শেষকথা
বর্তমান মুসলিম সমাজের একটি ভুল ধারণার খণ্ডনে লেখাটি শুরু হয়েছিল। তাগুত শ্রেণী ও তাদের দালাল দরবারি মোল্লাদের অপপ্রচার-অপব্যাখ্যার ফলে মুসলিম সমাজে আজ ব্যাপকভাবে এ ধারণা গেঁড়ে বসেছে যে, ইসলাম শান্তির ধর্ম। কাউকে হত্যা করা ইসলাম পছন্দ করে না।
এ মহা ভ্রান্তি দূরীকরণের প্রচেষ্টারূপেই এ ক্ষুদ্র প্রয়াস। কি কি কারণে একজন মুসলমানকে হত্যা করা বৈধ বা আবশ্যক হয়ে পড়ে দলীল-প্রমাণসহ সংক্ষিপ্তাকারে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এখানে যেসব সূরত উল্লেখ করা হয়েছে হত্যার গণ্ডি এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়। আরও বিভিন্ন সূরত ও কারণ আছে। সকল সূরত একত্রে জমা করা উদ্দেশ্য নয়। মোটামুটি ইজমালি ও উসূলী ধারণা দেয়া উদ্দেশ্য। আশাকরি আল্লাহ তাআলার তাওফিকে এ কাজটি হয়েছে। আরো বিস্তারিত ফিকহ ফাতাওয়ার কিতাবাদিতে এবং উলামায়ে কেরামের কাছ থেকে জেনে নেয়া যেতে পারে।
যে বিভ্রান্তি দূর করার জন্য এ প্রয়াস শুরু হয়েছিল, এ লেখার দ্বারা আল্লাহ তাআলা যদি তার কিছুটাও দূর করে দেন তাহলেও আমি সার্থক। আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা তিনি যেন এ ক্ষুদ্র প্রয়াস কবুল করেন। একে আমার গুনাহ মাফ ও নাজাতের উসিলা বানান। আমীন।
এক নজরে রিসালার সারমর্ম
# ইসলাম কাউকে হত্যার অনুমতি দেয় না কথাটা ভুল। মুসলিম সমাজের দ্বীনি ও দুনিয়াবি মাসআলাহাত রক্ষার্থে শরীয়ত অনেককেই হত্যার অনুমতি দিয়েছে, বরং অনেককে হত্যা করা বাধ্যতামূলক করেছে।
# হত্যা শুধু ঐ তিন ব্যক্তির মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়, যাদের কথা এ হাদিসে এসেছে,
এ তিন ব্যক্তি ছাড়াও কুরআন হাদিসে আরো অনেককে হত্যার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এ হাদিসে যে তিনজনের কথা বলা হয়েছে তাদেরকে বিআইনিহি হত্যা করা জরুরী।
# অস্ত্র প্রয়োগ ইসলামী সমাজের স্থিতিশীলতা ও শান্তি শৃংখলা বজার রাখার জন্য জরুরী। প্রয়োজনে শরয়ী সীমারেখার মধ্যে থেকে জনসাধারণও অস্ত্র প্রয়োগ ও হত্যা করতে পারবে।
# আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকার ফরযে কিফায়া। সামরিক বেসামরিক সকল মুসলমানের উপর তা ফরয।
# মৌলিকভাবে মুসলিম হত্যাকে চার শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়,
১. হদরূপে হত্যা।
২. কেসাসরূপে হত্যা।
৩. دفع الصائلতথা জান-মাল ও ইজ্জত-আব্রু রক্ষার্থে হত্যা।
৪. সিয়াসত ও তা’যিররূপে হত্যা।
# নিম্নোক্ত মুসলিমদের উপযুক্ত শর্ত পাওয়া গেলে হদরূপে হত্যা করা হবে,
১. বিবাহিত যিনাকারী পুরুষ বা মহিলা
২. ডাকাত ও রাহজান
৩. সমকামি
৪. নামায তরককারী
৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটুক্তিকারী
প্রথম দুই শ্রেণীতে সকলে একমত। শেষের তিন শ্রেণী মতভেদপূর্ণ।
# নিরপরাধ কোনো মুসলিমকে অন্য কোনো মুসলিম ইচ্ছাকৃত হত্যা করলে হত্যার বদলে তাকেও কিসাসরূপে হত্যা করা হবে।
# কোনো মুসলিম অন্য কোনো মুসলিমের জান, মাল বা ইজ্জত আব্রুর উপর আঘাত হানলে এবং তাকে হত্যা করা ছাড়া জান, মাল বা ইজ্জত আব্রু রক্ষার উপায় না থাকলে তাকে হত্যা করে দেয়া হবে।
# মুফসিদ ফিল আরদ তথা যে ব্যক্তি যে দুনিয়াতে ফাসাদ করে বেড়াচ্ছে, হত্যা ছাড়া তার অনিষ্ট দমন সম্ভব না হলে সিয়াসতরূপে তাকে হত্যা করে দেয়া হবে। উক্ত ফাসাদ দ্বীনি দুনিয়াবি যা-ই হোক বিধান সমান।
নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের ফাসাদের কারণে হত্যা করা হবে,
