আল-ক্বাদিসিয়াহ মিডিয়া পরিবেশিত
বাংলায় অনূদিত আস-সাহাবের মুক্তিপ্রাপ্ত ভিডিও
ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ
-শাইখ উসামা বিন লাদেন (রহিমাহুল্লাহ) এর বক্তব্যের অনুলিখন||
এর থেকে = ১ম পর্ব
==================================================
=====
বাংলায় অনূদিত আস-সাহাবের মুক্তিপ্রাপ্ত ভিডিও
ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ
-শাইখ উসামা বিন লাদেন (রহিমাহুল্লাহ) এর বক্তব্যের অনুলিখন||
এর থেকে = ১ম পর্ব
==================================================
=====
সকল প্রশংসা আল্লাহর। আমরা তাঁর প্রশংসা করি, তাঁরই সাহায্য চাই, তাঁর কাছেই ক্ষমা প্রার্থনা করি, এবং আমরা আমাদের স্বীয় নফসের ক্ষতি ও বদ আমল থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি। যাকে তিনি হেদায়েত করেন তাকে কেউ গোমরাহ করতে পারে না এবং যাকে তিনি গোমরাহ করেন কেউ তাকে হেদায়েত করতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ যার ইবাদতের যোগ্য কোন ইলাহ নেই, তাঁর কোন শরিক নেই এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ সা: তাঁর বান্দা ও রাসূল।
শুরু করছি:
আমার মুসলিম উম্মাহ: আমার এই কথাগুলো আপনাদের জন্য, আর পবিত্র ভূমিতে আমাদের পরিবার গুলোকে বাঁচানোর জন্য যা অবশ্য কর্তব্য তার আকুতি থেকে লেখা, কারণ আমরা ইতমধ্যেই তাদের সাহায্যার্থে অনেক দেরী করে ফেলেছি, ফলশ্রুতিতে আমাদের করণীয়গুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে, হয়ে পড়েছে আরও কষ্টসাধ্য এবং জটিল।
আর কতদিন ফিলিস্তিনে আমাদের পরিবারগুলো ভয়-ভীতির মধ্যে বসবাস করবে যখন আমরা নিরাপদে ঘুমুতে যাই যে নিরাপত্তাবোধ অনেকাংশেই মিথ্যা এবং অস্থায়ী? আর কতদিন গাজা অধিবাসী অবরোধের বেড়াজালে আটকে থাকবে যখন আমরা বর্তমান সময়ের জন্য হলেও আরাম-আয়েশ ও বিলাস-ব্যাসনে মত্ত হয়ে আছি? আর কতকাল আমরা নিষ্ক্রিয় বসে থাকব যখন তাদের সন্তানদের জন্য তাদের হৃদয় পুড়ছে, আরব সরকারদের সহযোগীতার আঁতাতে যাদের হোয়াইট ফসফরাস বোম দিয়ে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, যার ভয়াবহতা ও ব্যাপকতা অবলোকন করে অনেক সাহসী বিক্রমশালী পুরুষের চোখেও পানি ঝরেছে। এর ব্যাপকতা নিয়ে দেয়া হাজারো ভাষণের চেয়ে তাদের কান্না অনেক বেশি আবেগী এবং ভাব প্রকাশে সক্ষম।
অতি আপনজনের কাছ থেকে পাওয়া ছুরির আঘাত তো আরও ভয়ঙ্কর
একজন মানুষের জন্য তরবারীর আঘাতের চেয়েও
এই বিষয়টি এখন আর অবাক করে না যে, আমাদের কিছু মা বা বোনেরা গাজাতে মৃত্যু বরণ করেছেন বা মৃতপ্রায়, বুলেট বা বোমের আঘাতে নয়, অবরোধের কারণেও নয়, কারণ বাচ্চারা যদি অবরোধের এই পাশেই থাকে তবে তা কোন সমস্যা নয়; কিন্তু সমস্যা তখনই হয় যখন অবরোধ সেদিনই হয় যেদিন সে হারিয়ে গেছে। আর একজন মায়ের কাছে বাদশাহ এবং তার সমস্ত বাদশাহী সম্পদও তার নিজের ছোট্ট সন্তানের তুলনায় কিছুই নয়, কিন্তু ইহুদিদের হাতের আমেরিকান বিমানগুলো বারংবার বোমা বর্ষণ করে যেতেই থাকে, আর আশেপাশের ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের কোমল প্রাণ ছিনিয়ে নিতে থাকে; এটাই আমাদের মা বোনদের ভয়ার্ত করে তুলে, প্রতি নি:শ্বাসে তারা মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করে। শোনা কখনই দেখার সমতুল্য নয়, আর একমাত্র সেই এই ব্যাথ্যা অনুধাবন করতে পারবে যার ছোট্ট সোনার টুকরাকে এভাবে তার কোল থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে, আর একমাত্র সেই অনুভব করতে পারবে বোমা বর্ষণ কি জিনিস যে কখনও তার শিকার হয়েছে; আর জালিমদের থেকে প্রতিশোধ নেবার কোন মু’তাসিম নেই।
এটা অবশ্যই আমাদের পরিষ্কার করা উচিত যে, যারা এই হত্যাযজ্ঞের জন্য একত্রিত হয়েছে তাদের ‘গাজা হোপ’-এর নামে প্রশংসা করা নি:সন্দেহে একটি মনস্তাত্বিক পরাজয় এবং দ্বীন, উম্মাহ ও শহীদানের রক্তের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা যেখানে এর সম্ভ্রান্ত অধিবাসীরাই দ্ব্যার্থহীন ভাবে তা অস্বিকার করে আসছে।
গাজার যুবকেরা মৃত্যুবরণ করেছে যেন গাজা বেঁচে থাকে
আর যারা বেঁচে আছে তারা তো কুফ্ফারদের প্রশংসা শুনে প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলছে
লোকেরা তো তাদের বর্শায় ভর করেই মুক্তি পেয়েছিল
কাজেই বর্শার ভয় দেখি য়ে কিভাবে তাদের দাস বানিয়ে রাখা যাবে?
আর তারা তোমাদের যে দু:খ কষ্টের মধ্যে ফেলেছে
তা আমার হৃদয়ে গভীর ক্ষত হয়ে আছে
মজলুমদের মতো আর কেউই দ্বীনকে আঁকড়ে ধরে রক্ষা করে না
অন্য কেউই এমনভাবে অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করে না, নাগালও পায় না
যারা ক্ষমতার মসনদে তারা এই কারণগুলো বিক্রয় করে দিয়েছে
আর কুফ্ফারদের গোলামে পরিণত হয়েছে
আর যারা তোমার সন্তানদের তোমাদের কাছে থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে
তার হৃদয় আর পাষাণে কি কোন পার্থক্য আছে?
আমাদের শাসকদের হৃদয়ও তো আমাদের শত্রুদেরই মতো
হোক না তা নাজদ বা মিশর, তারা কখনই নম্র নয়
সময়ের পরিক্রমায় ফেরাউনরা আবার ফিরেছে
আরব সন্তানদের অপমানিত করতে আর দাসত্বের শৃঙ্খলে বাঁধার মানসে
তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে আমাদের শত্রুদের সাহায্য করছ
তাই তোমাদের গর্দানে আঘাত করা এখন আমার দ্বীনি কর্তব্য
আর যারা বেঁচে আছে তারা তো কুফ্ফারদের প্রশংসা শুনে প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলছে
লোকেরা তো তাদের বর্শায় ভর করেই মুক্তি পেয়েছিল
কাজেই বর্শার ভয় দেখি য়ে কিভাবে তাদের দাস বানিয়ে রাখা যাবে?
আর তারা তোমাদের যে দু:খ কষ্টের মধ্যে ফেলেছে
তা আমার হৃদয়ে গভীর ক্ষত হয়ে আছে
মজলুমদের মতো আর কেউই দ্বীনকে আঁকড়ে ধরে রক্ষা করে না
অন্য কেউই এমনভাবে অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করে না, নাগালও পায় না
যারা ক্ষমতার মসনদে তারা এই কারণগুলো বিক্রয় করে দিয়েছে
আর কুফ্ফারদের গোলামে পরিণত হয়েছে
আর যারা তোমার সন্তানদের তোমাদের কাছে থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে
তার হৃদয় আর পাষাণে কি কোন পার্থক্য আছে?
