আন নাসর মিডিয়া পরিবেশিত
এই তো গাজা...
যা পশ্চিমের ঘুম কেড়ে নিয়েছে
|| সালেম আল শরীফ || এর থেকে
২য় পর্ব
===================
এই তো গাজা...
যা পশ্চিমের ঘুম কেড়ে নিয়েছে
|| সালেম আল শরীফ || এর থেকে
২য় পর্ব
===================
দ্বিতীয় মূল্যায়ন: শত্রুর প্রতিক্রিয়া নিয়ে
ইহুদী জায়নবাদী শত্রু সামরিক পরিকল্পনার অভাবে আছে। বাস্তবেও তারা পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও দুর্বল। তারা যুদ্ধের জন্য উপযুক্ত কৌশল তৈরিতে অক্ষম। তাদের শুধু আছে মূর্খতা আর ক্ষমতার বড়াই। তাদের পরিকল্পনা তাওরাতসহ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থের ‘জাতিগত নিধনের পাঠ্য’ থেকে উদ্ভূত। তাই ‘প্রস্থান স্ট্র্যাটেজি’ তথা পিছু সরে আসার কৌশল বলে যা বোঝায় সেটা তারা বোঝে না। যাই হোক এই অঞ্চলে তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই।
ইসরাঈলি দখলদাররা বুদ্ধিবৃত্তিতে পঙ্গু। অন্তরে তাদের অন্ধত্ব এবং কৌশলগতভাবে তারা অজ্ঞ। সে তার খুর দিয়ে নিজের কবর খনন করছে। এ কারণে সে প্রধানত দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে:
১. ক্রুসেডার পশ্চিমাদের সাহায্য চাইছে পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়ার জন্য।
২. বরাবরের মতো সামরিক কার্যক্রমের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে। কিন্তু প্রতিবারই দখলদাররা অতিরঞ্জিত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে, অত্যধিক মিথ্যাচার করছে, অপবাদ আরোপ করছে এবং প্রতিপক্ষকে দায়ী করছে। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমানেও দখলদাররা মানবাধিকারের সকল স্তর লঙ্ঘন করছে। বিপর্যস্ত পশ্চিমাদের ভঙ্গুর নীতিতেও এটা অন্যায়!
তাই কার্পেট বোমা বিস্ফোরণের ক্ষেত্রে নারী, শিশু ও বয়স্ক কেউই রেহায় পাচ্ছেন না। গাজায় আমাদের ভাই-বোনদের ধৈর্য আশ্চর্যজনক! এমনকি তাদের কষ্ট সহিষ্ণুতা দেখে যেন ধৈর্য নিজেই ধৈর্যের শিক্ষা নিচ্ছে!
হে ইহুদী অপরাধীরা! হে ইহুদীদের মিত্ররা! তোমাদের বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে না। ইনশাআল্লাহ তোমাদের ওপর এমন হামলা হবে, যা ফিলিস্তিনে তোমাদের অস্তিত্ব অবশিষ্ট রাখবে না।
পাঠক! আসুন আমরা দেখে নেই ফিলিস্তিনে শত্রুপক্ষ কি করতে চায়। এর জন্য আমাদের পেছনে তাকাতে হবে। ২০০৮ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে গাজায় আজকের গণহত্যার তুলনামূলক ক্ষুদ্র চিত্র দেখতে পাই। আর আজ ২০২৩ সালে পরিচালিত গণহত্যায় আমরা দেখতে পাচ্ছি পশ্চিমা নেতারা কেমন করে একে আশীর্বাদ দিচ্ছে।
(২০০৮ থেকে ২০০৯ সালে) ২৪ দিন সময়ের মধ্যে গাজায় কি ঘটেছে?
