গোয়ান্তানামো বন্দীশিবিরঃ ২য় পর্ব
(প্রথম পর্ব না পড়ে থাকলে পড়ে নিতে পারেন। লিংক: https://dawahilallah.com/member/3344...a-ibn-al-yaman)
২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারী বার্তা সংস্থা রয়টার্স পরিবেশিত এক সংবাদে বলা হয়,নুরেমবার্গ ট্রাইবুনালের কৌশলী হেনরি কিং জুনিয়র বলেছেন, গুয়ান্তানামোতে মার্কিন যুদ্ধাপরাধ আদালত, নাৎসি যুদ্ধপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত নুরেমবার্গ নীতিমালা লংঘন করেছে।তিনি বলেন গুয়ান্তানামোতে যা ঘটছে, তা যদি জানতে পারতেন নুরেমবার্গ স্থপতি রবার্ট জ্যাকশন,তিনি কবর ফুড়ে উঠে আসতেন।
মিডিয়া কর্তৃক এতো রিপোর্ট আর আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক আরোপিত এতো অভিযোগের পরেও সেই বন্দী শিবিরের নির্যাতন কমার নামতো নেই উল্টো বেডে যাচ্ছে দিন দিন।
যেহেতু মিডিয়া প্রশ্ন উত্থাপন করেছে,সেহেতু মার্কিনীরাও উত্তর একভাবে দিয়েছে।
সেই উত্তরটা হলো এমন,
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা এবং ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরের সেই ঐতিহাসিক হামলার (তথাকথিত সন্ত্রাসী হামলা) পর কংগ্রেসে অনুমোদিত আইনের বলে এসব বন্দীকে বিনা বিচারে আটক রাখা হয়েছে।
(NOTE: একটা বিষয় ভালোভাবে লক্ষ্য করুন। তাদের এন্টিমুসলিম পলিটিক্সটা(গত পর্বে এ নিয়ে আলোচনা করা আছে) এখানে খুব জোরালোভাবে কাজে লাগাচ্ছে।তবুও আরো একটু আলোচনা করছি।
প্রথমতঃ ২০০১ সালের সেই ঐতিহাসিক হামলাটা সংগঠিত হলো। যা ছিলো কুফফারদের মাথায় অনেক বড়ো চপেটাঘাত। ফলে তারা সতর্ক হলো।বর্তমানকালের মুসলিমদের ক্ষমতা সম্পর্কে অবগত হলো।মুলত সেই বরকতময় হামলার পর থেকেই আধুনিক কালের হক এবং বাতিলের শিবির আলাদা হয়ে গিয়েছে।সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই বক্তব্য স্পষ্ট করে গেছেন ,এই সন্ত্রাস নির্মুল করার যুদ্ধে হয় আপনি আমাদের পক্ষে নইলে সন্রাসীদের পক্ষে।তখন তাদের পরিকল্পনা শুধু গুয়ান্তানামো প্রতিষ্ঠাতেই শেষ এমন কিন্তু নয়। তারা অনেকরকম মিশন নিয়ে সামনে এগিয়ে আসলো।যেমনঃ
১.মুসলিমদের ভূমিসমূহে (যেমনঃ আফগানে) ওদের নাপাক পদচারণা ঘটালো সশস্ত্র যুদ্ধের সাজে(এখন ওরা প্রায় পরাজিত হয়ে ভঙ্গুর অর্থনীতি নিয়ে খুড়িয়ে গেছে।একে বারে পঙ্গু করে দেওয়াটা বাকি আছে। অন্য একদিন বিস্তারিত লিখবো।ইনশাআল্লাহ)।
২.মুসলিমদের মধ্যে ভাগ করে দিলো। উগ্রবাদী মুসলিম বলে একটা জাত তথা গোষ্ঠীর নামকরণ শিখালো। আর আমাদের তথাকথিত নম্র,ভদ্র আর সভ্য মডারেট আর অসাম্প্রদায়িক মুসলিম ভাইয়েরা সেই মধুর বুলি আওড়াতে লাগলো আজ অব্দি। RAND কর্পোরেশন কর্তৃক প্রকাশিত রিপোর্টে বিস্তারিত আছে।