আমাদের শাসকদের হৃদয়ও তো আমাদের শত্রুদেরই মতো
হোক না তা নাজদ বা মিশর, তারা কখনই নম্র নয়
সময়ের পরিক্রমায় ফেরাউনরা আবার ফিরেছে
আরব সন্তানদের অপমানিত করতে আর দাসত্বের শৃঙ্খলে বাঁধার মানসে
তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে আমাদের শত্রুদের সাহায্য করছ
তাই তোমাদের গর্দানে আঘাত করা এখন আমার দ্বীনি কর্তব্য
আমার মুসলিম উম্মাহ: ফিলিস্তিন অবরোধের ৯০ বছরেরও বেশি অতিক্রান্ত হয়েছে, আর এ সময় তারা খ্রিষ্টান ও ইহুদীদের হাতে দুটি তিক্ততম স্বাদ আস্বাদন করেছে। প্রতিনিয়ত সম্মেলন, প্রদর্শনি এবং অনুষ্ঠানাদি এর মাধ্যমে করা অতীতেরে সকল প্রচেষ্টা সত্তেও অধিগ্রহন চলছে। তাই আমার উম্মাহ, আপনাদের কাছে আমি কয়েক মিনিট সময় চাইছি যাতে আপনাদের সামনে গাজার স্বাধীনতা প্রাপ্তির জন্য কিছু বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ তুলে ধরতে পারি, যাতে আমার উপর ন্যস্ত কর্তব্য সমাধা করতে পারি এবং এই উম্মাহকে উৎসাহিত করতে পারি। আর সে জন্য প্রয়োজন সত্য বলার যদিও তা তিক্ত শোনায়, আর এও জরুরী যে তা যেন দূর্বল ও উচ্চ পর্যায়ের লোক – সবার জন্যই প্রযোজ্য হয়, হোক না তা শক্ত-ভারী; এর অন্যথায় তা শুধুই ধ্বংসের দিকে ধাবিত করবে, তাই সাবধান! রাসূলাল্লাহ সা: বলেছেন,
قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا هَلَكَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ أَنَّهُمْ كَانُوا إِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الشَّرِيفُ تَرَكُوهُ، وَإِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الضَّعِيفُ أَقَامُوا عَلَيْهِ الْحَدَّ
“তোমাদের পূর্ববর্তীগন এই কারণেই ধ্বংস হয়ে গেছে যে, যখন তাদের মধ্যে সম্ভ্রান্তরা চুরি করত তখন তারা তাদের ছেড়ে দিত, কিন্তু দূর্বল কেউ চুরি করলে তার উপর হদ (শারিয়ী শাস্তি)প্রয়োগ করত।” [সম্মতিক্রমে]
আমার মুসলিম উম্মাহ: তিক্ত কিছু সত্য আপনাদের সম্মুখে স্বীকার করতেই হচ্ছে যে, গাজায় আমাদের পরিবারগুলোকে বাঁচানোর এবং তাদের উপর আরোপিত অবরোধ তুলে ফেলার জন্য আমাদের শত আন্তরিক চেষ্টা সত্ত্বেও আরও অনেকে আছেন যারা এই ব্যাপারে আমাদের চেয়ে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন আমি বলতে চাচ্ছি আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের কথা, পশ্চিম তীর সহ কিন্তু তাতেও তারা তাদের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের সাহায্যার্থে তেমন কিছু করতে ব্যার্থ হচ্ছে, তার একটি সুস্পষ্ট কারণ হচ্ছে: তাদের দেশগুলো পরাধীন এবং ইহুদি জায়নিষ্ট সেনাদলের সাথে আব্বাসের অধিভূক্ত সেনাবাহিনী তাদের এই কাজে বাঁধা দিচ্ছে।
একই কারণেও আমরা আমাদের পরিবারগুলোকে সাহায্য করতে পারছি না। তিক্ত সত্য এই যে, আমাদের দেশগুলো আভ্যন্তরিন শক্তি দ্বারাই পরাধীন হয়ে আছে, আরব জায়নিষ্ট এই অঞ্চলের শাসকগোষ্ঠি, যারা শত্রুদের প্রতিনিধি, আর তাদের সৈন্যবাহিনী দ্বারা মদদপুষ্ট হয়ে আমাদের এই দূর্বল এবং মজলুম ভাইদের সাহায্য করতে দিচ্ছে না।
কাজেই যতদিন পর্যন্ত আমাদের এই বোধোদয় না হচ্ছে যে, আমাদের নিজেদের দেশগুলো নিজেদের শাসকদের নিজ স্বার্থ এবং যারা তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে তাদের স্বার্থের কাছে পরাধীন হয়ে আছে, এবং আমাদের শাসকেরা তাদের প্রভুদের সেনাবাহিনী এবং সাদা পোষাকে পুলিশ বাহিনী দিয়ে সহায়তা করছে, এবং আরও ভয়ঙ্কর তাদের পোষা তাগুতের গোলাম আলেম, বুদ্ধিজীবি শ্রেণী ও কিনে নেয়া মিডিয়ার সাংবাদিক যারা উম্মাহকে বিভ্রান্ত করছে, ক্ষতিগ্রস্থ করছে, প্রতি পদক্ষেপে শাসকদের গোলামীর দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে, কুফ্ফারদের শক্তিশালী করছে যাতে করে তারা যেকোন সময় সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে উম্মাহকে লালসা ও ভীতি প্রদর্শন করে এমন দূর্বল করে দিতে পারে যে তারা মুক্তির জন্য কোন পদক্ষেপ না নিতে পারে ...
