একদিকে বৈশ্বিক অরাজকতা, অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে। জালিমদের জুলুম, স্বৈরাচারীদের দৌরাত্ন্য ও প্রতাপশালীদের বাড়াবাড়ি দিনদিন সীমা অতিক্রম করছে। পৃথিবীর যেদিকেই তাকাই, কেবলই দেখতে পাই মানুষের জীবনজুড়ে কষ্ট, হতাশা ও অস্থিরতার প্রকট ছাপ।
বিষণ্ন চেহারা, ধূলিমলিন বদন আর বেদনাক্রান্ত হৃদয়ের প্রবল যাতনায় মানুষগুলো যেন একেকটা জীবন্ত লাশ। আজ প্রায় শতাব্দীকাল হতে চলল, পৃথিবীর অধিবাসীরা অভিভাবকহীন, আদল-ইনসাফ থেকে বঞ্চিত। পৃথিবীবাসী আক্ষরিক অর্থেই এতিম হয়ে পড়েছে। যেন কেউ দেখার নেই তাদের। আন্ডারওয়ার্ল্ড মাফিয়ারা পৃথিবীর সকল সম্পদ ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করে মানুষকে দাস বানিয়ে রেখেছে।
স্বৈরাচারী শাসকেরা জনগণের জান-মাল-ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। ধনী ব্যবসায়ীরা গরিবদের অর্থ-সম্পদ কেড়ে নেওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অধস্তন কর্মচারীদের সাথে যাচ্ছেতাই আচরণ করছে। বলতে গেলে বিশ্বের সর্বত্রই আজ জুলুম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অরাজকতায় পরিপূর্ণ। পৃথিবীর ইতিহাসে বিশ্বব্যাপী এমন ব্যাপক জুলুমের জমানা সম্ভবত খুব কমই গত হয়েছে।
অন্যদিকে মুসলিম উম্মাহর ইমান-আকিদার অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। ইবাদত-আমলের অবস্থাও বেশ করুণ। মুসলিম ঘরে জন্মগ্রহণ করা অনেক মানুষ আজ ইসলামকে পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা বলে বিশ্বাস করে না। আল্লাহর দেওয়া জীবনবিধান ছুড়ে ফেলে মানবরচিত বিভিন্ন তন্ত্রকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে। ইসলামি আইনকে সেকেলে এবং শারয়ি দণ্ডবিধানকে বর্বর বলে মনে করে। বোরকা-হিজাব, দাড়ি-টুপি ও মসজিদ-মাদরাসাকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখে।
আর যারাওবা কিছুটা ইসলাম মানতে চায় তারা ইসলামকে কেবল নামাজ-রোজা ও ব্যক্তিগত কিছু ইবাদতের মাঝে সীমাবদ্ধ রেখে জীবনের অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে বিজাতীয় নীতি-আদর্শ অনুসরণ করে চলে। সুদ-ঘুষকে বৈধ জ্ঞান করে দেদারসে তারা সুদ-ঘুষের লেনদেন করে। হালাল-হারাম কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে সমানে অর্থ উপার্জন করে।
মুসলিম যুবসমাজ পড়াশোনা, স্কিল অর্জন ও প্রোডাক্টিভ কাজ বাদ দিয়ে সারাদিন ফেসুবক, ইউটিউব, টিকটক ও ইন্সটাগ্রাম-সহ বিভিন্ন সাইটে বেহুঁশের মতো পড়ে থাকে। আরেকদল সারাক্ষণ গেমসে ডুবে থাকে এবং মুভি-নাটক ও গান শোনাতে মগ্ন থাকে। মোটকথা, আজকের যুগে মুসলিমদের সমস্যা কেবলই পার্থিব বঞ্চনা নয়; বরং তাদের দ্বীনি ক্ষতি, আদর্শের অবক্ষয় ও নৈতিক অধোগতির অবস্থাই বেশি ভয়াবহ।
