০৭ মানবঢাল ভেদকরণ
|
ইমাম কুদুরি রহ. এর বক্তব্য এখানে আরও একটু পরিষ্কার।
তিনি বলেন,
ولا بأس برميهم وإن كان فيهم مسلم أسير أو تاجر. وإن تترسوا بصبيان المسلمين أو بالأسارى لم يكفوا عن رميهم، ويقصدون بالرمي الكفار.
“কাফেরদের মাঝে কোনো মুসলিম বন্দী বা (মুসলিম) ব্যবসায়ী বিদ্যমান থাকলেও তাদের প্রতি (তীর-বর্শা ইত্যাদি) নিক্ষেপ করতে কোনো সমস্যা নেই। কাফেররা যদি মুসলিম শিশুদের বা (মুসলিম) বন্দীদের মানবঢাল হিসেবে সামনে ধরে, তাহলে এ কারণে মুজাহিদগণ কাফেরদের উপর নিক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকবেন না। তবে নিক্ষেপের দ্বারা টার্গেট থাকবে কাফেররা।” শরহে বেকায়ায় বলা হয়েছে,
ورمي ولو معهم مسلم، أو تترَّسوا به بنيَّتهم لا بنيَّته.
“তাদের সাথে কোনো মুসলিম থাকলে বা মুসলিমকে মানবঢাল হিসেবে সামনে ধরলেও নিক্ষেপ করে চলবো। তবে টার্গেট থাকবে তারা; মুসলিম নয়।”অর্থাৎ আমরা যে দুর্গে বা ক্যাম্পে বা যেখানে হামলা করতে যাচ্ছি, হতে পারে সেখানে কাফেরদের হাতে কোনো মুসলিম বন্দী আছে। হতে পারে কোনো মুসলিম ব্যবসার জন্য দারুল হারবে গিয়েছিল, সে ঐ ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছে।
এ ধরনের ক্ষেত্রে মুজাহিদদের জন্য জরুরী হলো, এমনভাবে হামলা করার চেষ্টা করা, যাতে কোনো মুসলিম ক্ষতির শিকার না হয়।
কিন্তু অনেক সময় প্রোগ্রাম এভাবে সেট করা সম্ভব হয় না। মুসলিমকে বাঁচাতে হলে গোটা প্রোগ্রাম বাতিল করতে হবে। এ ধরনের ক্ষেত্রে ঐ মুসলিমের জানের তুলনায় জিহাদ ও উম্মাহর স্বার্থ অগ্রাধিকার পাবে। মুজাহিদরা প্রোগ্রাম মুলতবি করবেন না। হামলা করবেন। তবে হামলার দ্বারা উদ্দেশ্য থাকবে কাফেররা। অনুগামী হিসেবে মুসলিম মারা গেলে করার কিছু নেই।
যদি মুসলিমকে জোরপূর্বক সেখানে নেয়া হয়ে থাকে, তাহলে এটা তার কপালের লিখন। এর বিনিময়ে সে প্রতিদান পাবে আল্লাহর কাছে। আর স্বেচ্ছায় গিয়ে থাকলে এ মুসিবত তার হাতের কামাই। মূলত দারুল হারব এমন একটা নিকৃষ্ট ও ভয়ানক জায়গা, যেখানে গেলে নিজের জান-মালের পূর্ণ নিরাপত্তা থাকে না।
মানবঢাল
এমনিভাবে যদি কাফেররা তাদের হাতে বন্দী থাকা মুসলিম নারী, পুরুষ বা শিশুদের মানবঢাল বানিয়ে সামনে ধরে যে, আমরা হামলা করতে গেলে আগে এসব মুসলিম আক্রান্ত ও হত্যার শিকার হবে। যেমন আমরা ক্যাম্পে হামলা করতে যাচ্ছি। কাফেররা মুসলিম বন্দীদের ধরে ক্যাম্পের সামনে, পেছনে বা ছাদের উপর বেঁধে রাখলো। যাতে তাদের রক্ষার্থে আমরা হামলা না করি। এটা তাদের একটা কৌশল।
এ ধরনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে, যেন মুসলিমদের বাঁচিয়ে হামলা করা যায়। একান্ত যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে প্রোগ্রাম মুলতবি করা হবে না। হামলা করা হবে। নিয়ত থাকবে: আমরা কাফেরদের উপর হামলা করছি। অনুগামী হিসেবে মুসলিম মারা পড়বে এবং শহীদ হয়ে যাবে। এতে আমাদের কোনো গুনাহ হবে না। কোনো জরিমানাও আসবে না।
হিদায়াতে বলা হয়েছে,
لأنه قلما يخلو حصن من مسلم فلو امتنع باعتباره لانسد بابه.
