Announcement

Collapse
No announcement yet.

সহজে লিনাক্স শিখি: পর্ব ০৪ - বিভিন্ন DE (Desktop Environment) তথা ইউজার ইন্টারফেস

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সহজে লিনাক্স শিখি: পর্ব ০৪ - বিভিন্ন DE (Desktop Environment) তথা ইউজার ইন্টারফেস

    সহজে লিনাক্স শিখি: পর্ব ০৪ - বিভিন্ন DE (Desktop Environment) তথা ইউজার ইন্টারফেস


    DE লিনাক্সের একটি স্পেশাল বৈশিষ্ট্য। DE না বুঝলে আপনি লিনাক্স পূর্ণ বুঝলেন না, লিনাক্সের স্বাদও পূর্ণ পেলেন না। আপনি কম্পিউটার চালান DE ব্যবহার করে। তাই আপনাকে DE বুঝতে হবে।

    DE (Desktop Environment) কি?
    আপনার বাসা বা আপনার অফিস যেমন কিছু জিনিস মিলে সাজানো একটা প্যাকেজ, DE হচ্ছে এমনই একটা প্যাকেজ, যে প্যাকেজটি ব্যবহার করে আপনি কম্পিউটার চালান।
    • আমরা যখন উইন্ডজ অন করি, আমাদের সামনে একটা স্ক্রিন চলে আসে যাকে আমরা ডেস্কটপ বলি।
    • ডেস্কটপের নিচে একটা টাস্কবার থাকে যেখানে বিভিন্ন আইকন থাকে এবং আপনি চাইলে বিভিন্ন সফটওয়ারের আইকন এখানে পিন করে রাখতে পারেন। যেমন ফায়ারফক্স, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, ভিএলসি প্লেয়ার ইত্যাদি আইকন রাখতে পারেন।
    • টাস্কবারের বামপাশে একটা স্টার্ট মেনু থাকে যেখানে গেলে বিভিন্ন সেটিংসে ঢুকতে পারবেন; কম্পিউটার শাটডাউন করা, রিস্টার্ট করা, স্লিপিং মোডে যাওয়া ইত্যাদি অপশন পাবেন।
    • বামপাশে স্টার্ট মেনুর সাথে একটা সার্চ আইকন পাবেন।
    • টাস্কবারে পিন করা একটা ফোল্ডার আইকন পাবেন যেটাকে ফাইল এক্সপ্লোরার বলে, যেটার মাধ্যমে আপনি কম্পিউটারের ভিতরে ঢুকে আপনার ফাইল-ফোল্ডার, অডিও-ভিডিও, পিকচার ইত্যাদি খুলতে পারেন, পড়তে পারেন।
    • ডেস্কটপে বিভিন্ন আইকন থাকে বা রাখতে পারেন। যেমন বামপাশে উপরের দিকে দিস পিসি নামে একটা আইকন যেটা দিয়ে আপনি কম্পিউটারের ভিতরে ঢুকতে পারেন। একটা ট্র্যাশ আইকন যেখানে ডিলিট করা ফাইলগুলো জমা হয়। একটা কন্ট্রোল প্যানেল যার ভিতরে ঢুকে ল্যাঙ্গুয়েজ সেট করতে পারেন, ইউজারের নাম পাসওয়ার্ড সেট ও চেঞ্জ করতে পারেন, ইনস্টল করা প্রোগ্রামগুলো দেখতে ও আনইনস্টল বা রিপিয়ার করতে পারেন।

    এভাবে আপনি একটা গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস (GUI) প্যাকেজ পাচ্ছেন, যে প্যাকেজটা ব্যবহার করে আপনি কম্পিউটারে আপনার কাজগুলো করতে পারেন। এই প্যাকেজটাকেই বলে DE (Desktop Environment)।

    ডেস্কটপ + ডেস্কটপ আইকন + টাস্কবার + স্টার্ট মেনু + ফাইল এক্সপ্লোরার + আরও বিভিন্ন কিছু = একটা গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস (GUI) = DE (Desktop Environment)।

    আশাকরি আপনি DE (Desktop Environment) বুঝতে পেরেছেন।


    উইন্ডজ লিনাক্সের পার্থক্য
    • উইন্ডজে DE থাকে একটা। লিনাক্সের DE আছে অনেক।
    • উইন্ডজের DE-কে কাস্টমাইজ করে নিজের মতো করে সাজানো যায় কম, উইন্ডজের নির্মাতার যেভাবে দিয়েছে সেভাবেই ব্যবহার করতে হয়। পক্ষান্তরে লিনাক্সের DE-তে পরিবর্তন করে সাজানোর সুবিধা বেশি।