এ দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, বর্তমানে বৈশ্বিক অরাজকতার কারণে সাধারণ মুসলিম-অমুসলিম সকলেই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত ও জুলুম-নির্যাতনের শিকার হলেও সামগ্রিকভাবে মুসলিমদের ক্ষতির পরিমাণই বেশি। কেননা, অমুসলিমরা পার্থিব দিক থেকে ক্ষতির সম্মুখীন হলেও আখিরাতের বিবেচনায় তাদের আলাদা কোনো ক্ষতি নেই।
কেননা, ইমান না থাকার কারণে তাদের আখিরাত তো আগে থেকেই বরবাদ, তাই চলমান এ বৈশ্বিক সংকটে তাদের ক্ষতি কেবল পার্থিব বিষয়াদির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। পক্ষান্তরে মুসলিমদের যেহেতু দুনিয়ার পাশাপাশি আখিরাতও রয়েছে, তাই অধুনা বিশ্বজুড়ে চলমান সমস্যায় মুসলিমরা উভয় দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
খিলাফাব্যবস্থা না থাকায় তারা যেমন পার্থিব সুবিধা থেকে বঞ্চিত এবং জালিমদের হাতে লাঞ্ছিত হচ্ছে, তেমনই সঠিক ইলম না থাকায় তারা বিশুদ্ধ ইমান-আকিদার আলো ও ইবাদতের অপার্থিব স্বাদ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। বরং পশ্চিমা চিন্তা-দর্শনের প্রভাবে ও সঠিক ইলমের অভাবে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় অনেকে ইসলামের গণ্ডি থেকেও বের হয়ে যাচ্ছে। নাউজুবিল্লাহ!
আমরা মুসলিমদের জুলুম-নির্যাতনের কথা শুনে অনেক কষ্ট পাই এবং তা প্রতিহত করার চিন্তা করি, কিন্তু তাদের ইমান-আমলের এ দুর্যোগ নিয়ে আমরা খুব সামান্যই চিন্তিত হই। অথচ এটাই ছিল অধিক চিন্তার বিষয়।
বর্তমান বিশ্বের টালমাটাল অবস্থা, দেশে দেশে অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও পরাশক্তি দেশসমূহের যুদ্ধের প্রস্তুতি, মুসলিম দেশগুলোতে অনৈসলামিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন, ইসলামকে দাফন করার সামগ্রিক প্রস্তুতি এবং মুসলিমদের ইমান-আমল নষ্ট করার সকল উপায়-উপকরণ সরবরাহ থেকে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, সামনের দিনগুলি আমাদের জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ হতে চলছে।
সঠিক ইলমের অভাবে ও আর্থিক দৈন্যতার কারণে প্রচুর মানুষ স্বেচ্ছায় বা বাধ্য হয়ে ইমান ছেড়ে কুফরের তাঁবুতে আশ্রয় গ্রহণ করবে। অনেকে পরিধান করবে নিফাকের পোশাক। কুফর ও নিফাকে পুরো বিশ্ব সয়লাব হয়ে যাবে। ইমানের আলো হাতে-গোনা কিছু তাঁবুতে নিভু নিভু জ্বলবে। আশা ও শঙ্কার মাঝে তাঁরা ইমানের মশাল ঘিরে বসে থাকবে। সে আলোয় নিজেরাও পথ দেখবে, অন্যদেরও পথ দেখাবে। সমাজের অনেক মানুষের ভীড়ে অল্প কিছু মানুষ। তাঁরা হবে গুরাবা। মানুষের কল্যাণকামী। কিন্তু লোকেরা তাঁদের আহবান উপেক্ষা করবে।
দুনিয়ার রঙিন জীবনের ক্ষণিক স্বাদ পেয়ে তারা ভুলে যাবে আখিরাতের চিরন্তন সুখের কথা। দরদি দাঈদের ফিতনাবাজ বলবে, তাঁদেরকে পথের কাঁটা মনে করবে। এভাবেই একদিকে চলতে থাকবে ইমানের দাওয়াত, আর অন্যদিকে চলবে কুফর ও নিফাকের সয়লাব। জানা নেই, ফিতনার সে কঠিন সময়ে আমরা কে কোন তাঁবুর বাসিন্দা হবো, কে কোন পথের পথিক হবো! আল্লাহ আমাদের হিফাজত করুন। ( আমিন)।
