“ফিলিস্তিনের স্মৃতি ”
।।শহীদ ড. আবদুল্লাহ আযযাম রহ. ||
এর থেকে– অষ্টদশ পর্ব
।।শহীদ ড. আবদুল্লাহ আযযাম রহ. ||
এর থেকে– অষ্টদশ পর্ব
ইসলামি আন্দোলনের কাল
তারা সিনাই পর্বত পর্যন্ত হেঁটে আসে এবং নাকাব মরুভূমিতে পৌঁছে। হাসানুল বান্না দেখলেন যে, ফিলিস্তিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আরব ভূখণ্ডে তখন ইখওয়ানুল মুসলিমিন ব্যতীত আর কোনো ইসলামি আন্দোলন নেই। আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান আযযাম পাশার কাছে গিয়ে তিনি বললেন, হে আয্যাম, ফিলিস্তিন তো শেষ হয়ে গেছে। আরব সৈনিকেরা সেখানে লড়াই করতে প্রবেশ করে নি। আমরা লড়াই করার জন্যে প্রস্তুত আছি। এখন আমরা কী করতে পারি? তারা ফিলিস্তিনকে উদ্ধার করার উদ্দেশ্যে নীল নদের পাশে একটি ক্যাম্প স্থাপন করেন। আযযাম পাশা, হাসানুল বান্না এবং উলুবা পাশার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের অধীনে সেখানে কাজ চলতে থাকে। আযযাম পাশা মিশরের একটি অংশে এবং সিরিয়ার একটি অংশে সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্যে আলাদা ক্যাম্প স্থাপন করেন। ইসলামি আন্দোলনের কর্মীরা এই ক্যাম্পগুলোতে সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের প্রথম দলটি কামেল আশ-শরিফ ও মুহাম্মদ ফারগালির নেতৃত্বে লিখিত নির্দেশনা নিয়ে ফিলিস্তিনে প্রবেশ করে। তাঁরা প্রথমে নাকাব, রাফাহ, খানে ইউনুস ও গাজায় তাদের ঘাঁটি স্থাপন করেন। দ্বিতীয় দলটি আহমদ আবদুল আযিযের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনে প্রবেশ করে। আহমদ আবদুল আযিয ইখওয়ানুল মুসলিমিনের কেউ ছিলেন না; তিনি সেনাবাহিনীর সাহসী কর্মকর্তা ছিলেন। তবে ইখওয়ানুল মুসলিমনের লাইয়ুদ পাশা, আবদুল মুনইম, আবদুর রউফ ও মারুফ আল-হাদারি তাঁকে সহায়তা করেছেন। তাঁরা ফিলিস্তিনে প্রবেশ করেন এবং কুদ্স থেকে আল খলিল পর্যন্ত তাঁদের ঘাঁটি স্থাপন করেন। এই দলটির হাতে ইহুদিরা এতো বেশি হত্যা ও বিপর্যয়ের শিকার হয় যা তারা কখনো চিন্তা করে নি। কিন্তু ইহুদিরা নিজেদেরকে দ্রুত সামলে নেয়। ইসলামি আন্দোলনের এক যুবক, হুসাইন হিযাজি দ্বিতীয় দলের একজন কমান্ডার ছিলেন। তিনি একাই একটি উপনিবেশ ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। সেখানে ইহুদিদের যে কয়টি বাড়ি ছিলো তার সবগুলো তিনি গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন। ইহুদিদের কী করার ছিলো? তারা কুদ্সকে নিজেদের কব্জায় রাখতে চেয়েছিলো। এজন্যেই তারা তাড়াহুড়ো করছিলো। তারা আশঙ্কা করছিলো যে, আহমদ আবদুল আযিযের হাতে কুদসের পতন ঘটবে। তারা যে-উপনিবেশ স্থাপন করেছে সেগুলোরও পতন ঘটবে। বিশেষ করে সুয়ারে বাহের ও কুসের চারপাশে তারা যে-উপনিবেশ স্থাপন করেছিলো সেগুলোর পতন অবশ্যম্ভাবী। কাফেরদের প্রথম উপনিবেশ ছিলো দুদাম এবং যুদ্ধও সেখানেই চলছিলো। দাজাজ উপনিবেশের বাড়িগুলো মুজাহিদরা গুঁড়িয়ে নিয়েছিলেন। অধিক পশুপাখি ও ফসলের কারণে তারা এই উপনিবেশের নাম দিয়েছিলো সাজাজ ও বাকার উপনিবেশ। দাজাজ মানে মুরগি আর বাকার মানে গরু বা পশু। কুসের চারপাশে যেসব কাফের ছিলো তারা ছিলো চূড়ান্ত অবাধ্য এবং তারা ইহুদি ছিলো না। মুজাহিদরা একদিনে তিনটি উপনিবেশ দখল করে নিয়েছিলেন। কুদসে যে-তিনটি উপনিবেশ ছিলো মুজাহিদরা একদিনেই সেগুলো দখল করে নেন।