    তাহলে লিনাক্সে আপনি দুই দিক থেকে সুবিধা পাচ্ছেন:
    এক. অনেক DE আছে, আপনি সুবিধামতো একটা বেছে নিয়ে কাজ করতে পারেন।
    দুই. আপনার বেছে নেয়া DE-তে পরিবর্তন করে সাজাতে পারবেন নিজের সুবিধামতো।

    লিনাক্স ব্যবহার শুরু না করলে আপনি বিষয়টা পুরোপুরি বুঝতে পারবেন না, তথাপি আমি সহজ-সরলভাবে কিছুটা বুঝাতে ‌‌চেষ্টা করছি ইনশাআল্লাহ।

    লিনাক্সের কিছু পপুলার DE
    লিনাক্স যেহেতু একটা অপেনসোর্স তথা উন্মুক্ত জিনিস, তাই এক্সপার্ট ডেভলাপাররা এটার মূলটা ঠিক রেখে সব কিছুতে পরিবর্তন এনে নতুন করে সাজাতে পারেন। এভাবে লিনাক্সের বিভিন্ন ডিস্ট্রো সামনে এসেছে। উইন্ডজে কিন্তু তা সম্ভব নয়। উইন্ডজের ভার্সন শুধু সেটাই, যা উইন্ডজ নির্মাতারা দিয়েছে। সকলে নির্মাতাদের হাতে যিম্মি। এ বিষয়ে আমরা আগে আলোচনা করেছি।

    DE হচ্ছে একটা প্যাকেজ। এই প্যাকেজের প্রোগ্রামগুলোতে বিভিন্নজন গবেষণা করে কিছু পরিবর্তন এনেছেন। সংযোজন বিয়োজন করেছেন। ফলে প্যাকেজের মূল জিনিসগুলো ঠিক রেখে বিভিন্নজন বিভিন্ন প্যাকেজ তৈরি করেছেন। এগুলোই হচ্ছে বিভিন্ন DE। প্রত্যেকটা DE-তে কিছু পরিবর্তন আছে, ভিন্নতা আছে। কোনোটা হালকা, কোনোটা ভারী; কোনোটাতে ফিচার কম, কোনোটাতে বেশি; কোনোটাতে কাস্টমাইজেশন সুবিধা বেশি, কোনোটাতে কম।

    লিনাক্সের প্রসিদ্ধ ও বহুল ব্যবহৃত কয়েকটি DE হচ্ছে: GNOME, KDE Plasma, XFCE, Cinnamon, MATE ইত্যাদি।

    DEগুলোর পারস্পরিক ভিন্নতা কোথায়?
    আমরা দেখেছি একটা DE-তে বেশ কিছু জিনিস থাকে। যেমন উইন্ডজ DE-তে আছে: ডেস্কটপ + ডেস্কটপ আইকন + টাস্কবার + স্টার্ট মেনু + ফাইল এক্সপ্লোরার + আরও বিভিন্ন কিছু।

    লিনাক্সেও এসব জিনিসই থাকে। তবে কোনো কোনোটার নাম একটু ভিন্ন। যেমন:

    ডেস্কটপ= লিনাক্সেও ডেস্কটপ।

    ডেস্কটপ আইকন= লিনাক্সেও ডেস্কটপ আইকন।

    টাস্কবার= লিনাক্সে টাস্কবারও বলে, আবার বলে প্যানেল - Panel।

    স্টার্ট মেনু= লিনাক্সে অ্যাপ্লিকেশন মেনু - Application Menu।

    ফাইল এক্সপ্লোরার= লিনাক্সে ফাইল ম্যানেজার - File Manager।

    Desktop + Desktop Icons + Panel + Application Menu + File Manager + আরও বিভিন্ন কিছু = লিনাক্স DE।

    এই জিনিসগুলো সব DE-তেই থাকবে। তবে চেহারা-সূরত-কালার-আকৃতি ভিন্ন হবে। হালকা-ভারী হবে। সহজ কঠিন হবে। সুবিধা অসুবিধা একেক রকম হবে।


