Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ২৪ || “দাওয়াতে খিলাফত ও মানহাজে রাসূল ﷺ” ।। মাওলানা আসেম উমর হাফিযাহুল্লাহ || শেষ পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ২৪ || “দাওয়াতে খিলাফত ও মানহাজে রাসূল ﷺ” ।। মাওলানা আসেম উমর হাফিযাহুল্লাহ || শেষ পর্ব



    দাওয়াতে খিলাফতমানহাজে রাসূল ।।
    মাওলানা আসেম উমর হাফিযাহুল্লাহ||
    এর থেকেশেষ পর্ব

    ===================

    এগার.বিতর্কে প্রমাণভিত্তিক জবাবের পরিবর্তে অভিযোগমূলক জবাব দেয়া

    কখনো কখনো দাঈকে তার প্রতিপক্ষের জবাব দেয়া আবশ্যক হয়ে দাঁড়ায় কিন্তু বিতর্কের সময় এমন সুযোগ ও এতো সময় পাওয়া যায় না যে বিস্তারিত দলিল প্রমাণ দিয়ে বুঝাবে। অতঃএব এমন সংক্ষিপ্ত সময়ে তাকে প্রামাণ্য জবাবের পরিবর্তে অভিযোগমূলক জবাব দেয়াই উত্তম, অর্থাৎ যে অভিযোগ সে আপনার আন্দোলন সম্পর্কে করছে তার জবাব না দিয়ে উল্টো প্রশ্নের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তার কোন ত্রুটি দেখিয়ে তার মুখ বন্ধ করে দিন। কুরআনে কারীমের অনেক স্থানে এর উপমা বিদ্যমান। যেমন ইয়াহুদিদের সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন,


    وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُواْ بِمَا أَنزَلَ اللّهُ قَالُواْ نُؤْمِنُ بِمَا أُنزِلَ عَلَيْنَا

    অর্থাৎ যখন তাদেরকে বলা হয় যে, আল্লাহ তা’আলা যা অবতীর্ণ করেছেন তার ওপর ঈমান আনো, তারা বলে আমরা ঈমান এনেছি তার ওপর যা আমাদের ওপর নাজিল করা হয়েছে। [সূরা বাকারা-৯১] এর জবাবে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে কুরআনের সত্য হওয়ার প্রমাণ দেননি বরং এই বলে তাদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন-

    قُلْ فَلِمَ تَقْتُلُونَ أَنبِيَاء اللّهِ مِن قَبْلُ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ

    অর্থাৎ, তাহলে যদি ঈমানদার হয়ে থাক তোমরা তোমাদের নবীদেরকে কেন হত্যা করেছে । [সূরা বাকারা -৯১]

    এমনিভাবে ইয়াহুদিরা বলে, আমরা আল্লাহর প্রিয় এবং তার পুত্র। আল্লাহ তা’আলা তার জবাবে বলেন, মাহবুবতো তার হাবীবের সাক্ষাৎ কামনা করে, সুতরাং তোমরাও মৃত্যু কামনা করো যদি প্রকৃত সত্যবাদী হও।

    আপনার নিকট যদি সময় সংক্ষিপ্ত হয় এবং প্রশ্নকারীর উদ্দেশ্য সংশোধন না হয় বরং উদ্দেশ্য হলো সমালোচনা; তাহলে তার সাথে বিতর্কে জড়ানো এবং জ্ঞানগর্ব প্রমাণাদী দেয়া আপনাকে বিপদেই ফেলতে পারে। এ জন্য এমন পরিস্থিতিতে উল্টো তার ওপর প্রশ্ন উত্থাপন করে তাকে আত্মরক্ষামূলক পজিশনে নিয়ে যান এবং তাকে জিজ্ঞেস করুন যে, তুমি কোন মুখে প্রশ্ন করো যখন তোমাদের নিজেদের কার্যক্রমই এমন এমন।

