খাবার দিতে গিয়ে দেখি উনি সেলের এক কোনে জায়নামাজে বসে আছেন
পায়ের শব্দে চোখ উপরে তোলেন। অশ্রুসজল চোখ। শান্ত স্বভাব। ধীর স্থির। মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত আসামীদের এই সেলে নিয়ে আসা হয়।
আর আমার মতো যাদের হৃদয় পাথরের মতো শক্ত- তাদেরকেই এই সেলে পাহারায় নিযুক্ত করা হয়।
উনার বিরুদ্ধে মামলা খুবই শক্ত খুনের আসামী।
নিম্ন আদালতে মৃত্যদণ্ডের আদেশ হয়েছে। এখন উচ্চ আদালতে রায় বহাল থাকলেই উনার ফাঁসি কার্যকর হবে।
আসামীর প্রতি আমার আচরণ যত কঠোর। উনার আচরণ ঠিক ততোই কোমল।
আমার সুদীর্ঘ ত্রিশ বছরের কারারক্ষী জীবনে অনেক খুনিকে দেখেছি।
খুনির চোখ দেখে চেনা যায়। কিন্তু উনার চোখ দুটো বড়ই নিষ্পাপ।
উনি আমাকে সালাম দেন। অশ্রুসজল চোখেও একটু স্মিথ হাসেন।
আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়- এমন নরম স্বভাবের একজন মানুষ এরকম ভয়ঙ্কর খুনি হতে পারে।
আমি সরাসরি জিজ্ঞাসা করি -খুনটা আপনি কেন করলেন?
তিনি কোরআন শরীফ থেকে সুরা মায়েদার একটা আয়াত আরবিতে পাঠ করে বলেন-
নিরাপরাধ কোনো ব্যক্তিকে কেউ হত্যা করলো- মানে সে যেন দুনিয়ার সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করল; আর কেউ কারও প্রাণ রক্ষা করলো মানে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠীর প্রাণ রক্ষা করল।
এরপর তিনি বলেন-
তিরমিজিতে একটা হাদিস আছে- ‘দুনিয়া ধ্বংস করে দেওয়ার চেয়েও আল্লাহর কাছে ঘৃণিত কাজ হলো মানুষ হত্যা করা।’
তাই মানুষ খুনের মতো এমন নৃশংস, জঘন্য অপরাধ আমি কেমন করে করতে পারি।
উনার কন্ঠ ভারাক্রান্ত হয়। জীবনের বায়ান্ন বছর বয়সে এই প্রথম বুঝতে পারি-
আমার মতো পাথর হৃদয়ের মানুষের মনও নরম হয়।
আচ্ছা- তাহলে এই খুনের মামলায় প্রধান আসামি হিসাবে আপনি জড়িয়ে পড়লেন কেমন করে?
ঘটনা সত্য -
একজন প্রভাবশালী মানুষ খুন হয়েছে এবং কাকতালীয়ভাবে এই খুনের ঘটনা থেকে আমি মাত্র কয়েক কদম দূরে ছিলাম।
যারা খুন করেছে-
তারা আরো প্রভাবশালী।
আর আমার মতো এক দূর্বল মানুষকে ফাঁসিয়ে দিয়ে ওরা বেঁচে গেছে আর নিয়তি আমাকে এই নির্জন সেলে নিয়ে এসেছে।
আপনার আত্মীয় স্বজনরা কোনো চেষ্টা করেনি।
উকিলরা আপনার পক্ষে দাঁড়ায়নি। ওরা যে যেভাবে পারে চেষ্টা করছে।
আমাকে বাঁচাতে একটুকরো ভিটে ছিলো- সেটা বিক্রি হয়েছে।
বউ ছোট দুই সন্তান নিয়ে গৃহহীন হয়েছে। বৃদ্ধা মা আগে থেকেও কম দেখতেন। আমার জন্য কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধ মায়ের চোখ দুটো এখন আর আলো দেখে না।
