Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৪২ || ‘আমেরিকান জনগণের প্রতি বার্তা।। শাইখ আনোয়ার আল-আওলাকি (আল্লাহতা'আলা তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন)||

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৪২ || ‘আমেরিকান জনগণের প্রতি বার্তা।। শাইখ আনোয়ার আল-আওলাকি (আল্লাহতা'আলা তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন)||

    আল-ক্বাদিসিয়াহ মিডিয়া পরিবেশিত
    “‘আমেরিকান জনগণের প্রতি বার্তা
    ।।শাইখ আনোয়ার আল-আওলাকি
    (আল্লাহতা'আলা তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন)||
    এর থেকে–


    আমি এই বার্তাটি আমেরিকান জনগণকে উদ্দেশ্য করে দিচ্ছি, এছাড়া সাধারণভাবে পশ্চিমাতে বসবাসরত মুসলিমদের উদ্দেশ্যে এবং বিশেষভাবে আমেরিকানদের জন্য।

    মহান আল্লাহতা'আলার জন্যই সকল প্রশংসা, দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক শেষ নবী মুহাম্মদ, তাঁর পরিবারবর্গ এবং সাহাবাগণের উপর। শান্তি বর্ষিত হোক তাদের উপর যারা সত্যকে অনুসরণ করে।

    ৯/১১ পরবর্তীতে আমেরিকার জনগণ জর্জ ডাব্লিউ বুশকে মুজাহিদীনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমর্থন দিয়েছে। এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য যত ব্যয় করা দরকার তার জন্য তারা তাকে উন্মুক্ত চেক দিয়েছিল। এর পরিণতিতে সে মারাত্মকভাবে পরাজিত হয়েছে। আর এই পরাজয় ছিল খুবই শোচনীয় পরাজয়। যখন আমেরিকা তাদের প্রেসিডেন্টকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমর্থন দেয়া সত্ত্বেও মুজাহিদীনদের পরাজিত করতে ব্যর্থ হয়েছিল তাহলে ওবামা কিভাবে তার সীমিত ব্যয়ের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারবে? আমেরিকা যদি ঐ সময়ে বিজয়ী হতে ব্যর্থ হয়ে থাকে, যখন তাদের অর্থনৈতিক অবস্থান শীর্ষস্থানে ছিল, তাহলে আজ সে কিভাবে বিজয়ী হবে যখন তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা মন্দার সর্বনিম্নে অবস্থান করছে? উত্তরটি খুব সহজঃ আমেরিকা জিততে পারে নি এবং পারবেও না (ইনশাআল্লাহ)।

    সময়ের মোড় আজ ঘুরে গিয়েছে, আর তাই বিশ্বব্যাপী জিহাদের যে আন্দোলন চলছে, তা কিছুতেই আর পিছু হটবে না। ১১ই সেপ্টেম্বরের সময়ে আফগানিস্তান শুধুমাত্র একা ছিল। আর আজ আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাক, সোমালিয়া, উত্তর আফ্রিকা, জাজিরাতুল আরব এবং এর তালিকা বেড়েই চলেছে। আমাদের ভাই উমার ফারুক আব্দুল মোত্তালিব আমেরিকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেদ করতে সফল হয়েছেন যার পেছনে শুধু আমেরিকাকেই ৯/১১ এর পর থেকে ৪০ লক্ষ কোটি ডলারের মতো ব্যয় করতে হয়েছে। তবে শুধুমাত্র কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা থাকার কারণে ডিভাইসের মাধ্যমে প্লেনটি বিস্ফোরিত হওয়া থেকে বেঁচে যায়। যাই হোক, এরপরেও মুজাহিদীনদের কার্যক্রম বন্ধ হবে না।