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইসলামের ইতিহাসের প্রথম সারিয়্যা মক্কার দিকে প্রেরণ করলেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জাহাশ (রা.) কে তার আমির নিযুক্ত করলেন। এই সারিয়ায় সাহাবাদের হাতে এক কাফির নিহত হলো। এই ঘটনা নিষিদ্ধ মাসে সংঘটিত হলো। সাহাবায়ে কিরাম মনে করেছেন যে এখনো নিষিদ্ধ মাস আরম্ভ হয়নি। ঐ সময় পর্যন্ত নিষিদ্ধ মাসগুলোতে (রজব, জিলক্বদা, জিলহজ্জ মুহাররম) কিতালের অনুমতি ছিলো না। মক্কার কাফিরগণ আকাশ মাথায় উঠিয়ে ফেললো এবং বলতে লাগলো দেখো মুহাম্মদের সাথী সঙ্গীরা এখন সম্মানিত মাসগুলোরও সম্মান করে না।

    আল্লাহ তা’আলা নিজে এই কাফিরদের জবাব দিয়েছেন যে, তোমরা যারা একটি হত্যাকাণ্ডের ওপর এতটা চিৎকার-চেচামেচি করছো এবং তাৎক্ষণিক খুব আখলাক ও ভদ্রতার কথা বলছো, তোমরা নিজেদের আচলের দিকে চুপি চুপি তাকিয়ে দেখো যে তোমরা তো তারাই যারা নিজেরাও আল্লাহকে মানতে অস্বীকার করো এবং অন্যদেরকেও আল্লাহর পথে বাধা প্রদান করো। তোমাদের ভদ্রতার আলামত তো হলো এই যে তোমরা মুসলমানদেরকে মসজিদে হারামের মতো পবিত্র স্থান হতে এবং তাদের আবাসভূমি মক্কা থেকে বের করে দিয়েছো যা অবশ্যই যে কোন ভদ্র মানুষের জন্য সবচেয়ে লজ্জার কথা। সুতরাং তোমাদের কুফরী ও তোমাদের এই প্রতারণা সবচেয়ে বড় ফেতনা এবং ফেতনা হত্যার চেয়েও বড় অপরাধ। কাফিরদের এক প্রশ্নের উত্তরে আল্লাহ তা’আলা এই কাফিরদের এতোগুলো দোষ বর্ণনা করলেন যে তারা চুপ হয়ে যেতে বাধ্য হলো। এই ঘটনায় ঈমানদারদের জন্য এই শিক্ষা বিদ্যমান, যখন কাফির মুসলমানদেরকে প্রশ্ন করবে তখন ঈমানদারগণ তাদের সাথে মিলে তাদেরই বুলি না আউড়িয়ে বরং সে সময় মুসলমানদের আত্মরক্ষা করা উচিৎ। তবে যেখানে একে অপরের সংশোধনের ব্যাপার হয় সেখানে অভ্যন্তরীণভাবে নিজেদের মধ্যে অবশ্যই সংশোধন করা উচিত। হ্যা কোন মুসলমান প্রকাশ্যে মুরতাদ কাফির এবং কাদিয়ানীদের সাথে মিলে জিহাদ ও মুজাহিদদের সমালোচনা করা উচিত নয়। যে এমনটি করবে সে কাদিয়ানীদের আত্মাকে খুশি করলো এবং নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার প্রভু আল্লাহ তা’আলাকে কষ্ট দিল।