১. যাদুকর: পুরুষ হোক মহিলা হোক। ধৃত হওয়ার পর তাওবা করলেও হত্যা করা হবে।
২. বিদআতিদের গুরু, যখন তাকে হত্যা করা ছাড়া অনিষ্ট দমন সম্ভব নয়।
৩. যিন্দিক; যে বাহ্যত মুসলমান, ভিতরে ভিতরে কাফের। ধৃত হওয়ার পর তাওবা করলেও হত্যা করা হবে।
৪. সমকামী, যখন সে তাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে।
৫. পশুর সাথে সঙ্গমকারী, যখন সে তাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে।
৬. যে ব্যক্তি তার মাহরাম মহিলার সাথে সঙ্গম করে।
৭. চোর, যদি বার বার চুরি করতে থাকে।
৮. শ্বাসরূদ্ধ করে হত্যাকারী বা ভারী বস্তু (যেমন পাথর ইত্যাদি) দিয়ে হত্যাকারী, যেগুলোতে কিসাস আসে না; যখন এমন হত্যাকাণ্ড একাধিকবার ঘটাবে।
৯. যে ব্যক্তি শাসকদের কাছে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করে লোকজনকে হত্যা করায়।
১০. একজন খলিফা বিদ্যমান থাকাবস্থায় বা একজনের হাতে খেলাফতের বাইয়াত হয়ে যাওয়ার পর অন্য ব্যক্তি নিজেকে খলিফা দাবি করলে এবং এ দাবি থেকে সরে না আসলে।
বর্তমান মুসলিম সমাজের একটি ভুল ধারণার খণ্ডনে লেখাটি শুরু হয়েছিল। তাগুত শ্রেণী ও তাদের দালাল দরবারি মোল্লাদের অপপ্রচার-অপব্যাখ্যার ফলে মুসলিম সমাজে আজ ব্যাপকভাবে এ ধারণা গেঁড়ে বসেছে যে, ইসলাম শান্তির ধর্ম। কাউকে হত্যা করা ইসলাম পছন্দ করে না।
এ মহা ভ্রান্তি দূরীকরণের প্রচেষ্টারূপেই এ ক্ষুদ্র প্রয়াস। কি কি কারণে একজন মুসলমানকে হত্যা করা বৈধ বা আবশ্যক হয়ে পড়ে দলীল-প্রমাণসহ সংক্ষিপ্তাকারে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এখানে যেসব সূরত উল্লেখ করা হয়েছে হত্যার গণ্ডি এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়। আরও বিভিন্ন সূরত ও কারণ আছে। সকল সূরত একত্রে জমা করা উদ্দেশ্য নয়। মোটামুটি ইজমালি ও উসূলী ধারণা দেয়া উদ্দেশ্য। আশাকরি আল্লাহ তাআলার তাওফিকে এ কাজটি হয়েছে। আরো বিস্তারিত ফিকহ ফাতাওয়ার কিতাবাদিতে এবং উলামায়ে কেরামের কাছ থেকে জেনে নেয়া যেতে পারে।
যে বিভ্রান্তি দূর করার জন্য এ প্রয়াস শুরু হয়েছিল, এ লেখার দ্বারা আল্লাহ তাআলা যদি তার কিছুটাও দূর করে দেন তাহলেও আমি সার্থক। আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা তিনি যেন এ ক্ষুদ্র প্রয়াস কবুল করেন। একে আমার গুনাহ মাফ ও নাজাতের উসিলা বানান। আমীন।
***
এক নজরে রিসালার সারমর্ম
# ইসলাম কাউকে হত্যার অনুমতি দেয় না কথাটা ভুল। মুসলিম সমাজের দ্বীনি ও দুনিয়াবি মাসআলাহাত রক্ষার্থে শরীয়ত অনেককেই হত্যার অনুমতি দিয়েছে, বরং অনেককে হত্যা করা বাধ্যতামূলক করেছে।
# হত্যা শুধু ঐ তিন ব্যক্তির মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়, যাদের কথা এ হাদিসে এসেছে,
لا يحل دم امرئ مسلم يشهد أن لا إله إلا الله وأني رسول الله إلا بإحدى ثلاث النفس بالنفس والثيب الزاني والمارق من الدين التارك للجماعة.
