এটি জেলখানা নয়,
এটি ছিল ইবাদতখানা
.
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিইয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) যখন কারাগারে প্রবেশ করলেন এবং প্রাচীর সমূহের ভেতর চলে গেলেন তখন প্রাচীরের দিকে লক্ষ্য করে বললেনঃ
“...তারপর তাদের মাঝখানে একটি প্রাচীর স্থাপন করে দেয়া হবে, যাতে একটি দরজা থাকবে। তার ভিতরভাগে থাকবে রহমত এবং তার বহির্ভাগে থাকবে আযাব” [সূরা আল-হাদীদ আয়াতঃ ১৩]
তিনি বন্দী অবস্থায় সাজদাহ'র হালতে বলতেনঃ
اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَى ذِكْرِكَ، وَشُكْرِكَ، وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ
“হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আপনার যিকির করার, শুকরিয়া (কৃতজ্ঞতা) আদায় করার এবং উত্তমরূপে আপনার ইবাদত করতে সাহায্য করুন”
.
ইবনুল কাইয়্যিম রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিইয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) কিল্লার কারাবাস সম্পর্কে প্রায়ই বলতেনঃ
“আমি যদি এই কিল্লা ভরপুর স্বর্ণ আল্লাহর পথে দান করি তবুও এই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় হবে না। অথবা এই কথা বলতেন, তারা আমাকে কারারুদ্ধ করে আমার জন্য কল্যাণের যে উপকরণ ও সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন তার প্রতিদান আমি দিতে পারবো না”
[আল-ওয়াবিসুল সাইয়্যিব, পৃষ্ঠাঃ ৪৪; সীরাতু শাইখিল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, পৃষ্ঠাঃ ১১০]
.
শাইখুল ইসলাম (রহিমাহুল্লাহ)কে তার জীবনের শেষবার সম্পূর্ণ অহেতুক, বিনা কারণে ও মিথ্যা অপবাদের ভিত্তিতে বন্দী করা হয়েছিল।
হাফিয বাযযার রহিমাহুল্লাহ বলেন, তারা তো ভেবেছে যে শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ)'র কারাবাস নিন্দনীয় বিষয়। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহু আযযা ওয়া জ্বাল এটিকে তার জন্য শ্রেষ্ঠত্বপূর্ণ এবং সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছেন। তিনি যেদিন ইন্তিকাল করেন সেদিন আল্লাহ তার জন্য এমন মর্যাদা প্রকাশ করেছেন, যদি তিনি তা দেখতে পেতেন তবে তার দু'নয়ন শীতল হয়ে যেত।
আল্লাহ জানেন যে, শাইখুল ইসলামের হায়াত ফুরিয়ে এসেছে তাই তাকে দুনিয়ার ঝামেলা থেকে অবসর করে আখিরাতের পথে এগিয়ে নেওয়ার জন্য (নিরিবিলি পরিবেশে ইবাদতের) সুন্দর চমৎকার পোশাক পরিধান করিয়েছেন। শাইখুল ইসলামকে বিনা অপরাধে এবং বিনা দণ্ড-জরিমানায় কারাবদ্ধ করে হকের ওপর শক্তিশালী ও দৃঢ় প্রত্যয়ী করেছেন। তিনি মৃত্যুর পূর্বে দুনিয়াদারীর সব ঝামেলা থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হয়ে আল্লাহর ইবাদত ও একগ্রচিত্তে তাঁর দিকে মনোনিবেশ করার তাওফিক লাভ করেছেন। মূলত তাকে ইবাদত-বন্দেগী করে আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য কিল্লার শাহী বন্দীশালার নিরিবিলি পরিবেশে নেওয়া হয়েছিল।
[আলামুল আলিয়্যাহ, পৃষ্ঠাঃ ৪৮ ও ৫১; সীরাতু শাইখিল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ, পৃষ্ঠাঃ ৪২৯]
_______________
Comment