Announcement

Collapse
No announcement yet.

জিহাদের উদ্দেশ্য কী?

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জিহাদের উদ্দেশ্য কী?

    জিহাদের উদ্দেশ্য কী?
    -মিয়ান মুহাম্মদ ফয়সাল শহীদুল্লাহ রাহিমাহুল্লাহ
    অনুবাদক: মুহাম্মাদ আজলান



    জিহাদের উদ্দেশ্য কী? হে মুজাহিদীন, তারা তাদের ঘরবাড়ি থেকে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে বেরিয়েছে? কুরআনের এই আয়াতের ছোট্ট অংশটি, যা আমি আপনাদের সামনে তিলাওয়াত করেছি, এটি সেই উদ্দেশ্যকে খুব সুন্দরভাবে স্পষ্ট করে। আমরা জিহাদ এজন্য করি যাতে এই দুনিয়া থেকে ফিতনা দূর করে দিতে পারি এবং আল্লাহর দ্বীনকে সমস্ত ধর্মের উপর প্রাধান্য দিতে পারি। এই পুরো পৃথিবীতে আল্লাহর দ্বীন যেন প্রতিষ্ঠিত হয়। আল্লাহর দ্বীনের প্রতিষ্ঠা বা শরিয়তের প্রতিষ্ঠা কোনো সাধারণ বিষয় নয়, কোনো ছোটখাটো দাবি নয়। এটি কোনো নফল বা মুস্তাহাব ধরনের ইবাদতও নয়, যে আমাদের কাছে এটি গ্রহণ করার স্বাধীনতা আছে, যে আমরা চাইলে এটি গ্রহণ করব, চাইলে এটির উপর আমল করব, আর চাইলে এটি ছেড়ে দেব। বরং সমস্ত সম্মানিত আলেমগণ এ বিষয়ে একমত যে এটি দ্বীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।

    যেমন আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদে অন্য এক জায়গায় বলেছেন, আমি জিন এবং মানুষকে আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি। এখন আল্লাহ তাআলার এই নির্দেশও একজন মুসলিমের জীবনের উদ্দেশ্যকে স্পষ্ট করে দেয়, যে আমাদের সৃষ্টির উদ্দেশ্য হলো এই যে আমরা আল্লাহ তাআলার ইবাদত করি। এবং বিশেষ করে মুজাহিদীনদের এবং জিহাদের উদ্দেশ্যই হলো যে এই পৃথিবীতে এমন কোনো কোণ, অঞ্চল বা দ্বীপ বাকি না থাকে যেখানে আল্লাহ তাআলার ইবাদত না হয়।

    এখন আমরা বর্তমান মুসলিমদের যে অবস্থা, আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি, যদি আমরা এর উপর দৃষ্টি দিই তবে মুসলিম এবং মুজাহিদীনরা যে উদ্দেশ্য নিয়ে আজ বেরিয়েছে তা বোঝা অনেক বেশি সহজ হয়ে যায়। যদি আমরা দেখি, যখন থেকে খিলাফত বিলুপ্ত হয়েছে, যখন থেকে মুসলিমদের ঐক্য ভেঙে দেওয়া হয়েছে, এবং মুসলিমদেরকে ছোট ছোট রাষ্ট্রে বিভক্ত করে দেওয়া হয়েছে, তখন থেকে আমাদের সাথে কী ঘটেছে? এমন ঘটেছে যে প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্রে একটি ছোট গোষ্ঠী শাসনের জন্য চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং সেই গোষ্ঠী দ্বীন এবং শরিয়ত প্রতিষ্ঠার পথে মৌলিক বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    শুধু তাই নয় যে তারা একটি মৌলিক বাধা, বরং তারা দ্বীনকে একপাশে ফেলে দিয়েছে, একপাশে সরিয়ে দিয়েছে, এবং মানুষের তৈরি আইনগুলো মুসলিমদের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। এখন এই অশরিয়ত আইনের অধীনে জীবনযাপন করতে করতে মুসলিমদের এমন প্রজন্ম তৈরি হয়েছে যারা এই অশরিয়ত ব্যবস্থার সাথে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এখন এই অশরিয়ত ব্যবস্থার মধ্যে জীবনযাপন করতে করতে মুসলিমদের অবস্থা এমন হয়ে গেছে যে মুসলিমরা দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা এবং মৃত্যুর প্রতি ঘৃণায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। অর্থাৎ দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা শুরু করেছে এবং মৃত্যুকে ঘৃণা করতে শুরু করেছে। আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি শেষ হয়ে গেছে। তারা শুধু দুনিয়া উপার্জনের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