    আমেরিকার জনগণকে আমি বলবো, আপনাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ততদিন পর্যন্ত প্রতিনিয়তভাবে ঝুঁকির মধ্যে থাকবে, যতদিন পর্যন্ত আপনাদের প্রশাসন সাধারণ মুসলিমদের উপর তার আগ্রাসন চালাতে থাকবে। যদি আপনাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক দেখতে চান, তাহলে আপনাদের প্রশাসনকে বলুন, তারা যেন মুসলিম দেশগুলো থেকে বের হয়ে যায়। মুজাহিদীনরা পশ্চিমা আগ্রাসী বাহিনীকে এর প্রস্তাব দিয়েছিল কিন্তু তারা তা প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা আপনাদের (প্রশাসনের) জুলুম-নির্যাতন থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য যুদ্ধের এই পথকে বেছে নিয়েছি। আল্লাহর ইচ্ছায়, আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে অবিরতভাবে এই যুদ্ধ চালিয়ে যাবো এবং আমাদেরকে এর উপর দৃঢ় পাবেন।

    আপনারা কি সেই ভালো সময়গুলোর কথা ভুলে গেছেন, যখন আপনারা শান্তি ও নিরাপত্তার মাঝে ছিলেন; যখন আপনাদের মাঝে 'সন্ত্রাসবাদ' শব্দটি খুব কমই ব্যবহৃত হত এবং আপনারা কোন নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে ছিলেন না? আমার মনে পড়ে সেই সব দিনের কথা যখন কেউ তার স্থানীয় অথবা কলেজ পত্রিকার কোন বিশেষ অংশ থেকে বিমানের টিকেট কিনে নিজে ব্যবহার করতে পারতো, যদিও সেটি অন্য কারও পরিচয়পত্র দিয়ে করা হয়েছিল, কারণ তখন বিমানে যাওয়ার পূর্বে কারো পরিচয় চাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন ছিলো না। ছিল না কোন লম্বা লাইন, কোন তল্লাশি, কোন শারীরিক স্ক্যান, কোন কুকুরের ঘ্রাণ শোঁকা; প্রয়োজন ছিল না জুতা খোলা আর পকেট খালি করার। আপনাদের জীবন-যাত্রা তখন প্রশান্তির সাথে কাটছিল। আর ঠিক যখন থেকে শাইখ উসামা বিন লাদেন তাঁর সেই বিখ্যাত শপথের ঘোষণা দিয়েছিলেন, "আমেরিকা ততদিন পর্যন্ত শান্তিতে থাকতে পারবে না যতদিন পর্যন্ত আমাদের ভূমিগুলোতে আমরা যেই স্বাদ অনুভব করছি ঠিক একই স্বাদ তারা অনুভব না করে"। তখন থেকে আজ পর্যন্ত আপনাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হয়ে রয়েছে। এবং এই নয় বছর যাবত এত ব্যয় এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা এত জোরদার করার পরেও আপনারা এখনো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমনকি আপনাদের সবচাইতে পবিত্র দিন, ক্রিসমাস দিবসেও আপনারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আপনারা কি এই আশা করেন যে, অন্যের জীবনকে ধ্বংস করে আপনারা শান্তি থেকে অব্যাহতি পেয়ে যাবেন? আপনাদের পররাষ্ট্রনীতিতে আপনাদের সিদ্ধান্তকারীরা, রাজনীতিবিদরা, লগ্নিকারী এবং বৃহৎ সংস্থাগুলো ফায়দা লুটছে আর আপনাদেরকেই তার খেসারত দিতে হচ্ছে।

