Announcement

Collapse
No announcement yet.

গোয়ান্তানামোর বন্দী সাথীদের কিছু স্বপ্ন

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • গোয়ান্তানামোর বন্দী সাথীদের কিছু স্বপ্ন

    আব্দুর রহীম মুসলিম দোসত। আফগান মুজাহিদ। গোয়ান্তানামো কারাগারে বন্দী ছিলেন প্রায় সাড়ে তিন বছর। মুক্তি পেয়ে কারা জীবন নিয়ে লিখেছেন চমৎকার এক বই।
    গোয়ান্তানামো কি টূটি যিনজীরে-নামে যার উর্দূ অনুবাদ বের হয়েছে। পশতু ভাষায় লেখা মূল বইটি বিক্রি হয় আড়াই লাখ কপি। আর উর্দু অনুবাদটি বিক্রি হয় বিশ হাজার কপি।
    বইটিতে লেখক গোয়ান্তানামোর বন্দী সাথীদের বেশ কিছু চমকপ্রদ স্বপ্ন উল্লেখ করেছেন।
    স্বপ্নগুলো তাঁদের জন্য এবং আমাদের সবার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বুশরা-সুসংবাদ।
    লেখকের ভাষায়ই স্বপ্ন গুলো উল্লেখ করছি।

    01 - তুমি হকের উপর আছো

    স্বপ্নটি দেখেছেন এক আরব মুজাহিদ। তিনি বলেন, আমি স্বপ্নে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঠিক সেই অবয়বে দেখেছি যা হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমাদের উপর কাফেরদের জুলুম নির্যাতনের কথা বললাম। শুনে তিনি বললেন, এটা নিয়ে তুমি দুঃচিন্তা করো না। কারণ, তুমি হকের উপর আছো। ওরা শীঘ্রই ধ্বংস হয়ে যাবে।
    রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে তখন সাদা দুটি পাথর ছিল। তার একটি এই মাত্র কাফেরদের উপর নিক্ষেপ করেছেন। আরেকটি তাঁর হাতেই আছে।
    আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, ওদের উপর আমি প্রথম হামলাটি করেছি। এতেও তারা যদি সঠিক পথে না আসে তাহলে শীঘ্রই দ্বিতীয় হামলাটিও করবো। তখন তারা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যাবে।
    ভিতরেরই এক মুজাহিদ ভাই স্বপ্নটির ব্যাখ্যায় বলেছেন, 9/11 এর হামলার মাধ্যমে কুফরের সরদার আমেরিকার অর্থনৈতিক অবস্থা অর্ধেক ভেঙে পড়েছে। বাকিটুকু ইনশাআল্লাহ ইমাম মাহদি এবং হযরত ঈসা আ.র সময় হবে।

    02 - তোমরা সবাই কামিয়াব

    এ স্বপ্নটিও দেখেছেন এক আরব মুজাহিদ।
    তিনি বলেন আমি দেখেছি, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কান্দাহারে অবস্থিত আরব মুজাহিদদের কবরস্থানের পাশে একটি বড় পাথরের উপর দাঁড়িয়ে আছেন এবং শহীদদের জন্য দোয়া করছেন।
    সেই কবরস্থানে আমার পরিচিত এক ভাইও ছিল। দেখি যে, তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলছেন, আমেরিকা এবং আফগানি কিছু মুনাফিক আমাদের উপর চরম জুলুম করছে। এক আফগান কমান্ডারের লোকেরা ষাট জন মুজাহিদকে যবাই করে শহীদ করেছে। তাদের মধ্যে কোন কোন মুজাহিদকে ঘাড়ের দিক দিয়ে যবাই করেছে।
    তার কথা শুনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ অতি শীঘ্রই এদের সবাইকে ধ্বংস করবেন। পক্ষান্তরে
    তোমরা সবাই কামিয়াব।
    এরপর বললেন, এখানে (আফগানিস্তানে) মুনাফিক যেমন আছে বেশ কিছু ভাল লোকও আছে। তাদের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা ইসলামকে বিজয় দান করবেন। আর মুনাফিকদেরকে লাঞ্ছিত ও অপদস্থ করবেন।