৩. মিশনারী কাজ করতে শুরু করলো জোড়ালোভাবে।
৪. ইন্টারফেইথ ষড়যন্ত্র দানা বেঁধে ওঠল।
৫. ছাত্র এবং মানহাযীদের মধ্যে যারাই কৌশলী তাদের ধরে ধরে নিয়ে গেলো কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। নির্যাতনের সর্বশেষ সীমা অতিক্রম করলো শুধুমাত্র মুখ খোলার জন্য এতেও যখন মুখ খোলানো গেলো না নিয়ে এলো কিউবাতে। দুনিয়ার বুকে নেই এমন কোন কষ্ট যা গুয়ান্তানামোতে নেই।এমন ভাবে নির্যাতন চালানো হয়। নেই কোন আইনী সহয়তা। যেমনটা উপরেই তাদের দেওয়া বক্তব্যে স্পষ্ট।
দ্বিতীয়তঃ গুয়ান্তানামোর ব্যাপারে এতো এতো নেগেটিভ রিপোর্ট ছড়ানোর মূল কারণ হলো সকল মুসলিমের মনে কায়দা, তালিবান তথা জিহাদ ভীতিটাকে জোড়ালো করা।গুয়ান্তানামোতে যেই পাশবিক নির্যাতনের চিত্র মিডিয়ার মাধ্যমে তুলে আনা হয় এবং আমেরিকার বাপ দাদার সম্পত্তি মনে করে কংগ্রেসে তাদের মন চুকানো আইনের দোহায় দিয়ে বিনা বিচারে মুসলিমদের আটকে রাখার বৈধতা আদায় করার একমাত্র লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হলো মুসলিমদের এই কথাটাই ভালোভাবে বুঝানো যে, আমেরিকা এই পৃথিবীর কর্তা,তাদের একক কর্তৃত্বে আঘাত করার সাহস মুসলিমরা পেলো কোথা থেকে? ফলস্বরূপ সেই উগ্রবাদী মুসলিমরা কালের সবচেয়ে পাশবিক নির্যাতনের শিকার। তাদের এই প্রোপাগাণ্ডা অনেক বেশী সফলতার মুখ দেখতে পেয়েছে।বাংলাদেশের একটা উদাহরণ দেই।
একজন বাংলাদেশী গুয়ান্তানামো বে থেকে ১২ বছর পর মুক্তি পাওয়ার খবর যখন Washington post থেকে চাপা হয় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্পষ্ট ভাষায় মানা করে দেওয়া হলো যে, বাংলাদেশ এমন সন্ত্রাসীকে এক্সেপ্ট করবে না।বাংলাদেশের মতো একটা মুসলিম প্রধান(মুসলিম প্রধান আর ইসলামী রাষ্ট্র তফাৎ আছে) দেশ থেকে তারা এটাই আশা করেছিলো।এই জায়গাতেই মিস্টার আমেরিকা সফল।
সর্বপরি বুঝাগেলো, আমেরিকা সম্পর্কে যেই নেগেটিভ অভিযোগটা মিডিয়া তুলে ধরেছিলো সেটা উল্টোভাবে(মানে আমেরিকার কোনো দোষ নেই সব দোষ উগ্রবাদীদের) এসেই মুসলিমরা গিলতে শুরু করছে।
এটাই হলো এন্টিমুসলিম পলিটিক্স।বরং আমাদের উচিত ছিলো কি? নাইন/ইলেভেনের পর মুসলিমরা পুনরায় ঐক্যবদ্ধ হওয়া। মুসলিমরা যে চাইলে আমেরিকার নাকের ডগা দিয়ে এসে আমেরিকাকেই মুলা ঝুলিয়ে দিতে পারে সেটাই বেশী করে প্রচার করা। যেহেতু তা হয়নি সেহেতু ইতিহাস অন্যভাবে লিপিবদ্ধ হলো আরকি। ২০টা বছর মুসলিমদের পাহাড়ে পর্বতে নির্ঘুম রজনী যাপনের কষ্টটা আমাদের বুঝার তাওফিক দান করুক।২০ বছর পরে হলেও প্রেক্ষাপট আলহামদুলিল্লাহ চেঞ্জ হতে শুরু করেছে।বাকি বিজয়টাও আল্লাহ ত্বরান্বিত করুক আমিন।
লিখাটা সামনের পর্বে আরো গুছিয়ে নিয়ে আসতে চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