    ওবামা ওয়াদা করেছিলেন যে, তার প্রশাসন হবে স্বচ্ছ কিন্তু সে তার কথা রাখেনি। তার প্রশাসন আমাদের ভাই নিদাল হাসান মালিকের অভিযানকে একটি বিচ্ছিন্ন ব্যক্তির পৃথক হিংস্র আচরণ হিসেবে দেখাতে চেয়েছে। আমেরিকার জনগণের প্রতিক্রিয়াকে চেপে রাখার জন্য তারা তথ্যের অবাধ প্রকাশকে তাদের প্রশাসন কর্তৃক নিয়ন্ত্রণ করছে। এখন পর্যন্ত আমার ও নিদাল হাসানের ই-মেইলে যোগাযোগের খুঁটিনাটি তথ্য প্রশাসন প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। অতঃপর ভাই উমার ফারুকের অভিযানের পর প্রশাসন থেকে আসা প্রাথমিক বিবৃতিগুলোর চিত্রও একই রকম। সত্যকে গোপন করার আরেক প্রচেষ্টা। কিন্তু আল-কায়েদা ওবামার বিশ্ববাসীকে ধোঁকা দেয়ার প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়েছে। এই অভিযানের দায় স্বীকার করে তারা একটি বিবৃতি দেন। যাই হোক, কিন্তু বিশ্বের নিকট আমরা মুজাহিদীনেরা আমাদের বার্তা তুলে ধরতে উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ। আমাদের কোন গোপন এজেন্ডা অথবা উদ্দেশ্য নেই। আমরা আমাদের দিকে সারা বিশ্বের মানুষকে প্রকাশ্যে এবং সততার সাথে আহ্বান করে থাকি। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলামকে পুনরায় জীবনে ফিরিয়ে আনা। আমরা মুসলিম বিশ্বের স্বৈরাচার এবং পরাশ্রয়ী সরকারগুলোকে অপসারণ করতে চাই এবং তাদের স্থলে ক্ষমতায় সেইসব মানুষদের বসাতে চাই যারা সত্য-মিথ্যা এবং ভালো-মন্দের পার্থক্য জানে। আমরা কুরআনের বিধানের বাস্তবায়নের এবং আল্লাহর কালেমাকে সবার উপরে তোলার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এবং আল্লাহর ইচ্ছায়, আমরা এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে সব ধরনের প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাবো এবং আমাদের মধ্যে একজন ব্যক্তি অবশিষ্ট থাকলেও আমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যারা আমাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে আর আমেরিকা ঠিক সেই কাজটিই করে যাচ্ছে।

    আমাদের ভাই উমার ফারুকের (আল্লাহ তাঁকে হিফাজত করুন) অভিযানের পর একটি খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল যে, আমেরিকা তার বাহিনীকে ইয়েমেনের মধ্যে প্রেরণ করতে পারে। যখন এই খবরটি ছড়াচ্ছিল তখন আমি দেখেছি, এখানকার ভাইয়েরা আনন্দিত ও হর্ষ উৎফুল্ল হয়ে উঠেছিল এবং খুশিতে লাফাচ্ছিল। অবশেষে এতদিন পর তাদেরও সেই সুযোগটি মিলতে যাচ্ছে যে তারা আমেরিকান বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। এরাই হচ্ছে সেই মানুষ যাদের সাথে আপনারা মোকাবিলা করতে চাচ্ছেন। এরাই হচ্ছে তারা, যারা ইতিপূর্বে ইরাক ও আফগানিস্তানে গিয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছিল কিন্তু এখানে তা করতে পারছিল না। এখন তারা সেই সুযোগটি পেতে যাচ্ছে। এই হচ্ছে আপনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ব্যাপারে তাদের মানসিক অবস্থা। আমি ভাইদের মধ্যে আরও একটি বিষয় লক্ষ্য করেছি যে, তাদের মধ্যে অনেকেই অনুনয়-বিনয় করছিল যাতে তাদের নাম ফিদায়ী অপারেশনের তালিকায় রাখা হয়। আর এটা তাদের অন্তরে আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার তীব্র বাসনা থেকে ছিল। তাই আমেরিকার সেনাবাহিনীর মায়েদের এ কথা চিন্তা করা প্রয়োজন যে, এই হচ্ছে এখানকার অবস্থা যেখানে ওবামা আপনাদের সন্তানদেরকে প্রেরণ করছে। আমরা এমন জাতির মানুষ, যারা তেমনইভাবে মৃত্যুকে ভালবাসি ঠিক যেমনভাবে আপনারা জীবনকে ভালবেসে থাকেন। আর এ কারণেই আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস রাখি, এই যুদ্ধে আমরা কখনো পরাজিত হবো না (ইনশাআল্লাহ)। আমরা ইতিমধ্যেই মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছি আর শারীরিক যুদ্ধে জয় লাভ করাটা এখন শুধুমাত্র সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমাদের মুসলিমদের কোন জাতি অথবা সংস্কৃতির প্রতি কোনরূপ অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব বা বিদ্বেষ নেই। শুধু আমেরিকান বলেই আমরা আমেরিকানদের বিরোধী নই। আমরা সকল প্রকার খারাপের বিরুদ্ধে আর আমেরিকা পুরো জাতিটাই খারাপের দিকে ধাবিত হচ্ছে। দু'টি মুসলিম দেশের উপর আগ্রাসন চালিয়ে যা করেছে তা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা প্রত্যক্ষ করেছি আবু গারিব, বাগরাম আর গুয়ান্তানামো বে' কারাগার। আমরা প্রত্যক্ষ করেছি ক্রুজ মিসাইল আর ক্লাস্টার বোমা এবং আমরা মাত্রই প্রত্যক্ষ করলাম ইয়েমেনে তেইশ শিশু আর সতেরো নারীর মৃত দেহ। এই রকম আগ্রাসনের মুখে আমরা নিষ্ক্রিয়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারি না। আমরা এর পাল্টা আক্রমণ চালাবো এবং অন্যদের এরকম করতে অনুপ্রেরিত করবো। যেমন আমার জন্ম হয়েছিল আমেরিকায়। আমি আমেরিকায় বাস করেছি গত একুশ বছর যাবত। আমেরিকা ছিলো আমার আবাসস্থল। আমি ছিলাম ইসলামের একজন প্রচারক, অহিংস ইসলামের কার্যকলাপের সাথে জড়িত। কিন্তু আমেরিকা ইরাক আক্রমণের পর এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে আমেরিকার অব্যাহত আগ্রাসন দেখে আমি একজন মুসলিম হয়ে আমেরিকায় থাকার কোন সঙ্গতি খুঁজে পেলাম না। অবশেষে আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছালাম, যেই বিষয়ের উপর আমাদের আল-কায়েদার ভাইয়েরা কয়েক বছর আগেই পৌঁছে গিয়েছিল। আমি অবশেষে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছলাম যে, আমেরিকার বিরুদ্ধে জিহাদ করা আমার দায়িত্ব যেমনিভাবে এর দায়িত্ব প্রত্যেক সক্ষম মুসলিমের ওপর রয়েছে।