    বার.দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে দাওয়াত দেয়া

    দাওয়াতের ময়দানের যেই সতর্কতাসমূহ উপরে উল্লেখ করা হয়েছে এর দ্বারা কেউ আবার এই কথা বুঝবেন না যে দাওয়াতের মধ্যে দুর্বলতা প্রকাশ করা চাই, বরং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহস ও দৃঢ়তার সাথে মানুষের সামনে দাওয়াতকে উপস্থাপন করেছেন। যেমন মক্কার কাফিরদের দ্বিতীয় প্রতিনিধি দল যখন আবু তালেবের নিকট আসলো তখন চাচা আবু তালেব ডেকে পাঠালেন এবং অবস্থার ভয়াবহতা সম্পর্কে ধারণা দিলেন, যা শুনে মানবতার ইমাম রহমাতুললিল আলামীন এই শব্দসমূহ উচ্চারণ করলেন। হে চাচা! এই লোকেরা যদি আমার ডান হাতে সূর্য আর বাম হাতে চন্দ্র রেখে দেয় যেনো আমি দাওয়াত ছেড়ে দেই তাহলেও আমি তা ছাড়তে পারবো না হয়তো আল্লাহ তা’আলা এই দ্বীনকে বিজয়ী করবেন অথবা আমি থাকবো না আমাকে হত্যা করে দেয়া হবে।


    তের.পরীক্ষার মুখোমুখী হলে দৃঢ়পদ থাকা

    দ্বীনের দাওয়াত এবং পরীক্ষা একটি অপরটির সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ইমাম শাফিয়ী (রহ.) কে কেউ জিজ্ঞেস করল কোন দাঈ উত্তম? যার শুরুতেই বিজয় অর্জন হয়ে গেছে? না কি সে যিনি দুঃখ-কষ্ট ও বিপদাপদের সম্মুখীন হয়েছেন তার পরে তার বিজয় অর্জিত হয়েছে? ইমাম সাহেব (রহ.) উত্তর দিলেন যে-

    لايمكن حتى يبتلى والله تعالی ابتلى أولي العزم من الرسل فلما صبروا مكنهم

    অর্থাৎ, পরীক্ষা ব্যতীত বিজয় অর্জন অসম্ভব। আল্লাহ তা’আলা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আম্বিয়ায়ে কিরামকেও পরীক্ষায় অবতীর্ণ করেছেন। এ কারণেই তারা যখন (এই পরীক্ষায়) দৃঢ়তার প্রমাণ দিলেন তখনই আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে বিজয় দান করলেন।

    হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাকামে ইবরাহীমের পাশে নামাজ আদায় করছিলেন অমনি উকবা ইবনে আবী মুয়ীত উঠে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চাদর তার গলায় ফাঁস লাগিয়ে টান দিল এবং এত জোড়ে টানল যে তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপুর হয়ে পড়ে গেলেন। লোকজন চিৎকার করতে শুরু করল। তাদের ধারণা ছিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হত্যা করে ফেলা হয়েছে। হঠাৎ আবু বকর সিদ্দীক (রা.) রাগান্বিত অবস্থায় আসলেন এবং নবীজীর বাহুতে ধরে উঠালেন এবং কাফিরদের সম্বোধন করে বললেন, তোমরা কি একজন মানুষকে শুধু এজন্য হত্যা করবে যে সে বলে আমার প্রভু আল্লাহ। তারপরে লোকেরা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছ থেকে পৃথক হয়ে গেল এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও পুনরায় নামাজে মশগুল হয়ে গেলেন। নামাজ থেকে ফারেগ হয়ে নবীজী কুরাইশ সর্দারদের পাশ দিয়ে গেলেন যারা বাইতুল্লাহর ছায়ায় বসে ছিল এবং বললেন, হে কুরাইশের দল! ঐ সত্তার কসম যার কবজায় মুহাম্মদের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জান, আমাকে তোমাদের নিকট তোমাদেরকে জবাই করার জন্য পাঠানো হয়েছে এই বলে নবীজী কণ্ঠনালীর দিকে ইশারা করলেন।

    এই ছিলো অভিশপ্ত উকবা ইবনে আবী মুয়ীত হেরেমে সিজদা অবস্থায় যে নবীজীর উপর উটের নাড়িভুড়ি চাপিয়ে দিয়েছিলো। হযরত ফাতেমা (রা.) চার পাঁচ বছর বয়সের ছিলেন। তিনি দৌড়ে আসলেন এবং নবীজীর উপর থেকে নাড়িভুড়ি সরিয়ে দিলেন। আল্লাহ তা’আলা তার হাবীবকে বললেন