    03 - তোমরা হলে দ্বিতীয় বদরের মুজাহিদ

    এ স্বপ্নটি দেখেছেন মিশরের এক মুজাহিদ।
    তিনি বলেন দেখি যে, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে দাঁড়ানো। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের কী অবস্থা ? বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! বন্দীশালায় পড়ে আছি। আমাদের প্রতি চরম জুলুম করা হচ্ছে।* তিনি বললেন, নিরাশ হয়ো না। আল্লাহ তোমাদের সাথে আছেন। আল্লাহর হুকুমে শীঘ্রই মুক্তি পাবে। এরপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। বেশ কিছু উপদেশও দেন। যার মধ্যে বেশি বেশি ইবাদত করা, দোয়া করা, বিশেষ করে নজর হেফাজত করার বিষয়টি ছিল। তিনি বললেন, নারী সৈন্যদের দিকে তাকাবে না। নজর হেফাজত করবে। তিনি আমাকে এও বলেছেন,
    انتم من أهل البدر
    - তোমরা হলে বদরী মুজাহিদ।
    আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! বদরী মুজাহিদ তো তাঁরা যারা চৌদ্দশ বছর পূর্বে অতিবাহিত হয়ে গেছেন। তখন বললেন,
    *انتم من أهل البدر الثاني
    - তোমরা হলে দ্বিতীয় বদরের মুজাহিদ।

    04 - সে তোমাদের আমীর

    এক ভাই বলেছেন, আমি দেখেছি, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সামনে দাঁড়ানো। তাঁর সঙ্গে আরো একজন লোক দাঁড়ানো। যার চেহারাসহ পুরো শরীর কাপড় দিয়ে ঢাকা। সেই লোকটির দিকে ইশারা করে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বললেন, সে তোমাদের আমীর।
    ভিতরের এক মুজাহিদ ভাই এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, তিনি হলেন হযরত ইমাম মাহদি। যিনি বর্তমানে আমাদের মাঝেই আছেন। তবে আমরা তাঁকে চিনতে পারছি না।

    05 - আমি শীঘ্রই আসছি

    স্বপ্নটি দেখেছেন এক আরব মুজাহিদ। তিনি বলেন, তখন মৌসুম ছিল প্রচণ্ড শীতের। আমি তখন আরো অনেকের সঙ্গে আফগানিস্তানের বাগরাম কারাগারে বন্দী। দেখি যে, এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর ডান হাতে কুরআনুল কারীম এবং বাম হাতে ইনজীল। লোকজন আমাকে বলল, ইনি হলেন হযরত ঈসা আ.। আমি তার সঙ্গে কোলাকুলি করতে এবং তাঁর কপালে চুমু খেতে তাঁর দিকে ছুটে গেলাম। কিন্তু তিনি আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। এটা দেখে ওখানে উপস্থিত কয়েকজন লোক তাঁকে লক্ষ্য করে বলল, ইনি আরব মুজাহিদ।
    *বর্তমানে বাগরাম কারাগারে মার্কিনীদের হাতে বন্দি। শীঘ্রই তাকে গোয়ান্তানামোতে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

    একথা শুনেই তিনি আমার দিকে এগিয়ে এলেন। তার দু'হাত ছড়ানো ছিল। ডানহাতে কোরআনুল কারীম আর বাম হাতে ইনজীল। কাছে এসে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন এবং আমার কপালে চুমু খেলেন।
    এরপর বললেন, তুমি কামিয়াব। দুঃচিন্তা করো না। আল্লাহ তাআলা খুব দ্রুতই তোমাকে মুক্তি দেবেন। আমি শীঘ্রই আসছি। এসব লোক যারা নিজেদেরকে ঈসায়ী বলে দাবি করে তাদের কিছু লোককে আল্লাহ তায়ালা হেদায়েত দেবেন আর অবশিষ্টদেরকে ধ্বংস করবেন। আমি এসে আল্লাহর যমিনে 'মুহাম্মদী শরীয়ত' প্রতিষ্ঠা করবো।
    কথা শেষ করে তিনি আমার ডান হাত শক্তভাবে ধরলেন এবং তাতে সামান্য লালা লাগিয়ে দিলেন। হাতে লালা লাগার সাথে সাথে আমার চোখ খুলে যায়। ঘুম ভাঙার পর আমি আমার হাতে সেই লালা দেখতে পাই। যা থেকে সুগন্ধি বের হচ্ছিল। আমার কাছে তখন খুব ভালো লাগছিল। মনে খুব প্রশান্তি লাগছিল। আমার সঙ্গীরা তখন আমাকে সুগন্ধির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন। ব্লকে তখন কথা বলার অনুমতি ছিল না। কিন্তু আমি নিম্নস্বরে এক দু'জনের কাছে পুরো স্বপ্নটি বলি। এরপর স্বপ্নটির কথা ধীরে ধীরে সবার মাঝে ছড়িয়ে যায়। তখন সবাই আমার কাছে এসে সেই সুঘ্রান নিতে আরম্ভ করে। মার্কিন কারারক্ষীরা দেখতে পেয়ে এর জন্য আমাদের সবাইকে শাস্তি দেয়। ওরা স্বপ্নটির কথা জানতে পেরে আমাকে তা আর কারো কাছে বলতে নিষেধ করে। এরপর থেকে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় মুজাহিদদেরকে স্বপ্নের ব্যাপারেও জিজ্ঞেস করতো।

    06 - তিনি হলেন হযরত উমর রাযি.