কিন্তু বিচার, কোর্ট, আদালত, সমাজ, সংবাদ এসবতো আমার মতো দূর্বলের পক্ষে না।
তাই, আমার যত দ্রুত ফাঁসি হবে
- ওরা সবাই তত দ্রুত বেঁচে যাবে।
কিন্তু আমি জানি আমি নির্দোষ।
তাই উচ্চ আদালতে আমি পিটিশন দায়ের করেছি।
আমার উচ্চ আদালত হলো- আমার আল্লাহ। উনি সবচেয়ে উত্তম পরিকল্পনাকারী।
আমার নিয়তিতে যদি ফাঁসি লেখা থাকে সেটা হবে।
আর যদি আমার মুক্তি লেখা থাকে তবে সেটাও হবে।
আমার জীবন মৃত্যুর মালিক একমাত্র আল্লাহ। সবকিছুই আমি আমার রবের উপর ছেড়ে দিয়েছি।
পরদিনউনার স্ত্রী দুই পুত্র সহ উনার মাকে নিয়ে দেখা করতে আসেন। সবাই অনবরত কাঁদছে।
বৃদ্ধা মায়ের হাত দুটো ছেলের মুখের উপর হাতড়ে বেড়াচ্ছে। মা ছেলের মুখে, ঠোঁটে, গালে, মাথায় চুমু খাচ্ছেন
পিতা চুমু দিচ্ছে তার নিষ্পাপ দুটো সন্তানের মুখে। সুদীর্ঘ সময়ের কারারক্ষী জীবনে এই প্রথম আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ে।
বুকের ভিতরটা মোচড়ে ওঠে। তিনি মাকে বলেন- মা পিটিশনতো দিয়ে রেখেছি। উচ্চ আদালতে। আল্লাহর আরশে।
এই যে আমার মুখের সাথে তোমার লেগে থাকা হাত দুটো যত কাছে । উনি তার চেয়েও কাছে মা।
উনি খুব কাছে। উনি সব দেখছেন মা। কোনো কিছুই তার পরিকল্পনার বাইরে না।
আমি আমার দুটো অবুঝ সন্তানের মতো নির্দোষ আর নিষ্পাপ মা। আল্লাহর উপর বিশ্বাস আমি অনেক পড়েছি, অনেক গল্প শুনেছি।
কিন্তু এমন দৃঢ় বিশ্বাস জীবনে এই প্রথম দেখলাম। কয়েকদিন কেটে গেলো। যখনই খাবার দিতে যাই।
দেখি উনি জায়নামাজে আছেন। অথবা সিজদায় পড়ে রয়েছেন। হাইকোর্টে চূড়ান্ত রায় নিষ্পত্তির আগে এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে।
যে লোক এই নিরাপরাধ মানুষটিকে খুনের মামলায় জড়িয়েছিলো- তার গাড়ী এক মারাত্মক দূর্ঘটনায় পড়ে। ঘটনাস্থলেই স্ত্রী, পুত্র মারা যায়। অজ্ঞান অবস্থায় দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
কয়েক ঘন্টা পর তার জ্ঞান ফিরে আসলে সে জানতে পারে- দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী-পুত্র মারা গেছে।
এটা শুনার পর তার অবস্থায় আরো অবনতি ঘটে। সে বুঝতে পারে- জীবনের সব কিছু দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।
ধন, দৌলত, ঘর বাড়ি, ক্ষমতা কোনো কিছুই তার আর কাজে লাগবেনা।
যে কোনো সময় সে মারা যাবে।
তাই, নিজে খুন করে আরেকজনকে খুনের মামলায় ফাঁসিয়ে সে আল্লাহর কাছে এতো বড় পাপ নিয়ে যাবে কেমন করে।
