টাইম ম্যানেজমেন্ট’ নিয়ে অনেকগুলো বিখ্যাত বই ও বই এর সামারি রয়েছে, বেশ কিছু চমৎকার থিওরি ও টিপস রয়েছে, সেগুলোই একটু একটু করে পর্বআকারে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ। আগ্রহীরা সাথেই থাকুন।
প্রথমেই যে থিওরির কথা বলবো, এটি আমার এবং অনেকেরই পছন্দের প্রথম লিস্টে আছে। এর প্রবর্তক ডুইট ড্যাভিড আইজেনআওয়ার, যিনি একইসাথে একজন আর্মি জেনারেল ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ৩৪ তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন, শাসনক্ষমতায় ছিলেন ৮ বছর। দুনিয়াবি দিক থেকে প্রচণ্ড সময়সচেতন একজন সফল ব্যক্তিত্ব, বলার অপেক্ষা রাখেনা। কর্মজীবনে উনাকে একইসাথে এত এত কাজ ডীল করতে হতো যে হিমশিম খাওয়ার অবস্থা, এই অবস্থা থেকেই উত্তোরণের জন্য প্রায়োরিটি অনুযায়ী প্রতিদিনকার কাজগুলো ভাগ করে সেই অনুপাতে কাজ সমাধা করার করার চিন্তা করেন, তা থেকেই এই ম্যাট্রিক্সের উৎপত্তি, যার নাম- ‘আর্জেন্ট- ইম্পর্ট্যান্ট ম্যাট্রিক্স’ বা ‘প্রায়োরিটি ম্যাট্রিক্স’।
এটিকে একটি বক্স আকারে কল্পনা করা হয়, যেটি চারটি কোয়াড্র্যান্ট বা ভাগে বিভক্ত। কোন কাজ কতটা আর্জেন্ট (জরুরী) ও কতটা ইম্পর্ট্যান্ট (গুরুত্বপূর্ণ), তার ভিত্তিতে প্রাত্যহিক কাজগুলোকে এই চারটি ভাগে সাজানো হয়। প্রথম ভাগ হচ্ছে ‘আর্জেন্ট + ইম্পর্ট্যান্ট’ কাজের জন্য। দ্বিতীয়ভাগ ‘ইম্পর্ট্যান্ট- কিন্তু আর্জেন্ট নয়’, তৃতীয় ভাগ ‘আর্জেন্ট কিন্তু ইম্পর্ট্যান্ট নয়’ এমন কাজের জন্য, আর শেষ ভাগে থাকবে এমন কাজ যা ‘আর্জেন্টও নয়- ইম্পর্ট্যান্টও নয়’। কাজগুলো আরেকটু ব্যাখ্যা করা যাক-
১. জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ (Urgent & Important) :
এই ভাগটিকে বলা হয় Stress / Fire Fighting Time, কারণ এই ভাগের কাজগুলো না করে ফেলে রাখলে তা আমাদের ব্রেইনে/লাইফে স্ট্রেস তৈরি করবে, তাই এগুলো যখনকার কাজ তখনই করে ফেলতে হয়। প্রায়োরিটির বিবেচনায় এগুলো সবার প্রথমে। উদাহরণস্বরূপ, আজান হয়ে গেলে সব কাজ ফেলে সালাত আদায় করা। অথবা, আমার যদি আজ বিকেলে একটি গুরুত্বপূর্ণ লেকচার নেয়ার কথা থাকে, তাহলে লেকচার নোট তৈরি করে রাখা আমার আজ সকালে সবচেয়ে জরুরী কাজ, এটা করতে হবে সবকিছুর আগে। কিংবা এখনই একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং আছে, সেটাতে জয়েন করাই এখন আমার সবচেয়ে জরুরী কাজ, এবং তা গুরত্বপূর্ণও বটে।
➤ এই ভাগের কাজগুলোর জন্য করণীয়: “Do it”. এক্ষণই করে ফেলুন।
২. গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু জরুরী নয় (Important, not Urgent) :