    বিগত কয়েক দশক পূর্বে আল-কায়দা এই উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়নি যে, তাদের মূল লক্ষ্য হবে আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা। এটি বিগত সময়গুলোতে যে সকল ঘটনা ঘটেছিল তার উপরে তাদের এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে বাধ্য হয়েছে। আল-কায়েদা এই যুদ্ধ শুরু করে নি। বরং বিগত অর্ধ শতাব্দী যাবত মুসলিম ভূমিগুলোতে ইসরাঈলের আগ্রাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে আমেরিকা সকল ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছিল। আর আল-কায়েদা ততদিন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোন আক্রমণ চালায়নি যতদিন পর্যন্ত না তাদের বাহিনী মুসলিমদের সবচেয়ে পবিত্র ভূমি জাজিরাতুল আরবে প্রবেশ করা শুরু করে দেয়।

    নিদাল হাসান আল-কায়েদা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়নি। বরং সে আমেরিকার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিল। আর এটিই সেই বিষয় যা আমেরিকা অস্বীকার করে থাকে। আমেরিকা স্বীকার করতে চায় না যে, নিদাল হাসানের মত একজন মানুষ তৈরি হওয়ার কারণ হচ্ছে তাদের পররাষ্ট্র নীতি। আমেরিকান পরিবেশের মধ্যেই জন্ম ও বেড়ে উঠার পরেও তাদের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেই সে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। তাই আমেরিকা যতবেশি অপকর্ম চালাবে, ততবেশি মুজাহিদীনরা তাদের বিরুদ্ধে জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ হতে থাকবে।

    ভাই উমার ফারুক আব্দুল মোত্তালিবের অভিযান ছিল ইয়েমেনে আমেরিকার ক্রুজ মিসাইল ও ক্লাস্টার বোমায় নিহত নারী ও শিশুদের জন্য বদলা স্বরূপ। তোমরা যতদিন পর্যন্ত আমাদের উপরে বোমা নিক্ষেপ করতে থাকবে, আমরা ঠিক ততদিন পর্যন্ত তোমাদের কাছে বোমা পাঠাতে থাকবো। আমরা এই যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যেতে থাকবো (ইনশাআল্লাহ)।