সেখানেতো আর কোনো কোর্ট, হাইকোর্ট নেই। হয়তোবা জীবনে সে এমন কোনো কল্যাণ করেছে যার জন্য আল্লাহ তাকে একটা শেষ সুযোগ করে দিয়েছেন।
মৃত্যু শয্যায় শুয়ে সে চীৎকার করে বলতে থাকে - সব মিথ্যা, সব মিথ্যা। সত্য হলো- আব্দুল বাতিন নির্দোষ। আর আমিই সেই খুনি।
কোর্টে আব্দুল বাতিনকে বেখুসুর খালাস দেয়া হয়। কোর্টে দাঁড়িয়ে বুঝলাম- যারা নির্দোষ আর যারা গভীরভাবে আল্লাহকে বিশ্বাস করে- আল্লাহ তাদের এভাবেই রক্ষা করেন।
উনাকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে আমি বলি -
কারারক্ষি হিসাবে আমার চাকরিরও শেষ দিন গনিয়ে আসছে।
আমাকে আপনি এমন কিছু বলুন যা আমি সারাজীবন মনে রাখতে পারি।
উনার কথাগুলো হুবুহু নীচে তোলে ধরলামঃ
আল্লাহর চেয়ে আপনজন আর কেউ নেই। জীবনের কঠোর সংকটময় দুঃসময়ে শুধু না যে কোনো সময় তার কাছে চান এবং হৃদয় দিয়ে বিশ্বাস করুন -তিনি আপনার ডাক শুনছেন।
আল্লাহ মহান তিনি এক জীবন্ত বাস্তবতা। ঘাড়ের শিরার চেয়ে তিনি মানুষের সন্নিকটে।
আর , আল্লাহ এমন ভাবে মানুষকে সাহায্য করেন পৃথিবীর কোনো উইসডম দিয়ে তার ব্যাখ্যা করা সম্ভব না।
আব্দুল বাতিন দু হাতে তার দু সন্তানকে ধরে হাঁটেন।
পিছনে স্ত্রী আর মা।
আমি বিস্ময়ভরা চোখে যেন আল্লাহর এক অলৌকিক নিদর্শন দেখি।
খার্তুম কোর্টে সেদিন আমি শুধু আব্দুল বাতিনের ঈমান দেখিনি
আমি শুধু তাঁর দোয়ার শক্তি দেখিনি। একজন নিরাপরাধ মানুষের অলৌকিক মুক্তি দেখিনি।
এই দিন আমি নতুন করে মুসলমান হয়েছি । এই দিন আমি আমার আল্লাহকে খুঁজে পেয়েছি।
(ঘটনা হয়তো বাস্তব)
সংগৃহীত
পায়ের শব্দে চোখ উপরে তোলেন। অশ্রুসজল চোখ। শান্ত স্বভাব। ধীর স্থির। মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত আসামীদের এই সেলে নিয়ে আসা হয়।
আর আমার মতো যাদের হৃদয় পাথরের মতো শক্ত- তাদেরকেই এই সেলে পাহারায় নিযুক্ত করা হয়।
উনার বিরুদ্ধে মামলা খুবই শক্ত খুনের আসামী।
নিম্ন আদালতে মৃত্যদণ্ডের আদেশ হয়েছে। এখন উচ্চ আদালতে রায় বহাল থাকলেই উনার ফাঁসি কার্যকর হবে।
আসামীর প্রতি আমার আচরণ যত কঠোর। উনার আচরণ ঠিক ততোই কোমল।
আমার সুদীর্ঘ ত্রিশ বছরের কারারক্ষী জীবনে অনেক খুনিকে দেখেছি।
খুনির চোখ দেখে চেনা যায়। কিন্তু উনার চোখ দুটো বড়ই নিষ্পাপ।
উনি আমাকে সালাম দেন। অশ্রুসজল চোখেও একটু স্মিথ হাসেন।
আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়- এমন নরম স্বভাবের একজন মানুষ এরকম ভয়ঙ্কর খুনি হতে পারে।
আমি সরাসরি জিজ্ঞাসা করি -খুনটা আপনি কেন করলেন?