এই ভাগটিকে বলা হয় Quality Time, কারণ এ কাজগুলো জরুরী কাজের মত আমাদেরকে বাধ্য করেনা, কিন্তু এগুলোই আমাদের জীবনের লং টার্ম প্ল্যানগুলোকে বাস্তবায়িত করতে সাহায্য করে। আপাতদৃষ্টিতে এগুলো জরুরী মনে না হলেও ফেলে রাখলে পরে একসময় ঠিকই পস্তাতে হয়। একটা বিখ্যাত প্রবাদ আছে- “If you ignore the Urgent, it can kill you today. If you ignore the Important, it can kill you tomorrow.” তো এই গ্রুপের কাজগুলো কেমন? মনে করুন, ১ বছরের মধ্যে আপনি একটি বই লিখে শেষ করতে চাচ্ছেন। তার জন্য আপনাকে প্রতিদিন বা প্রতি সপ্তাহে অল্প অল্প করে লিখতে হবে, নয়তো বছরান্তে গিয়ে দেখবেন কিছুই হয়নি। অথবা দু’মাস পর আপনার সেমিস্টার ফাইনাল, প্রতিদিন একটি করে মডিউল পড়ার টার্গেট নিন, নয়তো খুব সম্ভব ফাইনালের আগে গিয়ে ড্রপ দিতে হবে। আবার ধরুন, আপনি আপনার সন্তানের সাথে একটি সুন্দর যোগাযোগের সম্পর্ক স্থাপন করতে চান, কিন্তু এটি একদিনেই হয়না, তার জন্য ছোট থেকেই প্রতিদিন সন্তানের জন্য একান্ত কিছু সময় বরাদ্দ রাখতে হবে। এগুলোই কুয়ালিটি টাইম, লং টাইম ইনিভেস্টমেন্ট।
➤ এই কাজগুলোর জন্য করণীয়: “Decide when to do”. প্রতিদিন অথবা প্রতি সপ্তাহে একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করুন, যখন এগুলো অবশ্যই করবেন।
৩. জরুরী কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নয় (Urgent, not Important) :
এই ভাগকে বলা হয় Distraction, কারণ এ কাজগুলো জরুরী মনে হলেও খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়, এগুলোতে বেশি মনোযোগ দেয়া হলে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোতে ব্যাঘাত ঘটে। যেমন: ফোনে আসা কোন কল, কিংবা ইনবক্সে আসা একটি ই-মেইল, যেটির উত্তর এই মুহুর্তে না দিয়ে পরে দিলেও চলবে। অথবা, এমন কোন কাজ যেটি আপনার পরিবর্তে অন্য কেউ করে দিলেও চলবে। যেমন: ঘরের টুকিটাকি কাজ, যা খাদেমা করতে পারে। ট্রেনের টিকেট কেনার জন্য দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা, যা টাকার বিনিময়ে অন্য কাউকে দিয়ে করিয়ে ফেলা সম্ভব।
➤ এসব কাজের জন্য “Defer it” or “Delegate it”. এক্ষণই না করে দিনের একটি তুলনামূলক ফ্রি সময় ফিক্স করুন যখন এই গ্রুপের কাজগুলো একসাথে করে ফেলবেন অথবা সম্ভব হলে অন্য কাউকে দায়িত্ব দিয়ে দিন।
৪. জরুরীও নয় গুরুত্বপূর্ণও নয় (Not Urgent, Not Important) :
এই ভাগের কাজগুলো হলো Time Wasting, সোজা বাংলায় ‘অকাজ’, কিংবা অনেকের জন্য গুনাহের কাজ- যেগুলো দ্বীন ও দুনিয়া কোন দিক দিয়েই জরুরীও না, গুরুত্বপূর্ণও না। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, এই কাজগুলোই আমাদের দিনের প্রোডাক্টিভ সময়ের ৮০-৯০% নিয়ে নেয়, ফলে আমাদের জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো পিছিয়ে পড়ে। যেমন- অকারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেইসবুক ব্রাউজ করা, ইউটিউবে একটার পর একটা ভিডিও দেখতে থাকা, অফিসে বসে কলিগদের সাথে খাজুরে গল্প করা।
➤ এই গ্রুপের কাজে করণীয়: “Delete it” or “Dump it”. একদম বাদ দিয়ে দিন। একবারে পুরো না পারলে ধীরে ধীরে এগুলোতে সময় কমিয়ে আনুন।