তারপর মাওয়ায়ির নেতৃত্বে মিসরীয় সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনে প্রবেশ করে। তিনি আহমদ আবদুল আযিযকে বলেন, আমার সঙ্গে এই নির্দেশ রয়েছে যে, আপনি আমার আনুগত্য করবেন। আহমদ আবদুল আযিয বলেন, ঠিক আছে, আমরা আপনার আনুগত্য করবো। তবে তাঁর কাছে যখন রাজা ফারুকের নির্দেশ আসে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর আহমদ আবদুল আযিয কায়রোতে যান এবং হাসানুল বান্নার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। হাসানুল বান্না তাঁকে বলেন, আহমদ, আপনি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক থাকুন। আরব রাষ্ট্রগুলো যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। আহমদ আবদুল আযিয মিসর থেকে ফিলিস্তিনে ফিরে যান। ফারুক ঘাতক সালেহ সালেমকে আহমদ আবদুল আযিযের কাছে পাঠায়। সে তাঁর কাফেলার ভেতরেই তাঁকে হত্যা করে। তারা ধারণা করেছিলো যে আহমদ আবদুল আযিয হাসানুল বান্নার শিষ্য হয়ে গেছেন এবং আশঙ্কা করেছিলো যে কুদ্স, বায়তে লাহাম, মারে ইলয়াস এবং অন্যান্য এলাকা থেকে ইহুদিদের মেরে সাফ করে দেবেন। তাই তারা ইসলামি আন্দোলনের এই দুঃসাহসী যুবককে হত্যার বিকল্প খুঁজে পায় নি। শেষে সালেম সালেহ তাঁকে হত্যা করে। এরপর তারা গুব পাশার নেতৃত্বে পরিচালিত সেনাদলটিকে গ্রহণ করে। ধারাবাহিকভাকে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকে।
ফিলিস্তিনিদেরকে অস্ত্রের ব্যবহার থেকে বঞ্চিত করা হয়। বাইরে থেকে যে-যুবকেরা ফিলিস্তিনে প্রবেশ করেছিলো, তারা চারটি দলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ফিলিস্তিনের বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করেছিলো। হাসানুল বান্না মুস্তফা আস-সাবায়ির নেতৃত্বে সিরিয়া থেকে এবং সাওয়াফের নেতৃত্বে ইরাক থেকে দুটি দল ফিলিস্তিনে পাঠান। তিনি আবদুল লতিফ আবু কুরাকে জর্ডান, ইরাক ও সিরিয়া থেকে দল নিয়ে ফিলিস্তিনে প্রবেশের নির্দেশ দেন। ফাওযি আল-কাওকাজি মিসর থেকে উদ্ধারকারী বাহিনী নিয়ে ফিলিস্তিনে প্রবেশ করেন। তিনি সবসময়ই সন্দেহের আবর্তে ছিলেন। গ্লুব পাশার অনুমতি নিয়ে তিনি ফিলিস্তিনে প্রবেশ করেন। কিন্তু হঠাৎ একদিন পালিয়ে মিসরে চলে আসেন। আরব রাষ্ট্রগুলো তাঁর পাশে দাঁড়ায়।
হাসানুল বান্না ১৯৪৮ সালের মে বা জুন মাসে আরব রাষ্ট্রগুলোর নেতাদের কাছে এই মর্মে তারবার্তা পাঠান যে, ‘আমি প্রথমবারের মতো দশ হাজার সশস্ত্র যোদ্ধা নিয়ে ফিলিস্তিনে প্রবেশ করতে প্রস্তুত। আপনারা যদি ফিলিস্তিনকে ইহুদিদের হাত থেকে মুক্ত করার বিষয়টি ভালো মনে করেন তাহলে আমাকে ফিলিস্তিনে প্রবেশের সুযোগ দিন। পৃথিবী তখন বসে থাকে নি। তারা এই তারবার্তা পেয়ে ইসলামি আন্দোলনকে নিস্তেজ করতে উঠেপড়ে লাগে। তারা ভাবতে শুরু করে কীভাবে হাসানুল