তিনি কোরআন শরীফ থেকে সুরা মায়েদার একটা আয়াত আরবিতে পাঠ করে বলেন-
নিরাপরাধ কোনো ব্যক্তিকে কেউ হত্যা করলো- মানে সে যেন দুনিয়ার সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে হত্যা করল; আর কেউ কারও প্রাণ রক্ষা করলো মানে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠীর প্রাণ রক্ষা করল।
এরপর তিনি বলেন-
তিরমিজিতে একটা হাদিস আছে- ‘দুনিয়া ধ্বংস করে দেওয়ার চেয়েও আল্লাহর কাছে ঘৃণিত কাজ হলো মানুষ হত্যা করা।’
তাই মানুষ খুনের মতো এমন নৃশংস, জঘন্য অপরাধ আমি কেমন করে করতে পারি।
উনার কন্ঠ ভারাক্রান্ত হয়। জীবনের বায়ান্ন বছর বয়সে এই প্রথম বুঝতে পারি-
আমার মতো পাথর হৃদয়ের মানুষের মনও নরম হয়।
আচ্ছা- তাহলে এই খুনের মামলায় প্রধান আসামি হিসাবে আপনি জড়িয়ে পড়লেন কেমন করে?
ঘটনা সত্য -
একজন প্রভাবশালী মানুষ খুন হয়েছে এবং কাকতালীয়ভাবে এই খুনের ঘটনা থেকে আমি মাত্র কয়েক কদম দূরে ছিলাম।
যারা খুন করেছে-
তারা আরো প্রভাবশালী।
আর আমার মতো এক দূর্বল মানুষকে ফাঁসিয়ে দিয়ে ওরা বেঁচে গেছে আর নিয়তি আমাকে এই নির্জন সেলে নিয়ে এসেছে।
আপনার আত্মীয় স্বজনরা কোনো চেষ্টা করেনি।
উকিলরা আপনার পক্ষে দাঁড়ায়নি। ওরা যে যেভাবে পারে চেষ্টা করছে।
আমাকে বাঁচাতে একটুকরো ভিটে ছিলো- সেটা বিক্রি হয়েছে।
বউ ছোট দুই সন্তান নিয়ে গৃহহীন হয়েছে। বৃদ্ধা মা আগে থেকেও কম দেখতেন। আমার জন্য কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধ মায়ের চোখ দুটো এখন আর আলো দেখে না।
কিন্তু বিচার, কোর্ট, আদালত, সমাজ, সংবাদ এসবতো আমার মতো দূর্বলের পক্ষে না।
তাই, আমার যত দ্রুত ফাঁসি হবে
- ওরা সবাই তত দ্রুত বেঁচে যাবে।
কিন্তু আমি জানি আমি নির্দোষ।
তাই উচ্চ আদালতে আমি পিটিশন দায়ের করেছি।
আমার উচ্চ আদালত হলো- আমার আল্লাহ। উনি সবচেয়ে উত্তম পরিকল্পনাকারী।
আমার নিয়তিতে যদি ফাঁসি লেখা থাকে সেটা হবে।
আর যদি আমার মুক্তি লেখা থাকে তবে সেটাও হবে।
আমার জীবন মৃত্যুর মালিক একমাত্র আল্লাহ। সবকিছুই আমি আমার রবের উপর ছেড়ে দিয়েছি।
পরদিনউনার স্ত্রী দুই পুত্র সহ উনার মাকে নিয়ে দেখা করতে আসেন। সবাই অনবরত কাঁদছে।
বৃদ্ধা মায়ের হাত দুটো ছেলের মুখের উপর হাতড়ে বেড়াচ্ছে। মা ছেলের মুখে, ঠোঁটে, গালে, মাথায় চুমু খাচ্ছেন
পিতা চুমু দিচ্ছে তার নিষ্পাপ দুটো সন্তানের মুখে। সুদীর্ঘ সময়ের কারারক্ষী জীবনে এই প্রথম আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ে।
বুকের ভিতরটা মোচড়ে ওঠে। তিনি মাকে বলেন- মা পিটিশনতো দিয়ে রেখেছি। উচ্চ আদালতে। আল্লাহর আরশে।
এই যে আমার মুখের সাথে তোমার লেগে থাকা হাত দুটো যত কাছে । উনি তার চেয়েও কাছে মা।
উনি খুব কাছে। উনি সব দেখছেন মা। কোনো কিছুই তার পরিকল্পনার বাইরে না।
