রিবাতের শাব্দিক ও পারিবাষিক অর্থ:
রিবাত (رباط) শব্দটি আরবি ربط থেকে নির্গত; যার অর্থ হচ্ছে বাঁধা, অটল থাকা। -জামহারাতুল লুগাহ: ১/৩১৫ (দারুল ইলম); মাকায়ীসুল লুগাহ: ২/৪৭৮ (দারুল ফিকর); লিসানুল আরব: ৭/৩০২ (দারু সাদির)
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
“আর তোমরা তাদের (কাফেরদের সাথে যুদ্ধের) জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও ঘোড়া বেঁধে রেখে প্রস্তুত করো; যা দ্বারা তোমরা আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত করে রাখবে।” –সূরা আনফাল: ৬০
যেহেতু সীমান্তরক্ষীরা পাহারা দেওয়ার জন্য সর্বদা ঘোড়া বেঁধে রাখে এবং আপন জায়গায় অটল-অবিচল থাকে, তাই সীমান্ত পাহারাকে রিবাত বলা হয়ে থাকে। পরবর্তীতে সীমান্ত অর্থে এবং সীমান্তে অবস্থান করা অর্থেও শব্দটি ব্যবহৃত হতে থাকে। -জামহারাতুল লুগাহ: ১/৩১৫ (দারুল ইলম); মাকায়ীসুল লুগাহ: ২/৪৭৮ (দারুল ফিকর); মুফরাদাতুল কুরআন: ১৯২ (তাওফীকিয়্যাহ); লিসানুল আরব: ৭/৩০২ (দারু সাদির); শরহুস সিয়ারিল কাবীর: ১/৭ (ইলমিয়্যাহ)
রিবাতের পারিবাষিক সংজ্ঞায় শামসুল আইম্মাহ সারাখসী রহ. (৪৯০ হি.) বলেন,
“দীনে ইসলামকে শক্তিশালী করা এবং মুসলিম জনগণ থেকে কাফেরদের আক্রমন প্রতিহত করার লক্ষ্যে শত্রুদের সীমান্তে অবস্থান করা।” -শরহেস সিয়ারিল কাবীর: ১/৬ (ইলমিয়্যাহ); রদ্দুল মুহতার: ৪/১২১ (দারুল ফিকর)
ইবনুল হুমাম রহ. (৮৬১ হি.) বলেন,
“আল্লাহর শন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে শত্রু কর্তৃক আক্রমন প্রতিহত করার লক্ষ্যে আশঙ্কাস্থলে অবস্থান করা।”-ফাতহুল কাদীর: ৫/৪১৯ (ইলমিয়্যাহ); আল-বাহরুর রায়েক: ৫/১২০ (ইলমিয়্যাহ)
ইমাম আবু হাফস নাসাফী রহ. (৫৩৭ হি.) বলেন,
“মুরাবাতা (বা রিবাত) হচ্ছে সীমান্তে অবস্থান করা। অর্থাৎ প্রয়োজন মূহূর্তের জন্য জিহাদের প্রস্তুতি নিয়ে মুজাহিদ দারুল ইসলামের সীমানান্তে ঘোড়া বেঁধে রাখা। -তালিবাতুত তালাবাহ: ১৩১ (মাকতাবাতুল মুসান্না)
একটি হাদীসেও উক্ত সংজ্ঞার প্রতি ইঙ্গিত পাওয়া যায়। মুআ’য বিন আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত হয়েছে,
“মুআয বিন আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি মুসলিমদের শেষ সীমান্তে গিয়ে আল্লাহর পথে এমনভাবে স্বেচ্ছায় পাহারা দিবে যে, শাসক তাকে (বেতন দিয়ে) নেয়নি, সে তার চোখ দিয়ে জাহান্নাম দেখতেও পাবে না। তবে আল্লাহর কসমের কারণে যতটুকু আবশ্যক (ততটুকু ছাড়া)। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমাদের প্রত্যেককেই জাহান্নাম অতিক্রম করতে হবে।” -মুসনাদে আহমদ: ১৫৬১২; মুসনাদে আবু ইয়া’লা: ১৪৯০; মু’জামে কাবীর: ২০/১৮৫। হাদীসের মান: হাসান।