বান্নার পরিচালিত ইসলামি আন্দোলনকে নিঃশেষ করে দেয়া যায়। ১৯৪৮ সালে ৬ই সেপ্টেম্বর ব্রিটেন, ফ্রান্স ও আমেরিকার তিন রাষ্ট্রদূত বৈঠক করেন। তাঁরা হাসানুল বান্নার ইসলামি আন্দোলনকে নিস্তেজ ও তাঁর দলকে ভেঙে দিতে একমত হন এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তাঁরা এই সিদ্ধান্তপত্র মিসরের প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ ফাহমি আন-নাকরাশির কাছে পেশ করেন। তিনি এই দলের সদস্যদের গ্রেফতার ও দলটিকে ভেঙে দেয়ার নির্দেশ দেন। এছাড়া তাদের যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দেন। যুবকদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। তবে তখনো হাসানুল বান্নাকে আটক করা হয় নি। তিনি জেলখানার বাইরে থেকে যান। আন্দোলনের যে-যুবকেরা যুদ্ধক্ষেত্রে ছিলো তারা ক্রোধে ফুঁসতে থাকে। হাসানুল বান্না তাদেরকে একটি পত্র পাঠান। পত্রে তিনি লেখেন: ‘হে আমার ভাইয়েরা, মিসরের ওপর দিয়ে যেসব ঘটনার দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে তা যেনো তোমাদের বিচলিত ও চিন্তাগ্রস্ত না করে। তোমাদের কর্তব্য হচ্ছে ফিলিস্তিনকে ইহুদিদের হাত থেকে মুক্ত করা। যতোদিন একজন ইহুদিও ফিলিস্তিনের মাটিতে থেকে যাবে ততোদিন তোমাদের কর্তব্য শেষ হবে না।'
এর দুই মাস পর ফারুকের রাজকীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান মাহমুদ আবদুল মজিদ হাসানুল বান্নাকে শহরের সবচেয়ে বড়ো রাস্তায় হত্যার চেষ্টা করেন। হাসানুল বান্না এতে আহত হন। তাঁকে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এটিকে রয়্যাল চক্ষু হাসপাতালও বলা হয়। রাজা ফারুক হাসানুল বান্নাকে হাসপাতালের অস্ত্রোপচারকক্ষেই হত্যা করার জন্যে সামরিক কর্মকর্তা মুহাম্মদ ওয়াফিকে সেখানে পাঠায়। ওয়াসফি জানতে পারেন হাসানুল বান্না গুরুতর আহত নন। তাঁকে অস্ত্রোপচারকক্ষে হত্যা না করে ইমাম শাফি কবরস্থানের কাছে (জায়গাটি মুসলিম যুবকদের কার্যালয়ের সামনে) নিয়ে আসা হয় এবং গুলি করে হত্যা করা হয়। ১৯৪৯ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি হাসানুল বান্নাকে শহীদ করার পরের দিন ১৩ই ফেব্রুয়ারি থেকেই মিসর রোডস চুক্তির কার্যক্রম শুরু করে। এই চুক্তিতে মিসর এই বিষয়ে একমত হয় যে, ইসরাইলকে নিরাপদ ভৌগলিক সীমার ভেতরে একটি জাতিরাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হবে। জর্ডানও রোডস চুক্তির বিষয়ে একমত হয় এবং চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। তারা আহমদ সিদকি আল-জুনদি থেকে কেবল সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি চূড়ান্ত করতে চায়। এই চুক্তির মাধ্যমে ইহুদিরা ফিলিস্তিনের প্রায় অর্ধেক ভূমি নিয়ে যায়। আমাদের যে-গ্রাম ছিলো, সীমানা চূড়ান্তকরণের সময় আমাদের গ্রাম থেকেও ৩৪ হাজার একর ভূমি ইহুদিদের কব্জায় চলে যায়। মুরজ ইবনে আমের থেকেও একটি গ্রাম চলে যায়। এভাবেই ফিলিস্তিন ধ্বংসের কিনারায় পৌঁছে।
আন্দোলনকে নিস্তেজকরণ