আমি আমার দুটো অবুঝ সন্তানের মতো নির্দোষ আর নিষ্পাপ মা। আল্লাহর উপর বিশ্বাস আমি অনেক পড়েছি, অনেক গল্প শুনেছি।
কিন্তু এমন দৃঢ় বিশ্বাস জীবনে এই প্রথম দেখলাম। কয়েকদিন কেটে গেলো। যখনই খাবার দিতে যাই।
দেখি উনি জায়নামাজে আছেন। অথবা সিজদায় পড়ে রয়েছেন। হাইকোর্টে চূড়ান্ত রায় নিষ্পত্তির আগে এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে।
যে লোক এই নিরাপরাধ মানুষটিকে খুনের মামলায় জড়িয়েছিলো- তার গাড়ী এক মারাত্মক দূর্ঘটনায় পড়ে। ঘটনাস্থলেই স্ত্রী, পুত্র মারা যায়। অজ্ঞান অবস্থায় দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
কয়েক ঘন্টা পর তার জ্ঞান ফিরে আসলে সে জানতে পারে- দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী-পুত্র মারা গেছে।
এটা শুনার পর তার অবস্থায় আরো অবনতি ঘটে। সে বুঝতে পারে- জীবনের সব কিছু দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।
ধন, দৌলত, ঘর বাড়ি, ক্ষমতা কোনো কিছুই তার আর কাজে লাগবেনা।
যে কোনো সময় সে মারা যাবে।
তাই, নিজে খুন করে আরেকজনকে খুনের মামলায় ফাঁসিয়ে সে আল্লাহর কাছে এতো বড় পাপ নিয়ে যাবে কেমন করে।
সেখানেতো আর কোনো কোর্ট, হাইকোর্ট নেই। হয়তোবা জীবনে সে এমন কোনো কল্যাণ করেছে যার জন্য আল্লাহ তাকে একটা শেষ সুযোগ করে দিয়েছেন।
মৃত্যু শয্যায় শুয়ে সে চীৎকার করে বলতে থাকে - সব মিথ্যা, সব মিথ্যা। সত্য হলো- আব্দুল বাতিন নির্দোষ। আর আমিই সেই খুনি।
কোর্টে আব্দুল বাতিনকে বেখুসুর খালাস দেয়া হয়। কোর্টে দাঁড়িয়ে বুঝলাম- যারা নির্দোষ আর যারা গভীরভাবে আল্লাহকে বিশ্বাস করে- আল্লাহ তাদের এভাবেই রক্ষা করেন।
উনাকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে আমি বলি -
কারারক্ষি হিসাবে আমার চাকরিরও শেষ দিন গনিয়ে আসছে।
আমাকে আপনি এমন কিছু বলুন যা আমি সারাজীবন মনে রাখতে পারি।
উনার কথাগুলো হুবুহু নীচে তোলে ধরলামঃ
আল্লাহর চেয়ে আপনজন আর কেউ নেই। জীবনের কঠোর সংকটময় দুঃসময়ে শুধু না যে কোনো সময় তার কাছে চান এবং হৃদয় দিয়ে বিশ্বাস করুন -তিনি আপনার ডাক শুনছেন।
আল্লাহ মহান তিনি এক জীবন্ত বাস্তবতা। ঘাড়ের শিরার চেয়ে তিনি মানুষের সন্নিকটে।
আর , আল্লাহ এমন ভাবে মানুষকে সাহায্য করেন পৃথিবীর কোনো উইসডম দিয়ে তার ব্যাখ্যা করা সম্ভব না।
আব্দুল বাতিন দু হাতে তার দু সন্তানকে ধরে হাঁটেন।
পিছনে স্ত্রী আর মা।
আমি বিস্ময়ভরা চোখে যেন আল্লাহর এক অলৌকিক নিদর্শন দেখি।
খার্তুম কোর্টে সেদিন আমি শুধু আব্দুল বাতিনের ঈমান দেখিনি
আমি শুধু তাঁর দোয়ার শক্তি দেখিনি। একজন নিরাপরাধ মানুষের অলৌকিক মুক্তি দেখিনি।
এই দিন আমি নতুন করে মুসলমান হয়েছি । এই দিন আমি আমার আল্লাহকে খুঁজে পেয়েছি।
(ঘটনা হয়তো বাস্তব)
সংগৃহীত