✒️ Huzaifa Ibn Al-Yaman
(প্রথম পর্ব না পড়ে থাকলে পড়ে নিতে পারেন। লিংক: https://dawahilallah.com/member/3344...a-ibn-al-yaman)
২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারী বার্তা সংস্থা রয়টার্স পরিবেশিত এক সংবাদে বলা হয়,নুরেমবার্গ ট্রাইবুনালের কৌশলী হেনরি কিং জুনিয়র বলেছেন, গুয়ান্তানামোতে মার্কিন যুদ্ধাপরাধ আদালত, নাৎসি যুদ্ধপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত নুরেমবার্গ নীতিমালা লংঘন করেছে।তিনি বলেন গুয়ান্তানামোতে যা ঘটছে, তা যদি জানতে পারতেন নুরেমবার্গ স্থপতি রবার্ট জ্যাকশন,তিনি কবর ফুড়ে উঠে আসতেন।
মিডিয়া কর্তৃক এতো রিপোর্ট আর আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক আরোপিত এতো অভিযোগের পরেও সেই বন্দী শিবিরের নির্যাতন কমার নামতো নেই উল্টো বেডে যাচ্ছে দিন দিন।
যেহেতু মিডিয়া প্রশ্ন উত্থাপন করেছে,সেহেতু মার্কিনীরাও উত্তর একভাবে দিয়েছে।
সেই উত্তরটা হলো এমন,
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা এবং ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরের সেই ঐতিহাসিক হামলার (তথাকথিত সন্ত্রাসী হামলা) পর কংগ্রেসে অনুমোদিত আইনের বলে এসব বন্দীকে বিনা বিচারে আটক রাখা হয়েছে।
(NOTE: একটা বিষয় ভালোভাবে লক্ষ্য করুন। তাদের এন্টিমুসলিম পলিটিক্সটা(গত পর্বে এ নিয়ে আলোচনা করা আছে) এখানে খুব জোরালোভাবে কাজে লাগাচ্ছে।তবুও আরো একটু আলোচনা করছি।
প্রথমতঃ ২০০১ সালের সেই ঐতিহাসিক হামলাটা সংগঠিত হলো। যা ছিলো কুফফারদের মাথায় অনেক বড়ো চপেটাঘাত। ফলে তারা সতর্ক হলো।বর্তমানকালের মুসলিমদের ক্ষমতা সম্পর্কে অবগত হলো।মুলত সেই বরকতময় হামলার পর থেকেই আধুনিক কালের হক এবং বাতিলের শিবির আলাদা হয়ে গিয়েছে।সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই বক্তব্য স্পষ্ট করে গেছেন ,এই সন্ত্রাস নির্মুল করার যুদ্ধে হয় আপনি আমাদের পক্ষে নইলে সন্রাসীদের পক্ষে।তখন তাদের পরিকল্পনা শুধু গুয়ান্তানামো প্রতিষ্ঠাতেই শেষ এমন কিন্তু নয়। তারা অনেকরকম মিশন নিয়ে সামনে এগিয়ে আসলো।যেমনঃ
১.মুসলিমদের ভূমিসমূহে (যেমনঃ আফগানে) ওদের নাপাক পদচারণা ঘটালো সশস্ত্র যুদ্ধের সাজে(এখন ওরা প্রায় পরাজিত হয়ে ভঙ্গুর অর্থনীতি নিয়ে খুড়িয়ে গেছে।একে বারে পঙ্গু করে দেওয়াটা বাকি আছে। অন্য একদিন বিস্তারিত লিখবো।ইনশাআল্লাহ)।
২.মুসলিমদের মধ্যে ভাগ করে দিলো। উগ্রবাদী মুসলিম বলে একটা জাত তথা গোষ্ঠীর নামকরণ শিখালো। আর আমাদের তথাকথিত নম্র,ভদ্র আর সভ্য মডারেট আর অসাম্প্রদায়িক মুসলিম ভাইয়েরা সেই মধুর বুলি আওড়াতে লাগলো আজ অব্দি। RAND কর্পোরেশন কর্তৃক প্রকাশিত রিপোর্টে বিস্তারিত আছে।
৩. মিশনারী কাজ করতে শুরু করলো জোড়ালোভাবে।