ম্যাট্রিক্সের বর্ণনা এখানেই শেষ, এবার নেমে পড়ুন কাজে- আপনার সারাদিনের দরকারি-অদরকারি সব কাজ একটি খাতায় লিখুন, এরপর এই ম্যাট্রিক্স্যের কোন ঘরে কোনটা পড়ে এভাবে বিন্যস্ত করে ফেলুন। আপনি নিজেই বুঝে যাবেন, আপনার রুটিনে কতখানি পরিবর্তন আনা দরকার। আর এই লিস্টিংকে আরেকটু সহজ করার জন্য উস্তাদ ইসমাইল কামদার তার ‘Time Management’ বইয়ে আমাদের প্রাত্যহিক গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর একটি লিস্ট দিয়েছেন ৫ টি হেডলাইনে, এর মধ্যেই সব চলে আসে। সেগুলো হলো-
১. ধর্মীয় কাজ: সঠিক সময়ে পাচ ওয়াক্ত সালাত আদায়, প্রত্যহ কুরআন তিলাওয়াত, ইসলামী জ্ঞান অর্জন, আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি দায়িত্ব ইত্যাদি।
২. ক্যারিয়ার সংক্রান্ত কাজ: শর্ট টার্ম প্ল্যান, লং টার্ম প্ল্যান, প্রোফেশনাল উন্নতি/দক্ষতা অর্জন ইত্যাদি।
৩. পারিবারিক কাজ: স্পাউজকে সময় দেয়া, সন্তানকে সময় দেয়া, নিজের বাবা-মাকে সময় দেয়া, ভাই-বোনের জন্য সময় রাখা ইত্যাদি।
৪. সামাজিক কাজ: “দাওয়াহ” (এটি প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরয দায়িত্ব), প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্ব, সমাজের গরীব-দুস্থদের জন্য কাজ করা ইত্যাদি।
৫. ব্যক্তিগত কাজ: পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া, পরিমিত ঘুম (৬-৮ ঘণ্টা), হালাল বিনোদন, ভ্রমণ, সেল্ফ ডেভেলপমেন্ট, স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি।
📌 Priority Matrix pdf download link (printable): https://docs.google.com/viewerng/viewer…
(চলবে)
প্রথমেই যে থিওরির কথা বলবো, এটি আমার এবং অনেকেরই পছন্দের প্রথম লিস্টে আছে। এর প্রবর্তক ডুইট ড্যাভিড আইজেনআওয়ার, যিনি একইসাথে একজন আর্মি জেনারেল ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ৩৪ তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন, শাসনক্ষমতায় ছিলেন ৮ বছর। দুনিয়াবি দিক থেকে প্রচণ্ড সময়সচেতন একজন সফল ব্যক্তিত্ব, বলার অপেক্ষা রাখেনা। কর্মজীবনে উনাকে একইসাথে এত এত কাজ ডীল করতে হতো যে হিমশিম খাওয়ার অবস্থা, এই অবস্থা থেকেই উত্তোরণের জন্য প্রায়োরিটি অনুযায়ী প্রতিদিনকার কাজগুলো ভাগ করে সেই অনুপাতে কাজ সমাধা করার করার চিন্তা করেন, তা থেকেই এই ম্যাট্রিক্সের উৎপত্তি, যার নাম- ‘আর্জেন্ট- ইম্পর্ট্যান্ট ম্যাট্রিক্স’ বা ‘প্রায়োরিটি ম্যাট্রিক্স’।
এটিকে একটি বক্স আকারে কল্পনা করা হয়, যেটি চারটি কোয়াড্র্যান্ট বা ভাগে বিভক্ত। কোন কাজ কতটা আর্জেন্ট (জরুরী) ও কতটা ইম্পর্ট্যান্ট (গুরুত্বপূর্ণ), তার ভিত্তিতে প্রাত্যহিক কাজগুলোকে এই চারটি ভাগে সাজানো হয়। প্রথম ভাগ হচ্ছে ‘আর্জেন্ট + ইম্পর্ট্যান্ট’ কাজের জন্য। দ্বিতীয়ভাগ ‘ইম্পর্ট্যান্ট- কিন্তু আর্জেন্ট নয়’, তৃতীয় ভাগ ‘আর্জেন্ট কিন্তু ইম্পর্ট্যান্ট নয়’ এমন কাজের জন্য, আর শেষ ভাগে থাকবে এমন কাজ যা ‘আর্জেন্টও নয়- ইম্পর্ট্যান্টও নয়’। কাজগুলো আরেকটু ব্যাখ্যা করা যাক-
১. জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ (Urgent & Important) :
এই ভাগটিকে বলা হয় Stress / Fire Fighting Time, কারণ এই ভাগের কাজগুলো না করে ফেলে রাখলে তা আমাদের ব্রেইনে/লাইফে স্ট্রেস তৈরি করবে, তাই এগুলো যখনকার কাজ তখনই করে ফেলতে হয়। প্রায়োরিটির বিবেচনায় এগুলো সবার প্রথমে। উদাহরণস্বরূপ, আজান হয়ে গেলে সব কাজ ফেলে সালাত আদায় করা। অথবা, আমার যদি আজ বিকেলে একটি গুরুত্বপূর্ণ লেকচার নেয়ার কথা থাকে, তাহলে লেকচার নোট তৈরি করে রাখা আমার আজ সকালে সবচেয়ে জরুরী কাজ, এটা করতে হবে সবকিছুর আগে। কিংবা এখনই একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং আছে, সেটাতে জয়েন করাই এখন আমার সবচেয়ে জরুরী কাজ, এবং তা গুরত্বপূর্ণও বটে।
➤ এই ভাগের কাজগুলোর জন্য করণীয়: “Do it”. এক্ষণই করে ফেলুন।
২. গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু জরুরী নয় (Important, not Urgent) :
এই ভাগটিকে বলা হয় Quality Time, কারণ এ কাজগুলো জরুরী কাজের মত আমাদেরকে বাধ্য করেনা, কিন্তু এগুলোই আমাদের জীবনের লং টার্ম প্ল্যানগুলোকে বাস্তবায়িত করতে সাহায্য করে। আপাতদৃষ্টিতে এগুলো জরুরী মনে না হলেও ফেলে রাখলে পরে একসময় ঠিকই পস্তাতে হয়। একটা বিখ্যাত প্রবাদ আছে- “If you ignore the Urgent, it can kill you today. If you ignore the Important, it can kill you tomorrow.” তো এই গ্রুপের কাজগুলো কেমন? মনে করুন, ১ বছরের মধ্যে আপনি একটি বই লিখে শেষ করতে চাচ্ছেন। তার জন্য আপনাকে প্রতিদিন বা প্রতি সপ্তাহে অল্প অল্প করে লিখতে হবে, নয়তো বছরান্তে গিয়ে দেখবেন কিছুই হয়নি। অথবা দু’মাস পর আপনার সেমিস্টার ফাইনাল, প্রতিদিন একটি করে মডিউল পড়ার টার্গেট নিন, নয়তো খুব সম্ভব ফাইনালের আগে গিয়ে ড্রপ দিতে হবে। আবার ধরুন, আপনি আপনার সন্তানের সাথে একটি সুন্দর যোগাযোগের সম্পর্ক স্থাপন করতে চান, কিন্তু এটি একদিনেই হয়না, তার জন্য ছোট থেকেই প্রতিদিন সন্তানের জন্য একান্ত কিছু সময় বরাদ্দ রাখতে হবে। এগুলোই কুয়ালিটি টাইম, লং টাইম ইনিভেস্টমেন্ট।
➤ এই কাজগুলোর জন্য করণীয়: “Decide when to do”. প্রতিদিন অথবা প্রতি সপ্তাহে একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করুন, যখন এগুলো অবশ্যই করবেন।
৩. জরুরী কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নয় (Urgent, not Important) :
এই ভাগকে বলা হয় Distraction, কারণ এ কাজগুলো জরুরী মনে হলেও খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়, এগুলোতে বেশি মনোযোগ দেয়া হলে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোতে ব্যাঘাত ঘটে। যেমন: ফোনে আসা কোন কল, কিংবা ইনবক্সে আসা একটি ই-মেইল, যেটির উত্তর এই মুহুর্তে না দিয়ে পরে দিলেও চলবে। অথবা, এমন কোন কাজ যেটি আপনার পরিবর্তে অন্য কেউ করে দিলেও চলবে। যেমন: ঘরের টুকিটাকি কাজ, যা খাদেমা করতে পারে। ট্রেনের টিকেট কেনার জন্য দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা, যা টাকার বিনিময়ে অন্য কাউকে দিয়ে করিয়ে ফেলা সম্ভব।