ফিলিস্তিনে যে-সব যুবকেরা যুদ্ধ করছিলো, সেই মুজাহিদদের নিয়ে তারা কী ভাবলো। কী ঘটলো তাদের বেলায়? রাজা ফারুক নির্দেশ দিলো, এই যুবকদেরকে গ্রেপ্তার করে জেলখানায় আটকে রাখো। তাদেরকে বলো, হয়তো আমাদের সঙ্গে মিলে তোমরা লড়াই করবে নতুবা তোমাদেরকে আমাদের ট্যাঙ্কের ভেতরে প্রবেশ করতে হবে। তাদেরকে যুদ্ধক্ষেত্র, জিহাদ ও লড়াইয়ের ভূমি থেকে তুলে নিয়ে কারাগারে বন্দি করে রাখো। একবছর তারা জেলের ভেতরে থাকবে। ফিলিস্তিনের বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেলে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে। কিন্তু একবছর পর তাদেরকে আর কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয় নি। রাজা ফারুকের পতনের মধ্য দিয়ে জামাল আবদুন নাসের ক্ষমতায় আসে। জেলখানায় বন্দি মুজাহিদদের ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু স্বৈরাচারী জামাল আবদুন নাসের ছিলো লম্পট ফারুকের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তার শাসনামলে মুজাহিদদেরকে ফাঁসি বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। সরকারি লোকেরা কারাগারে গিয়ে বন্দি যুবকদের জিজ্ঞেস করে, তোমরা কি ফিলিস্তিনের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছো? যারা এই প্রশ্নে উত্তরে হ্যাঁ বলেছে তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীনব কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অথচ দাবি করা হয় যে, জামালের সরকার ছিলো গণতান্ত্রিক সরকার। ফিলিস্তিনের যুদ্ধে যেসব যুবক কমান্ডার বা দলপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলো তাদের সবাইকে ফাঁসি দেয়া হয়। মুহাম্মদ ফারগালিকে যিনি কয়েকটি মুজাহিদদলের নেতার দায়িত্ব পালন করেছিলেন—ফাঁসি দেয়া হয়। ইউসুফ তালাআতকে ফাঁসি দেয়া হয়। হানদাবি দাবির, মাহমুদ আবদুল লতিফ, ইবরাহিম আত-তায়্যিব, ইসলামি আইনের পুনর্বাস্তবায়নকারী ও সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত নেতা আবদুল কাদির—এঁদের সবাইকে ফাঁসি দেয়া হয়। ইসরাইল এ-ব্যাপারে সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করে এবং তাঁদেরকে ১৯৫৪ সালে শেষের দিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। ১৯৬৫ সালে আবারো ইসরাইল মিসরকে প্ররোচনা দিতে এগিয়ে আসে এবং ১৯৬৬ সালে জামাল আবদুন নাসের সাইয়্যেদ কুতুব রহ.-কে মৃত্যুদণ্ড দেয়। তাঁর অনুসারী ১৭ হাজার কর্মীকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। ইসরাইল আবারো এগিয়ে আসে এবং সুয়েজখাল পর্যন্ত দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করে। কারণ মিসরে যারা ইসরাইলবিরোধী ছিলো সেই সব মুসলিম যুবকেরাই এতোদিন লড়াই করেছে। তাদেরকেই ফাঁসি দেয়া হয়েছে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। যদিও তারা সবসময় মৃত্যুর জন্যে প্রস্তুত ছিলো, শাহাদাতের জন্যে ব্যাকুল ছিলো।
আরও পড়ুন
সপ্তদশ পর্ব ------------------------------------------------------------------------------------------- উনবিংশ পর্ব
Comment