৪. ইন্টারফেইথ ষড়যন্ত্র দানা বেঁধে ওঠল।
৫. ছাত্র এবং মানহাযীদের মধ্যে যারাই কৌশলী তাদের ধরে ধরে নিয়ে গেলো কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। নির্যাতনের সর্বশেষ সীমা অতিক্রম করলো শুধুমাত্র মুখ খোলার জন্য এতেও যখন মুখ খোলানো গেলো না নিয়ে এলো কিউবাতে। দুনিয়ার বুকে নেই এমন কোন কষ্ট যা গুয়ান্তানামোতে নেই।এমন ভাবে নির্যাতন চালানো হয়। নেই কোন আইনী সহয়তা। যেমনটা উপরেই তাদের দেওয়া বক্তব্যে স্পষ্ট।
দ্বিতীয়তঃ গুয়ান্তানামোর ব্যাপারে এতো এতো নেগেটিভ রিপোর্ট ছড়ানোর মূল কারণ হলো সকল মুসলিমের মনে কায়দা, তালিবান তথা জিহাদ ভীতিটাকে জোড়ালো করা।গুয়ান্তানামোতে যেই পাশবিক নির্যাতনের চিত্র মিডিয়ার মাধ্যমে তুলে আনা হয় এবং আমেরিকার বাপ দাদার সম্পত্তি মনে করে কংগ্রেসে তাদের মন চুকানো আইনের দোহায় দিয়ে বিনা বিচারে মুসলিমদের আটকে রাখার বৈধতা আদায় করার একমাত্র লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হলো মুসলিমদের এই কথাটাই ভালোভাবে বুঝানো যে, আমেরিকা এই পৃথিবীর কর্তা,তাদের একক কর্তৃত্বে আঘাত করার সাহস মুসলিমরা পেলো কোথা থেকে? ফলস্বরূপ সেই উগ্রবাদী মুসলিমরা কালের সবচেয়ে পাশবিক নির্যাতনের শিকার। তাদের এই প্রোপাগাণ্ডা অনেক বেশী সফলতার মুখ দেখতে পেয়েছে।বাংলাদেশের একটা উদাহরণ দেই।
একজন বাংলাদেশী গুয়ান্তানামো বে থেকে ১২ বছর পর মুক্তি পাওয়ার খবর যখন Washington post থেকে চাপা হয় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্পষ্ট ভাষায় মানা করে দেওয়া হলো যে, বাংলাদেশ এমন সন্ত্রাসীকে এক্সেপ্ট করবে না।বাংলাদেশের মতো একটা মুসলিম প্রধান(মুসলিম প্রধান আর ইসলামী রাষ্ট্র তফাৎ আছে) দেশ থেকে তারা এটাই আশা করেছিলো।এই জায়গাতেই মিস্টার আমেরিকা সফল।
সর্বপরি বুঝাগেলো, আমেরিকা সম্পর্কে যেই নেগেটিভ অভিযোগটা মিডিয়া তুলে ধরেছিলো সেটা উল্টোভাবে(মানে আমেরিকার কোনো দোষ নেই সব দোষ উগ্রবাদীদের) এসেই মুসলিমরা গিলতে শুরু করছে।
এটাই হলো এন্টিমুসলিম পলিটিক্স।বরং আমাদের উচিত ছিলো কি? নাইন/ইলেভেনের পর মুসলিমরা পুনরায় ঐক্যবদ্ধ হওয়া। মুসলিমরা যে চাইলে আমেরিকার নাকের ডগা দিয়ে এসে আমেরিকাকেই মুলা ঝুলিয়ে দিতে পারে সেটাই বেশী করে প্রচার করা। যেহেতু তা হয়নি সেহেতু ইতিহাস অন্যভাবে লিপিবদ্ধ হলো আরকি। ২০টা বছর মুসলিমদের পাহাড়ে পর্বতে নির্ঘুম রজনী যাপনের কষ্টটা আমাদের বুঝার তাওফিক দান করুক।২০ বছর পরে হলেও প্রেক্ষাপট আলহামদুলিল্লাহ চেঞ্জ হতে শুরু করেছে।বাকি বিজয়টাও আল্লাহ ত্বরান্বিত করুক আমিন।
লিখাটা সামনের পর্বে আরো গুছিয়ে নিয়ে আসতে চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
✒️ Huzaifa Ibn Al-Yaman
Comment