“কারণ, দুর্গে সাধারণত কোনো না কোনো মুসলিম বন্দী থাকেই। যদি এ দিকটি বিবেচনা করে বিরত থাকতে হয়, তাহলে জিহাদের দরজাই বন্ধ হয়ে যাবে।”কারণ, যখনই তারা বুঝবে যে, আমরা হামলা করতে যাচ্ছি, তখনই কিছু বন্দী মুসলিমকে এনে সামনে ধরে দেবে।
আরও বলা হয়েছে,
وما أصابوه منهم لا دية عليهم ولا كفارة لأن الجهاد فرض والغرامات لا تقرن بالفروض.
“মুজাহিদদের হাতে যেসব মুসলিম আক্রান্ত হবে, তাদের বিনিময়ে কোনো দিয়াত বা কোনো কাফফারা দিতে হবে না। কারণ, জিহাদ ফরয। ফরয আদায়ে জরিমানা আসে না।”বি.দ্র. ০১ এটি মাসআলাগত দিক। তবে বাস্তব হচ্ছে: কোনো মুসলিম, এমনকি কোনো বেসামরিক কাফের মারা গেলেও শত্রুরা প্রোপাগান্ডার সুযোগ পেয়ে যায়। তাই একান্ত অনন্যোপায় বা মাসলাহাতের বিবেচনায় জরুরী না হলে, এমন ধরনের হামলা থেকে বেঁচে থাকাই জিহাদের জন্য কল্যাণকর। ওয়াল্লাহু তাআলা আ’লাম।
বি.দ্র. ০২ কাফেরদের নারী, শিশু, অতিবৃদ্ধ ও অন্যান্য যাদের স্বাভাবিক অবস্থায় হত্যা করা নিষেধ: উপরি-উক্ত মানবঢালের মাসআলা তাদের বেলায়ও প্রযোজ্য।
***
কিতাবুস সিয়ার: কানযুদ দাকায়িক: ০১ ভূমিকা ও জিহাদের হুকুমhttps://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A7%81%E0%A6%AE
কিতাবুস সিয়ার: কানযুদ দাকায়িক: ০২ যাদের উপর জিহাদ ফরয নয়
https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A6%A8%E0%A7%9F
কিতাবুস সিয়ার: কানযুদ দাকায়িক: ০৩ মুসলিম ভূমিতে আগ্রাসন হলে জিহাদ ফরযে আইন
https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A6%87%E0%A6%A8
কিতাবুস সিয়ার: কানযুদ দাকায়িক: ০৪ অভিযান প্রস্তুতির জন্য জনসাধারণের উপর চাঁদা ধার্য করার হুকুম
https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A7%81%E0%A6%AE
কিতাবুস সিয়ার: কানযুদ দাকায়িক: ০৫ কিতালপূর্ব দাওয়াত: ইসলাম ও জিযিয়া
https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A7%9F%E0%A6%BE
কিতাবুস সিয়ার: কানযুদ দাকায়িক: ০৬ কি ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে এবং কি কি ধ্বংস করা যাবে
https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A6%AC%E0%A7%87
***
Comment