কী! অনেক ভয়ে আছেন, তাই না?
ﺑِﺴْــــــــــــــــﻢِﷲِﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِﺍلرَّﺣِﻴﻢ ️
কী! অনেক ভয়ে আছেন, তাই না? কখন জানি আপনার দরজায় কড়া নাড়ে র*্যাব-পুলিশ! তারপর কিডন্যাপ-রিমান্ড-গুম-কথিত বন্দুক যুদ্ধ-ক্রসফায়ার! বি কুল ম্যান! এত উতলা হওয়ার কিছু নাই। আপনার জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা যা নির্ধারণ করে রেখেছেন তার চেয়ে বেশি কিছু হবে না। আপনার কাজ হলো শুধু সুন্নাহ হিসেবে সতর্কতা অবলম্বন করা। এরপর যদি কিছু হয়ে যায় সেটা তো তাকদীর। যা আপনি আমি বদলাতে পারবো না।
যদি আপনার রবের পক্ষ থেকে আপনার জন্য কারাগার নির্ধারণ করা না থাকে, তবে দুনিয়াতে এমন কে আছে যে আপনাকে সেখানে নিয়ে যায়? আর আপনার রিযিকের একটা দানাও যদি জেলখানায় থাকে তবে আপনাকে সেখানে যেতেই হবে। শত চেষ্টা করে, ওদের তোষামোদি করেও বাঁচতে পারবেন না।
আল্লাহ্* যদি আপনার জন্য কারাগার নির্ধারণ করে থাকেন, তবে সেটাকে নিয়ামত হিসেবে নিয়ে নিন; ‘‘আলহামদুলিল্লাহ’’ বলে। এটা আপনার জন্য পরীক্ষা। গোনাহ মাফের উসিলাও হতে পারে। আল্লাহু মুস্তাআন।
হয়তো ভাবছেন, কারাগারে বন্দী বা ক্রসফায়ারে মেরে ফেললেও তো ভালো ছিলো। কিন্তু তারা তো রিমান্ডে নিবে, নির্যাতন করবে! বাঁচা-ও না মরা-ও না! আপনি যদি মনে করেন আমরা বা আপনারাই শুধু রিমান্ডে যাচ্ছি, তাহলে চরম ভুল করছেন। আপনার কি মনে নেই সাহাবায়ে কেরাম রদ্বীয়াল্লাহু আনহুম- এর রিমান্ডের কথা!
ভুলে গেছেন! বিলাল ইবনে রাবাহ রদ্বীয়াল্লাহু আনহু-কে রিমান্ডে উত্তপ্ত বালুতে শুইয়ে বুকে পাথর চাপা দিয়ে প্রহারের কথা!!
ভুলে গেছেন! খাব্বাব রদ্বীয়াল্লাহু আনহু -এর উপর সেই রিমান্ড-অত্যাচার! অধিকাংশ সময় তাকে নগ্নদেহে তপ্ত বালুর উপর শুইয়ে রাখা হতো। যার ফলে তার কোমরের গোশত গলে পরে গিয়েছিলো। লোহা গরম করে তাঁর মাথায় দাগ দেওয়া হতো। উমর রদ্বীয়াল্লাহু আনহু একদিন তাঁর উপর নির্যাতনের বিস্তৃত বিবরণ জানতে চাইলেন। খাব্বাব রদ্বীয়াল্লাহু আনহু তখন বললেন, ‘‘আমার কোমর দেখুন।’’ উমার রদ্বীয়াল্লাহু আনহু কোমর দেখে আঁতকে উঠে বললেন, ‘‘এমন কোমর তো কোথাও দেখিনি?’’ উত্তরে খাব্বাব রদ্বীয়াল্লাহু আনহু খলীফাকে জানালেন, ‘‘আমাকে জ্বলন্ত অঙ্গারের উপর শুইয়ে চেপে ধরে রাখা হতো, ফলে আমার চর্বি ও রক্তে আগুন নিভে যেত।’’ আল্লাহু আকবার!
সুমাইয়া বিনতে খাইয়াত, ইয়াসির ইবনে আমর, আম্মার ইবনে ইয়াসির রদ্বীয়াল্লাহু আনহুম-গণের স্মৃতি কি আপনি ভুলে গেছেন!! আবু জান্দাল ইবনে সুহাইল, আব্দুল্লাহ ইবনে সুহাইলের বন্দীদশার কথা কি মনে পরে না! খুবাইব রদ্বীয়াল্লাহু আনহু এর ফাঁসি কি আপনার শিহরণ জাগায় না!!
ইমাম আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহ্, আহমাদ বিন হাম্বল রহিমাহুল্লাহ্-এর কারাবন্দী-নির্যাতন কি অনুপ্রেরণা দেয় না! শাইখুল হিন্দ রহিমাহুল্লাহ্-এর মাল্টার কারাগারে বন্দী-নির্যাতনের কারণে কোমরে মাংস না থাকার ইতিহাস কি আপনি জানেন না!
রিমান্ড-নির্যাতন কি শুধু আপনার? কারাবন্দী জীবন কি শুধু আমার?
অতএব, শান্ত হোন। ভয় পাবেন না, হতাশ হবেন না, বিচলিত হবেন না। দৃঢ় থাকুন। প্রশান্ত হৃদয় নিয়ে রবের ইবাদতে ব্রত হোন। আপনার উপর রবের পক্ষ থেকে ভালো/মন্দ যা ফয়সালা আসবে সবরের সাথে আর সন্তুষ্টচিত্তে ‘‘আলহামদুলিল্লাহ্*’’ বলে মেনে নিন।
দুনিয়ার জীবনটাকে কারাগার মনে করে নিন। মাত্র তো কয়েকটা দিন। নিশ্চয়ই সেদিন আমরা শান্তি পাবো, যেদিন প্রথম জান্নাতে পা রাখবো ইন শা আল্লাহ। নিশ্চয়ই সে দিন খুব বেশি দূরে নয়। সে দিন জালিমরা অপমানিত হবে, আপনি হবেন সম্মানিত।
যদি আপনাকে বন্দী করা হয়, ইবাদতের নির্জন জায়গা মনে করে নিন। যদি হত্যা করা হয়, শাহাদাতের সুধা পানের জন্য আনন্দিত হোন। যদি নির্যাতন করা হয়, তবে মুখে ও হৃদয়ে জারি রাখুন ‘‘আহাদুন আহাদ’’।
——————
Comment