    فَإِن كَذَّبُوكَ فَقَدْ كُذِّبَ رُسُلٌ مِّن قَبْلِكَ جَآءُو بِٱلْبَيِّنَٰتِ وَٱلزُّبُرِ وَٱلْكِتَٰبِ ٱلْمُنِيرِ

    অর্থাৎ এজন্য তারা যদি আপনাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে, তাহলে আপনার পূর্ববর্তী রাসূলদেরকেও তো মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে। [সূরা আলে ইমরান -১৮৪]

    لَتُبْلَوُنَّ فِي أَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ وَلَتَسْمَعُنَّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلِكُمْ وَمِنَ الَّذِينَ أَشْرَكُوا أَذًى كَثِيرًا ۚ وَإِن تَصْبِرُوا وَتَتَّقُوا فَإِنَّ ذَٰلِكَ مِنْ عَزْمِ الْأُمُورِ

    অর্থাৎ তোমাদেরকে তোমাদের জীবন ও সম্পদ দ্বারা পরীক্ষা করা হবে। এবং আহলে কিতাব ও মুশরিকদের পক্ষ থেকে কষ্টদায়ক কথা অবশ্যই শুনতে হবে, এবং যদি তোমরা এই সকল কষ্ট ও কঠোর কথার মোকাবেলায় দৃঢ়পদ থাকো এবং তাকওয়া অবলম্বন করো তাহলে তা মজবুত কাজের মধ্যেই হবে।

    ইতিহাস সাক্ষী যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর জীবন উৎসর্গকারী সাহাবায়ে কিরাম এই দ্বীনকে দুনিয়াতে প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের শরীরকে রক্তাক্ত করেছেন। জলন্ত কয়লাকে নিজের শরীরের চর্বি দিয়ে ঠাণ্ডা করেছেন। ইসলামী আইনকে বিজয়ী করার জন্য নিজের ঘরবাড়ি ছেড়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সকল সাহাবায়ে কিরাম (রা.) কিতাল ফী সাবীলিল্লাহ করতে ছিলেন যতক্ষণ না আল্লাহ তা’আলা তার দ্বীনকে বিজয়ী করেছেন। আজ এই কথার খুবই প্রয়োজন যে খিলাফত প্রতিষ্ঠার দাওয়াতদাতা ব্যক্তি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতকে ধারণ করে, দাওয়াত ও কিতালকে সাথে নিয়ে চলবে। দিন-রাত এক করবে এবং এই পথে নিজের জীবনকে আল্লাহ তা’আলার নিকট সোপর্দ করে দেবে। জিহাদের পথে শাহাদাতের পিছনে ছুটে চলা এবং তা পেয়ে যাওয়া অনেক বড় সাফল্যের ব্যাপার।


