াস্বরূপ একটা শব্দও বের হল না। কেন? তিনি আমেরিকার শত্রু আল-কায়েদার লোক হওয়ার কারণে? আবুল খাইর; যাঁর থেকে তারা যত পেরেছে লাভবান হয়েছে। কিন্তু তারপর একটা শোকবাক্যও বের হল না, অথচ চতুর্দিকে শোক-শান্তনার রোল পড়েছে।
    হে আমাদের ভাই! আমাদের বন্ধু! আমাদের মাথার মুকুট! শামের বীর-বাহাদুর বরকতময় মুজাহিদেরা! আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ইরশাদ করেন-
    ﴿لَقَدْ رَضِيَ اللَّهُ عَنِ الْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبَايِعُونَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِي قُلُوبِهِمْ فَأَنْزَلَ السَّكِينَةَ عَلَيْهِمْ وَأَثَابَهُمْ فَتْحًا قَرِيبًا﴾
    অর্থ: “নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন যখন তারা আপনার নিকট বাইয়াত দিয়েছে গাছের নীচে। তিনি তাদের অন্তরে কি ছিল তা জেনেছেন। তাই তাদের উপর প্রশান্তি নাযিল করেছেন এবং আসন্ন বিজয়ের সুসংবাদ দিয়েছেন।” (ফাতহ: ১৮)
    আল্লাহ আরো ইরশাদ করেন-
    ﴿يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْأَنْفَالِ قُلِ الْأَنْفَالُ لِلَّهِ وَالرَّسُولِ فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَصْلِحُوا ذَاتَ بَيْنِكُم﴾
    অর্থ: “তারা আপনাকে গণিমতের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে। আপনি বলুন, গনীমত আল্লাহ ও রাসুলের। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং নিজেদের পারস্পরিক অবস্থার সংশোধন কর।” (আনফাল: ১ )
    তিনি আরো বলেন-
    ﴿إِنَّ الَّذِينَ تَوَلَّوْا مِنْكُمْ يَوْمَ الْتَقَى الْجَمْعَانِ إِنَّمَا اسْتَزَلَّهُمُ الشَّيْطَانُ بِبَعْضِ مَا كَسَبُوا وَلَقَدْ عَفَا اللَّهُ عَنْهُمْ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ حَلِيمٌ ﴾
    অর্থ: “তোমাদের মধ্য থেকে যারা দুই দল মুখোমুখি হওয়ার দিনে পলায়ন করেছে, শয়তান তাদের কিছু কৃতকর্মের কারণে তাদের পদস্খলন ঘটিয়েছে। নিশ্চিত জেনে রেখো, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম ধৈর্যশীল”। (আলে ইমরান: ১৫৫)
    তিনি আরো বলেন-
    ﴿أَوَلَمَّا أَصَابَتْكُمْ مُصِيبَةٌ قَدْ أَصَبْتُمْ مِثْلَيْهَا قُلْتُمْ أَنَّى هَذَا قُلْ هُوَ مِنْ عِنْدِ أَنْفُسِكُمْ﴾
    অর্থ: “যখন তোমরা এমন মুসিবতে আক্রান্ত হলে, যার দ্বিগুণ মুসিবতে তোমরা (শত্রুদেরকে) আক্রান্ত করেছ, তখন কি তোমরা এরূপ কথা বল যে, এ মুসবিত কোথা হতে এসে গেল? বলুন, এটা তোমাদের নিজেদের থেকেই এসেছে।” (আলে ইমরান: ১৬৫)
    আমরা চাই- আর আমি এর প্রতি সর্বপ্রথম মুখাপেক্ষী- আমরা আমাদের অন্তরের অবস্থা সংশোধন করে নিতে; আমাদের রব যেন দেখেন আমরা মুমিনদের প্রতি কোমল আর কাফেরদের উপর কঠোর; আমরা যেন আমাদের নিজেদের ব্যাপারে সততার পরিচয় দিতে পারি যে, ভুল হলে আমরা ভুল থেকে ফিরে আসবো, ভুল সংশোধন করে নেব এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করব; তাঁর থেকে নুসরত, শান্তি ও বিজয় মঞ্জুরি করাবো। চাই তুর্কিস্তান থেকে আটলাণ্টিক মহাসাগরের উপকূল পর্যন্ত সকল ভূখণ্ডে আমাদের জাতির সাথে সুদৃঢ়, নিশ্চিদ্র ও ঐক্যবদ্ধ এক সারি হয়ে দাঁড়াতে। চাই যেন আল্লাহ তাআলার এ বাণী আমাদের উপর প্রতিফলিত হয়-
    ﴿إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الَّذِينَ يُقاتِلُونَ فِي سَبِيلِهِ صَفًّا كَأَنَّهُمْ بُنْيانٌ مَرْصُوصٌ﴾
    অর্থঃ “নিশ্চয়ই আল্লাহ সীসাঢালা প্রচীরের ন্যায় সুদৃঢ় হয়ে আল্লাহর রাস্তায় লড়াইকারীদের ভালবাসেন”। (সফ: ৪)
    হে আল্লাহ! আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে দিন! পরস্পরে প্রীতিবন্ধনে আবদ্ধ করুন! আমাদের এক সারি বানিয়ে দিন! আমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য করুন! আমাদের গুনাহের কারণে কিংবা আমাদের সীমালঙ্গনের কারণে আমাদের পাকড়াও করবেন না!
    হে আল্লাহ! আমাদের গুনাহের কারণে আমাদেরকে আপনার সাহায্য থেকে কিংবা আমাদের দোয়া কবুল করা থেকে মাহরুম করবেন না!
    হে আল্লাহ! যদি আমরা আপনার সাহায্যের এবং দোয়া কবুলে যোগ্য না হয়ে থাকি, তাহলে আপনার নিজ দয়া ও করমে আমাদেরকে তার যোগ্য বানিয়ে দিন। আপনার প্রিয় বান্দাদের মতো আমাদের হাত ধরে আপনি আমাদেরকে আপনার কাছে নিয়ে নিন।
    হে আল্লাহ! আপনি জানেন আমরা নিপীড়িত, বাস্তুহারা, (আপনার রাস্তার) মুহাজির। কাজেই যারা আমাদের বিতাড়িত করতে চায়, আমাদেরকে কোণঠাসা করতে চায়- আপনি আমাদের উপর থেকে তাদের অনিষ্ট প্রতিহত করুন! আমরা আমাদের সকল বিষয় আপনার কাছেই ন্যাস্ত করলাম, আপনি উত্তমভাবে তার পরিচালনা করুন!
    وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العلمين. وصلى الله على سيدنا محمد وآله وصحبه وسلم.
    والسلام عليكم ورحمة الله وبركاته
    আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহ
      ( গাজওয়া হিন্দের ট্রেনিং) https://dawahilallah.com/showthread.php?9883