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এহুদ ওলমার্ট এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে এহুদ বারাকের নেতৃত্বে ইহুদীবাদী শত্রু রাবিদের আশীর্বাদ নিয়ে গাজা আক্রমণ করে। রাবিরা নারী, শিশু সকলকে হত্যার বৈধতা দিয়ে ফতোয়া ঘোষণা করে। রাবি মোর্দেচাই ইলিয়াহু; যাকে ইসরায়েলিদের মধ্যে জাতীয় ধর্মীয় আন্দোলনের প্রথম ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তিনি পদত্যাগকারী প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট এবং দখলদার সকল নেতাকে ‘ছোট বিশ্ব’ নামক সাপ্তাহিক পত্রিকায় একটি চিঠি পাঠান।
তাতে তিনি শিখিম বিন হমোরের গণহত্যার কাহিনী উল্লেখ করেন – যা জেনেসিস বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনা তাওরাতের ভাষ্য হিসেবে ইহুদীদেরকে এই অনুমতি দেয় যে, সামরিক নীতি অনুযায়ী শত্রুদেরকে গণহারে হত্যা করা বৈধ।
২০০৮-০৯ সালে গাজা আক্রমণের ‘মূল লক্ষ্য’:
আফগানিস্তান যুদ্ধে অজ্ঞ সাবেক আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বুশ কর্তৃক উত্থাপিত লক্ষ্যই ইসরাঈলের আগ্রাসনের লক্ষ্য। আর তা হচ্ছে: গাজার সরকারের উৎখাত। তার বদলে পশ্চিমের অনুকূল ও তাবেদার গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা। গাজা সরকারকে নিরস্ত্রীকরণ এবং এই অঞ্চলকে একটি উপনিবেশে রূপান্তর।
২০০৮-০৯ সালে গাজা আক্রমণে ‘আকাশ থেকে বোমাবর্ষণ’:
৬০টি বিমান প্রথম দিনে একশ টনেরও বেশি বোমা ফেলে। তারা নারী, পুরুষ, শিশু, সাধারণ নাগরিক – নির্বিশেষে ফিলিস্তিনি মুসলিম জনসাধারণকে শত্রু হিসেবে টার্গেট করে। নির্বিচারে সকলের ওপর বোমা বর্ষণ করে। দিন পার হতে থাকে আর তারা বাড়ি-ঘর, মসজিদ, দাতব্য ও সামাজিক সংগঠন, স্যাটেলাইট চ্যানেল, সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মী, ওষুধের দোকান, আল-শিফা হাসপাতাল, রাফাহ সীমান্ত চৌকি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি ভবন, জাবালিয়া ক্যাম্প, বেইত হ্যানন, বুরেজ ক্যাম্প, গ্যাস স্টেশন, স্কুল ও বিদ্যালয়—যার মধ্যে আছে জাবালিয়া ক্যাম্পে ইউএনআরডব্লিউএ-র স্কুল; যেটাতে ০৬ই জানুয়ারি ২০০৯ সালে সাদা ফসফরাস বোমা হামলা করা হয়—কোনো কিছুতে হামলা করতে তারা বাদ রাখেনি। এরপর ফিলাডেলফিয়া-সালাহ আল-দিন ক্রসিং, শেখ রাদওয়ান পাড়ায় একটি কবরস্থানেও তারা বোমা হামলা করে। শত্রুরা যুদ্ধের পুরো সময় জুড়ে ব্যাপক গণহত্যা চালায়।
২০০৮-০৯ সালে গাজা আক্রমণে ‘অবরোধ’:
ইহুদী বাহিনী গাজা উপত্যকায় অবরোধ আরোপ করে। পানি, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা ও নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। দখলদাররা মানবিক করিডোর খোলার জন্য যুদ্ধ বিরতির সমস্ত আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে। গাজা শহর অবরোধ করা হয় এবং গাজা উপত্যকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। বেত লাহিয়ার বাসিন্দাদেরকে বলা হয় শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য। এর ১৮ দিন পর মিসরের রাফাহ থেকে কিছু অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসক প্রবেশ করেন।