যতদিন আমাদের এই বোধোদয় না হবে, এবং তাদের ব্যাপারে সত্যগুলো প্রকাশ করে দিতে না পারব, তাদের ব্যাপারে সতর্ক করতে না পারব, তাদের সরিয়ে দিয়ে তাদের গোলামী থেকে নিজেদের মুক্ত করতে না পারব, ততদিন আমরা ফিলিস্তিনকে স্বাধীন করতে পারব না। যে ব্যাক্তির কাছে কিছুই নেই সে যেমন কিছু দান করতে পারবে না, তেমনি আমরাও সেই একই চক্রে ঘুরপাক খেতে থাকব যাতে আমরা এই পবিত্র ভূমির অধিগ্রহনের পর থেকে ঘুরপাক খাচ্ছি।
হে আমার মুসলিম উম্মাহ: যে কাছে থেকে ফিলিস্তিনের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন সে জানেন, স্বাধীনতার লক্ষ্য পূরনের জন্য জিহাদের যে দাবীগুলো আছে তা অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও এখনও পূরণ হয়নি, বিগত দশকগুলোর অবস্থা তাই নির্দেশ করে, বিশেষ করে সেখানকার পরিবারগুলোর উপর যে অবরোধ চাপানো হয়েছে, আর যখন তখন স্বাক্ষরিত ‘শান্তি’ চুক্তিগুলোর কথা নাই বা বললাম। এই কারণেই পর্যাপ্ত মুজাহিদীনের একটি দল গড়ে তুলতে হবে যাতে তারা ফিলিস্তিনে আমাদের পরিবারগুলোর উপর থেকে অবরোধ হটাতে পারে, কারণ সমস্ত আরব দেশগুলো ফিলিস্তিনের সাথে তাদের বর্ডার বন্ধ করে দিয়েছে এবং সেখানে মুজাহিদীনদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করে দিচ্ছে; তারও বেশি, ফিলিস্তিদের উত্তর সীমান্তে লেবানন বর্ডার থেকে যেমন আশা করা হয়েছিল, হাসান নাসরুল্লাহ এবং তার দল ১৭০১ সালের অনুবন্ধে তাও বন্ধ করে দিয়েছে, যেটা কিনা হাজার হাজার ক্রুসেডারদের দ্বারা ইহুদীদের নিরাপত্তা বিধানে সহায়ক হবে। এভাবেই দেখা যায় হাসান বা হোসনে কারও মধ্যেই কোন তফাত নেই, যেমন নেই বাকি আরব পুতুল সরকারদের মধ্যে, যারা আমাদের পরিবারগুলোকে ফিলিস্তিনে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
উপরের আলোচনা অনুযায়ী, আমাদের এই আরব বেষ্টনীর মধ্যে থাকা দেশগুলোর বাইরে অন্য কোন বর্ডার খুঁজতে হবে যেখান দিয়ে মুজাহিদীনরা দলে দলে চলতে পারবে, যাতে করে আমরা পবিত্র আল-আকসায় আমাদের পরিবার গুলোর কাছে পৌঁছাতে পারি; যারা সত্যিকার অর্থে সততার সাথে আল-আকসার মুক্তি চায় তাদের জন্য অত্যন্ত দূর্লভ এবং দামী সুযোগ হচ্ছে ইরাকের মুজাহিদীনদের সর্বস্ব দিয়ে সহায়তা করা যেন মেসোপটেমিয়া অবমুক্ত করা যায়। আর এর মাধ্যমে তারা দুটি দায়িত্ব সম্পাদন করতে পারবে: জর্ডানে প্রবেশেরে পূর্বেই জায়নিষ্টদের সবচেয়ে বড় সহযোগীকে পরাজিত করা, যেহেতু এইটাই সবচেয়ে চৌকস এবং বড় সেনাবহর, যার অর্ধেক হচ্ছে ফিলিস্তিনের বাসিন্দা যাদের পূর্বে এখান থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল; আর জর্ডান থেকে, দ্বিতীয় পদক্ষেপ হবে পশ্চিম তীরে আর তার আশেপাশের অঞ্চলে, আর বর্ডার গুলো সেনাদের জন্য খুলে দেয়া হবে যাতে প্রয়োজনীয় রসদের অভাব পূরণ করা যায়, যাতে আল্লাহর ইচ্ছায় নদী থেকে সমুদ্র পর্যন্ত পুরো ফিলিস্তিনকে মুক্ত করা যায়। তাহলে এটাই শরিয়া সম্মত এবং একই সাথে বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ, বেশিরভাগ বলছে যে সংলাপ আক্রমনের চেয়ে অনেক গুন ভাল যা কিনা শত্রু সেনাদের অস্ত্রের মোকাবেলায় দূর্বল এবং তাদের সেনাবাহিনীর ক্ষতি করতেও সক্ষম নয়।