(✍ গুরাবা শায়েখ)
বিষণ্ন চেহারা, ধূলিমলিন বদন আর বেদনাক্রান্ত হৃদয়ের প্রবল যাতনায় মানুষগুলো যেন একেকটা জীবন্ত লাশ। আজ প্রায় শতাব্দীকাল হতে চলল, পৃথিবীর অধিবাসীরা অভিভাবকহীন, আদল-ইনসাফ থেকে বঞ্চিত। পৃথিবীবাসী আক্ষরিক অর্থেই এতিম হয়ে পড়েছে। যেন কেউ দেখার নেই তাদের। আন্ডারওয়ার্ল্ড মাফিয়ারা পৃথিবীর সকল সম্পদ ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করে মানুষকে দাস বানিয়ে রেখেছে।
স্বৈরাচারী শাসকেরা জনগণের জান-মাল-ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। ধনী ব্যবসায়ীরা গরিবদের অর্থ-সম্পদ কেড়ে নেওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অধস্তন কর্মচারীদের সাথে যাচ্ছেতাই আচরণ করছে। বলতে গেলে বিশ্বের সর্বত্রই আজ জুলুম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অরাজকতায় পরিপূর্ণ। পৃথিবীর ইতিহাসে বিশ্বব্যাপী এমন ব্যাপক জুলুমের জমানা সম্ভবত খুব কমই গত হয়েছে।
অন্যদিকে মুসলিম উম্মাহর ইমান-আকিদার অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। ইবাদত-আমলের অবস্থাও বেশ করুণ। মুসলিম ঘরে জন্মগ্রহণ করা অনেক মানুষ আজ ইসলামকে পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা বলে বিশ্বাস করে না। আল্লাহর দেওয়া জীবনবিধান ছুড়ে ফেলে মানবরচিত বিভিন্ন তন্ত্রকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে। ইসলামি আইনকে সেকেলে এবং শারয়ি দণ্ডবিধানকে বর্বর বলে মনে করে। বোরকা-হিজাব, দাড়ি-টুপি ও মসজিদ-মাদরাসাকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখে।
আর যারাওবা কিছুটা ইসলাম মানতে চায় তারা ইসলামকে কেবল নামাজ-রোজা ও ব্যক্তিগত কিছু ইবাদতের মাঝে সীমাবদ্ধ রেখে জীবনের অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে বিজাতীয় নীতি-আদর্শ অনুসরণ করে চলে। সুদ-ঘুষকে বৈধ জ্ঞান করে দেদারসে তারা সুদ-ঘুষের লেনদেন করে। হালাল-হারাম কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে সমানে অর্থ উপার্জন করে।
মুসলিম যুবসমাজ পড়াশোনা, স্কিল অর্জন ও প্রোডাক্টিভ কাজ বাদ দিয়ে সারাদিন ফেসুবক, ইউটিউব, টিকটক ও ইন্সটাগ্রাম-সহ বিভিন্ন সাইটে বেহুঁশের মতো পড়ে থাকে। আরেকদল সারাক্ষণ গেমসে ডুবে থাকে এবং মুভি-নাটক ও গান শোনাতে মগ্ন থাকে। মোটকথা, আজকের যুগে মুসলিমদের সমস্যা কেবলই পার্থিব বঞ্চনা নয়; বরং তাদের দ্বীনি ক্ষতি, আদর্শের অবক্ষয় ও নৈতিক অধোগতির অবস্থাই বেশি ভয়াবহ।
এ দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, বর্তমানে বৈশ্বিক অরাজকতার কারণে সাধারণ মুসলিম-অমুসলিম সকলেই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত ও জুলুম-নির্যাতনের শিকার হলেও সামগ্রিকভাবে মুসলিমদের ক্ষতির পরিমাণই বেশি। কেননা, অমুসলিমরা পার্থিব দিক থেকে ক্ষতির সম্মুখীন হলেও আখিরাতের বিবেচনায় তাদের আলাদা কোনো ক্ষতি নেই।