২০০৮-০৯ সালে গাজা আক্রমণে ‘মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’:
মিডিয়া ও গণমাধ্যম অঙ্গনে যুদ্ধের পাশাপাশি তারা মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ পরিচালনা করে। গাজার উপর লিফলেট ফেলে। ওই সমস্ত লিফলেটে কখনও শহর খালি করে দিতে বলে, কখনও সুনির্দিষ্টভাবে ফোন কল করে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সংবাদ দিতে বলে। আবার কখনও ফোন কল করে নাগরিকদেরকে তাদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়।
২০০৮-০৯ সালে গাজা আক্রমণে ‘গ্রাউন্ড অ্যাটাক’:
সেনাবাহিনী দশ হাজার রিজার্ভ সৈন্য তলব করে। পদাতিক, আর্টিলারি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিশেষ ইউনিট, যুদ্ধজাহাজ, ট্যাংক—এই সকল ইউনিটের অংশগ্রহণে অষ্টম দিনে আক্রমণ শুরু হয়। ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলায় গাজা উপত্যকা ধূলিসাৎ করে দেয়ার জন্য বিমান আসে। আল-তুফাহ পাড়া, আল-জায়তুন পাড়া এবং জাবালিয়া শহরের পূর্বে মারাত্মক সংঘর্ষ ও কামান দিয়ে গোলা বর্ষণ করা হয়। তবে দখলদার বাহিনী জাবালিয়া এবং উত্তর গাজার উপরিভাগে স্থলপথে অগ্রসর হতে ব্যর্থ হয় এবং তিনটি অক্ষ থেকে গাজা শহরের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। ২২ দিন পর দখলদার সরকার ঘোষণা করে যে, তারা যুদ্ধের সমাপ্তির কাছাকাছি। ২৩ তারিখে ওলমার্ট গাজা থেকে সৈন্যপ্রত্যাহার ছাড়াই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন এবং শেষ দিনে ওলমার্ট শর্ম সামিটের (শার্ম এল-শেখ শীর্ষ সম্মেলন) অংশগ্রহণকারীদের কাছে ইসরায়েলের সৈন্য প্রত্যাহারের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।
২০০৮-০৯ সালে গাজা আক্রমণে ‘নিরাপত্তা পরিষদের ভূমিকা’:
১৩ তারিখে রেজোলিউশন-১৮৬০ জারি করা হয়, যা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়।
২০০৮-০৯ সালে গাজা আক্রমণে ‘আরব রাষ্ট্রপুঞ্জের ভূমিকা’:
১৮ দিন পর আরব আমিরাত- শীর্ষ বৈঠকে অংশগ্রহণে সম্মত হয়। কি লজ্জার বিষয়! দোহায় জরুরি আরব শীর্ষ সম্মেলনের জন্য ১৫ টি দেশের অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। একটি মিশরীয় এবং একটি তুর্কি প্রস্তাবনাও উপস্থাপিত হয়।