    এটি সত্য যে, আমাদের সীমিত সামর্থ্য নিয়ে আমরা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের অস্ত্রের মুখোমুখি হচ্ছি কিন্তু বিজয় আমাদের পক্ষেই থাকবে। বিজয় আমাদের কারণ আমাদের ও আপনাদের মাঝে রয়েছে এক বিশাল পার্থক্য।আমরা একটি মহৎ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আল্লাহর জন্য যুদ্ধ করছি আর আপনারা যুদ্ধ করছেন দুনিয়া লাভের আশায়। আমরা ন্যায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য যুদ্ধ করছি, কারণ আমরা আমাদের নিজেদের ভূমি এবং আমাদের পরিবারগুলোকে বাঁচানোর জন্য যুদ্ধ করছি। আর আপনারা যুদ্ধ করছেন আধিপত্য বিস্তার করার উদ্দেশ্যে। আমরা সত্য ও ইনসাফের পক্ষে যুদ্ধ করছি, আর আপনারা যুদ্ধ করছেন মানুষের উপর জুলুম-নির্যাতন করার জন্য। আপনাদের কাছে আছে বি-৫২, এপাচি, আবরামস এবং ক্রুজ মিসাইল আর আমাদের কাছে আছে ছোট ও সাধারণ উদ্ভাবিত বিস্ফোরক যন্ত্র। কিন্তু আমাদের আছে সেইসব মানুষ যারা নিবেদিত ও আন্তরিক, সিংহের মত হৃদয় এবং রহমত বর্ষিত হোক ধৈর্যশীলদের উপর কারণ তারাই পৃথিবীর উত্তরাধিকারী হবে।

    আমি আমার এই বার্তার শেষ প্রান্তে এসে আপনাদেরকে ইসলামের দিকে আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের সবাইকে মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদাতের জন্য। আর মৃত্যুর পর থাকবে আজীবনের জন্য হয় জান্নাত নতুবা জাহান্নামের আগুন। তাই এটি হালকা ভাবে নেয়ার কোন বিষয় নয়। এটিই আপনাদের ভবিষ্যত। আমি আপনাদের আল্লাহর কিতাব কুরআন অধ্যয়ন করার জন্য আহ্বান জানাই। এই ব্যাপারে আপনাদের কারও কোন কথা শুনতে হবে না। আপনি নিজেই বিবেচনা করুন আদৌ তা সত্য কি না।


    আমেরিকার মুসলিম ভাইদের উদ্দেশ্য করে আমি বলতে চাই,
    আপনার বিবেক কীভাবে আপনাকে এমন এক জাতির সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করার অনুমতি দিচ্ছে, যারা আপনাদেরই ভাই-বোনদের উপর অকথ্য জুলুম-নির্যাতন চালানোর জন্য দায়ী? আপনি কিভাবে এমন সরকারের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখছেন, যারা ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছে? আমেরিকায় বসবাসরত মুসলিমদের মধ্যে যে ইসলামের মূল্যবোধ থেকে ক্রমাগত বিচ্যুতি এবং অবনতি ঘটছে সে বিষয়ে তারা নিজেরাই এর প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে রয়েছে। আর তাই আজ আপনাদের অনেক আলিম এবং ইসলামিক সংগঠনগুলোই মুসলিমদেরকেই আমেরিকার সেনাবাহিনীতে অথবা এফবিআই এ যোগদান করে মুসলিমদের হত্যা কিংবা তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরি করাকে প্রকাশ্যভাবে অনুমোদন দিয়ে যাচ্ছে এবং তারা আপনার ও আপনার জিহাদী দায়িত্বের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ধীরগতিতে হলেও এটি নিশ্চিত যে, আপনাদের অবস্থা গ্রানাডা পতনের পর আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে থাকা স্পেনে বসবাসরত মুসলিমদের মতো হয়ে যাচ্ছে।