      Comment


      • #4
        জাযাকাল্লাহ ভাই।

        Comment


        • #5
          যাজাকাল্লাহ খাইরা ৷৷

          Comment


          • #6
            জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।
            আল্লাহ আমাদের প্রিয় শাইখকে হিফাজত করুন,আমিন।
            # যেখানে আল কায়দা থাকবে সেখানেই কুফফাররা আক্রমণ করবে। এর দুটি উত্তর।
            ১/ কুফফাররা আল কায়দাকে ভয় পায়, না জানি মুসলিমদের একত্রিত করে কুফফারদের উপর আক্রমণ করে বসে!
            ২/ এটা তাদের একটা অজুহাত মাত্র। তাহলে সাদ্দাম হুসেনকে কেনো তারা আক্রমণ করেছিলো। সেখানে তো প্রথমে দিকে কোন আল কায়দা ছিলো।

            Comment


            • #7
              জাযাকুমুল্লাহু
              আল্লাহ আমাদের প্রান প্রিয় শাইখকে হিফাজত করুন,আমিন।

              আবু দারদা ভায়ের এই খিদমাত কে আল্লাহ কবুল করুক আমীন

              Comment


              • #8
                শামের ইতিহাস জানা থাকা আমাদের ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি দূরীকরণে সাহায্য করবে ইনশাআল্লাহ

                Comment

                Working...
                X