অনেক হয়েছে আলোচনা আর সময় নষ্ট করা আর দায়িত্ব এড়িয়ে চলা: এই দীর্ঘ অবরোধে গাজায় চলমান গণহত্যা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন এবং ঐতিহাসিক ও স্পষ্ট দু:খজনক ঘটনা যা কিনা মুনাফিকদের থেকে মুসলিমদের পৃথক হয়ে যাওযার প্রয়োজনীয়তাকেই যর্থার্থ ভাবে প্রমান করেছে। গাজার পরে আমাদের অবস্থান আর কোন ভাবেই গাজা পূর্ব অবস্থানের ন্যায় হতে পারে না; বরঞ্চ তা দাবী করে সত্যিকারের আক্রমণ আর জিহাদের, সত্যকে প্রতিষ্ঠিত ও মিথ্যাকে অপসারিত করবার জন্য। আর সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহর নিকট আমাদের নিরাপধ সত্তাকে প্রমান করার জন্য তাদের থেকে পৃথক হবার মাধ্যমে যারা আল্লাহ শত্রুদের সাথে গাজায় একাত্ম হয়েছে। শত্রুদের এই সহযোগীদের থেকে পৃথক হওয়া এখন আর কোন ঐচ্ছিক বিষয় নয়, বরং তা তাওহীদের দুই ভিত্তির একটি।
মুসলিমদের বিরুদ্ধে কুফ্ফারদের সাহায্য করা একটি বড় ধরনের কুফর যা একজনকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। মহান আল্লাহ তাআ’লার এই আয়াত পড়ে দেখুন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَىٰ أَوْلِيَاءَ ۘ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ ۚ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ ﴿٥١﴾
“হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।” [৫:৫১]
لَا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ ۖ قَد تَّبَيَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَيِّ ۚ فَمَن يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِن بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَىٰ لَا انفِصَامَ لَهَا ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ﴿٢٥٦﴾
“দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্য-বাধকতা নেই। নি:সন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। সুতারাং যে ব্যক্তি তাগুতকে অমান্য করে এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাংবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন।” [২:২৫৬]
কাজেই এই চলমান ঘটনা আমাদের সকলের জন্যই পরীক্ষা: যে আল্লাহর হুকুম মেনে চলবে সে এতে সফলকাম হবে, আর যে তার ব্যাতিক্রম করবে সে অকৃতকার্য হবে। আমাদের এখন এমন একটি সৎ নেতৃত্ব দরকার যিনি জিহাদের ময়দানে যথেষ্ট পরিমান মুসলিমদের একত্রিত করতে পারবে। এই উম্মাহ এখন নেতৃত্বের অভাবে কাতর। যদিও উম্মাহর অনেক সন্তান এই বিশ্বাসে আছেন যে তারা এমন নেতৃত্বের অধীনে আছেন যারা তাদের নিরাপদ ভবিষ্যত উপহার দিবেন যদি তা রাজা বা প্রেসিডেন্টের মত প্রথম সারির না হলেও অন্তত দ্বিতীয় বা তৃতীয় সারির নেতৃত্ব কিন্তু সত্য তো এই যে, এটি একটি বড় ধরনের বিভ্রান্তি ছাড়া আর কিছুই নয় এবং সত্য গোপনের একটি অবলম্বন মাত্র, এবং ফিলিস্তিন নয় দশকেরও বেশি সময় ধরে এখনও অবরুদ্ধ, বরং তা ফিলিস্তিনের সীমানা পেরিয়ে এখন আরও বিস্তৃত, আর তার সাথে পর্যাপ্ত সংস্থাপন থাকা সত্ত্বেও দারিদ্র, অজ্ঞতা আর রোগ বালাই এর সম্প্রসারণের কথা নাই বা উল্ল্যেখ করলাম যা সেই বিভ্রান্তিকেই প্রমাণ করে। একটি জাহাজ যত বড় আর সুন্দরই হোক না কেন, একজন বিশ্বস্ত নাবিকের নেতৃত্ব ছাড়া তা কিছুতেই তীরে পৌঁছাতে পারে না।