আস-সাহাব মিডিয়া উপমহাদেশ
কর্তৃক প্রকাশিত
আচরণবিধি
আল-কায়েদা উপমহাদেশ.
এর থেকে
পর্ব- ০৬
==================================================
===============================
কর্তৃক প্রকাশিত
আচরণবিধি
আল-কায়েদা উপমহাদেশ.
এর থেকে
পর্ব- ০৬
==================================================
===============================
ষষ্ঠ অনুচ্ছেদঃ
যেসব অপারেশন থেকে বিরত থাকা জরুরী
যেসব অপারেশন থেকে বিরত থাকা জরুরী
১। আমরা প্রত্যেক এমন অপারেশন থেকে বিরত থাকি, যা মুসলিম জনসাধারণকে মুজাহিদদের থেকে দূরে সরিয়ে দেয় অথবা যেগুলো তাদের উপলব্ধির বাইরে। এ বিষয়ে আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঐ পন্থা অবলম্বন করি, যে কারণে তিনি মুনাফিকদের হত্যা করা থেকে বিরত থেকেছেন, যেন মানুষ ইসলামের দাওয়াত থেকে দূরে সরে না যায়।
২। আমরা সাধারণভাবে এমন লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা এবং তাদের ক্ষতিসাধন করা থেকে বিরত থাকি, যারা আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করে না এবং তাতে সাহায্যও করে না। আল্লাহর ইচ্ছায় আমাদের মনযোগ সম্পূর্ণভাবে শরীয়তের দুশমন এবং কুফরি শাসনব্যবস্থার রক্ষকদের উপর নিবিষ্ট।
৩। মসজিদ, জানাযা, বাজার এবং আদালতসহ জনসমাগমের জায়গায় বোমা বিষ্ফোরণ ঘটানোকে আমরা সম্পূর্ণ ভুল মনে করি। কারণ এতে মুসলিম জনসাধারণের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। এমন জায়গায় জায়েয লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলা করা থেকেও আমরা বিরত থাকা আবশ্যক মনে করি। কারণ এধরনের অপারেশন থেকে সাধারণ মুসলিমরা ক্ষতির শিকার হতে পারেন, যা আল্লাহর আযাবকে অবধারিত করে। তাছাড়া এসব অপারেশনের কারণে মুজাহিদদের দাওয়াত কলুষিত হয় এবং ইসলামের ফায়দার পরিবর্তে কুফরি শাসনব্যবস্থা শক্তিশালী হয়।
৪। আমরা শত্রুদের সাথে সম্পৃক্ত নিরস্ত্র লোকদেরকে (অর্থাৎ ঐসব লোক, যারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে না; যেমন নারী ও শিশু) নিশানা বানানো থেকে বিরত থাকি।
৫। আমরা পাকিস্তানের এবং বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের স্ত্রী এবং প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের হত্যা করাকে শরীয়তের আলোকে ভুল মনে করি। কারণ কুফরি শাসনব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং শরীয়ত প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে লড়াই করার কারণে সশস্ত্রবাহিনী মুরতাদ ও হারবি (যুদ্ধরত) এবং এ কারণেই তাদের সঙ্গে আমাদের যু্দ্ধ। কিন্তু তাদের স্ত্রী ও সন্তানেরা শুধু আত্মীয়তার কারণে মুরতাদ অথবা হারবি হিসেবে প্রমাণিত হয় না, বরং তারা মুসলমান। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণীঃ لا يُؤْخَذُ الرَّجُلُ بِجَرِيرَةِ أَخِيهِ وَلا بِجَرِيرَةِ أَبِيهِ (কোনো ব্যক্তিকে তার বাবার বা ভাইয়ের অপরাধের কারণে অভিযুক্ত করা যায় না। -সুনানে নাসাঈ, মুসনাদে আহমাদ)। তবে যদি প্রমাণিত হয়, তাদের কেউ মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জড়িত, তাহলে যুদ্ধে অংশ নেয়ার কারণে তাদের হুকুমও তাদের বাবা বা স্বামীর মত হবে।
৬। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা দূষিত এবং কাফেরদের প্রণীত ও নিয়ন্ত্রিত, কিন্তু আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা করা অত্যন্ত বড় ভুল এবং শরীয়ত বিরোধী মনে করি। কারণ মুসলিম দেশগুলো এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোতে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য লোক সাধারণভাবে মুসলমান। আমারা মনে করি শাসনব্যবস্থার সংশোধনের মাধ্যমেই কলুষিত শিক্ষাব্যবস্থার সংশোধন সম্ভব।
৭। মাজার এবং এ ধরনের অন্যান্য জায়গায় বোমা বিষ্ফোরণকে আমরা ভুল মনে করি। পবিত্র শরীয়তের আলোকে কবরের শিরক ও বিদ’আতের বিরুদ্ধে এখন আমরা দাওয়াত ও তারবিয়াতের মাধ্যমে সংশোধনের চেষ্টা করি। বিজয়ের পর উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে এই বিষয়গুলোর সংশোধন ও তদারকির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবো ইনশাআল্লাহ।
৮। জামাআতের কোনো অপারেশনের ভুলের কারণে যদি সাধারণ মুসলমানদের ক্ষতি হয়, তাহলেঃ
i. নিঃসংকোচে নিজেদের ভুল স্বীকার করা হবে এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা হবে। এরপর মুসলমানদের কাছেও ক্ষমা প্রার্থনা করা হবে।
ii. অপারেশন সম্পাদনকারী মুজাহিদদেরকে জবাবদেহিতার সম্মুখীন করা হবে। যদি এ বিষয়ে কারো পক্ষ থেকে ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়, তাহলে জামাআতের শরীয়াহ বিভাগের সামনে এই মামলাটি পেশ করা হবে এবং ত্রুটি প্রমাণিত হলে সম্পাদনকারীদের শাস্তি দেয়া হবে।
iii.যেসকল মুসলমান ভাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তাদের কাছে জামাআতের আবেদন থাকবে– তারা যেন ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত বিবরণ জামাআতের দায়িত্বশীলদের কাছে পৌঁছে দেন। যখনই জামাআতের সামর্থ্য হবে, তখনই রক্তপণ (دية) অথবা আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
৯। যেহেতু আমরা কুফরি শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ছাড়া অন্য পার্শ্বযুদ্ধ থেকে দূরে থাকি, এজন্য অন্যান্য ধর্ম; যেমন হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃস্টান ইত্যাদি যা শত বছর ধরে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশগুলোতে বসবাস করে আসছে, তাদের বিরুদ্ধে জামাআত যুদ্ধে জড়াতে চায় না। তবে কোথাও যদি এসব অমুসলিম মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায় অথবা তাদের কেউ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কিংবা কুরআনের অবমাননা করে, তাহলে এসব নির্দিষ্ট বসতির অমুসলিমদের ক্ষতি থেকে মুসলমানদেরকে বাঁচানোর জন্য শুধু তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
১০। জামাআত খৃস্টানদের গির্জা ও হিন্দুদের মন্দিরকে নিশানা বানায় না। আল্লাহর ইচ্ছায় বিজয়ের পর উলামায়ে কেরামের ফাতওয়ার আলোকে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে ইনশা আল্লাহ।
আরও পড়ুন
Comment