উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার
(প্রথম পর্ব)
পার্ট - ৩
(প্রথম পর্ব)
পার্ট - ৩
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ উপমহাদেশের ভেতরে আপনাদের প্রধান শত্রু এবং প্রণিধানযোগ্য লক্ষ্যবস্তু কী?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ সবচেয়ে প্রথম লক্ষ্যবস্তু ‘গুণ্ডাদের সর্দার’ আমেরিকা, কারণ আমেরিকা ইসলাম ও মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু। এর হাত মুসলিম উম্মতের রক্তে রঞ্জিত, গোটা দুনিয়ায় ইসলামের বিরুদ্ধে জালেমদের পৃষ্ঠপোষক এবং বৈশ্বিক অত্যাচারী শাসনব্যবস্থার সবচেয়ে বড় রক্ষক ও সর্দার। এজন্য উপমহাদেশের এই ভূখণ্ডকে আমেরিকার নোংরামি থেকে মুক্ত এলাকা বানানো, মার্কিন ষড়যন্ত্র ও জুলুম থেকে এই ভূখণ্ডকে পবিত্র করা এবং এই অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থ রক্ষা প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করা আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
দ্বিতীয় লক্ষ্যবস্তু ভারত। মুশরিক, লুণ্ঠনকারী ও অত্যাচারী ওই ভারত, যে কাশ্মীর দখল করে রেখেছে এবং প্রতিদিন আমাদের কাশ্মীরি মা, বোন এবং ভাইদের উপর জুলুম করে যাচ্ছে। এই ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা থেকে আসাম ও গুজরাট পর্যন্ত আমাদের মুসলমান ভাইদের ‘রক্তের হোলি খেলা’ অব্যাহত আছে। আবার এই ভারত আজ ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে আমেরিকা এবং ইসরায়েলসহ সমস্ত বৈশ্বিক শয়তানের মিত্র। কাজেই বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান বরং পুরো উপমহাদেশে ভারতীয় সরকারের স্বার্থকে নিশানা বানানো আমাদের দ্বিতীয় বড় লক্ষ্যবস্তু!
তৃতীয় লক্ষ্যবস্তু ঐসব শক্তি যারা জিহাদি আন্দোলনের শত্রু, জিহাদি আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং এর জন্য বৈশ্বিক কুফরী শক্তি থেকে অর্থ জমা করছে। পাকিস্তানের উপর চেপে বসা জেনারেল, এদের সশস্ত্র চেলা এবং শাসক শ্রেণি এর সুস্পষ্ট উদাহরণ। এটা ঐ বিষফোঁড়া যার কাজই হলো জিহাদি আন্দোলনকে মূল থেকে শেষ করে দেওয়া। যখন তারা এটা করতে ব্যর্থ হয়, তখন এই আন্দোলনকে বিক্ষিপ্ত করা, আন্দোলনকে বৈশ্বিক গুণ্ডাদের বশীভূত করা এবং এর বরকতময় ফলকে এসব কাফেরের কোলে সঁপে দেওয়াকে এরা নিজেদের দায়িত্ব মনে করে। কাজেই এই জালেম গোষ্ঠী জিহাদি আন্দোলনের এবং ইসলামী জাগরণের বিরুদ্ধে প্রত্যেক মুলহিদ (নাস্তিক) ও কাফেরের বাহু। এদের কারণেই আজ পাকিস্তান গোটা দুনিয়ার অপরাধী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কার্যক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে এবং আজ এদের কারণেই এই ভূখণ্ড আল্লাহর শরীয়ত থেকে বঞ্চিত। এখানে জুলুম ও ফাসাদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত আছে এদের কারণেই।
এখানে লক্ষ্যবস্তু নিয়ে আলোচনা, এজন্য বলছি যে, আল-কায়েদা উপমহাদেশের আচরণবিধি আলহামদুলিল্লাহ প্রকাশিত হয়েছে। তাতে আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, পদ্ধতিসহ আমাদের জিহাদি লক্ষ্যবস্তু এবং মূলনীতি ও মানদণ্ড লিপিবদ্ধ হয়েছে! এজন্য সব মুসলমানের বিশেষভাবে মুজাহিদদের, আমাদের জামাআতের সাথিদেরকে এবং জামাআতের বাইরের অন্যান্য ভ্রাতৃস্থানীয় জামাআতের প্রিয় ভাইদের সবাইকে এই আচরণবিধি পড়ার জন্য অনুরোধ করছি।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আমেরিকা, ভারত এবং সেই সাথে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে একই সময়ে শত্রু বানানো এবং এদের বিরুদ্ধে লড়াই করা কি যুদ্ধের স্ট্র্যাটেজির দিক থেকে উপযুক্ত?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ বাস্তবতা এটাই যে, আমরা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে শত্রু বলি আর না বলি এরা শত্রু এবং এরা শরীয়তের বিরুদ্ধে, দীনের অনুসারীদের বিরুদ্ধে, জিহাদি আন্দোলন ও মুজাহিদদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আমরা জানি যে, শত্রুর সংখ্যা কমিয়ে আনা যুদ্ধে সবচেয়ে অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে, কিন্তু নিজেদের বিরুদ্ধে লড়াইরত শত্রু থেকে চোখ বন্ধ করে রাখা নিজেদের দাওয়াত, জিহাদ এবং আন্দোলনকে নিজ হাতে ধ্বংস করার প্রতিশব্দ। আজ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী এবং অত্যাচারী শাসনব্যবস্থা – শরীয়ত ও জিহাদের পথে পুরোপুরি প্রতিবন্ধক। এজন্য অনিবার্যভাবে এই শত্রুদের বিরুদ্ধে ময়দানে নামতে আমরা বাধ্য হয়েছি। এখানে আমি এটাও উল্লেখ করছি যে, পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ইসলামের শত্রুতার ইতিহাস দেখে এই বাস্তবতা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে, দীনের বিজয়ের আন্দোলন যতক্ষণ পর্যন্ত নিজের দাওয়াতকে বাঁচানোর জন্য এই সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ময়দানে না নামবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই আন্দোলন এক পাও অগ্রসর হতে পারবে না ; ততক্ষণ পর্যন্ত উপমহাদেশে কোনো জালেমের রাস্তা বন্ধ করা যাবে না।
চলবে...
Comment