তবে সীমান্ত এলাকা ছাড়াও যদি মুসলিম ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে শত্রু কর্তৃক আক্রমনের আশঙ্কা থাকে, তাহলে আপন ভূমিতে অবস্থান করে মুসলিম ভূখণ্ডের নিরাপত্তা ও হেফাজতের লক্ষ্যে পাহারা দেওয়া এবং শত্রু কর্তৃক আক্রমন প্রতিহত করাও রিবাত হিসেবে গণ্য হবে। -ফাতহুল কাদীর: ৫/৪১৯ (ইলমিয়্যাহ); রদ্দুল মুহতার: ৪/১২১ (দারুল ফিকর); জাওয়াহিরুল ফিকহ: ৬/৩৪ (যাকারিয়া)
সহজ ভাষায় বললে, রিবাত হচ্ছে মুসলিম জামাআত, সম্পদ বা ভূখণ্ডের হেফাজতের লক্ষ্যে এবং শত্রু কর্তৃক আক্রমন প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে আশঙ্কাময় স্থানে অবস্থান করা।
রিবাত (رباط) শব্দটি আরবি ربط থেকে নির্গত; যার অর্থ হচ্ছে বাঁধা, অটল থাকা। -জামহারাতুল লুগাহ: ১/৩১৫ (দারুল ইলম); মাকায়ীসুল লুগাহ: ২/৪৭৮ (দারুল ফিকর); লিসানুল আরব: ৭/৩০২ (দারু সাদির)
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
وَأَعِدُّوا لَهُمْ مَا اسْتَطَعْتُمْ مِنْ قُوَّةٍ وَمِنْ رِبَاطِ الْخَيْلِ تُرْهِبُونَ بِهِ عَدُوَّ اللَّهِ وَعَدُوَّكُمْ -سورة الأنفال: 60
“আর তোমরা তাদের (কাফেরদের সাথে যুদ্ধের) জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও ঘোড়া বেঁধে রেখে প্রস্তুত করো; যা দ্বারা তোমরা আল্লাহর শত্রু ও তোমাদের শত্রুদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত করে রাখবে।” –সূরা আনফাল: ৬০
যেহেতু সীমান্তরক্ষীরা পাহারা দেওয়ার জন্য সর্বদা ঘোড়া বেঁধে রাখে এবং আপন জায়গায় অটল-অবিচল থাকে, তাই সীমান্ত পাহারাকে রিবাত বলা হয়ে থাকে। পরবর্তীতে সীমান্ত অর্থে এবং সীমান্তে অবস্থান করা অর্থেও শব্দটি ব্যবহৃত হতে থাকে। -জামহারাতুল লুগাহ: ১/৩১৫ (দারুল ইলম); মাকায়ীসুল লুগাহ: ২/৪৭৮ (দারুল ফিকর); মুফরাদাতুল কুরআন: ১৯২ (তাওফীকিয়্যাহ); লিসানুল আরব: ৭/৩০২ (দারু সাদির); শরহুস সিয়ারিল কাবীর: ১/৭ (ইলমিয়্যাহ)
রিবাতের পারিবাষিক সংজ্ঞায় শামসুল আইম্মাহ সারাখসী রহ. (৪৯০ হি.) বলেন,
المقام في ثغر العدو لإعزاز الدين، ودفع شر المشركين عن المسلمين.اهـــ شرح السير الكبير ط. العلمية (1/ 6)؛ رد المحتار ط. دار الفكر (4/ 121)
“দীনে ইসলামকে শক্তিশালী করা এবং মুসলিম জনগণ থেকে কাফেরদের আক্রমন প্রতিহত করার লক্ষ্যে শত্রুদের সীমান্তে অবস্থান করা।” -শরহেস সিয়ারিল কাবীর: ১/৬ (ইলমিয়্যাহ); রদ্দুল মুহতার: ৪/১২১ (দারুল ফিকর)
ইবনুল হুমাম রহ. (৮৬১ হি.) বলেন,
وهو الإقامة في مكان يتوقع هجوم العدو فيه لقصد دفعه لله تعالى.اهـــ -فتح القدير ط. العلمية (5/419)؛ البحر الرائق ط. العلمية (5/ 120)
“আল্লাহর শন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে শত্রু কর্তৃক আক্রমন প্রতিহত করার লক্ষ্যে আশঙ্কাস্থলে অবস্থান করা।”-ফাতহুল কাদীর: ৫/৪১৯ (ইলমিয়্যাহ); আল-বাহরুর রায়েক: ৫/১২০ (ইলমিয়্যাহ)
ইমাম আবু হাফস নাসাফী রহ. (৫৩৭ হি.) বলেন,