➤ এসব কাজের জন্য “Defer it” or “Delegate it”. এক্ষণই না করে দিনের একটি তুলনামূলক ফ্রি সময় ফিক্স করুন যখন এই গ্রুপের কাজগুলো একসাথে করে ফেলবেন অথবা সম্ভব হলে অন্য কাউকে দায়িত্ব দিয়ে দিন।
৪. জরুরীও নয় গুরুত্বপূর্ণও নয় (Not Urgent, Not Important) :
এই ভাগের কাজগুলো হলো Time Wasting, সোজা বাংলায় ‘অকাজ’, কিংবা অনেকের জন্য গুনাহের কাজ- যেগুলো দ্বীন ও দুনিয়া কোন দিক দিয়েই জরুরীও না, গুরুত্বপূর্ণও না। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, এই কাজগুলোই আমাদের দিনের প্রোডাক্টিভ সময়ের ৮০-৯০% নিয়ে নেয়, ফলে আমাদের জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো পিছিয়ে পড়ে। যেমন- অকারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেইসবুক ব্রাউজ করা, ইউটিউবে একটার পর একটা ভিডিও দেখতে থাকা, অফিসে বসে কলিগদের সাথে খাজুরে গল্প করা।
➤ এই গ্রুপের কাজে করণীয়: “Delete it” or “Dump it”. একদম বাদ দিয়ে দিন। একবারে পুরো না পারলে ধীরে ধীরে এগুলোতে সময় কমিয়ে আনুন।
ম্যাট্রিক্সের বর্ণনা এখানেই শেষ, এবার নেমে পড়ুন কাজে- আপনার সারাদিনের দরকারি-অদরকারি সব কাজ একটি খাতায় লিখুন, এরপর এই ম্যাট্রিক্স্যের কোন ঘরে কোনটা পড়ে এভাবে বিন্যস্ত করে ফেলুন। আপনি নিজেই বুঝে যাবেন, আপনার রুটিনে কতখানি পরিবর্তন আনা দরকার। আর এই লিস্টিংকে আরেকটু সহজ করার জন্য উস্তাদ ইসমাইল কামদার তার ‘Time Management’ বইয়ে আমাদের প্রাত্যহিক গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর একটি লিস্ট দিয়েছেন ৫ টি হেডলাইনে, এর মধ্যেই সব চলে আসে। সেগুলো হলো-
১. ধর্মীয় কাজ: সঠিক সময়ে পাচ ওয়াক্ত সালাত আদায়, প্রত্যহ কুরআন তিলাওয়াত, ইসলামী জ্ঞান অর্জন, আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি দায়িত্ব ইত্যাদি।
২. ক্যারিয়ার সংক্রান্ত কাজ: শর্ট টার্ম প্ল্যান, লং টার্ম প্ল্যান, প্রোফেশনাল উন্নতি/দক্ষতা অর্জন ইত্যাদি।
৩. পারিবারিক কাজ: স্পাউজকে সময় দেয়া, সন্তানকে সময় দেয়া, নিজের বাবা-মাকে সময় দেয়া, ভাই-বোনের জন্য সময় রাখা ইত্যাদি।
৪. সামাজিক কাজ: “দাওয়াহ” (এটি প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরয দায়িত্ব), প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্ব, সমাজের গরীব-দুস্থদের জন্য কাজ করা ইত্যাদি।
৫. ব্যক্তিগত কাজ: পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া, পরিমিত ঘুম (৬-৮ ঘণ্টা), হালাল বিনোদন, ভ্রমণ, সেল্ফ ডেভেলপমেন্ট, স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি।
📌 Priority Matrix pdf download link (printable): https://docs.google.com/viewerng/viewer…
(চলবে)
Comment