    ফলাফল কী হলো? দুনিয়াও মুসলিমদের হাত থেকে চলে গেছে। দুনিয়াতেও তারা পরাভূত হয়েছে। আজ মুসলিমদের সাতান্নটি তথাকথিত ইসলামী রাষ্ট্র আছে, যেখানে ইসলাম শুধু নামেই দেখা যায়। কোনো রাষ্ট্র এমন নেই যেখানে ইসলাম বাস্তবে প্রতিষ্ঠিত। বরং সমস্ত মুসলিম শাসকরা একটি ঐক্য গঠন করে আল্লাহ তাআলার সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করেছে। এবং তারা তাদের তৈরি আইনগুলো যেখানে প্রতিষ্ঠিত করেছে, সেই অশরিয়ত ব্যবস্থার অধীনে জীবনযাপন করতে করতে মুসলিমদের অবস্থা এমন হয়ে গেছে যে মুসলিমরা দ্বীনের মৌলিক নির্দেশনাগুলোর সাথে অপরিচিত হয়ে গেছে। দ্বীনের মৌলিক নির্দেশনা, যেমন তাওহীদ, আল্লাহর পথে লড়াই, এবং মুসলিমদের জন্য যে বন্ধুত্ব ও শত্রুতার মানদণ্ড আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদে নির্ধারণ করেছেন, মুসলিমরা সেগুলোর সাথে অপরিচিত হয়ে গেছে। এবং কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব শুরু করেছে।

    ঈমানদার এবং সেই মুসলিমরা যারা সত্যিকারের হৃদয় দিয়ে এই দ্বীনকে প্রাধান্য দিতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা, বিদ্বেষ এবং শত্রুতা তৈরি হয়েছে। এখন এর ফলাফল এমন হয়েছে যে মুসলিমরা তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্যের সাথে অপরিচিত হয়ে গেছে। চিন্তা-ভাবনার ক্ষমতা মুসলিমদের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। হৃদয় মৃত হয়ে গেছে, দুনিয়াতে মন লেগে গেছে, এবং আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি শেষ হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতি দেখে একদিকে আল্লাহ তাআলা মুসলিমদের উদ্দেশ্য বলেছেন যে তাদের উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর পথে লড়াই করা যাতে আল্লাহর কালিমা উচ্চ করা যায় এবং এই দুনিয়া থেকে ফিতনা দূর করা যায়।

    কিন্তু অন্যদিকে যা ঘটেছে তা হলো আমরা আল্লাহর কালিমাকে উচ্চ করার পরিবর্তে দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা আমাদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। আল্লাহর পথে বের হওয়ার পরিবর্তে শয়তানের পথে বেরিয়ে পড়েছি। আল্লাহর জন্য জীবন উৎসর্গ করার পরিবর্তে দুনিয়া উপার্জনের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে শুরু করেছি। এই উদ্দেশ্যগুলোকে পুনর্জাগরণ করার জন্য আজ মুজাহিদীনরা বেরিয়েছে যাতে তারা আল্লাহ তাআলার কালিমাকে এই দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারে, আল্লাহ তাআলার শরিয়তকে এই দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 1 day ago.
Working...
X