নিরাপত্তা পরিষদ এবং আরব লীগ উভয়ই দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানে বিশ্বাস করে। কিন্তু তারা যেটা বিশ্বাস করে আমরা তাতে বিশ্বাস রাখি না। সাইকাস-পিকট (Sykes – Picot) চুক্তির কোনো সীমান্ত আমরা মানি না। তাছাড়া জিহাদ ফরয। আমাদের জনগণ প্রতিরোধের পথ বেছে নিয়েছে। অতএব সামরিক, রাজনৈতিক ও আর্থিক আগ্রাসনকারী শত্রুকে এমন প্রতিটি ভূখণ্ড থেকে বিতাড়িত করা ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ নেই, যেখানে একদিনের জন্য হলেও ইসলাম প্রতিষ্ঠিত ছিল। এ কারণেই মানুষকে দাওয়াতের জন্য অগ্রসর হওয়া… পৃথিবী এবং সারা বিশ্বে সকল মানুষকে ইসলামের দিকে দাওয়াতের জন্য আমাদের পথ চলা।
যেহেতু শত্রুপক্ষের প্রতিক্রিয়া এমনকি তাদের হৃদয়ের অন্ধত্ব এবং গণহারে হত্যার উন্মাদনা ইত্যাদি কোনো বিষয় অজানা ছিল না; সবকিছু জানাই ছিল যে তারা কি করবে? তাহলে আমরা এখন এই প্রত্যাশা করতে পারি যে, ২০২৩ এর এই ‘তুফানুল আকসা’ অভিযান বিজয় ও স্বাধীনতার পথে একটি মাইল ফলক হবে। ইনশাআল্লাহ পরবর্তীতে এই অভিযানের সুফল দেখা যাবে।
আমরা যাদেরকে শহীদ হিসেবে ধারণা করি ২০০৮ সাল থেকে ২০০৯ সালে তাদের সংখ্যা ছিল ১২৮৫। ৪৩৭ জনের অধিক শিশু, ১১০ জনের অধিক নারী, ১২৩ জনের অধিক বয়স্ক, ১৪ জন চিকিৎসা কর্মী ও চিকিৎসক, চারজন সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী ছিলেন। আর আহতদের সংখ্যা পৌঁছে ছিল ৪ হাজার ৮৫০ জনে। অতএব ২০২৩ সালের ঘটনা নতুন কিছু নয়।
২০২৩ সালের যুদ্ধের ঘোষিত লক্ষ্য:
হামাস সরকারকে উৎখাত করা, তার সামরিক ক্ষমতা ধ্বংস করা, নিজেদের বন্দী মুক্ত করা, তাদের প্রতি অনুগত সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, বিমান দিয়ে বোমা হামলার মাধ্যমে দমবন্ধ অবরোধ আরোপ এবং স্থল যুদ্ধ। বর্তমানে (২০২৩ সালে) শহীদানের সংখ্যা হবে পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি। শত্রু পরিচালিত গণহত্যা হবে আরও বড়। এ ব্যাপারে পশ্চিমা বিশ্বের মৌন সমর্থন, তাদের আগ্রহ, আরব ও মুসলিম-দেশের সরকারগুলোর নীরবতা হবে আরও সুস্পষ্ট কলঙ্কজনক। আরবরা ইহুদী শত্রুদের সঙ্গে জোটবদ্ধতার কারণে নীরব থাকবে। এই সকল অবস্থায় একমাত্র আল্লাহর প্রতি আস্থা ও ভরসাই হবে আমাদের আসল পুঁজি। জনগণকে নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা সর্বদাই জাগ্রত থাকবে, কারণ আমরা এক উম্মাহ।
তৃতীয় মূল্যায়নঃ যুদ্ধবাজ এবং যুদ্ধাপরাধীদেরকে নিয়ে
মুজাহিদ দলের মুখপাত্রদের ছবি যখন স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর পর্দায় ভেসে ওঠে, তখন সত্যিই আশার উদয় ঘটে। যদিও তাঁদের চেহারা মুখোশ দিয়ে ঢাকা থাকে কিন্তু তার পেছনের চোখগুলো অনেক নীরব বার্তা দিয়ে যায়। সেই চোখ থেকে সর্বপ্রথম আমরা ওই ঈমানের দ্যুতি ঠিকরে বের হতে দেখি, যা তাঁদের অন্তরে পরিপূর্ণ। রবের প্রতি আস্থা পোষণকারীদের বিশ্বাস তাঁদের কণ্ঠস্বরে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে। তাঁদের কথাগুলো গর্জনকারী অপ্রতিরোধ্য জোয়ারের মতো বয়ে চলে। তাঁদের কথার সত্যতা ও মাধুর্যতার কারণে অন্তর ও হৃদয়ের পূর্বে মস্তিষ্ক উন্মুক্ত হয়ে যায়। তাঁদের চক্ষু ও বাক্যগুলো প্রত্যয়, দৃঢ়তা, মায়া, ভালোবাসা, দূরদর্শিতা, সংকল্প ও সততা বহন করে। কারণ তাঁরা যুদ্ধের ময়দানের অশ্বারোহী, আবার জগতত্যাগী। তাঁরা সত্যের সিংহ আল্লাহর সৈনিক। আমি তাঁদেরকে বলবো: ইনশাআল্লাহ নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য আসন্ন। অবশ্যই তা আসবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ইরশাদ করেছেন:
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْۤا اِنْ تَنْصُرُوا اللّٰهَ يَنْصُرْكُمْ وَيُثَبِّتْ اَقْدَامَكُمْ
অর্থঃ “হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা দৃঢ়প্রতিষ্ঠ করবেন”। (সূরা মুহাম্মদ ৪৭:০৭)
আপনারা আল্লাহকে সাহায্য করুন! তাহলে আল্লাহ আপনাদেরকে সাহায্য করবেন এবং আপনাদেরকে দৃঢ়পদ রাখবেন।
আর যখন বানর ও শূকরের বংশধরদের ছবি স্যাটেলাইট টিভিতে উঠে আসে, নেতানিয়াহু – প্রতিরক্ষা মন্ত্রী – সেনাবাহিনীর মুখপাত্র- জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী এবং ফিলিস্তিনের ভূমিতে আগ্রাসনকারী অন্যান্য ইহুদী গর্দভের চেহারা যখন ভেসে উঠে, তখন আমরা ঘৃণা, বিদ্বেষ ও হিংসা ছাড়া আর কিছুই দেখি না। আমরা কেবল নোংরা কথা শুনি, যা তাদের কঠিন হৃদয় ও কলিজা থেকে বের হয়। তাদের সেই হৃদয়ে আছে অবিশ্বাস ও গাদ্দারী। আক্রমণের বিভীষিকায় কোটর থেকে তাদের নোংরা চোখ, মুখ থেকে তাদের হিংসা ভরা ঘৃণ্য জিভ এবং তাদের ফোলা ফোলা নাক থেকে শূকরের আওয়াজ বের হয়ে আসে। পরাজয় ও হতাশার ধুলোয় তাদের মুখ ঢেকে যায়। আল্লাহ বলেনঃ
وَوُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ عَلَيْهَا غَبَرَةٌ تَرْهَقُهَا قَتَرَةٌ أُولَٰئِكَ هُمُ الْكَفَرَةُ الْفَجَرَةُ
অর্থ: “অনেক মুখমণ্ডল সেদিন হবে ধুলি ধূসরিত। তাদেরকে কালিমা আচ্ছন্ন করে রাখবে। তারাই কাফের পাপিষ্ঠের দল।” (সূরা আবাসা ৮০:৪০-৪২)
এই ইহুদীদের না আছে কোনো বিশ্বস্ততা, না আছে সত্যবাদিতা।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
أَوَكُلَّمَا عَاهَدُوا عَهْدًا نَّبَذَهُ فَرِيقٌ مِّنْهُم ۚ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ
অর্থ: “কি আশ্চর্য, যখন তারা কোনো অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়, তখন তাদের একদল তা ছুঁড়ে ফেলে, বরং অধিকাংশই বিশ্বাস করে না।” (সূরা বাকারা ০২:১০০)
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَالَّذِينَ كَفَرُوا فَتَعْسًا لَّهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوا مَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ
অর্থ: “আর যারা কাফের, তাদের জন্যে আছে দুর্গতি এবং তিনি তাদের কর্ম বিনষ্ট করে দিবেন। এটা এজন্যে যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তারা তা পছন্দ করে না। অতএব, আল্লাহ তাদের কর্ম ব্যর্থ করে দিবেন।” (সূরা মুহাম্মদ, ৪৭:০৮-০৯)
আরও পড়ুন
১ম পর্ব
Comment