    সমাপ্ত

    শেষকথা

    আল্লাহ তা’আলার বান্দাদেরকে মানুষের বানানো নিজামের ইবাদত থেকে বের করে আল্লাহ তা’আলার নিজামের দিকে ডাকা বাস্তবেই অনেক কঠিন কাজ, কিন্তু সকল নবী রাসূল এই উদ্দেশ্যের জন্যেই কষ্ট ও নির্যাতন সহ্য করেছেন। এজন্য আজও এই উদ্দেশ্যের জন্য যদি মুজাহিদদের কুরবানী দিতে হয়, পরীক্ষা ও জটিলতা এসে আঁকড়ে ধরে, তাহলে এটা আল্লাহ তা’আলার সুন্নাত; কিন্তু যদি এই সব কিছুর বিনিময়ে আমাদের মাওলা আমাদের ওপর রাজি হয়ে যান তাহলে এই সকল কঠোরতা সহ্য করা কোন দামি সওদা নয়। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মত যদি পরিপূর্ণ হেদায়েতের ওপর এসে যায়, আল্লাহ তা’আলার বিরুদ্ধে দাঁড় করানো তন্ত্র-মন্ত্রের বিরোধিতা ঘোষণা দিয়ে খিলাফত প্রতিষ্ঠার দিকে এসে যায়। আল্লাহ তা’আলার জমিনে আল্লাহ তা’আলার শরিয়ত প্রতিষ্ঠার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দুশমনদের সাথে কিতালের জন্য উঠে দাঁড়ায় তাহলে এই হিজরত, এই বিরহ, এই আঘাত যা দূরপাল্লার মিজাইল দ্বারা লেগেছে অথবা দুশমনের জুলম-নির্যাতনের দ্বারা এবং সেই আঘাতপ্রাপ্ত হৃদয় যা আপনজনদের কণ্ঠ ও কলম উপহার দিয়েছে। সব কিছু আনন্দচিত্তে কবুল। চারা গাছে ফুল ফোটানোর জন্য বাগানের কাঁটা সহ্য করেই যাবো। দাঈদের জন্য দুশমনের নিক্ষিপ্ত কাদায় কি করে আপত্তি হবে? পদ্মফুল কুড়াতে গেলে কাদা তো লাগবেই। যদি নিজের ব্যক্তিত্বের কুরবানী দিয়ে অন্যদের আরাম ও প্রশান্তি পৌঁছানোর সুন্নাত পৃথিবীতে না থাকে তাহলে মা-কে মা বলবো কিভাবে যিনি অন্যের জন্য নিজেকে মিটিয়ে দেন। সুতরাং জিহাদ ও খিলাফতের দাওয়াত দানকারীদেরকেও এই দাওয়াতের জন্য নিজেকে বিলীন করে দিতে হবে। নিজের বর্তমান উম্মতের ভবিষ্যতের জন্য এবং নিজের নির্ঘুম রাত উম্মতের ঘুমের জন্য যদি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গোলামদের ঘর বাঁচানোর জন্য নিজের ঘর উজার হয়ে যায় তাতে কী আসে যায়? রাহমাতুললিল আলামীনের উম্মতের শান্তি ও তৃপ্তির জন্য যদি নিজের ভুখ ও ক্ষুধা সহ্য করতে হয়। তাহলে সমস্যা কি? নিজের ঘর না বানাতে পারলাম কিন্তু উম্মতের বাচ্চা-কাচ্চাদের ঘর বেঁচে যাবে। কোথাও ইরাক ও সিরিয়া, কাবায়েল ও আফগানিস্তান বানাতে দেয়া যাবে না। তোমার জীবন অতি মূল্যবান নয়, মূল্যবান বানিয়ে লও। যারা জীবন মূল্যবান বানানোর প্রতিজ্ঞা করেছে, পথে নেমেছে তারা যেন প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করে, তারা যেন পথ থেকে ফিরে না আসে। যারা নগণ্য জীবনটা মূল্যবান-পথে বিলিয়ে দিবে, যারা প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করবে-তাদের জন্যই রয়েছে খোদায়ী ওয়াদা।

    ذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ

    বাস্তবেই এটা অনেক সফল সওদা যার মধ্যে কোন রকমের লোকসান নেই।

    وصلى الله على نبينا محمد و على اله و صحبه و سلم!

    ******

    [১. টিকা. তবে শ্লোগান ও প্রচারণা নির্ধারণের সময় একথা মনে রাখা চাই যে এই শ্লোগান ও প্রচারণা শরঈ সীমানায় থেকে শরীয়ত সমর্থিত ইহকালীন ও পরকালীন ফজিলত ও বরকতের বহিঃপ্রকাশের জন্য যেন হয়। সাধারন জনগণের মতো যারা শুধু দুনিয়াবী উপকার ও চাহিদাকেই সামনে রেখে নিজেদের শ্লোগান ও ওয়াদা ঠিক করে তাদের মতো যেন না হয়।]


    আরও পড়ুন
    ৫ম পর্ব

  • #2
    আল্লাহ তাআলা আমাদের আমলে পরিণত করার তাওফিক দিন, আমীন

    Comment

    Working...
    X