আস-সাহাব মিডিয়া উপমহাদেশ
কর্তৃক প্রকাশিত
আচরণবিধি
আল-কায়েদা উপমহাদেশ.
এর থেকে
(পর্ব- ০৯) শেষ পর্ব
==================================================
===============================
কর্তৃক প্রকাশিত
আচরণবিধি
আল-কায়েদা উপমহাদেশ.
এর থেকে
(পর্ব- ০৯) শেষ পর্ব
==================================================
===============================
একাদশ অনুচ্ছেদ: দ্বীনি গণতান্ত্রিক দলগুলোর ব্যাপারে আমাদের স্ট্র্যাটেজি
1. গণতন্ত্রকে আমরা শরীয়তের আলোকে কুফর মনে করি; এতে যেকোনো দলের যেকোনো আদর্শের ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্তি শরীয়তের প্রতিষ্ঠার সাহায্যের পরিবর্তে কুফরি শাসনব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও স্থিতিশীল করে। কিন্তু এরপরও আমরা গণতন্ত্রে অংশ নেওয়া প্রত্যেক ব্যাক্তিকে অবশ্যই কাফের মনে করি না।
2. গণতন্ত্রে অংশ নেওয়া দ্বীনি, “দ্বীনি ফায়দা” এর জন্য গণতন্ত্রে অংশ নেওয়ার অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দেয়, যেমন- মাদ্রাসাগুলোর সুরক্ষা, পার্লামেন্টের মাধ্যমে ধর্মহীনতার বন্যাকে বাঁধ দেওয়া অথবা গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামী শরীয়তকে প্রতিষ্ঠা করা ইত্যাদি... দ্বীনের সেবা অথবা শরীয়ত প্রতিষ্ঠার জন্য পার্লামেন্টে বসার এসব ব্যাখাকে আমরা বাতিল মনে করি, কিন্তু এসব কারণে না আমরা তাদের তাকফির করি, আর না তাদেরকে টার্গেট বানানো আমরা জায়েজ মনে করি। তা সত্ত্বেও, যেহেতু তাদের কাজ কুফুরি শাসনব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে; আমরা দাওয়াতির মাধ্যমে তাদেরকে এ হারাম কাজ থেকে দূরে রাখার সব ধরনের চেষ্টা করবো।
৩. এসব জামা’আতের সৎকাজের আদেশ এবং অসৎকাজের নিষেধের মত নেক কাজে আমরা খোলাখুলি পৃষ্ঠপোষকতা করবো এবং গণতান্ত্রিক খেল-তামাশা এবং অন্যান্য ভুল ত্রুটির ব্যাপারে প্রকাশ্য সমালোচনা ও নসিহত করবো।
দ্বাদশ অনুচ্ছেদঃ সাধারণ দ্বীনি সংগঠনগুলোর সাথে
১। যেসব জামাআত সমাজে দাওয়াত ও তাবলীগ এবং ইসলাহের কাজ করে, তাদেরকে আমরা নিজেদের ভাই এবং শরীয়ত প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমাদের সাথী মনে করি।
২। আমরা তাদের সকল ভালো কাজের প্রশংসা করি এবং যখনই সামর্থ্য হয়, তাদের ভালো কাজে সহযোগিতা করার প্রত্যাশা রাখি।
৩। পাশাপাশি আমরা তাদেরকে জিহাদে সহযোগিতা ও নুসরতের দাওয়াত ও প্রেরণা দেই এবং শরীয়তের সকল ফরজ আদায় করার জন্য আহ্বান করি।
৪। আমাদের প্রচেষ্টা হলো– এই ভূখণ্ডে থাকা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ’র সকল আদর্শিক চিন্তাধারাকে, শরীয়ত প্রতিষ্ঠার জন্য শরীয়তের শত্রুদের বিরুদ্ধে, ইসলামী ইমারাত আফগানিস্তানের পতাকাতলে একত্র করা; তাদেরকে ফুরুয়ী ইখতিলাফ থেকে বের করে উম্মতের সামগ্রিক ও বুনিয়াদী বিষয়ের উপর ঐক্যবদ্ধ করা, যেন শরীয়তের শত্রুদের মোকাবেলায় এই উম্মাহ এক সীসাঢালা প্রাচীর হয়ে যায়।
ত্রয়োদশ অনুচ্ছেদঃ উলামায়ে দ্বীনের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান এবং আচরণবিধি
এই ভূখণ্ডের উলামায়ে কেরাম ও মাদ্রাসাগুলোকে জামাআত কুফরি শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য জিহাদের মূল শক্তি মনে করে এবং তাদের ব্যাপারে নিম্নে বর্ণিত পদক্ষেপগুলো নিজেদের জন্য আবশ্যক মনে করেঃ
১। উলামায়ে কেরাম ইসলামী সমাজের মুক্তাদা ও পথপ্রদর্শক। তাঁদের আনুগত্য ও নির্দেশনার মাধ্যমেই শরীয়ত এবং ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তাঁদের সম্মান করা এবং সমাজে তাদের সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও তা রক্ষা করা, আমরা নিজেদের দায়িত্ব মনে করি। যেন তারা আল্লাহর শরীয়ত প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন এবং আল্লাহর কিতাবকে পার্লামেন্টের মুখাপেক্ষী না বানান।