    এক ভাই বলেছেন, আমি দেখেছি যে, সমুদ্রের ঢেউ আমাদের ব্লকগুলোর ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে। ব্লকগুলোর অর্ধেকটা পানিতে ভরে যাচ্ছে। ঢেউ যখন ফিরে যাচ্ছে তখন ব্লকের একটা পাশ ভেঙে পড়ছে এবং পানি পূর্বের জায়গা পর্যন্ত চলে যাচ্ছে। তখন সবাই বের হয়ে সমুদ্রের দিকে ছুটতে শুরু করে। তখন সেখানে একটি জাহাজ দাঁড়ানো ছিল। জাহাজের দরজায় সুঠামদেহী দীর্ঘকায়*এক ব্যক্তি সাদা আরবি জুব্বা পড়ে হাতে ঢাল-তলোয়ার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি সবাইকে জাহাজে উঠার জন্য ইশারা দিচ্ছেন আর সবাই জাহাজে উঠছে। আমি তখন একজনকে জিজ্ঞেস করি, ইনি কে ?* উত্তর দেন, তিনি হলেন হযরত উমর রাযি.। তিনি বন্দীদেরকে মুক্ত করতে এসেছেন। আমরা যখন জাহাজে উঠছিলাম তখন মার্কিন সৈন্যরা আমাদেরকে ধাওয়া করতে শুরু করে। তারা কাদা মাটি পর্যন্ত এসে যায়। কিন্তু আমি দেখতে পাচ্ছিলাম, কাদামাটি তাদের পায়ের নীচ থেকে পিছন দিকে সরে যাচ্ছে।

    07 - দোয়ায় ইউনুস আ.

    এক ভাই বলেছেন, আমি দেখেছি, সবাই নিজ নিজ ব্লক থেকে বের হয়ে সমুদ্রের তীরে একত্রিত হলেন। তখন সমুদ্র থেকে এক বিশাল আকৃতির মাছ এসে সবাইকে গিলে ফেলে। কিছুক্ষণ পর দেখলাম, সমুদ্রে আগুন লেগে যায়। এতে ওই মাছটি তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করতে শুরু করে। তখন মাছটি তীরে এসে অর্ধেক বন্দীদেরকে তীরে ফেলে পুনরায় সমুদ্রে চলে যায়। কিন্তু তারপরও মাছটির অস্থিরতা কমে নি। ধীরে ধীরে মাছটি দুর্বল হয়ে যায়।
    ভিতরের এক ভাই ব্যাখ্যা দিয়েছেন,
    অর্ধেক সাথী দ্রুতই*মুক্তি লাভ করবে। বাকিদের মুক্তি পেতে একটু দেরি হবে। বাস্তবেও তাই হয়েছিল। এগারশ সাথীর মধ্যে কিছুদিন পরই পাঁচশর উপরে সাথী মুক্তি লাভ করেছিলেন। বাকিরাও পরবর্তীতে মুক্তি লাভ করেছেন।
    ব্যাখ্যা শেষে ওই ভাই উপস্থিত সবাইকে হযরত ইউনুস আলাইহিস সালামের দোয়াটি বেশি বেশি পড়তে বলেন।
    দোয়ায় ইউনুস আ.
    ْ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ ۔ سورة الأنبياء : ٨٧
    হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সবাইকে সাআদাতের জীবন এবং শাহাদাতের মৃত্যু দান করুন।

  • #2
    অনেক সুন্দর স্বপ্ন। জাযাকাল্লাহু খাইরান
    হে আল্লাহ! আমাদেরকে ইমাম মাহদীর লশকরে শামিল হওয়ার তৌফিক দান করো। আমীন
    হক্বের মাধ্যমে ব্যক্তি চিনো,
    ব্যক্তির মাধ্যমে হক্ব চিনো না।

    Comment


    • #3
      allaho akbar, allha sokol vaider moktir bebosta kore din, ameen,
      amader ke sirate mostakimer upor utol rakhon, ameen

      Comment


      • #4
        আল্লাহ আবু দুজানা ভাইকে উত্তম প্রতিদান দান করুন! স্বপ্নগুলো পড়ে মনের মধ্যে আশার আলো জাগল। আল্লাহ আমাদের মুক্তিকে তরান্বিত করুন!

        Comment

        Working...
        X