    XFCE এবং KDE Plasma এর তুলনা
    যেমন XFCE এবং KDE Plasma দুটি প্রসিদ্ধ DE। XFCE খুবই হালকা। অর্থাৎ ক্লিক করার সাথে সাথে ফাইল-ফোল্ডার খুলে যায়। কাজের জন্য সহজ। পিসির CPU দুর্বল হলে RAM কম হলে XFCE উপযোগী। তবে এটিতে পরিবর্তন করা ও সাজানো গোছানো খুব বেশি যায় না। তবে যেটুকু যায় তা আপনার আমার মতো ইউজারদের জন্য যথেষ্ট।

    পক্ষান্তরে KDE Plasma ভারী। বেশি CPU ও RAM খায়। পিসি দুর্বল হলে স্লো করবে এবং হ্যাংও করতে পারে। তবে দেখতে অত্যন্ত সুন্দর। পরিবর্তন করে সাজানো গোছানোর সুবিধা খুব বেশি। তবে এত বেশি যা আপনার আমার মতো ইউজারদের দরকার নাই। বরং এর পিছনে পড়তে গেলে কাজের চেয়ে সময় নষ্ট হবে বেশি। এজন্য কাজের লোকদের জন্য KDE Plasma এর চেয়ে XFCE বেশি উপযোগী।

    File Manager দিয়ে উদাহরণ
    File Manager দিয়ে উদাহরণ দিলে আরও একটু বুঝতে সহজ হবে ইনশাআল্লাহ। সবগুলো DE-তেই ফাইল ম্যানেজার থাকে। তবে সবগুলোর ফাইল ম্যানেজার দেখতে এক রকম না। সবগুলো একই ওয়েটেরও না। সবগুলোর মধ্যে ফিচারও সমান না। নিচে একটা তুলনামূলক চিত্র দিচ্ছি:

    GNOME = ফাইল ম্যানেজারের নাম Nautilus। এটি দেখতে macOS এর Finder এর মতো। পরিষ্কার এবং আধুনিক ইন্টারফেস।

    KDE Plasma = ফাইল ম্যানেজারের নাম Dolphin। এটি দেখতে Windows Explorer এর মতো। বিভিন্ন ফিচার সমৃদ্ধ এবং কাস্টমাইজেশন অপশন প্রচুর। আধুনিক এবং রঙিন ডিজাইন।

    XFCE = ফাইল ম্যানেজারের নাম Thunar। এটি দেখতে হালকা সংস্করণের Windows Explorer এর মতো। তবে সরল ডিজাইন এবং দ্রুত গতির।

    Cinnamon = ফাইল ম্যানেজারের নাম NemoGNOME এর উপর ভিত্তি করে বানানো এবং আধুনিক ও সুন্দর।

    MATE = ফাইল ম্যানেজারের নাম Caja। এটিও GNOME এর উপর ভিত্তি করে বানানো, তবে পুরাতন ধাচের।

    ==============================================

    এই পর্বে যা শিখলাম
    • DE (Desktop Environment) হচ্ছে ওপারেটিং সিস্টেমের একটি অংশ। এটির মাধ্যমে আমরা কম্পিউটার দেখতে পারি ও কাজ করতে পারি।
    • উইন্ডজে DE থাকে একটা, লিনাক্সে DE আছে অনেক।
    • ডেস্কটপ + ডেস্কটপ আইকন + টাস্কবার + স্টার্ট মেনু + ফাইল এক্সপ্লোরার + আরও বিভিন্ন কিছু মিলে উইন্ডজের DE গঠিত।
    • Desktop + Desktop Icons + Panel + Application Menu + File Manager + আরও বিভিন্ন কিছু মিলে লিনাক্সের DE গঠিত।
    • লিনাক্সের প্রসিদ্ধ কয়েকটি DE: GNOME, KDE Plasma, XFCE, Cinnamon, MATE।
    • KDE Plasma দেখতে অনেক সুন্দর কিন্তু ভারী। XFCE হালকা ও দ্রুত এবং সাধারণ কাজের জন্য ভালো উপযোগী।
    • GNOME এর ফাইল ম্যানেজারের নাম Nautilus। KDE Plasma এর ফাইল ম্যানেজারের নাম Dolphin। XFCE এর ফাইল ম্যানেজারের নাম Thunar। Cinnamon এর ফাইল ম্যানেজারের নাম Nemo। MATE এর ফাইল ম্যানেজারের নাম Caja।
    ================================================== ====================================
    পর্ব ০১ - ভূমিকা


    পর্ব ০২ - লিনাক্স কেন এবং এর সুবিধাগুলো কি কি?


    পর্ব ০৩ - লিনাক্সের বিভিন্ন ডিস্ট্রো (Distribution)


















Working...
X