المرابطة الإقامة بالثغر وهي ربط الغازي فرسه بأقصى دار الإسلام مستعدا للجهاد إذا احتيج إليه.اهــــ -طلبة الطلبة ط. مكتبة المثنى (ص: 131)
“মুরাবাতা (বা রিবাত) হচ্ছে সীমান্তে অবস্থান করা। অর্থাৎ প্রয়োজন মূহূর্তের জন্য জিহাদের প্রস্তুতি নিয়ে মুজাহিদ দারুল ইসলামের সীমানান্তে ঘোড়া বেঁধে রাখা। -তালিবাতুত তালাবাহ: ১৩১ (মাকতাবাতুল মুসান্না)
একটি হাদীসেও উক্ত সংজ্ঞার প্রতি ইঙ্গিত পাওয়া যায়। মুআ’য বিন আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ مُعَاذٍ بْنِ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: "مَنْ حَرَسَ مِنْ وَرَاءِ الْمُسْلِمِينَ فِي سَبِيلِ اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى مُتَطَوِّعًا، لَا يَأْخُذُهُ سُلْطَانٌ، لَمْ يَرَ النَّارَ بِعَيْنَيْهِ، إِلَّا تَحِلَّةَ الْقَسَمِ فَإِنَّ اللهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ: وَإِنْ مِنْكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا. –رواه أحمد (15612) وأبو يعلى (1490) والطبراني في الكبير (20/ 185). وقال الهيثمي رحمه الله في مجمع الزوائد ط. مكتبة القدسي (5/ 287): في أحد إسنادي أحمد ابن لهيعة وهو أحسن حالا من رشدين.اهـــ وقال المنذري رحمه الله في الترغيب والترهيب ط. العلمية (2/ 159): لا بأس بإسناده في المتابعات.اهـــ وذكره الحافظ ابن حجر في فتح الباري ط. دار الفكر (6/ 83)، ولم يضعفه، فالحديث حسن على الأقل كما هو منهجه. وقال الشيخ عبد الرزاق غالب المهدي في تعليق فتح القدير ط. العلمية (5/ 419): الحديث حسن إن شاء الله تعالى لشواهده.اهـــ
“মুআয বিন আনাস রাদি. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি মুসলিমদের শেষ সীমান্তে গিয়ে আল্লাহর পথে এমনভাবে স্বেচ্ছায় পাহারা দিবে যে, শাসক তাকে (বেতন দিয়ে) নেয়নি, সে তার চোখ দিয়ে জাহান্নাম দেখতেও পাবে না। তবে আল্লাহর কসমের কারণে যতটুকু আবশ্যক (ততটুকু ছাড়া)। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমাদের প্রত্যেককেই জাহান্নাম অতিক্রম করতে হবে।” -মুসনাদে আহমদ: ১৫৬১২; মুসনাদে আবু ইয়া’লা: ১৪৯০; মু’জামে কাবীর: ২০/১৮৫। হাদীসের মান: হাসান।
তবে সীমান্ত এলাকা ছাড়াও যদি মুসলিম ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে শত্রু কর্তৃক আক্রমনের আশঙ্কা থাকে, তাহলে আপন ভূমিতে অবস্থান করে মুসলিম ভূখণ্ডের নিরাপত্তা ও হেফাজতের লক্ষ্যে পাহারা দেওয়া এবং শত্রু কর্তৃক আক্রমন প্রতিহত করাও রিবাত হিসেবে গণ্য হবে। -ফাতহুল কাদীর: ৫/৪১৯ (ইলমিয়্যাহ); রদ্দুল মুহতার: ৪/১২১ (দারুল ফিকর); জাওয়াহিরুল ফিকহ: ৬/৩৪ (যাকারিয়া)
সহজ ভাষায় বললে, রিবাত হচ্ছে মুসলিম জামাআত, সম্পদ বা ভূখণ্ডের হেফাজতের লক্ষ্যে এবং শত্রু কর্তৃক আক্রমন প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে আশঙ্কাময় স্থানে অবস্থান করা।
Comment