“যে মুসলমান স্বাক্ষী দেয়- আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই এবং আমি আল্লাহর রাসূল; তিন কারণের কোন একটা ব্যতীত তার রক্ত হালাল নয়: জানের বদলায় জান, বিবাহিত যিনাকার এবং মুসলমানদের জামাআত পরিত্যাগকারী দ্বীনত্যাগী (মুরতাদ)।” (সহীহ বুখারী: হাদিস নং ৬৪৮৪ , সহীহ মুসলিম: হাদিস নং ৪৪৬৮)এ তিন ব্যক্তি ছাড়াও কুরআন হাদিসে আরো অনেককে হত্যার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এ হাদিসে যে তিনজনের কথা বলা হয়েছে তাদেরকে বিআইনিহি হত্যা করা জরুরী।
# অস্ত্র প্রয়োগ ইসলামী সমাজের স্থিতিশীলতা ও শান্তি শৃংখলা বজার রাখার জন্য জরুরী। প্রয়োজনে শরয়ী সীমারেখার মধ্যে থেকে জনসাধারণও অস্ত্র প্রয়োগ ও হত্যা করতে পারবে।
# আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকার ফরযে কিফায়া। সামরিক বেসামরিক সকল মুসলমানের উপর তা ফরয।
# মৌলিকভাবে মুসলিম হত্যাকে চার শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়,
১. হদরূপে হত্যা।
২. কেসাসরূপে হত্যা।
৩. دفع الصائلতথা জান-মাল ও ইজ্জত-আব্রু রক্ষার্থে হত্যা।
৪. সিয়াসত ও তা’যিররূপে হত্যা।
# নিম্নোক্ত মুসলিমদের উপযুক্ত শর্ত পাওয়া গেলে হদরূপে হত্যা করা হবে,
১. বিবাহিত যিনাকারী পুরুষ বা মহিলা
২. ডাকাত ও রাহজান
৩. সমকামি
৪. নামায তরককারী
৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটুক্তিকারী
প্রথম দুই শ্রেণীতে সকলে একমত। শেষের তিন শ্রেণী মতভেদপূর্ণ।
# নিরপরাধ কোনো মুসলিমকে অন্য কোনো মুসলিম ইচ্ছাকৃত হত্যা করলে হত্যার বদলে তাকেও কিসাসরূপে হত্যা করা হবে।
# কোনো মুসলিম অন্য কোনো মুসলিমের জান, মাল বা ইজ্জত আব্রুর উপর আঘাত হানলে এবং তাকে হত্যা করা ছাড়া জান, মাল বা ইজ্জত আব্রু রক্ষার উপায় না থাকলে তাকে হত্যা করে দেয়া হবে।
# মুফসিদ ফিল আরদ তথা যে ব্যক্তি যে দুনিয়াতে ফাসাদ করে বেড়াচ্ছে, হত্যা ছাড়া তার অনিষ্ট দমন সম্ভব না হলে সিয়াসতরূপে তাকে হত্যা করে দেয়া হবে। উক্ত ফাসাদ দ্বীনি দুনিয়াবি যা-ই হোক বিধান সমান।
নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের ফাসাদের কারণে হত্যা করা হবে,
১. যাদুকর: পুরুষ হোক মহিলা হোক। ধৃত হওয়ার পর তাওবা করলেও হত্যা করা হবে।
২. বিদআতিদের গুরু, যখন তাকে হত্যা করা ছাড়া অনিষ্ট দমন সম্ভব নয়।
৩. যিন্দিক; যে বাহ্যত মুসলমান, ভিতরে ভিতরে কাফের। ধৃত হওয়ার পর তাওবা করলেও হত্যা করা হবে।
৪. সমকামী, যখন সে তাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে।
৫. পশুর সাথে সঙ্গমকারী, যখন সে তাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে।
৬. যে ব্যক্তি তার মাহরাম মহিলার সাথে সঙ্গম করে।
৭. চোর, যদি বার বার চুরি করতে থাকে।
৮. শ্বাসরূদ্ধ করে হত্যাকারী বা ভারী বস্তু (যেমন পাথর ইত্যাদি) দিয়ে হত্যাকারী, যেগুলোতে কিসাস আসে না; যখন এমন হত্যাকাণ্ড একাধিকবার ঘটাবে।
৯. যে ব্যক্তি শাসকদের কাছে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করে লোকজনকে হত্যা করায়।
১০. একজন খলিফা বিদ্যমান থাকাবস্থায় বা একজনের হাতে খেলাফতের বাইয়াত হয়ে যাওয়ার পর অন্য ব্যক্তি নিজেকে খলিফা দাবি করলে এবং এ দাবি থেকে সরে না আসলে।
الحمد لله الذي بنعمته تتم الصالحات
وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله وصحبه أجمعين
وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله وصحبه أجمعين
Comment