২। আল-কায়েদা উপমহাদেশ, বিশেষভাবে হক্বপন্থী আলেমদের এবং দ্বীনি মাদ্রাসাগুলোর প্রতিরক্ষা নিজেদের অগ্রগণ্য দায়িত্ব মনে করে। এরই ধারাবাহিকতায় জামাআত নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাঁদের উপর সরকারি অথবা বেসরকারি সব ধরনের আগ্রাসন বন্ধে এবং তাঁদের উপর আসা যে কোনো ধরনের নির্যাতনের প্রতিশোধ গ্রহণে বদ্ধপরিকর ইনশাআল্লাহ।
৩। আমরা আমাদের সমস্ত জিহাদি সফর হক্বপন্থী উলামায়ে কেরামের নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে পরিচালনা করবো। এজন্য উলামায়ে কেরামের সাথে মজবুত যোগাযোগ রক্ষা করার এবং ইলমী সমস্যায় তাঁদের দিকনির্দেশনা গ্রহণ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
৪। জামাআত উলামা ও মাদ্রাসাগুলোর শক্তির উৎস হয়ে তাঁদেরকে বৃটিশ শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে মজবুত হওয়ার জন্য শক্তি যোগাবে ইনশাআল্লাহ।
৫। যেসব আলেম সমাজে কোনো ধরনের ইসলাহ ও তারবিয়াতের কাজ সম্পাদন করছেন, জামাআত সামর্থ্য অনুযায়ী তাঁদের সম্ভাব্য সবরকম সহযোগিতা করবে এবং কোনো এলাকা বিজয় করলে, এজাতীয় কাজের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা করবে ইনশাআল্লাহ।
৬। জামাআত আলেম ও তালিবুল ইলমদেরকে জিহাদের সারিতে শামিল করার ইচ্ছা পোষণ করে, যেন তাঁরা এই জিহাদকে দ্বীনি ও দুনিয়াবি সফলতার দিকে নিয়ে যেতে পারেন।
৭। ‘উলামায়ে সূ’ হলো ঐসব আলেম, যারা দুনিয়ার তুচ্ছ পদমর্যাদা ও ধনসম্পদের জন্য ইলমকে বিক্রি করে নিজেদের পেট জাহান্নামের আগুন দিয়ে ভরে এবং মানুষকে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীয়ত থেকে দূরে রাখে। এদের বাস্তবতা আমরা মানুষের সামনে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরবো এবং এদের সরকারি ফাতওয়ার জবাব আমরা শরীয়তের ইলমের আলোকে প্রদান করার চেষ্টা করবো। যদিও আল্লাহর রাস্তার মুজাহিদদের অন্তর কাফের ও মুরতাদদের থেকে এরাই বেশি জখম করে, তবুও তাদের হত্যা বা বন্দী করা থেকে আমরা বিরত থাকবো, যতক্ষণ না আমাদের কাছে এমন কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থিত হয় যে, তারা শরীয়ত প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে।
চতুর্দশ অনুচ্ছেদঃ মাযহাবী ও ফিকহী পার্থক্যের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান
১। মাযহাবী ‘তাআস-সুব’ ও সঙ্কীর্ণতা (হানাফী ও সালাফী অথবা হায়াতি ও মামাতি ইত্যাদি) এবং এর উপর ভিত্তি করে অহেতুক তর্ক-বিতর্ক ও দলাদলিকে আমরা মুসলিম উম্মতের ঐক্যের জন্য ক্ষতিকর মনে করি। এজন্য আমাদের প্রচেষ্টা হলো, উম্মতকে ফুরুয়ী ইখতিলাফের বাড়াবাড়ি থেকে বের করে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ’র সামগ্রিক ও বুনিয়াদী বিষয়ের উপর ঐক্যবদ্ধ করা, যেন শরীয়তের শত্রুদের মোকাবেলায় এই উম্মত সীসাঢালা প্রাচীর হয়ে যায়।
২। এই বিষয়ে প্রত্যেক মাযহাবের অনুসারীদেরকে নিজ মাযহাবের হক্বপন্থী ও ভারসাম্যপূর্ণ উলামায়ে কেরামের সাথে লেগে থাকা, তাঁদের নির্দেশনা নেয়া এবং তাঁদের রচনা ও ফাতওয়া ইত্যাদি থেকে ফায়দা নেয়াকে আমরা জরুরী মনে করি। যেন ইলমী বিষয়ে নিজেই ইজতিহাদ করা, নিজের ইজতিহাদের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া এবং শরীয়তকে প্রবৃত্তির খেয়াল খুশির অনুগামী বানানোর মত ধ্বংসাত্মক ব্যাধি থেকে বাঁচা যায়।
আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে জিহাদের হক্ব আদায় করার তৌফিক দিন, আমাদেরকে এবং আমাদের জিহাদকে দ্বীনের দুশমনদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কারণ এবং মুসলমানদের জন্য কল্যাণ ও রহমতের কারণ বানিয়ে দিন। আমীন।
আল্লাহই সকল কল্যাণের তৌফিকদাতা।
আমাদের সর্বশেষ কথা হলো, সকল প্রশংসা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য এবং সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক নবী করীম ও তাঁর বংশধর এবং সাহাবিদের উপর।
জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ উপমহাদেশ।
শাওয়াল ১৪৩৮ হিজরী মোতাবেক জুন ২০১৭ ঈসায়ী।
শাওয়াল ১৪৩৮ হিজরী মোতাবেক জুন ২০১৭ ঈসায়ী।
আরও পড়ুন
৮ম পর্ব
Comment