কেননা, ইমান না থাকার কারণে তাদের আখিরাত তো আগে থেকেই বরবাদ, তাই চলমান এ বৈশ্বিক সংকটে তাদের ক্ষতি কেবল পার্থিব বিষয়াদির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। পক্ষান্তরে মুসলিমদের যেহেতু দুনিয়ার পাশাপাশি আখিরাতও রয়েছে, তাই অধুনা বিশ্বজুড়ে চলমান সমস্যায় মুসলিমরা উভয় দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
খিলাফাব্যবস্থা না থাকায় তারা যেমন পার্থিব সুবিধা থেকে বঞ্চিত এবং জালিমদের হাতে লাঞ্ছিত হচ্ছে, তেমনই সঠিক ইলম না থাকায় তারা বিশুদ্ধ ইমান-আকিদার আলো ও ইবাদতের অপার্থিব স্বাদ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। বরং পশ্চিমা চিন্তা-দর্শনের প্রভাবে ও সঠিক ইলমের অভাবে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় অনেকে ইসলামের গণ্ডি থেকেও বের হয়ে যাচ্ছে। নাউজুবিল্লাহ!
আমরা মুসলিমদের জুলুম-নির্যাতনের কথা শুনে অনেক কষ্ট পাই এবং তা প্রতিহত করার চিন্তা করি, কিন্তু তাদের ইমান-আমলের এ দুর্যোগ নিয়ে আমরা খুব সামান্যই চিন্তিত হই। অথচ এটাই ছিল অধিক চিন্তার বিষয়।
বর্তমান বিশ্বের টালমাটাল অবস্থা, দেশে দেশে অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও পরাশক্তি দেশসমূহের যুদ্ধের প্রস্তুতি, মুসলিম দেশগুলোতে অনৈসলামিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন, ইসলামকে দাফন করার সামগ্রিক প্রস্তুতি এবং মুসলিমদের ইমান-আমল নষ্ট করার সকল উপায়-উপকরণ সরবরাহ থেকে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, সামনের দিনগুলি আমাদের জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ হতে চলছে।
সঠিক ইলমের অভাবে ও আর্থিক দৈন্যতার কারণে প্রচুর মানুষ স্বেচ্ছায় বা বাধ্য হয়ে ইমান ছেড়ে কুফরের তাঁবুতে আশ্রয় গ্রহণ করবে। অনেকে পরিধান করবে নিফাকের পোশাক। কুফর ও নিফাকে পুরো বিশ্ব সয়লাব হয়ে যাবে। ইমানের আলো হাতে-গোনা কিছু তাঁবুতে নিভু নিভু জ্বলবে। আশা ও শঙ্কার মাঝে তাঁরা ইমানের মশাল ঘিরে বসে থাকবে। সে আলোয় নিজেরাও পথ দেখবে, অন্যদেরও পথ দেখাবে। সমাজের অনেক মানুষের ভীড়ে অল্প কিছু মানুষ। তাঁরা হবে গুরাবা। মানুষের কল্যাণকামী। কিন্তু লোকেরা তাঁদের আহবান উপেক্ষা করবে।
দুনিয়ার রঙিন জীবনের ক্ষণিক স্বাদ পেয়ে তারা ভুলে যাবে আখিরাতের চিরন্তন সুখের কথা। দরদি দাঈদের ফিতনাবাজ বলবে, তাঁদেরকে পথের কাঁটা মনে করবে। এভাবেই একদিকে চলতে থাকবে ইমানের দাওয়াত, আর অন্যদিকে চলবে কুফর ও নিফাকের সয়লাব। জানা নেই, ফিতনার সে কঠিন সময়ে আমরা কে কোন তাঁবুর বাসিন্দা হবো, কে কোন পথের পথিক হবো! আল্লাহ আমাদের হিফাজত করুন। ( আমিন)।
(✍ গুরাবা শায়েখ)