    পশ্চিমা মুসলিম ভাইয়েরা! সাবধান হোন এবং অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন। আপনাদের দিগন্তে অশুভ মেঘ ভাসছে। অতীতে আমেরিকা ছিলো দাসত্ব, বিচ্ছিন্নতা, মৃত্যুদন্ডাদেশ আর ক্যু ক্লাস্ক ক্ল্যান এর দেশ এবং আগামীতে এটি হবে ধর্মীয় বৈষম্যমূলক, যুদ্ধবন্দীদের ক্যাম্পের ভূমি। এমন একটা সরকারের অধিকার আদায়ের মিথ্যে আশ্বাসে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না যারা আপনার চোখের সামনেই আপনাদের ভাই ও বোনদের হত্যা করছে। আজ যখন মুসলিম এবং পশ্চিমাদের মধ্যকার যুদ্ধ তীব্রতর হচ্ছে, তখন কোন নাগরিক সমাজ অথবা রাজনৈতিক দলের থেকে আসা সংহতির বিবৃতি অথবা কোন সদয় প্রতিবেশী অথবা শোভন সহকর্মীর সমর্থনকে আপনারা বিশ্বাস করতে পারেন না। পশ্চিমারা ক্রমাগতই তাদের মুসলিম নাগরিকদের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। এখানে আপনাদের প্রতি আমার উপদেশ হচ্ছে, আপনাদের দু'টি পথ রয়েছে - হয় হিজরাহ না হয় জিহাদ; হয় সেই এলাকা ত্যাগ করুন; না হয় সেখানে জিহাদ চালিয়ে যান। আপনি যদি সেখানে থাকেন তাহলে মুসলিম কমিউনিটির মধ্যে থাকুন আর অনুসরণ করুন নিদাল হাসান ও এরকমই অন্যান্যদের পথ, যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করার দায়িত্বকে পালন করে গিয়েছে। আমি বিশেষভাবে যুবকদের আহ্বান করছি, আপনারা হয় পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করুন নতুবা জিহাদের ময়দানে এসে আপনাদের মুজাহিদীন ভাইদের সাথে শরীক হোন। যেমনঃ আফগানিস্তান, ইরাক এবং সোমালিয়া। আমি আপনাদেরকে আমাদের নতুন জিহাদের ক্ষেত্র ইয়েমেনে আসার জন্য আহ্বান করছি যেখান থেকে জাজিরাতুল আরবে মর্যাদাপূর্ণ জিহাদ শুরু হবে, যেখান থেকে মুসলিমদের মূল বাহিনী অভিযানে বের হবে। রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "বারো হাজার সৈন্যসহ একদল সৈন্যবাহিনী আদন-আবিয়ান থেকে আবির্ভূত হবে। তারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে বিজয়ী করবে; আমার এবং তাদের মাঝে তারা হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম"।

    পরিশেষে, আমি মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানাই যেন তিনি আমাদের সত্যের পথে পরিচালিত করেন এবং সঠিক পথে অটল থাকার জন্য মঞ্জুর করেন। শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক রসূলুল্লাহ (সাঃ), তাঁর পরিবারবর্গ এবং তাঁর সাহাবাদের উপর। শান্তি তাদের প্রতি যারা সঠিক পথ অনুসরণ করে।


    'হে ঐ সকল যুবকেরা! যারা নিজেদের আত্মাকে বিসর্জন দিতে সংকোচবোধ করো না।

    তোমাদের কাছে শাইখের আহ্বান প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।

    এবং শহরের চারিপ্রান্ত থেকে তা শোনা যাচ্ছে।

    তোমাদের কাছে শাইখের আহ্বান প্রতিধ্বনিত হচ্ছে......

    যখন সর্বশক্তিমান আল্লাহ কাউকে শহীদ হিসেবে বেছে নেন, তখন তার জন্য তা মর্যাদা বৃদ্ধির কারণ হয়ে যায়। এটি পরাজয় নয় বরং এটি হচ্ছে আল্লাহর অনুগ্রহ। এটি কোনভাবেই পরাজয় নয়। এর মাধ্যমেই মানুষদেরকে শাহাদাতের চর্চার শিক্ষা দেয়া উচিত যে, শাহাদাত হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে দয়া এবং অনুগ্রহ আর এটা কোন পরাজয় নয়....অবশ্যই এটি পরাজয় নয়।

    (আপনাদের দো'আতে আমাদেরকে ভুলবেন না।)




Working...
X